আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২৮+২৯

#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..28

কথাটা আমার বুকে ছুরির মতো গিয়ে বিধলো গিয়ে। আমি জালানার পাশে দাঁড়িয়ে পাশে রাখা দিয়ার ছবিটা নিয়ে, তার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম,,, জীবনের প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে আমার প্রচুর হিংসা হয়৷ তুমি মরে গিয়েও সায়নের মন থেকে যেতে পারোনি, আজো তোমাকে সে ভালোবাসে। আর আমি সায়নের জীবনে বন্ধু হয়ে থেকে যাবো। সে আমাকে আর ভালোবাসবে না। তার মনে আমি জায়গা করতে পারবো না, কারন পুরো জায়গা জুড়েই তুমি আছো।

এটা ভেবেই কেনো জানি চোখের মধ্যে থেকে কয়েক ফোঁটা পানি নিচে পড়ে গেলো। একটু পরেই সায়ন জেগে যায়। সে আমার চোখে পানি দেখে তাড়াতাড়ি উঠে জিজ্ঞেস করে,,,,,, কি হয়েছে আলো, তুমি কান্না করছো কেনো। আমি কি নিজের অজান্তেই তোমাকে কোনো কষ্ট দিয়েছি।

আমার হাত ধরে দেখতে দেখতে বলে,,, আমি কি তোমাকে আঘাত করেছি। কোথাও ব্যাথা পেয়েছো। দেখাও আমাকে।

আমি কিছু ক্ষন নিস্তব্ধ হয়ে বসে থাকার পর মুখে হাসি এনে বলি,,,, আরে আমার কিছু হয়নি, আমার চোখে কিছু একটা পড়েছে তাই চোখ থেকে পানি বের হচ্ছে।

সায়ন আমার কাছে এসে বলে,,, দেখি।

সে আমার চোখ ধরে দেখছে কিছু আছে নাকি,, আর বলছে,,,কোথাই কিছুই তো দেখতে পারছি না।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,, হয়তো বেরিয়ে গেছে কিন্তু ব্যাথা এখনো রয়ে গেছে। সব ব্যাথা তো আর দেখা যায় না।

সায়ন আমার চোখ ধরে ফু দিতে থাকে। জানি না কেনো আমার এই মূহুর্তে সায়নকে জরিয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে করছে। নিজেকে আটকে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সয়ন ফু দিচ্ছে, আমি সায়নকে জরিয়ে ধরি,কিছু না ভেবেই। সায়ন অভাক হয়ে যায়। আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যায়।

কিছু ক্ষন দুজনেই চুপচাপ থাকি, তারপর সায়ন আমাকে জিজ্ঞেস করে,,,, কি হয়েছে আলো, তোমার মন কি কোনো কারনে খারাপ।

আমি সায়নকে জরিয়ে ধরেই কান্না ভরা কন্ঠে উত্তর দিয়,,,, হুমম অনেক।

,,,কেনে শুনি।
,,,,,, জিজ্ঞেস করবেন না পিল্জ, আমি বলতে পারবো না।
সায়ন মুচকি হেঁসে আমার মাথায় হাত রেখে বলে,,,,, ঠিক আছে,, কিন্তু তোমাকে হাসি খুশিই মানায়, এমন মুখ আধার করে রাখলে আলো নাম রেখে লাভ কি হলো বলো।

আমি সায়নকে জিজ্ঞেস করি,,,, আচ্ছা আপনি আমাকে নিজের কি ভাবেন,, সত্যিটা বলবেন, আমার জন্য আপনার মনে ঠিক কোন স্থানটা আছে।

সায়ন কিছু ক্ষন চুপ থেকে বললো,,,, তুমি আমার একজন খুব ভালো বন্ধু। এমন বন্ধু যাকে আমি হাড়াতে চাই না। খুব কম মানুষের ভাগ্যে জুটে এমন বন্ধু।

আমি সায়নকে ছেড়ে দিয়ে মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে বললাম,,,, শুধুই বন্ধু

,,,,,, মানে।
,,,,, না কিছু না। আচ্ছা দিয়ার জায়গা কি আপনি কোনো দিন অন্য কাওকে দিবেন।
,,,,, না,, কোনে দিনও না, দিয়ার জায়গা আমি কোনো দিন কাওকে দিতে পারবো বলে আমার মনে হয় না।

আমি জোর করে ঠোঁটে হাসি এনে সায়নের সাথে নজর এড়িয়ে টেবিলে রাখা ঔষধ বাক্সের কাছে গিয়ে, সেটাকে খুলে ঔষধ বের করতে করতে বলি,,,,, হুমম জানি, আমি তো এমনি জিজ্ঞেস করলাম। আমি আপনার ঔষধ গুলো বের করে দিচ্ছি। খেয়ে নিন, আজ থেকে আপনার দেখা শুনা করার জন্য অন্য ডক্টর আসবে।

,,,,, মানে তুমি আসবে না।

আমি হালকা হেঁসে সায়নের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,, দায়িত্ব যখন নিয়েছি পূরণ তো অবশ্যই করবো। আমিও আসবো, তবে আপনার জন্য আপনার ভাই বিদেশ থেকে ডক্টর এনেছে, সেও আজ থেকে আসবে।

,,,,, হুমম ঠিক আছে।

আমি ঔষধ গুলো বের করে সায়নের দিকে ধরি, আর এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়। সায়ন ঔষধ গুলো খায়। আমি পানির গ্লাসটা টেবিলে রেখে বলি,,, আজ আমি আসি।

আমি যেতে নিয় কিন্তু সায়ন আমার পথ আটকিয়ে বলপ,,, আজ এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে, গল্প করবে না আমার সাথে।

আলো হালকা হেঁসে বলে,,, আমার জীবনটাই একটা গল্প হয়ে গেছে।

,,,, মানে।
,,,,,, কিছু না সায়ন,, সবার জীবনী একেকটা গল্প। কারো বা ভালো, কারো বা খারাপ, আর কারো সব টুকুই মিলিয়ে।

সায়ন হেঁসে বলে,,,,, তুমি তো প্রহর ভাইয়ার মতো কথা বলছো৷
আমিও হেসে দিয়ে বললাম,,, হুমম,, আচ্ছা আমার একটু কাজ আছে, আজ আমি আসি।

,,,,, আর আসবে না আজ।
,,,, রাতে আসার চেষ্টা করবো।

বলে আমি দরজা পর্যন্ত যেতেই সায়ন বলে উঠে,,,, আমি কিন্তু অপেক্ষা করবো।

আমি পিছনে তাকিয়ে কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়িয়ে বের হয়ে যায়। সায়নের দরজা আটকিয়ে চোখের পানি আর থামাতে পারিনি। যাকে তুমি ভালোবাসো তার মনে অন্য করো জন্য ভালোবাসা দেখাটা যে কি কষ্টের সেটা বুঝানো যাবে না।

আমি নিজের চোখের পানি মুছে যেতে নিয় মারু ভাবী এসে আমাকে বলে,,,, কি হয়েছে আলো তুমি কান্না করছো কেনো।

,,,, না ভাবী কিছু হয়নি,, আমি আসি, একটু কাজ আছে।

বলে তাড়াতাড়ি চলে গেলাম। মারু সায়নের রুমে যায়। সায়ন আমাকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,,,,ভাবী আসো।

আমি ভিতরে গিয়ে বললাম,,,,, তুমি কি আলোকে কিছু বলেছো, বা তোমাদের মধ্যে কিছু হয়েছে।

,,,,, না ভাবী তেমন কিছুই হয়নি, শুধু অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্ন করছিলো।
,,,,কি প্রশ্ন শুনি।

সায়ন আমাকে সব কিছু বলে,, আমি সায়নকে জিজ্ঞেস করি,,, তুমি কি বলেছো।
,,,যা সত্যি তাই বলেছি।

,,,হুমম তোমার সত্যিটা আমি বুঝতে পেরেছি। শুনো সায়ন তোমার জীবনকে একটা সুযোগ দাও৷ পুরোনো স্মৃতি ধরে রাখলে সুখি হতে পারবে না। আর দিয়াও হয়তো এটাই চাই যে তুমি নিজেকে একটা সুযোগ দাও।

,,,,,, মানে,, ভাবী আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি না।
,,,,সায়ন আলো তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে।
,,,, কিহহ
,,,,হুমম, আর কোথাও না কোথাও তোমার মনেও ওর জন্য কোনো একটা ফিল অবশ্যই আছে যেটা তুমি বুঝতে পারছো না।
,,,,, ভাবী তুমি যেমন ভাবছে তেমন কিছুই না।
,,,,,, সায়ন আমাকে না নিজেকে বুঝাও, আর নিজের জীবন আর আলোকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখো।

,,,,কিভাবে দিবো, দিয়াকে ভুলতে পারছি না, আমি।
,,,,,,, যদি তুমি কাওকে তোমার জীবনে আসার সুযোগী না দাও তাহলে দিয়াকে ভুলবে কিভাবে। তুমি এক বার আলোকে সুযোগ দিয়ে দেখো আমার বিশ্বাস আলো তোমার মন ওর দিকে এনে ছাড়বে। আমার কথা গুলো ভেবে দেখো।

বলে আমি সেখান থেকে চলে যায়। একটু পরে অয়ন আসে। বাচ্চাদের কিছু সুন্দর সুন্দর পোস্টার নিয়ে। এগুলো আমার হাতে দিয়ে বলে,,, তুমি এগুলো বেডের সামনে লাগাও আমি সাওয়ার নিয়ে আসছি।

আমি পোস্টার গুলো সাইডে রেখে বলি,,,,, অন্য জনের বেবির ছবি কেনো লাগাবো, আমি তো তোমার ছবি লাগাবো, যেনো আমার বেবি একদম তোমার মতো হয়।

,,,,আচ্ছা তাহলে এক কাজ করো সেখানে তোমার ছবিও লাগিয়ে দিয়ো যেনো, তোমার মতো হয়।

আমি আর কিছু বলার আগেই অয়ন বলে উঠে,,,, বেস এটা নিয়ে কোনো কথা হবে না। আমার ছবি লাগালে তোমার ও লাগাতে হবে।

এটা বলে ওয়াশ রুমে চলে যায়। আমি পোস্টার গুলো হাতে নিয়ে ছবি গুলো দেখতে থাকি৷ বাচ্চা গুলো কি সুন্দর।

আমি দুলনায় বসে আছি, অয়ন ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে আমার আমার কোলে শুয়ে পড়ে।

,,,,, কি হলো এটা। উঠুন, আমার কাপড় ভিজে গেলো তোহহ।

,,,,,, আমি আমার বউকে ভিজাবো শুখাবো আমার ইচ্ছা,তোমার কি হুমম।

,,,,হেহহহ আপনার বউ তো আমিই,, তো আমার ইচ্ছে থাকবে না।

,,,,, না,,,, কারন তোমার উপর তোমার থেকে বেশি অধিকার আছে আমার বুঝলা।

,,,,, আচ্ছা ঠিক আছে,,, আপনার আমার অতীতের কথা বলার সয়ম কি আছে স্যার এখন।
,,,,, ওহহ সরি ভুলে গেছিলাম।
,,,,,ঠিক আছে তাহলে আজ শুনাচ্ছি।
,,,,,,হুমম বলো।

জানো তুমি আমাদের নদীর হালকা পানিতে ফেলে দিয়েছিলে, সেতু দিয়ে যাওয়ার সময়।

আমি হাসতে হাসতে বললাম,,,,, তাই নাকি,পড়ে কি হলো।

,,,,, হুমম,, পরে আমি তো অনেক রেগে গিয়েছিলাম। আমি আর প্রহর কোনো ভাবে বাসায় গেলাম। আমি তো শুধু ভাবতে লাগলাম কিভাবে তোমাকে জব্দ করা যায়।

অতীতে,,,,,
অয়ন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে প্রহর পিছন থেকে বলে,,,, কিরে এতো কি ভাবছিস।

অয়ন,,,, কিছু না, শুধু ভাবছি আজকের কথা। আমার তোহহ রাগ হচ্ছে।

,,,,,, তোর রাগ হচ্ছে, আমার হাসি পাচ্ছে। বয়সের তুলনায় বুদ্ধিটা একটু কম হয়েছে মনে হয়।
,,,,,, বুদ্ধি ঠিকি আছে, শুধু বাচ্চা মানসিকতাটা এখনো ছাড়লো না। ওকে তো আমি বুঝাবো।

,,,,উল্টা পাল্টা কিছু ভাবিস না। আমি তো আমার গল্পের মেইন চরিত্রটা কে পেয়ে গেছি।

অয়ন চাঁদের দিকে তাকিয়ে আস্তে বলে,,,, আর আমি আমার জীবনের,ভেবেছিলাম কিন্তু এই মেয়েকে তো শিক্ষা না দিলে হবে না৷

কিছু ক্ষন পর প্রহর একটা বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যায়। অয়ন ও ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।

পরেরদিন সকালে, প্রহরকে কোনো রকমে একা বাড়িতে রেখে অয়ন বেরিয়ে পড়ে। মারুর কলেজে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। অয়ন আড়াল থেকে দেখছে।
আমি একা একা যাচ্ছি।

হঠাৎ করেই কিছু গুন্ডা টাইপ লোক আমার সামনে এলো। অদ্ভুত ভাবে হাসছে। আমি একটু পিছিয়ে বলি,,,, কি চাই আপনাদের, পথ কেনো আটকালেন। এখনি যদি চিৎকার করি না, তাহলে সবাই এসে জরো হয়ে যাবে।

ওরা বললো,,, এই নিড়িবিলি জায়গায় বেশি মানুষ আছে বলে তোহ মনে হয়না।

ওদের হাব ভাব ভালো মনে হচ্ছে না, তাই উল্টো দিকে দৌড় দিতে গেলেই ওরা আমাকে ধরে ফেলে। মুখ চেপে ধরে, আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে কোথায় নিয়ে যেতে থাকে। আমি শুধু আল্লাহ আল্লাহ করছি মনে।

একটু পরেই একটা নিড়িবিলি জায়গায় এসে থামায়। জায়গাটা গাছ পালায় ভরা। আমার তো ভয় হচ্ছে, মান হাড়ানোর ভয়।

ওরা আমাকে টেনে একটু ভিতরে নিয়ে যায়, আমি ছটফট করছি। একটু পরে কেও একজন একটা গুন্ডার হাত ধরে ফেলে। তাকিয়ে দেখি অয়ন।

সে ওদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ওরা বলতে থাকে,,, কে তুই, ভালোই ভালোই চলে যা না হলে এখানে মেরে পুতে দিবো।

অয়ন,,,তোরা চলে যা, না হলে আমি তদের মেরে ফেলে দিবো৷

মারামারি শুরু হয়ে যায়। অয়ন কে একটা ঘুষি মেরে ফেলে দেয়। একটু রক্তও বেরিয়ে যায়।অয়ন মাটিতে পড়ে আস্তে করে বলে,,, আব্বে এ দেখি সত্যি সত্যি মারছে। আমাকে মারার জন্য টাকা দিছি নাকি।

উঠে দাঁড়াতেই আরেকটা মারতে আসে, আমি তার হাত ধরে আস্তে করে বলি,,,, আব্বে অভার এক্টিন হয়ে যাচ্ছে। সত্যি সত্যি কেনো মারছিস। টাকা শুধু মার খাওয়ার দিয়েছি, মার দেওয়ার না।

লোকটা অয়নের হাত ছাড়িয়ে একটা ঘুষি দিয়ে বলে,,,, কে রে তুই,, আর কিসের টাকা কার টাকা। চুপচাপ চলে যা।

অয়ন বুঝতে পেরে যায়, এটা তার পাঠানো লোক নয়। এরা সত্যি মারুকে উঠিয়ে এনেছে। দুটো লোক মারুর হাত ধরে টানাটানি করছে৷ এটা দেখে অয়নের রাগ চরম পর্যায় পৌঁছে যায়। আর সে সবাইকে মারতে থাকে। যেমন মার খাচ্ছে তার থেকে বেশি দিচ্ছে।

গুন্ডা গুলো মার খেয়ে চলে যায়। মারু কিছু বলছে না, অয়ন সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আর মারু পিছনে। অয়ন পিছনে তাকায়৷ আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,,, তুমি ঠিক আছো তো।

এ কথা বলার সাথে সাথে আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারি না, সোজা জোরে জোরে কান্না করে দিয়। অয়ন আমাকে থামানোর চেষ্টা করতে থাকে।

,,,, আরে আরে কান্না করো না, এখন সব ঠিক আছে, কেও কিছু করবে না তোমাকে।

আমার কান্নার আওয়াজটা একটু বেশিই বেড়ে যায়। চোখ বন্ধ করে কান্না করছি। অয়ন কোনো মতেই মারুর কান্না থামাতে পারছে না। অয়ন তখন আমার মাথায় হাত রেখে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে, যেনো আমি একটা বাচ্চা।

আমি কান্না থামিয়ে অয়নের দিকে তাকিয়ে হিচকি তুলতে তুলতে বলি,,,,,,, অনেক ভয় পেয়ে গেছিলাম আমি, আপনি না এলে হয়তো,,

এটা বলে আবার কান্না শুরু করে দিয়। অয়ন আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,,,,, এসব কিছু চিন্তা করে লাভ নেয়। তোমার কিছু হয়নি, না হবে। তাই একটু চুপ করে আমার সাথে চলেন।

,,,,কোথায়।

,,,,,, কেনো তোমার বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে নেয় নাকি।
,,,,,,হুমম,, আমি বাসায় যাবো।
,,,,হুমম চলো, তোমায় দিয়ে আসি। ( মেয়েটা সত্যিই অনেক ভয় পেয়ে গেছে দেখা)

বাইকে উঠে আমাকেও উঠতে বলে। আমি চুপচাপ পিছনে বসে পড়ি।

অয়ন বাইক চালানো শুরু করলেই আমি অয়নের কাঁধ খামছে ধরি৷ অয়ন আমাকে জিজ্ঞেস করে,,, কি হয়েছে , ভয় পাচ্ছো নাকি।।

,,,আসলে আমি আগে কখনো বাইকে বসিনি।

,,,,, কি,, তুমি আগে কখনো বাইকে উঠোনি।

,,,,এতে এতো অভাক হওয়ার কি আছে।

,,,,, না মানে এমনি,, তাহলে আমিই তোমাকে আগে বাইকে উঠালাম।
,,,,হুমমম।

একটু আগে যেতেই আমি অয়নকে থামাতে বলি। অয়ন বাইক থামালে, আমি নেমে যায়। অয়ন বলে,,, এখানে কেনো নামলে।
,,,,,, বাকি রাস্তাটা আমি একাই যেতে পারবো। কেও যদি আমাকে আপনার সাথে দেখে তাহলে নানা ধরনের কথা বলবে।
,,,,,,, হুমম ঠিক আছে, তাহলে যাও।

আমি যেতে নিয়ে আবার ফিরে এসে অয়নের সামনে দাঁড়িয়ে বলি,,,, ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য। আর সরি ঐ দিনের জন্য।

অয়ন ঠোঁটে হাসি এনে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওনার তাকানো দেখে আমার কেনো জানি লজ্জা করছে।

আমি আবার বলি,,,, আপনার ঠোঁট কেটে গেছে, ঔষধ লাগিয়ে নিয়েন।

অয়ন শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে। আমার কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে তাই আমি তাড়াতাড়ি হেঁটে চলে এলাম।আমি বাসায় আসা পর্যন্ত ওনি আমার কিছুটা দুরে দূরে ছিলো। আমি বাসায় ডুকার আগে অয়নকে হাত নাড়িয়ে বাই বলে তাড়াতাড়ি ভিতরে ডুকে যায়।

অয়ন ও হাসি মুখে চলে যায়। অয়ন যেতেই প্রহর অয়নের সামনে রাগী ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, অয়নের মুখে মারের দাগ দেখে প্রহর ব্যস্থ হয়ে বলে,,, কে মেরেছে তোকে, তাকে তো আজ মেরেই ফেলবো। চল দেখে কে মেরেছে।

অয়ন প্রহরের কাঁধে হাত রেখে বলে,,,অয়ন মার খেয়ে আসে না দিয়ে আসে।

,,,হুমম সে তো দেখায় যাচ্ছে। আচ্ছা একটা কথা বল তুই মারুকে কিটনাপ করার জন্য লোক ভারা করেছিস কিন্তু কেনো।

,,,, আরে হ্যাঁ মনে পড়ছে, শালারা একটাও যায়নি কেনো, তাদের তো আমি____

,,,,আমি না করেছিলাম।

,,,,,মানে, তুই জানলি কিভাবে।
,,,,স্যার আপনার কথা আমি শুনে ফেলেছি। এখন বলবেন আপনি মার কেনো খেলেন।

অয়ন সব কিছু প্রহরকে বলে, প্রহর রাগে বলে,,,, শালাদের ধরে ইচ্ছে মতো মারিসনি। আমার তো এখন হাত চুলকাচ্ছে।

,,,,আরে চিন্তা করিস না, মেরেছি ইচ্ছে মতো।

,,,,, হুমম দেখায় যাচ্ছে।
,,,,
আমি সাওয়ার নিয়ে বের হয়ে, শুয়ে শুয়ে শুধু অয়ন এর কথা ভাবছি। ওর কথা ভাবতেই কেনো জানি ঠোঁটে নিজের অজান্তেই হাসি এসে পড়ে, আর চেহেরায় লজ্জার ছাপ। ভালোবেসে ফেলেনি তো আবার। আর যদিও ভেসে ফেলি তাও আমার খারাপ লাগবে না।
#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..29

আমি সাওয়ার নিয়ে বের হয়ে, শুয়ে শুয়ে শুধু অয়ন এর কথা ভাবছি। ওর কথা ভাবতেই কেনো জানি ঠোঁটে নিজের অজান্তেই হাসি এসে পড়ে, আর চেহেরায় লজ্জার ছাপ। ভালোবেসে ফেলেনি তো আবার। আর যদিও ভেসে ফেলি তাও আমার খারাপ লাগবে না।

আমি বিকেলে অয়নের মামার বাড়ি গেলাম, সেখানে অয়ন আর প্রহর আমাকে দেখে তাড়াতাড়ি আসে। আমি তাদের দেখে একটা হাসি দিয়।

প্রহর,,,,,,, তুমি এখানে।
অয়ন,,,,,হয়তো আমাকে ধন্যবাদ বলতে এসেছো, তাই না।
আমি একটু মুখ বেকিয়ে বললাম,,,, হুহহ বয়েই গেছে আমার আপনাকে ধন্যবাদ বলতে।

অয়ন,,,,তাহলে এখানে কেনো এসেছো।
,,,,, আমি আমার ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে এসেছি।

প্রহর আর অয়ন এক সাথে বলে উঠে,,,,, ওহহ আমার সাথে দেখা করতে এসেছো।

আমি একটু কপাল কুঁচকিয়ে বললাম,,,,, আপনারা আমার ফ্রেন্ড হলেন কবে। আমি তো মেঘার সাথে দেখা করতে এসেছি।

[মেঘা অয়নের মামাতো বোন]

প্রহর,,,, মেঘা আপনার বন্ধু হয়, কোথায় আগে বলেন নি তো।

,,,, আমাদের কথায় বা হলো কয় দিন।

অয়ন,,,,, আপনি চাইলে প্রতিদিন বলতে পারেন।

তখনি মেঘা বেরিয়ে আসে, আমি দুজনের মাঝখান দিয়ে মেঘার কাছে চলে যায়।

,,,,কিরে মেঘা এখন তো দেখি ঘর থেকে বাহিরেই যাস না। হবু হাসবেন্ড মানা করেছে নাকি।

মেঘা একটু লজ্জা পেয়ে বলে,,,,,, দূররর ভাইয়ারা আছে এখানে কি বলিস।

,,,আরে বিয়ের কথা বলতে লজ্জা কিসের তোর ভাইয়ারা কি বিয়ে করবে না নাকি।

অয়ন আর প্রহর এসে বলে,,, ঠিক বলেছো, বিয়ে তো এক দিন না একদিন করায় লাগবে। এতে লজ্জার কি আছে।

আমি মেঘার হাত ধরে বলি,,, যারা বেশরম তাদের আবার লজ্জা আছে নাকি। চলরে মেঘা আমরা উপরে গিয়ে কথা বলি।

অয়ন,,,,আমিও আসি।
প্রহর,,,,, আমিও আসছি,তুই গেলে আমি একা থেকে কি করবো।
অয়ন,,,,,বসে থাকবি।
প্রহর,,,, আমাকে যেতে না দিতে আমিও তোকে যেতে দিবো না।

,,,ও হ্যালো, আপনাদের কাওকেই আমি আমাদের সাথে যেতে দিবো না, এটা আমাদের ফ্রেন্ডের মধ্যেকার, আপনারা কি করবেন।

অয়ন,,,,,, তোমাদের সঙ্গ দিতে।

,,,লাগবে না আপনাদের সঙ্গ হুহহ,,চল মেঘা।

বলে আমি আর মেঘা চলে যায়। গিয়ে আমি মেঘাকে অয়নের বিষয়ে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করেছি। যতোটুকু যেনেছি ওর কোনো জিএফ ছিলো না। যাক শুনে ভালো লাগলো।

আমি মেঘাকে কোনো ভাবে বুঝিয়ে অয়নের রুমটা খুঁজতে থাকি৷ একটা রুমে উঁকি দিতেই, অয়ন পিছন থেকে আমার কানের কাছে এসে বলে,,,, আমাকে খুঁজছো।

আমি চমকে পিছনে তাকিয়ে বলি,,,,, আল্লাহ আপনি, এভাবে কেও কাওকে জিজ্ঞেস করে তাও আবার হঠাৎ করে।

,,,,,, আচ্ছা বললে না যে কাকে খুজছো, আমাকে।

,,,না, আমি আপনাকে কেনো খুঁজতে যাবো।
,,,, তাহলে আমার কেনো এমন মনে হচ্ছে।
,,,,সেটা আপনার মনকে জিজ্ঞেস করেন।

অয়ন আমার একটু কাছে এসে বলে,,, সেটাই তোহ করছি।

আমি একটু সরে গিয়ে বলি,,,, মানে,,

,,,মানে আমার মন তো আমার কাছেই নাই তো জিজ্ঞেস করবো কিভাবে। আমার মন তোহ তোমার কাছে। তাই তোমাকেই জিজ্ঞেস করলাম।

কেনো জানি এ কথা শুনে নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না, ঠোঁটে হাসিটা একটু বেশিই এসে পড়লো।
অয়নকে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে,আমি হাসিটা বন্ধ করে দিয়।

অয়ন আমার দিকে সন্দেহের দিকে তাকিয়ে বলে,,,প্রেমে পড়ে গেলে নাকি আমার।

আমি অস্থির হয়ে বললাম,,,, জ্বী না,,

যেতে নিয়ে পিছনে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বলি,,,, পড়লে পড়তেও পারি, কোনো সমস্যা আছে।

অয়ন একটা বড় করে হাসি দিয়ে বলে,,,, একদমি না,, আমি তো চাই তুমি পড়ো।

তখনি প্রহর এসে বলে,, কি বলিস তুই,, মারু পড়ে গেলে ব্যাথ পাবে না। আর এটা তুই কেনো চাস অজব।

অয়ন,,,,, আরে এই পড়াতে কেও ব্যাথা পায় না। তুই বুঝবি না, তোর বুঝার বয়স হয় হয়নি।

আমি হেঁসে চলে গেলাম, প্রহর কিছু বুঝতে পারছে না। এভাবে অনেক দিন কেটে যায়। আমি অয়নের প্রেমে পড়ে যায়। অয়ন আমার মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শুনার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। আমিও বলবো বলবো ভাবছি।

কিন্তু কিছু দিন ধরে অয়ন আমাকে ইগনর করে চলে। বেশি কথা বলে না। এড়িয়ে চলে। আমারো আর ভালো লাগছে না। আমি একদিন অয়নের পথ আটকিয়ে বলি,,, কি সমস্যাটা কি আপনার হুমম, আমাকে ইগনর কেনো করছেন৷ কিছু হয়েছে, হলে বলেন। আর বেশি কথাও বলছেন না।

অয়ন কিছু না বলে আমার সাইড কাটিয়ে চলে যেতে চাই, আমি অয়নের হাত ধরে বলি,,, কথা শেষ না করে যাবেন না। পিল্জ আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।

অয়ন আমার হাত ছাড়িয়ে বলে,,, কি বলবো বলো, আমার বলার মতো কিছু নেয়।

আমি হালকা হেঁসে বলি,,,, ও আচ্ছা, এবার বুঝেছি, আপনি কেনো আমার প্রতি রেগে আছেন। আপনি যেটা শুনতে চান সেটা আমি আজি বলবো।

আমি কিছু শুনতে চাই না, বলে অয়ন চলে যেতে নেয়,আমি অয়নের হাত ধরে ফেলি। ধরে বলি,, আমিও আপনাকে ভালোবাসি, আই লাভ ইউ।

বলে লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলি, অয়ন কিছু ক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছু ক্ষন পর আমি অয়নের হাতটা একটু ঝাঁকিয়ে বলি,,, কিছু বলো না কেনো।

অয়ন তাড়াতাড়ি তার চোখ সরিয়ে আমার হাত এক ঝটকায় ছাড়িয়ে বলে,,,,, তোমাদের গ্রামের মেয়েদের এটাই সমস্যা, একটু হেঁসে কথা বললেই সংসার গড়ে ফেলে। একটু হেঁসে কথা কি বলেছি নিজেকে আমার লেভেলের ভাবতে শুরু করে দিয়েছো।

আমি অয়নের কথার কিছুই বুঝছি না। সব আমার কাছে এলোমেলো লাগছে, তাও আমি মুখে জোর করে হাসি এনে বললাম,,,,, মজা করছো, তাই না অয়ন। দেখো এই সময় মজা ঠিক হচ্ছে না।

অয়ন তুচ্ছ হাসি দিয়ে বলে,,,, ইয়াহ রাইট, এতো দিন আমি তোমার সাথে মজায় করেছি। এখানে থেকে থেকে ভোর হচ্ছিলাম তাই ভাবলাম তোমার সাথে ফান করা যাক। কাল আমি এখান থেকে চলে যাবো তাই আর এই নাটকের কোনো দরকার নেয়।

আমার চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা নোনাপানি গড়িয়ে পড়ে। আমি শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করি,,, এতো দিন এতো ভালোবাসা সবি কি মিথ্যা ছিলো।

,,,কিসের ভালোবাসা, সব নাটক ছিলো, আর নিজেকে একবার দেখো আর আমাকে দেখো। এটা ভাবার আগে নিজের চেহেরাটা তো এক বার আয়নায় দেখতে।

নিজেকে আর সামলে রাখতে পারলাম না, এবার রাগে দুঃখে বললাম ,,,, আপনি কি আমাকে নিজের খেলনা মনে করেছেন যে যখন খুশি খেলবেন।এতো দিন ভালোবাসি বলে বলে মাথা খারাপ করে দিয়েছেন। এখন আমি যখন বলছি যে, আমি আপনাকে ভালোবাসি তখনি পাল্টি নিচ্ছেন।

কি মনে কি করেন নিজেকে৷ ঠিক কথা আমারি বুঝা উচিত ছিলো, আপনার মতো ছেলেরা শুধু ধোঁকা দিতে পারে ভালোবাসতে পারে না। কোনো দিন ক্ষমা করবো না আপনাকে।আই হেট ইউ।

বলে কান্না করতে করতে চলে গেলো। আমি তাকিয়ে শুধু তাকিয়ে নীরের যাওয়া দেখছি। আর কিছুই আমার করার নেই। নিজেকে সামলানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কতোদিন এটা অপেক্ষায় ছিলাম, অবশেষে বললো কিন্তু আমার আর সেই খুশিটা রইলো না।

কারন আমি প্রহরকে বলার আগে প্রহর আমাকে বলে, সে নাকি নীরকে ভালো বাসে, তাহলে আমি কি করে সেখানে আসতে পারি। ওর ভালোবাসা আমি কেড়ে নিতে পাড়বো না। আমার কারনে প্রহরকে কষ্ট দিতে পারবো না।

আমি সেখান থেকে চলে যায়। বিদেশে চলে যাবো আমি। যাওয়ার আগে মামাকে বলে যায়, ওনি যেনো নীরের মা বাবার সাথে প্রহরের জন্য কথা বলে। মামাও তাই করে, তার মা বাবা রাজি হয়ে গেছে শুনেছি।

আমি যাওয়ার জন্য বেগ গুছাচ্ছি, প্রহর আমার রুমে এসে, আমার সামনে বসে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি বেগের দিকে নজর দিয়ে বলি,,, হাসছিস কেনো।

প্রহর,,,,,, তোহহ কি করবো। মারু রাজি হয়ে গেছে। ভাবছি কিছু দিন পড়েই আমরা বিয়ে করে নিবো। কি বলিস অয়ন। মারু আমার হয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যে।

আমি অন্য দিকে ফিরে হুমম বলি। চোখে পানি এসে গেছে। প্রহর দাঁড়িয়ে বলে,,,, কি চোখের পানি লুকানোর চেষ্টা করছিস নাকি।

আমি কিছুটা চমকে গিয়ে নিজের চোখ লুকানোর চেষ্টা করে বলি,,, মানে কি তোর কথার।

প্রহর আমার কাঁধে হাত রেখে বলে,, অনেক হয়েছে আর মিথ্যা বলার কোনো দরকার নেয়।মারু আমাকে সব বলে দিয়েছে।

আমি প্রহরের দিকে তাকিয়ে ওর হাত ধরে বলি,,, মানে কি বলেছে। প্রহর দেখ ওর কথা তুই সিরিয়াস ভাবে নিস না।

প্রহর আমার ছাড়িয়ে বলে,,, তুই মারুকে ভালোবাসতি, কিন্তু আমার কারনে মারুকে ছেড়ে দিতে চাইছিস।মারুও তোকে ভালোবাসে।আমার কারনে তুই নিজের ভালোবাসার ত্যাগ করছিস। যদি মারুর সাথে আমার বিয়ে হয়ে যেতো তাহলে নিজেকে কিভাবে ক্ষমা করতাম। আমি মারুর আগে তোকে ভালোবাসি। মারু তোর ছিলো আর চীরদিন তোর থাকবে।

,,,প্রহর বুঝার চেষ্টা কর।

,,,,তুই বুঝ,, যা মারুর রাগ ভাঙা। বিয়েটা আমার সাথে না তোর সাথে হবে। মারু বাগানে আছে, তাড়াতাড়ি যা।নাহলে দেড়ি হয়ে যাবে।

আমি প্রহরকে জরিয়ে ধরে বাগানের দিকে দৌড়ে যায়। নীর সেখানে মন খারাপ করে বসে আছে। আমি নীরের দিকে তাকায়। নীর আমার দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে। আমি শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলাম,,,,,, কি বলেছো প্রহরকে তুমি।

নীর রাগে জোরে বলে,,,কি বলবো, যা সত্যি তাই বলেছি। আপনি যেমন আমার সাথে অভিনয় করেছেন ভালোবাসার। ঠিক তেমনি আপনার বন্ধুও আমার সাথে বিয়ের নাটক করতে এসেছে, এটাই বলেছি।

আমি মাথা নিচু করে বললাম,,,, সরি,, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি তোমার মনে কষ্ট দিয়েছি।

নীর রাগ দেখাতে গিয়ে হেঁসে দেয়, আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। হাসি থামিয়ে বলে,,, আর রাগ দেখাতে পারবো না, প্রহর আমাকে সব বলেছে। আপনি আমাকেই ভালোবাসেন।

,,,আর তুমি।

নীর লজ্জা মাখ মুখে বলে,,, আমিও,,

অয়ন আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে। প্রহর দূর থেকে সব দেখছিলে। এভাবেই চলতে থাকে, লুকিয়ে দেখা করা, কথা বলা। বাইকে ঘুরতে যাওয়া।

ঐ দিন মেঘার গায়ের হলুদ ছিলো আর নীর হলুদ শাড়ী পড়েছিলো, আমি আর প্রহর হলুদ পায়জামা পাঞ্জাবি। আমি সবার ছবি তুলছিলাম। নীরের মাথার ফুল ছুটে যাচ্ছিলো প্রহর সেটা ঠিক করে দিচ্ছিলো, আমি সেটার ছবি তুলে নিয়।

এভাবেই অনেক মাস কেটে যায়। পড়ে সায়ন বড়ো একটা পার্টি রাখে, ভেবেছিলাম সেখানেই সবাইকে তোমার আর আমার বিয়ের কথা বলবো। বাকিটা তো জানায় আছে।

বর্তমানে,,,,,,

এসব বলে অয়ন উঠে আমাকে জরিয়ে ধরে বলে,,, আমাদের ভালোবাসা মনে নেয় তোমার। আমাদের সেই স্মৃতিময় মূহুর্ত।

আমি হালকা হেঁসে বলি,, কালকের কথা মনে না থাক, আজ তো আমি তোমার পাশে আছি। তোমাকে ভালোবাসি। অতীতের মূহুর্ত গুলো আমরা আবার কাটাবো এক সাথে। আর এগুলো কখনো ভুলবো না। আর ভুলে গেলেও আমাদের ভালোবাসা মনে করিয়ে দেওয়ার মতো আমাদের ভালোবাসার অংশ তো আমার মধ্যেই আছে।

এভাবেই কেটে যায় কয়েক মাস। আগের থেকে একটু মোটা হয়ে গেছি। পেটটাও বড় হয়ে গেছে৷ সবাইকে তেমনি ভাবে জ্বালাচ্ছি। গভীর রাত আর দিন নেই, যখন যেটা খেতে মন চাইছে, সবাইকে বাহিরে পাঠিয়ে দিচ্ছি আনার জন্য। সায়নের অবস্থাটা ঠিক বুঝা যাচ্ছে না। এই ভালো তো এই খারাপ। পাগলামোটা বেড়েছে মনে হয়।

এভাবেই আরো কয়েক মাস কেটে যায়।এখন আমার নয়মাস। পেটের কারনে নিজের পা দেখতে পারি না। নিচু হতে পারি না। আমি রুমে বসে আছি।অয়ন তখন বলে,,, নীর আমি একটা কাজে যাচ্ছি, খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবো, খুব সাবধানে থাকবে।

,,,,হুমম,,তুমিও সাবধানে যাবে কিন্তু।

অয়ন সন্ধ্যায় ফিরে আসে। এসে তার মাকে মারুর কথা জিজ্ঞেস করতেই একটা জোরে চিৎকার এর আওয়াজ শুনে অয়ন দৌড়ে উপরে যায়। গিয়ে দেখে মারু নীরে পরে আছে, নীচে রক্ত দিয়ে মেঝে ভেসে যাচ্ছে।

আর সাইডেই দাঁড়িয়ে আছে সায়ন, হাতে মোটা রোড নিয়ে, যেটা খাটে থাকে, মশারী টাঙানোর জন্য।

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here