#হৃদ_মাঝারে_তুমি
#পর্ব_০৯+১০
#Written_by_Mehebin_Nira (ছদ্মনামী)
নিরা এক দৌড়ে বাসার ভেতরে ঢুকে পড়ে। পা জোড়া থামিয়ে হাঁপাতে থাকে সে। এখনো নিজের কান কেই বিশ্বাস করতে পারছে না যে, আসলে সে কি শুনলো? ভাবতে ও পারে নি আদ্রাজ তাকে সরি বলবে! যেই মানুষ টি কে সে ফিলিংসলেস রোবট বলে মনে করতো সে কিনা আজ সরি বললো? ও মাই গড এটা কিভাবে সম্ভব! উত্তেজনার চোটে নিরা আর সেখানে দাঁড়িয়ে আদ্রাজের পরে বলা কথা গুলো শুনার সাহস টা পায় নি। চোখ বন্ধ করে ভৌঁ দৌড়ে সোজা এখানে চলে এসেছে। আদ্রাজের বলা এক সরি তে নিরার জমানো সব রাগ অভিমান বাতাসের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেলো! যদিও সে জানে একটা গ্লাস কে ভেঙ্গে দিয়ে সরি বললে সেই গ্লাসের ভাঙ্গা টুকরো গুলো জুড়ে দিয়ে আর একটা সম্পূর্ণ গ্লাস তৈরি করা সম্ভব নয়। ঠিক তেমনি আদ্রাজের বলা রাগের মুহুর্তে কথা গুলোর জন্য সরি যথেষ্ট নয়! কিন্তু তবুও কেন যেনো নিরা মন থেকে তার ও জমানো কথার দ্বারা পাওয়া কষ্ট গুলো ভুলে যেতে বাধ্য হলো! তার মনে হলো যেই মানুষ টি ফিল করতে জানতো না তার মুখ থেকে আসা এই প্রথম শুনা সরি টা তে আসলে সে ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য! আর নিরা জানে আদ্রাজ সরি টা নিজস্ব অনুশোচনা থেকেই বলেছে! নিরা ঘরের ভেতর ঢুকে যাওয়ার আগে কোনো এক অচিন টানে পেছনে ফিরে তাকায়! এই পিছুটান কেন সে জানে না! আদ্রাজের দিকে তাকিয়ে দেখলো মানুষ টা এখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ির সামনে হরেক রকম লাইটের আলোয় তাকে চমৎকার দেখাচ্ছে! নিরা মুচকি হেসে ঘরের ভেতরে পা রাখে!
___________________
রাতুল আশা কে কোলে করে নিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে খালি রুম খুঁজতে থাকে। রুমের দরজা গুলো বন্ধ অবস্থায়। তবে কয়েক টা খোলা বুঝা যাচ্ছে। রাতুলের দুই হাত ই আটক তাই সে দরজা খুলতে পারছে না।
‘আশা দরজা টা খোল তো!’
‘না না রুমের ভেতর নিশ্চয়ই লোকজন থাকবে। আর তারা আমাকে এভাবে দেখলে সর্বনাশ!’
‘চুপ আমি বলছি তো কোনো সমস্যা নেই!’
‘আছে সমস্যা!’
‘তুমি জাস্ট হাত দিয়ে একটা ধাক্কা দাও আর কিছু করতে হবে না তোমাকে! এন্ড আই এম সিউর সবাই ঘুমে কাতর সো কেউ তোমাকে দেখার প্রশ্নই আসে না!’
‘আচ্ছা ঠিক আছে ওয়েট!’
আশা নিজের ওড়না টা টানাটানি শুরু করে।
‘আরে আরে ওড়না নিয়ে পড়লে কেন তুমি?’
যতটা সম্ভব ওড়না টা দিয়ে নিজের মুখ টা ঢেকে দরজা টা খুললো আশা। এক রুমে লোকজন ভরপুর এটায় সম্ভব না। আর একজন কেও রাখার জায়গা নেই। কয়েক টা রুম দেখা শেষ। একটা রুমের দরজা ঢেলে ধরে আশা। এই শেষ ভরসা! দরজা খুলতেই রাতুল দেখলো একজন মহিলা জাগ্রত এখনো! ভদ্রমহিলা ও রাতুল কে লক্ষ্য করেন! তার কোলে একটা মেয়ে দেখে উনার চোখ চড়ক গাছে। তিনি বললেন,
‘এ কি? তোমার কোলে যে আছে ও কি বাচ্চা?’
‘জ্বি আন্টি বড় বাচ্চা!’ [মুচকি হেসে]
‘ও আচ্ছা! তা মুখ ঢাকা কেন?’
‘বড় বাচ্চা টা আসলে ঘুমিয়ে আছে! আর আপনি তো জানেন ঘুমিয়ে থাকলে মানুষ কে কতো সুন্দর লাগে! তাই কারো নজর যাতে না লাগে তাই বড় বাচ্চা টা নিজের মুখ ঢেকেই সবসময় ঘুমায়!’
‘অহ! এই কথা প্রথম শুনলাম!’
‘জ্বি আন্টি এখন! একটু এই ঘুমন্ত বড় বাচ্চা টাকে রাখার জায়গা কোথায় পাওয়া যাবে বলতে পারেন?’
‘পাশের রুম টায় দেখতে পারো! আমি দেখেছিলাম এখানে কেউ নেই! মানে প্রিয়ার রুম বলে কাউকে ঢুকতে দেয় নি! তোমাদের ও না দিতে পারে!’
‘ওহ ওকে থ্যাঙ্কস আন্টি!’
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হেসে বের হয় রাতুল। চট করে আশা নিজের ওড়না মুখের উপর থেকে সরিয়ে বলল,
‘এই আপনি একটু আগে কি বললেন?'[রেগে]
‘আমি আবার কি বললাম?’
‘আমি বড় বাচ্চা?’
‘কই কে বললো?’
‘নিজেই একটু আগে বলে এখন বলছেন কে বললো হ্যাঁ?’
‘আমি? কখন?’
‘একটু আগে ঐ মহিলা কে বললেন আমি ঘুমন্ত! এটাও একটা মিথ্যা! আর আমাকে বড় বাচ্চা বলে এখন আবার তা অস্বীকার করছেন এটাও একটা মিথ্যা!’
রাতুল ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলল,
‘কখনো কখনো মিথ্যা বলে ভালো কিছু পাওয়া গেলে মন্দ হয় না! বাট প্রমিজ আর মিথ্যা বলবো না! হ্যাপি?’
‘হুহ!’
রাতুল প্রিয়ার রুম টায় এসে দেখলো রুম টা একেবারে ফাঁকা। তার মানে ভদ্রমহিলা সত্যি কথাই বলেছে! রাতুল রুমে ঢুকে থেমে গিয়ে বলল,
‘কি হলো নামো! আরে নামছো না কেন? আরো কি চড়তে ইচ্ছে করছে আমার কোলে হু?'[ভ্রুঁ কুঁচকে]
‘আমি নামতে পারলে কি আপনার কোলে উঠতাম?’
‘উঠতে না?’
‘জীবনেও না। আর তাছাড়া নিজেই তো একটু আগে ভাষণ ছেড়েছিলেন যে, আমাকে কোলে নিজ ইচ্ছায় নিয়েছেন তো নিজ ইচ্ছায় ই নামাবেন! তো তাল বেতাল হয়ে গেছে কি করে?’
‘উপপ্স সরি! মনে হয় বলেছিলাম কথাটা!’
রাতুল ঠায় দাঁড়িয়ে আশার কান্ড দেখছে। রাগলে যা লাগে না পুরাই অস্থির! আশা বাচ্চাদের মতো নাচানাচি শুরু করে দেখে রাতুল হাসতে হাসতে বলল,
‘ওকে ওয়েট নামিয়ে দিচ্ছি! হালকার মধ্যে গর্জিয়াস করে ডান্স শুরু করে দেওয়ার কি আছে এখানে?’
রাতুলের দিকে নাক মুখ খিচে ক্রুদ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো আশা। রাতুল তাকে আলতো করে নিজের কোল থেকে নামিয়ে দেয়। অপরজন ও ক্লান্ত হয়ে তার ই পাশে বসে পড়ে। রাতুল ও তার পাশে বসছে দেখে আশা সরে বসতে নিলেই কোমড়ে ব্যথা অনুভব করে। রাতুল তা দেখে বলল,
‘পারবে না দেখছো তাও কেন তা করতে গেলে? আমি বসাতে সমস্যা হচ্ছে তোমার?’
‘না না! আসলে…
আশা এবার বালিশ টেনে নিয়ে আসতে গিয়েও বাধ্য হয়ে শুয়ে পড়ে।পারছে না সে নালিশ টা আনতে। কোমড়ে ব্যথা টা ভালোই লেগেছে। রাতুল কে কিছু বলতেও পারছে না। যত যাই হোক ও একটা ছেলে মানুষ। ব্যথার জন্য নরমাল ভাবে বসাও সম্ভব হচ্ছে না। রাতুল সেটা দেখে নিজে উঠে একটা বালিশ টেনে নিয়ে এসে আশার মাথার নিচে দিয়ে তাকে শুইয়ে দেয়। আশার মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে আশার মনে কি চলছে! হয়তো পৃথীবির সব ভালোবাসার মানুষ গুলোই চোখের দিকে তাকিয়ে মনের অবস্থা বুঝে যেতে পারে! চোখ তো মনের কথা বলে! সেই চোখে নিজের ব্যথা কাতরতা ফুটে উঠে যা মানুষ প্রকাশ করতে সক্ষম হয় না!
‘আমি এখন ঘুমাবো আপনি দরজা টা বন্ধ করে দিয়ে চলে যান।’
রাতুল চলে যেতে নেয়। আশা তাকে ডাক দেয়।
‘আর হ্যাঁ আপনাকে ধন্যবাদ।’
রাতুল মুচকি হেসে পুনরায় আশার মাথার পাশে বসে। আচমকাই তার কি হলো হুট করে আশার কপালে কিস করে বসে সে! এটাকে ঠিক কিস বলা চলে না। রাতুল আলতো করে তার নিজের মনে হওয়া মানুষ টার কপালে এক টুকরো ভালোবাসা এঁকে দিয়ে বলল,
‘সব ঠিক হয়ে যাবে!’
আশা থ বনে যায়। এটা কি ছিলো?
ওদের দুজনের মাঝখানে কোত্থেকে নিরা এসে তড়িঘড়ি করে রুমে ঢুকে। রাতুল আর আশা কে দেখে সে হতভম্ব।
‘আ-মি কি ভুল টাইমে এসে পড়ছি?’
রাতুল হেসে দিয়ে নিরার কনফিউশন দূর করার জন্য বলল,
‘ভুল না ঠিক টাইমে এসেছেন আপনি মিস নিরা! ওরফে আদ্রাজে…
‘কিইই?’
‘না কিছু না। শুনো তোমার সাথে একটা কথা আছে!’
‘হুম ভাইয়া বলেন কি কথা?’
‘এই নিরা তুই একদম যাবি না!'(আশা রেগে)
‘আসো বলছি!’
আশা যেতে না করছে রাতুল যাওয়ার জন্য বলছে নিরা বিপাকে পড়ে যায় কার কথা শুনবে। রাতুল জোড় দিয়ে বলল,
‘আরে আসো না। খুব ইমফর্টেন্ট কথা!’
নিরা অসহায় ভঙ্গিতে বলল,
‘দোস্ত ইমফর্টেন্ট কথা! একটু শুনে আসবো বেশি না!’
আশা রেগে দাঁত কটমট করছে।
রাতুল নিরার সঙ্গে বাহিরে এসে আশার কথা জানায়। ব্যথা সরানোর জন্য কিছু একটা যাতে নিরা করে তার ও একটা ইঙ্গিত দেয় রাতুল। এবং চলে যায়। নিরা সেই মুডে মুচকি হেসে বলল,
‘ডাল মে কুচ কালা হে! লেকিন হে কেয়া?’
আশা ব্যথা পেয়েছে শুনে খারাপ ও লাগলো। নিরা এসে দেখলো রাতুলের বলা কথা একদম ঠিক! ব্যথায় কাতর আশা! নিরা সব ভুলে আশার ব্যথা সারানোর জন্য প্রচেষ্টা চালায়। সকল কাল শেষে আশা একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে নিরার খুব ক্ষুধা পেয়েছে। যার জন্য এতো চেষ্টা করার পর ও ঘুম আসছে না! এপাশ ওপাশ করে শত চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে উঠে বসে নিরা! নাহ কিছু তো একটা করতে হবে!
____________________
আদ্রাজ গাড়ি পার্ক করে বাসায় ঢুকে। কোলাহল যুক্ত পরিবেশ টা এখন একেবারেই শান্ত! যার জন্য খুব ভালো লাগছে আদ্রাজের! তবে নিরার কথা ভাবতেই রাগ হচ্ছে! মেয়েটার সামনে আর কখনো পড়বে না বলে ঠিক করলো! চেষ্টা করবে তাকে ইগনোর করে চলার! কিন্তু আসলেই কি আদ্রাজ তা পারবে?
‘আদ্রাজ তুই এসেছিস বন্ধু!’
রাতুলের কথায় পেছন ফিরে আদ্রাজ।
‘হ্যাঁ রে আসলাম!’
‘তা বন্ধু আপনি কোথায় গিয়েছিলেন? তাও সেই মেয়ের সাথে যাকে আপনার দু চোখের বিষ বললে ভুল হয় না!’
রাতুলের কন্ঠে তুমুল মজার আভাস বুঝতে পারল আদ্রাজ। তার মানে এই রাতুল ও এই মুহূর্তে তাকে নিয়ে মজায় মত্ত থাকবে! সে কিছু না বুঝার ভান ধরে বলে,
‘মানে?’
‘নিরা আমার সাথেই আছে! আশা কে টেনশন করতে নিষেধ কর! আসছি আমরা! মেসেজ টা কে পাঠিয়েছিলো শুনি?’
আদ্রাজের মনে পড়ে যায়। মেসেজে সে নিরা লিখছিলো! এটা কি করে সম্ভব! ইশ রে গেলো সব!
‘হুম হুম কথা কি ফুটুস করে উবে গেলো বন্ধু?’
‘আরে কি সব বলছিস তুই রাতুল? দেখ ভাই আমি প্রচুর ক্লান্ত। ঘুমাতে হবে আমার!’
আদ্রাজ রাতুল কে ইগনোর করতে নিলে রাতুল বলে,
‘তুই তো নিরা কে হার হামেশাই নিরা বলে সম্বোধন করিস না তবে আজ কি হলো তোর? আর ইউ ওকে আদ্রাজ?’
আদ্রাজ একটা নিশ্বাস ফেলে সবকিছু বলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। সঙ্গে অকৃতজ্ঞের মতো নিরার চলে যাওয়ার নালিশ টা তো থাকছেই!
সব কিছু খুলে বলে আদ্রাজ। রাগ ক্ষোভ নিয়ে নিরার চলে যাওয়াটা ও গড়গড় করে বলে দেয়। আর রেগে সেই স্থান ত্যাগ করে ঘরের ভেতরে নিজেদের জন্য নির্ধারিত রুম টায় চলে যায়। রাতুল মাথা নাড়িয়ে মুচকি হেসে বলে,
‘বাহ আদ্রাজ তো পাক্কা প্রেমিক পুরুষ হয়ে যাচ্ছে! ক্যারি অন দোস্ত ক্যারি অন! তোদের এই রাগ ই ভালোবাসা প্রকাশ করে দেয়।’
রাতুল পেছন পেছন যায়। আদ্রাজ সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। একটু আগে টাইম দেখেছে ঘড়ির কাঁটায় রাত ২ টা বেজে ৫০ মিনিট। ক্লান্ত শরীর+রাগ দূর করার জন্য এই অসময়ে শাওয়ার নিয়ে নিলেই বেটার মনে হলো আদ্রাজের কাছে! শার্ট খুলতে গিয়ে বুকের কাছে বোতামে কিছু একটা অনুভব করে সে! আরে এটা কি? মেয়েদের কানের ঝুমকা? ব্ল্যাক শার্ট টার সাথে সেই ঝুমকা কানের দুল টা লেপ্টে আছে বোতামের কোণায়! এমন ভাবে আটকে গেছে যে তা সহজে পড়ার কথা নয়! জোড় পূর্বক তাকে টেনে নিলে তবে সে ছুটে আসতে বাধ্য! আদ্রাজ সেটি হাতে নিয়ে দেখে শক্ড! মেয়েদের জিনিস তার শার্টে আসলো কিভাবে? আদ্রাজ ভাবতে থাকে কিন্তু কোনো উত্তর পায় না! শেষমেশ উত্তর খুঁজতে ব্যর্থ হয়ে দুল টা একপাশে রেঝে নিজে শাওয়ার টা সেরে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে!
আদ্রাজ দুল টা হাতে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে রাতুল বেডে শুয়ে শুয়ে ফোনে কি যেনো করছে।
‘রাতুল এটা দেখতো!’
‘কি?’
‘এই দুল টা আমার শার্টের বোতামে কিভাবে আসলো বলতে পারিস?’
দুলেরর কথা শুনতেই লাফিয়ে উঠে রাতুল। গভীর ভাবে চিন্তা করে বাঁকা হেসে বলল,
‘দোস্ত তুই নিরা কে জড়িয়ে ও ধরেছিলি? সিরিয়াসলি? ওমাগো আমি ভাবতে পারছি না আর কিছু!’
‘শাট আপ রাতুল! আমি কোনো মজা করছি না!’
‘আমি ও না!’
‘মানে?’
‘তুই তো এতোক্ষণ নিরার সাথেই ছিলো তাই না? তাহলে এই দুল টা তো নিরার ই হবে এম আই রাইট অর এম আই রাইট?’
আদ্রাজের ও এবার মাথায় এসে যায় উত্তর টা। ইশ এই সামান্য কথা টাও তার মাথায় আসে নি কেন? রাতুল তো এখন তার থেকে আরো ভালো করে মজা নিতে পারবে! যার চান্স সে নিজেই নিজের বোকামির জন্য দিয়ে দিয়েছে! আজ তার সাথে কি যে হচ্ছে এসব! আদ্রাজ মানে মানে কেটে পড়তে নিলে রাতুল খপ করে ধরে ফেলার মতো করে বলল,
‘বললি না ভাই নিরার জিনিস তোর কাছে এলো কি করে?’
‘তোকে বলেছিলাম না নিরা সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলো? তখন তো কোনো উপায় না দেখে ওকে আমার কোলে নিতে হয়েছে! হয়তো…
‘হয়তো তখন এই দুল টা তোর শার্টের বোতামে এসে বেঁধেছে! কেয়া পেয়ার কা খেল ভাই?’
‘তোর মাথা আর মুন্ডু! এইসব পেয়ার টেয়ারে আমি নাই! আর ঐ স্টুপিড গার্লের জন্য হলে তো ভুলেও নাই! ঘুমা তুই!’
‘তুই কোথায় যাচ্ছিস? আহা ভাই আমি তো মজা করলাম!’
‘তোর প্যান প্যান শুনে মাথা খারাপ করার ইচ্ছা নাই। আমি বাহিরে থেকে আসছি!’
‘বি কেয়ারফুল ভাই!’
‘কি বললি?’
‘বলছি দুল টা নিয়ে যা। আসার সময় মালিক কে পেলে ফেরত দিয়ে দিস!’
‘জনদরদি তো তুই। সো তুই না হয় আমার হয়ে দিয়ে দিলি!’
‘এতো করে যখন বলছিস তো দিয়ে দিবো নাহয়! সঙ্গে এও বলবো তুই তাকে এক বুক ভালোবাসা ও ফ্রি তে দিচ্ছিস!’
রাতুলের কথা শুনে আদ্রাজ রেগে রাতুলের হাত থেকে কানের দুল টা ঝট করে এক প্রকার ছিনিয়ে নিয়ে নেয়। রাতুল হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আদ্রাজ হনহনিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়!
এদিকে নিরা পা টিপে টিপে ডাইনিং টেবিলের সামনে আসে। সব লাইট অফ। অন্য এক রুম থেকে আসা হালকা আলোয় ডাইনিং টেবিল টা দেখা যাচ্ছে। তার সঙ্গে আবছা আলোয় ফ্রিজ টা ও কিছুটা দেখা যাচ্ছে। পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে দেখে নিরা উঠে আসতে বাধ্য হয়। নিচে এসে ফ্রিজ খুলে দেখে আপেল কমলা আর আঙ্গুর রাখা আছে। এতেই আপাতত কাজ হয়ে যাবে! নিরা যেই না আপেল নেওয়ার জন্য হাত বাড়ায় ওমনি কেউ তার হাত পেছন থেকে খপ করে ধরে নেয়। আর ‘চোর চোর!’ বলে হালকা চিৎকার দেয়..!
চলবে———————
বলেন তো দেখি নিরা কে যে ধরলো সে কে হতে পারে?