“গোপন প্রেমের মাঝে এক ধরনের উদারতা আছে। সেখানে কোন কার্পণ্য থাকে না। নিজের সবটুকু দিয়ে ভালবাসা যায়। কিন্তু বিনিময়ে কোন প্রত্যশা থাকে না।“
#ভালোবাসি_বলেই_তোমাকে_প্রয়োজন
ছোট্ট হলদে চিরকুট টা পুনরায় একটা ভাঁজ করে ফুস করে শ্বাস ছাড়ল সারিয়া। ক্লান্ত চোখে শারমিনের হাতের দিকে তাকাল। তার হাতে আরও একটা সাদা কাগজ ভাঁজ করা। লম্বা চওড়া একখানা চিঠি। এসব দেখে সে মোটেও অবাক হল না। কারন ভালো করেই জানে কোথা থেকে এসেছে এটা। কয়েকদিন পর পর সারিয়ার নামে এমন চিঠি আসে। সাদা কাগজে একটা বড় চিঠি লেখা থাকে আর তার সাথে রঙ্গিন ছোট্ট একটা কাগজে সারিয়ার প্রকাশিত উপন্যাসের কিছু উক্তি।
দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো সারিয়া। চোখে মুখে বিরক্তি তার। শারমিন হাত বাড়িয়ে দিলো সারিয়ার দিকে। সে চোখ তুলে তার মুখের দিকে তাকাল। সদ্য বৃষ্টি ছেড়ে গেলে প্রকৃতি যেমন চকচক করে উঠে তেমন শারমিনের চেহারা চকচক করছে। তার ঠোঁটের প্রশস্ত হাসি বলে দিচ্ছে সে এই মুহূর্তে খুব খুশী। কারণটা এই চিঠি। কিন্তু সারিয়ার মাথায় এটাই আসেনা যে তার নামে চিঠি আসলেই শারমিনের চেহারা এমন খুশী হয়ে যায় কেন। অনেক ভেবেও কারন খুজে পায় না সে। সারিয়া ব্যাগটা টেবিলে রাখল। বিছানার উপরে বসে হাতের কালো ফিতার চিকন ঘড়িটা খুলতে খুলতে বলল
–বুঝিনা। প্রতিবার যখন চিঠি আসে তখন তুমি এতো খুশী হও কেন বলতো?
শারমিন হাস্যজ্জল চেহারা নিয়ে সামনের চেয়ারটা টেনে বসে পড়ল। বেশ উতফুল্য কণ্ঠে বলল
–খুশী হব না? সুদুর ভার্জিনিয়া থেকে আসে এই চিঠি। তোর কোন এক পাঠক তোকে এই চিঠি পাঠায়।
সারিয়া মৃদু হাসে। বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে বলে
–আমার এমন অনেক পাঠক আছে আপু। যারা আমাকে অনেক ভালবাসে। অনেকেই আমাকে বিশেষ কিছু জিনিস গিফট করে। তার সাথে এরকম ছোট ছোট চিরকুট লিখে। কি আবেগ মাখানো সেসব কথা। এটা খুব স্বাভাবিক।
শারমিনের চেহারা থমথমে হয়ে যায়। সকল পাঠকের সাথে এই পাঠককে মিলিয়ে ফেলার ব্যপারটা তার একদম পছন্দ হল না। তার ধারনা সুদুর ভার্জিনিয়া থেকে কিছুদিন পর পর এমন আবেগ মাখানো চিঠি পাঠানো খুব সহজ কথা না। মাঝে মাঝে সারিয়ার অনেক পছন্দের গিফট থাকে। আর এই চিঠির ভাষা গুলো কেমন অদ্ভুত। সহজেই মন ছুয়ে যায়। সেসব কে উপেক্ষা করে বাকি সকল পাঠকের সাথে মিলিয়ে ফেলে সারিয়া ভারী অন্যায় করে ফেললো। গম্ভীর কণ্ঠে বলল
–তুই কি চিঠি গুলো পড়েছিস? সত্যি করে বলত?
সারিয়া চোখ বন্ধ করলো। ক্লান্তিতে চোখ ভীষণ জালা করছে। মুখে হাত রেখে হাই তুলে বলল
–পুরোটা কখনো পড়া হয়নি।
শারমিন হাতের চিঠির ভাঁজ খুলে ফেললো। অন্যকারো চিঠি পড়াটা ভারী অন্যায়। অন্য সময় হলে হয়তো শারমিনের মাঝে অপরাধবধ কাজ করত। কিন্তু এখন তেমন কিছুই হচ্ছে না। এখন মনে হচ্ছে এই চিঠিটার আবেগ মিশ্রিত শব্দগুচ্ছ সারিয়ার সামনে ঠিকঠাক উপস্থাপন করতে না পারলেই অপরাধবধ টা বেড়ে যাবে। সারিয়ার কাছ থেকে চিঠি পড়ার অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করলো না। কারন সে জানে এখন পড়তে চাইলেই সে বলবে, ‘আমি এখন ভীষণ টায়ার্ড আপু। অন্য কোন সময় পড়?’
তাই গলা পরিস্কার করে নিয়ে শুরু করলো পড়তে।
রিয়াপাখি
আমি জানি তুমি এই চিঠি গুলো কখনই পড় না। এতে আমার কোন আফসোস নেই। কারন না পড়লেও আমার এই চিঠি গুলো তোমার মনের কোথাও দাগ কেটে বসেছে। তাই তো খুব জত্ন করে রেখে দাও। এটাও জানি কোন একদিন ঠিক পড়বে তুমি। আর সেদিন ঠিক আমার মতই না দেখেই আমার প্রেমে পড়ে যাবে। সেদিনের অপেক্ষায় বসে আছি আমি। জানো তো মানুষের চেহারা দেখে প্রেমে পড়লে সেই অনুভুতি চেহারার সাথে পরিবর্তন হয়ে যায়। কিন্তু ব্যক্তিত্তের প্রেমে পড়লে সেটা আজীবন দাগ কেটে যায়। কিন্তু আমি যে তোমার অনুভুতির প্রেমে পড়ে গেছি। অদ্ভুত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছ তোমার অনুভূতি। জানো আমি বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসি। জীবনে কত যে বই পড়েছি তার কোন হিসেব নেই। কিন্তু একদিন পরিচিত একজনের কাছে থেকে জানতে পারি তোমার কথা। নতুন লেখিকা হিসেবে সদ্য পা রেখেছ সাহিত্য জগতে। আর আমি তখন পুরাতন সাহিত্য সমালোচক। প্রতিটা বই পড়ে ফেসবুকের এক নামকরা সাহিত্য সমালচনা গ্রুপে সেসব নিয়ে সমালচনা করেছি। কিন্তু বিশ্বাস করবে কিনা জানি না। তোমার বই পড়ে সমালচনা করার মতো কোন শব্দ আমার মস্তিস্কে আসেনি। বরং তৈরি হয়েছে এক অজানা অনুভূতি। প্রতিটা শব্দগুচ্ছ চমৎকার আবেগ দিয়ে লেখা। নিজের সবটুকু অনুভূতি উপস্থাপন করেছ নিজের উপন্যাসে। নিজেকে নায়িকার চরিত্রে বসিয়েছ। আমি চোখ বন্ধ করলে অনুভব করতে পারি তোমাকে। সব থেকে আশ্চর্যের কথা কি জানো? তোমার গল্পের নায়কের চরিত্র টা যেন আমাকে ভেবেই লেখা। আমার সাথে সবটুকু কেমন মিলে যায়। আমার ভাবনার সাথে তার ভাবনার এক অদ্ভুত মিল। এটাকে তুমি কোন কাকতালীয় ব্যাপার ভেবে বসলে ভুল করবে। কারন কাকতালীয় বিষয় গুলোতে অল্প কিছু বিষয় মিল থাকে। কিন্তু তোমার উপন্যাস যেন আমাকে নিয়েই লেখা। আমি জানি ঠিক আমার মতই তোমার কল্পনায় আমারি বিচরন। হয়তো তুমি এখন সেটা উপলব্ধি করতে পারছ না। কিন্তু সঠিক সময় আসবে যখন তুমি বুঝতে পারবে। আজ আর তোমাকে বিরক্ত করবো না। ভালো থেকো রিয়া পাখি আর নিজের খেয়াল রাখবে কিন্তু। তোমার কিছু হলে আমি খুব কষ্ট পাব। আর তুমি নিশ্চয় আমাকে কষ্ট দিতে চাইবে না। ভালোবাসি পাখি।
ইতি
তোমার অনুভুতির খুব কাছের কেউ
পড়া শেষ করে শারমিন মুগ্ধ দৃষ্টি সারিয়ার দিকে ফেরাতেই থমকে গেলো। সারিয়া উঠে বসেছে। অদ্ভুত দৃষ্টিতে তার হাতের চিঠির দিকে তাকিয়ে আছে। শারমিন কপালে ভাঁজ ফেলে বুঝতে চেষ্টা করছে সারিয়ার মনে কি চলছে। কোন বাক্য উচ্চারন করার আগেই সারিয়া হাত থেকে চিঠিটা নিয়ে নিলো। অস্থির ভাব তার চেহারায়। পুনরায় চোখ বুলিয়ে নিলো সেটাতে খুব সূক্ষ্ম ভাবে। আগে কখনো সে পুরো চিঠি পড়েনি। সেটা ইচ্ছাকৃতই হোক বা সময়ের অভাবেই হোক। কিন্তু সত্যি সত্যি কোন এক অজানা কারনে সমস্ত চিঠি গোপন ভাবে লুকিয়ে রেখেছে। প্রথমের কয়েকটা লাইন তাকে ঘাবড়ে দিতে যথেষ্ট। চিঠি দাতার নাম তো দুরের কথা ঠিকানাটাও ঠিক ভাবে জানে না সে। শুধু জানে ভার্জিনিয়া থেকে তার জন্য কেউ চিঠি পাঠায়। কখনো মাসে দুইটা আবার কোন মাসে তিনটাও আসে। কিন্তু এই মানুষটা তার সম্পর্কে এতো কিছু জানল কিভাবে? একটা উপন্যাস পড়ে লেখিকা সম্পর্কে আন্দাজ করে ফেলা খুব সহজ কোন কথা নয়।
–তুই চিঠি গুলো লুকিয়ে রাখিস?
সারিয়া হকচকিয়ে গেলো। শারমিনের চোখে মুখে বিস্ময়। চিঠিটা পড়ার সময় তার মাথায় প্রথম এটাই এসেছিল যে এই প্রশ্ন শারমিন তাকে করবেই। সেটার উত্তর খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রেখেছে। কণ্ঠে বিরক্তিভাব এনে বলল
–আমি সবার চিঠিই গুছিয়ে রাখি। এটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়।
শারমিন আবারো কঠিন দৃষ্টিতে তাকাল। সারিয়ার এই বিষয়টাই তার ভাল লাগছে না। সে কেন বারবার এই পাঠককে বাকি সবার সাথে মিলিয়ে ফেলছে। ঝাঝাল গলায় বলল
–ভালবাসার মানে বুঝিস তুই? বাকি পাঠকরা তোর লেখাকে ভালবাসে। আর এই মানুষটা তোর লেখা পড়ে তোকে ভালবাসে। কি অদ্ভুত ব্যাপার। ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। না দেখেই একটা মানুষকে ভালবাসার ব্যাপারটা কোনভাবেই মুড়ি মুড়কি হতে পারেনা।
–আপু। কিসব বলছ? এরকম কত চিঠি আমার কাছে আসে। আমি সব কিছুই পাঠকদের ভালবাসা ভেবে জমা করে রাখি। আর এটাও রেখে দেব ভেব না। কিন্তু তুমি যে গভির ভালবাসার কথা বলছ এটা সেরকম কিছু না। কাউকে না দেখে ভালবাসা অসম্ভব। এরকম ভালবাসা উপন্যাসেই হয় বাস্তবে হয় না। উপন্যাস পড়ে তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে আপু। তুমি বাস্তব জীবনকেও উপন্যাস হিসেবে ভেবে বসছ।
সারিয়ার কথা শুনে শারমিনের রাগটা ছাড়া দিয়ে উঠল। গম্ভীর গলায় বলল
–আমার মাথা ঠিক আছে। কিন্তু তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সারাদিন উপন্যাস লিখতে লিখতে বাস্তব জীবনকে ভুলে গিয়েছিস তুই। সব কিছুকে উপন্যাসের সাথে তুলনা করিস। কিন্তু আমি তোকে একটা কথা বলে রাখছি দেখিস কোন একদিন এই মানুষটা সামনে আসবে। আর তার ভালবাসার নিবেদন করবে তোর কাছে। তখন কি করবি নিজের উপন্যাসের নায়িকার মত তাকে গ্রহন করবি নাকি বাস্তবে এমন ভালবাসা অসম্ভব বলে ফিরিয়ে দিবি?
সারিয়া বিরক্ত হল। বিরক্তিকর শ্বাস ছেড়ে বলল
–উফ আপু। এসব চিঠি গিফট পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। আমার লেখা পড়েই আমাকে পাঠকরা ভালবাসে। যেদিন লেখা বন্ধ করে দেব সেদিন আর কেউ আমাকে মনে রাখবে না। আর তুমি কিভাবে এতো সিওর হচ্ছ যে এই চিঠি কোন ছেলে লিখেছে? মেয়েও তো লিখতে পারে। যেটা চোখে দেখা যায়না সেটা বিশ্বাস না করাই ভালো। অন্তত আমি এটা কোনভাবেই বিশ্বাস করি না।
শারমিন মানতে পারল না তার কথা। নিজের যুক্তি খণ্ডাতে প্রস্তুত হয়ে গেলো। বলল
–তুই চাইলেই সব খবর নিতে পারিস রিয়া। এক কাজ কর না তুই একটা চিঠি লিখে ফেল এই পাঠকের উদ্দেশ্যে পরিচয় জানতে চেয়ে। বল যে দেখা করতে চাস। তাহলেই তো বুঝতে পারবি ছেলে না…।
সারিয়া হাতের চিঠিটা টেবিলে ছুড়ে দিয়ে বলল
–তুমি কি আমাকে খেতে দেবে নাকি আমি এভাবেই আবার অফিসে চলে যাবো। আজ আমার প্রকাশনির ম্যানেজারের সাথে মিটিং আছে। নতুন একটা উপন্যাসের পটভূমি মাথায় এসেছে। সেটা নিয়েই স্যারের সাথে কথা বলব।
শারমিন কথা বাড়াল না। সে সারিয়ার উপরে প্রচণ্ড বিরক্ত হল। তাই আর কথা না বলেই চলে গেলো ঘর থেকে খাবার বাড়তে। সারিয়া চিঠিটা তুলে নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিলো। সেখানে চিঠির এক প্রকার স্তূপ হয়ে গেছে। সব গুলোতে আঙ্গুলের মাথা দিয়ে নেড়ে দিয়ে আবার বন্ধ করে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
———–
সারিয়ার কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। এসির মাঝে বসে থেকেও বারবার ঘামছে সে। বাইরে বেশ গরম। কিন্তু এই রুমে টেম্পারেচার অনেক কম। যার কারনে রুমটা বেশ ঠাণ্ডা। তবুও এভাবে গলা বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটা বেশ অসস্তিকর। কারো চোখে পড়লে বিষয়টা দৃষ্টিকটু হয়ে যাবে ভেবেই সামনে টিস্যু বক্স থেকে টিস্যু নিয়ে ভালো করে ঘাম মুছে ফেললো। হাত উঁচিয়ে ঘড়িতে সময় দেখে নিলো। আধা ঘণ্টার মতো হয়েছে সে এখানে বসে আছে। ম্যানেজারের কোন খবর নেই। তার এখন খুব অপমানবোধ হচ্ছে। সম সাময়িক লেখিকাদের মধ্যে একজন সারিয়া। একটা উপন্যাস বই আকারে প্রকাশিত হতেই বেশ সাড়া পেয়েছে। হিসেব অনুযায়ী তার জন্য প্রকাশনীর লোকদের অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এখানে তো পুরাই উলটা ঘটনা। গত আধা ঘণ্টা ধরে সে প্রকাশনীর ম্যানেজারের জন্য অপেক্ষা করছে। বিষয়টা তার কাছে খুবই লজ্জা জনক। অন্য লেখক লেখিকারা জানতে পারলে নিশ্চয় এটা নিয়ে সমালোচনা করবে। ফুস করে একটা শ্বাস ছাড়তেই দরজা খোলার আওয়াজ শুনে সেদিকে তাকাল। মধ্য বয়সী একজন লোক। নাকের ডগায় চশমা। সামনের কিছু চুলে পাক ধরেছে। খুব ব্যস্ত ভঙ্গিতে এসে সামনের সোফায় বসে পড়ল। সারিয়ার দিকে তাকিয়ে সৌজন্য হেসে বলল
–তোমাকে অনেক্ষন অপেক্ষা করতে হল। একটা মিটিং এ গিয়েছিলাম। ঢাকা শহরের জ্যাম জানই তো।
কথা শেষ করেই লোকটা সারিয়ার মুখের দিকে তাকাল। অপেক্ষা করছে তার কথার। সে হয়তো ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলবে ‘খুব বেশী দেরি হয়নি। এটা কোন ব্যাপার না।‘
কিন্তু লোকটাকে নিরাশ করে দিয়ে সারিয়া এরকম কিছুই করলো না। মৃদু হাসল। তার এই হাসির অর্থ সে সত্যি সত্যি অনেকটা সময় অপেক্ষা করেছে। রহিম সাহেব বেশ লজ্জিত হলেন। দৃষ্টি নামিয়ে নিলেন। তার চেহারায় অসস্তি ভাবটা ফুটে উঠল বেশ করে। সারিয়া একবার তাকিয়েই সেটা বুঝতে পারল। তাই এবার মৃদু হেসে বলল
–খুব বেশী দেরি হয়নি স্যার।
রহিম সাহেব চোখ তুলে তাকালেন। আরেকদফা লজ্জায় পড়ে গেলেন তিনি। কারন তার লজ্জার ব্যাপারটা সারিয়া যে বুঝতে পেরেছে সেটা তিনিও বুঝে গেলেন। বিষয়টাকে আর না বাড়িয়ে বললেন
–নতুন গল্পের কথা বলছিলে তুমি। এনেছ তার স্যম্পল?
সারিয়া হাতেই ধরে ছিল কাগজগুলো। সেগুলো এগিয়ে দিলো লোকটার দিকে। লোকটা হাতে নিয়ে বলল
–আমি এগুলা রাতে দেখে কাল তোমাকে জানাবো।
সারিয়া মাথা নাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালো। বলল
–আমি তাহলে আসি আঙ্কেল।
লোকটা হেসে মাথা নাড়তেই সারিয়া উঠে দাঁড়ালো। অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাড়াতেই তীব্র গরমে অস্থির হয়ে উঠল। এসির মাঝেই তার কেমন যেন লাগছিল আর এই গরমে সে কোনভাবেই দাড়িয়ে থাকতে পারছে না। মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠে বমি হয়ে গেলো। রাস্তার পাশে বসে পড়ল সে। সেখানে বসেই বমি করছে। চোখ দিয়েও ঝাপসা দেখছে। এখান থেকে বাসা খুব বেশী দূরে না। তবুও একা যেতে পারবে না। বাসায় ফোন দিয়ে জানিয়ে দিতে হবে। তাই ব্যাগ থেকে ফোন বের করে শারমিনের নাম্বারে ডায়াল করলো। শারমিন ফোন ধরে বলল
–রিয়া তুই কোথায়? কখন বাসায় আসবি?
–আপু আমি…।
কথা শেষ করার আগেই হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো।
#ভালোবাসি_বলেই_তোমাকে_প্রয়োজন
সুচনা পর্ব
লেখক-এ রহমান
চলবে……?
(