ডাক্তার সাহেব পর্ব ৪৩+৪৪

#ডাক্তার সাহেব
#শারমিন আঁচল নিপা
#পর্ব- ৪৩ এবং ৪৪

[সবাই কমেন্ট করবেন। যেহেতু আজকে কষ্ট করে দুই পর্ব দিয়েছি]

বুকে ভীষণ পরিমাণ ব্যথা হতে লাগল। শ্বাস নিতেও যেন কষ্ট হচ্ছে। কথা বলার অবকাশ যেন পাচ্ছি না। মাথাটা ভনভন করছে আর ঘামছে। মাকে শুধু হালকা গলায় ডাক দিয়েই বিছানায় শুয়ে পড়লাম। কেমন যেন লাগছে সব। মা আমার রুমে এসে আমাকে এভাবে দেখে আমার কাছে আসলো দ্রূত। আমাকে ধরে বিভ্রত গলায় বলল

– কী হয়েছে তোমার? এমন করছো কেন? খারাপ কী বেশি লাগছে তোমার?

আমি যেন কোনো কথায় বলতে পারছি না । মাকে ধরেই গড় গড় করে মায়ের কাপড়ের উপরেই বমি করে দিলাম। মা আমায় শক্ত করে ধরে বলতে লাগল

– বমি করো খারাপ লাগা কমে যাবে। হয়তো বদহজম হয়েছে।

এটা বলার সাথে সাথে নাক মুখ দিয়ে বমি আসলো। বমি করতে করতে মনে হলো একটু ভালো লাগছে, মুখ না ধুয়েই শুয়ে পড়লাম। মনে মনে অস্বস্তি হতে লাগল মায়ের উপর বমি করেছি এটা ভেবে। কিছুটা নীচু গলায় বললাম

– মা আপনার উপর বমি করতে চাইনি। তবে সামলাতে পারিনি।

মা হাসতে হাসতে জবাব দিল

– তোমার মায়ের কোলে কী কখনও তুমি বমি করোনি? আমি তো তোমার মা। তুমি আমার মেয়ে। তোমাকে আর মিহুকে আমি কোনোদিন ছেলের বউ মনে করি না। তামান্নার মতোই মনে করি। আমি মনে করি আমার ঘরে তিনটা মেয়ে আছে এখন৷ তুমি কেন অযথা চিন্তা করছো।

শ্বাশুড়ি ভাগ্য আমার ভালো সেটা মায়ের কথা শুনেই বুঝা গেল। আমার মাকেই তো আমি কত কষ্ট করতে দেখেছি। আমার দাদু আমার মাকে কত কথায় না শুনাত। অথচ নীলের মা আমাকে কত ভালোবাসে। যখন যা প্রয়োজন তা এনে দিচ্ছে৷ কিছু খেতে মন চাইলে খাওয়াচ্ছে। কাজ তো করিই না। অথচ কাজের জন্য একটা কথাও শুনতে হচ্ছে না। আমার কপাল এত ভালো সেটা জানা ছিল না তবে প্রমাণ পাচ্ছি পদে পদে। কিন্তু এত ভালোবাসা পাওয়ার পরও মনে প্রশ্ন ঝেঁকে বসে আমার কপালে এত সুখ সইবে তো? মনটা অস্থির হয়ে যায় এ প্রশ্নটা মনে আসলে। মা বমি পরিষ্কার করে বাথরুমে গেল। একটা বালতি আর গ্লাসে পানি এনে বলল

– সিঁথি উঠে মুখটা কুলি করো। আর মুখটা ভালো করে ধুও। হাবিজাবি আর খেয়ো না। দেখলেই তো কষ্ট তোমাকে পেতে হচ্ছে সাথে বাবুকে। আর বেশিদিন তো না মাত্র চার থেকে পাঁচমাস কষ্ট করো। বাবু হয়ে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

আমি শুয়া থেকে উঠে কুলি করে নিলাম। মুখটা ভালো করে ধুয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। রিদির চিন্তাটা আবার মথায় ঝেঁকে বসলো। কে তার সাথে এমন করেছে এটাই শুধু ভাবছিলাম। রিদির এ অবস্থা আমি মন থেকে মানতে পারছি না। বারবার মনে হচ্ছে কেন এমনটা হলো? এমনটা না হলেও পারত।

সময় যেন বহমান নদী। সুখের সময় গুলো যেন আরও দ্রূত চলে যায়। দেখতে দেখতে কাঙ্ক্ষিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মধ্য দিয়ে কেটে গেল তিনটা মাস। মা হবার সাত মাসে পৌঁছালাম। রিদি মানসিক হাসপাতাল আছে। অবস্থা এই উন্নতি এই অবনতির দিকে। রিদির সাথে এই জঘন্য কাজ কে করেছে এখনও হদিশ মিলেনি। মিহুর বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রেসসিং চলছে। এইচ এস সি পরীক্ষা দিয়েই চলে যাবে সে। এর মধ্যে আমার এইচ এস সি প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে কতদিন আগে। ফুলা পেট নিয়েই বেশ কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়েছি। আমার পরীক্ষা দেওয়ার পেছনে আমার মা আর নীলের মায়ের অবদান ছিল প্রকট। তারা পাশে না থাকলে হয়তো পড়াশোনাটায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম না। তারা আমাকে সাহস না দিলে পরীক্ষায় দিতে পারতাম না।

পেটটা ভীষণ বড় হয়েছে। আগের জামা গুলো তেমন লাগে না। আয়নার কাছে গেলে পেটের বিশালতা দেখে নিজেই অবাক হই। ছোট একটা পেটে আরেকজন মানুষের বাস। যে কী না আমি যা খাচ্ছি তাই খায়। যে কীনা আমার মধ্যে বেড়ে উঠছে। পেটে হাত দিতেই ইদানীং বাবুর নড়াচড়া অনুভব করি। কী মধুর মুহূর্ত এগুলো। মা হওয়ার অনুভূতি ভীষণ সুন্দর। আজকাল অন্য কাউকে দরকার হয় না, মনে হয় আমার পেটের বাচ্চাটায় আমার জন্য যথেষ্ঠ করে দিয়েছেন আল্লাহ। মন খারাপ হলেও তার সাথে কথা বলি, ভালো থাকলেও তার সাথে কথা বলি। কী অদ্ভুত মুহূর্তের সূতোর টান। এ টান ছিড়ে যাওয়া অনেক কঠিন। আজকাল বাবু কী খেতে পছন্দ করে আমি সব বুঝি। বাবুকে জিজ্ঞেস করলে বাবু যখন কিক মারে তখন মনে হয় বাবু সেটা পছন্দ করেছে বেশি।

আজকে আল্ট্রা করাতে যাব। আজকে অবশ্য জানতে পারব আমার পেটে আমার রাজপুত্র নাকি রাজকন্যা আছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পেটটা দেখছিলাম আর নিজেই অবাক হচ্ছিলাম। মিহু তাড়া দিচ্ছে দ্রূত বের হতে। নীল নাকি যেতে বলেছে দ্রূত। আমার আল্ট্রাটা নীলেই করবে। আমি পেটটা এপাশ ওপাশ দুলিয়ে দেখতে দেখতে বললাম

– বেশ মোটা হয়ে গেছিরে মিহু। গাল দুটো ঝুলে পড়েছে। গলায় ও মাংসের ভাঁজ পড়েছে। চুলের অবস্থাটা তো আরও খারাপ, পড়তে পড়তে সব শেষ। চোখের নীচে কালিও পড়েছে।

মিহু আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল

– তোকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। মা হলে সব মেয়েকেই সুন্দর লাগে। শুধু শুধু চিন্তা করছিস। তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নে, নাহয় নীল ভাইয়া রাগ করবে।

আমি চিরুনিটা হাতে নিয়ে চুল গুলো আঁচড়াতে গিয়ে লক্ষ্য করলাম বেশ ঝট পাঁকিয়ে আছে। চুল আঁচড়াতে ভীষণ আলসেমি লাগে ইদানীং। তাই এ কয়দিন নীল চুল আঁচড়ে দিত নাহয় মা। মা একটু অসুস্থ আর নীল কাজের প্রেসারে থাকায় টানা তিনদিন আর চুল আঁচড়ানো হয়নি। আমার মা ও রিদিকে নিয়ে একটু ব্যস্ত। তাকে দেখতে গিয়েছে মানসিক হাসপাতালে। আমি চুলটা কোনোরকম আঁচড়িয়ে নিলাম। বড় একটা উড়না দিয়ে পেটটা ঢেকে নিলাম। তারপর মা আর বাবাকে বলে বাসা থেকে বের হলাম।

মিহু আর আমি দরজার বাইরে বের হয়ে জুতো জোরা পরে সিঁড়ি ভেঙ্গে নীচে নামতে শুরু করলাম। বাসাটা তিনতলায় আর কোনো লিফটও নেই। মফস্বলে লিফট আশা করাটা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না। সিঁড়ি ভেঙে নীচে নামতে বেশ কষ্ট হলেও নামতে লাগলাম। আমি আগে মিহু পেছনে। হুট করেই মনে হলো পা টা ফসকে গেছে। আমি সামলাতে পারি নি আর। আচমকা সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ি।

#পর্ব-৪৪

খুব দ্রূত বেগেই গড়িয়ে পড়ি নীচে। মিহুর জোরে চিৎকারের শব্দ কানে আসলো। আর এদিকে আমার পেটে ভীষণ ভাবে আঘাত পেয়েছি মনে হলো। মিহুর চিৎকারে বাসার সবাই বের হয়ে আসলো। আমি সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে নীচে পড়ে কাঁতরাতে লাগলাম। পেটে ব্যথা হচ্ছে ভীষণ। অসহ্য যন্ত্রণা আমাকে গ্রাস করছে। মনে মনে শুধু দোয়া করতে থাকলাম, আল্লাহ আমাকে নিয়ে নিও আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে দিও। পেটের ব্যথায় মুচরাতে লাগলাম। চেঁচিয়ে কাঁদতে লাগলাম। মুহুর্তেই যেন সব অন্ধকার হতে লাগল। মা এসে ও… আল্লাহ! বলে চিল্লায়ে উঠে বাবাকে বললেন

– নিরার আব্বা সিঁথিকে ধরো। আর নীলকে কল দাও। হাসপাতালে নিতে হবে।

নিরা আমার বড় ননাশের নাম। বড় মেয়ের নাম নিয়েই মা,বাবাকে বেশিরভাগ সময় ডাকে। এদিকে আমার হাত পা মুচড়ে যেতে লাগল। মনে হচ্ছে শরীরের প্রতিটা অংশে ব্যথা করছে। কষ্ট হচ্ছে অনেক। এজমার সমস্যা থাকায় দম নিতেও যেন কষ্ট হচ্ছে। জিহ্বায় বেশ জড়তা আসতে লাগল। কাঁপতে লাগলাম আমি। মিহু পাশে বসেই চিল্লায়ে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল

– আমি একটু সাবধান হলেই আজকে এরকমটা হত না। দোষটা আমার। দায়িত্ব আমার ছিল আমি পালন করতে পারিনি।

তামান্না মিহুকে সান্ত্বনা দিতে লাগল।

– ভাবি সিঁথি ভাবির যা হয়েছে এটা তার কপালে লেখা ছিল। আপনি নিজেকে দোষারূপ করবেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে। বাবা তো দেখতেছে। একটু শান্ত হোন। সবাই ভেঙে পড়লে তো সমস্যার সমাধান হবে না।

তামান্নার কথায় মিহু তেমন থামলো না। বরং আমার এ অবস্থার জন্য সে নিজেকেই দোষারূপ করতে লাগল বারংবার । কিছুক্ষণের মধ্যেই নীল চলে আসলো সাথে একজন মহিলাকে নিয়ে। আমি শুধু ঝাঁপসা চোখে মহিলাটার দিকে তাকালাম। মহিলার বয়স ৩৫-৪০ হবে হয়তো। প্রতি সপ্তাহে একদিন এ মফস্বলে রোগী দেখতে আসেন তিনি। যতদূর বুঝতে পারলাম উনি একজন দক্ষ গাইনোকলোজিস্ট। আমার হাত টা ধরল। পেটে হালকা চেপে ধরে বলল

– অনীল সাহেব আপনার স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে যান দ্রূত। বাচ্চাকে বাঁচাতে হলে আর স্ত্রী কে বাঁচাতে হলে একদম দেরি করবেন না। আপনি নিজেও বুঝতেছেন আমি কেন এ কথাটা বলছি।

নীল ভাঙা গলায় জবাব দিল

– আমি এখনই ব্যবস্থা করতেছি।

আমাকে দ্রূত এম্বুলেন্সে উঠিয়ে রওনা দেওয়া হলো ঢাকার উদ্দেশ্য। গাড়িতে শুয়ে শুয়ে আমি কাঁতরাতে লাগলাম। শরীরটা যেন আর ব্যথা সইবার মতো অবস্থায় নাই। নীলের হাতটা ধরে বেশ জোর খাটিয়ে বললাম

– কখনও যদি আমার আর বাবুর মাঝে কাউকে বেছে নিতে বলে তুমি আমার বাবুটাকে বেছে নিও প্লিজ। ওকে দুনিয়ার আলো দেখিও। আমার মনে হচ্ছে আমি বাঁচব না। আমি মরে গেলে আমায় ক্ষমা করে দিও। তুমি আরেকটা বিয়ে করে নিও তবে সে মেয়েকে শর্ত দিও যেন আমার বাবুর যত্নের গাফলতি না হয়।

নীল হাউমাউ করে কেঁদে দিল। কান্নাটা গাঢ় হতে লাগল। নীলকে এভাবে কাঁদতে কখনও দেখিনি। কাঁদতে কাঁদতে বলল

– এমন কথা বলো না প্লিজ। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না। আমাদের বাচ্চা আর তোমার কারও কিছু হবে না। একটু শান্ত হও তুমি। কিসব বলছো তুমি। তোমার এ শক্ত কথা তো আমার ভালো লাগছে না। আমাকে একা রেখে কেন চলে যাবে? আমি তোমায় ভীষণ ভালোবাসি। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ।

সারা রাস্তায় আমি ব্যথায় কাঁতরিয়েছি। শরীরও ক্লান্ত। ব্যথা সইবার মতো ক্ষমতা যেন শরীরের আর অবশিষ্ট নেই। হাসপাতালে নেওয়া হলো দ্রূত। সিজার করা লাগবে জানানো হলো। নাহয় বাবুর আর আমার দুজনের ক্ষতি হতে পারে। আমার বাচ্চাটার হয়তো পেটে থাকতে থাকতে আর ভালো লাগছিল না তাই দ্রূত চলে আসতে চাচ্ছে। মনে মনে শুধু বাচ্চাটার জন্য দোয়া করতে লাগলাম। বলতে লাগলাম হে আল্লাহ আমার যা হওয়ার হোক আমার বাচ্চাটাকে আপনি বাঁচিয়ে দিয়েন। এ মুহুর্তে আমার মায়ের মুখটা আমার চোখে ভেসে আসছে প্রবল ভাবে। মা কতই না কষ্ট করে আমাকে জন্ম দিয়েছেন। অথচ মাকে খুশি রাখার চেষ্টা কখনও করিনি। মাকে জড়িয়ে ধরতে পারলে হয়তো একটু শান্তি পেতাম।

কিছুকক্ষণের মধ্যেই আমাকে অটিতে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হলো। সর্বশেষ মুহুর্তে নীলের হাতটা ধরেছিলাম। বেশ আস্তে গলায় বলেছিলাম অনেক জ্বালিয়েছি মরে গেলে মাফ করে দিও। নীল শুধু হাউমাউ করে কেঁদেছিল।

এ সময়টায় গত বছর এস এস সি পরীক্ষার ছুটি কাটিয়েছিলাম। কলেজে ভর্তি হই রেজাল্ট দেওয়ার পর পরই। জুনের ১ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু হয়। জুন মাসের ১৫ তারিখে বাজি ধরি নীলকে নিয়ে। আর সেখান থেকেই নীলের সাথে আমার পরিচয়। কথা বলা থেকে প্রণয় হয় আগস্টের দিকে। তখন বেশ ভালোই গরম ছিল। খুব লম্বা সময় প্রেম আমাদের হয়নি। বাবু পেটে এসে পড়ে বিয়ের পর পরই। বিয়ের একমাস পরেই বাবু পেটে চলে আসে আর ২ মাস পরে নিশ্চিত হই৷ এরপর কত কাহিনির সমাবেশ নিয়ে সময়টা পার করি।

প্রেগন্যান্সির সবচেয়ে উপভোগ্য সময় ছিল শীতের সময়টায়। সে সময় আমার তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। কনকনে শীতটায় বেশ ভালোই উপভোগ করেছিলাম বাবুকে নিয়ে। যদিও সেটার বিস্তর বর্ণণা করা হয়নি। কারণ সবকিছু সুন্দর হয়ে সামনে এগিয়েছিল। পড়াশোনাতেও মোটামুটি মা আর নীলের অনুপ্রেরণায় তখন মনোযোগ দিতে পেরেছিলাম। এই তো এপ্রিলের প্রথম দিকে কলেজের পরীক্ষাও দিয়েছি। আর এখন এপ্রিল মাসের একদম শেষের দিক। হিসাব অনুযায়ী আমার বাবুর বয়স সাত মাসের বেশি। যতদূর জানি বাচ্চা পরিপক্ব হতে নয়মাস সময় লাগে। সেখানে আমার বাবু সাতমাসে চলে আসতেছে বিষয়টা যেন আমকে বেশ ভাবিয়ে তুলল।

যদিও শীত পড়েনি তবুও মনে হচ্ছে বাইরে হয়তো অনেক শীত পড়েছে। কুয়াশায় হয়তো সব তলিয়ে নিচ্ছে। হালকা চোখে তাকালাম। শীতে কাঁপতে লাগলাম। কেউ একজন আমার অবস্থা টের পেয়ে ফ্যানটা বন্ধ করল। পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলাম নার্স। পেটে হাত দিয়ে দেখলাম আমার সিজার হয়ে গেছে। বেশ অবাক হলাম। ভাবতে লাগলাম কখন বাবু হয়ে গেল আমার! একটু আগেও চিন্তা করছিলাম সাত মাসে বাবু হলে সে বাবু সুস্থ হয়ে জন্ম নিবে কি’না। এখন লক্ষ্য করে দেখলাম আমার বাবু ডেলিভার করা হয়ে গিয়েছি। আমি কিছুটা তড়িঘড়ি করে নার্সকে বললাম

– আমার সিজার কখন হলো? আমার বাবু কোথায় আর নীল কোথায় মানে আমার হাসবেন্ড।

নার্স মেয়েটা হালকা গলায় বলল

– ধৈর্য ধরুন সব জানতে পারবেন। এত অস্থির হবেন না।

নার্সের কথা শুনে আমার বুকটা কেঁপে উঠল। মনে প্রশ্ন ঝেঁকে বসলো আমার বাবু বেঁচে আছে তো? প্রশ্নটা আসতেই ক্রমেই আমি অস্থির হয়ে গেলাম।

চলবে?

কপি করা নিষেধ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here