নুর পর্ব ৭

#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-07

মোম লাইব্রেরি থেকে এসেই ঘুমুচ্ছে। গভীর ঘুমে সে আছন্ন।যেন তার কোন ভাবনা চিন্তা নেই। সে মহা সুখী।
রুমের ভেতর কারও অস্তিত্ব অনুভব করলো সে।
কেউ যেন তার দিকে এগিয়ে আসছে। তার খুব কাছে এসেছে। মুখের উপর কারও গরম নিঃশ্বাস পড়ছে৷ পায়ে কেউ হাত বুলাচ্ছে।
পারফিউমের একটা কড়া গন্ধ ভাসছে। কানেকানে কেউ ফিসফিস করে কিছু বলছে। খুব নরম স্বরে কথা গুলো বলছে কেউ!
মোম চোখ মেলে তাকাতে পাচ্ছেনা। শোয়া থেকে উঠে বসতে চাচ্ছে কিন্তু উঠতে পাচ্ছেনা। কেউ যেন তাকে চেপে ধরে আছে।
হঠাৎ মুখে একটা ঠান্ডা পানির ঝাপসা পাওয়া গেলো।
মোম চোখ মেলে উঠে বসে পড়লো।
-আর ইউ ফাইন ক্যান্ডল?
মোম রুমে চোখ বুলিয়ে বলল আই এম ফাইন।
কাশফিয়া বলল- তুমি এভাবে ঘুমিয়ে আছো কিভাবে?
-কেন? কি হয়েছে?
-তোমার জায়গায় আমি থাকলে এতোটা স্বাভাবিক থাকতে পারতাম না। গলার কাটার মতো এতো বড় একটা প্রবলেম ক্রিয়েট হয়েছে।
-মহান আল্লাহ তায়ালা যার ভরসা এবং বিশ্বাস তার কিসের ভয়?
উফফ ক্ষিদে লেগেছে। পেট ব্যথা করছে।
আজানের সময় হয়েছে।মেন্যুতে কি আছে ইফতারের জন্য?
সব সাজিয়ে নাও! সবকিছু খাব!
কাশফিয়া একটু ভয় পাওয়া স্বরে বলল- হাতমুখ ধুয়ে অজু করে নাও। এখুনি ইফতারি সাজাচ্ছি। তোমার মতিগতি দেখে কিছু বুঝতে পাচ্ছিনা।
.
.
সকালে মোম কে বোরখা পড়তে দেখে কাশফিয়া চিন্তিত হয়ে বলল- কোথায় যাচ্ছো? সাজ সকালে?
-সামনে ক্লাশ টেস্ট! একটা লেকচারও মিস দেওয়া যাবেনা। তুমিও রেডি হয়ে নাও।
কাশফিয়া মোমের হাত ধরে বলল- তুমি কিভাবে ঘুমুচ্ছো? খাচ্ছো? পড়ছো? আবার এখন ভার্সিটিতেও যাচ্ছো?
মোম হাসলো!
-তুমি কিছু ঠিক করেছো?
কি ডিসিশন নিয়েছো?
-তুমি টেনশন নিচ্ছো বেশি। কুল ডাউন।
-আমি তোমার জায়গায় হলে শান্ত থাকতে পারতাম না।
-তুমি-ই বলো আমার কি করা উচিৎ?
-পাসপোর্ট নিয়ে সোজা টিকিট কেটে দেশে চলে যাও। তুমি আর তোমার সম্মান বেঁচে থাকলে পড়াশোনা আবার শুরু করতে পারবে।
হাসছো কেন?
-যতোটা সহজ ভাবছো অতোটা সহজ নয় দেশে চলে যাওয়ার সব ছেড়ে।
লেখা পড়াতে ভালো ছিলাম বলে মনে মনে সপ্ন তৈরি হয়েছে দেশের জন্য কিছু করার। অক্সফোর্ডের স্টুডেন্ট হওয়ার জন্য বাড়িতে যুদ্ধ করে আসতে হয়েছে।
আর আমি কিনা একটা নাস্তিক সন্ত্রাসীর ভয়ে আমার সপ্ন ভেঙে দেশে চলে যাব? কখনো না।আল্লাহ তায়ালা এতো বড় অনাচার আমার উপর হতে দেবেন না।
.
.
মোমের মনে হলো ভার্সিটির সবাই তাকে নিয়ে আলোচনা করছে। সে কাছে যেতেই আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়।
সবাই কেমন যেন তাকে ভয় পাচ্ছে। চোখমুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আগুন তাকে দেখছে সর্বত্র।
আগুন যেন সব জায়গা থেকে তাকে চোখে চোখে রাখছে।
সকল স্থানে আগুনের বিচরণ।
মোমের আগুন কে মোটেও ভয় করে না। কিন্তু ছেলে হিসেবে আগুন কে মোমের একরকম ইতস্তত ফিলিং হয়।
এভাবে আর যায় হোক পড়াশোনা হয়না।
মোম ভেবেছিলো ভার্সিটি আসতেই আগুনের ফেস টু ফেস হতে হবে। তাকে জবাব দিতে হবে। আগুন কে দেখা গেলো না।
ক্লাসের মাঝখানে হঠাৎ আগুন কে দেখা গেলো।
আগুন পকেটে হাত দিয়ে সানগ্লাস পড়ে স্বাভাবিক ভাবে ক্লাসে ঢুকলো।
প্রফেসর সহ সকল স্টুডেন্ট বসা থেকে দাড়িয়ে পড়লো।
মোমের সামনে এসে আগুন সানগ্লাস খুলে বলল- হেই ডার্লিং হোয়াটসঅ্যাপ?
মোম যেন আগুনের কথা শুনতে পায়নি এমন ভাব করে পেপারে লেকচারের ইম্পর্ট্যান্ট নোটস গুলো লিখছে।
-(অনুবাদ) আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি বিউটিফুল এঞ্জেল!
মোম আগের মতোই নোটস লিখছে।
-আমাকে রাগিয়ে দিচ্ছো খামকা।
তুমি কিন্তু আমার রাগ সম্পর্কে জানো।
কথা বলো স্পিকআপ?
মোম এবার প্রফেসরের উদ্দেশ্যে বলল- স্যার, ডিপার্টমেন্টে লেকচার চলা কালীন আউট সাইড ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট ঢোকা নিষেধ। আপনি কিছু বলছেন না কেন? অক্সফোর্ডের রুলস সবার জন্য প্রযোজ্য!
এই লোক কে বের করে দিয়ে লেকচার শুরু করুন।
আমরা সবাই ডিস্টার্ব হচ্ছি।
প্রফেসর আগুনের দিকে তাকিয়ে রইলো অসহায় দৃষ্টিতে।
আগুন গলার স্বর যতটা সম্ভব নিচু করে কটমট করে বলল- হাউ ডেয়ার ইউ? কিছু জিজ্ঞেস করেছিলাম তোমাকে। তুমি আমার সাথে কথা না বলে প্রফেসরের সাথে কথা বললে কেন? যা বলার আমাকে বলবে।
আগুন ডিপার্টমেন্টের সবার উদ্দেশ্য বলল- তোমরা কেউ আমার কারণে ডিস্টার্ব হচ্ছো?
সবাই না সূচক মাথা নাড়ালো।
সবাই আগুনকে দেখে ভয় পায়। সে কাউকে মেরে টেমস নদীতে ফেলে দিলেও কেউ কিছু বলতে পারবে না আর তার কারণে কেউ ডিস্টার্ব ফিল করছে সেটা কি কেউ মুখ ফুটে বলবে। সবাই তো মোম নয়।
– দেখে নাও। কেউ ডিস্টার্ব হচ্ছে না। আর হ্যাঁ কি যেন বলছিলে? কাকে রুলস শেখাচ্ছো? কিং ফায়ারের জন্য কোন রুলস প্রযোজ্য নয়। সাধারণ স্টুডেন্টের সাথে তুমি আমাকে মেলাচ্ছো কোন সাহসে? সবার স্ট্যান্ডার্ড কি কিং ফায়ারের সমতুল্য?
আন্স মি ? আন্স মি?
আগুনের চেঁচামেচিতে পুরো ডিপার্টমেন্ট স্তব্ধ হয়ে গেলো।
মোমের সাথে সাথে আজ তারাও আগুনের দাবানলে পড়েছে।
মোম আবারও নোটস লিখতে ব্যস্ত। সামনে এক্সাম। ফার্স্ট হতেই হবে।
এবার আগুন মোমের খাতা কেড়ে নিয়ে ডিপার্টমেন্টের বাহিরে ফেলে দিলো।
তারপর হাত ইশারা করলো।
ডিপার্টমেন্টের দরজায় দাড়িয়ে থাকা আগুনের বডিগার্ডসরা ভেতরে ঢুকে স্টুডেন্টদের ক্লাসরুম থেকে বের করে দিতে থাকলো। সবাই প্রাণ হাতে নিয়ে তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়লো।
সবাই বের হয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচল যেন বাঘের গুহা থেকে প্রাণ নিয়ে বেরিয়েছে।
.
আগুন মোমের পাশে বসলো।
-তো কি চিন্তা নিলে? ডিসিশন বলো? যেটাই ডিসিশন নাও আন্সটা ইয়েস হতে হবে।
আমি তোমাকে আমার লাইফপার্টনার চুজ করেছি।
তোমার সাথেই কন্ট্রাক্ট ম্যারেজে যেতে চাই।
আগুনের পাশ থেকে মোম উঠে পড়লো।
মনে হচ্ছিল কোন কাটা যুক্ত বিছা পাশে বসেছে।
ঘৃণা লাগছে।
আগুন হেসে বলল- সারাজীবন তো এই কিং ফায়ারের কুইন হয়ে থাকতে হবে। তখন তো বসা থেকে শুরু করে সবকিছু করতে তুমি বাধ্য। তবে এখন কেন বসতে চাচ্ছোনা ডার্লিং?
মোম এবার রেগে তাকালো আগুনের দিকে।
তারপর স্বাভাবিক কন্ঠে বলল- এই সপ্ন দেখতে থাকুন। সপ্ন সপ্ন থেকেই যাবে। কখনো পূরণ হবে না।
আপনি আমার জন্য হারাম। আপনার মতো লেকের সাথে কথা বলাই হারাম বিয়ে তো দূরে থাক।
-এর মানে কি? সাবধানে কথা বলো উড বি হাসব্যান্ডের সাথে ডার্লিং।
.
-আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই। যদিও এগুলো বলার কোন মানে হয়না আপনাকে।
-হাজারটা কথা বলো।

-যারা কোন আসমানি কিতাবে বিশ্বাস রাখেনা তারা নাস্তিক। তাদের সাথে বিয়ে করা হারাম। তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলে ধর্মীয় সংকট উৎপন্ন হতে পারে।
আকিদা-বিশ্বাসের দিক থেকে এরা নাস্তিক। কুয়েতের ওয়াকফ্ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ইসলামী আইন বিশ্বকোষে রয়েছে, ‘মুসলমানের জন্য এমন নারীকে বিবাহ করা হারাম, যার কোনো কিতাব নেই (অর্থাত্ যে কোনো আসমানি গ্রন্থে বিশ্বাসী নয়)।’ (আল মাওসুআতুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়্যাহ : ৩৫/২৬)। এমনকি মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে যে পুরুষরা কোন আসমানি কিতাবে বিশ্বাসী নয় তাদের বিয়ে করা হারাম! আকিদা বিশ্বাসের দিক থেকে এরা নাস্তিক।
ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে একটা বৃহৎ সমাজ গঠনের সব উপাদান ইসলাম ধর্মের আছে। আর ইসলামই একমাত্র জীবনব্যবস্থা, যার বিশ্বসমাজ গড়ে তোলার মতো ঔদার্য ও সামর্থ্য আছে।
এই ধর্মে আহলে কিতাব, মুসলমান ও একই রাষ্ট্রে বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে আচার-ব্যবহার ও সামাজিকতায় কোনো বৈষম্য নেই। গোশত ছাড়া অন্য খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে আহলে কিতাব (ইহুদি-খ্রিস্টান) ও অন্য কাফিরদের মধ্যে কোনো তারতম্য নেই। অর্থাৎ পরস্পরে একে অন্যের হালাল খাবার গ্রহণ করতে পারবে। গোশতের ক্ষেত্রেও আহলে কিতাব ও মুসলমানদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো হালাল প্রাণী আহলে কিতাবের কেউ আল্লাহর নামে জবাই করলে মুসলমানদের জন্য সেটা আহার করা বৈধ। এ ছাড়া ইসলাম তাদের সঙ্গে সামাজিক অংশীদারি, সৌজন্যবোধ ও মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে। বৈধ যে কোনো বস্তু অমুসলিমদের সঙ্গে বেচাকেনা করা বৈধ। এমনকী আহলে কিতাবের নারীদের বিয়ে করা বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘… মুমিন সতীসাধ্বী নারী ও আহলে কিতাবের সতীসাধ্বী নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো…।’ (সূরা : মায়েদা, আয়াত : ৫)।

তবে এটাও স্মরণ রাখতে হবে যে ইসলাম একটি পৃথক ধর্ম। তাই আত্মীয়তা, ঘনিষ্ঠতা ও সামাজিকতার ক্ষেত্রে ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের মধ্যে কিছু পার্থক্য ধরে রাখা হয়েছে। যেমন- আহলে কিতাবের নারীদের বিয়ে করা মুসলমানদের জন্য বৈধ বটে; কিন্তু আহলে কিতাব কোনো পুরুষের সঙ্গে মুসলিম নারীদের বিয়ে বৈধ নয়।

আহলে কিতাব ছাড়া অন্য ধর্মের অনুসারীদের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈবাহিক সম্পর্ক বৈধ নয়। সুতরাং প্রচলিত হিন্দু, বৌদ্ধ, বাহায়ি, শিখ ও কনফুসীয় ধর্ম আসমানি ধর্ম হওয়ার বিষয়টি অকাট্যভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এসব ধর্মের অনুসারীরা আহলে কিতাব হিসেবে গণ্য হবে না। তাই তাদের সঙ্গে মুসলিম নারী ও পুরুষের কোনো ধরনের বিয়ে বৈধ নয়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘ঈমান না আনা পর্যন্ত তোমরা মুশরিক (বহু স্রষ্টায় বিশ্বাসী) নারীকে বিয়ে করো না, যদিও মুশরিক নারী তোমাদের মুগ্ধ করে…। ঈমান না আনা পর্যন্ত তোমরা মুশরিক পুরুষের সঙ্গে (তোমাদের নারীদের) বিয়ে দিয়ো না, যদিও মুশরিক পুরুষ তোমাদের মুগ্ধ করে…।’ (সূরা : বাকারা, আয়াত : ২২১)

অন্য আয়াতে এসেছে, ‘…তোমরা কাফির নারীদের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না…।’ (সূরা : মুমতাহিনা, আয়াত : ১০)

মুসলিম নারীদের জন্য অন্য ধর্মাবলম্বী পুরুষকে স্বামী হিসেবে গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে এক আয়াতে এসেছে, ‘হে মুমিনরা! যখন তোমাদের কাছে মুমিন নারীরা হিজরত করে আসে, তখন তোমরা তাদের পরীক্ষা করে নাও, তাদের ঈমান সম্পর্কে আল্লাহই ভালো জানেন। অত:পর যদি তাদের মুমিন বলে জানতে পারো, তাহলে তাদের কাফিরদের কাছে ফিরিয়ে দিয়ো না। মুমিন নারীরা কাফিরদের জন্য হালাল নয়। আর কাফিররাও তাদের জন্য হালাল নয়…।’ (সূরা : মুমতাহিনা, আয়াত : ১০)।

ইমাম বুখারি (রহ.) এর শিক্ষক ইমাম আবদুর রাজ্জাক (রহ.) তার গ্রন্থে লিখেছেন, আবু জুবায়ের (রা.) বলেন, আমি জাবের (রা.)-কে বলতে শুনেছি, আহলে কিতাবের নারীরা আমাদের (মুসলমানদের) জন্য হালাল। কিন্তু আমাদের নারীরা তাদের জন্য হারাম।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৬/৪৩)।

এ বিষয়ে খলিফা ওমর (রা.) এর কর্মপন্থা কী ছিল- সে সম্পর্কে জায়েদ বিন ওয়াহাব (রা.) বলেন, ‘ওমর (রা.) এই মর্মে পত্র পাঠিয়েছেন যে মুসলিম পুরুষ খ্রিস্টান নারীকে বিবাহ করতে পারবে। কিন্তু কোনো খ্রিস্টান পুরুষ কোনো মুসলিম নারীকে বিবাহ করতে পারবে না।’ (কানযুলউম্মাল : ১৬/৫৪৮)।

কেন এই বিধান? কেন মুসলিম নারীকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি? এর জবাবে উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম দার্শনিক শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভি (রহ.) লিখেছেন, ‘বিশেষত বিবাহের মাধ্যমে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে সম্পর্কধারা ধর্মীয় মূল্যবোধ বিনষ্ট করার অন্যতম কারণ। এর মাধ্যমে জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে কুফর (ইসলামবিরোধী বিশ্বাস ও রীতি-নীতি) অন্তরে প্রবেশ করে (তাই আহলে কিতাব ছাড়া অন্যদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ নয়)। কিন্তু আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানরা আসমানি শরিয়তে (ধর্মীয় বিধান) বিশ্বাসী। তারা শরিয়তের মৌলিক বিষয় (অর্থাৎ একত্ববাদ, নবুয়ত ও আখিরাত) স্বীকার করে। ফলে তাদের সংস্পর্শে ধর্মীয় মূল্যবোধ বিনষ্ট হওয়ার বিষয়টি অন্য ধর্মের তুলনায় কম ক্ষতিকর। কিন্তু অগ্নিপূজারি, মূর্তিপূজারি ও মুশরিকদের বিষয়টি এর ব্যতিক্রম (অর্থাৎ মৌলিক, শাখাগত ও সংস্কৃতিগত সব বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ থাকায় তাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেননা এটি জীবনাচারে আমূল প্রভাব বিস্তার করতে পারে)।’

কেন মুসলিম পুরুষ আহলে কিতাব নারীকে বিয়ে করতে পারবে- এ প্রসঙ্গে শাহ ওয়ালি উল্লাহ (রহ.) লিখেছেন, ‘বৈবাহিক জীবনে স্বামীর ভূমিকা প্রভাব বিস্তারকারী হয়। স্ত্রীরা স্বামীদের তত্ত্বাবধানে চলে আসে। ফলে কোনো মুসলিম আহলে কিতাবের নারীকে বিয়ে করলে মুসলিম পুরুষের ধর্মীয় জীবনে প্রভাব বিস্তারের অবকাশ কম থাকে। তাই এ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা : ২/১৩৩)।

শাহ ওয়ালি উল্লাহর এ বক্তব্য থেকে এ বিষয়টিও বোঝা যায় যে কেন মুসলিম নারীকে অন্য ধর্মাবলম্বীর কাছে বিয়ে দেয়া যাবে না। অর্থাৎ বৈবাহিক জীবনে স্বামীর ভূমিকা প্রভাব বিস্তারকারী ও শক্তিমান হয়ে ওঠায় মুসলিম নারীর ধর্মীয় জীবনাচারে ব্যাপক শিথিলতা আসতে পারে। তাই কোনো পরিস্থিতিতে মুসলিম নারীকে অন্য ধর্মাবলম্বীর কাছে বিয়ে দেয়া বৈধ নয়। তবে এটি একটি যুক্তি। এ যুক্তি কোথাও কার্যকর না হলেও বিয়ে বৈধ নয়। কেননা এ ধরনের বিয়ে অবৈধ হওয়ার মূল কারণ তো এটাই যে মহান আল্লাহ এমন বিয়ের অনুমতি দেননি।

ইমাম আলাউদ্দিন কাসানি (রহ.) লিখেছেন, ‘অমুসলিম নারীদের বিয়ে করা বৈধ করা হয়েছে ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে।

এর আগে তারা পূর্ববর্তী নবী ও আসমানি কিতাবে ঈমান এনেছে। মুসলমানের সঙ্গে তাদের বিয়ে হলে মুসলিম ব্যক্তি তাদের ইসলামের প্রতি আহ্বান করতে পারবে।’ (বাদায়িউস সানায়ি : ২/২৭০)।

আন্তর্ধর্মীয় বিয়ের নীতিমালার সঙ্গে এটাও জানা জরুরি যে কোনো ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে গেলে, তার বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে। মুসলমানদের জন্য কোনো মুরতাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ নয়। এ ব্যাপারে মুসলিম জাতি একমত। মাজহাব চতুষ্টয়ের ওপর লিখিত গ্রন্থ ‘আল ফিকহ আলাল মাজাহিবিল আরবাআ’য় রয়েছে, ‘মুরতাদের পাঁচটি বিষয় সর্বসম্মতিক্রমে বাতিল। তার প্রধান ও প্রথম বিধান হলো, ‘মুরতাদের বিবাহ নি:শর্তভাবে বাতিল।’ (আল ফিকহ আলাল মাজাহিবিল আরবাআ : ৪/১০৬)।

মিসরের জামে আজহারের ফাতওয়া হলো : ‘উলামায়ে কেরাম একমত রয়েছেন যে মুরতাদের বিবাহ বাতিল হয়ে যায়।’ (ফাতাওয়া আল আজহার : ১/৩২৪)।
শুনুন মিঃ কিং অথবা ফায়ার যায় হন না কেন মুসলিম ব্যাতিত কারও ওয়াইফ আমি হতে পারবো না। বিয়ে সম্পর্কে আমার ধর্মে আরও নির্দেশের হাদিস আছে।
আমার ধর্ম কখনো অনুমতি দেয়নি নাস্তিক বা অন্য ধর্মালম্বীদের সাথে বিয়ের।
আমার আশা ছেড়ে দিন। আপনি যেমন নাস্তিক! বিয়েতে বিশ্বাস করেন না, আল্লাহ তায়ালার উপস্থিতি বিশ্বাস করেন না। ঠিক তেমন আমি আস্তিক! বিয়ে পবিত্র বন্ধন। বিয়েতে বিশ্বাস করি। আল্লাহ তায়ালার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস।
সো আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না।
আপনি আপনার মতো নাস্তিক, সন্ত্রাসী, উগ্রবাদী, স্মার্ট, মডেলিংয়ের কোন মেয়ে কে খুঁজে নিন। কন্ট্রাক্ট ম্যারেজে যান৷
আপনাকে রিজেক্ট করলাম।
.
.
আগুন একটা পানির বোতল মোমের কাছে দিয়ে বলল- নাও ডার্লিং! পানি খাও।এতো লেকচার দেওয়ায় গলা শুকিয়ে গিয়েছে নিশ্চয়ই।
এসব লেকচার শুনে আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছে।
-আমি আপনাকে নিশ্চয়ই বোঝাতে পেরেছি? আপনি কি বুঝতে পেরেছেন?
আমার সামনে আর আসবেন না। আমিও আসব না। আমাদের রাস্তা এখন থেকে আলাদা।
মোম চলে যাচ্ছিলো।
আগুন পেছন থেকে হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়ালো মোমের।
মোম এক পা পিছিয়ে গেলো।
আগুন মোমের দিকে ঝুঁকে বলল- তোমার শাস্তি তো এটাই বিউটিফুল এঞ্জেল।
-আপনি কিন্তু এবার সহ্যের সীমা অতিক্রম করছেন।
-তুমিও আমার সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছো।এবার তা নিজেকে দিয়ে মাশুল দেবে। আর হ্যাঁ এখন থেকে আমি-ই তোমার সামনে থাকব অলটাইম। অন্যকেউ নয় ডার্লিং।
আমার কথা মতো রাজি হয়ে যাও নইলে তোর সহ্য সীমা আরও বড় করতে হবে।
-আর কি করবেন? কি করার বাকি রেখেছেন?
-অনেক কিছু করার বাকি আছে। তোমার কাছের মানুষ গুলো কে তুমি খুব পছন্দ করো। তুমি নিশ্চয়ই চাইবে না ওদের কষ্ট হোক, বিপদে পড়ুক।
-এর মানে অনেক কিছু হতে পারে। যদি আমার কথা মতো রাজি না হও।
মোম তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে আগুনের দিকে।
মানুষ এতোটা নিচ কেন!
-কি খুব রাগ লাগছে? আমাকে আঘাত করতে ইচ্ছে করছে?
উফফ রাগলে তোমাকে নিশ্চয়ই দারুণ দেখায়৷আরে এভাবে তাকিয়ে থেকো না! তাকিয়ে থাকার অনেক সময় পাবে। হা! হা! হা!।
-তাকিয়ে দেখছিলাম সুন্দর পৃথিবীতে আপনার মতো লোক কি করে আছে।
– একদম ঠিক। আমার মতো গুড লুকিং, হ্যান্ডসাম খুব কম রয়েছে।
মোম অন্যদিকে ঘৃণায় তাকালো।
-ওভাবে ঘৃণায় মুখ ঘোরালে চলবেনা। এই ঘৃণিত লোকটাই তোমার অফিসিয়াল হাসব্যান্ড হবে।
এবার বলো আমাকে বিয়ে করবে?
মোম হঠাৎ বলল-করব। আমার একটা শর্ত আছে।
আগুন একটু চমকে গেলো।
সব মেয়েরা ওকে বলে জাদুকর। একারণেই মেয়েরা ওর জন্য পাগল।
তাহলে কি মোমের মধ্যে তার জাদুটা কাজ করেছে? এজন্যই রাজি হয়েছে?
আগুন হেঁসে বলল- তোমার সকল শর্ত মেনে নেওয়া হবে। আফ্টার অল ইউ আর মাই অনলি ফিউচার ওয়াইফ।
শর্ত যতটা কঠিন হোক কিং ফায়ারের তা পূরণ করার সামর্থ্য আছে। তোমারও দেখা উচিৎ তোমার ফিউচার হাসব্যান্ডের সামর্থ্য!
বলো কি শর্ত? কতগুলো শর্ত?

.
❤আল-কুরআনের ৮১টি উপদেশ বাণীর একটি বাণীঃ
৭। ঘুষে লিপ্ত হয়ো না। [সূরা বাকারা ২:১৮৮]
.
চলবে…………❤❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here