# তোমার_নেশায় !
,
(০৩)
,
,
কঠিন হৃদয়ের মেয়ে তৃষ্ণা!
.
.
.
.
.
আমার মাথায় কিছুই ধরছেনা। একে একে বাবার সব
বন্ধুদের কাছে গেলাম কিন্তু কেউই আমাদের সাহায্য
করতে রাজি হচ্ছেনা। রুপাঞ্জন খান কে একবার হাতের
মুঠোয় পেয়ে নেই শুধু সুধে আসলে সব শোধ করব।
বাংলাদেশে কোনো ব্যংকে গিয়ে লাভ নেই কারন
তারা কোনো ওয়ারেন্টার ছাড়া এতো বড় এমাউন্ট লোন
দেবেনা। উত্তেজনায় ধর ধর করে ঘামছি। তখনই
ম্যেনেজারের ফোন এলো,
,
:– হ্যালো স্যার! টাকার কোনো ব্যবস্থা হলো??
,
:– আমি চেষ্টাই আছি। রুপাঞ্জন খান সবদিকে কবজা
করে রেখেছে কেউ আমাদের লোন দিবেনা।
,
:– তাহলে আমরা এখন কি করবো স্যার?? ফরেন ব্যংক
অফিসার বলেছেন কালকের মধ্যে তাদের টাকা না
পাঠালে তারা আমাদের অফিস সিল করে দিবে।
,
:– ও মাই গড! মাত্র ২৪ ঘন্টা মধ্যে এতোগুলা টাকা।
আচ্ছা ম্যনেজার আপনি প্লিস বাবা কে এই বিষয় কিছু
বলবেন না। উনি টেনশান করবেন। আমি একটা ব্যবস্থা
করবই। রুপাঞ্জন খান এতো সহজে জিতে যেতে
পারেননা।
,
:– অকে স্যার! best of luck!
.
.
ফোন রেখে দিলাম। টিস্যু বের করে ঘাম মুচ্ছিলাম তখন
একটা আন নোন নাম্বার থেকে কল। আমি কেটে দিলাম
কারো সাথে কথা বলার মুড নেই। আবার ফোন বাজছে,
মেজাজ পুরোই খারাপ লাগছে, একদিকে রুপাঞ্জন খান
আর এদিকে এই ফোন! এই ফোন টা ফেলে দিলে ভালো
হতো। তখনই একটা ম্যেসেজ এলো, “ফোন টা রিছিভ করুন,
হতে পারে আপনার দরকারি!”
এইসময় এমন রহস্য কে করছে আমার সাথে। দেখতে দেখতে
আবার ফোন বেজে উঠল। আমি এবার খুব রেগেই রিছিভ
করলাম!
,
:–who the hell are you??? কল কেটে দিচ্ছি বুঝতে পারছেন
না বিজি আছি!
,
:– কুল কুল! এতো তেজ দেখালে হবে? আমি তো আপনার
শুভাকাঙ্ক্ষী।
,
:– দেখুন এটা ফাজলামোর সময় না। i am busy now!
,
:– আমি যদি বলি আমি আপনাকে দু কোটি টাকা দিতে
পারবো তাহলেও কি আপনি বিজি থাকবেন?
,
কথা টা শুনেই শক খেলাম। অচেনা অজানা লোকটা কি
করে জানলো যে আমার দু কোটি টাকা প্রয়োজন।
:–কি বলতে চান আপনি??
,
:– আপনার সামনে যে কার দাড়িয়ে আছে সেটাতে উঠে
পড়ুন। আর আমার কাছেই চলে আসুন তাহলেই আপনি
আপনার টাকা পেয়ে যাবেন।
,
:– এই শুনন! আমাকে কি দেখতে বোকা মনে হয়?? এটা দু
টাকা নয় যে আপনি চাইলেই দিয়ে দিবেন। কোনো সার্থ
ছাড়া শুধুমাত্র আমার ফেইস দেখে আপনি আমায় দুকোটি
টাকা দিতে চান। সরি, অন্য কাউকে বোকা বানান।
আমার কাছে ফালতু বকবকের সময় নেই।
,
:–কে বলেছে যে আমি আপনাকে এমনেই এমনেই দুকোটি
টাকা দেব। আমার কিছু কান্ডিশান আছে সেটা আপনি
আমার কাছে আসলেই বুঝতে পারবেন।
,
:– ওকে ফাইন আসতেছি আমি!
,
:- গুড লাক। বাই!
,
,
সামনে দাড়ানো একটা হোয়াইট কারে উঠে বসতেই গাড়ি
চলতে শুরু করল। মনের মধ্যে এক আলাদা ভয়ে কাজ করছে
টাকা টা পাবো তো?? লোক টার কোনো বদ উদ্দেশ্য নেই
তো। কি চায় সে আমার কাছে।
কিছুদুর যেতেই গাড়ি থেমে গেল। আমি বিরক্ত হয়ে
ড্রাইবার কে জিজ্ঞাস করতে যাব, তখনই আবার আগের
নাম্বার থেকে কল এলো। আমি রিছিভ করতেই,
,
:– খুব তাড়াতাড়ি চলে এসেছেন বুঝি? এখন ও তো অনেক
পথ বাকি ম্যেডাম। গাড়ি থেকে নেমে একটা কালো কার
দেখবেন সেটাতে উঠে পড়ুন। গো ফাস্ট!!
এই বলেই ফোন রেখে দিল। লোকটা কি গেইম খেলছে
আমার সাথে। সময় নষ্ট করা যাবেনা, গাড়ি থেকে
নামতেই কালো কার দেখতে পেলাম। কারে উঠতেই
আবার কল এলো,
:–ঠিকঠাক উঠেছেন ম্যেডাম??
,
:– এতো ফাজলামি করছেন কেন আমার সাথে??
,
:– আর কোনো ফাজলামি হবেনা এবার সোজা চলে আসুন।
বায়!!!
,
প্রায় ২০ মিঃ পর কার টা একটা সাদা বাড়ির সামনে
এসে থামল। এই কার বাড়ি?? এখানে তো এর আগে কখনই
আসিনি এখানে আমাদের পরিচিত কারো থাকার
সম্ভাবনা খুব কম। যাইহোক ভেতরে গেলেই বুঝতে
পারবো।
আমি ভিতরে প্রায় দৌড়ে ডুকে হাপাতে হাপাতে
বললাম,
:– আমি চলে এসেছি। কি করতে হবে আমায় বলুন।
,
চেয়ারের উল্টো একজন লোক বসে আছেন। আর তার
চারপাশে অনেকগুলা বডিগার্ড দাড়িয়ে আছে। সে
আমার কথা শুনে আমায় বামে তাকাতে বলল,
আমি বামে তাকাতেই টাকা দিয়ে ভরা একটা লাগেজ
দেখতে পেলাম। লোকটা বলল,
:- এখানে পুরো দুকোটি টাকা আছে!
,
আমি টাকা গুলা দেখে প্রায় দিশেহারা হয়ে গেলাম।
যে করেই হোক আমায় টাকা গুলা পেতেই হবে। নাহলে
বাবার এতো কষ্ট করে গড়ে তোলা বিজনেস মাটিতে
মিশে যাবে।
আমি হাসিমুখে টাকা গুলার দিকে এগোতেই লোকটা
আমায় বাধা দিয়ে বলল,
,
:– আমার কথা শেষ হয়নি। আমি যে বলেছিলাম আমার
কিছু কান্ডিশান আছে। ভুলে গেছো?
,
আমি লোকটার দিকে ঘুরে তাকালাম। কণ্ঠটা অনেক
চেনা লাগছে কিন্তু ওইদিকে মুখ করে থাকায় দেখতে
পারছিনা লোকটা কে। আমি হতভম্বের মতো বললাম,
:- আমি রাজি। কি করতে হবে বলুন!
,
:– বেশি কিছুনা যাস্ট এই পেপারে সাইন করো।
,
;- আমি পেপার টা নিয়ে দেখতে লাগলেই সে বলল,
আমার শর্ত ছিল পেপারে সাইন করা ওতে কি লেখা
আছে সেটা দেখা না। আমার মনে এবার খটকা লাগছে,
এই সব কিছু রুপাঞ্জন খানের কোনো প্ল্যেন নয়ত। আমি
কি চলে যাবো?? না না এতো গুলা টাকা ২৪ ঘন্টায়
জোগাড় করা সহজ হবেনা। আমার যা হয়ে হোক সাইন
করে দেই!
আমি কাপা হাতে সাইন করে দিলাম। আমি পেপার টা
লোকটার হাতে দিতেই, সে হা হা করে অটহাসি তে
ফেটে পড়ল। আর চেচিয়ে বলল, অফিসার এরেস্ট হার!
,
আমি হতবাক হয়ে গেলাম। লোকটা কাকে এরেস্ট করতে
বলছে আমাকে। ভাবতে না ভাবতে পুলিশ এসে আমার
হাতে হ্যেন্ডকাপ পরিয়ে দিল। আমি কিছুই বুজতে
পারছিনা আমি তো কোনো অন্যায় করিনি তবে এই সব
কি কোনো ট্র্যেপ ছিল।
,
:– কি ভাবছো মিসেস রুপশা????
,
চমকে লোকটার দিকে তাকালাম,
:– রুপাঞ্জন খান????? আপনি??????
,
:– কি ভেবেছো কি তুমি? তুমি কোথায় যাচ্ছো কি করছো
সেইসবের কিছুই জানতে পারবনা আমি? তোমায়
বলেছিলাম না আমি তোমাদের মান, সম্মান, বিজনেস সব
বরবাদ করব! আমি পেরেছি মিসেস রুপশা, পেরেছি
আমি!!!তুমি নিজেই নিজেকে বরবাদ করেছো, একটা সাইন
মাত্র??? তুমি জানো তুমি যেই কাগজে সাইন করেছো।
জানোনা?? আচ্ছা আমি বলছি,
আমি মিস রুপশা চৌঃ সিকার করছি যে, এতোদিন আমি
আমার কম্পানি বিজনেসের পাশাপাশি ড্রাগ বিজনেস ও
করতাম। আমার সকল প্রোপার্টি ড্রাগ বিক্রির কালো
টাকায় কেনা। তাই আমি সেচ্চগায় আমার সব সম্পদ,
বিজনেসে, অফিস রুপাঞ্জন খান কে দান করছি। এতে
এরপরে আমার কোনো হস্তক্ষেপ থাকবেনা!!!!!
রুপশা চৌধুরী।
.
.
.
আমার কানে যেন কথা গুলা বাজছে। কি করলাম আমি?
আমি ড্রাগ বিজনেস করি?? না না না!!
রুপাঞ্জন আমার কানের কাছে এসে বলল,
It’s over rupsha! you are finished…………
,
অফিসার নিয়ে যান ওনাকে। পুলিশ আমায় নিয়ে যাচ্ছে।
ওই পশুটা আমায় অপমান করার সব ব্যবস্থা করে রেখেছে
বাইরে প্রেস মিডিয়া বার বার আমায় বিভিন্ন প্রশ্ন
করছে। আজ আমি নির্বাক। কিছু বলার ভাষা নেই আমার!
আমায় ক্ষমা করো বাবা! আমি পারলাম না তোমার
ছেলের মতো তোমার সম্রাজ্য কে রক্ষা করতে। পুলিশের
গাড়িতে উঠে পশুটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম বিজয়ের
হাসি হাসছে।
আমি এতো সহজে হেরে যাবোনা রুপাঞ্জন খান। I will be
back….
নিরাপরাদের কোনোদিন শাস্তি হয়না। ধীরে ধীরে
রুপাঞ্জন মোডের বাকে অদৃশ্য হয়ে গেল।
.
.
.