#মরুর_বুকে_বৃষ্টি 💖
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৩৮
(সারপ্রাইজ পর্ব)
★আদিত্য নিজের রুমের ফ্লোরে অচেতন অবস্থায় পরে আছে। কাল নূরের বাসা থেকে আসার পর অনেক ভেঙে পরেছিল আদিত্য। কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছিল না মধ্যরাত পর্যন্ত নেশা করে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পরেছে। এখন বেলা দুপুর গড়িয়ে বিকেলে চলে এসেছে তবুও আদিত্য ওভাবেই পরে আছে।
সন্ধ্যার একটু আগে আদিত্যর ঘুমটা হালকা হয়ে এলো। আদিত্য একটু নড়েচড়ে ধীরে ধীরে উঠে বসলো। মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে। কাল রাতের হ্যাংওভার হচ্ছে। আদিত্য দুই হাতে মাথা চেপে বসে রইলো। ঠিক সেই মুহূর্তে দরজা ঠেলে আবির আর বিহান হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকলো। ভেতরে এসে কোন কিছু না বলে সোজা আদিত্যর হাত ধরে ওকে টেনে তুলে ওয়াশরুমের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আদিত্য হকচকিয়ে উঠে বললো।
–এই এই কি করছিস তোরা ছাড় আমাকে।
আদিত্যের কথার বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে আবির আর বিহান আদিত্যকে টেনে নিয়ে এসে ওয়াশরুমের ঢুকিয়ে দিল। আদিত্যকে এক ধাক্কায় ওয়াশরুমের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে বলে উঠলো।
–দশ মিনিট, মাত্র দশ মিনিট সময় আছে তোর কাছে। এর মধ্যে হাগা, মুতা, গোসল যা করার করে নে। মনে রাখিস এর বেশি সময় নিলে কিন্তু তোকে আমরা বাথরুমেই আটকে রাখবো আজকে।
আদিত্য দাঁত কিড়মিড় করে ওদের দিকে এগিয়ে আসতে নিলে, তার আগেই ওরা বাইরে থেকে ঠাস করে ওয়াশরুমের দরজা আটকে দিল। দরজা আটকে দিয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠলো।
–ইওর টাইম স্টার্ট নাও।
আদিত্য ওদের সাথে আর না পেরে অগত্যা ফ্রেশ হতে গেল। এমনিতেও ওর এখন শাওয়ার নেওয়া দরকার। তাই বেশি না ভেবে আদিত্য শাওয়ার নিতে চলে গেল। ওই দুটোকে তো ও পরে দেখে নিবে।
ওদের দেওয়া টাইম লিমিট অনুযায়ী আদিত্য দশমিনিটের ভেতরই শাওয়ার শেষ করে ওয়াশরুমে থাকা একটা টাওজার পরিচয় নিয়ে দরজায় টোকা দিয়ে দরজা খুলতে বললো। কিছুক্ষণ পর ওরা দরজা খুলে দিল। দরজা খুলে দিয়ে আবারও আবির আর বিহান আদিত্যর দুই হাত ধরে ওকে টেনে বেডের কাছে নিয়ে আসলো।
আদিত্য বিরক্তিকর কন্ঠে বললো।
–এই কি শুরু করেছিস তোরা? এমন টানাটানি শুরু করেছিস কেন আমাকে নিয়ে? ছাড় বলছি। দেখ মন মেজাজ কিন্তু এমনিতেই বিগড়ে আছে। শেষে কিন্তু সব রেশ তোদের ওপর ঢালবো বলে দিলাম।
ওরা দুজন আবারও আদিত্যর কথার কোন প্রতিত্তোর না করে ওকে ধরে বেডের কাছে নিয়ে নিয়ে এলো। তারপর বেডের ওপর রাখা পাঞ্জাবি টা ওকে পরিয়ে দিতে লাগলো। আদিত্য এবার আরও অবাক হয়ে বললো।
–আরে আজব, পাঞ্জাবি কেন পরাচ্ছিস আমাকে? দেখ এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমার রাগ জালাস না বলে দিলাম।
আবির আর বিহান এমন একটা ভাব করছে যেন আদিত্যের কথা ওদের কানেই ঢুকছে না। ওরা ওদের কাজ করেই যাচ্ছে। আদিত্যর কথার মাঝেই ওকে জোর করে পাঞ্জাবিটা পরিয়ে দিল।তারপর আদিত্যের গায়ে একটু বডি স্প্রে করে দিল। এরপর আবির আর বিহান আবারও আদিত্যর হাত ধরে ওকে বাইরের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো। আদিত্যের এবার সত্যিই চরম রাগ উঠে যাচ্ছে। দুটোর মাথায় কি চলছে কিছুই বুঝতে পারছে না ও। আদিত্য নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে চোয়াল শক্ত করে বললো।
–আবার কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস আমাকে? করতে চাচ্ছিস কি তোরা,বলবি আনাকে?
এতক্ষণে বিহান বলে উঠলো।
–কই আবার, তোর শাদি করানোর লাইগ্যা।
আদিত্য যেন আকাশ থেকে পড়লো। আশ্চর্য হয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠলো।
–হোয়াটা??? হ্যাভ ইউ গন ম্যাড? কি যাতা বলছিস?
আবির বলে উঠলো।
–হ্যাঁ ভাই বিহান ঠিকই বলেছে। আজকে তোমাকে আমরা আবার বিয়ে দেব। অনেক হয়েছে। তোমাকে আর ওই তার ছিঁড়া মেয়ের পেছনে ঘুরে নিজের জীবন বরবাদ করতে হবে না। আজকে আমরা তোমাকে আবার বিয়ে দেব। তাও ওই মেয়ের থেকে শতগুণ সুন্দরী রূপবতী মেয়ের সাথে বিয়ে দেব তোমাকে।
আদিত্য যেন হতভম্ব হয়ে গেল। এই দুটো যে পুরো পাগল হয়ে গেছে সেটা বুঝতে আর ওর বাকি নেই। আদিত্য রাগী কন্ঠে বললো।
–আবিররর,, পাগল হয়ে গেছিস তোরা? কি আবোল তাবোল বলে যাচ্ছিস তখন থেকে? এবার কিন্তু সত্যিই মার খাবি তোরা? ছাড় আমাকে তোরা।
ওদের বাকবিতন্ডার মাঝেই ওরা আদিত্যকে পাশের একটা রুমে টেনে নিয়ে এলো। রুমে এসে আবির সামনের দিকে ইশারা করে দেখিয়ে বলে উঠলো।
–আরে তুমি একবার দেখোতো মেয়েটাকে। দেখবে এই মেয়েকে একবার দেখলে তুমি তোমার আগের বউকে ভুলে যাবে। একপায়ে রাজী হয়ে যাবে বিয়ে করতে।
আবিরের ইশারা অনুযায়ী আদিত্য সামনে তাকিয়ে দেখলো। বেডের ওপর একটা মেয়ে বধূর সাজে ঘোমটা টেনে বসে আছে। আদিত্যের রাগ এবার চরম পর্যায়ে উঠে গেল। আদিত্য সর্বশক্তি দিয়ে এক ঝটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে আবিরের কলার চেপে ধরে রাগী কন্ঠে বললো।
–ব্যাস, অনেক হয়েছে। তোদের সাহস কি করে অন্য একটা মেয়েকে এবাড়িতে আনার? তোরা ভাবলি কি করে আমি আমার এঞ্জেল কে রেখে আমি অন্য কাওকে বিয়ে করবো। কখনোই না। আরে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েকে আনলেও আমি তাকে বিয়ে করবোনা। কখনোই না।
হঠাৎ পেছন থেকে বধূ বশে
থাকা মেয়েটি বলে উঠলো।
–আর ইউ শিওর???
আদিত্য প্রচুর পরিমাণ রেগে থাকায় কন্ঠটি চিনতে পারলোনা। বরং মেয়েটির কথায় আরও রাগ উঠে গেল ওর। আদিত্য আবিরের কলার ছেড়ে দিয়ে, পেছনে ফিরতে ফিরতে চোয়াল শক্ত করে আঙুল উঠিয়ে বলতে লাগলো।
–ইউ জাস্ট শাট আ,,,,,,,
আর বলতে পারলোনা আদিত্য। পেছনে ফিরে বধূবেশে নূরকে দেখে থমকে গেল আদিত্য। কিছু সময়ের জন্য স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো ও। চোখের সামনে যা দেখছে তাকি স্বপ্ন না বাস্তব তা পরখ করতে পারছে না। সত্যিই কি ওর এঞ্জেল ওর সামনে বধূবেশে বসে আছে?
আবির আর বিহান মুচকি হেসে আস্তে করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।
নূরও ছলছল চোখে আদিত্যের দিকে তাকিয়ে আছে। নূর ঢোক গিলে আবারও বললো।
–বলুন না করবেন না বিয়ে আমায়?
আদিত্যের এবার একটু সম্ভূতি ফিরলো। আদিত্য একটু নড়েচড়ে উঠলো। নূরকে দেখে খুশী হতে নিয়েই আবার কালকের কথা মনে পড়লো ওর। আদিত্য নিজেকে কোনরকমে সামলে নিয়ে অন্য দিকে আঙুল অভিমানি সুরে বলে উঠলো।
–তুমি এখানে কি করছ? তোমার কথামতো তো আমি চলেই এসেছি। তাহলে আবার কি অভিযোগ নিয়ে এসেছ?
নূর কিছু বলতে যাবে তখনই আদিত্য আবারও বলে উঠলো।
–ওও বুঝতে পেরেছি। নিশ্চয় আমার পাগল ভাইগুলো তোমাকে এখানে জোর করে নিয়ে এসেছে। আমি ওদের পক্ষ থেকে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। আসলে পাগল গুলো আমার কষ্ট দেখতে পারছিল না। তাই হয়তো তোমাকে জোর করে নিয়ে এসেছে। তবে তুমি চিন্তা করোনা। তুমি এখন নিশ্চিন্তে বাসায় যেতে পারো। কেও তোমাকে ঠেকাবে না।
কথাটা বলেই আদিত্য ঘুরে চলে যেতে লাগলো।
–হিরোওও,,,
পেছন থেকে আসা নূরের সেই পূরানো হিরো ডাকে আদিত্যর পা জমে গেল। হৃৎপিণ্ড টাও কেঁপে উঠল। ও কি ঠিক শুনলো? নূর কি ওকে হিরো ডাকলো? নাকি এটা শুধুই ওর মনের ভ্রম? হ্যাঁ ভ্রমই হবে। নূর কি আর আমাকে হিরো বলে ডাকবে? সে যে এখন আমার সেই মাছুম এঞ্জেল টা নেই।
কথাটা ভেবে আদিত্য আবারও পা বাড়াতেই পেছন থেকে আবারও শুনতে পেল।
–হিরো, যেওনা প্লিজ?
আদিত্য এবার এক ঝটকায় পেছনে ফিরে তাকালো। পেছনে তাকিয়ে দেখলো নূর ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে দুই কান ধরে বসে আছে। চোখ দুটো দিয়ে অঝরে পানি পরছে। আদিত্য ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো।
–ক কি বললে তুমি? আবার বলো।
নূর কাঁদো কাঁদো গলায় অপরাধী সুরে বলে উঠলো।
–অ্যাম সরি হিরো। প্লিজ মাফ করে দাওনা তোমার এঞ্জেল কে?অনেক বড়ো ভুল হয়ে গেছে। তুমিতো জানোই তোমার এঞ্জেল টার মাথার তাড় ছিঁড়া। তাইতো সে তার হিরোকে ভুলে গিয়েছিল। আর তার হিরোকে এতো কষ্ট দিয়েছে। তাই অনেক গুলো সরি হিরো। প্লিজ মাফ করে দাও।
আদিত্যের শরীর কাঁপছে। সে যা ভাবছে তাকি সত্যিই? ওর এঞ্জেলের তার হিরোকে মনে পরে গেছে? আদিত্য ধীরে ধীরে নূরের সামনে এসে নূরের মুখোমুখি হাঁটু গেড়ে বসলো। নূরের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা হাত দুটো দিয়ে নূরের মুখটা আগলে ধরে বললো।
–আমি যা ভাবছি তাকি সত্যিই? আমার এঞ্জেল টার কি তার হিরোর কথা মনে পরে গেছে?
নূর অশ্রু চোখে তাকিয়ে মাথা ঝাকিয়ে বললো ।
–হ্যাঁ হিরো। আমার সব মনে পরে গেছে।
আদিত্য অশ্রু চোখে বললো।
–আবার বলোনা হিরো।
নূর দুই হাতে আদিত্যের মুখটা ধরে বললো।
–হিরো, হিরো আমার হিরো।
আদিত্য নিজের ঠোঁট কামড়ে অশ্রু চোখে হাসতে লাগলো। আদিত্যের যেন আজ বিশ্বজয়ের খুশী হচ্ছে। নিজের খুশী কিভাবে বয়ান করবে ভেবে পাচ্ছে না ও। হ্যাঁ ও পেরেছে। আজ ওর ভালোবাসা জিতে গেছে। ওর এঞ্জেল আবার ফিরে এসেছে ওর জীবনে। আদিত্য নূরের সারামুখে পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো। তারপর নূরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে দুজনেই সুখের অশ্রু বিসর্জন করতে লাগলো। কিছুক্ষণ ওভাবেই রইলো দুজন। তারপর আদিত্য দুই হাতে নূরের কোমড় জড়িয়ে ধরে নূরকে উঁচু করে তুলে ধরে গোল গোল ঘুরতে লাগলো আর খুশিতে আত্মহারা হয়ে বলতে লাগলো।
–ইয়েস ইয়েস ইয়েস, মাই এঞ্জেল ইজ কাম ব্যাক।দিস ইস দ্যা হ্যাপিয়েস্ট ডে ইন মাই লাইফ। উঁহুউউউউ
আদিত্যের খুশিতে নূরও খিলখিল করে হেঁসে উঠলো। আদিত্য একটু পরে নূরকে নামিয়ে দিয়ে বললো।
–এসব কিভাবে হলো? মানে হঠাৎ করে কিভাবে মনে পড়লো?
নূর বলতে লাগলো,
কাল আদিত্য চলে যাওয়ার পর নূর কান্না করছিল। তকনই নীলা রুমে ঢুকে। নূরের কাছে গিয়ে রাগী কন্ঠে বলে উঠলো।
–এটা তুই কি করলি আপু?
নীলার কথায় নূর চোখের পানি মুছে উঠে দাঁড়িয়ে আমতা আমতা করে বললো।
–কি কি করেছি? কিসের কথা বলছিস তুই?
–দেখ আপু লুকিয়ে লাভ নেই আমি তোমাদের সবকথা শুনেছি। তুমি এসব একদম ঠিক করোনি আপু।
–দেখ তুই যা জানিস না তা নিয়ে কথা বলিস না। তুই যা এখান থেকে। আমাকে একটু একা থাকতে দে।
নীলা একটু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো।
–আমি জানি না? ভুল বললে আপু। আমি সবই জানি। বরং আমি যা জানি তা তুমিও জানোনা।
নূর ভ্রু কুঁচকে বললো।
–মানে? কি বলতে চাচ্ছিস তুই?
–বলতে চাচ্ছিলাম না। আদিত্য ভাইয়া সবাইকে মানা দিয়েছিল তাই। তবে আজ না বলে পারছিনা। আদিত্যের ভাইয়ার সাথে তোমার এই ব্যবহার দেখে আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ আমি এতটা স্বার্থপর হতে পারবো না।
–হেয়ালি না করে যা বলবি সাফসাফ বল।
–তাহলে শোন সাফ সাফ। তুমি জানো যাকে তুমি এতোগুলা কথা শুনালে। যাকে তুমি ক্যারেক্টার লেস ভেবে বাসা থেকে বের করে দিলে তুমি জানো সে কে?
–কে?
–সে তোমার হাসব্যান্ড।
নূর বিস্ফোরিত চোখে তাকালো নীলার দিকে। নীলা বলতে লাগলো।
–হ্যাঁ এটাই সত্যি। আদিত্য ভাইয়া ম্যারিড। তবে তার বউ অন্য কেও না বরং তুমি নিজেই। আজ থেকে ছয় মাস আগে তোমার আদিত্য ভাইয়ার সাথে বিয়ে হয়েছে। জানো কতটা ভালোবাসে সে তোমাকে? নিজের জীবনের থেকেও বেশী ভালোবাসে সে তোমাকে।
নূর যেন স্তব্ধ হয়ে গেল। কি শুনছে ও এসব? এটা কি সত্যি? নূর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো।
–না না এটা কিভাবে হবে? তু তুই মিধ্যে বলছিস তাইনা?
–ঠিক আছে আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে নাতো? তাহলে নিজের চোখেই দেখ।
কথাটা বলে নীলা ওর ফোন বের করে নূর আদিত্যের বিয়ের ছবি দেখালো।
নূর সেটা দেখে আরও থমকে গেল। চোখের সামনে আবছা আবছা কিছু ভাসতে লাগলো। নীলা ধীরে ধীরে নূর আর আদিত্যের নানা সময়ের নানা ধরনের ছবি, ভিডিও দেখাতে লাগলো। আর আদিত্য কি কি করেছে সেসব বলতে লাগলো। এসব ছবি আর ভিডিও দেখে নূরের মাথার ভিতর কেমন যন্ত্রণা শুরু হলো। ধীরে ধীরে আবছা আবছা স্মৃতি গুলো পরিস্কার হতে লাগলো। সেই সাথে নূরের মাথার যন্ত্রণাও বেরে গেল। নূর মাথার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে দুই হাতে মাথা চেপে ধরে আর্তনাদ করে উঠলো। একসময় নূর জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে গেল।
এতটুকু শুনে আদিত্য ঘাবড়ে গিয়ে বললো।
–কিহ? তুমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলে? কেও আমাকে কিছু বলেনি কেন? তুমি ঠিক আছতো?
নূর মুচকি হেসে বললো।
–আমি একদম ঠিক আছি। বরং সবচেয়ে বেশি ঠিক আছি। কারণ কাল জ্ঞান ফেরার পর আমার হিরোর কথা সব মনে পরে গেছে আমার। আর আমি ইচ্ছে করেই তোমাকে কিছু বলতে মানা করেছি। কারণ আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম।
আদিত্য হাসিমুখে বললো।
–এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বেস্ট সারপ্রাইজ। আমার যে খুশী লাগছে আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা।
নূর মিছে অভিমান দেখিয়ে বললো।
–কচু খুশী হয়েছ। তুমিতো আমাকে বিয়ে করতে রাজিই হলেনা।
আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
–আমি কি জানি নাকি যে ওরা তোমার কথা বলছে। আর তাছাড়া আমাদের তো বিয়ে হয়েই গেছে। তাহলে আবার কেন বিয়ে করতে হবে?
–তখন তো আমার কোন হুঁশ ছিল না। বিয়ে কি জিনিস তা আমি জানতাম না। তাই এখন আমি আমার পুরো সজ্ঞানে তোমাকে বিয়ে করতে চাই। বলো করবে আমাকে বিয়ে?
আদিত্য নূরের কপালে চুমু খেয়ে বললো।
–শুধু একবার না। শত, হাজার, অযুত, কোটিবার তোমাকে বিয়ে করতে রাজি।
কথাটা বলে আদিত্য নূরকে বুকের ভেতর জড়িয়ে নিল। নূরও পরম শান্তিতে আদিত্যর বুকে মাথা রাখলো।
চলবে…..
(আজকে হয়তো গল্প দেওয়ায় হতোনা। অনেক ব্যাস্ত ছিলাম। তবুও পাঠকদের খুশীর জন্য তাড়াতাড়ি করে অল্প সময়ের ভেতর এটুকুই লিখতে পেরেছি। এই পর্বটা অনেক স্পেশাল ছিল, তাই একটু সময় নিয়ে ভালো করে লিখতে চেয়েছিলাম। তবে সেটা হলোনা। জানিনা কেমন হয়েছে।
রিচেক করারও সময় পাইনি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।)