ছেলেটের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো,আমরা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসি আমার বিয়েও করবো। কথা গুলো খুব স্বাভাবিক ভাবে বললো নিরা ।
_নিরার কথা গুলো শুনে নিলয় হতবাক হয়ে গেলো ।
সদ্য বিয়ে করলো সে আজকে তাদের বাসর রাত ।
চলুন একটু আগ থেকে জেনে আসি..
_নিলয় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে ঘরে ডুকতেই ফিসফিস কারো কথার শব্দ শুনতেই একটু থমকে গেলো.
ঘরে তো তার নিরা ছাড়া আর কেউ নেই তাহলে কে কথা বলছে
হ্যালো শুনছো,, তুমি কোথায়, আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও ।
আমি তুমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না, প্লিজ তুমি আমাকে নিয়ে যাও.. ( কান্না করতে করতে নিরা কথা গুলো বলছে)
_নিলয় ঘরে ঢোকা মাএই নিরা ফোনটা রেখে দিলো, নিলয় ঠান্ডা মেজাজের মানুষ । সে অল্পতে কখনো রাগ করে না,
ছেলেটি কে ( নিলয়)
নিরা চুপ করে আছে মুখ থেকে কেনো শব্দ করছে না । নিলয় আবার বললো আমি তুমাকে জিজ্ঞাসা করছি ছেলেটি কে ( ধমকের স্বরে)
এইবার নিরা বলা শুরু করলো….
_ নিলয় সব শুনে কি করবে বুজতে পারছে না । যার জন্য এতো ভালোবাসা হ্দয়ে পুষে রেখেছে । সে বিয়ের আগে কেনো সম্পর্কে জড়ায়নি তার ভালোবাসা আবেগ সম্মান সবটুকু তার বউয়ের জন্য রেখে দিয়েছে. আর শেষে কিনা তার ভাগ্য এমনিই হয়ে গেলো..
_ নিরা খাটের গুটিসুটি হয়ে বসে রয়েছে,
দেখুনঃ আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না, আমি তাকে ভালোবাসি, আর আপনি আমাকে কখনো জোর করবেন না, আমি যতদিন আছি ততদিন আপনার বউ হিসাবে নয় অতিথি হিসাবে রাখবেন.. সে আসলে আমি আপনার ঋণ শোধ করে দিবো, ( কথা গুলো এক নাগাড়ে বললো নিরা)
_নিলয় কি বলবে ভেবে বুজতে পারছে না । দেখো যা হয়েছে সব অতীত, ভুলে যাও এখন তুমার বিয়ে হয়েছে..
নিরাঃ বিয়ে হে, কিসের বিয়ে, আমি এই বিয়ে মানি না । আর আপনি কখনো আমার অধিকার খাটাতে চাইবেন না বলে দিলাম, না হলে এর ফল ভালো হবে না ।
আর শুনুন আপনি আমার সাথে ঘুমাবেন না, আপনি নিচে অথবা আমি নিচে ঘুমাবো ।
_নিলয় মুচকি হেসে খাটে উঠতে যেতেই, নিরা তার জামা কাপড় খোলতে শুরু করছে,
_হুম আসুন ভোগ করুন, আমি তো আপনার বিয়ে করা বউ তাই না । আমাকে তো আপনার ভোগ করার অধিকার আছে ।
তবে জেনে রাখুন আপনি আমায় ভোগ করতে পারবেন কিন্তু কখনো আমার মন পাবেন না ।
_নিলয় হঠৎা নিরার কাছ থেকে এমন কথা শুনবে আশা করিনি সে আর কিছু না বলে বারান্দায় চলে গেলো ।
সে কখনো সিগারেট ছুয়ে দেখিনি আজ কেনো যানি খেতে মান চাচ্ছে । মনটাকে শান্ত করার জন্য হলো..
_ড্রায়ার খুলে দেখে তার বন্ধুু অনীলের রেখে যাওয়া এক প্যাকেট সিগারেট পড়ে রয়েছে সেগুলো নিয়ে সে চলে আসলো ছাদে..
_ছাদের কর্ণারে দুইটা চেয়ার আছে আগে থেকে, তার স্বপ্ন ছিলো এই রাতে সে তার বউকে নিয়ে চাদ দেখবে, দুজন মিলে কত গল্প করবে, সেখান হাসাহাসি হবে মান-অভিমান হবে, ভালোবাসার খুনসুটি হবে. এইগুলো ভাবতেই তার চোখ দিয়ে অজার ধারায় পানি বইতে লাগলো..
_একটা সিগারেট ধরিয়ে এক টান দিতেই সে কাশতে শুরু করলো, সে তো আর কখনো সিগারেট খাই নি । তারপর আস্তে আস্তে ভালো লাগতে শুরু করলো । প্রতি টানে মনের কষ্ট গুলো মিশে যেতে শুরু করলো..
_বাবা মার খুব আদরের ছেলে নিলয় । তাদের পছন্দ মতো সে বিয়ে করেছে, কিন্তু ভাগ্য আজ সহায় নয় । মা বাবা জানতে পারলে খুব কষ্ট পাবে, তাদের কেনো ভাবে বুজতে দেওয়া যাবে না ।
তাদের সামনে তার কষ্ট গুলো চেপে রেখে হাসি মুখে থাকতে হবে. নিলয় তার বউয়ের জন্য একটা নতুন ফ্ল্যাট কিনছে সে তার বাসাটাকে নিজের মতো করে সাজিয়েছে..
_একসময়ে নিলয়ের জন্য অনেক মেয়ে পাগল ছিলো । নিলয় সে গুলো পাওা না দিয়ে নিজের ভাবে পড়ালেখা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । বাবা মাকে কখনো দুঃখ দেওয়ার চেষ্টা করি নি ।সব সময়ে সে তাদেরকে হাসি মুখে রাখার চেষ্টা করছে..
_ছোট ভাই বোন আছে, তারা তাদের ভাইকে অসম্ভব ভালোবাসি. নিলয় যখন তাদের বিজনেসের কাজে একটু বাহিরে যাচ্ছিলো তখন সে কি কান্না তারা তাদের ভাইকে কোথাও যেতে দিবে না… নিলয় এইগুলো ভাবতে একটু হাসি দেয়..
আজকে রাতটা অনেক সুন্দর হবে ভাবছিলো,আর চাদ থাকবে দুটি. একটি আকাশে আরেকটি তার সাথে…
_অনেকক্ষণ আকাশের দিকে চেয়ে থাকলো সে, তারা গুনার বৃথা চেষ্টা করছে কিন্তু হচ্ছে না..
কলেজে থাকাকালীন তারা দুজন বেস্টফ্রেন্ড ছিলো, আবির আর অথৈ.. তারা নিলয়কে খুব ভালোবাসে ভালো বন্ধুত্ব তাদের
ধরতে গেলে একট দেহে তিনটি প্রাণ,
কোথাও গেলে তারা তিনজন একসাথে যাবে.. একবার নিলয়ের প্রচন্ড জ্বর হয়েছিলো, আবির তো কান্না করতে করতে শেষ.
আর অথৈ দিনরাত নিলয়ের পাশে থেকে নিলয়কে সুস্থ করে তুলেছে.. তাদের কথা ভাবতেই নিলয়ের ফোনে রিং আসলো..
_হ্যালো আবির..
_হুম নিলয়.
কিরে তুই কোথায় ঘরে নাকি বাহিরে.. ( আবির)
কেনো একটু ছাদে আসলাম.
_ছাদে কেনো এইসময়ে তোকে তর ভাবির পাশে থাকার দরকার কিন্তু ছাদে কেন??? ( আবির.)
_আরে সারাদিন তার ওপর দিয়ে ঝড় গেছে, তাই সে ক্লান্ত ঘুমিয়ে গেছে..
– ওও. আচ্ছা ঠিক আছে কাল লেকের পাড়ে আসিস… কিন্তু.
ওকে -( নিলয়)
_সিগারেট প্রায় শেষ, নিলয় ভাবতে পারছে না । আজকে এতো সিগারেট খেয়েছে সে.. আবির এটা শুনতে পারলে খুব বকা দিবে.
_ছাদ থেকে নেমে রুমে ডুকলো..
নিরার দিকে এক পলক তাকিয়ে রইলো. নিষ্পাপ চেহারা শ্যামলা একটু কিন্তু মায়াবি । নিলয়ের সবচেয়ে ভালো লেগেছে নিরার মায়াবি চেহারাটা.কত সুন্দর সে চায় সারাটি জিবন নিরাকে নিয়ে বেচে থাকতে. সে অধিকারটুকু আজ নেই…
_নিরার পা য়ে হাত রাখলো নিলয়, নিরা কেপে উঠলো.. নিলয় আবার হাত সরিয়ে ফেললো.. তারপর আস্তে আস্তে আবার নিলয় নিরা পা হাত বুলাতে থাকলো, কখন যে ঘুমিয়ে গেলো টের পেলো না..
_সকালের অবছা আলো একটু একটু নিরার চোখে পড়া শুরু করলো নিরার ঘুম ভেঙ্গে গেলো..
নিরা উঠে দেখে তার পায়ের ওপর হাত দিয়ে ঘুমিয়ে আছে
নিলয়.. সে চিৎকার দিয়ে উঠলো. নিলয় ধড়পড়িয়ে শোয়া থেকে উঠে পড়লো….
নিরা এইবার রেগে মেগে নিলয়ে বলতে শুরু করলো..
( এটা একটা অন্যরকম গল্প পড়তে থাকুন আশা করি ভালো লাগবে.)
#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_মুনিয়া ইসলাম
#পার্ট:-1
চলবে..