#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ০৩)
#Humayra_Khan
.
.
.
কারন আমি বুঝতে পেরেছি। আমি তোমার পাশে বসায় অনেকটা আনইসি ফিল করছিলে।আর আমি চাইনা আমার কারনে তুমি অসস্তিবোধ করো। মনে মনে
আহানঃ আসলে কি…
চারু ঃ হুম বলেন শুনছি আমি।
আহানঃ হঠাৎ করে আমার হাটতে ইচ্ছে করছে তাই।
চারু আহানের কথা শুনে আর কিছু বললো না।
দুই জন এ পাশাপাশি হাটতে লাগল।
রাস্তায় ফুচকা গাড়ি দেখতে পেয়ে চারু চেচিয়ে বলে উঠল
ফুচকা।
আহান চারুর কথা শুনে ভ্রু নাচিয়ে তাকালো ওর দিক এ।
আহানঃ কি খাবা??
চারুঃ না না।আমি তো এমনি বললাম (শুকনো একটা হাসি দিয়ে)
আহানঃ বাট। আমি তো খাবো। আই লাভ ফুচকা।
কথাটি বলে আহান ফুচকার গাড়ি দিক এ হাটা দেয়।
চারু ও আহানের পিছে পিছে যেতে থাকে।
ফুচকার গাড়ির সামনে এসে –
আহানঃ মামা দুই প্লেট ঝাল করে ফুচকা দিন তো।
চারু অবাক হয়ে চেয়ে থাকে আহানের দিক এ।
আহানঃ কি আমার দিক এ এইভাবে চেয়ে আছো কেন
আজ কি আমাকে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে??
যদিও আমাকে অলওয়েস ই সুন্দর লাগে। (এটিটিউড নিয়ে)
চারুঃ আচ্ছা আপনি না বাসায় কাকিমা কে বললেন যে আপনি এখন ঝাল খাওয়া পছন্দ করেননা।এখন ঝাল দিয়ে ফুচকা অর্ডার করলেন( সন্দেহ চোখে)
আহানঃ খাইসি ধরা।এখন কি বলবো?? ভাব আহান ভাব। মনে মনে
আরে বললাম না বাসায়। মানুষ এর পছন্দ সময়ের সাথে সাথে বদলায়। কিছুক্ষন আগে আমার ঝাল ভালো লাগতো না।এখন ঝাল টাইপ কিছু খেতে ইচ্ছে করছে।
চারু ঃ তাই বলে এতো তাড়াতাড়ি বদলায়(অবাক হয়ে)
আহানঃ কথা না বলে ফুচকা খাও। চারুর হাতে ফুচকার প্লেট ধরিয়ে। নিজেও একটা ফুচকার প্লেট হাতে নিয়ে
দুইজনে খাওয়া শুরু করলো। খাওয়ার মাঝে চারু চিল্লিয়ে বলে উঠলো পানি পানি।পানি খাবো
আহান খেয়াল করলো ঝালে চারুর চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে আছে।
তাই নিজের খাওয়া ছেরে দিয়ে তাড়াতাড়ি একটা দোকান থেকে চারুর জন্য পানি এনে দিলো।
চারুর এতোটাই ঝাল লেগেছিল যে ঢক ঢক করে পুরো
পানি শেষ করে দেয়।
চারুর এইভাবে পানি খাওয়া দেখে আহান ওর দিক এ তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে।
চারু ঃ সরি পুরো পানি শেষ করে দিলাম(মাথা নিচু করে)
আহানঃ ঃ সম্যসা নেই চলো।
তারপর আহান ফুচকার বিল পে করে আবার হাটা দেয়
দুইজন মিলে।
আহানঃ অনেক রাত হয়ে গেছে। চলো বাসায় চলে যাই।
চারু ঃ আপনি বললেন মার্কেট যাবেন কোনো কাজে??
আহানঃ একদিনে কতো মিথ্যা বললাম। সরি আল্লাহ আকাশের দিক এ তাকিয়ে মনে মনে
কাল যাব নে।আজ অনেক ক্লান্ত লাগছে।আর বেশি হাটতে পারবো না।
দাঁড়াও driver আংকেল কে ফোন দি।কথাটি বলে আহান ফোন দেয়
আহানঃ হ্যালো। আংকেল গাড়িটা একটু নিয়ে আসো
তো
ডাইভারঃআহান বাবা একটা গাড়ি তো বড় সাহেব নিয়ে গেল কিছুক্ষন আগে।আরেকটা গ্যারেজ এ।আমি আপনার বাইকটা নিয়ে আসি??
আহানঃ বাইকে আমার পাশে বসতে তো চারু আরও বেশি আনইসি ফিল করবে।আর আমাকে বলবেওনা।মনে মনে
আহানঃ না আংকেল থাক লাগবেনা।রাখি।
কথাটি বলে আহান ফোন কেটে দেয়।
আহানঃ চলো চারু আজ হেটে হেটেই বাসায় যাব।
তাছাড়া বাসা তো কাছেই।
চারু ঃআপনি বললেন আপনার কষ্ট হচ্ছে হাটতে?
আহানঃ তোমার জন্য এই ছোট খাটো কষ্ট আমি হেসে হেসে সইতে পারবো। মনে মনে
আমার মুড সেকেন্ডে সেকেন্ডে চেঞ্জ হয়।বুঝলে?
চারুঃ হুম বুঝলাম।(মুখ বাকা করে)।আজব মানুষ। মনে মনে।
দুইজন এ হাটতে থাকলে হঠাৎ আহান খেয়াল করলো চারু ওর পাশে নেই। পিছনে ঘুরে তাকালে দেখে চারু ভিড়ের মাঝে থাক্কা থাক্কি খাচ্ছে।
আহান তাড়াতাড়ি করে গিয়ে চারুকে ভিড়ের মাঝখান থেকে নিয়ে আসে।
এক সাইেড চারুকে দাঁড় করিয়ে..
আহানঃ এই মেয়ে তোমার সম্যসা কি।মেয়ে মানুষ হয়ে পিছনে পিছনে হাটছো। কিছু হয়ে গেলে কি হবে।
যাও আমার সামনে হাটো।
কথাটা আহান একটু চেচিয়ে বললে
ভয়ে চারু কান্না করার মতো অবস্থা।
আহান তা খেয়াল করলে-
সরি সরি। আর চেচিয়ে কথা বলবো না তোমার সাথে।
প্লিজ কান্না করোনা। এই দেখো নিজের কান ধরে সরি বলছি। তুমি চাইলে আমি উঠ বস ও করতে রাজি তাও কান্না করোনা তুমি( দুই কান ধরে)
আহান এই ভাবে রাস্তায় দাড়িয়ে নিজের কান ধরায়
চারুর বেশ হাসি পায়।আর হো হো করে হেসে উঠে।
আহানও চারুর সাথে তাল মিলিয়ে হাসতে থাকে।
হঠাৎ একটা দশ বারো বছর এর মেয়ে এসে-
ভাইয়া ভাইয়া একটা গোলাপ ফুল নিন না আপু মনির জন্য।
সকাল থেকে একটাও বিক্রি করতে পারিনি।
আহানঃ তাই নাকি ছোট আপু( মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে।
মেয়েটিঃ হুম।। ভাইয়া। নিন না একটা।
আহানঃ তুমি আমাকে একটা নয় সব গুলোই দিয়ে দাও।
চারুঃ এই করছেন কি আমি বাসায় এতো ফুল নিয়ে গেলে আন্টি আমাকে নানান পশ্ন করবে।
আহান ঃ কে বলেছে আমি ফুল গুলো তোমার জন্য কিনছি?
চারু ঃমানে??
আহান মেয়েটির থেকে সব ফুল নিয়ে মেয়েটির হাতে পাঁচশ টাকা ধরিয়ে দেয়।তারপর ফুল গুলো নিয়ে একটা ফুলের থেকে একটা পাপড়ি ছিড়ে সব ফুল গুলো পিচ্চি মেয়েটার হাতে দিয়ে দেয়।
মেয়েটিঃ ভাইয়া ফুল গুলো আমায় দিয়ে দিলেন কেন?
নিবেন না আপনি?? (কান্নার কন্ঠে)।
আহানঃ হুম নিলাম তো। নিয়ে একটা ছোট কিউট পরীকে গিফট করলাম। আর সেই পরীটা হলো তুমি
(মেয়েটির গাল দুটো টেনে)
আহানের কথা শুনে মেয়েটি অনেকটা খুশি হয়ে যায়।
মেয়েটিঃ ভাইয়া আপনি অনেক ভালো আর কিউট ও
আহানঃ তাই নাকি বাট তোমার চাইতে একটু কম
কথাটি বলে আহান মেয়েটির কপালে চুমু একে দেয়।
মেয়েটি চলে গেলে আহান চারুর হাত এ ফুলের পাপড়ি টা ধরিয়ে দিয়ে-
আহানঃ নাও এই ছোট পাপড়িটা তোমার জন্য।
( আমি চাইনা মা তোমার হাতের ফুল গুলো দেখে তোমাকে নানান প্রশ্ন করুক। তাই নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে একটা পাপড়িই না হয় দিলাম।)।মনে মনে।
চারু ফুলের পাপড়িটা নিয়ে আহানের দিক এ অপলক
দৃশটিতে চেয়ে থাকে।
আহানঃ এই ভাবে তাকিয়ে আছো কেন?(ভ্রু নাচিয়ে)
চারু ঃ না এমনি। চলেন।
আহানঃ হুম তুমি আমার আগে আগে হাঁটো আমি তোমার পিছনে
চারু আহানের কথা মতো হাটতে শুরু করে।
এইভাবে চারু আগে আর আহান ওর পিছনে ছায়ার মতো হেটে হেটে বাসায় চলে আসে।
বাসায় এসে আহান ক্লান্ত হয়ে সোফায় বসে পরলে মিসেস সাবিনা আহানের মাথায় হাত রেখে
সাবিনা ঃ কি রে বাবা তোকে এতো ক্লান্ত লাগছে কেন?
আহানঃ মাকে যদি বলি বাসায় পায়ে হেটে আসছি তাহলে সে নানান প্রশ্ন করবে।মনে মনে
কই না তো আমি মোটেও ক্লান্ত নই।বাইরে থেকে আসছি তো তাই হয়তো আমাকে দেখে তোমার ক্লান্ত মনে হচ্ছে। আচ্ছা মা আমি ওয়াসরুমে যাই ফ্রেশ হতে। কথাটি বলে চলে যায় আহান।
ডায়নিক টেবিল…….
সবাই ডিনার করতে বসলে চারু সবাইকে তরকারি বেরে দিয়ে চলে যেতে নিলে মিরাজ সাহেব চারুকে ডেকে
মিরাজঃ কোথায় যাচ্ছিস চারু মা। আমাদের সাথে বস।
মিসেস সাবিনা মিরাজ সাহেব এর কথা মাঝ খানে বলে উঠে শুধু ওকে ডাকছেন কেন আপনি বাসার সব চাকর বাকর কেও ডাক দেন
তারপর সব চাকর বাকরদের নিয়ে এক সাথে একই টেবিলে খাবার খাই( চোখ মুখ কালা করে)
মিরাজ সাহেব তার বউ এর কথায় রেগে মেগে উঠে।
তোমার কি মাথা ঠিক আছে সাবিনা তুমি বাসার সার্ভেনট দের সাথে চারুর তুলনা করছো?
সাবিনা ঃ চারু আর বাসার চাকরদের মধ্যে পার্থক্য আছে নাকি।
আহান ওর মার বলা কথা সইতে না পেরে দাঁড়িয়ে পরে
সাবিনা ঃ কিরে বাবা তুই দাঁড়িয়ে পরলি কেন
ডিনার করবিনা
আহানঃ উফ দেখো না মা।এই চারু আমার প্লেট এ গরুর মাংস বেরে রেখেছে। আর গরুর মাংস খেলে আমার এলার্জি প্রবলেম হয়।
কথাটি বলে আহান তার প্লেটটি চারুর হাত এ ধরিয়ে
আহানঃ মায় ঠিকই বলেছে আমাদের সাথে খেতে পারবিনা তুই। প্লেট টা নিয়ে সোফায় বসে খা।
সাবিনা ঃ তোর আবার এলার্জি প্রবলেম হলো কবে থেকে।
আহানঃ আজ থেকে।
সাবিনা আহানের কথা শুনে ভ্রু কুচকিয়ে ওর দিকে তাকালে
আহানঃ না মানে। বলতে চেয়েছিলাম। যে আজ থেকে কয়েক বছর আগে থেকে।দেশের বাইরে যাওয়ার পর থেকে( শুকনো হাসি হেসে)
চারু এখনো দাঁড়িয়ে আছে দেখে আহান বলে উঠল
এই মেয়ে তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছো।যাও এখান থেকে।(চিৎকার দিয়ে)
আহানের থমক শুনে চারু চলে যায়।আর সোফায় বসে খাবার খেতে থাকে।
সাবিনা ঃ জানিস গরুর মাংসের দাম কত বেড়ে গেছে আর তুই এতো গুলার মাংসের টুকরা ওকে দিয়ে দিলি
আমাকেও তো দিতে পারতি
আহানঃ মা। আমার তো মনে হয় তুমি আমাকে ভালোই বাসোনা। সারা দিন চারুকে নিয়েই কথা বলতে থাক।ওর কথা বাদ দাও তো।
আমাকে তুমার নিজের হাতে খাইয়ে দাও আজ।
মিসেস সাবিনা তার ছেলের কথা শুনে ওকে খাইয়ে দিতে থাকে।
আহান ফাকে ফাকে আড়চোখে চারুকে দেখে যাচ্ছে বার বার।
মিসেস সাবিনা ভাতের লোকমা আহানের সামনে নিয়ে আসলে আহানের সেই দিক এ খেয়ালই নেই
সে তো চারুরকেই দেখে যাচ্ছে।
সাবিনা ঃ কি রে আহান আমি হাতে ভাত এর লোকমা নিয়ে বসে আছি।তুই ও ই খানে কি দেখছিস
মায়ের কথা শুনে আহানের গলায় খাবার আটকে যায়
আর সে জোড়ে জোড়ে কাশতে থাকে।তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয় ও।
আহানঃ আসলে মা…………#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ০৪)
#Humayra_Khan
.
.
.
মায়ের কথা শুনে আহানের গলায় খাবার আটকে যায়।
আর সে জোড়ে জোড়ে কাশতে থাকে। তাড়াতাড়ি করে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয় ও।
আহানঃ আসলে মা।আমি তো ওই দিক এ তাকিয়ে আমাদের সোফা দেখছিলাম। অনেক সুন্দর সোফা গুলা।তাইনা?? (জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)
কি বলছি আমি আবল তাবল।মনে মনে
সাবিনা ঃ বাবা তুই ঠিক আছিস? তুই এত ক্ষন সোফা দেখে যাচ্ছিলি(অবাক হয়ে)।মানুষ ডাক্তারি পরা পরে পাগল হয়ে যায় শুনেছিলাম।আজ নিজের ছেলের মাধ্যমে বুঝতে পারলাম মানুষ এমনি এমনিই বলেনা।
তুই বাইরে থেকে ডাক্তারি পরা পরে এসে কেমন জানি বদলে গেছিস।
আহানঃ যদি আমি তোমাকে বলি আমি সোফাকে নয় সোফায় বসে থাকা মেয়েটি আই মিন চারুকে দেখে যাচ্ছিলাম এতো ক্ষন ধরে তাহলে তো তুমি আমার বারো টা নয় গুনে গুনে তেরো টা বাজিয়ে দিবে।(আনমনে)
মা ওই সব কথা বাদ দাও তো। দেখেছো মা ভাইয়া ভাবি কেমন আমি আসলাম আর তারা একবারও দেখতে আসলোনা শুধু ফোন দিয়েই খবর নিলো আমার।
সাবিনা ঃ তোর ভাই এর কথা বাদ দে।আস্ত একটা বউ পাগলা।তাইতো বউ পেয়ে নিজের জন্মদাতা বাবা মাকে ছেড়ে চলে গেছে বউকে নিয়ে আলাদা হয়ে।এই কারনেই বলি ছেলেদের পছন্দ করা মেয়ে ঘরের বউ করে আনা ঠিক নয়।এই সব মেয়েরা ভুলিয়ে ভালিয়ে মা বাবার থেকে আলাদা করে দেয় তাদের সন্তানকে
মিরাজ ঃ আলাদা হয়েছে কি আর শখে।তুমি যে বউ মাকে উঠতে বসতে ওকে কথা শুনাও সেই কারণেই আবির তার বউকে নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে।
সাবিনা ঃ আমি কি ওকে কথা শুনাই নাকি ওর কারণে আমাকে সমাজের মানুষ এর কথা শুনতে হয়।কত বছর হয়ে গেল বিয়ের। এখন পর্যন্ত ও নাতি নাত্নি মুখ দেখার সৌভাগ্য হলো না।(কান্নার মুখ করে)
মিরাজ ঃ সাবিনা তোমার উচিৎ প্রতি দিন একটু করে মধু খাওয়া। মধু খেলে হয়ত তোমার করল্লার মত মুখ কিছুটা মিষ্টি হবে।
সাবিনা ঃ কি আমার মুখ করল্লার মতো তেতো(রেগে)
মিরাজ ঃ হুম।আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় আমার বউ সাবিনা খান নয় রিনা খান।রিনা খানকে ও হার মানাবে( হেসে হেসে)
সাবিনা ঃ এই তুমি কিন্ত বেশি বলছো। দেখ না আহান তোর বাবা আমাকে কি সব কথা শুনাচ্ছে।আমি নাকি রিনা খান!
আহানঃ বাবা তো ভুল কিছু বলেনি।
সাবিনা তার ছেলের কথা শুনে তার ছেলের দিক এ রাগি দৃশটিতে তাকিয়ে থাকে।
আহানঃ ও মা রাগ করছো কেন। আমি তো তোমাকে রিনা খান বলছিনা।আমি বলছি যে। সমাজের মানুষ তো কতো কথাই বলে। তাই বলে কি তাদের কথা গুরুত্ব দিতে হবে।আর কিছু মানুষ এর স্বভাবই এমন। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কথা বলা।তাই বলে সমাজের মানুষ এর কথায় তুমি ভাবিকে কথা শুনাবে।আমাদের তো উচিৎ এইসব মানুষ থেকে নিজের আপনদের আগলে রাখা। তাছাড়া সন্তান হওয়া তো একমাএ আল্লাহর হাতে।আল্লাহ যে দিন চাইবে সেই দিন ই হবে।
আর তুমি দেখো খুব জলদি আল্লাহ আমাদের বাসায় ফুটফুটে একটা বেবি পাঠাবে।
সাবিনা তার ছেলের কথা শুনে কিছু বললো না কিন্তু তাকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে সে আহানের কথা এক কান দিয়ে শুনেছে আরেক কান দিয়ে বের করে দিয়েছে।
চারু খাওয়া শেষ করে প্লেট হাতে নিয়ে যেই রান্না ঘরে যেতে নিবে।মিসেস সাবিনা তার সব রাগ চারুর উপর ঝেড়ে দেয়।
সাবিনা ঃ এই যে নবাবজাদি।খুব মজা করেই তো গরুর মাংস দিয়ে ভাত খেলেন। এখন হাত ধুয়ে বাকি কাজ গুলো করে ফেলুন কষ্ট করে।
মিরাজ ঃ ওও করতে যাবে কেন বাসায় এতো সার্ভেনট থাকতে।
সাবিনা ঃ কেন এই নবাবজাদিকে কি বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবো।(চেচিয়ে)
আহান ঃ বাবা ঠিকই তো বলেছে মায়।ওকে কি বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবো আমরা?? তাছাড়া কাজ করলে তো শরীর ফিট থাকে। এই চারু তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে আমার রুমে আয়।আমার কতো গুলো ময়লা কাপড় আছে সেগুলো ধুয়ে দিবি। কথাটা বলে আহান চলে যায় নিজের রুমে।
মিসেস সাবিনা আহানের কথা শুনে বেশ খুশি হয়।
আর মিরাজ সাহেব রাগ করে চলে যায় সে খান থেকে।
চারু ওর হাত ধুয়ে আহানের রুমে এসে দরজায় নক দিলে-
আহানঃ ভিতরে আসো। চারু
চারু আহানের পারমিশন পেয়ে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে
চারু ঃ দিন ভাইয়া কাপড়গুলো আমি ধুয়ে দিচ্ছি।
আহান আলমারিতে থাকা কাপড় গুলা নারা চাড়া করে
আহানঃ উফ কাপড় গুলা যে কই রেখেছি আমি খুজেই পাচ্ছিনা।
থাক খুজে পেলে পরে তোমাকে ডাকবো নে। এখন তুমি যাও
চারু আহানের কথা শুনে মাথা নাড়িয়ে জ্বী ভাইয়া বলে রুম থেকে চলে যেতে নিলে আহান ওকে পিছন থেকে ডাক দেয়।
আহানের ডাক শুনে চারু ঘুরে তাকিয়ে –
চারু ঃ জ্বী ভাইয়া কিছু বলবেন।
আহানঃ হুম।ভূতের মতো এই দিক ওই দিক ঘুর ঘুর করবেনা ।সোজা নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পরবে
বুঝেছো কি বললাম।
চারু আহানের কথায় মাথা নাড়িয়ে রুম থেকে চলে গেল।
পরের দিন দুপুরে আহান সবার জন্য আইস্ক্রিম কিনে আনলে সবাইকে একটা করে আইস্ক্রিম দেয়।
যেইনা চারুকে দিতে যাবে মিসেস সাবিনা থপ করে আহানের হাত থেকে আইস্ক্রিম টা নিয়ে –
সাবিনা ঃ চারু আইস্ক্রিম খেলে ওর ঠান্ডা লেগে যাবে আহান।তাই ওর আইস্ক্রিম টা আমিই খাই। সারা দিন কতো কাজ করি।অনেক ক্লান্ত হয়ে পরেছি।দুইটা আইস্ক্রিম খেলে একটু ভালো লাগবে আমার।কথাটি বলে দুই হাতে দুইটা আইস্ক্রিম নিয়ে চলে যায় নিজের রুমে।
আহানের বাবা চারুকে তার আইস্ক্রিম দিতে চাইলে চারু মানা করে দেয়।।
চারু নিজের রুমে চলে যেতে নিলে-
আহানঃ দাড়া চারু আমার একটু গলা ব্যথা করছে।তাই আইস্ক্রিম খেলে স্যমসা হবে তুই আমারটা খেয়ে নে
কথাটি বলে আহান নিজের আইস্ক্রিম টা চারুকে দিয়ে দেয়। আইস্ক্রিম আর ফুচকা চারুর খুব প্রিয়।কেউ দিলে ও সহজে না করেনা।তাই আহানের দেওয়া আইস্ক্রিম হাতে নিয়ে মনের সুখে খেতে থাকে ও
হঠাৎ আহানের মোবাইলে ফোন বেজে উঠে। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো ওর ভাবি দিশা ফোন দিয়েছে।
আহান তাড়াতাড়ি করে ফোনটা রিসিভ করে।
আহানঃ হ্যালো আসসালামু আলাকুম ভাবি
দিশা ঃওয়ালাইকুম আসসালাম আমাদের আদরের দেবর।
আহানঃ হয়েছে রাখো।আর পাম দিতে হবেনা।যদি আদর করতে তাহলে আমার সাথে দেখা করতে আসতে।
দিশা ঃ তুমি তো জানো আমি কেন আসি না।আচ্ছা এই সব কথা বাদ দাও। তুমি আমাদের বাসায় কয়েকদিন এর জন্য বেড়াতে আসো।আমি আর তোমার ভাই খুশি হবো তুমি আসলে।আসবেন্না ডাক্তার সাহেব এই গরিবের বাসায়???
আহানঃ কি যে বলোনা ভাবি অবশ্যই
দিশাঃ হুম কালই চলে আইসো।
আহানঃ কি বললে চারুকেও সাথে করে নিয়ে আসবো?
চারু আহানের কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ওর দিক এ
দিশা ঃ এই কথা কবে বললাম আমি??(কনফিউজড হয়ে) ।মনে মনে
আচ্ছা ভাইয়া তুমি চারুকেও সাথে করে নিয়ে এসো।
আহানঃ দাড়াও ভাবি একটু হোল্ড করো ফোনটা
তারপর চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে তার মাকে ডাকতে থাকে
মা মা………।
মিসেস সাবিনা আহানের ডাক শুনে দৌড়ে রুম থেকে চলে আসে।
সাবিনাঃ কি হলো আহান এই ভাবে গলা ফাটিয়ে ডাকছিস কেন??
আহান ওর মোবাইলটা স্পিকার এ দিয়ে-
আহানঃ হ্যা ভাবি আবার বলো তো কি জানি বলছিলে
দিশাঃ কি বলছিলাম??
আহানঃ আরে লাস্ট এর কথাটা আবার রিপিট করো।
দিশাঃ ওও। চারুকেও তোমার…………..