গল্পের নামঃ- #ভালোবাসার_নতুন_প্রনয়ণ
লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)
part:04
বাসায় ঢুকে ড্রয়িং রুমে কাউকে দেখতে না পেয়ে হূর সোজা নিজের রুমে চলে আসে আর দরজাটা লাগিয়ে দেয় যাতে এরিশ না আসতে পারে। তখনই এরিশ হূরের বারান্দা থেকে বেড়িয়ে আসে আর বলে
” হ্যা ভালো করে লাগা, কেউ যেন না আসতে পারে। এরিশের কন্ঠ শুনে চমকে যায় হূর পিছনে তাকিয়ে দেখে এরিশ দাড়িয়ে আছে। হূর, বলে
” আপ,,আপনি এখানে কি করেন?? এরিশ হূরের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে
” কেন? নীলআদ্রের থাকার কথা ছিল? হূর রেগে বলে
” নীলআদ্র কেন থাকবে? আর নীলআদ্র থাকলে আপনার মতো হুট করে যার রুম সে উপস্থিত নেই জেনেও কারো রুমে ঢুকতো না।
এরিশ হূরের দিকে আগালে হূর দরজার সাথে চেপে দাড়ায়। আর এরিশ নিজের দুইহাত দরজার দুইপাশে রেখে আলতো করে ফু দিয় হূরের মুখে। হূূর মুখ ঘুরিয়ে বলে
” কি করছেন, আর দূরে দাড়িয়ে কথা বলুন।
এরিশ হূরের একদম কাছে চলে এসেছে হূর হাত দিয়ে এরিশকে থামিয়ে বলে
” দূরে সরুন। এরিশ হূরের হাতটা খুব শক্ত ভাবে ধরে বলে
” কোথায় গিয়েছিলি ওর সাথে?? হূর নিজের হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে
” আগে দূরে সরে দাড়ান তারপর কথা বলুন। এরিশ বলে
“উহু,, এইভাবেই বলবি। হূর বলে
” পার্কে গুয়েছিলাম। গাড়ি নেয়নি। সন্ধ্যা নেমে আসে তখন নীলআদ্রের সাথে দেখা হয়। আর নীলআদ্র আমাকে বাসায় পৌছে দেয়। এরিশ একটু ভেবে বলে
” কাহিনী তে কোনো রসকষ নেই। হূর এবার এরিশের হাতে কামড় বসিয়ে দেয় আর সাথে সাথে এরিশ হূরের হাত ছেড়ে দেয়। হূর বলে
” ওর সাথে আমার লাভ ইস্টরি চলছে না যে রসকষে ভরপুর কাহিনী শুনবেন৷ এরিশ বলে
” তোর কাহিনী পরে শুনবো জঙ্গলি বিল্লি, আগে কামড় কেন দিলি সেটা বল। হূর বলে
” আপনাকে হাত ছাড়তে বলছি ছাড়েননি কেন? তখনই এরিশের মা হূরের দরজায় নক করে।
” হূর, কিরে কখন ফিরলি। কাউকে কিছু বললিও না। কিছু কি হয়েছেরে মা?? এরিশ বাঁকা হাসি দিয়ে হূরের কানে কানে বলে
” এখন আম্মু তোকে আর আমাকে একসাথে যদি দেখে এক রুমে তাও দরজা বন্ধ অবস্থায় কি হবে রে?? হূর অসহায় দৃষ্টিতে তাকায়। এরিশ কিছু বলতে যাবে তখনই হূর এরিশের মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে আর বলে
” মামুনি এমনি এখন পড়তে বসেছি তুমি যাও। কিছু হয়নি। টেনশন নিয়ো না৷ এরিশের মা বলে
” চা কফি, কিছু খাবে?! হূর বুদ্ধি করে বলে
“হ্যা, হ্যা তোমার হাতের মালাই চা টা করে দিবে?? এরিশের মা আচ্ছা বলে চলে যায়। এরিশের মা যেতেই এরিশ হূরের হাতে কামড় বসিয়ে দেয় সাথে সাথে হূর হাত সরিয়ে ফেলে, এরিশ বলে
” রিভেন্ঞ্জ ডান। আর হূরকে দরজার থেকে সরিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
____________
আজ ড্রাইভার চাচ্চু আসেনি, তাই হূরকে এরিশের সাথে যেতে হবে। নাশতার টেবিলে হূরের বাবা বলে
” এরিশ বাবা তুই আর হূরতো একই ভার্সিটিতে পড়িস। আর আজ আজিজুল ও আসে নি। (ড্রাইভার) তো বলছিলাম হূরকে সাথে নিয়ে যাস।
এরিশ হূরের দিকে তাকিয়ে জুস খেতে খেতে বলে
” একদিন ভার্সিটি না গেলে কিছু হবে না। হূর বলে
” না পাপা আমি রিক্সা করে চলে যাবো সমস্যা নেই। হূরের দিদুন বলে
” কেন রে একদিন ভার্সিটি না গেলে কি এমন হয়?? নাকি কোনো প্রেম টেম করিস? এই কথা শুনে হূরের কাকাই বলে
” দেখ মা, মানুষের লাইফ গুছাতে সবচেয়ে বেশি কাজে আসে পড়ালেখা। আর এরিশ তুমি হূরকে নিয়ে যাবে তোমার সাথে। হূর বলে
” না না কাকাই আমি একাই যেতে পারবো রিক্সাতে কি এমন হবে। মৃধা বলে
” আহহহ বাবা বুঝি না যার যেই এভাবে ইচ্ছা যাক। আমাদের কি? খাও তো খাওয়ার সময় এতো কথা ভালো লাগে না। এরিশের মা মৃধার পেলেট নিয়ে বলে
” তোর খেতে হবে না। এই শিক্ষা দিয়েছি তোকে?? বাবার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?? হূর তখনই বলে
“আমার খাওয়া হয়েগিয়েছে, আমি বরং আসি। আর ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পরে। হূরের মা হূরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে ।এরিশের মা বলে
” মেয়েটাকে খেতেও দিলি না তুই।
মৃধা কিছু বলতে যাবে তার আগেই এরিশ ধমক দিয়ে বলে
” খাওয়ার সময় কথা ভালো লাগে না!! বয়ফ্রেন্ডের গুনগান যে শুনতে সমস্যা হয় সেটা বলিস না কেন?কানে যে হেডফোন গুজে বয়ফ্রেন্ডের সাথে গুনগুন করিস, সেটা কিন্তু চোখে ঠিকই পরে। শুধু আজই দেখালম খাবার টেবিলে ফোন ছাড়া ৷ মৃধা তোকে লাস্ট টাইম বলছি আদিবের থেকে দূরে থাকবি। সবাই অবাক হয়ে বলে
” আদিব কে?? এরিশ বলে
” তোমাদের আদরের মেয়েকে জিজ্ঞেস করে নাও। আর তোকে যদি আমি ওর সাথে আরেকবার দেখি তাহলে তো বুঝিসই। বলেই খাবার টেবিল ছেড়ে বেড়িয়ে যায়।
______________
সবাই মৃধাকে ইচ্ছে মতো বকছে। এরিশের মা মৃধার কাছ থেকে ফোন নিয়ে নেয়। আর বাইরে কলেজে যাওয়াটাও বন্ধ। মৃধা রাগে ফুসছে।
হূরের চোখে পানি চিকচিক করছে। রিক্সার জন্য সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছে। ভাগ্যটাই খারাপ তার। শেষে না পেরে কেঁদেই দেয় আর হাটতে লাগে। হঠাৎ করেই হূরের সামনে বাইক থামে। হূর তাকিয়ে দেখে এরিশ। এরিশ বলে
” বাইকে উঠ। হূর কিছু না বলে
” এরিশকে পাশ কাটিয়ে চলে আসে। এরিশ বাই আবার হূরের সামনে থামিয়ে বলে
” দেখ ছোট বাবা আর বাবা বলেছে তোকে নিয়ে যেতে নয়তো আমারই কোনো ইচ্ছা নেই। হূর বলে
” যাবো না আপনার সাথে লাগবে না। এরিশ বাইক থেকে নেমে। হূরকে সোজা কোলে তুলে নেয় আর বসিয়ে দেয় বাইকে। হেলমেট পরিয়ে বলে
” এক কথা বারবার বলতে ভালো লাগে না। আর চুপচাপ বস। হূরও কথা বাড়ায় না। এরিশের সাথে ভার্সিটি চলে আসে। আর বাইক থেকে নেমে কিছু না বলেই চলে যায় ভার্সিটির ভিতরে।
এরিশ বলে
” অকৃতজ্ঞ প্রাণী একটা। প্রতিদিন তো ঠিকিই ড্রাইভার চাচ্চুকে ধন্যবাদ দেয় আমাকে দিলে কি,এমন হবে। ফালতু একটা। তখনই আকাশ পিছন থেকে আকাশ বলে
” কিরে কি এমন বকবক করছিস?? এরিশ বলে
” তোর বিয়ের মন্ত্র পড়ছি। আবির হাহা করে হেসে দেয় আর বলে
” তুই পন্ডিতের কাজ খবে থেকে শুরু করলি?? এরিশ বলে
” নাক বরাবর একটা ঘুসি দিব সোজা গিয়ে পরবি তিথির কোলে। আবিরের তিথির কথা শুনে কাশি উঠে যায় আর বলে
” সালা ওর কথা বলিস না ক্লাসে চল।
______________
ভার্সিটিতে ঢুকতেই দেখা হয় হূরের নীলআদ্রের সাথে। নীলআদ্র হূরকে দেখে বলে
” হূর পরি। হূর চাইলেও এখন ইগনোর করতে পারবে না। হূর বলে
” হ্যা ভাইয়া বলুন। নীলআদ্র বলে
” আজ ফ্রি আছো? তখনই পিছন থেকে অহি বলে
” না হূর সবসময়ই দামি। হূর সবার জন্য না। চলতো হূর। তিথি বলে
” হ্যা তাড়াতাড়ি।
হূর, অহি আর তিথি উপরে ক্লাসের দিকে যাচ্ছে। তখনই একটা আনানো নাম্বার থেকে মেসেজ আসে হূরের ফোনে। আজকে মেসেজটা দেখে হূরের মনে কৌতুহূল জাগছে কে। মেসেজে লিখা
হূর পরি ডাকার অধিকার একান্তই আমার। অন্য কেউ বলবে তো তার খবর আছে। আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে হলরুমে না আসলে সোজা ক্লাস থেকে তুলে নিয়ে আসতে ২ মিনিট ভাববো না।
হূর, অহি আর তিথিকে যেতে বলে নিজে হল রুমের দিকে যাচ্ছে। আর ভাবছে কে এই ব্যক্তি ? হলরুমে তেমন কেউ আসেও না তাই ভয় লাগছে। একটু দূরে যেতেই।।
চলবে