সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব -১৪

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৪
,
,
,
,
আদ্রি বর্ডিগার্ড রা গান লোড করে নিজেদের প্রস্তুত করছে এরই মাঝে সেখানে ড্যানিও উপস্থিত হলো। কালো গাড়ি থেকে বের হয়ে এলো মুখশ ধারী লোক। তারা আদ্রির গাড়ির ডোর খুলার জন্য হাত বারাতে নিলেই কোথা থেকে গুলি এসে ঝাঝড়া করে দিলো লোক গুলোর হাত মহূর্তে তাদের দেহ লুটিয়ে পরলো রাস্তাই। হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হলো পুলিশের গাড়ি। ড্যানি অতিদ্রুত তাদের নিয়ে রওনা হলো হস্পিটালের উদ্দেশ্য তাদের পিছনে গেলো আর ৩টি গাড়ি। কিন্তু তাদের আড়ালে।

হস্পিটালের সামনে গাড়ি থামতেই। তারা আদ্রিকে নামাতে নিলেই ঝড়ের গতিতে কোথায় থেকে নির এসে আদ্রিকে কোলে তুলে ভিতরে প্রবেশ করলো।ড্যানি বাদে সবাই অবাক হয়ে গেলো।

নির ভিতরে ঢুকেই পাগলের মতো ডাক্তার কে খুজতে শুরু করলো ড্যানি ততোক্ষনে আদ্রিয়ানকে জানিয়ে দিয়েছে।ডাক্তার এগিয়ে এসে নির এর সামনে দাড়াতেই নির ছোট বাচ্চার মতো কাদো কাদো গলায় শিক্ষানো বুলির মতো আওড়াতে শুরু করলো

—ডাক্তাত প্লিজ কিছু একটা করেন। আমার বার্বি কে ঠিক করে দেন দেখেন তাত রক্ত পড়ছে সে রক্ত ভয় পায় প্রচুর প্লিজ ওর রক্ত মুছে দেন নাহলে ওই ভয় পেয়ে যাবে।

শক্ত গম্ভির গলায় বাচ্চাদের মতো করা পুরুষের আবদার শুনে ডাক্তার কিছুক্ষনের জন্য হতদম্ভ হয়ে গেলো মুখের ভাষা যেনো হারিয়ে গেলো তার মহূর্তে।নিজেকে ধাতস্থ করে বলে উঠলো

—দেখুন এটা পুলিশ কেশ বিনা পুলিশের অনুমতিতে আমি উনার চিকিৎসা করতে পারবোনা আগে আপনি পুলিশের কনফর্মেশান নিয়ে আসুন

মহূর্ত অশ্রু সিক্ত নয়ন হয়ে উঠলো লাল বর্ণের ন্যায় ভয়ংকর আৎকে উঠলেন ডক্টর এরই ই মাঝে একজন ওয়ার্ড বয় এসে ডাক্তার এর উদ্দেশ্য বলে উঠলো

—স্যার আপনি নতুন তাই মনে হয় জানেন না ইনি নির চৌধুরী সাইকোলজিস্ট আর মাফিয়াও(ফিসফিস করে)প্লিজ স্যার এডমিট করে নেন উনি যে ভাবে বলছেন তার মানে এই ম্যাম উনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ্য উনার কিছু হয়ে গেলে উনি আপনাকে কেন এই হস্পিটালকে জ্বালিয়ে পুরিয়ে দিতে পিছপা হবেনা।সেধে সেধে মৃত্যু দূত কে আগমনের নিমন্ত্রণ দিয়েন না

ডাক্তার একবার নির এর দিকে আরেকবার পিছনের গার্ড দের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে ওয়ার্ডবয় দের স্ট্রেচার নিয়ে আসতে বললেন। সাথে সাথে ৩ জন্য ওয়ার্ডবয় স্ট্রেচারে করে আদ্রিকে অপরাশেন থেয়াটারে নিয়ে গেলেন।নির যেতে নিলে ডাক্তার মানা করতেই নির ডাক্তারের কলার ধরলো

—তোর ধারণা নেয় তুই কাকে আটকাচ্ছিস চুপ চাপ আমাকে ভিতরে যেতে দে নাহলে তোকে উপরে পাঠানোর দ্বায়িত্ব নিতে সময় নিবোনা।

ডাক্তার ভয় পেয়ে চলে গেলো ওয়ার্ড বয় কাপা কাপা হাতে ড্রেস দিয়ে দিলো। নির বিনা সময় পার করে পরে ভিতরে ঢুকে থমকে গেলো।রক্ত দিয়ে লেপ্টে আছে তারা হৃদয়হরনীর শরীর। নির এর দম আটকে আসতে শুরু করলো পারলোনা নিজেকে সেখানে দাঁড়িয়ে রাখতে বেরিয়ে এলো।

বাহিরে বেরিয়ে আসতেই তার চোখ গেলো রিয়াজ এর দিকে। তাকে দেখতেই হাটু গেড়ে বসে পড়লো তার সামনে

—১৭ বছর থাকতে এই হাতে তুলে নিয়েছিলাম বন্দুক নামক অস্ত্রটি এই হায়ে কতো মানুষের রক্তে মেখেছি কোন দিন কারো রক্ত দেখে নিস্বাস আটকে আসেনি নিজেকে অসহায় লাগেনি তাহলে আজকে কেনো নিজেকে এমন মনে হচ্ছে অসহ্য লাগছে নিজেকে কেন পারিনি তাকে সেফ রাখতে কেনো কেনো কেনো। আমার বার্বি কে আমাকে ফিরিয়ে দে রিয়াজ ওই ছাড়া আমি বাচবোনা ওই ছাড়া কেউ নেই আমার কেউ না।

রিয়াজ দাঁড়িয়ে থেকে নিজের ভাইয়ের হাহাকার শুনছে।যে ছেলেটাকে সে জীবনে একটা বার কান্না করতে দেখেছে ভেংগে পড়তে দেখেছে সে ছেলেটা আজ পুনরায় ভেংগেছে আজ পুনরায় তার চোখে জ্বল। নারী পারেনা এমন কোন কাজ নেয় তাই তো পাথরের তৈরি হ্ররদকে পুনরায় গলিয়ে দিয়েছে। আর তার প্রমান সরূপ এই অশ্রু।।

নির ফ্লোরে হেলান দিয়ে বসে আছে আখিদ্বয় স্থির তার ওটিতে জ্বলা লাইটার দিকে।ঠিক ১১ বছর আগে সে যেখানে শেষ হয়ে নতুন ভাবে গড়ে উঠেছিলো আজকেও সে ঠিক সে জায়গায় শুধু তফাৎ এই খানেই যে তখন ছিলো জন্মদাত্রী মা আর এখন তার পাজরের বাকা হার দিয়ে তৈরি মেয়েটা।

চোখের সামনে ভেসে উঠে ১১ বছর আগের সৃতি।

ছোট ছোট পা নিয়ে পুরো বাসায় দৌড়া দৌড়ি করছে ছোট একটা পুতুল হাতের নিচে রয়েছে ছোট পুতুল।তার পিছনে এক নারী ভাতের থালা নিয়ে দৌড়াছে।কিন্তু কিছুতেই তাকে নাগাল এ পাচ্ছেনা হঠাৎ পুতুল টা পড়ে যেতে নিলেই খপ করে ছোট নির এসে ধরে নেয় তার পুতুলের ছোট শরীর টা।ভয়ে নির এর বুকে ঘাপটি মেরে যায় পুতুল টা। হঠাৎ নির এর বুকের বামপাশে থাকা হৃদয় টা লাফাতে শুরু করে প্রচন্ড গতিতে। নির পুতুলকে আরকটু জোড়ে আকড়ে ধরতে নিলেই পিছন থেকে মেয়েলি স্বর তার কানে আসে

—উফফ খালি সারাদিন এই মেয়ের দৌড়াদৌড়ি এখনি।পড়ে গেলে কি হতো নির বাবা নামাও এই পাজিকে।আজকে এর খবর আছে।

মায়ের রাগী কন্ঠ শুনে আদ্রি আরো শক্ত করে আকড়ে ধরে নির কে যেনো এটা তার আশ্রয় স্থল

—এটা কে খালামনি

—এটা তোর পিচ্চি পুতুল বউ

খালামনির কথায় নির লজ্জা।পেলেও পুতুলের।দিকে তাকিয়ে আনমনেই বলে উঠে

—”পুতুল বউ না আমার।বার্বি ডোল আমার বার্বি বউ

১৭ বছরের নির এর মনে দাগ কেটে যায় ৯ বছরের পিচ্চিটা। বয়সের তুলনা উচ্চতা কম বলে যেকেউ দেখে বলবে ৫ বছরের নাদুস নুদুস একটা পরী। সে পরিতেই আবদ্ধ হয়ে যায় নির এর কিশোর মন টা। তারপর থেকে লন্ডন ফেরত নির বিনা কারনে আদ্রির বাসায় চলে এসে সারাদিন তার বার্বির সাথেই কাটিয়ে দিতো। এদিকে লন্ডনে ফিরার দিন ও কাছে এগিয়ে আসছিলো হঠাৎ একদিন বাড় ফিরতেই তার কানে যায় তার বাবা মায়ের তুমুল ঝগড়া এর আগে কোন দিন নির তাদের এই ভানে ঝগড়া করতে দেখেনি যার।কারনে সে।এসবে অভস্ত নই সে রুমে প্রবেশ করতেই দেখে আশ্চর্য ঘটনা

নির এর মা মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় বসে আছে। নিহাল এর হাতে চাবুক নির ভয়ে মা বলে চিল্লায়ে উঠতেই দুইজনের নজর যায় নির এর দিকে নিহাল চাবুক ফেলে সেখান থেকে চলে নির যেয়ে মা কে বুকে জড়ায় ধরে । এরই মাঝে সেখানে উপস্থিত হয় নিহাল আহমেদ এর ভাই নিশান চৌধুরী এবং নাহিদ খানের ভাই হামিদ খান নির কে নিলিমার থেকে সরিয়ে ছোট ১৭ বছরের ছেলের।সামনে তার মা কে খুবলে খেতে শুরু করে। ছোট নির এর হাজারো আকুতি মিনুতি কারো কানে যায় নি দরজার বাহির থেকে।সব কিছু দেখে ছোট আদ্রিও ভয়ে।সিটিয়ে যায়। দুই জা****** নিজেদের।কাজ করে বেরিয়ে পরে সেখান থেকে। নির অনেক কষ্টে মায়ের শরীরে কাপড় জরীয়ে রিয়াজ আদ্রিয়ান এর সাহায্য নিলিমাকে নিয়ে পৌঁছায় ডাক্তারের।কাছে।

কিন্তু তারা এটা যানতোনা এই ভয়ংকর খেলা তার।মা তে।সীমাবদ্ধ ছিলোনা সেটার স্বিকার হয়েছিলো আদ্রির মাও। সে নাহিদ খান এর ফোন কলে বলা কিছু এমন কথা শুনে নেয় যা তার জীবনে কাল হয়ে আসে। হাজারো আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করা হয়েছিলো আদ্রির মায়ের শরীর। ছোট আদ্রির।সামনে।এতো সব একদিনে সহ্য করতে।পারেনি ছোট আদ্রির মস্তিষ্ক

বাবার সামনে হাত জোড় করে মিনতি করেছিলো

—রক্ত রক্ত বাবা ভয় রক্ত মেরোনা ব্যাথা ভাইয়া ভাইয়া দেখো রক্ত তুমি কই ভাইয়া বাচাও ভাইয়া ব্যাথা।

ছোট আদ্রির হাজারো আর্যি কানে তুলে নি নাহিদ একসময় ক্লান্ত হয়ে নাহিদ।সেখান থেকে প্রস্থান নেয়। আদ্রির মা অনেক কষ্টে।চৌধুরী বাড়ির দিকে।রওনা হয় পিছনে তার ছোট আদ্রি। নওরিন বেগম সেদিন বড় বোনের আশ্রয়ে যেতে চেয়েছিলেন আর সেটাই তার কাল হয়ে দাঁড়ায় যেখানে নিলির হাতে নিশ্রংস্ব ভাবে খুন হতে হয় তাকে।

নিহাল চৌধুরী খুব সাবধানে সব প্রমান মিটিয়ে দেয় কারন নির পুলিশ কে জানিয়ে দিয়েছিলো। যার কারনে নিহাল চৌধুরী পুলিশ কে টাকা খাওয়ে আদ্রিকে শিশু জেলে ঢুকিয়ে দেয়। নিলি কে পাগল সাবস্ত করে কোরিয়ার।সোল শহরের মেন্টাল হস্পিটালে ভর্তি করান। ১৭ বছরের নির কে ঠেলে দেয় অন্ধকার দুনিয়াতে।

কিন্তু এখনো আদ্রি আর নির এর এটা অজনা সেদিন কি হয়েছিলো কি এমন শুনেছিলো নিলিমা আর।নওরিন কেনোই বা ছোট আদ্রিকে জেলে ঢুকানো হলো আর।কে বা ছাড়ালো তাকে।

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here