তুমি আছো তুমি রবে পর্ব -০৮

#তুমি_আছো_তুমি_রবে
#পর্বঃ৮ #রেহানা_পুতুল
ঝিনুক মরিচ চোখে আরশাদের দিকে চেয়ে ,গোপনে একটা কঠিন ফন্দী এঁটে ফেললো। যা দ্বিতীয় কারো সাথেই শেয়ার করা যাবেনা।

ওকে তাই হবে বলে আরশাদ খাটে গিয়ে শুয়ে গেলো। বাড়াবাড়ি রকমের মন খারাপ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
_____
পরেরদিন দুপুরে লাঞ্চ সেরে বিকেলে সব আত্মীয়রা চলে গেলো। যাওয়ার আগে ঝিনুকের সব ছোট বড় কাজিনেরা আরশাদকে মিষ্টি খাওয়ালো। আরশাদ ও সবাইকে খাওয়ালো। ঝিনুক একপাশে চেয়ারের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

শায়লা বলল,ভাইয়া আপুকেও খাইয়ে দাও।

আরশাদ কাঁটা চামচে একটা কালোজাম গেঁথে নিলো। ঝিনুকের মুখের সামনে গিয়ে থামলো। তার দুঠোঁটের দিকে মিষ্টিটি এগিয়ে নিয়ে,

রসে ভরা রসগোল্লা খেতে আমার সেই লাগে বলেই, নিজের মুখে পুরে দিলো।

শায়লা, রাব্বি,ইতি বোয়াল মাছের মতো হা করে চেয়ে রইলো আরশাদের দিকে। তারা বলল, এটা কি হলো ভাইয়া?

আরশাদ আয়েসি ভঙ্গিতে, যা হওয়ার কথা তাই হলো।

ঝিনুক কিছুই বললনা। অবোধ শিশুর মতো চুপচাপ উঠে চলে গেলো । কষ্ট যেখানে গভীর ভাষা সেখানে নিরব। বিষাদে ঘিরে থাকা মন নিয়ে সবাইকে বাড়ির সামনের পথ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসলো।

খুব ধকল যাচ্ছে খালামনির জানের উপর দিয়ে, এই ভেবে খালার সাথে ঘরের টুকটাক অনেক কাজ করলো। সন্ধ্যার আলো আঁধারি মিলিয়ে গেলে ধরনীর বুকে ভর করলো রাতের নির্জনতা। আরশাদের সাথে কোন কথাই বলছেনা। এতে আরশাদের ও কোন সমস্যা হচ্ছেনা। তার সবকিছুর দেখাশুনা আরিশা,শায়লা করছে।

সবাই যার যার মতো ঘুমিয়ে গেলো। আরিশা,শায়লা,ঝিনুক এক রুমে ঘুমালো। আরশাদ একা এক রুমে ঘুমিয়ে গেলো। কারণ সকালে নাস্তা খেয়েই তারা রওনা দিবে।

সকালে ঝিনুকের খালা তাকে জিজ্ঞেস করলো, কিরে রাতে আলাদা ঘুমালি কেন? তোর চোখমুখ কেমন মরা মাছের মতো সাদা দেখাচ্ছে?

শায়লাকে আবার কবে পাবো। তাই তার সাথে ঘুমিয়েছি। আর রাতে ভালো ঘুম হয়নি। গল্প করেছি। তোমাদের ছেড়ে চলে যাবো। এই ভেবেও কান্না পাচ্ছে আমার।

খালার ও পরান পুড়বেরে মা তোর জন্য। এখন আর সমস্যা নেই। সময় সুযোগ করে জামাইকে নিয়ে গাড়ি করে চলে আসবি। ব্যাস।
আসবো খালামনি। আসবো অবশ্যই।

আমি গ্রামের কিছু আঞ্চলিক খাবার দিবো তোর স্বশুরের বাসার জন্য। খালার বাড়ি থেকে যাচ্ছিস। খালি হাতে কেমন দেখায়।

কি দিবে আবার? কিছুই লাগবেনা।

ব্যাগ রেডি, বলে একে একে সব আইটেমের নাম শোনালো খালা।

এত্ত কিছু? ইউ আর গ্রেট খালামনি।

ভোরের স্নিগ্ধতা এখনো ফুরায়নি। সবাই ঘুম থেকে উঠে গেলো। আস্তে ধীরে তারা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঝিনুক আরিশা পুকুরে গিয়ে গোসল করে নিলো। আরশাদ ও ছেলেদের ঘাটে গিয়ে গোসল করে নিলো। নয়তো গরমের মাঝে খারাপ লাগবে বেশি।

হেলদি নাস্তা খাওয়া হলো । সবার মন ভারাক্রান্ত আরশাদ ছাড়া। খালা, শায়লা, শায়লার ছোট ভাই কান্না করে দিলো ঝিনুকের জন্য। ঝিনুক ও সবাইকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো।

আরিশা বলল সবাইকে খুব মিস করবো। আন্টি ঢাকায় গেলে আমাদের বাসায় যেতে ভুল করবেনা প্লিজ।

দূর যাত্রা পথে বাসে সবসময় ঝিনুকের বমি আসে। সেইজন্য শায়লা তেঁতুলের আচার দিলো ঝিনুকের হাতব্যাগে। নাক চোখের পানি এক করে সবাইর থেকে বিদায় নিলো ঝিনুক। খালা, শায়লা ও চোখের পানি মুছতে মুছতে বিদায় দিলো সবাইকে। আরশাদ বিনম্রভাবে সালাম দিয়ে বিদায় নিলো খালার থেকে।

_____

গ্রামের সবুজ প্রান্তর, মেঠো পথ, গাছে গাছে পাখিদের কলরব, ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশ,দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ, খালে বিলে রূপের পসরা নিয়ে কচুরিপানার ভেসে থাকা সবকিছুকে পিছনে ফেলে গাড়ি চলে যাচ্ছে শহরের দিকে।

গাড়ির কাচের ভিতর দিয়ে এসব দেখতে দেখতে আরিশা বলল, উফফস! গ্রাম এত বেশী সুন্দর! জীবনানন্দ দাস তাইতো লিখেছেন,

” বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর। ”

আহ! কি কবিতা। ভিতরে ছলাত করে উঠে।

গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে আরশাদ মৃদু হেসে, তুই তাহলে থেকে যা।

পারলে থাকতাম ব্রাদার।

ঝিনুক, আরিশা পাশাপাশি পিছনের সিটে বসেছে। ঝিনুকের খারাপ লাগছে। যানবাহনে সে ঝরঝরে থাকতে পারেনা। কেমন নেতিয়ে যায় লতার মতো । হাত পা ছেড়ে দেয়। একটু পরপর ব্যাগের ভিতরে হাত দিয়ে তেঁতুল মুখে দিচ্ছে সামান্য। গা গুলিয়ে আসছে তার। আরিশা বললো ভাবি খারাপ লাগছে? ঝিনুক হুম বলে সিটে কাত হয়ে শুয়ে গেলো।

ঝিনুকের বমি আসবে আসবে ভাব দেখে আরশাদের অস্বস্তি হচ্ছে। বললো,
আরিশা দেখছিস একজনের পাপে অন্যরা কিভাবে পাপী হয়?

বুঝলামনা ভাইয়া?
একজনের বমি ভাব। আমাদের সহ্য করতে হচ্ছেনা?

ঝিনুক আড়ভাঙা গলায় বলল,গাডি থামান। আমাকে নামিয়ে দিন। আমি বাসে করে যাবো।

আরশাদ হো হো করে উপহাসের হাসি হাসলো। আদিখ্যেতা দেখলে মরি! মরি!

উফফস! থামবা ড্রাইভার । সো বিরক্তিকর। বলল আরিশা।

তুই ও একটা বিরক্তিকর।

বেশ হইছে। আমি বিরক্তিকর।

দুই ঘন্টা পর গাড়ি এক রেস্টুরেন্টের সামনে থামালো। আরিশা ঝিনুকের হাত ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে গেলো ওয়াশরুমে। ঝিনুক চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে নিলো। আবার গাড়িতে এসে ঝিম মেরে বসে রইলো। তারা ভাইবোন লাঞ্চ করে নিলো। ঝিনুককে আরিশা বারবার অনুরোধ করলো খেতে। কিন্তু সে খেলোনা। জানালো খেলে আরো বেশী খারাপ লাগবে।

দুপুরের পর পরই তারা বাসায় পৌঁছে গেলো। ঝিনুক খালাকে জানিয়ে দিলো পৌঁছানোর কথা। তার মাকেও জানিয়ে দিলো। লিফটে করে উপরে চলে এলো তারা তিনজন। তাদের চারতলা বাড়ির গার্ডকে আরশাদ নির্দেশ দিলো গাড়ির ভিতর থেকে ব্যাগগুলো বাসায় নিয়ে যেতে। সে সব ব্যাগ বাসায় দিয়ে নিচে চলে গেলো।

কলিংবেল বাজার সাথে সাথে সালেহা এসে গেট খুলে দিলো। ঝিনুককে দেখেই একগাল হেসে ফেললো। খালাম্মা ভাবিজান আসছে।

জোবেদা বেগম এগিয়ে এলে ঝিনুক পা ধরে সালাম দিলো। তিনি ঝিনুককে বুকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেলেন। ঝিনুক রুমে গিয়ে শ্বশুরকেও পা ধরে সালাম দিলো। তিনি মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে বললেন,
কেমন বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে তোমাকে। তোমাদের রুমে গিয়ে রেস্ট নাও। ফ্রেস হও।

ঝিনুক তাদের রুমে না গিয়ে আরিশার রুমে ঢুকেই শুয়ে পড়লো। একটু পরেই ভাতঘুমে তলিয়ে গেলো।

সালেহা রান্নাঘরে ব্যাগগুলো নিয়ে গেলো। জোবেদা বেগম, জামান খান, আরশাদ,আরিশা ব্যাগে কি কি আছে দেখার জন্য অপেক্ষা করছে। সালেহা সব বের করে করে রাখছে।

তারা সবাই মুগ্ধ হয়ে গেলো এত কিছু দেখে। জোবেদা বেগম আপ্লুত গলায় , ঝিনুকের খালা এতটা না দিলেও পারতেন।

জামান সাহেব, সগর্বে বললেন,
দেখলে খানদানি মেয়েকে ঘরে তুলেছি। কথায় আছেনা,
‘ নদীর পানি ঘোলাও ভালো। জাতের মেয়ে কালো ও ভালো। ‘

আরিশা তাদের প্রশংসা করছে প্রাণখুলে। সালেহা চোখ বড় করে,
এর জন্যই বলি কি ব্যাপার এত ব্যাগে কি।

খালাম্মা দেখেন, কত্ত কিছু দিলো। গাছের নারিকেল, গাছের কচি ডাব, হাঁসের ডিম,হাঁসের মাংস রান্না,কতগুলো কই মাছ ভাজা, সাঁচের পিঠা,নারিকেলের পিঠা,গাছের সবজি, চিকন লতি ক্ষেতের, আল্লাগো এটা আমার ম্যালা প্রিয়।

আরশাদ কিছুই বলছেনা। দাঁড়িয়ে দেখছে। সালেহা বললো ভাইজান এরপরে আমিও যামু আপনের সাথে। দেখছেন ভাবি একটু মোটা হইছে গ্রামের খাওয়া খাইয়া। বিয়ার দিনের চাইতে এখন বেশী সুন্দর লাগতেছে। আমিও এমন হইতে চাই। সবাই হেসে ফেললো।

জামান সাহেব বললো, সালেহা তুই অবসর হয়ে আমাকে একটা ডাব কেটে দিস। ডাবের পানি খুব উপকারী।

আরশাদ নিজের রুমে গিয়ে এসি ছেড়ে রেস্ট নিচ্ছে। জামান খান ও নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লেন।
জোবেদা বেগম তাদের লাঞ্চ করতে বললে,
মানা করলো আরিশা। মা আমরা খেয়েছি। ভাবি কিছুই খায়নি। ঘুম থেকে উঠে খাবে। জোবেদা বেগম আরিশাকে বাসার পিছনের বারান্দায় ডেকে নিলো। কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
কিরে ঝিনুক তোর রুমে ঘুমাচ্ছে কেন? গ্রামে কোন সমস্যা হয়নিতো?

আরিশা চোখ বড় করে, কি যে বল আম্মু। হয়নি মানে?একাধিক বার হইছে।

তাহলে তোকে কি আমি ঘোড়ার ঘাস কাটতে সাথে দিয়েছি?

আম্মু আমার সামনে কিছুই হয়নি। যা হয়েছে আমার আড়ালে হয়েছে রুমের ভিতরে। আরিশা যা জানে সব বৃত্তান্ত মাকে জানালো। এবং তারা দুজন দুজনের সাথে কথার আড়ি নিয়েছে এটাও জানালো।

এসব কোন কথা? আমি আরশাদকে কিছু জিজ্ঞেস করবো?

একদম না। লেবু বেশি চিপলে রস তেতো হয় জানতো। তাই তুমি না জানা, না বোঝার ছল করে থাকবে। আমি দেখি কিভাবে কি করতে পারি আস্তে আস্তে। আব্বুকেও কিচ্ছুটি বলার দরকার নেই। নইলে ঝামেলা বেশি হয়ে যাবে। ভাবিতো কোথাও চলে যাচ্ছেনা। আছেই।

আচ্ছা বলে জোবেদা বেগম আফসোসের দম ফেললেন।

ঝিনুক রাতে আরিশার সাথে ঘুমালো। জামান খান আরশাদকে বললেন,ঝিনুককে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য। পরেরদিন সকালে আরশাদ ঝিনুককে নামকরা একটি পরিচিত কলেজে নিয়ে ভর্তি করিয়ে দিলো। যতটুকু কথা না হলেই নয়। ঠিক ততটুকু কথাই হয় তাদের মাঝে।

পড়াশোনার জন্য যা যা প্রয়োজন সব কেনা হলো। কলেজের ড্রেস বানানো হলো।

দুদিন পর জোবেদা বেগমের সাথে ঝিনুক মাগরিবের নামাজ পড়লো। প্রসঙ্গক্রমে ঝিনুককে বললেন,
মারে জানিনা কতটুকু পূণ্য করেছি জীবনে। যতকিছুই হোক স্বামীকে ছেড়ে আলাদা বিছানায় ঘুমাইনি।
কারণ হাদীসে বর্ণিত আছে,
‘ যে নারী একরাত স্বামীর বিছানা থেকে অন্য বিছানায় রাত্রি যাপন করবে। ভোর হওয়া অবধি সত্তর হাজার ফেরেশতা তাকে নালত দিতে থাকবে। সুবহানাহু! ‘ বলে তিনি ঝরঝর করে চোখের পানি ছেড়ে দিলেন।

ঝিনুক স্রস্টার প্রতি বিশ্বাসী। তাই পরজগতের ভয়ে রাতে নিজেদের রুমে ঘুমাতে গেলো। আরশাদের একপাশে হাঁটু ভাঁজ করে ঘুমিয়ে গেলো। রাতে ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য আরশাদ ঘুম থেকে উঠলো। আশ্চর্য হয়ে গেলো ঝিনুককে এ বেডে দেখে। খাটে গিয়ে বসতেই, ঝিনুকের গোঙানি শুনতে পেলো। ঠকঠক করে কাঁপছে ঝিনুক।

ঝিনুকের করা ওয়াদার কথা মনে করে, কপালে হাত দিতে গিয়েও থেমে গেলো। একটা ভারি কাঁথা নিয়ে ঝিনুকের গায়ের উপর মেলে দিলো। লাইট অফ করে শুয়ে গেলো। কাঁথায় শীত মানছেনা। ঝিনুক ঘুমের ঘোরে আরশাদকে জড়িয়ে ধরলো। আরশাদ টের পেলো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।

উপায়হীন হয়ে আরশাদ বলল, ঝিনুক প্লিজ তোমার ওয়াদা তুলে ফেলো। তাহলে তোমাকে ওম দিতে পারি। এ রুমে কাঁথা ছাড়া লেপ কম্বল নেই। এত রাতে কাউকে ডাকাও ঠিক হবেনা।

ঝিনুক অস্পষ্ট স্বরে মিনমিনিয়ে, আচ্ছা তুলে ফেললাম ।

আরশাদ যেন স্বর্গে যাওয়ার দরজার চাবি হাতে পেলো। ঝিনুককে টেনে নিজের সুঠাম বাহুর উপর আনলো। শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ঝিনুকের কপালে,দুচোখের পাতায়, সারাগালে উষ্ণ চুমু খেলো অনবরত । ঝিনুকের এসবে হুশ নেই এখন। বেহুশ হয়ে পড়ে আছে। আরশাদের বুকের ঘন পশমের ওমে শীতের পরিবর্তে উষ্ণতা অনুভব করছে ঝিনুক। শরীর কাঁপাও ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসছে।

আরশাদ প্রবল নেশাতুর দৃষ্টিতে ঝিনুকের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবলো , এমন এক কঠিন মুহুর্তে অনুমতি দিলে। শুধু তোমাকে ধরেই থাকতে হচ্ছে।

সামনে কোর্মা পোলাও। অথচ দুহাতে লোহার শিকল পরা। কেবলমাত্র দুচোখ ভরে এর শৈল্পিকতা দেখে আর নাকভরে খুশবুই নেয়া যাচ্ছে। লোভনীয় খাবারের লোভ সামলানো যে কি কষ্টকর। তা ক্ষুধার্ত মানুষটিই কেবল অনুধাবন করতে পারে।

চলবে…৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here