#সে_কি_জানে🍁
#Writter: Ishanur Tasmia [ Mira ]
#part:17
.
.
.
রেয়ান শান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও তাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে সে রেগে আছে।।প্রচুর রকমের রেগে আছে!!ইতোমধ্যে তার চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে আছে।।তার সাথে কপালের রগটাও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।। আমিসহ রেয়ানের পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্য তার দিকে তাকিয়ে আছে।।সবার মুখেই একটা আতংকের ছাপ।।এখন কি করবে রেয়ান??
আমাদের এভাবে রেয়ানের দিকে তাকাতে দেখে তুরানের বাবা মিস্টার আজিজ আহমেদকে বললেন……
—” বেয়াইন!! কোনো কি সমস্যা হয়েছে?? ”
প্রতিউত্তরে মিস্টার আজিজ আহমেদ কিছু বলতে যাবেন তার আগেই রেয়ান মাথা নিচু করা অবস্থায়ই গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠেন……
—” আপনি কি নিউজ দেখেন নি?? ”
—” কিসের নিউজ রেয়ান?? ”
এবার রেয়ান মাথা তুলে তাকালেন।।সাথে সাথে আঁতকে উঠলাম আমরা।।রেয়ানের চোখ ভীষণ লাল হয়ে আছে।।যেন এখনই আগুন বের হবে তার চোখ থেকে।।কিন্তু উনি এখনও শান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন।।উল্টাপাল্টা কিছু করছেন না।।হঠাৎ রেয়ান আমার দিকে এগোতে এগোতে তুরানের বাবাকে বলেন…..
—” আমার আর মিরার ব্যাপারে!! ”
—” মিরা কে?? ”
কথাটা শুনে রেয়ান হেসে দিলেন।।তারপর তাচ্ছিল্যভরা কণ্ঠে বলে উঠলেন….
—” যাকে নিজের ছোট ছেলের বিয়ের জন্য দেখছেন,,,তার নামই জানেন না।। স্ট্রেঞ্জ!!”
—” এ-ই গোলাপি শাড়ি পড়া মেয়েটা তাহলে মিরা?? ”
—” জ্বী ”
বলতে বলতেই রেয়ান আমার পাশে এসে দাঁড়ান।।তারপর আমার কোমড় ধরে টেনে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে নিয়ে নির্ঝরের দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠেন…..
—” ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন!! মিরা আমার বউ।।মিডিয়ায়েও এসব ব্যাপারে অনেক কথা হয়েছে।।সেগুলো কি দেখেন নি আপনি?? ”
কথাটা শুনে নির্ঝড় আর তুরানের বাবা-মা কেমন চুপসে গেলেন।।আমতা আমতা করে তুরানের বাবা রেয়ানকে বললেন….
—” আসলে রেয়ান আমরা গত পরশুই কানাডা থেকে বাংলাদেশে এসেছি।।তাই তোমাদের ব্যপারে টিভিতে তেমন কোনো খবর দেখি নি।।মিরা যে তোমার বউ সেটা আমরা জানতাম না।।জানলে এমন ভুল কখনও হতো না।।মাফ করে দিও আমাদের!! ”
বিনিময়ে রেয়ান কিছু বললেন না।।সে এখনও তার তীক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে নির্ঝরকে দেখে যাচ্ছেন।।যেন পারলে এখনও খুন করে ফেলবেন তাকে।।কিছুক্ষন ওভাবে তাকিয়ে থেকে রেয়ান আমার হাত টান দিয়ে কোথায় যেন নিয়ে যেতে লাগলেন।।যাওয়ার আগে একবার নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আমি।।সে করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।কিন্তু এতে আমার কি?? আমার তো ভয় লাগছে রেয়ানকে নিয়ে।।তার এমন শান্ত আচরণ যে সজম হচ্ছে না আমার…….
.
রেয়ান আমাকে একটা রুমে নিয়ে এসেছেন।।রাগে গজগজ করছেন উনি।।পিছনে ফিরে পাশে থাকা টেবিলে জোড়ে একটা লাথি দেন।।অতপর নিজের চুল টেনে ধরেন।। যেন অনেক্ষন পর নিজের রাগটা বের করতে পেরেছেন উনি ।।পেছনে ফিরে থাকার কারনে তার মুখ দেখতে না পারলেও বুঝতে পারছি,,, তার মুখ এখন হয়তো ভীষণ লাল হয়ে আছে।।ভাবতে ভাবতেই রেয়ান আবারও টেবিলে লাথি দেন।।এবার কিছুটা জোড়েই লাথি দেন উনি।।ফলে কেঁপে উঠলাম আমি।।কিছু বলারও শক্তি নেই আমার।।ভয়ে রিতিমতো হাত-পা কাঁপছে আমার।।রেয়ান কিছুক্ষন স্থির ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেন।।পরক্ষনে আমার দিকে ফিরে আমার গালে আলতো করে নিজের দু’হাত রেখে শান্ত কণ্ঠে বললেন…….
—” একমাত্র তুরানের ভাই দেখে ওই ছেলেটা এখনও সুস্থ আছে।।ইচ্ছে তো করছে এখনই গিয়ে ওই ছেলের ইনকাউন্টার করে দি।।কিন্তু আফসোস!! সেটা পারছি না আমি।।কিন্তু তাকে শাস্তি তো দিবোই ।।আমার মিরার ওপর নজর দিয়েছে সে।।১মাস অন্তত হোসপিটালে ভর্তি থাকতে হবে তার।। ”
কথাটা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার।।কোনোমতে কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে রেয়ানকে জিজ্ঞেস করি……
—” কককি করবেন আআপনি?? ”
—” বেশি কিছু না।। জাস্ট হাত-পা ভেঙ্গে দিবো!! ”
.
বিছানার এপাশ-ওপাশ করছি শুধু।।বারবার রেয়ানের কথাগুলো মনে পড়ছে আমার।।সত্যি সত্যিই কি এমন কিছু করবেন নাকি উনি!!প্রশ্নটা যেন বারবার মস্তিষ্কে বারি খাচ্ছে।।আমার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে হঠাৎ ফোনের রিংটন বেজে উঠে।।ফোন চালু করতেই দেখি রেয়ানের মেসেজ।।যেখানে লিখা ” নিচে আসো তাড়াতাড়ি।।কাজ আছে!! “।।একটু আগেই না রেয়ান আমাদের বাসায় পৌঁছে দিলেন।।তখন তো কিছু বলেন নি।।তাহলে এখন আবার কিসের কাজ??ভাবতে ভাবতেই পা বাড়ালাম রেয়ানের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।।নিচে যেতেই দেখি রেয়ান বুকে হাত গুজে গেটের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।।আমাকে দেখতেই সোজা হয়ে দাঁড়ান তিনি।।
—” একটু আগেই তো আপনি আমাদের দিয়ে গেলেন।।এখন আবার আসলেন যে?? ”
—” আসলে তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।। ”
—” হুম,, বলুন।। ”
রেয়ান কিছুক্ষন চুপথেকে আবার বললেন…..
—” আমি কি তোমাকে একটু জড়িয়ে ধরতে পারি মিরা?? ”
কথাটা শুনে অবাক হলাম আমি।।আনমনেই মুখ থেকে বের হয়ে গেল ” হা?? “।। সাথে সাথে রেয়ান শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন আমায়।।।তারপর নরম সরে বলে উঠলেন……
—” আমাকে ১সপ্তাহর জন্য এ শহরের বাইরে যেতে হবে মরুভূমি।।একটা মিশন আছে আমার।।কালকে সকাল সকাল আমি আর আমার ফুল পুলিশফোর্স বের হবো।।একটু আগেই জানলাম এটা।।তাছাড়া সকালে তো আসতে পারবো না।।তাই এখন চলে আসলাম।।তাই চিন্তা করবে না একদম।।আমি জলদি চলে আসবো।।ততদিনে নিজের খেয়াল রাখবে,,,রিহানকে বলবে তার বাবা যখন আসবে তখন তার জন্য অনেক গুলো মজা নিয়ে আসবে।। কাঁদতে একদম বারণ করবে ওকে,,,কেমন!! ”
বলেই আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন আমায়।।কিন্তু আমার কোনো ভাব-গতি পাল্টায় নি।।স্থির দাঁড়িয়ে আছি।।রেয়ান এখন যা বলল তা বুঝার চেষ্টা করছি আমি।।আসলেই কি রেয়ান ১সপ্তাহের জন্য চলে যাবে।। তাকে কি পুরো ১সপ্তাহ দেখতে পারবো না আমি।।ভাবতেই কেঁপে উঠলাম।।বুঝতে পারছি না এখন কেমন রিয়েক্ট দেয়া উচিত আমার।।প্রায় অনেক্ষন রেয়ান আমাকে এভাবেই জড়িয়ে ধরে থাকেন।।তারপর আসতে আসতে সরে আসেন আমার থেকে।।তার চোখে জল স্পষ্ট।।আচ্ছা উনি কাঁদছেন কেন?? উনারও কি আমার মতো কষ্ট হচ্ছে।।এক সপ্তাহ না দেখতে পাওয়ার কষ্ট!!কিন্তু তাতে কি।।ভিডিও কল তো আছেই।।তাহলে??ভাবতেই ভ্রুঁ কুঁচকে এলো আমার।।আমাকে এভাবে ভ্রুঁ কুঁচকাতে দেখে হেসে দিলেন রেয়ান।হাসতে হাসতেই বললেন…..
—” এভাবে ভ্রুঁ কুঁচকে আছো কেন?? ”
—” না এমনি।। ”
কথাটা শুনে আবার হাসলেন উনি।।তারপর আলতো করে আমার গালে হাত রেখে বলে উঠেন…..
—” ভয় নেই।।কিছু হবে না আমার।।খুব তাড়াতাড়িই ফিরবো তোমার কাছে।।আর শুনো,,,ভাববে না যে যাচ্ছি গা দেখে ওই নির্ঝড় নাকি ফির্ঝড়,,ওয়াট এভার।।ওই ছেলের কিছু করবো না।।মিশন থেকে এসেই ওইটারে টারগেট করব আগে।। ”
কথাটা শুনে আবার ভ্রুঁ কুঁচকে এলো আমার।।রেয়ানের চোখে চোখ রেখে বলে উঠলাম……
—” লাইক সিরিয়াসলি?? এখনও আপনার মাথায় এসব ঘুড়ছে!! ”
—” অভেয়েসলি!!আফটার ওল আমার মরুভূমির দিকে নজর দিয়েছে ও।। ”
—” আপনার কিচ্ছু হবে না।।আপনি একটা গুন্ডা পুলিশ।।সেটা জানেন?? ”
—” তাই নাকি?? তাহলে তো গুন্ডামি দেখানোই উচিত।। কি বলো?? ”
—” একদম না!! এখন যান।।অনেক দেড়ি হয়ে গেছে,,সকালে আবার আপনার উঠতে হবে।। ”
—” হুম ”
বলেই আমার কপালে একটা গভীর চুমু এঁকে দিলেন রেয়ান।।তারপর শান্ত সরে বললেন…..
—” নিজের,,রিহানের আর শ্বাশুমার খেয়াল রেখো।।চললাম ”
বলেই চলে যেতে লাগলেন রেয়ান।।আর আমি!!আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।।এই শেষ দেখা তার সাথে।।১সপ্তাহর আগে আর সামনাসামনি দেখা হবে না।।ভাবতেই ভেতর থেকে একটা দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে এলো আমার।।বাসায় চলে যেতে নেবো।।তখনই হঠাৎ রেয়ানের কণ্ঠ শুনতে পাই।।সামনে তাকাতেই দেখি রেয়ান প্যান্টের পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছেন।।হালকা জোড়ে বলে উঠেন……
—” খোদা হাফেজ বেনীওয়ালি।। ”
তার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকালাম তার দিকে।।আমার অবাক হওয়া দেখে বাঁকা হাসলেন উনি।।তারপর আবার বলে উঠলেন…..
—” শ্বাশুমার কাছ থেকে শুনেছি।।তুমি নাকি ছোট বেলায় অনেক বেনী করতে।।তাই নতুন নাম দিলাম।।বেনীওয়ালি!! কেমন লাগলো?? হট!! তাই না?? ”
তার কথা শুনে এবার আমিও হেসে দিলাম!!
.
আজ ১সপ্তাহ হতে চলল।।খুব একা একা লাগছে নিজেকে একয়দিনে।।মিস করা যে কি তা আজকে বুঝতে পারছি আমি।।খুব ইচ্ছে করছে রেয়ানকে দেখতে।।কিন্তু তার কি দেখতে ইচ্ছে করে না আমাকে।।হয়তো না!!একবারও তো ভিডিও কল দেন নি উনি।।ভিডিও কল কি,,, এমনে কলই তো তিনি কম দেন।।আবার ভিডিও কল!!আগে তো প্রতিদিন ১০-১২টা কল দিতেন।।আর এখন।।দিনে মাত্র ৩-৪টা কল দেন।।তাও খুব কম কথা বলেন,,,”কেমন আছি-রিহান কেমন আছে-ভালো আছি নাকি আমরা-নিজের খেয়াল রাখছি নাকি,,”এইতো এগুলো।।তার এসবে খুব কষ্ট পাই আমি।।উনি কি বুঝেন না উনার সাথে কথা বলব আমি।।অনেক গুলো কথা!!
বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছি।।রেয়ানকে কল দিবো কি দিবো না বুঝতে পারছি না!!অবশেষে দিয়েই ফেলি।।২-৩বার রিং হতেই ফোনটা কেটে দেন উনি।।তারপর আবার কল বেক করেন।।কল রিসিভ করতেই তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বলে উঠি…..
—” এত পাষাণ কেন আপনি?? একটুও আমার কথা মনে পরে না আপনার।। ”
প্রতিউত্তরে তিনি খুব শান্ত সরে বললেন…..
—” কি হয়েছে?? ”
—” আমি আপনাকে দেখবো।। ”
—” এইতো কালবাদে পরশু দিন চলে আসবো তোমার কাছে।। ”
—” পরশু দিন??কিন্তু আপনার তো কালকে আসার কথা।। ”
—” আসলে কাজটা এখনও শেষ হয় নি।।তাই!! ”
—” আমি কিচ্ছু জানি না।। আপনি কালকেই আসবেন।। আসবেন মানে আসবেন!!”
—” দেখো মিরা!!আমি একজন পুলিশ।।সবসময় দেশের জন্য লড়াই করতে হয় আমার।।এটা আমার দায়িত্ব।। তুমিই বলো,, আমি কি আমার দায়িত্বকে ফেলে চলে আসবো তোমার কাছে?? ”
কথাটা শুনে শান্ত হয়ে গেলাম আমি।।সত্যিই তো।।আমার জন্য নিজের দায়িত্ব কেন ফেলে আসবেন উনি।।সবার আগে নিজের দেশ।।তারপর সবকিছু।।উনি যা করছেন সব দেশের জন্যই তো তাই না??আমার তাকে উৎসাহ দেওয়ার উচিত,,,তার বদলে আমি কি করছি।। তাকে এগুলো বলছি।।ভাবতেই নিজের উপর নিজেরই রাগ লাগছে আমার।।আমাকে চুপ থাকতে দেখে উনি আবারও বলে উঠলেন……
—” তাছাড়া আমি তোমার কাছে এসেই বা কি করব।।তুমি তো আমাকে বিয়েই করো না।।ভাবছি এখানের একটা মেয়েকে বিয়ে করে ফেলবো।। ”
—” কি বললেন আপনি?? আবার বলুন তো?? ”
—” যা শুনেছো,,তাই-ই বলেছি মাই লেডি।। ”
কথাটা শুনে আমার রাগ হলো প্রচুর।।সামান্য বিয়ের জন্য উনি এমন বলছেন আমায়?? কিছুটা ঝাঁঝালো কণ্ঠে তাকে বললাম…..
—” আপনি যা বলেছেন তা ফেরত নিন এক্ষুনি।।আর তাড়াতাড়ি আসবেন।।আপনি আসলেই আমি আপনাকে বিয়ে করব।।তখন দেখবো কিভাবে অন্য কাউকে বিয়ে করেন।। ”
কথাটা বলেই জিভ কাটলাম আমি।।রাগের বসে কি বলে ফেলেছি আমি!!ভাবতেই লজ্জা লাগছে।।এদিকে আমার কথা শুনে রেয়ান কাশতে কাশতে শেষ ।।হয়তো আমার এমন কথা আশা করেন নি সে।।কাশতে কাশতেই বললেন…..
—” আর ইউ সিরইয়াস?? ”
—” অবশ্যই!!এএতে এতো জজজিজ্ঞেস করার কি আআছে?? ”
—” বাহ্ বাহ্।।তুমি তো দেখি রোমেন্টিক হয়ে গেছো মরুভুমি।। তুমি জাস্ট ওয়েট করো।।আমি খুব তাড়াতাড়ি আসবো তোমার কাছে।।আফটার ওল বিয়ে হবে আমার।।আচ্ছা মরুভূমি একটা কাজ করো।।বাসরে আমরা কি ক….”
আর কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দিলাম আমি।।উনি কত বড় অসভ্য,, তা বারবার প্রমাণ দেন।।এসব কথা কেউ বলে?? আসলেই উনি অসভ্য।।অনেক অনেক অনেক অসভ্য!!
.
.
.
#চলবে🍁