#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_১৩
নীল রঙা নদীর পাশে একটা গাছের ছাউনি।
আমার মাথাটা আমানের কাঁধে।
মিষ্টি বাতাস আর আমানের শরীরের মিষ্টি ঘ্রাণ এ যেন মৌ মৌ করছে চারিদিক।
সূর্যের তেজ এখনো ভালোই আছে।
প্রায় ১ থেকে দেড় ঘন্টা তো থাকবে আলো।
আর আজকে বিকলের সব টুকু আলো আমি ওনার কাধে ঠিক এভাবে মাথা দিয়ে কাটাতে চাই।
আমান সমানের দিকে তাকিয়ে আছে আর আমিও।
কিছু সময় নিরবতা পালন করার পর তিনি বলে উঠলেন,
–পরিবেশ টা কি তোমার মনের মতো?
–হুম এক দম।
(বিঃদ্রঃ আমি সত্যি বাংলাদেশে এমন একটা নদী দেখেছি যা সাধারণ এর তুলনায় অনেক পরিষ্কার আর নীল।আর হ্যাঁ কেউ যদি বলো যে আপু অনেক সুন্দর যায়গাই আছে আপনি কি এক নদী নিয়ে পড়ে আছেন তাহলে বলব আমার এখনো বাংলাদেশের তেমন কেন সুন্দর যায়গায় যাবার সৌভাগ্য হয় নি। সত্যি সব নদী গুলো থেকে বেতিক্রম ছিল ওটা )
–মেঘ একটা কথা বলব।
–হুম বলুন।
–যদি কখনো এমন হয় তুমি জানতে পারলে তুমি আমায় যা ভেবেছো আমি তা না তাহলে কি হবে?ছেড়ে চলে যাবে আমাকে?
আমি ওনার এ প্রশ্ন শুনে মাথা তুলে ওনার দিকে তাকালাম।
তার চোখ দুটো চিকচিক করছে যেন আমাকে বহু জমানো কথা বলতে চাইছে।
–এমন প্রশ্ন কেন?
–বলো। যদি কখনো আমি খারাপ এটা বুঝো তবে?
–আপনি খারাপ তা আমি যেন বেঁচে থাকতে না জানতে পারি।
আমি আপনার সাথে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবো সে সব খারাপ এবং ভালো সময় উভয় সময়েই আমাকে পাশে পাবেন।
আমার কথা শুনে আমান আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।
এতোটা শক্ত করে যেন ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাবো।
আমি বুঝি না ছেলেটার মাঝে মাঝে কি হয়।
এভাবে ১ টা ঘন্টা কাটানোর পর।
আমাকে নিয়ে শহরের দিকে রওনা দিলেন,
কিছু খাবার খেলাম সাথে প্রিয় আইসক্রিম।
আর এভাবে সুন্দর মুহুর্ত গুলো কাটলো।
রাত ৮ টা বাজে আমরা বাসায় পৌছালাম।
আমি রুমেএসে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে হালকা কাপড় পরে নিলাম।
খুব গরম পরেছে।
ফ্রেশ হয়ে বাবার রুমে গেলাম কফি হাতে।
বাবা খুব খুশি হলেন।
আমরা গল্প করছিলাম তার কিছু সময় পর আমান এলেন এবার ৩ জনেই গল্প জুড়ে নিলাম।
আমার কখনো মনেই হয় না যে আমি এখানে নতুন।
আসলে সেটা আমাকে এনারা ফিল করতেই দেয় না।
রাত ১১ টা,
রাতের খাবার শেষ করে আমরা যে যার রুমে চলে এসেছি।
আমান কিছু কাজ করছে।
আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল বাধছি।
কিছুক্ষণ পর আমান এসে পেছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন,
আয়নার দিকে তাকিয়ে তাকে দেখলাম।
আমি চোখ ইসারা দিলাম যার মানে হলো কি হইছে।
উনি ওনার মুখ আমার ঘাড়ে গুজে দিলেন।
আমি কিছুটা কেঁপে উঠলাম,
তবে তার অনাকাঙ্ক্ষিত চাওয়া গুলো মুখ ফুটে না বললেও আমার কাছে তা স্পষ্ট ।
তার কোন কাজে বাঁধা দিতে আমার একটুও ইচ্ছে হচ্ছে না তার ভালোবাসার পরশ গুলো উপভোগ করতে ইচ্ছে হচ্ছে।
ভালোবাসার পরশ গুলো চোখ বন্ধ করে মেনে নেওয়া যায়,
★★★
সকালের সূর্য তার আলো দিতে না দিতে ঘুম ভেঙে গেল।
আজ শুক্রবার ছুটির দিন।
সব কিছুই বন্ধ আমান ও ভার্সিটি তে যাবে না।
আর বাবাও অফিস যাবে না।
সবাই বাসায় থাকবে যাক একটা আনন্দের দিন হবে।
গোসল করে নামাজ পড়ে।
সোজা নিচে চলে গেলাম।
আজ বাবা জলদি উঠেছে।
আমন আর বাবা মসজিদে গেছেন,
★★
মসদিজ থেকে ফিরছে আরিফ খান আর আমান,
–আমান।
–জি বাবা।
–তুমি তোমার কাজ বন্ধ করো নি।
–কেন বাবা হটাৎ এ প্রশ্ন।
–মেঘের সাথে তোমার বিয়ে আগেই আমি বলেছিলাম আমি শান্তি চাই তুমি কথা দিয়েছিলে আমাকে বাবা। কিছু দিন আগে পর্যন্ত শুধু আমি তোমার জীবনে ছিলাম কিন্তু আজ তোমার সাথে দুটো জীবন জড়ায় আছে আমি আর মেঘ।
কাল তোমাদের সন্তান ও আসবে।
তার পর কি হবে?
তোমার একটা ভুলের জন্য আমাদের পুরো পরিবার যে মেঘ আর যে বাবাকে তুমি এতো ভালোবাসো তারা আর হয় ত এ পৃথিবীতেই থাকবে না।
–বাবা আমি বেঁচে থাকতে যা আমি চাই তাই হবে তোমাদের কোন ক্ষতি অন্তত আমি হতে দিবো না।
–মহান আল্লাহ তায়লা কখন কি করেন বলা সম্ভব নয় বাবা আবার বলছি তুই ফিরে আয় জীবন টা তো চলছে নাকি।
–বাবা এটা আমার প্রতিশোধ যা না নেওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি নেই।
–দেখ বাবা একটা কথাই বলার আছে শুধু মেঘ মা তোকে অনেক ভালোবাসে। ও আসাতে আমার নিশ প্রাণ বাড়িটা আবার প্রাণ পেয়েছে।
আমার পরিবার পূর্ণ হইছে।
ওর কোব ক্ষতি হলে আমি কখনো তোকে ক্ষমা করব না।
–আমি বেঁচে থাকতে মেঘের কিছু হতে দিবো না।
তারা দু’জন কথা বলতে বলতে বাসার কাছে চলে আসে।
তাই দু’জন ই চুপ হয়ে যায়।
★★★
বাবা আর আমান মসজিদে গেছিল নামাজ পড়ে আসলেন।
কিন্তু তাদের মুখ বেশ মলিন দেখাচ্ছে।
আমি শিড়ি বেয়ে নিচে এলাম।
ওনারা আমকে দেখে হাসার চেষ্টা করল।
কিছুকি লুকাচ্ছে আমার থেকে বুঝলাম না।
–এই তোমাদের মুখ এমন মলিন ছিল কেন?
–কই রে মা তুই যে বাড়িতে আছিস সে বাড়িতে মলিন করে থাকা যায়।
–আচ্ছা বাবা চলো আজ তুমি আর আমি মিলে রান্না করি।।
–আচ্ছা কি রান্না করবি বল। তোর মাকে আমি রান্না করে দিতাম যখন আমান পেটে ছিল।
খুব অসুস্থ থাকতো তো তাই চেষ্টা করতাম ওর সব কাজ করে দিতে।
–তুমি খুব ভালোবাসতে তাই না বাবা।
–হুম পালিয়ে বিয়ে করেছিল তখন তোমার দাদী শাশুড়ি বেঁচে নাই।
তোমার মাকেও আমার বাবা খুব ভালোবাসতেন।।
বাবা কথা গুলো বলার সময় তার চোখে কোনে পানি চিক চিক করতে দেখে আমি বাবার হাত ধরলাম
–ধুর চিন্তা করো না আমার
মেয়েকে আমি তোমার সাথে বিয়ে দিবো।
বাবা হেসে দিলেন,
–হ্যাঁ সেই আাসায় আছি আমানের আরেক মা এর আসায়।
আমান আমাদের কথা শুনে হাসছিল।
কিছু সময় পর আমি আমার কথায় লজ্জা বোধ করলাম ও যে সামনে আছে তা তো ভুলেই গেছিলাম।
আমি পরিস্থিতি সামাল দিতে রান্না ঘেরের দিকে গেলাম।
—ধুর আমিও না সব সময় পট পট করি একটু কম করলে কি হয় হ্যাঁ।
–নিজে নিজে কি বির বির করছো।
পেছনে তাকিয়ে আমানকে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললাম।
–আপনাকে বলব কেন?
–ও মা আমাকে বলবা না আমি না তোমার স্বামী।
–ও মা তাই জানতাম না তো।
–কি!
–কি!
–তুমি ভিশন পাজি।
–এই কই আমি পাজি আমি তে ভদ্র, লক্ষি মেয়ে।
–হ্যাঁ বাবুর আম্মু। হবে কিছু দিন পর।
–আমি রান্না করছি আমাকে জ্বালাবেন না মোটেও।
–এ মা আমি তো কিছুই করলাম না এখনো এটুকু তে হয়রানি।।
কথাটা বলে আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন,
–বাবা তুমি আসবে না।
–এই মেয়ে আসলেই পাজি
বলেই ছেড়ে চলে গেলেন।
তার ওই মুখটা দেখার মতো ছিল।
আমার বুথুম পেঁচা।
হাহা।
চলবে,#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_১৪
বাবা আর আমি মিলে অনেক রকম রান্না করলাম।
বাবা বেশ মজার মানুষ।
আমাদের হাসি মুখ দেখে নামতেই দেয় না।
এমন এক জন মানুষ তিনি।
প্রায় ২ ঘন্টার মধ্যে সব রান্না হয়ে গেল।
খাবার টেবিলে সব সাজিয়ে রাখলাম।
এক সাথে সবাই মিলে খেয়ে নিলাম।
খাবার শেষ করে বাবা গেলেন বাইরে।
আমি রুমে এসে জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরে দেখছি।
এখান থেকে সামনের দৃশ্য টা বেশ সুন্দর আমার বাসা থেকে তো শুধু বিল্ডিং আর বিল্ডিং দেখা যেত কিন্তু এখান থেকে বেশ সবুজ সৌন্দর্য দেখা যায় ।
আমি আমার মতো বাইরে দেখতে ব্যাস্ত ঠিক তখনি মনে হলো কেউ পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে।
আমার তো বুঝতে বাকি নেই সে কে।
তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।
–কি দেখে আমার মেঘ?
–সবুজ গাছ।
–আচ্ছা আমাকেও একটু দেখো তোমার জন্য বসে থাকি দিন ভর।
–ও আচ্ছা তাই।
–এক দম তাই।
–তাহলে একটা কাজ করা যায়।
–কি কাজ।
–একটা ছবি টানানো যায় এ ঘরে আপনার সেখান থেকে দেখা যায়।
–আমি তাজা তন্য তোমার সামনে থাকতে তোমার ছবির দরকার কেন?
–আপনি সমানে থাকলে তো দেখা কম দুষ্টুমি বেশি হবে তাই।
–ওরে পাজি তাই তো এখনো তো দুষ্টুমি শুরুই করলাম না।
কথাটা বলেই আমার পেটে সুরুসুরি দিতে শুরু করে,
–এই না আমার ভিশন সুরুসুরি প্লিজ না।
কে শুনে কার কথা সে তো হাত দিয়ে তার খেলা খেলছে এদিকে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেছে আমার,
–আল্লাহ প্লিজ আর না আর হাসতে পারছি না প্লিজ।
মেঘের কাহিল অবস্থা দেখে আমান ছেড়ে দিলো মেঘ কে।
–কি এতেটুকু তে কাহিল।
–এটাকে এতোটুকু বলে (হাঁপাতে হাঁপাতে)
পাজি বর যাহ কথা নাই।
–ওরে বাবা বৌ দেখে রাগ করে আসো রাগ ভাঙিশে দেয়।
–এই না খবরদার দুরে যাও আমি আর হাসতে পারব না পেটে খিল ধরে গেছে।
–আচ্ছা আর কিছু করছি না আসো।
–না আসবো না।
–এসো।
–না।
–আচ্ছা তবে আমি আসছি,
কথাটা বলে আমান এগোতে নিলে আমি দিলাম দৌড় ।
কিন্তু বেশি দুর যেতে পারি নি তার আগে ধরে ফেলেছে,
–এবার কি হবে,
–আপনার এতো বড়ো বড়ো হাত যে আমি ধরা খেয়ে যাই।
–ও বাবা তাই নাকি।
–হয় 😑
–আচ্ছা ঠিক আছে তবে লুকোচুরি খেলা যাক।
–সত্যি (উত্তেজিত হয়ে)
–হুম সত্যি ।
তুমি লুকাবে আমি খুঁজবো।
যদি খুঁজে পাই এই বাড়ির মধ্যে তাহলে তুমি আমাকে তা সব করতে দিবে যা আমি দিন ভর করতে চাই। আর যদি না পাই ২০ মিনিটের মধ্যে তবে তুমি যা চাও তাই।
–ওকে ডান ছাড়ুন৷
–ওকে
তাহলে আপনি ৫০ পর্যন্ত কাউন্ট করবেন ।
–হুম ডান তোমার সময় শুরু হলো,
১,২,৩….
আমান গুনতে থাকলেন আমি দৌড়ে বেরিয়ে এলাম।
সামনে থাকা স্টোর রুমের মতো ঢুকলাম।
সেখানে অন্ধকার এর মধ্যে নিশ্চিত খুজে পাবে না।
হালকা আলো আসছে বাইরে থেকে থাই গ্লাসের ওপার থেকে।
সেই মৃদু আলোতে আমি একটা বই রাখা rack মনে হলো তার পেছনে গিয়ে লুকালাম।
আমি তার পেছনে যেতেই কিছু একটা পরার শব্দ হলো,
–এই রে ফেসে গেছি এবার ধরে ফেলবে।
জলদি করে সেটাকে ওঠাতে গিয়ে একটা ছবি দেখতে পেলাম।
৪০-৫০ বছর বয়সের কোন পুরুষ মানুষের মনে হলো।
ছবির পেছনে প্রোফেসর আর একটা নাম লেখা বুঝা যাচ্ছে না কিন্তু তার পাশে খান লেখা।
বুঝা যাচ্ছে কোন প্রোফেসর তার কোন নাম এর পদবি খান হিসাবে লেখা।
কিন্তু এটা কে।
আমি বেশ অবাক হলাম ছবিটা দেখে এনাকে আমি কখনো দেখি নি।
ছবি নিশে পর্যবেক্ষণ করছিলাম ঠিক তখনি কেউ ঝড়ের গতিতে আমার থেকে ছবিটা নিয়ে নিলো।
আমি সামনে তাকিয়ে আমানকে দেখতে পেলাম।
ভ্রু কুচকে তাকালাম।
উনি কিছুটা সাভাবিক হয়ে বললেন,
–ধরে ফেলেছি মেঘ ২০ মিনিট এখনো হয় নি।
–ওকে আগে আমাকে একটা উত্তর দিন।
–উত্তর পরে আগে দেখি তোমায় দিয়ে আজ কি কি করাবো।
–আমান কিন্তু,
উনি আমাকে এভোয়েট করে আমাকে কোলে তুলে নিলেন,
–আরে আমি হাঁটতে পারবো,
–না আমি যা বলব তাই,
আমি কিছুটা অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলাম।
সে আমাকে নিয়ে রুমে এলো,
–কি হলো এভাবে কি দেখো।
–আমি কিছু,।
–কাপড় পরো তোমার বাসায় যাবো আজ।
–কি!
–কি না জি।
–সত্যি,
–হ্যাঁ সত্যি কাপড় বদলে নেও আমি অন্য রুমে রেডি হচ্ছি।
–ওকে।
আমি মহা খুশিতে কাপড় নিয়ে বাধরুমে গেলাম৷
মেঘ উত্তেজনার বসে সবটা ভুলে গেল।
,
সুন্দর করে রেডি হয়ে নিলাম।
আমার রেডি হবা শেষে আমান আসলো।
ওকে দেখে আকাশ জুড়া হাসি দিলাম।
ও মুচকি হেসে বলল,
–চলো,
আমি ওনার সাথে বার হলাম,
–আচ্ছা বাবা!
–বাবাও আসবে কিন্তু আলাদা।
–ওহ তাহলে অনেক মজা হবে।
–হুম।
আমান গাড়ি চালাতে চলাতে বলল।
কিছু সময় পর আমরা আমার বাসায় পৌঁছে গেলাম।
মা বাবা আমাদের দেখে মহা খুশি,
চলবে,
(আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত গল্প ছোট হবার জন্য আসলে আমার মা অসুস্থ তাই আমি একটু ব্যাস্ত ছিলাম সারা দিন আসা করি আমার অবস্থা বুঝবেন। আর বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন রিচেক দেয় নি
ধন্যবাদ)
(বানান ভুল ত্রুটি হলে অগ্রিম ক্ষমা প্রার্থী)