Love With Dragon part -08

#Love_With_Dragon
#Episode_08
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]

দুটো নেকড়ে রবিনের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো।
রবিন রিদিয়াকে ছেড়ে দিয়ে দূরে ছুড়ে মারলো।
রবিন ভাম্পায়ারের রূপে আসল। তুমুল মারামারি চলছে নেকড়ে আর ভাম্পায়ারের এর মধ্যে। রিদিয়াকে অনেক জোরে ছুড়ে মেরেছে রিদিয়া মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল।
প্রায় চল্লিশ মিনিট মারামারির পর রবিন হাঁপিয়ে গেল।শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে গেছে। আহত শরীর নিয়ে সেখান থেকে পালিয়েছে।নেকড়ে দুটো মনুষ্য রূপে আসলো।

— অনি রিদিয়া প্রচুর আঘাত পেয়েছে মাথায়।ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।কিন্তু আন্টি আর মিহি আপু কোথায়।রবিন আবার কোনো ক্ষতি করেনিতো ওদের। (নীল)

— সত্যি তো আন্টি আর মিহি আপুকে দেখছিনা।(অনিমা)

— অনি তুই রিদিয়াকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যা।আমি ওদের খুঁজে বের করছি।(নীল)

অনিমা রিদিয়াকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে চলে গেল।

এইদিকে নীল মিসেস মেহের আর মিহিকে পুরো বাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজতেছে।
কিচেনের পাশ দিয়ে নীল যাওয়ার সময় কিছু একটা পরার শব্দ পেল।
নীল কিচেনে গিয়ে দেখে মিসেস মেহের আর মিহি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফ্লোরে অজ্ঞান হয়ে পরে আছে।
নীল মিসেস মেহের, মিহিকে নিয়ে গেস্ট রুমে শুইয়ে দিলো।

নীল ভালোভাবে দুজনকে পর্যবেক্ষণ করে দেখলো।

— এখন কি করি এদের যেভাবে অজ্ঞান করেছে নেকড়ে রবিন দুজনের জ্ঞান ফেরানোর উপায় আমার কাছে নেই। একমাত্র রবিন আর ড্রাগন কিং পারবে এদের দুজনের জ্ঞান ফিরাতে। রবিন পালিয়েছে ওর বাবা পিটাস এর কাছে গেলে বাঁধবে আরেক সমস্যা। ড্রাগন কিং এর কাছে গেলে সম্ভব হবে কিনা জানিনা।ওনি রাজি হলেই সম্ভব। ম্যাজিকেল হোয়াইট রোজ ছাড়া ওদের জ্ঞান ফিরানো সম্ভব না। ম্যাজিকেল হোয়াইট রোজ পরী রাজ্য আর ড্রাগন রাজ্য ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না।কিন্তু রবিন কিভাবে ম্যাজিকেল হোয়াইট রোজের কাছে পৌঁছালো। আমার জানা মতে সেখানে অনেক ড্রাগন পাহারায় থাকে।আর না হয় পরী রাজ্যের কেউ তাকে সাহায্য করেছে।(নীল)
______________________

— ডাক্তার আংকেল রিদিয়া ঠিক আছে। (অনিমা)

— অনি রিদিয়া মাথায় প্রচুর আঘাত পেয়েছে। এখন ও
আগের মতো স্বাভাবিক ব্যবহার করছে না। কেমন জানি অদ্ভুত ব্যবহার করছে। (ডাক্তার)

ডাক্তারের কথা শুনে অনিমার মন খারাপ হয়ে গেল।

— কেমন ব্যবহার করছে আংকেল। আমাকে ওর কাছে নিয়ে চলুন প্লিজ। (অনিমা)

ডাক্তার অনিমাকে নিয়ে রিদিয়ার কাছে গেল।
অনিমা কেবিনে ডুকে অবাক হলো সাথে ভীষণ হাসিও পাচ্ছে অনিমার।

— রিদিয়া তুই এইভাবে নিচে শুয়ে আছিস কেন🙄…..(অনিমা)

— কে আপনি আমি যেভাবেই বসে থাকি না কেন তাতে আপনার কি…..যান তো এখান থেকে আমাকে একটু শান্তিতে শুয়ে থাকতে দেন।(রিদিয়া)

(রিদিয়া কেবিনের ফ্লোরে হা-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে। এমন ব্যবহার করছে যেন সে অনিমাকে চিনে না।)
অনিমা রিদিয়ার কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো।
অনিমা রিদিয়ার কাছে এসে বসলো।

— তুই আমায় চিনতে পারছিস না দোস্ত। আমি……..(অনিমা)

অনিমা আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিদিয়া চিৎকার করে বলে ওঠে,,,,,,

— আমি বললাম না আপনাকে চিনি না কেন আমাকে বিরক্ত করছেন বেরিয়ে যান এখান থেকে। (রিদিয়া)

রিদিয়াকে এমন বিহেভ করতে দেখে অনিমা অনেক কষ্ট পেল।
নার্সরা অনিমাকে কেবিন থেকে সরিয়ে দিল।
_________________________

অনিমার থেকে রিদিয়ার খোঁজ পেয়ে আকাশ, মেঘলা হসপিটালে চলে আসল।
— অনি রিদিয়ার কি অবস্থা..( মেঘলা)

— ওর কি হয়ে গেল মেঘলা ও আমাকে চিনতে পারছে না।সামনে গেলেই চিৎকার করা শুরু করে। (অনিমা)

— কি…হ্ তোর মাথা ঠিক আছে ও এমন করবে কেন।হয়তো তোর সাথে মজা করেছে।(মেঘলা)

— মজা না সত্যি বলছি আমি।(অনিমা)

তারপর রিদিয়ার বাড়ির সব কাহিনী মেঘলা আর আকাশকে বললো।
দুজনে সবটা শুনে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো।

— এত কিছু হয়ে গেল আর তুই এখন আমাদের বলছিস।আমাদের ডাকলে এমনটা না ও হতে পারতো। (আকাশ)

— তখন মাথায় কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছেল আকাশ।কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। আমি আর আকাশ মিলে রবিনকে আক্রমণ করেছি সুযোগ পেয়ে ও রিদিয়াকে আঘাত করে।(অনিমা)

তিন জন মন খারাপ করে বসে আছে।

— স্পর্শিয়া – আদরকে সবটা জানিয়েছিস।(মেঘলা)

— দুজনের মোবাইল বন্ধ। অনেকবার ট্রাই করেছি কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি।(অনিমা)

— স্পর্শিয়ার আদরের সাথে কি এমন হয়েছে আমি বুঝতে পারছি না। আদর ভাম্পায়ার স্পর্শিয়া আবার কোনোভাবে জানতে পারেনি তো।(আকাশ)

— তুই ঠিক বলেছিস আকাশ আমারও কেন জানি এমনটাই মনে হচ্ছে। (অনিমা)

— ওদেরটা পরে সমাধান করবো।এখন রিদিয়াকে নিয়ে ভাব।(আকাশ)
____________________________

কলিং বেলের আওয়াজ শুনে স্পর্শিয়া অবাক হলো।
— এতো রাতে কে হতে পারে। (স্পর্শিয়া)

স্পর্শিয়ার ভয় লাগতে শুরু করলো।
স্পর্শিয়া দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছে দরজা খুলবে নাকি খুলবে না যদি খারাপ কিছু হয়।আমার আপন বলতে কেউ নেই। বাবা – মা দুজন মারা গেছে। সেই থেকে আমি একা।একা একাই বড় হয়েছি।আমার দাদু ছিল কিন্তু এখন দাদুও আর পৃথিবীতে নেই। এখন বন্ধুরাই আমার সব।কিন্তু ওরা কখনো এতো রাতে আমার বাড়িতে আসেনি কখনো। আসলেও ফোন করে আসে। মোবাইলটার যে কি হলো কোনো কাজ করছে না।কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না।

স্পর্শিয়ার ভাবনার মাঝে আবার ও কলিং বেল বেজে উঠল। কলিং বেলের শব্দে ভাবনা থেকে বের হয়ে এলো সাথে ভয়ও পেল।
স্পর্শিয়া কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা খুলে।
দরজা খুলে দেখে কেউ নেই।
কাউকে না দেখতে পেয়ে স্পর্শিয়ার ভয় দ্বিগুণ বেড়ে গেল।

— এতো রাতে কে এমন মজা করতে আসে।(স্পর্শিয়া)

স্পর্শিয়া দরজা বন্ধ করে সামনে তাকাতেই আঁতকে উঠল।

— আ….আদর তু…তুই… (স্পর্শিয়া)

— হ্যাঁ আমি।কেন এতরাতে অন্য কাউকে আশা করেছিলি নাকি।(আদর)

ভয়ে স্পর্শিয়ার হাত -পা কাঁপতে শুরু করলো।

— আজকে কি ও আমার শরীরের সব রক্ত শুষে নিবে।
ভয়ে ভয়ে স্পর্শিয়া পিছিয়ে যাচ্ছে।(স্পর্শিয়া মনে মনে বলে)

আদর রিদিয়াকে এমন ভয় পেতে দেখে অবাক হলো।

— তুই ভয় পাচ্ছিস কেন স্পর্শিয়া। আমি কি খারাপ কিছু করেছি তোর সাথে। কলেজেও তুই আমার সাথে এমন করেছিস।কেন এমন করছিস তোর এমন আচরণ দেখলে আমার বুকে যন্ত্রণা হয়। আমি তোকে ভালোবাসি স্পর্শিয়া।(আদর)

আদরের মুখ থেকে ভালোবাসি শব্দটা শুনে স্পর্শিয়া আরো ভয় পেয়ে গেল।
(স্পর্শিয়া ভয় পাওয়ার কারন আদর ভাম্পায়ার। স্পর্শিয়া মনে করছে আদর খারাপ ভাম্পায়ার ওকে মেরে ফেলতে এসেছে)

— আমি কোনো সাধারণ মানুষ নই এইজন্যই তোকে কোনোদিন ভালোবাসার কথা বলতে পারিনি।তুই জানতে পারলে আমায় মেনে নিবি না। আমি একজন……. (আদর)

— ভাম্পায়ার…(.স্পর্শিয়া)

স্পর্শিয়ার মুখে ভাম্পায়ার শুনে আদর আশ্চর্য হলো সাথে মনে মনে ভয় কাজ করছে।

— হ্যাঁ আমি সব জানি তুই তুই একটা খারাপ ভাম্পায়ার। আ….আমি ওইদিন রাতে তোর আসল রূপ দেখে ফেলেছি। তুই একজন নির্দোষ মানুষকে মেরে ফেলেছিস।আমার কাছে থেকে দূরে থাক।আমার ভয় লাগে তোকে দেখলে আমাকে মেরে ফেলতে এসেছিস তুই। (স্পর্শিয়া)

— পাগলের মতো কি সব বলে যাচ্ছিস তুই স্পর্শিয়া।তুই পুরো বিষয় না জেনেই আমায় খারাপ উপাধি দিয়ে দিলি।(আদর)
আদর স্পর্শিয়ার কাছে আসলো।

— আ…আমার কাছে আসবি না তুই। (স্পর্শিয়া)

আদর কিছু না বলে স্পর্শিয়া কে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,,

— পাগলী আমার। সব কথা আগে শুন তারপর তুই আমাকে যা বলার বলিস।(আদর)

আদরের স্পর্শ পেয়ে স্পর্শিয়ার পুরো শরীর কেঁপে উঠল। সাথে ওর ভিতরের ভয়ও কিছুটা কমে গিয়েছে। মনে হচ্ছে সবচেয়ে শান্তির জায়গায় আছে সে এই মুহূর্তে।
আদর স্পর্শিয়াকে চেয়ারে বসিয়ে নিজেও চেয়ার টেনে স্পর্শিয়ার কাছে এসে বসলো।

— ওই দিন যে লোকটাকে আমি মেরেছি ওই লোকটা একটা মায়ের বুক খালি করেছে।বেচারির মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করে মেয়েটিকে মেরে ফেলেছে।মেয়েটির মায়ের কান্না শব্দ শুনে আমি সেখানে যাই।গিয়ে দেখি লোকটা মেয়ের মাকে গাছের সাথে বেঁধে মায়ের সামনে মেয়েকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছে।কোনো মায়ের সামনে তার সন্তানকে মারলে তার কেমন লাগবে। আমি রেগে লোকটাকে আমার বাগানে নিয়ে এনে মারি।মেয়ের মায়ের সামনে মারলে আরো ভয় পেয়ে যাবে এইজন্য আমি এমনটা করেছি। কিন্তু কপাল কতো খারাপ দেখ তুই ওইসময়ে আসলি।(আদর)

আদরের সব কথা শুনে স্পর্শিয়ার এখন নিজের ওপর রাগ লাগছে সাথে বুকের ভিতর কষ্ট হচ্ছে।

— সবটা না জেনে আমি আদরকে ভুল বুঝেছি। (স্পর্শিয়া)

স্পর্শিয়া আদরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে,,, ,,

— আমি তোকে ভীষণ ভালোবাসি আদর😓……..(স্পর্শিয়া)

চলবে………
#লেখনীতে__ফিহা
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]
______________________

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here