#হৃদয়ের_সম্পর্ক (পর্ব ১৮)
#গল্পের_পাখি (শেফা)
·
·
·
আমি মাকে বলে একাই বাড়ি থকে বের হয়েছি।বলেছি আম্মুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। কিন্তু আসলে আমি যাচ্ছি একটা প্রায়ভেট ক্লিনিকে। একজন গাইনোলজিস্ট এর কাছে। অনলাইনে এপোয়েন্টমেন্ট নিয়েছিলাম এবারোশান করানোর জন্য। আমাকে আজকের ডেট দিয়েছে। আমি জানি আমি অনেক বড় পাপ করতে যাচ্ছি। কিন্তু আমার কাছে অন্য কোনো অপশন নাই। আরিয়ানকে তো জানায়নি। ওর যে রাগ, যদি একবার জানতে পারে আমি ওর সন্তানকে খুন করতে যাচ্ছি। তাহলে তো আমাকে মেরেই ফেলবে।
.
নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেখি ক্লিনিক টা বেশ ফাঁকা। খুবই কম মানুষ জন। ওয়েটিং কেবিনে বসে ভাবছি যে, আরিয়ান তো একদিন না একদিন জানতেই পারবে এই বিষয়টা। তখন কি আমাকে সে ভুল বুঝবে।
.
খুব বেশি বসতে হলো না। একজনের পরই আমার সিরিয়াল। আমার ক্রমিক নম্বরের ডাক পরতেই উঠে গেলাম ঐ গাইনোলোজিস্টের কাছে। আমাকে উনার সামনে বসতে বলা হলো। আমি বসলাম। তারপর আমাকে ঐ ডক্টর জিজ্ঞাসা করলো,
— আপনি কি সত্যিই আপনার গর্ভের সন্তানকে এর্বোট করতে চান ? (স্ট্রেইট ভাবে প্রশ্ন করলো)
— জ্বি হ্যা। (বুকে পাথর রেখে কথাটা বললাম)
— হুম। আপনার অপারেশনের জন্য বর্ন পেপার সিগনেচার করা লাগবে। তার জন্য আপনার অভিভাবকে দরকার। তাকে ডাকুন।
— বিষয়টা ব্যাক্তিগত। আমার অপারেশন এর বর্ন পেপার আমি নিজেই সিগনেচার করবো।
— তবুও সবকিছুর একটা রুলস থাকে।
— হ্যা। কিন্তু এমন তো না যে এতে আমার মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে তাই না।
— আচ্ছা ঠিক আছে। এই নিন পেপারস্ এখানে সিগনেচার করুন। ( আমার দিকে কিছু কাগজ এগিয়ে দিলো)
.
আমি কাগজ গুলো ভালো করে পরে দেখলাম। এতে লেখা, এই অপারেশনে রোগীর মৃত্যু হলে উক্ত হসপিটাল কতৃপক্ষ দ্বায়ী নয় এবং এ বিষয়ে আমি নিজের স্বীকারোক্তি দিচ্ছি। কাঁপা হাতে সিগনেচার করে দিলাম। তবে ডক্টরের সাথে কথা বলার পুরোটা সময় আমি খেয়াল করলাম, তিনি বার বার আমার পিছনে তাকাচ্ছে।
.
তারপর সে কাগজ গুলো নিয়ে আমাকে বললো,
— আচ্ছা চলুন আমার সাথে।
.
আমি উঠে পেছন ঘুরে তাকায়ে দেখলাম, এই চেম্বার রুমের দেওয়ালে আরিয়ান হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওর এক হাত পকেটে আর অন্য হাতে ওর রিভলবারটা নিয়ে নিজের কপালে স্লাইড করছে। চোখ দুটো বন্ধ করে রেখেছে। এক পা হাঁটুভেঙ্গে দেওয়ালে ঠেকানো। খুব সুন্দর লাগছে দেখতে। নাহ নাহ, কি ভাবছি এসব ? ওর সৌন্দর্য টা এখন বিষয় না। বিষয় হলো ও এখন এখানে কি করছে ? আমার গলাটা কেমন জানি মূহুর্তেই শুকিয়ে গেলো। কেউ এক কলসি পানি এনে দিলেও যেন আমার পিপাসা মিটবে না।
.
আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে আস্তে করে বললাম,
— আ… আরিয়ান… আপনি… এখানে…. ?
.
ঠাসসসসস। ব্যাস, আমার বলতে দেরি, কিন্তু ওর আমাকে থাপ্পড় মারতে দেরি হয়নি। মাথাটা পোঁইইইই করে ঘুরে গেল। চারিদিকে চাঁদ তারা ফুল পাখি এসব দেখতে পাচ্ছি। কানের মধ্যে চিঁইইই করে আওয়াজ পাচ্ছি। বিয়ের পর এই প্রথম আরিয়ান আমার গায়ে হাত তুললো। তবে এই থাপ্পড় খাওয়ার যথেষ্ট অন্যায়ও আমি করছি। ওরই সন্তান, ওকে না জানিয়েই মেরে ফেলতে যাচ্ছিলাম। তারপর আরিয়ান আমার হাতটা খুবই শক্ত করে মুঠ পাকিয়ে খামচে ধরে টেনে নিয়ে যাইতে লাগলো। আর মুখ দিয়ে শুধু একটা কথায় বললো, ” বাড়িতে আগে চলো ! “।
আমি একবার ঐ ডক্টরের দিকে তাকালাম। সে তো রীতিমতো থরথর করে কাঁপছে।
.
ক্লিনিকের বাইরে আমাকে গরুর দড়ি টানার মতো নিয়ে আসলো। আমার হার্টটা ভয়তে এতো জোরে বিট করছিলো যেন বুক থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাবে। দেখলাম বাইরে আরিয়ানের অধিনোস্ত কিছু পুলিশও এখানে আছে। তারা ওকে দেখামাত্র স্যালুট করলো। কেন জানি আমার এই পরিস্থিতিতেও গর্ব বোধ হচ্ছিলো। ওর মতো একজন সৎ পুলিশ ইনস্পেক্টর আমার স্বামী। তারপর দেখলাম ওই পুলিশ গুলো কেমন জানি শুকনো ঢোক গিলছে। তারামানে ওরা আরিয়ানের এই রাগ সম্পর্কে অবগত। সাথে সাথে আমার সব গর্ব টর্ব কর্পূরের মতো উবে গেলো। আরিয়ান ওর গাড়ির দরজা খুলে আমাকে এক প্রকার গাড়ির মধ্যে ছুড়ে মারলো। তারপর সেও গাড়িতে উঠে বসলো আমার অপজিটে। ফুল স্পীডে ড্রাইভিং করতে লাগলো। দেখলাম ওর চোখ দুটো যেন আগুনের লাভাতে পরিনত হয়েছে। কপালের রগ গুলো একদম ফুলে ফেঁপে উঠেছে। উফফ্ কেন যে ওকে একবার জানালাম না। ওকে অন্তত একবার আমার জানানো উচিৎ ছিল। এদিকে আমার খুব পানি পিপাসাও লেগেছে। ভয়ের জ্বালায় বলতেও পারছি না। তবু সাহস করে আমতা আমতা করে বললাম,
— আ… আরিয়ান… আমার খুব… পানি পিপাসা লেগেছে।
সে রাগে দাঁতে দাঁত চিবিয়ে আমাকে বললো,
— হ্যা তো, আগে বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর জনমের মতো পানি খাওয়াবো তোমাকে।
.
হয়ে গেলো আমার পানি খাওয়া। মাথাটা ভনভন করছে। আর গালটাও জ্বলছে। মনে মনে বলতে লাগলাম, ওর এই শক্ত হাতের থাপ্পড় কি আর আমার মতো নরম মেয়ে সহ্য করতে পারে। একটু পানিও খেতে দিলো না। নির্দয় একটা। তার উপর আমি প্রেগন্যান্ট। হুহ্, ধর্ম সহ্য করবে না তোমার এই নির্দয়তা। দেখে নিও।
.
হঠাৎ আরিয়ান আমার দিকে একটা ইনটেক পানির বোতল ছু্ঁড়ে মারলো। যাক এতোটুকু মায়া তাহলে আছে। পানি খাচ্ছি আর ভাবছি কোনো ভাবে যেন আজ আমি ওর হাত থেকে বেঁচে যায়।
.
বাড়িতে আমাকে গরু টানার মতো করে ঢুকালো। দেখলাম মা বসে বসে কাজের মহিলার সাথে বকবক করছে। আমি দৌড়ে মায়ের কাছে ছুটে যেটে চাইলাম। কিন্তু তার আগেই আরিয়ান আমাকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিলো। যেন ও জানতো আমি এমন কিছু করবো। তারপর আমাকে নিয়ে উপরে যেতে লাগলো। আমি এদিকে কান্না শুরু করে দিলাম। আর মা মা করে ডাকতে লাগলাম। মা মনে হলো আমার চোখের ভাষা বুঝতে পারলো। তিনি ও আমাদের পিছে পিছে আসতে লাগলো। রুমে আমাকে নামিয়ে দিয়েই ওর ক্রিকেট খেলার ব্যাটটা হাতে নিলো। যেটা দিয়ে ও আয়াতের সাথে ক্রিকেট খেলে। আয়াতের ব্যাটটা ছোটো। কিন্তু ওর টা তো বড়। ওটা দিয়ে কি এখন আমাকে মারবে ?
.
তারপর হিংস্র বাঘের মতো গর্জে উঠে আমাকে চিৎকার করে বললো,
— আমাকে না জানিয়ে তুই ঐ ক্লিনিকে গিয়েছিলি আমার সন্তানকে খুন করতে ? বল ! উত্তর দে!
উফফ্ আমার কলিজা নিমিষে শুকায়ে গেলো ওর চিৎকারে। আমাকে তুই তুকারি করে বলছে। এইবার সত্যিই কান্না লাগছে। আমার উত্তর না পেয়ে, ও কাঠের ব্যাটটা দিয়ে গোল্ড ফিসের এ্যকুরিয়ামে ধ্রাম করে বারি মারলো। সাথে সাথে কাঁচের টুকরোতে ঘর ভরে গেলো। পানিতে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে। গোল্ড ফিস দু’টো ছলাৎ ছলাৎ করে ফ্লোরে লাফিয়ে বেরাচ্ছে। সখ করে আমি আর আয়াত কয় এক মাস আগে মাছ দু’টো কিনে এনেছিলাম। আবারও আরিয়ানের চিৎকারে আমার কলিজা চমকায় গেলো। সে বললো,
— কি হলো উত্তর দে।
— আয়াত তো আছেই। আমার আর কোনো সন্তান চাই না। (কাঁদতে কাঁদতে বললাম)
— কিন্তু আমার চাই। অনেক গুলো সন্তান চাই। আর তার জন্য আমি বছর বছর বিয়ে করতে পারবো না। (চিৎকার করে)
— আমি.. ইচ্ছে.. করে.. এমন.. টা.. করি.. নি।(হিচকি তুলতে তুলতে বললাম)
.
কথাটা ওর কানে যেতেই ও ব্যাটটা দিয়ে এইবার ড্রেসিংটেবিল টা ভাঙ্গলো। তারপর হুট করে আমার সামনে এসে আমার গলা চেপে ধরলো। ওকে দেখে আমার মনে হলো ও আর ওর মাঝে নেই। আমি ব্যাথা পাচ্ছি গলায়, তবে শ্বাস নিতে পারছি। তারপর বললো,
— তাহলে বল কেন আমাকে ধোকা দিতে যাচ্ছিলি। আমাকে ভালোবাসিস না তা মানলাম। কিন্তু আমার নিষ্পাপ সন্তান কি দোষ করেছে যে ওকে মেরে ফেলতে গেলি। বল।
— এমন টা না আরিয়ান। আমি আপনাকে ভালোবাসি।(অস্পষ্ট গলায় কোনো রকমে কথা গুলো বললাম।)
.
তারপর মা এসে বলতে লাগলো,
— বাবা আমার এমন করে না। ওকে ছেড়ে দেয়। দেখ ও কষ্ট পাচ্ছে। নিশ্বাস নিতে পারছে না। মরে যাবে ও।
বলতে বলতে ওর হাত আমার গলা থেকে ছারিয়ে নিতে লাগলেন। কিন্তু ও জোঁকের মতো ধরে রেখেছে। ছারছেই না। হঠাৎ আমাকে আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো। আর মাকে অভিযোগের সুরে বলতে লাগলো,
— মা দেখো, ওই মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। ঘৃণা করে আমাকে। আমি ওকে ছাড়া শ্বাস নিতে পারি না। ওকে আমার জান দিয়ে আগলে রাখি, তবুও ও আমাকে বুঝে না। কেন করে ও এমন। ও কি দেখতে পায় না আমার কষ্টটা। মা ও আমার অংশকে খুন করতে গিয়েছিলো। আমাকে এতোটায় ঘৃণা করে যে আমার অংশকে ওর পেটে জায়গা দিতে চাইনি। আজ যদি আমি ওকে না দেখতে পারতাম যে ও ক্লিনিকে ঢুকছে, তাহলে এতোক্ষনে আমার সন্তানকে ও মেরে ফেলতো। ওই মেয়ে কি কখনোই আমাকে বুঝবে না মা ?
— তুই এসব কি বলছিস বাবা। আমার মাথায় তো কিছুই ঢুকছে না। পাখি, আমার ছেলে এসব কি বলছে ? তুমিই আমাকে ঠিক করে বলবে এখন। (কিছুটা ধমক দিয়ে)
.
আমি বিছানায় বসে আস্তে আস্তে বলতে লাগলাম,
— এটা সত্যি যে আমি আপনার ছেলের সন্তানের মা হতে চলেছি। (কান্না করে দিলাম কথাটা বলে)
— এটা সত্যিই খুবই আনন্দের বিষয়। তাহলে আমাদের না বলে তুমি ক্লিনিকে কেন গিয়েছিলে ?
— আর এটাও সত্যি যে, আমি আজ ক্লিনিকে গিয়েছিলাম আমার পেটের সন্তানকে এ্যবারোশান করতে।
.
এটা শুনে যেন মায়ের মাথায় বাজ পরলো। আর আরিয়ান তো আমাকে ওর চোখ দিয়েই পুড়িয়ে ফেলছে। মা আমাকে রেগে রেগে বললো,
— তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে ? তুমি কি বুঝতে পারছো তুমি কি বলছো ? এই জঘন্য কাজের জন্য তো আমিই তোমাকে কোনোদিন ক্ষমা করতাম না। আমার ছেলের তো রাগ হওয়া একদম স্বাভাবিক। (এই প্রথম আমাকে রেগে কথা বললো মা)
— হুম, কিন্তু এর জন্য যথেষ্ট কারনও ছিলো।(আমার চোখের পানি যেন থামছেই না)
.
এইবার আরিয়ান চিল্লিয়ে আমাকে বলতে লাগলো,
— হ্যা। এই কারন টাই তো জানতে চাচ্ছি আমি।
— আয়াতের জন্য।
— আয়াতের জন্য ? পাখি তোমার কথা গুলো না আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। (আবার তুমি করে বলতে লাগলো, রাগ কমলো কি না কে জানে। কিন্তু আমার কান্না থামছে না)
— আমি চাই না আমার অনাগত সন্তানের জন্য, আয়াতের সাথে কোনো অবিচার হোক। যদি আমি তখন আয়াতকে কম ভালোবাসি ? আমার অনাগত সন্তানের জন্য, আয়াতকে সময় না দেই ? আমি কখনই চাই না আয়াতকে আমার কোল ছাড়া করতে। আর আমার এবারোশান করানোর একমাত্র কারন এটাই। (কাঁদতে কাঁদতে)
— মা তুমি শুনেছো ওর কথা। আমার মনটা বলছে জাস্ট ওকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিতে। আরেহ্ পাষাণ, তোর পেটে শুধু আমার সন্তানই না। ওটা আমার ভালোবাসার প্রতীক। একটু রহম কর আমার উপর। একটু রহম কর। আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি তোর যন্ত্রণায়।
তারপর মা আরিয়ানে কাঁধে হাত রেখে বললো,
— বাবা আমার শান্ত হো। মেয়েটার অবস্থা আমি বুঝতে পারছি। ও অনেক কষ্টে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আয়াতের প্রতি ওর ভালোবাসায় ওকে বাধ্য করছে।
.
এসবের মধ্যে হঠাৎ আয়াতের কান্না শুনলাম। দেখলাম রুমের দরজার কাছে আমার কলিজাটা দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমাদের তাকানো দেখে ভাঙ্গা গলায় বলতে লাগলো,
— পাপায় মাম্মাম আমাল গোল্দ ফিস মলে গেছে। (তারপর ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠলো)
আমি দৌড়ে ওর কাছে চলে গেলাম। ওকে কোলে তুলে চুমুতে ওর মুখ ভাসিয়ে দিতে লাগলাম। আর আরিয়ান ফট করে এসে আমার কোল থেকে শকুনের মতো ছোঁ মেরে আয়াতকে নিয়ে নিলো। আর বলতে লাগলো,
— বাবা আমি তোমাকে আরো অনেক গোল্ড ফিস কিনে দিবো। কাঁদে না আমার ব্রেভ বয়।
.
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে কড়া গলায় বললো,
— তোমার সাহস কি করে হলো এইভাবে দৌড়ানোর। ডেলিভারি না হওয়া অবধি তুমি আয়াতকে কোলে তুলবে না।
— ঠিক এই ভয় টাই আমি করছিলাম। আপনি এখনি আমাকে আয়াতকে কোলে নিতে মানা করছেন। এটা কি ওর প্রতি অবেহেলা হচ্ছে না ? (আমার চোখ মুছে বললাম শান্ত গলায়)
— আমি কি মরে গিয়েছি যে আমার ছেলের প্রতি কোনো অবহেলা হবে ? এটাকে ওর প্রতি অবহেলা বলে না। তোমার প্রতি কেয়ারনেস বলে।
— চাইনা আমার এমন কেয়ারনেস, যেখানে আমি ওকে কোলেই নিতে পারবো না।
— একদম চুপ। আর একটা কথাও আমি শুনতে চাই না। আমার ছেলেকে আমি বুঝায়ে বলবো। তুমি না বুঝলেও, আমার ছেলে ঠিকই বুঝবে।
.
তারপর আয়াতের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
— মাই ব্রেভ বয়, আমি আর তোমার মাম্মাম মিলে তোমার খেলার জন্য তোমার ছোট্ট একটা আপুনি আনবো বুঝলে। আর সেই ছোট্ট আপুনিটা এখন তোমার মাম্মামের পেটের মধ্যে ঘুমু করছে। তাই এখন তোমার মাম্মামের কোলে ঝাঁপিয়ে উঠা যাবে না। বুঝেছো বাবা?
.
কথাটা শুনে আয়াতের কান্না যেন হাওয়া হয়ে গেলো। ও আরিয়ানের গলা জরিয়ে ধরে আনন্দের সাথে বলতে লাগলো,
— সত্যি পাপায় ? আমাকে আপুনি এনে দিবা ?
— হ্যা বাবা। চলো আমরা এখন গোল্ড ফিস কিনে আনবো।
আর আমার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে বললো,
— এতো নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছু নেই। তোমার সাথে হিসাব এখনো বাকি আছে।
.
তারপর ও আয়াতকে নিয়ে চলে গেল। আর আমি ভাবছি এতোকিছুর পরও আবার কিসের হিসাব কিতাব ?
মা আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে তার রুমে নিয়ে গেল।
·
·
·
চলবে……………………