#তুমি_হলেই_চলবে
#part_4…
writer : #Mahira_Megha
মুনিয়াঃ হাই
আরিয়ান ওদের দিকে তাকিয়ে আবার কথা বলতে শুরু করলো। অফিসের কাজে এসেছে রেস্টুরেন্টে। সামনে বসে থাকা ভদ্র লোকটি আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো ” মিঃ আরিয়ান মেয়েটি মেবি আপনাকে কিছু বলতে চাইছে। ”
তানিয়াঃ হ্যাঁ ওনার সাথেই কথা বলতে চায় আমরা।
আরিয়ান ওঠে দাড়িয়ে মুখ শক্ত করে বললো ” আমি কি আপনাদের চিনি?”
-না। তাতে কি হয়েছে এখন তো পরিচিত হতেই পারি।
-আপনাদের সাথে পরিচিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করছি না।
-শুনুন,,,,পুরো কথা শেষ করতে না দিয়ে চেচিয়ে বলে উঠলো আরিয়ান ” আপনারা যদি আর একটাও কথা বলেন তাহলে আমি আপনাদের অপমান করতে বাধ্য হবো। কি রকম মেয়ে আপনারা চেনা নেই জানা নেই একটা অচেনা ছেলের সাথে কথা বলতে চলে এলেন। ”
রেস্টুরেন্টের সবাই তানিয়া মুনিয়াকে করে দেখছে। আরিয়ান কথাটা এত জোড়ে বলেছে যে সবাই শুনতে পেরেছে।
তানিয়া মুনিয়া আরিয়ানে মুখ দেখে একটা শুকনো ঢোক গিললো।
মুনিয়া কোনো রকমে সরি বলে চলে গেলো ওর টেবিলে।
আরিয়ান কোনো দিকে না তাকিয়ে নিজের চেয়ারে বসে পরে।সামনে থাকা রহমানে দিকে তাকিয়ে,” শুরু করা যাক মিঃ রহমান।
-মেয়েটার সাথে এভাবে কথা না বললেও পারতে।
-আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাইছি না। কাজের কথায় আসি।
তানিয়া মুনিয়াকে দেখে পেট চেপে হেসে যাচ্ছে আরুহী।
ওর তালে তাল মিলিয়ে হাসছে আর্শ।
মুনিয়া আরুহীর সামনে দাড়িয়ে “এতো যে হাসছিস, নিজে যা না। আমাদের সাথে তো শুধু রুডলি বিহেভ করেছে। তোর ওপর হাত না তুলে দেই হাহাহা।”
-আমাকে ওর গাড়িতে করে বাড়ি পৌছে দিবে।
-মুখে বড় বড় কথা না বলে কাজে করে দেখা।
আরুহীঃ চল আর্শ।
-আর্শ কেনো যাবে তুই একা যাবি।
-আমি একা যায় আর তোরা আর্শের ঘাড়ে চেপে বসবি তাইনা।
মুনিয়াঃ আমরা আমাদের টেবিলে বসছি আর্শ ওর টেবিলে বসবে। আর তুই ওখানে যাবি।
আরুহী আর কথা না বাড়িয়ে আরিয়ানের সামনে যায়।
নিজের ভয়টা মনের মাঝে চাপিয়ে রেখে বলে ওঠে” আরিয়ান ভাইয়া। ”
ডাকটা কানে আসতেই আরিয়ানের মুখে একরাশ বিরক্ত নেমে আসে।
রহমানঃ আমি তাহলে আসি মিঃ আরিয়ান।
-ইয়া সিওর।
আরুহী আরিয়ানের দিকে উত্তরের আশায় তাকিয়ে আছে।
আরিয়ানঃ কি চায় এখানে। বিরক্ত করার ও একটা লিমিট আছে। তোমায় আমি কতবার বলেছি আমার সামনে আসবে না।
আরুহী আরিয়ানের সামনের চেয়ারে বসে পরে তারপর বলতে শুরু করে ” আমি এখানে আর্শের সাথে খেতে এসেছিলাম। আর্শের বাইক নষ্ট হয়ে গেছে তাই তোমার সাথে বাড়ি যাবো ভাবছি।”
-আমি বলেছি ভাবতে? বলিনি তো তাহলে আমায় কেনো বলছো। আমি যদি এখানে না থাকতাম তাহলে যেতে না বাড়ি? তখন যেভাবে যেতে এখনো সে ভাবে যাবে। আমি সাথে নিতে পারবো না।
তানিয়াঃ এই মুনিয়া ছেলেটা কি এত কথা বলছে বলতো। আরুহী ও তো কথা বলেই যাচ্ছে। ধুর আমরা তো কিছু শুনতেই পাচ্ছি না।
আরুহী মুখে একটা দুষ্টু হাসি এনে ” বড় আব্বু ফোন করেছিলো তোমার সাথে যেতে বললো তাই বললাম। ওকে আমি বড়আব্বু কে বলে দিচ্ছি তুমি আমাদের সাথে নিবে না।”
বলেই ওঠে চলে আসতে নিলো আরুহী।
পেছন থেকে আরিয়ান ডাক দিলো ” আরুহী “।
এই প্রথম আরিয়ান ওকে নিজের ইচ্ছায় ডাক দিলো। আরুহীর যেনো কেমন কেমন ফিল হচ্ছে। মাতাল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে ওর শরীর দিয়ে। এতখন ভয়ের কারনে অনুভূতি শক্তি কাজ করছিলো না । বাট এখন সব ভয় কেটে গেছে ওর। তানিয়া মুনিয়ার সামনে ওর নাক কাটা যায় নি। ”
পেছন ফিরে তাকায় আরুহী চোখের চাওনি নিমিষেই বদলে গেছে ওর। আবার সেই একই দৃষ্টি যা আরিয়ানের একদম অপছন্দ।
আরিয়ানঃ চলো আমার সাথে নিয়ে যাবো আমি তোমাদের।
তানিয়া মুনিয়া হা করে তাকিয়ে আছে।
আরুহীঃ কিরে বলেছিলাম না। দেখ নিজে আমাদের ডাকছে। চল আর্শ। এই সব ফালতু মেয়েদের সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করবো না।
আর্শ আরুহীর কাছে এসে” কি এমন বললি রে ভাইয়া রাজি হয়ে গেলো?
আরুহী কিছু না বলে তারাতারি এসে গাড়ির সামনে আরিয়ানের কাছে বসে পরে।
আরিয়ান চেয়েও কিছু বললো না। গাড়ি চালাচ্ছে মুখটা গম্ভীর।
আরুহী কোনো কথা না বলে আরিয়ানকে দেখছে। আরিয়ানকে নিয়ে মনে মনে লিখছে হাজারো নাম না জানা কবিতা।
আর্শ বাহিরে চেয়ে আরুহীকে নিয়ে ভাবছে।
বাড়ির সামনে থেমে যায় গাড়ি আরুহী নিজের রুমে এসে শুয়ে পড়ে।
রাতে খাবে না বলে দিয়েছে। কেউ যেনো ওকে ডিস্টার্ব না করে বলে দরজা বন্ধ করে শুয়ে আছে।
“আরিয়ানকে নিয়ে ভাবছে। ছেলেটা কেমন জানি। মেয়েদের ওপর কিসের এত রাগ ওর। আমার চোখের ভাষা কি ও বোঝে না। নাকি আমাকে ও সহ্য করতে পারে না। বাট আমি কি করবো আমার মন জুড়ে যে শুধুই আরিয়ান। ভালোবাসি আমি ওকে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আরিয়ানের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে আরুহী। বিরবির করে নিজের মনেই বলছে, ” কখন যে বের হবে আরিয়ান ভাইয়া। কাল আমাকে ওর গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে এসেছে। কতখন কাছাকাছি ছিলাম আমরা। উফফ এত ভালো লাগে কেনো তোমাকে। কি আছে তোমার ওই মুখে যা আর কারো মাঝে নেই। ”
আরিয়ানে দরজা খোলার শব্দ পেয়ে তারাতারি করে সামনের দিকে হাটা শুরু করে আরুহী। বাট তাল সামলাতে না পেয়ে ধোপাস করে পড়ে যায়।
আরিয়ান ওকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যায়। আরুহী অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আরিয়ানের দিকে।
আর্শ আরুহীকে এভাবে দেখে এক ছুটে ওর কাছে আসে। তারপর ওকে বকতে শুরু করে, “রুহি তুই কি কোনো দিন ও পালটাবি না? এত তারা কিসের তোর। একটু দেখে চলতে পারিস না। ডাফার একটা। ব্যাথা পেলি তো। কোথায় লেগেছে দেখি। ”
বাট আরুহীর কানে কোনো কথায় পৌঁছায়নি আরুহী তো আপন মনেই হারিয়ে আছে,” কিসের এত রাগ ভাইয়ার। আমাকে কেনো বারবার ইগনোর করে। আমি তো শুধু ভাইয়ার ওই মায়া ভরা মুখটায় দেখতে চায় আর তো কিছু আমি চায়নি।”
-ওই রুহি কই হারালি। খুব ব্যাথা করছে তাই না?
-না তেমন কিছু হয়নি।
আর্শ আরুহীকে হাত ধরে টেনে তোলে। যত্ন সহকারে দাড় করিয়ে ” হাটতে পারবি তো রুহি। ”
আরুহী মুখে হাসি এনে ” আরে পারবো না মানে! দেখবি মাঠে কেমন চার ছয় মারি। এত ভাবিস কেনো আমাকে নিয়ে। এই আরুহী এত সহজে হেরে যাবে না। প্রিয় জিনিসটা নিজের করেই নেমে। যতটা বেহায়া পনা করতে হয় করবে। আরো নির্লজ্জ হতে হলে তাই হবে।
প্রয়োজন হলে আরো পাগলামি করবে।”
-নির্লজ্জ,বেহায়া,পাগলামি,এত সহজে হেরে যাবি না। কি আবল তাবল বলছিস রুহি। কনফিউজ হয়ে কথাটা বললো।
-আরে কিছু না খেতে চল তো।
-চল।
-তুই যা আমি এক মিনিটে আসছি। বলেই নিজের রুমের দিকে ছুটলো।
আর্শঃ কি হয়েছে তোর রুহি। ঠিক আছিস তো তুই?চিন্তিত কন্ঠে বললো।
আরুহী আয়নার সামনে দাড়িয়ে কোমরে হাত গুজে বলছে ” এই আরুহী এত সহজে হার মানবে না। আমি পালটাবো না। হ্যাঁ তোমার ওই মুখ দেখে আমি সব ভুলে যায়। বাট তাতে কি হয়েছে কষ্ট পাওয়ার মেয়ে আরুহী না। তোমায় আরো বেশি করে দেখবো। আরো বেশি পাগলামি করবো। তুমি রাগ করলে করো আমার তাতে কি। ” বলেই জোরে হেসে উঠলো। ভাইয়া বেহায়াপনা এখনো অনেক বাকি আছে। জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
চলবে……..
(নায়ক নিয়ে সবাই কনফিউজ। বাট আমি তো এখন বলবো না নায়ক কে? নায়ক কে সেইটা জানার জন্য ওয়েট করতে হবে।)