স্নিগ্ধ প্রেমের অনুভূতি পর্ব -০৬

#স্নিগ্ধ_প্রেমের_অনুভূতি
#পার্টঃ০৬
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ

৩৩.

ইচ্ছে নিচে নামতেই মিসেস আনেয়া আর রাজ্জাক নীড়কে দেখে অবাক হয়ে যায়। পাশে তার বাবা নিহাল চৌধুরী হেসে হেসে তাদের সাথে কথা বলছে। ইচ্ছেকে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আানেয়া নীড় হাত দিয়ে ইশারা করে নিজের কাছে ডাকে। ইচ্ছে গিয়ে দৌঁড়ে তার ফুফুকে জড়িয়ে ধরে। ইচ্ছের চোখে পানি টলমল করছে এতোদিন পর এইভাবে ম্যাজিক এর মতো সবকিছু এক হয়ে যাবে তা তার ভাবনার বাইরে ছিলো৷ হঠাৎ ইচ্ছের মনে পড়লো আদ্রের কথা। আদ্র তাকে বলেছিলো আরেকটা চমক আছে।

৩৪.

‘ডক্টর ইনশিয়ার কি কন্ডিশন এখন?

‘মিস্টার নীড় মিসেস ইনশিয়া জান্নাতের গালের ওই ক্ষতটাতে তিনি তীব্র আঘাত অনুভব করেন। তবে আমার বিশ্বাস আজ নিশ্চয়ই ওনার গালে কোনো আঘাত করেছে কেউ।

“হোয়াট!

‘ইয়েস।

‘ডক্টর আমি কি ইনশিয়ার সাথে দেখা করতে পারি?

‘Yeah Sure.

‘Thank yOu sO much Doctor

৩৫.

সবাই কথা বলছে। শুধু ইচ্ছে কাউকে বার বার খুঁজছে। হঠাৎ ইচ্ছে দেখলো অয়নি এসেছে। ইচ্ছে অয়নির দিকে তাকিয়েতো পুরাই থ। এই মেয়ে শাড়ী না পড়ে সবসময়ের মতোই নরমাল ড্রেস পড়ে এসেছে!

‘চল আমার সাথে রুমে চল…

” আরে ইচ্ছে ছাড়। আমাকে আংকেলের সাথে কৌশল বিনিময়তো করতে দে…

‘কে শুনে কার কথা? অয়নিকে হাত টেনে ইচ্ছে নিজের রুমে নিয়ে যায়। রুমে যেতেই দরজা লাগিয়ে..দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

‘তুই না শাড়ী পড়বি?

‘অয়নি এইবার ভরকে যায়। ওইসময়তো আংকেলের কথায় সে ইচ্ছেকে ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কথা বলেছে কিন্তু এখন? এখন কি করবে।

‘কিরে বল….

‘না মানে ইয়ে ইচ্ছে… রুপ না করেছে।

“কিই! এতো বড় সাহস? আর তুই ইবা কেমন বেষ্টু বলতো? যে বফের কথায় বেষ্টুর মন রাখতে জানিসনা৷ তোর সাথে আমার কোনো কথা নেই। ভুলেও কথা বলতে আসবিনা।

‘প্লিজ রাগ করিসনা ইচ্ছে। আসলে আমার শরীর খারাপতো তাই আর কি…

‘থাক তোর আর বানিয়ে কথা বলতে হবেনা। লাগবেনা তোর শাড়ী পড়া।

‘ওফ আচ্ছা ঠিক আছে। তোর একটা শাড়ী দে আমি পড়ে নেই এখন।

‘ইচ্ছে লাফিয়ে উঠে তাড়াতাড়ি আলমারি থেকে জামদানী একটা খয়েরী রঙের শাড়ী অয়নির হাতে দেয়। অয়নি অসহায় ফেইস নিয়ে বললো,

‘আল্লাহ এই মেয়ে আমাকে জ্বালিয়ে মারবে।

৩৬.

কাব্য!

‘হ্যাঁ ভাইয়া কাব্য… এইটা বলেই ইনশিয়া ফুঁপিয়ে কান্না করে দেয়।

‘কাব্যর এতো বড় সাহস? তোমার গালে থাপ্পড় মারে?

‘আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া। আমার গাল ছিঁড়ে যাচ্ছে একদম।

‘আদ্র হাতের মুঠে শক্ত করে ধরে রাখে৷ এই নিয়ে অনেকবার সে কাব্যের এইসব সহ্য করেছে। কিন্তু কাব্য জানেনা যে আদ্র ইনশিয়াকে জানে। আদ্র চোখ মুখ লাল করে কেউ একজনকে কল দেয়।

‘ভাইয়া..

‘কি হয়েছে ইনশিয়া? খুব কষ্ট হচ্ছে?

‘হ্যাঁ ভাইয়া আমার খুব খুব কষ্ট হচ্ছে ।

আমি বুঝলাম না এতোগুলো গার্ড রাখার পরও কাব্য ঢুকে কি করে বাসায়?

‘গার্ডদেরকে মেরে।

‘কেনো এসেছিলো?

……নিশ্চুপ

‘বলো কেনো এসেছিলো…

…..

ইনশিয়া আমি বলতে বলেছি..আদ্রর আলতো ধমকে ইনশিয়া কেঁপে বললো,

‘ডি ড্ ডিভোর্স এর জন্য।

৩৭.

এইতো আদ্র এসে পড়েছে?

সোফায় সবার নজর দরজার পানে। আদ্র মুচকি হেসে ঢুকছে।

‘মামা..কেমন আছো?

‘আলহামদুলিল্লাহ বাবা। আয় ভেতরো আয়।

আদ্র সোফায় বসতেই… চোখ যায় সামনের সোফায়। ইচ্ছে আর অয়নি বসে আছে। আদ্র মিটিমিটি হাসতেই ইচ্ছে মাথা নিচু করে ফেলে।

অয়নি ইচ্ছেকে গুচা দিয়ে বললো,

‘ইচ্ছে দেখ..আদ্র ভাইকে কি হ্যান্ডসাম লাগছে। ইচ্ছে অয়নির কথায় ফিসফিস করে বললো,

‘শাঁকচুন্নি চুপ থাকবি?

‘ইচ্ছে না চাইতেও চোরা চোখে আদ্রর দিকে তাকায়। ইচ্ছে আদ্রর দিকে তাকাতেই চমকে যায়। ওমা! আদ্রও নীল পান্জাবী পড়েছে! ইচ্ছেওতো নীল শাড়ী। হাতে ঘড়ি, চুলগুলো সিল্ক তাই বার বার সামনে পড়ছে। স্কিন কালার প্যান্টের সাথে আসলে আদ্রকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। চোখ ফেরানো দায় হয়ে পড়ছে। হঠাৎ আদ্রের চোখাচোখি হতেই তড়িঘড়ি করে মাথা নিচু করে ফেলে ইচ্ছে। আর আদ্র ওইদিকে মনে মনে হাসলো।

‘আনেয়া তাহলে এইবার আংটি পড়ানো হয়ে যাক?

‘হে ভাই সে আর বলতে?

‘ইচ্ছে মা এদিকে আয়তো।

‘ইচ্ছে তার বাবার দিকে অবুজ চাহনি নিয়ে তাকাতেই…নিহাল চৌধুরী.. আনেয়া নীড়ের কাছে যেতে বললো। আদ্রকে বললো,

‘বাবা ইচ্ছেকে এইবার আংটিটা পড়িয়ে দে। আদ্র কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তাড়াতাড়ি ইচ্ছেকে আংটি পড়িয়ে দেয়। ইচ্ছে অবাক চাহনি নিয়ে এখনো আদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। এখনো ইচ্ছের কাছে সবকিছু একটা ঘোর লাগছে। এইসব কি হচ্ছে তার বুঝতে কিছুটা সময় লাগলো। এইসব বুঝতেই, বাবার দিকে তাকালো। নিহাল চৌধুরী এগিয়ে এসে বললো,

‘এইবার আদ্রকে তুই রিং পড়া।

‘মানে?

‘রিংটা পড়া..

অয়নি এগিয়ে এসে ইচ্ছের হাত দিয়ে একপ্রকার জোর করে আদ্রকে রিং পড়ায়।

বাবা….

হঠাৎ পরিচিত কন্ঠ পেয়ে সবাই দরজার সামনে তাকায়। থমকে যায় সবার পা। চুপসে যায় সবাই। নিমিষেই যেনো কালো মেঘ এসে জমেছে।

চলবে…

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here