অপরাজিতা পর্ব -০৭

#অপরাজিতা
#৭ম_পর্ব
#স্নিগ্ধতা_প্রিয়তা

আনানও যে বিয়ের কথা গোপন রাখতে চাইছে এটা বলার পর আনানের এক্সপ্রেশন দেখে রাজিতা যেন বোকা বনে গেলো, তাড়াতাড়ি করে বলল,
–“না! কিছুনা।”
–“তুমিতো এটাই চাচ্ছো যে, আমার সব রিলেটিভদের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেই?”
–“না, আসলে আমি তা বলতে চাইনি। আমি আসলে চাচ্ছিলাম…”
–“ওকে, তোমার কথাই থাকবে, যতদিন না আমি সবার সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি ততদিন আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা গোপন থাকবে৷ আমি যত দ্রুত পারি একটা গেট-টুগেদার পার্টির আয়োজন করছি। তবে আমার একটা শর্ত আছে।”
–“কি শর্ত?”
–“আমার সব কথা তোমাকে শুনে চলতে হবে। প্রতিদিন আমার সাথে ভার্সিটি আসবে, আর আমার সাথেই বাসায় ফিরবে।”
–“আচ্ছা।”
কথাটা বলেই রাজিতা অবাক চোখে তাকায় আনানের দিকে। তারপর বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় আনানের দিকে,
–“প্রতিদিন আপনার সাথে যাবো-আসবো মানে? আপনি কি প্রতিদিন আমার সাথে আসবেন? আপনার আর কোন কাজ নেই?”
–“আজ থেকেতো এটাই আমার কাজ।”
–“মানে? আপনি প্রতিদিন আমার ভার্সিটি আসবেন কেন?”
–“এটা কি তোমার একার ভার্সিটি? নাকি এখানে তোমার নাম লেখা আছে?”
–“না মানে, আমি বলছিলাম যে, গাড়ি পাঠিয়ে দিলেইতো চলবে! শুধু-শুধু প্রতিদিন আপনি কেন আসবেন?”
–“ভেবেছিলাম তোমাকে কথাটা বলবো না। সারপ্রাইজ দিবো! কিন্তু তুমি সব মাটি করে দিলে!”
–“কি মাটি করলাম?”
–“ক্লাসে যাওনি কেন?”
–“আমি ক্লাসে যাইনি, আপনি কি করে জানলেন?”
–“তুমি কার ক্লাস ফাঁকি দিয়েছো, জানো?”
–“উম! কাল ওরা বলছিলো যে, প্রথমেই নাকি নতুন স্যারের ক্লাস আছে। কিন্তু নতুন স্যার!”
বলেই আনানের দিকে আঙুল তুলে তাকায় রাজিতা। আনান মৃদু হেসে মাথা নাড়িয়ে বলল,
–“‘এ আর ‘ এর ক্লাস মিস করেছো তুমি।”
–“‘এ আর’… আই মিন, আনান রেদোয়ান! ”
–“এই প্রথম মনে হয় তুমি কোনোকিছুর সঠিক গেস করতে পারলে। আমার বউটার মাথায় তাহলে কিছুটা হলেও বুদ্ধি-সুদ্ধি আছে দেখছি!”
–“কিন্তু আপনি! কীভাবে সম্ভব!”
–“কেন? আমি কি ভার্সিটির টিচার হতে পারিনা? আমার যোগ্যতা নিয়ে তোমার কোনো সন্দেহ আছে?”
রাজিতা চারিদিকে তাকিয়ে আমতা-আমতা করে বলতে থাকে,
–“যোগ্যতার কমতি আছে বলেতো মনে হয়না! তবে অনেক বেশিই হয়ে যায়! ”
–“কি বললে? আরেকটু জোরে বলো। নিজে-নিজেই যদি শুনবে তাহলে বলার দরকার কি!”
–“আজ থেকে আমাকে প্রতিদিন আপনার সাথে যাওয়া-আসা করতে হবে?”
–“কেন? আবার কোনো সমস্যা হলো নাকি?”
–“সমস্যা নেই। তবে আপনার কথা দিয়ে কি লাভ হলো যে, বিয়ে গোপন রাখবেন! প্রতিদিন আপনার সাথে যাওয়া-আসা করলেতো এমনিতেই সবাই জেনে যাবে! আচ্ছা, বিয়ে গোপন রাখতে হবেনা। আজ হোক, কাল হোক সবাইতো এমনিতেই জেনে যাবে!”
আনান যেন কথাটা শুনে খুশি হয়ে গেলো।
–“আরে আমিওতো সেটাই বলছি! এটা লুকিয়ে রাখার কি আছে! আর আমি চাইনা আমার একমাত্র বউয়ের দিকে অন্যকেউ নজর দিক!”
–“আর আপনার ক্ষেত্রে?”
–“আমার ক্ষেত্রে মানে?”
–“কিছুনা।”
–“নেক্সট টাইম আমার ক্লাস স্কিপ করলে পুরো এটেন্ডেন্স জিরো দিয়ে দিবো।ক্লাসে কেন যাওনি?”
ক্লাসের কথা মনে হতেই রাজিতা জিভ কেটে বললো,
–“দেখেছেন! আপনার সাথে কথা বলতে গিয়ে নেক্সট ক্লাসের কথাও ভুলে গিয়েছি! এখন রাজীব স্যারের ক্লাস! এই স্যারের ক্লাস আমি এমনিতেই অনেক মিস করেছি, আজ মিস করলে আমার খবর হয়ে যাবে৷ আমার ক্লাস শেষ হলে আপনাকে কল করবনে৷ আল্লাহই ভালো জানে যে স্যার ক্লাস শুরু করে দিয়েছে কিনা!”
বলতে বলতে ছুটে চলে গেলো রাজিতা, আর ফোন বের করে সময় দেখতে লাগলো। আনান পেছন থেকে বলতে লাগলো,
–“আরে আস্তে যাও৷ পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙার ইচ্ছে আছে নাকি!”
রাজিতার সাথে কথা বলে আনানের সকালের রাগগুলো সব যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। ওর মাকে কল করে জানিয়ে দিলো যে, আজ ফিরতে একটু দেরি হবে, আর লাঞ্চ ওরা বাইরেই করে নিবে।

রাজিতা ক্লাসে গিয়ে দেখলো যে, স্যার ক্লাস শুরু করে দিয়েছেন।
ক্লাস শেষে রাজিতা ওর ক্লোজ ফ্রেন্ডদের ডেকে বললো যে,
–“শোন, তোদের একটা কথা বলার আছে।”
নেহা বললো,
–“সামথিং ইজ ফিশি!!!আজ কয়দিন তোমার হাব-ভাব ভালো ঠেকছে না আমার কাছে! আগে বলো ছেলেটা কে!”
কথাটা শুনে রাজিতা যে লজ্জা পেয়েছে তা সবাই খেয়াল করল। এইবার যেন নেহার সন্দেহটাকেই ওদের সত্যি মনে হলো৷ ওর আরেক বান্ধবী বলে উঠল,
–“আমাদের ক্যাম্পাসের নাকি বাইরের? ”
মালিহা আবার বলে উঠল,
–“নাকি সেটেল কেউ! আমাদের রাজিতাতো বেকার কাউকে আর চুজ করবে না। সেতো আবার বেকারদের খুব অপছন্দ করে।”
রাজিতা ওদের থামিয়ে দিয়ে বলল,
–“তোরাই কথা বলে যাবি! নাকি আমাকেও কিছু বলতে দিবি!”
ওর পাশ থেকে ওর আরেক বান্ধবী বলল,
–“আরে বান্ধবী বল, আমরা শুনছি। এই তোরা একটু চুপ করতো!”
রাজিতা এইবার বলে উঠল,
–“তোরা যা ভাবছিস তা নয়। আসলে সেদিন আমার বিয়ে হয়ে গেছে!”
কথাটা শেষ হতে না হতেই যেন ওরা সবাই চেঁচিয়ে উঠলো। ওদের চেঁচানো শুনে ক্লাসের মধ্যে থাকা বাকি সবাইও ওখানে এসে পড়লো কি হয়েছে তা দেখার জন্য। মালিহা চেঁচিয়ে বলতে লাগলো,
–“আমাদের মধ্যেকার একটা তারকা আকাশ থেকে খসে মাটিতে পড়ে গেছে। তার জন্য তোমরা সবাই দোয়া করো!”
নেহা বললো,
–“সত্যি বলছিস? নাকি আমাদের সাথে ফান করছিস?”
ততক্ষণে ক্লাসে থাকা সবাই ব্যাপারটা জেনে গেছে। রাজিতা লজ্জা মাখা কণ্ঠে বলল,
–“এটা কি মজা করার কোনো বিষয়! সত্যিই বলছি।”
মালিহা বললো,
–“কেমনে কি ভাই! আমরা কিছুই জানতে পারলাম না। অন্তত আমাদের জানাতেতো পারতি!”
–“আরে আমি নিজেইতো জানতাম না।”
–“আমাদের বোকা বানাচ্ছো না! আমরা কোন যুগে বাস করছি তা ভুলে যেওনা। এই যুগে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর জানানোর জন্য কি হাতি-ঘোড়ায় চড়ে যেতে হয় নাকি! একটা কল বা মেসেজ! ব্যস!”
–“আরে নিলা আপুর বিয়েতে চাচ্চু আমার জন্য সারপ্রাইজ রেখেছিলো! আসলে বিয়েটা নিলা আপুর নয়, আমার ছিলো! আমিও সেদিন জানতে পারলাম।”
রাজিতা ভাবলো যে, যাক ওদের বোকা বানানো গেছে। সত্যিটা ওদের জানালে বিভিন্ন প্রশ্ন শুরু করবে! আর ওর শান্তি লাগলো এটা ভেবে যে, ওর বান্ধবীদের সত্যিটা জানাতে পেরেছে৷ নইলে অতবড় একটা মিথ্যে চেপে রাখলে ও দম বন্ধ হয়ে মারাই যেতো।
ওরা সবাইতো বিয়ের ছবি দেখার জন্য পাগল হয়ে গেলো। কেউ কেউ বললো, ‘বরের ছবি দেখবে, বিয়ের ছবি দেখবে, বর কি করে?ট্রিট দাও তাড়াতাড়ি! ‘ চারদিক থেকে একেকজন একেক কথা বলতে লাগলো।
ভাগ্যিস তখন ক্লাসে স্যার চলে এসেছে! তাই রাজিতা আপাতত বেঁচে গেলো।

ক্লাস শেষ হতেই রাজিতা তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসলো ক্লাস থেকে। আনানকে কল করে তাড়াতাড়ি আসতে বললো।
আনানের আজ আর কোনো ক্লাস ছিলো না। তাই রাজিতা ফোন করতেই বের হয়ে গেলো৷
রাজিতা গাড়িতে উঠার সময় আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো যে, ওর কোন ফ্রেন্ড নেই। ও গাড়িতে উঠেই জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলতে লাগলো।

আনান পানির বোতলটা এগিয়ে দিয়ে বললো,
–“আগে একটু পানি খেয়ে নাও। তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে, কারো কিছু চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছো! কি হয়েছে?”
–“বড় বাঁচা বেঁচে গেছি আজ।”
–“তারমানে কি সত্যিই তুমি চুরি করে পালাচ্ছো!”
বলেই হাসতে লাগলো আনান। রাজিতা আনানের হাসিমুখ দেখে ক্ষণিকের জন্য সব ভুলে গেলো।
আনান লক্ষ্য করেনি যে, রাজিতা ওকে দেখছে।দেখলে হয়ত রাজিতা অমনভাবে তাকিয়ে থাকতে পারতো না। আনান রাজিতার দিকে তাকাতেই রাজিতা চোখ নামিয়ে নিয়ে পানি খাওয়া শুরু করলো৷
পানি খাওয়া শেষে বোতলটা আনানের দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলল,
–“ভার্সিটি থেকে কি আর চুরি করব বলুন! ভার্সিটির স্যারটাকেই চুরি করে নিয়ে আসলাম! কেউ দেখলে আমাকে কি আর আস্ত রাখবে! বলুন?”
বলেই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে রাজিতা তাকালো আনানের দিকে।
আনান কথাটা শুনে লজ্জা পেয়েছে কিনা বোঝা গেলো না। বোতলটা খুলে ঢকঢক করে বাকি পানিটা খেয়ে নিলো। রাজিতা বলে উঠল,
–“আরে, আমিতো মুখ লাগিয়ে পানি খেয়েছি৷ আপনি!”
আনান নিজেও মুখ লাগিয়ে পানি খায়। আনান এইবার বলল,
–“তুমি খেয়েছো বলে কি বোতলটা নোংরা হয়ে গেছে নাকি?”
–“না, তা নয়!”
–“তা অমন ছুটছিলে কেন?”
–“একটা সমস্যা হয়ে গেছে।”
–“কি?”
–“আমি ওদের বলে দিয়েছি যে, সেদিন নিলা আপুর না, আমার বিয়ে ছিলো।”
আনান খুশি হয়ে বলল,
–“এতে সমস্যার কি?”
–“সমস্যাতো এখানে নয়।”
–“তাহলে?”
–“ওরা আপনাকে দেখতে চায়।”
–“দেখিয়ে দাও।”
–“সেটাও সমস্যা নয় ”
–“আরে ভাই! এত না পেঁচিয়ে সোজাসাপটা বলে দাও আসলে সমস্যাটা কি!”
–“ওরা বিয়ের ছবি দেখতে চাচ্ছে।”
কথাটা শুনে আনান ও চিন্তায় পড়ে গেলো। আসলেইতো! ওদেরতো বিয়ের কোনো ছবিই নেই! এমনভাবে বিয়েটা হয়ে গেলো যে, ছবি তোলার কথা কারো মাথাতেই ছিলো না!
আনান কিছুটা ভেবে বললো,
–“একটা কাজ করা যেতে পারে।”
–“কি?”
–“তোমার চাচা-চাচি আর চাচাতো বোনদের আমাদের বাসায় ইনভাইট করে, তোমার আর আমার ঘরোয়াভাবে কিছু বিয়ের ছবি তুলে সেটাকে স্মৃতি হিসেবে রাখা যাবে৷ আর তুমি যদি চাও তো, আবার নতুন করে তোমার বিদায় অনুষ্ঠান! ”
–“আরে না! বিয়েতো হয়েই গেছে। নতুন করে আবার অনুষ্ঠান করার কোনো মানেই হয়না৷ আর কিছুদিন পরতো অনুষ্ঠান হচ্ছেই নাকি?”
–“হুম। কিন্তু এখনতো তোমার বান্ধবীদের ছবি দেখাতে হবে, তুমিতো ওদের অলরেডি বলে দিয়েছো যে, ধুমধাম করে তোমার বিয়ে হয়ে গেছে।”
–“ছোট আম্মু আর নিলা আপু কি আসতে রাজি হবে?”
–“ইনভাইট করলে অবশ্যই আসবে।”

রাজিতা একদিক দিয়ে খুশি হচ্ছিলো, অপরদিক দিয়ে ভয় পাচ্ছিলো এটা ভেবে যে, ওর চাচি আর নিলা আপু আনানদের বাসায় আসলে আবার কি কাহিনী শুরু করবে কে জানে!
আনান আর রাজিতা একটা রেস্টুরেন্ট থেকে লাঞ্চটা সেরে নিলো। রাজিতার প্রচুর ক্ষুধা লেগেছিলো, তাই আর কোন প্রশ্ন না করে খেয়ে নিলো। ও আবার ক্ষুধা একদম সহ্য করতে পারে না।
খাওয়া শেষে আনান নিজে গিয়ে কিছু দই-মিষ্টি আর ফলমূল কিনে আনলো। তারপর গাড়ি গিয়ে সোজা থামলো রাজিতার চাচার বাড়ি।
রাজিতা আনানের কাঁধে মাথা রেখে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো বুঝতেই পারেনি।
রাজিতা বুঝতে পারেনি যে, আনান ওর চাচা-চাচিকে ইনভাইট করার জন্য আজকেই এখানে চলে আসবে।
রাজিতার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকানো দেখে গাড়ি থেকে নামতে নামতে আনান বলল,

–“কালতো থার্স-ডে, কাল-পরশু দুইদিন ক্যাম্পাস বন্ধ আছে, তাই ভাবলাম ফটোসেশন এর পার্টটা তাড়াতাড়ি-ই সেরে ফেলি। কাল আমাকে একটু ক্যাম্পাসে যেতে হবে, ওখান থেকে ফিরে তোমাকে আর মাকে নিয়ে শপিং করব। আর আমার মামা-মামি আর খালামনিদেরও আজকেই ফোন করে দিবনে। পরশু-ই ফটোসেশন শেষ করে ফেলি। কি বলো?”

রাজিতা কি বলবে বুঝতে পারলো না। দুজনে চুপচাপ বাসার সামনে দাঁড়িয়ে কলিংবেল চাপতে লাগলো।
নিলা আর রিমি বাসায় নেই। ওর চাচাও একটু বাইরে গেছে। রাজিতার চাচি ওদের দেখে কিছুটা অবাক হলেও আজ আর কোনো খারাপ ব্যবহার করলো না।
আনান আর রাজিতাকে নিজ হাতে শরবত করে খাওয়ালো৷ হেসে হেসে কথা বলল, আর এটাও জানালো যে, পরশু ওরা সবাই অবশ্যই যাবে।
আনান এক মুহূর্তের জন্যও রাজিতাকে একা ছাড়লো না৷ যদি ওর চাচি আবার বে-ফাস কিছু বলে বসে!

আনান চলে আসার কথা বলতেই ওর চাচি বলল,
–“আরেকটু থাকো। সেদিন অমন করে চলে গেলে! আজও চলে যাবে? এই গরীব চাচিকে পছন্দ হয়না নাকি?”
–“আরে না, আন্টি। আসলে আমি আর রাজিতা দুজনেই অনেক টায়ার্ড৷ আর এখন কেউ বাসায়ও নেই, শুধু-শুধু আপনাকে বিরক্ত করতে চাইনা৷ এখনতো আসা-যাওয়া চলবেই!”
–“সেদিনের কথায় কিছু মনে করো না। আসলে নিলার কথায় আমি তোমাদের ভুল বুঝেছিলাম!”

রাজিতা ওর চাচির কথায় এত পরিবর্তন দেখে অবাক হয়ে যায়৷ নিজের দোষগুলো সব এখন নিলা বেচারীর উপর চাপিয়ে দিচ্ছে! তারপর ওর নিয়ন ভাইয়ার কথা মনে হতেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে। কারণ ওর চাচি আর নিলার একমাত্র ওষুধ হচ্ছে নিয়ন ভাইয়া। নিশ্চয়ই রিমি সেদিনের সব কথা বলে দিয়েছে! রিমিকে সামনে পেলে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে দিতো। কারণ রিমি ওকে ততটা পছন্দ না করলেও অপছন্দও করে না৷ নিয়ন বাইরে যাওয়ার পর থেকে কোনোকিছু হলে রিমিই নিরবভাবে রাজিতার উপকার করেছে। সবকিছু না হয় ওর চাচা, আর না হয় নিয়নকে বলে দিতো। রাজিতার আর কিছু করার প্রয়োজন পড়তো না।

রাজিতার চাচির স্বাভাবিক কথাবার্তায় আনানও কিছুটা স্বাভাবিক হলো। আনানও ভয়ে ভয়ে ছিলো যে, আজ আবার ওর চাচি কি না কি বলে বসে!
সেদিনের মতো কথা-বার্তা শেষ করে রাজিতা আর আনান ভালভাবেই বিদায় নিলো ওর চাচির থেকে।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here