#সেদিন_মুষুলধারে_বৃষ্টি_ছিল
part–8
Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
মুহিবের হাতে থাপ্পড় খাওয়ার পর সেজুতি পাথরের মূতির ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে।চোখে আগুন জ্বলছে যেন তার। ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা রক্ত তাজা লাল বণের।
মুহিব আতকে উঠে৷ মাথা ঘুরাতে লাগে তার৷ সে চায়নি সেজুতিকে আঘাত করতে। কিন্তু হুট কিরে মাথা গরম হয়ে গেল ভুলে বা ইচ্ছাবশত হলেও মনের অনিচ্ছায় সেজুতিকে আহত করে ফেলেছে। কি করা উচিত তার এখন?
সেজুতি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মুখে কোন শব্দ নেই তার।
মুহিব বলে উঠে, সেজুতি আই এম সর্যি! আসলে,,,,,,,
— থাক। কিছু শুনতে চাই না আমি।
মুহিব ঢোক গিললো। কেমন শীতল কন্ঠে কথাটা বলল সেজুতি যে মুহিবের গাও শীতল হয়ে গেল।
সে নিজের একটা হাত ভয়ে ভয়ে সেজুতির হাতের উপর রাখল। তার মনে হলো হাত রাখার সঙ্গে সঙ্গে সেজুতি চেচিয়ে তুলকালাম ঘটাবে। কিন্তু এমন কিছুই হলো না।সেজুতি আগের ন্যায় মূতির মিতো দাঁড়িয়ে আছেব।কোন নড়চড় নেই তার মধ্যে। নিশ্বাস নেওয়ার সময় ও মানুষের শরীর দুলে সেই নড়চড় টাও চোখে পড়ছে না৷
মুহিব আরো একটু শক্ত করে তার হাতটা চেপে ধরে বলে, আমি কিন্তু খারাপ না। এই মূহুর্তে তোমার মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্যতম ছেলেটার সঙ্গে তোমার বিয়ে দেয়া হয়েছে তাই না?
সেজুতি হ্যা ও বললো না, না ও বললো না। নিশ্চুপ রইল সে। একটা সময় আসে যখন কথা বলতে ইচ্ছে করে না।
আমরা যখন অনেক আহত হই মনের দিক দিয়ে ঠিক সেই সময় মুখের বুলি হারিয়ে যায়।নির্বাক হয়ে পড়ি। প্রতিটা শব্দ মন খারাপের দিনে পাহাড় সমান ভারী হয়ে পড়ে। আবার যখন অনেক আনন্দে থাকি তখন কথা বলতে খুব ভালো লাগে। ব্যাপারটা সবার ক্ষেত্রে হয় কিনা সেজুতি জানে না।কিন্তু তার বেলায় এমনটা হয়!
সে কথা না বাড়িয়ে মুখ অন্য দিকে ফিরালো। মুহিবের চেহারা দেখলে ও তার ঘৃণা লাগছে৷
মুহিব হতাশ হয়। সে উত্তর আশা করছিলো। সে ভেবেছিল সেজুতি প্রতিত্তোরে বলবে, হ্যা। আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্যতম ব্যক্তি মুহিব ভাই।
ঘৃণা প্রকাশ করার চেয়েও বেশী ধারালো হলো নিরব থাকা! নিশ্চুপ, নিরবতা কালো আধারের মতো ভয়ানক।
মুহিব সেজুতির দুই গালে নিজের দুই হাত রাখতেই টের পেল সেজুতির গাল ভেজা। সে নিশ্চয়ই কাদছিলো। আহারে! মেয়েটার সাথে অন্যায় করে ফেলেছে সে। বড্ড বড় অন্যায়!
সে নরম স্নেহজড়ানো গলায় বলল, তুমি হুটহাট ডিভোর্স দিবে বললে তাই রেগে গিয়েছিলাম! ক্ষমা করে দাও। আসলে বিয়ে একটা পবিত্র বন্ধন। আশীর্বাদ স্বরুপ। আর তালাক হলো অভিশাপ। আম্মা কিন্তু সবার আগে তোমার কাছেই প্রস্তাব দিয়েছিল। তুমি রাজী ছিলে এজন্যই সে এই সম্পর্ককে আগে বাড়িয়ে একটা পরিনতি দিয়েছে। সবকিছুই তোমার মর্জিতে হয়েছে৷ তাই না?
এর উত্তর ও দিলো না সেজুতি।
মুহিব সেজুতির দিকে ঝুকে এসে বলে, খিদে পেয়েছে? সে এবারে উত্তরের আশা না করে বলল, আমি বাইরে থেকে খাবার আনছি। তুমি এক কাজ করো, এক কাপ চা বানাও। অসহ্য মাথা ব্যথা।
সেজুতি এবারে চোখ তুলে তাকালো মুহিবের দিকে। মুহিব হালকা হেসে পরম যত্নে সেজুতির ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা রক্ত,রুমাল দিয়ে মুছে দিলো। রুমাল পকেটে রাখা ছিলো।
মেয়েরা যতোই কঠোর হোক, কঠিন হোক, পাথর হোক কারো অসুস্থতার কথা শুনলে গলে যায়।। অসুস্থতার জন্য মেয়েদের মনে একটা দুর্বলতা আছে।
মুহিব মনে মনে বলে, এই যে এখন এতো ভালোবেসে তোমার যত্ন নিচ্ছি এরপরেও কি রাগ করে থাকবে? আরে বাবা। আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমার দ্বারা ভুল হতেই পারে। আমি কি হিমু? যে মহাপুরুষ হয়ে ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকব। তা তো না। সাধারণ কেউ একজন আমি। যে কিনা ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাতর!
সেজুতি কে বারান্দায় রেখে মুহিব বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। সে বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেজুতি হাটু গেড়ে বসে হাউমাউ করে কেদে দেয়।
★★★
মুহিব বেশ কিছু সময় ব্যয় করে লুচি, বুন্দিয়া আর কাবাব কিনলো। সঙ্গে হালিম নিয়ে ফেরার জন্য রওনা হলো। দিনাজপুরে সবসময়ই বুন্দিয়া পাওয়া যায়। এদিকে প্রায় সবাই সকালে বুন্দিয়া দিয়ে পরোটা, রুটি, লুচি খায়৷ কিন্তু ঢাকায় রোজা ছাড়া বুন্দিয়া খুজে পাওয়া বেশ মুশকিল। দিনাজপুরের মানুষেরা গরম কালে কখনোই পরোটা-ভাজি খাবে না। গরমকালে দিনাজপুরে সবাই আম খায়৷ সকাল-বিকাল আমময় থাকে গ্রীষ্ম কালে দিনাজপুর। সঙ্গে লিচু তো আছেই। এই ছোট্ট শহরটা আম আর লিচুর জন্য বিখ্যাত। মুহিব তো দিনাজপুরের আম ছাড়া অন্য কোথাকার আম খায়-ই না। এদিকের আম খুব মিস্টি হয় খেতে। একবার যে দিনাজপুরের আম খাবে সে অন্য কোন জেলার আম খেয়ে শান্তি পাবে না। ঢাকায় থাকলে আম্মা নিজে গিয়ে দুই গাড়ি আম তার বাসায় দিয়ে আসে।
বিল্ডিংয়ের সামনে আসতেই একটা লোক এসে গেট খুলে দিয়ে তাকে সালাম দিলো। মুহিব হেটে হেটেই গিয়েছিলো খাবার আনতে। সে সালামের জবাব দিয়ে বলে উঠে, তোমাদের ভাবী কিছু খেয়াল করেনি তো? কিছু টের পেয়েছিলো?
— আজ্ঞে না। গ্যারেজের লাইট ফিউজ হয়ে গিয়েছিলো। কিছুই দেখেনি। আর কিছু দেখলেও বোঝার তো স্যার কোন উপায় নেই।
লিফটে গেছে একেবারে চারতলা। অন্য কোন ফ্লাটে তো আর ঢুকেনি। বুঝবে কেমনে?
মুহিব ছোট্ট করে দম ফেলে হু বলে লিফটে ঢুকে গেল।
বাসায় এসে বেল বাজালো। কিন্তু দরজা কেউ
খুলছে না৷ মুহিব বিচলিত হলো। সেজুতির কিছু হলো না তো! বাসায় কেউ ঢুকে পড়ে,,,,না না। এটা অসম্ভব। কারো এতো স্পর্ধা নেই সারওয়ার বংশের বউয়ের ক্ষতি করার। এই বিল্ডিংয়ের প্রত্যকটা ব্যক্তি তার গোলাম।
তার পকেটে এক্সট্রা কি ছিলো। সেটা বের করে দরজা খুলে খাবারের প্যাকেট টেবিলে রেখে বারান্দায় গেল। বারান্দা ফাকা দেখে বুকটা ধক করে উঠল মুহিবের৷
এখানেই তো ঘাপটি মেরে দাঁড়িয়ে ছিলো সেজুতি। কই যেতে পারে সে?
মুহিব দ্রুত বেডরুমে এলো। নাহ। এখানেও সে নেই৷
হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল তার। সেজুতির কিছু হলে সে পাগল হয়ে যাবে তো!
তখনি চামচের টুংটাং শব্দ ভেসে এলো তার কানে। শান্তিতে দম ফেলল। সেজুতি নিশ্চয়ই রান্নাঘরে৷
মুহিব হেটে হেটে রান্নাঘরে গেল। সত্যি সেজুতি গভীর মনোযোগ দিয়ে চুলায় চা চড়িয়েছে৷
মুহিব নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলে উঠে, নাস্তা এনেছি। আসো খেতে নিই। বাসায় যেতে হবে তো নাকি। আসো৷
সেজুতি সহজ ভাবে চুলা বন্ধ করে চা কাপে ঢেলে টেবিলে গিয়ে বসল। এক কাপ চা বানিয়েছে সে।
মুহিব নিজ উদ্যেগে নাস্তা সাজিয়ে সেজুতিকে খেতে দিয়ে নিজেও আয়েশ করে খেতে লাগে। সেজুতি দুই লোকমা খেয়ে উঠে পড়ল এবং বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো৷
এই ঘটনা দেখে মুহিবের আর খাওয়া হলো না৷ সে জানত সেজুতি ঘাড়ত্যাড়া স্বভাবের৷ আসলে ঘাড়ত্যাড়া না ঘাড়ত্যাড়ি হবে।মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘাড়ত্যাড়ি শব্দটা হবে৷মুহিব বানিয়েছে এমন শব্দ।
কিন্তু আজকে সে বুঝলো, সেজুতি বড্ড অভিমানী! রাগ করেছে তার উপর!
মুহিব বারান্দায় গিয়ে বলে, চাটা ভালো হয়েছিলো।
সেজুতি বলে উঠে, বাসায় চলো।
— কাদের? তোমার বাসায় যেতে চাও?
— আমার চাওয়া দিয়ে কিছু যায়-আসে?
— আই এম সর্যি সেজুতি। আর হবে না এমন ভুল।
— বাসায় চল৷
— যাব তো। তার আগে বল আমাকে ক্ষমা করেছো?
সেজুতি নিশ্চুপ রইল। উত্তর টা তার ও জানা নেই।
তার এই মূহুর্তে মনে হচ্ছে, বিয়ে মানে হলো বন্দিনীজীবন! অসহ্য কষ্ট হচ্ছে তার।
মুহিব তাকে নিয়ে রওনা হলো।
এদিকে শোভা ঘুম থেকে উঠে যখন দেখলো, সেজুতি বা মুহিব কেউ ই বাসায় নেই। সে ছোট খাটো একটা কান্ড ঘটালো। কান্নাকাটি শুরু করে দিলো। তবে তার কান্নার জন্য বাড়ির কাউকেই খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা যাচ্ছে না৷
ইমা তার রুমে বসে ফোন চালাচ্ছে। তাওহীদ রেডি হচ্ছে অফিস যাবে। দুপুরের আগেই এসে পড়বে। আজকে রাতে বাসায় খাওয়া-দাওয়া হবে। বৌভাত যাকে বলে। দুইটা গরু কেনা হয়েছে। একটু পর কষাই এসে জবাই দিবে। সব আয়োজন করা আছে।
মনোয়ারা আক্তার বাগানে বসে চা খাচ্ছেন আর পান চিবুচ্ছেন। ভাবান্তর নেই তার মাঝে৷
শোভার কান্নায় যদি কেউ বিচলিত হয়ে তবে গরু দুটাই হচ্ছে। শোভার কান্নার আওয়াজ বাড়লে গরু দুইটা একসাথে হাম্বা হাম্বা করে ডেকে উঠছে৷।
এই ঘরের রানী হলেও শোভা পড়ে থাকে এক কোণায়। কোথাও কেউ তার জন্য সহানুভূতি দেখায় না। তাওহীদ ও আজকাল বদলে গেছে৷ কিছু বললেই রাগারাগি চেঁচামেচি করছে। আম্মা তো আগে থেকেই তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখে। আম্মা অবশ্য সবার সাথেই এক প্রকার ডিস্টেন্স মেইনটেইন করে চলে।
শোভা দশ মিনিট অপেক্ষা করে আম্মার কাছে গিয়ে বলে উঠে, আম্মা সেজু আর মুহিব তো ঘরে নেই?
মনোয়ারা আক্তার বিরক্ত হয়ে বলে, নেই তো আমি কি করতে পারি? ওরা কি ছোট বাচ্চা যে কোলে নিয়ে ঘুমাব? হারিয়ে যাওয়ার ভয় আছে ওদের?
শোভা নিচু গলায় বলে, আম্মা! ওরা নাকি কালকে রাতে বাসায় ছিলো না৷
— বৌমা! প্রতিটা রাত যে নিজের বাসায় থাকতে হবে এমন কোন আইন আছে? ছিলো না ভালো কথা। এসে পড়বে। অযথা চিন্তা না করে দেখো, রহিম ঠিকঠাক বাজার করেছে কিনা? মুরগী কিন্তু দেশীটা কেনার টাকা দেওয়া হয়েছে। যাও গিয়ে দেখো দেশী মুরগী কিনেছে না কক!
শোভা আর কিছু বললো না। চলে এলো ওখান থেকে। তার মন খচখচ করছে।সেজু কে না দেখা অব্দি এই মনের খচখচানি চক্রবৃদ্ধি বারে বেড়েই চলবে।
তবে শোভা কিছুক্ষনের মধ্যেই চিন্তামুক্ত হলো। সেজুতি আর মুহিব গাড়ি থেকে বের হতে দেখেই তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো । ইশ দুইজনকে একসাথে কি সুন্দর দেখাচ্ছে। কিন্তু সেজুর মুখ এমন শুকনা কেন?
সেজুতি রুমে এসে শুয়ে পড়ল। মুহিব কথা বলার সব চেষ্টা করলো কিন্তু লাভ হলো না।
সেজুতি সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েছে। মেয়েটা ক্লান্ত ছিলো মেবি। নাহলে কেউ শোয়া মাত্র ঘুমায়? ঘুমন্ত সেজুতির দিক থেকে চোখ সরাতে পারলো না মুহিব। ইশ কি সুন্দর দেখতে মেয়েটা। ফুটফুটে চেহারা। মনে হচ্ছে ঘর উজ্জ্বল করে কোন তারা জ্বলজ্বল করছে। মুহিব চোখ সরিয়ে নেয়। এই সৌন্দর্যের দিকে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকলে চোখ ত্যারা হয়ে যাবে তার।
★★★
জুই সুউচ্চ বিশিষ্ট বারান্দা থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে কফি খাচ্ছে। কফি যতোবারই মুখে নিচ্ছে ততোবারই মুখ বিকৃত করছে কারন সে চিনিহীন কফি খাচ্ছে। চিনিহীন কফি তার কাছে খুব কুৎসিত স্বাদের মনে হচ্ছে।
মেয়েদের জীবনটাও কিছুটা এই কফির মতোন! স্বামীবিহীন কুৎসিত হয় মেয়েদের জীবনটা ঠিক এই সুগার ফ্রি হট কফির ন্যায়! মজার বিষয় হলো বাঙালীরা চিনি ছাড়া কফি খেতে পারেনা। তারা কফিতে চিনি তিন চামচ করে নেয় আর ওয়েস্টার্ন দেশে সবাই সুগার ফ্রি কফি খেতে পছন্দ করে। ওয়েস্টার্ন দেশের মেয়েরাও হ্যাসবেন্ড ছাড়া ইজিলি ঘুরছে-ফিরছে হাসি-তামাশা করে বেড়াচ্ছে৷ কিন্তু জুই পারছে না! কিছুতেই একা সবটা সামলাতে পারছে না সে।
তখনি রুম থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ ভেসে এলো। সে রুমে গিয়ে দেখে অভিক জেগে উঠেছে। অভিকের বদ অভ্যাস হলো সে জেগে উঠেই কান্না শুরু করে দিবে। তখন তাকে আদর করে দিতে হবে নাহলে চুপ হবেনা। আদর পাওয়ার একটা কৌশল এটা তার।
জুই গিয়ে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে বলে, গুড মর্নিং বেবি।
অভিক কান্না থামিয়ে হেসে মাকে জড়িয়ে ধরে স্পষ্ট ইংরেজীতে বলে, গুড মর্নিং মাম্মা৷
জুই ছেলেকে চুমু দিয়ে ইংরেজি তে বলে উঠে, ঘুম ভালো হয়েছে?
অভিক উত্তরে হ্যা বললো।
— আজকে ব্রেকফাস্টে কি খেতে চাও?
অভিক কিছুটা ভেবে উত্তর দেয়, নিউট্রেলা এন্ড ব্রেন্ড।
জুই বলে উঠে, অমলেট খাবে?
অভিক জোর গলায় বলে উঠে, আই হেইট এগ এন্ড মিল্ক মাম্মা!
জুই হেসে দিলো। চার বছর বয়সের তার ছেলেটা এত্তো এত্তো কথা বলতে শিখে গেছে ভাবাই যায় না। পাশের বাসার মিসেস লিওনেল বলেন অভিক ইস এ পেরোট। যা শুনবে অবিকল নকল করে দিবে৷
★★★
মেকাপ আর্টিস্ট এসেছে সেজুতিকে সাজাতে৷ কিন্তু সেজুতি সাজবে না। তাদের মানা করে দিয়ে এসে ঘর লাগিয়ে বসে আছে৷ চুপচাপ বসে থাকতে ভালোই লাগছে তার। মুহিব নেই রুমে।
বিকেলের দিকে শোভা আপা দরজা ধাক্কাতে শুরু করলেন। সেজুতি বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলে দিলো।
আপা হড়বড় করে বললো, তুই নাকি সাজগোছ করবি না? বাইরেও বের হবি না?
— সাজগোছ করব না এটা ঠিক। কিন্তু বের হব না এটা গুজব।
শোভা ভ্রু কুচকে বলে, গুজব হবে কেন?
— বড় বড় ঘরের বৌদের নিয়ে এমন গুজব বের হয়তো!
শোভা বিচলিত হয়ে বলে, সেজু তোর হয়েছেটা কি?
সেজুতি নির্লিপ্ত গলায় বলে, I am absolutely fine.
তখনি মুহিব রুমে এসে বলল, ভাবী আপনি যান। ভাইয়া ডাকছে।
শোভা জানে এটা মিথ্যা কথা। আজকাল তাওহীদ তার সঙ্গে কথা বলছে না। সেই লোক কোন দিন তাকে ডেকে পাঠাবে না।
শোভা চলে এলো। এবং সঙ্গে সঙ্গে মুহিব রুমের দরজা লাগিয়ে দিলো৷
সেজুতি আবারো মুখ-চোখ শক্ত করে রইল৷
মুহিব কড়া গলায় বলে, যাও শাড়ি পড়ে এসো। সাজতে হবে না।
সেজুতি এক চুল নড়লো না।
— শুধু শুধু নাটক করবে না। এর ফল ভালো হবে না।
— আপনার জোড়াজুড়ি ছাড়া আর কিছুই করার মুরোদ নেই৷
মুহিব হতাশ গলায় বলে, আচ্ছা যাও আমি কাপুরুষ। তোমার জন্য হলেও মেনে নিলাম।এবার তো রেডি হও। প্লিজ কোন সিন ক্রিয়েট করোনা তো। আজকে বাসায় অনেক মেহমান।
সেজুতি ধারালো গলায় বলে, আমি সিন ক্রিয়েট করিনা। আপনি রার-বিরাতে মদ খেয়ে তামাশা করেন তার বেলায় চক্ষু লজ্জা থাকে না?
মুহিবের মেজাজ গরম হলো তবুও নিজেকে ঠান্ডা রেখে বলে, আমি যা যা করি সবকিছুই মানুষের চোখের আড়ালে করি।
— মানুষের চোখের আড়ালে করা অন্যায় কি অন্যায় বলে গণ্য হবে না?
মুহিব কেপে উঠে। এবং জোর গলায় বলে, অন্যায়ের এখানে কি দেখলে তুমি? দেখ আমি তোমার সাথে কোন রকম তর্কে যেতে চাই না৷
— তর্ক আপনি করছেন আমি না।
আচমকা মুহিবের কি যেন হলো! সে সেজুতির কোমড় চেপে ধরে নিজের কাছে টেনে এনে তার ঠোঁটে আলতো পরশ দিয়ে দুষ্ট হাসি হেসে বলে, বাই এনি চান্স তুমি কি কলেজে লাইফে ডিবেট করতে নাকি? এতো সুন্দর ঝগড়া করতে জানো? ঝগড়া করার জন্য যদি নোবেল দেয়া হত তাহলে পুরস্কার না পেলেও নমিনেশন পেতে তুমি!
— ছাড়ুন!
— এই যে এতো সুন্দর একটা মূহুর্তেও তুমি ঝগড়া করার পঁয়তারা করছো? এরজন্য একটা অস্কার ইউ অফিসিয়ালি ডিজার্ভ।
চলবে। #সেদিন_মুষুলধারে_বৃষ্টি_ছিল
part–9
Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
— আপনি দয়া করে রুম থেকে বেরিয়ে যান। প্লিজ!
— যাব কিন্তু এক শর্তে।
সেজুতি ভ্রু কুচকে বলে, কি শর্ত?
— আমাকে ক্ষমা করেছো? যদি ক্ষমা করে থাকো তবেই যাব নাহলে যাচ্ছি না।
মুহিব কথাটা অত্যন্ত কাতর গলায় বললো। সেজুতির রাগ তবুও পড়লোনাকিন্তু তার কেন যেন একটু ভালো লাগলো৷ একবার হলেও মন চাইলো তাকে ক্ষমা করে দিক কিন্তু না এতো দ্রুত ক্ষমা দেওয়া যাবে না৷
মুহিব বলে উঠে, কি হলো? কথা কেন বলছো না? হু?
সেজুতি তার দিকে তাকিয়ে থেকে শাড়ি হাতে নিয়ে বাথরুমে চলে গেল।
মুহিব অসহায় চোখে তাকিয়ে রইল।
কিছু সময় বাদে সেজুতি বের হলো। তাকে দেখা মাত্র মুহিব একটা বড়সড় টাস্কি খেল৷ ইশ কি সুন্দর লাগছে তাকে!
নীল রঙের কাতান শাড়িতে অপূর্ব লাগছে। চুল ছেড়ে রেখেছে সে। ফ্যানের হাওয়ায় চুল এলোমেলো হয়ে পড়ছে সে-ই সাথে মুহিবের মনের অন্তঃকণাদ্বয় ও কাপাকাপি শুরু করলো।
ইশ রে! এইরকম সাজে সেজুতিকে কি অপরুপই না লাগছে৷ সেজুতি কি জানে সে যখন রাগ করে নাক ফুলায় তখন নাকের ডগা লাল হয়ে যায়!
এই যে! এই মূহুর্তে তার নাকের ডগা টকটকে লাল হয়ে আছে। মুহিবের মন চাচ্ছে নাকের ডগায় চুমু খেতে!
সেজুতি চুলে খোপা বাধা শুরু করলো।
মুহিব মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। একটা সিগারেট ধরালে মন্দ হয় না। চোখ ধাধানো দৃশ্য দেখার সময় ফুসফুস পোড়ালে মন্দ কি?
ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিয়ে আয়নার ভেতর দিয়েই সেজুতি মুহিবকে দেখলো। কেমন নেশা লাগানো ভঙ্গিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মুহিবের মুখ টা দেখে যেকেউ বলে দিবে মুহিব তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে৷ কিন্তু কে বলবে? এই ছেলে আজকে সকালে তার গায়ে হাত তুলেছে৷ এইজন্য তাকে মোটেও অনুতপ্ত লাগছে না৷
আচ্ছা সেজুতি যদি এখন তার গালেও একটা চড় বসিয়ে দেয় তবে কেমন হবে? মুহিবের রিয়্যাকশন কি হবে? ।
মুহিব আস্তে ধীরে তার কাছে এসে বলে, শাড়ির কুচি ঠিকমতো সেট আপ হয় নি। কেমন অগোছালো হয়ে আছে৷।
— যার জীবনই অগোছালো তার শাড়ির কুচি কিভাবে গোছালো হতে পারে?
মুহিব হাটু গেড়ে বসে সেজুতির প্রতিটা কুচির ভাজ সুন্দর করে সাজিয়ে-গুছিয়ে দিতে লাগলো।
সেজুতি অন্য দিকে মুখ ফিরালো। তার কান্না পাচ্ছে খুব। তার জীবনটা বড্ড অগোছালো হয়ে গেল। অগোছানো জীবনের ছন্নছাড়া সময় পার করছে সে।
মুহিব কুচির ভাজ ঠিক করে দিয়ে নিজে রেডি হয়ে নিল। মেরুন রঙের পাঞ্জাবি পড়লো সে সঙ্গে কালো জিন্স। চোখ-মুখে পানি দিয়ে বের হলো৷
সেজুতি চেয়ারে বসে ফোন চালাচ্ছিলো৷ আচমকা মুহিব তার ফোন কেড়ে নিল৷
সেজুতি প্রথমে ভয়ে পেয়ে যায়৷ তারপর যখন সবটা বুঝতে পারলো সে নিজের ফোন উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে পড়লো৷
সেজুতি কড়া গলায় বলে, আমার ফোন দিন।
— দিব তো! তোমার ফোন তো আর সবজি না যে রান্না করে খাব৷
— এক্ষুনি দিন৷
— তুমি একটু সুন্দর করে কথা বলতে পারো না?
— না৷ পারিনা।
— জন্মের সময় তোমার মুখে মধু দেওয়া হয় নি রাইট?
— জি৷ আমার জন্মের সময় মধুর দাম বেড়ে গিয়েছিলো। তাই কেনা হয়নি।
মুহিব সেজুতির ফোন নিজের পকেটে রেখে দিয়ে বলে, আমাদের বাচ্চা যখন হবে আমি স্পেশালি সুন্দরবন থেকে মধু আনাব৷ তখন দেখবে আমাদের বেবি মিস্টি-মিস্টি কথা বলবে।
— অনেক দূর-দূরান্তের চিন্তা ভেবে ফেলেছেন দেখছি?
মুহিব মুচকি হেসে বলে, ভাবতে তো আর ট্যাক্স লাগে না তাই ভাবি। আর রাজনীতি করার তৃতীয় মূলনীতি হলো ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা। এ পলিটিশিয়ান লিভস ইন দ্যা ফিউচার! বুঝলে?
— আমার ফোন পকেটে ঢুকালেন কেন?।
— কারন আমি চাই তুমি আমার পিছনে পিছনে হ্যামিলনের বাশিওয়ালা গল্পের বাচ্চাগুলো মতো ঘুর৷ আই এম ইউ দিনাজপুরের ফোনওয়ালা! ( হেসে উত্তর দিল সে)
সেজুতির রাগে গা কাপছে। সে ফোস করে দম ফেলে বলে, আপনার সঙ্গে আমি কোন ধরনের কথা বলতে ইচ্ছুক নই! যান সামনে থেকে৷
মুহিব এক গাল হেসে সেজুতির হাত ধরলো। সেজুতি সরে আসতে চাইলে তাকে বাধা দিয়ে বলে, চল। প্রোগাম শুরু হয়ে যাচ্ছে তো!
প্রোগামে বিশাল আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় দুই-আড়াই শ মানুষের খাওয়ার আয়োজন। গেস্টরা ইতিমধ্যে খেতে বসে গেছে৷
শোভা তাওহীদের কাছে গিয়ে বলে, দেখ তো এই শাড়িটা ঠিক আছে?
তাওহীদ মুখ বেজার করে বলে, আহা! এ-সব কেমন প্রশ্ন? দেখছো নাআমি খুব ব্যস্ত আছি এখন৷।
— ব্যস্ত তো সবসময়ই থাকছো। এতো কথা না বলে, উত্তর টা দিলেই পারতে৷
তাওহীদের মুখে বিরক্তি ভাব চলে এলো। সে এক গাদা থুথু ফেলে বলে উঠে, ডিসি সাহেব পরিবার সহ এসেছে৷ ওনাদের সময় দাও৷ আপ্যায়ন ঠিক মতো করো৷ যাও।
শোভা চলে এলো। তার খুব কষ্ট লাগলো। সে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ডিসি সাহেবের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে লাগলো । ডিসি সাহেবের বউ খুব ভালো একজন মহিলা। খুব সুন্দর করে তার সঙ্গে গল্প করছে৷
কিন্তু শোভার মন সেদিকে নেই। তার চোখ, মন সব ডিসি সাহেবের বউয়ের কোলে থাকা শিশুটার দিকে৷ ইশ বাবুটা কি সুন্দর করে নিজের ছোট্ট হাতটা মুখে দিয়ে চুষছে।
শোভার চোখ চকচক করছে।মন চাচ্ছে বাবুটাকে একটু আদর করে দিতে। আচ্ছা তার এমন ফুটফুটে বাচ্চা কবে হবে? সে কি মা হবে না কোন দিন? মা না হতে পারার জন্য কি তাওহীদ এমন করে তার সঙ্গে? মানুষ টাও তো বাবা হওয়ার জন্য কাতর! সেও তো চায় আধো বুলিতে কেউ তাকে বাবা বলে ডাকুক৷ আল্লাহ কবে তার দোয়া কবুল করবে? কবে ঘর আলো করে তার ঘরে সন্তান আসবে নাকি সে অপয়া?,
শোভার বুক ধুক করে উঠে। এবারের থাইল্যান্ডে গিয়ে যেসব টেস্ট করানো হলো তাওহীদ সেইসব নিয়ে কিছু আলোচনা করেনি। তার সঙ্গে। নাকি টেস্টের রিপোর্ট দেয় নি?
শোভাকে বাকি সময় টা ভীষণ চিন্তিত দেখা গেল। আজই তাওহীদের সঙ্গে কথা বলা দরকার।
★★★
সেজুতি খাওয়া-দাওয়া করে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাবার সঙ্গে বাসায় যাওয়ার জন্য। গাড়ি বাসার সামনে এসে তাদের অপেক্ষা করছে৷
মুহিবের চেহারা দেখার মতো। সে কিছুতেই শ্বশুড়বাড়ি যেতে চায় না। এজন্য আম্মা তাকে সবার সামনে ধমক দিয়ে বলে, যার বাড়ির মেয়ে বিয়ে করতে তোর সমস্যা নাই, সেই বাড়ি গিয়ে থাকতে কি অসুবিধা?
মুহিবের মায়ের কথা সবাই হোহো করে হেসে দেয়। সেজুতিও হাসে। সেজুতিকে হাসতে দেখে মুহিবের ও মন ভালো হয়ে যায়।
অগত্যা শ্বশুড়বাড়ি যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে বসে সে।তার সঙ্গে সেজুতির বাবা জয়নাল সাহেব বসেছে। এতেও বেজার সে।
সে সেজুতির সঙ্গে বসবে। তা না শ্বশুড়ের পাশে বসতে হচ্ছে। এদের মাথা এতো মোটা কেন? সেজুতি কে এই গাড়িতেই বসানো হয়নি।
মুহিব প্লান করে রেখেছিল সে আর সেজুতি একসাথে একা একা যাবে। এসি ছেড়ে হাই ভলিউমে হিন্দি কোন গান বাজবে৷ সে তার একটা হাত দিয়ে সেজুতির হাত চেপে থাকবে।
সেজুতি যতোবারই রাগী কন্ডে বলবে, কি করছেন কি? ছাড়ুন!
ঠিক ততোবারই মুহিব তাকে চুমু খাবে। সুন্দর একটা লং ড্রাইভ হবে। সব রোমান্টিক প্লানে পানি ঢেলে দিলো সেজুতির বিচ্ছু কাজিনরা।হুহ!
সেজুতির বাসায় পৌছে মুহিবকে গেটের বাইরে আটকানো হলো। এবং সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, সেজুতি তাকে না দেখার ভান করে শাড়ির কুচি সামলিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে গেল।
কিন্তু মুহিবকে ঢুকতে দিচ্ছে না। বিশ হাজার টাকা দাবী তাদের!
মুহিব আহাম্মকের মতো চেয়ে আছে। এভাবে লোকালয়ে তার কাছে গলাকাটা ডাকাতি করা হচ্ছে। মুহিব চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে৷ নিজেকে অসহায় লাগছে বেশ!
কিছুক্ষন পর সেজুতি হালকা সুতির কাজ করা বেগুনি রঙের একটা ফতুয়া পড়ে বের হলো। চুল ভেজা। চুলের পানিতে পেছনের কাধ ভিজে গেছে। সে সাদা কালারের ওড়না জড়িয়ে আছে।
সেজুতি গেটের কিছুটা কাছে গিয়ে বিরস মুখে বলে উঠে, এই! তোদের দুলাভাই অনেক কিপ্টা! সারারাত ধরে চাইলেও সে এক পয়সা বের করবে না। তার চেয়ে এইসব আশা বাদ দে।আমি সুযোগ বুঝে তোদের এক দিন চাইনিজ খাইয়ে দিব।
মুহিবের ভীষণ রাগ হলো। তাকে টাকার খোটা দিল! আরে বাপ! মুহিব নিজের টাকা গুনা শুরু করলে হাতে ফোস্কা পড়ে যাবে। তাকে নাকি টাকার গরম দেখানো হচ্ছে।
সে পকেট থেকে সত্যি সত্যি বিশ হাজার টাকা বের করে দিলো। টাকা কখনোই সে এভাবে সঙ্গে রাখে না। আজকে সকালে ম্যানেজার দিয়ে গেল। সেটা পাঞ্জাবির পকেটে রেখেছিল সে।
সবাই তো হৈচৈ শুরু করে দিলো। তাকে খাতেরদারি করে ভেতরে ঢুকানো হয়৷
এরপর কিছুক্ষন পর মুহিবকে ঘুমানোর জন্য রুমে পাঠানো হয়। অবাক করা বিষয় হলো এই রুমটাও বাসর ঘরের মতো ফুল দিয়ে সাজানো।
মুহিবের ভালো লাগলো তা দেখে৷ কিন্তু ঘরে সে একা! সেজুতি নেই।
প্রায় এক ঘন্টা পার হলেও রুমে সেজুতি এলো না। ফোন যে দিবে তার ও উপায় নেই। মুহিবের নিজের চুল ছিড়তে মন চাচ্ছে। আরে ভাই! এই ফুলে ভরা রুমে সে একা কি করবে বউ ছাড়া? বসে বসে ছাগলের মতো পাতা চিবিয়ে খাবে নাকি গরুর মতো রাতের খাওয়ার পোলাও জাবর কাটবে? বউ কই তার? নাকি তাকে রুমে আনার জন্য ও সেজুতির কাজিনদেরকে টাকা দিতে হবে?এরা সবাই বড্ড যন্ত্রনা দিচ্ছে তাকে।
চলবে।
( আসসালামু আলাইকুম গত পর্বে ফোনের সমস্যার জন্য কিছু লাইন রিপিট হয়েছিলো তার জন্য দুঃখিত)