যদি সত্যি টা জানতে পর্ব ৫

যদি সত্যি টা জানতে
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ৫

তাসফিয়াঃ তুৃমি আব্বুকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আব্বু কতটা কষ্ট পাইছে জানলে হয়তো তুমি কখনো আমাকে আর আব্বুকে একলা রেখে চলে যেতে পারতা না…..


আদ্রিতাঃ আমি এগারো টা বছর একলা থেকেছি তোদের কাছ থেকে তাহলে আমার কতটা কষ্ট হইছে কখনো তো জানতেও চাইলি না….

তোর আব্বু হয়তো আর কখনো আমাকে মেনে নিবে না….


তাসফিয়াঃ হয়তো বা ছোট থেকে দেখে আসছি আব্বু অতীতকে ভুলে থাকার চেষ্টা করে আসতেছে অনেকে আব্বুকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিচ্ছিলো কিন্তু আব্বু আমার জন্য কারো সাথে বিয়ে তো দুরের কথা অপরিচিত কোনো মহিলার সঙ্গে কথা বলে না…


আব্বুর অফিসের কাজ ছিলো বলে বাংলাদেশ আশা হলো আমরা দুদিন পর আবার আমেরিকা ফিরে যাবো…..

বাবাঃ তুমি আমাদের সঙ্গে থেকে যাও না…

তাসফিয়াঃ চাইলেও তা করতে পারবো না দাদু আমার আব্বুর আমি ছাড়া আর কেউ নাই আব্বুর শেষ ভরসা আমি আমার জন্যই আব্বু এত দিন বেচে রয়েছে আর তা ছাড়া আব্বুকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না আজ অনেকটা কষ্ট হবে আব্বুকে ছাড়া থাকতে কিন্তু তবুও এটাই শেষ বার এদেশে আসা তাই একটা দিন তোমাদের সঙ্গে থাকতে চাই….


আদ্রিতাঃ তুমি খুব ভালো বাসো না তোমার আব্বুকে…

তাসফিয়াঃ হ্যা অনেক অনেক ভালেবাসি আব্বু এমন কিছু বাদ নাই যেটা আমি চাইছি আর পাই নি প্রত্যক টা জিনিস বলার সাথে পেয়ে যাই আমার আব্বুর মতো পৃথিবীতে দুটো আব্বু হয় না…


আদ্রিতাঃ আর আমাকে কত টা ভালোবাসো…

তাসফিয়াঃ জানি না হয়তো ১০০ ভাগের ১ ভাগ…..

আদ্রিতাঃ 😪😢😢😥 একবার বলিস না তোমার বাবাকে আমাকে ক্ষমা করে দিতে 🙏

তাসফিয়াঃ আচ্ছা বলবো যখন আব্বু ভালো মুডে থাকবে তখন আচ্ছা আমার এখনো মনে হয় আব্বুকে তোমাকে এখনো ভালোবাসে কিন্তু কখনো প্রকাশ করতে চায় না….


আদ্রিতাঃ হয়তো বা, বা এমন টাও হতে পারে যে ভালোবাসার চাইতে ঘৃণা টা অনেক জমে আছে মনের মধ্যে…

তাসফিয়াঃ এসব কথা ছাড়ো না এখন আমার খুব খিদে পেয়েছে কিছু খেতে দাও…


আদ্রিতাঃ তুই বস আমি তোর জন্য আলুর পরোটা বানিয়ে আনছি…

তাসফিয়াঃ আলুর আবার পরোটা হয় আজ প্রথম শুনলাম…

আদ্রিতাঃ আমি নিয়ে আসতেছি তুই বস..

রান্না ঘরে গিয়ে তাড়াতাড়ি করে কয়েকটা আলু সিদ্ধ করে আটা গুলোর সঙ্গে মেখে তাড়াতাড়ি করে কয়েকটা আলুর পরোটা বানিয়ে ফেললাম…


তার পর প্লেট করে….

মেয়ের জন্য নিয়ে গেলাম..


তাসফিয়াঃ এগুলা এমন দেখতে কেনো…

আদ্রিতাঃ দেখতে যেমনি হোক না কেনো অনেক স্বাদ একটু খেয়ে দেখো…

তাসফিয়াঃ দাও…

আদ্রিতাঃ নাহ একদমি না আমি খাইয়ে দিচ্ছি…

তাসফিয়াঃ আমি আব্বুর হাতে ছাড়া কারো হাতে খাইয়ে নিয় না….

আদ্রিতাঃ আমিও তো তোর মা আমার হাতেও কী খাবি না…

তাসফিয়াঃ আমি তো এমনিতে বললাম দাও খাইয়ে…


ওমা এগুলা তো খুব সুন্দর খাইতে তুমি নিজে রান্না করেছো..

আদ্রিতাঃ হুম তোর জন্য আরো কত কিছু বানিয়ে খাওয়াবো তোকে….

তাসফিয়াঃ দেখতে দেখতে দিন পেরিয়ে রাত হয়ে গেলো…



সাঈদঃ মেয়েটা আজকে পাশে নেই বলে মন টা খুব ছটফট করতেছে থাকতে পারছি আজ প্রথম বার এমন টা হলো তাসফিয়া কে ছাড়া থাকছি আমি যে একটা মুহুর্ত আর থাকতে পারছি না মনে হচ্ছে কলিজাটা কেউ ছিড়ে নিয়ে চলে গেছে…

নাহ এবার আমাকে তাসফিয়াকে নিয়ে আনতে যেতেই হবে না হলে মরেই যাবো…




আদ্রিতাঃ কী হলো মা তোর মুখটা এমন ফেকাসে হয়ে গেলো কেনো…

তাসফিয়াঃ আব্বুর কথা মনে পড়ছে আমার ভিতরটা কেমন জানি করতে মনে হচ্ছে আব্বু আমাকে এখনি নিয়ে আসতে আসবে…

আদ্রিতাঃ অনেক রাত হয়ে গেছে এখন প্রায় দেড় টা বাজতে চললো…


এবার ঘুমিয়ে পড়ো কাল আবার তো তুমি সকাল সকাল চলে যাবে…

তাসফিয়াঃ জানো আম্মুকে তোমাকে একলা রেখে আমার মন চাচ্ছে না কিন্তু আব্বুকে ছাড়া যে থাকতে পারি না…


ঠিক তখনি বাড়ির কলিং বেলটা বেজে উঠলো…

আদ্রিতাঃ এত রাতে কে কলিং বেলটা বাজাচ্ছে….

তাসফিয়াঃ আব্বুই হবে আমি জানি…

।৷
বাবাঃ রাত দেড় টার সময় কে কলিং বেলটা বাজাচ্ছে…

যাও তো দরজাটা খুলে দিয়ে আসো…

মাঃ হ্যা যাচ্ছি….


মাঃ দরজাটা খুলে দিতেই সব কিছু থমকে গেলো এগারোটা বছর কত কষ্ট কাটিয়েছি ছেলেকে দুরে সরিয়ে দিয়ে সেই ছেলে এখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে যাকে একদিন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে এই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছিলাম…


সাঈদঃ হঠাৎ মা কে দেখে মনটা ভরে গেলো হাজার হোক মা তো…

কিন্তু মুখ থেকে কোনো কথা বেরোচ্ছে না…

শুধু একটা কথাই বের হলো তাসফিয়া কোথায়…


মাঃ কী বলবো কোন মুখে ওর সাথে কথা বলবো ওইদিন বলে ছিলো মা তুমি তো আমাকে চিনো আমি মা হয়েও তোকে চিনিতে পারি নি… ( মনে মনে )


ওপরে তোর রুমে…

সাঈদঃ ভিতরে ডুকে সোজা উপরে চলে আসলাম রুমে আসতেই…


তাসফিয়াঃ আব্বু তুমি আসছো আমি জানতাম তুমি আসবেই দেখো আম্মু আমি বলেছিলাম না আব্বু ছাড়া কেউ হবে না…


সাঈদঃ কথাটা শুনে শরীরের রক্ত গুলো এত দ্রুত চলতে শুরো করলো যে মাথায় রক্ত চড়ে গেলো তবুও নিজেকে কোন মতো কন্ট্রোল করে…


সাঈদঃ চলো আমার সঙ্গে…

তাসফিয়াঃ কোথায়….

সাঈদঃ জাহান্নামে…

আদ্রিতাঃ প্লিজ মেয়েটার উপর রাগ করবেন না ও তো এখনো ছোট…

সাঈদঃ ঢং কেনো তখন কী মেয়েটা হাতির মতো বড় ছিলো নাকি তখন এই কথাটা মনে হয় নি আমার কাছ থেকে সব কিছু সব কিছু কেড়ে নিয়ে শান্তি হয় নি এখন আমার পিছনে পড়ে আছেন লজ্জা করে না…




বাবাঃ কে আসছিলো…

মাঃ সাঈদ তাসফিয়া কে খুজছিলো….


তাসফিয়াঃ আব্বু আম্মুকে আর বকো না….

সাঈদঃ আমি বলেছিলাম না তোমার কোনো মা নেই তাহলে এই আম্মু কই আসলো…


আমি স্পস্ট বলে দিলাম এই মহিলা তোমার মা নয় সে অনেক আগেই আমার জন্য মরে গিয়েছে…

চলবে…

( পড়াশোনার চাপ + আরো পারিবারিক সামাজিক কত প্রকার ব্যস্ততার ভিড়ে রেগুলার গল্প দিতে একটু কষ্ট হয় তবুও হাজারো ব্যস্ততার মধ্যে কিছু টা পেলে গল্প নিয়ে চলে আসি আশা করি এভাবেই পাশে পাবো )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here