#অন্তর্লীন_প্রণয়
সাদিয়া মেহরুজ দোলা
পর্ব-১৫
শুভ রঙের ফ্লোরে রক্তের ছড়াছড়ি। কিছু জায়গাতে ফোঁটা ফোঁটা অবস্থায় রক্ত জমে গিয়েছে আবার কিছু জায়গায় বেশ খানিক রক্ত একসাথে হয়ে মিশে একাকার হয়ে গেছে। সেখানেও জমাট বাঁধার উপক্রম! পুরো ফ্লাটের সকল আসবাবপত্র এলো মেলো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই ফ্লাটে ঘন্টা তিনেক আগে ভালো কিছু ঘটেনি। অহর্নিশ পুরো ফ্লাটের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে শুকনো ঢোক গিলে। তার ললাটে ঘাম জমেছে বিন্দু বিন্দু পরিমাণে। আঁখিযুগলে এসে জমেছে নোনা পানি। অনুমতি ছাড়াই তারা নিজ নিয়মে গড়িয়ে পড়ে তৎক্ষনাৎ। কাঁপা ঠোঁট, কাঁপা হাত যেনো একবার ছুঁতে চাইছে আয়ন্তিকা কে। কিন্তু এই আয়ন্তিকা কই?
অহর্নিশের বেহাল দশা দেখে অয়ন কিঞ্চিৎ সন্দেহ নিয়ে তার কাছে এগোয়। কাঁধে হাত রেখে আশ্বস্ত করে বলল,
‘ শান্ত হ অহর্নিশ! আয়ন্তিকার কিছু হয়নি নিশ্চিত। ও ঠিক আছে। এভাবে ভেঙে না পড়ে ওকে খোঁজ আগে। ‘
অহর্নিশ হাঁটু ভেঙে বসে পড়ে অয়নের কথা শুনে। তার কান্না পাচ্ছে। প্রবল কান্না! ঠোঁট কামড়ে আগত কান্নাকে দমন করে বলল,
‘ আর কই খুঁজবো? পুরো দশটা রুম দশবার করে করে হলেও পাই পাই করে খুঁজেছি। পাইনি তো! শুধু পেয়েছি রক্তের ফোঁটা। আয়ন্তিকা কই অয়ন?সাফিয়া কি ওকে মেরে নিয়ে গেছে কোথাও?’
অয়ন লক্ষ্য করে অহর্নিশের চোখদুটো ভয়ংকার লাল হয়ে উঠছে। থরথর করে কাঁপুনি দেয়া বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। অবস্থা সুবিধার ঠেকলো না অয়নের নিকট। সে নিজেও অহর্নিশের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। ধাতস্থ কন্ঠে বলল,
‘ নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা করিস ক্যান শালা?আয়ন্তি ঠিক আছে ইনশাআল্লাহ! আচ্ছা বেলকনি চেক করছিস?’
বদ্ধ আঁখিযুগল ধপ করে খুলে যায় অহর্নিশের। সে চটজলদি উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে তড়িৎ কন্ঠে বলল,
‘নাতো! বেলকনি চেক করা হয়নি। ‘
অহর্নিশ দৌড়ে যায় সাথে অয়নও। একে একে দুই রুমের বেলকনি চেক করে ফলাফল শূন্য মেলে। আর দুইটা বেলকনি বাকি আছে। একটা তার রুমের এবং আরেকটি আয়ন্তিকার রুমে। অহর্নিশ সর্বপ্রথম নিজের রুমের বেলকনিতে যায়। তখনি তার কর্ণধারে আসে কারো চাপা কান্নার গুঞ্জন! হাঁটার বেগ বাড়িয়ে অহর্নিশ বেলকনিতে এসে দেখে আয়ন্তিকা একদম শেষ মাথায় হাঁটু ভেঙে বসে মুখ গুঁজে কাঁদছে। ঠিক তার বাম পাশে সাফিয়ার নিথর দেহ পড়ে আছে। পেটের কাছটায় অনবরত রক্ত পড়ছে সাফিয়ার। অহর্নিশ এক মূর্হত বিলম্বিত না করে দৌড়ে যায় আয়ন্তিকার নিকট! তার বলিষ্ঠ দুহাত আয়ন্তিকার গালে স্থাপন করে নিয়ে ধীর কন্ঠে বলল,
‘ আ..আয়ন্তিকা? ‘
সেই আদুরে, ভরসাযোগ্য স্পর্শ! আয়ন্তিকা হাঁটু হতে মুখ তুলে। অহর্নিশ কে দেখা মাত্রই ঠোঁট ভেঙে কেঁদে দিয়ে এক প্রকার আছড়ে পড়ে সে অহর্নিশের বক্ষ পিঞ্জরে। সময়ের তালে তালে আয়ন্তিকার কান্নার বেগ বেড়েই চলেছে। অহর্নিশ সন্তপর্ণে তাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের রুমের বেডে গিয়ে শুইয়ে দেয়। অয়ন আসেনা! তাদের প্রাইভেসি দরকার। এখানে তার গিয়ে লাভ নেই। অয়ন তাকিয়ে আছে সাফিয়ার মৃত্যুদেহের দিকে। শুষ্ক ঢোক গিলে সে! সাফিয়াকে কে মারলো? আয়ন্তিকা নয়তো?তাহলে তো মহা সর্বনাশ হয়ে যাবে!
.
অহর্নিশের বুকের কাছের শার্ট দুই হাতে আঁকড়ে নিয়ে আয়ন্তিকা অনবরত কাঁদছে।এই সময় অহর্নিশ তার কর্মে বাঁধা প্রদান করলো না। মেয়ে মানুষ, কাঁদছে কাদুক! কাঁদলে মন হালকা হয়। স্বস্তি মিলে,মন নরম হয় । ছেলেরা তো আর নিজের ইচ্ছেতে যখন তখন কাঁদতে পারেনা। তাই তো তারা এতো শক্ত মনের। তবে সময়ের ব্যাবধানে আয়ন্তির কান্নার বেগ কমে না আসায় অহর্নিশের রাগ হয়! রুষ্ঠ কন্ঠে বলল,
‘ আর কত কান্না করবে আয়ন্তিকা? তোমার জামাই মরে টরে যাইনি যে এমন মরা কান্না করছো।থামো! থামতে বলেছিনা আমি? এখন কান্না না থামালে তোমাকে এই ১৩ তলা হতে নিচে ফেলে দিবো। ‘
আয়ন্তিকা ঠোঁট কামড়ে নিয়ে কান্না দমন করার প্রয়াস চালায়। ঝট করে সে অহর্নিশের বুক হতে সরে যায়। তা দেখে অহর্নিশ ডান ভ্রু উঁচু করে বলল,
‘কান্না থামাতে বলেছি। সরে যেতে নয়! আসো এদিকে। ‘
আয়ন্তিকা অভিমানে চোখ ঘাড় বাকিয়ে ‘ না ‘ বলল। সে যাবে না আর অহর্নিশের কাছে। লোকটা আস্ত বেয়াদব। এই যে আয়ন্তিকার মন দুঃখে জর্জরিত হয়ে আছে। কই অহর্নিশ মিষ্টি কয়েক কথা বলবে তা না, তাকে ধমক মারছে! হাহ্!
অহর্নিশ আয়ন্তিকার উত্তরে অসন্তুষ্ট হয়। কন্ঠ দৃঢ় করে বলল,
‘ আসবেনা কেনো হ্যা? দিনদিন তুমি বড্ড বেশি সাহস নিয়ে চলাফেরা করছো। ‘
‘ করছি তাতে আপনার কি হ্যা? সবসময় তেঁতো কথা বলেন। অসভ্য আপনি জানেন? আপনার মতো বাজে লোক দুনিয়াতে আর একটাও নেই। দূর হোন যান! ‘
অহর্নিশ ঠোঁট কামড়ে হেঁসে বলল,
‘ আচ্ছা..? আমি অসভ্য? বাজে লোক? ‘
আয়ন্তিকা তৎক্ষনাৎ নাক টেনে বলল,
‘ হ্যা! ‘
‘ তো একটু অসভ্যতামি করি?’
‘ মানে?’
‘ মানে হচ্ছে.. প্রাক্টিক্যালি দেখাই?’
অহর্নিশ আয়ন্তিকার কোমড় টেনে কাছে আনে। আয়ন্তিকার ডান হাত টেনে নিয়ে সে ঠেসে একটা চুমু খায়। আয়ন্তিকা বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকাতে সে দৃষ্টি পরোয়া করে না অহর্নিশ। নিজ কর্ম সম্পাদন করতে আপাতত সে তুমুল ব্যাস্ত। আয়ন্তিকা শেষে অহর্নিশ কে ধাক্কা দিয়ে সরাতে না পারে হাতের কার্নিশে একটা কামড় দেয়। অহর্নিশ উঠে দাড়ায় ‘ আহ্! ‘ শব্দ করে। রক্তিম দৃষ্টিতে আয়ন্তিকার দিকে তাকাতে আয়ন্তিকা সেই দৃষ্টি উপেক্ষা করে খিলখিল করে হেঁসে দেয়। অয়নের ডাক পড়াতে অহর্নিশ চোখ রাঙিয়ে বলল,
‘ তোমাকে পড়ে দেখছি। ‘
অহর্নিশের কথার পরিপ্রেক্ষিতে আয়ন্তিকা ভেংচি দেয়। দুজন মানব মানবী প্রায় ভুলেই গিয়েছে একটু আগে আসলে ঠিক কি হয়েছিলো। আয়ন্তিকা কিছু সময়ের জন্য সাফিয়ার কথা ভুলে গিয়েছে। ঠিক কিছুক্ষন আগ সময়ে তার ওপর দিয়ে কি গিয়েছে তা মনের মধ্যে জোরালো অবস্থা তৈরি করে এঁটে সেঁটে থাকতে পারেনি। অহর্নিশ তা দূর করে দিয়েছে
একদম! আয়ন্তিকা বেডে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
অহর্নিশ বেলকনিতে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়। পর্দা গুলো টেনে দিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় সাফিয়ার মৃত্য দেহের দিকে। অয়ন তার শুষ্ক অধর জিহ্বা দ্বারা সিক্ত করে নিচু কন্ঠে বলল,
‘ সাফিয়া ডেড দোস্ত! ‘
‘ দেখতেই পারছি। ‘
অয়ন সাহস জুগিয়ে বলল,
‘ আয়ন্তিকা মারেনি তো সাফিয়াকে? নয়ত ও মারা গেলো কিভাবে? এভাবে তো মরে যাওয়ার কথা..’
অয়ন আর কথা বলতে পারলো না। কথাগুলো গলার মধ্যিখানে আঁটকে রইল অহর্নিশের হিংস্র চাহনি দেখে। অহর্নিশ তার ডান হাতের আঙুল উচু করে নিয়ে কড়া কন্ঠে বলল,
‘ আয়ন্তিকা সাফিয়াকে কে মারেনি, গট ইট?ও মারতেই পারেনা। অতো সাহস নেই ওর মাঝে। আর মারবেই বা কেনো? তাছাড়া ব্লাডে ফোবিয়া আছে ওর। রক্ত দেখলে সেন্সলেস হয়ে যায়! সেখানে কাওকে মেরে ফেলা তো অসম্ভব। ‘
অয়ন আমতা আমতা করে বলল,
‘ আইচ্ছা বুঝছি। থাম! রাগ কমা। এমনে তাকাস ক্যান? গিলা খাবি? ছিহ্! শরম করে তো। ‘
অহর্নিশ থাপ্পড়ের জন্য হাত উঠাতে ফিক করে হেঁসে দেয়। অয়ন তা দেখে স্বস্তির শ্বাস ফেলে। একটুর জন্য বেঁচে গেছে সে। নাহলে নিশ্চিত এতক্ষণে থাপ্পড় খেয়ে হসপিটালে বেডে পড়ে থাকতো। তবে অয়নের প্রশান্তি মিলছে অহর্নিশের পরিবর্তন দেখে।
অয়ন এবার চিন্তিত কন্ঠে বলল,
‘ তাহলে সাফিয়া মারা গেলো কি করে? অদ্ভুত! ‘
‘ সুইসাইড করেছে মেইবি। ‘
অয়ন বিস্মিত! আঁখিযুগল বড়সড় করে নিয়ে সে তাকায় অহর্নিশের চেহারাতে। গলা ঝেড়ে বলল,
‘ কি বলিস এসব? মাথা খারাপ নাকি? সাফিয়া সুইসাইড কেনো করতে যাবে রে ভাই! এই কথাটা কোন ভিত্তিতে বললি?’
‘ ওর ডান হাতটা দেখ। ছুরির ধরার জায়গাটার দাগ বসে গেছে। মেইবি ছুরিটা খুব জোরে নিজের পেটে ঢুকিয়েছে ও। তারপর মৃত্যু যখন সন্নিকটে আসল আলত করে হাত পড়ে যায় মাটিতে। ‘
অয়ন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘ এত মাথা খাটাস কেমনে? নামের মতোই ঘোড়ার গতীতে চলে তোর ব্রেইন! ‘
অহর্নিশ বিরক্তি নিয়ে বলল, ‘ ফালতু কথা রাখ এখন। বাসার প্রতেকটা রুমে আমি সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। সেখান থেকেই দেখা যাবে স্পষ্টত আমার অনুমান ঠিক কিনা। সাফিয়ার লাশ ধর এখন। অন্য রুমে নিতে হবে। আয়ন্তিকা দেখলে ওর সমস্যা হবে। ‘
অয়ন সাফিয়াকে চট করে কোলে তুলে নেয়। পাশ দিয়ে আয়ন্তিকার বেলকনিতে দুজন চলে যায়। এই বারান্দা হতে ঐ বারান্দায় খুব সহজেই যাওয়া যায়। রুমের মেঝেতে অয়ন সাফিয়ার লাশ রেখে দেয়! অহর্নিশ সিসি ক্যামেরা হতে মেমোরি বের করে নিয়ে নিজের ল্যাপটপে ওপেন করে। ক্ষনেই পুরো ঘটনা পরিস্কার হয়। সাফিয়া সুইসাইড-ই করেছে। অহর্নিশ যা বলেছে তা পূর্ণ্য সত্যি। সুইসাইড করার পূর্বে ও কিছু কথা বলেছিলো আয়ন্তিকা কে। কথা গুলো এরূপ,
‘ এতো এতো সৌন্দর্যের অধিকারী হয়েও আমি অহর্নিশের মন কেড়ে নিতে পারেনি। পারেনি নিজ ভালোবাসার ঝালে তাকে আবদ্ধ করতে। দিনশেষে ও তোমার মতো একজন শ্যামবতীকে বিয়ে করলো। হয়ত ভালোও বাসে! বেঁচে থেকে এসব শোনা, দেখা যে কতটা কষ্টকর তুমি জানো আয়ন্তিকা? জানোনা হয়ত। তোমার বয়স নিতান্তই খুবই কম। কিন্তু এক দিন ঠিকই তুমি বুঝবে। যেদিন কারো প্রেমে পড়বে, কিন্তু সেদিন দেখার সুযোগ আমার নেই। আমি বাঁচতে চাইনা। অহর্নিশ কে ভালো রাখার দায়িত্ব তোমার। ভালো থেকো। ‘
ব্যস! তৎক্ষনাৎ সাফিয়া নিজের পেটে ছুরি প্রবেশ করায়। আয়ন্তিকা তা দেখে মেঝেতে বসে মুখ লুকিয়ে কেঁদে দেয়। অয়ন, অহর্নিশ তপ্তশ্বাস ফেলে। অহর্নিশ উঠে দাঁড়িয়ে ক্লান্তিমাখা কন্ঠে বলল,
‘ সাফিয়ার কেস তুই হ্যান্ডেল কর অয়ন। আমি যাচ্ছি। ভালো লাগছেনা। দাদাকে কিভাবে ছাড়ানো যায় সেদিক আমি দেখবো। তুই এটা সলভ কর! ‘
অয়ন মাথা নাড়ে। অহর্নিশ চলে যেতেই সে বিড়বিড় করে বলল, ‘ হায়রে প্রেম! আত্মহত্যা মহাপাপ জেনে ও এই কর্মই তারা করে। এখন বাকিটা জীবন যে আগুনে পুড়তে পুড়তে কাটাতে হবে তার কি?’
.
অহর্নিশ রুমে এসে দেখে আয়ন্তিকা ঘুমিয়ে আছে। অর্ধেক পা বেডের বাহিরে এবং তার ছোট্ট দেহ বেডের মধ্যিখানে। লম্বাটে শ্বাস ফেললো সে। এগিয়ে গিয়ে আয়ন্তিকা কে কোলে তুলে ঠিকমতো শুইয়ে দেয়। নিজেও শুয়ে পড়ে আয়ন্তির পাশে! ক্লান্ত লাগছে। বা পাশ হয়ে আয়ন্তি কে টেনে নিজের বক্ষ পিঞ্জরের মাঝে আবদ্ধ করার চেষ্টা করে। উষ্ণ আলিঙ্গনে নিবদ্ধ করে অহর্নিশ আয়ন্তিকার কানে ফিসফিস করে বলল,
‘ শুদ্ধ মনে প্রেমের কলঙ্ক লাগিয়েছো। এখন এই কলঙ্ক দূর করি কি করে? রূপসি থেকে দিনে দিনে যে প্রাণনাশিনী তে পরিণত হচ্ছো তাকি জানো তুমি? ‘
_____________________
ঝম ঝম বৃষ্টির শব্দে আয়ন্তিকার ঘুম ভাঙে। পাশ ফিরে আড়মোড়া ভেঙে তাকাতে অহর্নিশ কে দেখতে সর্বপ্রথম চমকে গেলেও পরক্ষণে নিজেকে ধাতস্থ করে আয়ন্তিকা! এটা নতুন নয়। সে যতবার -ই ঘুমিয়েছে। ঘুম থেকে ওঠার ওর নিজেকে অহর্নিশের উষ্ণ আলিঙ্গনে বন্দী স্বরূপ পেয়েছে। আগে লজ্জা লাগলেও এখন ভালোলাগা কাজ করে তার। আস্তে ধীরে সঙ্কোচ কেটে যাচ্ছে অহর্নিশের প্রতি তার।
আয়ন্তি উঠে বসে সন্তপর্ণে নিজেকে ছাড়িয়ে। বৃষ্টি তে সিক্ত হতে ইচ্ছে করছে তার। ইচ্ছে দমন না করে চুলগুলো হাতখোপা করে সে দৌড় লাগায় বেলকনিতে। খোলা বেলকনি! শুধু এটাই। বাকি সব গ্রীল দেয়া। এই বেলকনিতে দাঁড়ালে মাথার ওপর বিশাল আকাশটাকে স্পষ্টরূপে দেখা যায়। বৃষ্টির মাঝে ধীরে ধীরে সিক্ত হতে থাকে আয়ন্তিকা। আলত হাসি অধর কোণে! বৃষ্টির হীম কোণা যেন তাকে নতুন এক ভালোলাগার সাথে পরিচিত করাচ্ছে। বৃষ্টিতে ভেজার মূর্হতে পিছন তাকাতে চমকায় আয়ন্তি! অহর্নিশ দাঁড়িয়ে। সেও খানিকটা ভিজে গিয়েছে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে আয়ন্তিকার দিকে। ঘোরলাগা, অদ্ভুত দৃষ্টি! অহর্নিশ দ্রুত পায়ে এগোয়। আয়ন্তির পাশে এসে দাঁড়িয়ে ফিচেল কন্ঠে বলে,
‘ বৃষ্টিতে ভেজার পর তোমায় কতোটা হ*ট লাগছে, ইউ নো জান?’
চলবে…