________ #বউ_কিডন্যাপ ________
লেখক: ShoheL Rana
__________ #পর্বঃ০৯ ___________
রমজান ভাই উঠে এসে আবার মারতে গেলো মোটকুকে। আমি তাকে বাঁধা দিয়ে বললাম, ‘ভাই, ওকে পরে সাইজ করেন, এখন আমাদের উচিত আপনার সুইটহার্টকে তুলে নিয়ে আসা।’
রমজান ভাই বললো, ‘ঠিক আছে, তুমি পারবে না তুলে আনতে?’
-পারবো না মানে? আমাকে পারতেই হবে। কিন্তু ভাই, স্নেহা? ও কোথায়? আমি ওকে ভালোবাসি। বুঝতেই তো পারছেন, আপনি যেমন আন্টিকে চান, আমিও স্নেহাকে চাই।’
রমজান ভাই আমার গায়ে হাত বুলিয়ে বললো, ‘তোমার স্নেহা আমার হেফাজতে ভালো থাকবে, তুমি আগে আমার জানুকে নিয়ে আসো।’
-আমি থাকতে আপনি কোনো ভরসা করবেন না রমজান ভাই, সরি আমি থাকতে আপনি কোনো টেনশন করবেন না, মনে করুন আপনার জানু এখন আপনার সামনে নুডলস খাচ্ছে।
-আচ্ছা, তাহলে যাও এখন, ওকে নিয়ে আসো…..’
আমরা চলে এলাম, কিন্তু মোটকুকে আটকে রাখলো রমজান ভাই।
.
.
সন্ধ্যার পর আমরা বাংলোর কিছুটা দূরে একটা ঝোপে লুকিয়ে ছিলাম। শীতের কারণে সবাই কাঁপতেছিলাম। বাংলোর ভেতরে রফিক সাহেবের দল আরামে সময় কাটাচ্ছে, আর এদিকে আমরা ঠান্ডার মধ্যে মশার কামড় খাচ্ছি। ওরা হয়তো ভেবেছে আমরা আবারো বাংলোয় আসতে পারি, তাই বাংলো ছেড়ে যায়নি ওরা।
ধীরে ধীরে ঝোপ থেকে বের হয়ে আমি বাংলোর আরো কাছে গেলাম। জানালা দিয়ে ভেতরে উঁকি দিলাম। দেখলাম, আন্টি রফিক সাহেবের কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে। দুহাতে পেঁচিয়ে ধরেছেন উনি স্বামীর কোমর। আমি আন্টির নজর আমার দিকে ফেরানোর জন্য হাতের ইশারা করলাম। ভাবলাম, আন্টি আমার ইশারায় স্বামীকে ফাঁকি দিয়ে চলে আসবে আমাদের কাছে। কিন্তু আন্টি হঠাৎ স্বামীকে কাছে পেয়ে উল্টে যাবে কে জানতো? আমাকে দেখেই উনি চিল্লায় উঠলেন, ‘ঐ তো ওরা এসেছে।’
উনার চিৎকারে রফিক সাহেবও তাকালেন জানালার দিকে। সবাইকে আদেশ দিলেন আমাদের ধরার জন্য। আমি দৌড়াতে শুরু করলাম। ঝোপের কাছে এসে সবাইকে বললাম পালাতে। সবাই পালাতে শুরু করলো আমার কথা শুনে। পেছনে রফিক সাহেবের লোক তাড়া করতে লাগলো আমাদের। ধরতে পারলে পিঁপড়ার মতো মারবে। তাই বাঁচার জন্য সবাই দৌড়ের বেগ বাড়িয়ে দিলাম। শীতের মধ্যেও ঘামতে শুরু করেছি আমরা।
তখন দেখলাম, কোথা থেকে যেন একটা লোক দৌড়ে এসে ধাক্কা খেলো কাশেমের সাথে। দুজন দুদিকে গিয়ে পড়লো। কাশেম উঠে দাঁড়ালো, লোকটাও উঠে দাঁড়ালো। আর টাসকি খেয়ে গেলাম আমরা। কারণ লোকটা দেখতে কাশেমের কার্বন কপি। দুজনের দিকে অবাক হয়ে তাকালাম আমরা। কাশেম কোনটা এখানে দ্বিধায় পড়ে গেলাম। আমাদের সাথে এতক্ষণ যে কাশেম ছিলো, সে হঠাৎ চিল্লায় উঠে বললো, ‘এইতো আসল কাশেম এসে গেছে, আমি বলেছিলাম না আমি কাশেম না, আমি হাশেম। এই যে আমার ভাই কাশেম এসে গেছে।’
হাশেমের গালে একটা কষে চড় বসিয়ে বললাম, ‘আগে বলিসনি কেন তুই হাশেম?’
হাশেম গালে হাত বুলাতে বুলাতে বললো, ‘এই চড় খাওয়ার ভয়ে নিজেকে কাশেম বানালাম, এখন আবার চড় খেতে হলো।’
কাশেম বললো, ‘আমার ভাইকে মারলে কেন? ওর কী দোষ?’
এবার কাশেমের গালে কয়েকটা চড় বসিয়ে বললাম, ‘সব দোষ তোর। কোথায় পালায়ছিলি বল?’
-ভাই মার পরে দিও। আগে পালাও….. আমাকেও তাড়া করছে একদল, তোমাদেরও তাড়া করছে একদল।
-তোকে কে তাড়া করছে?
-স্নেহার হবু স্বামী। স্নেহাকে তুলে এনেছি বলে আমাকে মারার জন্য তাড়া করছে।’
.
.
শত্রুপক্ষ আরো কাছে চলে এসেছে দুদিক থেকে। আমরা আর কিছু না ভেবেই পালাতে শুরু করলাম অন্যদিকে। দৌড়াতে দৌড়াতে হঠাৎ একটা গাছের শেকড়ে হোচট খেয়ে পড়লো কাশেম, তার পেছনে ছিলো হাশেম। সে গিয়ে পড়লো কাশেমের উপর। দুজনকে সামলাতে গিয়ে আরো কিছু সময় নষ্ট হলো। এক কাশেমকে নিয়ে প্যারায় ছিলাম, এখন দুই কাশেম এসে হাজির। না জানি এই দুইটারে নিয়ে সামনে আরো কী কী হয়।
.
.
কোনোমতে পালিয়ে বাঁচলাম ওদের কাছ থেকে। আন্টির উপর রাগ হতে লাগলো। হঠাৎ এভাবে উল্টে গেলেন কেন উনি? ভেবেছিলাম উনাকে রমজান ভাই এর হাতে তুলে দিয়ে স্নেহাকে নিয়ে আসবো। কিন্তু তা আর হলো না। এখন স্নেহাকে কীভাবে নিয়ে আসবো?
.
.
ভাবতে ভাবতে একটা আইডিয়া পেলাম। দুই কাশেমের মধ্য থেকে একজনকে আন্টি বানিয়ে রমজান ডনের কাছে পাঠাতে হবে। রমজান ডন যেরকমের লোক, তাতে তাকে বোকা বানাতে কোনো কষ্ট করতে হবেনা? কিন্তু কোন কাশেমকে পাঠাবো? তাই দুই কাশেমের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোমাদের মধ্যে মেয়েদের কণ্ঠ নকল করার ক্ষমতা আছে কার?’
আসল কাশেম গলা উঁচিয়ে সিনা টান করে বললো, ‘আমি পারি নকল করতে।’
-তাই? আন্টির কণ্ঠ নকল করতে পারবি?’
-পারবো…..’ বলেই সে আন্টির কণ্ঠ নকল করে দেখালো। আমি তার কাঁধে হাত চাপড়ে বললাম, ‘সাবাশ….. তোকে এখন আন্টি বানিয়ে রমজান ডনের আস্তানায় নিয়ে যাবো।’
কাশেম মুখটা ফ্যাকাশে করে বললো, ‘ফেঁসে গেলাম নিজের কথায়….’
হাশেম খুশিতে লাফিয়ে উঠে বললো, ‘ভাগ্য ভালো, আমি নকল করতে পারিনা….’
.
.
শপিং সেন্টারে গিয়ে একটা শাড়ি কিনে আনলাম। ওটা কাশেমকে পরিয়ে মুখ পর্যন্ত ঘোমটা টেনে দিলাম। তারপর কাশেমকে নিয়ে আমরা সবাই চললাম রমজান ডনের আস্তানার দিকে…….’
.
.
(চলবে…….)
.