সেই মেয়েটি আমি নই _ ৫ম পর্ব
ইশতিয়াক টাকা দিয়ে তুলির কাছে আসে। ওর মুখের দিকে ভালোভাবে তাকায়, কেমন বিপর্যস্ত চেহারা, হয়তো ভয় পেয়েছে ভীষণ। সে হাত পিঠের দিকে নিয়ে তুলিকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– ‘চলো যাই।’
খানিক হেঁটে ইশতিয়াক পুনরায় বললো,
– ‘তোমাকে এরকম দেখাচ্ছে কেন? মন খারাপ?’
তুলি নিজেকে আর সামলাতে পারে না। ইশতিয়াকের বুকে মুখ লুকোয়, পুরো শরীর ‘ফ্যাসফ্যাস’ কান্নায় কেঁপে উঠে।
ইশতিয়াক বাঁ হাতে ওর থুতনি ধরে তুলে চোখের জল মূছে দিতে দিতে বললো,
– ‘আরে কাঁদছো কেন বোকা? এরকম কত হয় মানুষের সঙ্গে। তাছাড়া আমরা বিবাহিত হয়েও ওইখানে কিছুই তো করিনি। তবুও পুলিশ বলেছে ভিডিয়ো-টিডিয়ো করে থাকলে ডিলিট করে দিতে। কেঁদো না, চলো আস্তে আস্তে যাই। সামনে গিয়েই রিকশা নিয়ে সোজা বাসায় চলে যাব। টিস্যু দিয়ে চোখ-মুখ মূছে নাও।’
ইশতিয়াকের স্বাভাবিক আচরণ দেখে তুলি মনে মনে ভীষণ খুশি হয়। সবকিছুই পজিটিভলি নিচ্ছে মানুষটা। ভ্যানিটিব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে তুলি মুখ মূছে নেয়।
এবার একফাঁকে ওই নাম্বারও ব্লক করে দিতে হবে। আগেরটা ব্লক করে দেয়ার পরও আরেকটা দিয়ে কল আর মেসেজ দিয়েছে! কয়টা সিম কে জানে। যখন-তখন কল এলে তাদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি হতে পারে। আচ্ছা ইশতিয়াককে কি ছবিগুলোর বিষয়ে বলবে? আগবাড়িয়ে বলার পর যদি সন্দেহ করে? বিয়েটাও হয়েছে বেশিদিন হয়নি। সবেমাত্র এক মাস হল। তবে চেনা-জানা অনেক আগে থেকেই।
তখন মুগদা তাদের বাসায় ইশতিয়াক ভাড়াটিয়া হিসাবে উঠে। পড়ালেখা শেষ করে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করছিল। নিজের পরিবারের সঙ্গে তার সব সময় ঝামেলা লেগে থাকে। কারও সঙ্গে বনি-বনা হয় না। এখনও তেমন নেই। এটাইই মূল সমস্যা কি-না আরও কিছু আছে তুলি জানে না। ব্যাংকে চাকুরি হওয়ার পর মা-বাবাকে দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ইশতিয়াক৷ তুলিও রাজি হয়ে যায়। খুবই ঘরোয়া পরিবেশে বিয়েটা হয়। বলতে গেলে ইশতিয়াকই এতো আয়োজন চায়নি। বিয়ের সময় ইশতিয়াকের বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন। বিয়ে শেষে সোজা নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে ইশতিয়াক। তার মা-বাবাও ছেলের কথার বিরুদ্ধে যাননি। কেন যেন ওরা ইশতিয়াককে নিজের মতো থাকতে দেন। কোনো কিছুতে ঘাটাতে যান না। এর পুরোপুরি কারণ তুলি বের করতে পারেনি। কেবল ওরা বলেছিল, ‘বউমা আমাদের ছেলেটা হুটহাট অনেক বেশি রেগে যায়। তুমি মানিয়ে নিয়ো মা’ তার মানে ওরা হয়তো ইশতিয়াককে কিছুটা ভয়ও পায়।
– ‘কি হলো এতো চুপচাপ কেন?’
ইশতিয়াকের প্রশ্নে তুলি ভাবনার ভুবন থেকে বাস্তবে ফিরে আসে।
– ‘না কিছু না।’
– ‘মন খারাপ?’
– ‘না, শুধু একটু ক্লান্ত লাগছে।’
– ‘এইতো রাস্তায় চলে এসেছি। একটা রিকশা নিয়ে সোজা চলে যাব।’
ইশতিয়াক রিকশা ডেকে আনে। দু’জন রিকশায় উঠে বসে। ওর পিঠের দিকে হাত নিয়ে জড়িয়ে ধরেছে ইশতিয়াক। তুলিও কাঁধে মাথা রেখে। কিন্তু আশপাশের কিছুই যেন দেখছে না, শব্দ কানে আসছে না। মাথায় কেবল উপর্যুপরি চিন্তার ঝড় বইছে৷ অচেনা নাম্বারের ছেলেটি আসলে কে? তাকে চেনে কিভাবে? নাম্বারই বা পেল কোথায়? আর তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি, লিপকিসের ভিডিয়ো? এগুলো কিভাবে সম্ভব? যে ছেলেকে চেনেই না তার সঙ্গে নিজের এমন ছবি কিভাবে? নিশ্চয়ই এডিট করা। তার তো আর স্মৃতিশক্তি লোপ পায়নি যে অতীত ভুলে গেছে। কেউ চাচ্ছে হয়তো ইশতিয়াকের সঙ্গে তার সুখের সংসার ভেঙে যাক। ছেলেগুলোকে যেহেতু টাকা দিয়েই এসেছে। ওদের দিক শেষ। সুতরাং বিষয়টি আপাতত ইশতিয়াককে না জানানোই ভালো। সম্পর্কে সেধে সেধে তৃতীয় পক্ষ ঢোকানোর মানেই হয় না।
– ‘ওই লোকাল দুইটা ছেলে কিসব বলাবলি করলো?’
ইশতিয়াকের প্রশ্নে তুলি ভেতরে ভেতরে কেঁপে উঠে।
– ‘কি বলেছে?’
– ‘আমি পুরোপুরি শুনিনি। তোমাকে কিসের জন্য ব্ল্যাকমেইল করতে চাইছিল। তুমি না-কি টাকা নেই বলেছো এসব দূর থেকে শুনলাম।’
তুলি সুস্থির নিশ্বাস নেয়, তারমানে ইশতিয়াক বিষয়টি ভালোভাবে বোঝেনি।
– ‘হ্যাঁ, ওরা টাকা চাইছিল। বললো আমরা কি করেছি সব ভিডিয়ো আছে৷ আমি টাকা দিলে এগুলো ডিলিট করে দেবে। আমরা কি এমন করেছি বলো? তাদের কেন ভয় পেয়ে টাকা দেবো। তাই বলেছি আমার কাছে টাকা নেই।’
– ‘ভালো করেছো, সবগুলোই ধান্ধাবাজের দল। তুমি বোর হচ্ছ দেখে ঝামেলা মিটমিট করে চলে এলাম। না হয় দেখতাম কিভাবে টাকা নেয়।’
তুলি আরেকটু ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে বললো,
– ‘থাক ঝামেলা না করায় ভালোই হইছে।’
খানিক দূরে যেতেই রাস্তায় জ্যাম৷ রিকশা থেমে আছে অনেক্ষণ। তুলি ওর কাঁধে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে চোখবুজে মাথা রাখে। পাশেই ফুসকা ও বাদামওয়ালা দেখে ইশতিয়াক হাত ইশারায় ডেকে ফুসকা এবং বাদাম নেয়। তুলি কিছুই বুঝতে পারছে না। সে হয়তো ঘুমিয়েই গেছে। ইশতিয়াক এক হাতে তাকে বেঁধে রেখেছে।
বাসায় পৌঁছাতে তাদের সন্ধ্যা হয়ে গেল।
তুলির মাথা ভীষণ ভার ভার লাগছে। তাই এসেই ফ্রেশ না হয়ে বিছানায় শুয়ে গা ছেড়ে দেয়। ইশতিয়াক ফ্রেশ হয়ে এসে বললো,
– ‘শুয়ে থাকো, কিন্তু অসময়ে ঘুমিয়ে যেও না। আমি কফি জ্বাল দিয়ে নিয়ে আসছি।’
তুলি মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়। লোকটা এতো যত্ন নেয়। দিনকে দিন ভীষণ মায়ায় জড়িয়ে গেছে। ইশতিয়াক রুম থেকে বের হয়ে রান্নাঘরের দিকে যেতেই তুলির মনে পড়ে যায়। ফোনটা হাতে নেয়। প্রথমেই ওই নাম্বার ব্লক করে, তারপর হোয়াটসঅ্যাপে গিয়ে ক্রোধে লিখে,
“tui asob picture r video Edite korachis ken? kun gorur baccha re tui? Tore j bollam chini na tar por o call dis ken? Basai ki ma bun nai? Ami ekjon bibahito meye agei bolechi, toke chini o na.. Tarpor o ken message ar call diyechis? Abar Amar picture edite kore pataiye voy dekhacchis kukurer baccha.. Tore nam A mamla korbo Ami.. Jelar vat khawabo.. Ager number block dichi ekhon arek number diye jalacchis.. R kokhono message dibina bollam..”
মেসেজটা সেন্ড করে ব্লক দেয় নাম্বার। রাগে এখন রীতিমতো তুলির শরীর কাঁপছে। আজ কেমন বিপদেই না পড়েছিল এই অচেনা লম্পটটার কারণে। খানিক পরেই ট্রে করে কফি নিয়ে এলো ইশতিয়াক।
– ‘এইযে ম্যাডাম, অবেলায় ঘুমানোর দরকার নেই। চলো বেলকনিতে বসে কফি খাই।’
– ‘উঠতেই ভালো লাগছে না।’
ইশতিয়াক মুচকি হেঁসে বললো,
– ‘আচ্ছা শুয়ে থাকো।’
কথাটি বলে সে ট্রে নিয়ে বেলকনিতে যায়। সেখানে দু’টা চেয়ার আছে। জায়গাটা ছোট্ট হলেও বসতে ভালো লাগে। মন ফুরফুরে হয়ে যায়। এখান থেকে রাতের আকাশ দেখতে দারুণ লাগে। নিচে তাকালেও পাড়ার বাসাগুলোর জানালার ফাঁক গলে রাতের তারার মতো বিন্দু বিন্দু আলো উঁকি দেয়।
ইশতিয়াক ট্রে রেখে তুলির পাশে গিয়ে বসে। তুলি ওর হাতটা গালে চেপে ধরে তাকায়। মানুষটা এত যত্ন করে, ভালোবাসে। ওকে কখনও হারাতে পারবে না তুলি। হাজার রাগী হোক, সে মানিয়ে নেবে।
‘কি হলো ম্যাডাম, এভাবে তাকিয়ে না থেকে উঠো’ কথাটি বলে ইশতিয়াক মাথার দিকে হাত নিয়ে আস্তে করে তুলে। আরেক হাত হাঁটুর দিকে নিয়ে পাঁজাকোলা করে কোলে নেয়। তুলি আবার কাঁচভাঙা হাসিতে ফেটে পড়ছে। ইশতিয়াক তাকে বুকের সঙ্গে আরও চেপে ধরে বললো,
– ‘এভাবে হাসলে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করে।’
তুলি ওর কাঁধে মুখ লুকিয়ে ফিসফিস করে বললো,
– ‘আমার এত ভাগ্য ভালো কেন আমি ভেবে পাই না৷ কি করে আপনার মতো বর পেলাম?’
– ‘বাব্বাহ তাই?’
– ‘জি, তবে আমার প্রায়ই মনে হয় এই সুখ আমার দীর্ঘস্থায়ী হবে না।’
– ‘তা কেন?’
– ‘জানি না, অবচেতন মন বলে।’
বেলকনিতে এসে ইশতিয়াক তাকে চেয়ারে বসায়। তুলি রসিকতা করে বলে,
– ‘আপনার কোলেই ভালো লাগছিল, শরীরের উষ্ণতায় কেমন ওম ওম লাগে।’
ইশতিয়াক ওর হাতে কফির কাপ তুলে দিয়ে বললো,
– ‘আমার বউটা যেরকম চাচ্ছে সেরকমই হবে, আগে কফি খেয়ে নাও তারপর।’
– ‘তারপর কি হবে?’
– ‘পরেরটা পরে, আগে কফি শেষ হোক। তোমার ঘুম ঘুম ভাব কেটে যাবে।’
তুলি কফিতে চুমুক দেয়। খানিক্ষণ নীরবতায় কেঁটে যায়৷ নীরবতা ভাঙে ইশতিয়াক।
– ‘তুমি এখনও ‘আপনি’ বলো। ‘তুমি’তে কবে আসবে আর?’
– ‘আসবো না, ‘আপনি’ বলতেই ভালো লাগে।’
– ‘তা কেন? তাহলে কি আমিও আপনি ডাকবো না-কি?’
– ‘জীবনেও না, ‘তুমি’ বলবেন। আপনার মুখে আমার নামও ভীষণ ভালো লাগে।’
ইশতিয়াক রসিকতা করে বললো,
– ‘তাহলে আমি ‘তুই’ ডাকবো।’
– ‘একদম না, বরের মুখে ‘তুই’ খুবই বিশ্রী লাগে। ‘তুমি’ সুন্দর।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
দু’জনের কফি শেষ হতেই ইশতিয়াক কাপ রেখে শীতল পাটি নিয়ে এলো।
– ‘একটু রুমে যাও তুলি।’
তুলি গেলে সে চেয়ার দু’টা বের করে শীতল পাটি বিছিয়ে নেয় বেলকনিতে।
– ‘আসো, বসো এসে।’
– ‘এত আয়োজন কিসের জনাব?’
– ‘বসো, আসছি আমি।’
ইশতিয়াক গিয়ে বাদাম আর ফুসকার ব্যাগ নিয়ে এলো৷ মোবাইলে মৃদু শব্দে ছেড়ে দিল তার প্রিয় কবির প্রিয় গান,
‘সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে……. যেতে যেতে পথে পূর্ণিমারাতে…… এখন আমার বেলা নাহি আর বহিব একাকী বিরহের ভার……’
ইশতিয়াক পলিথিনের ব্যাগ থেকে ফুসকা আর বাদাম বের করে সামনে রাখে।
তুলি অবাক হয়ে বললো,
– ‘এগুলো কখন নিলেন খেয়াল করিনি তো।’
– ‘তুমি ঘুমাচ্ছিলে তখন।’
– ‘কিন্তু রিকশা থেকে নেমে রুমে এলাম তাও খেয়াল করিনি।’
– ‘হুম তুমিই জানো কোথায় মন পড়ে আছে তোমার।’
তুলি আর সেদিকে কথা বাড়াতে গেল না। সে এড়িয়ে গিয়ে বললো,
– ‘জায়গাটা অনেক ভালো লাগছে। পাটিও মাপমতো এনেছো দেখছি।’
– ‘আমি রোজই এখানে এসে সন্ধ্যায় একা একা বসে গান ছেড়ে সিগারেট টানতাম।’
– ‘এই ভালো কথা মনে করছেন। আপনি সিগারেট খান জানি৷ কিন্তু গন্ধও তেমন পাই না, আবার আমার সামনেও খান না, তা কেন?’
– ‘তুমি অপছন্দ করতে পারো ভেবে।’
– ‘আরে না, আমার না ছেলেদের সিগারেট খেতে দেখলে অসম্ভব ভালো লাগে। ছেলেদের সিগারেট খাওয়ার ভাবটাই আলাদা। কেমন টান দেয়, আর ধোঁয়া ছাড়ে। কিন্তু আমি দেখেছি অনেক মেয়েরা নিয়মিতও খায়, তবুও তাদের মানায় না। সিগারেট যেন ছেলেদের একান্ত ব্যক্তিগত অলংকার। যেরকম মেয়েদের নাক, কানে দুল, কপালের টিপ।’
– ‘বাবা সিগারেটকে মহিমান্বিত করে ছাড়বে দেখছি।’
তুলি ফিক করে হেঁসে বললো,
– ‘সিগারেট খাওয়া অবশ্যই ক্ষতিকর, না খাওয়া ভালো। মানে সিগারেট খাওয়া অবস্থায় ছেলেদের দেখতে আরকি কেমন হিরো হিরো লাগে।’
ইশতিয়াক হেঁসে বললো,
– ‘যাইহোক, এখন তুমি আমার কোলে বসে বুকে পিঠ ঠেকিয়ে উষ্ণতা আর ওম ওম ভাব নিয়ে ফুসকা খেতে পারো।’
– ‘এভাবে তো আপনাকে দেখা যাবে না।’
– ‘বাইরের আকাশ দেখবে।’
– ‘না আমার আপনাকেই দেখে গল্প করে করে ফুসকা খেতে হবে।’
ইশতিয়াক ওকে টেনে কোলে বসিয়ে বললো,
– ‘কিন্তু আমার তো এরকম বসে গল্প করতে ইচ্ছা করে।’
তুলি খিলখিল করে হেঁসে উঠলো। ওর হাসিকে ছাপিয়ে রুম থেকে ভেসে এলো মোবাইলের রিং টিউন। বুকটা কেঁপে উঠল তুলির।
– ‘তোমার ফোনে কল এসেছে মনে হয়।’
তুলি উঠতে যাচ্ছিল। ইশতিয়াক তাকে বাঁধা দিয়ে বললো,
– ‘তোমার উঠতে হবে না, আমি এনে দিচ্ছি।’
ইশতিয়াক মোবাইল নিয়ে ফিরে এসে তুলির দিকে বাড়িয়ে দেয়। নাম্বার দেখে তুলির বুকে ধুকপুকানি বেড়ে যায়,
– ‘আবার অপরিচিত নাম্বার।’
– ‘সকালের?’
– ‘না এটা আরেকটা।’
– ‘তাহলে রিসিভ করো। অন্যকেউ হতে পারে।’
– ‘না থাক।’
ইশতিয়াক আর কিছু বললো না। তুলি অস্বস্তিবোধ করছে। খানিক পর মেসেজ টিউন বেজে উঠলো। ফোনের দিকে তাকিয়ে তুলির শরীর যেন অসাড় হয়ে এলো। এই অচেনা নাম্বার থেকেই মেসেজ এসেছে।
– ‘কি হলো? কোনো সমস্যা? কিসের মেসেজ?’
তুলি যথাসম্ভব নিজেকে অবিকৃত রেখে বললো,
– ‘আর কিসের মেসেজ, গ্রামীণের অফিস থেকে।’
ইশতিয়াক ভুরু কুঁচকে তাকায়। তবুও কিছু বলে না। বেলকনিতে আড্ডা দিয়ে আজ রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমোতে যেতে দেরি হয় তাদের। তবুও মাঝ রাতে হঠাৎ ইশতিয়াকের ঘুম ভেঙে যায়। পাশে তুলি নেই। তখনই রাতের পিনপতন নীরবতায় বেলকনি থেকে কানে ভেসে এলো তুলির নিম্নস্বরে ফোনালাপ।
___চলবে___
সেই মেয়েটি আমি নই
লেখা: জবরুল ইসলাম