#ধোয়ার-নেশা
#রোকসানা-রাহমান
পর্ব (৮)
অন্ত্রীশাকে তার কথা শেষ করতে না দিয়ে ওর ঠোটদুটো নিজের ঠোটের আয়ত্বে নিয়ে নিয়েছে পালক। ঘটনার আকস্মিকতাকে কাটিয়ে উঠতে না পেরে অন্ত্রীশা পালককে ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই ওর কোমড় জড়িয়ে নিজের সাথে ল্যেপ্টে নিলো পালক। আজও যে নিজের মধ্যে বন্দী হয়ে থাকা ধোয়াগুলো অন্ত্রীশার মধ্যে ঢেলে দেওয়া তার মুখ্য কাজ হয়ে দাড়িয়েছে!
পালক অন্ত্রীশাকে ছেড়ে দিতেই অন্ত্রীশার কাশি শুরু হয়ে গেছে। কাশতে কাশতে চোখে পানি চলে এসেছে। অনিকশা হুড়মুড়িয়ে রুমে ঢুকেই অন্ত্রীশার সামনে পানির গ্লাস ধরে বললো,
“” মানা করেছিলাম না বিয়ে করতে? এই তোর স্বামীর ভালোবাসা? যে ভালোবাসার ছোয়াই তুই কেশে কেশে মরন দেশে চলে যাচ্ছিস?””
অন্ত্রীশা পানির গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিতে নিতে বললো,
“” আপু,তুমি এখানে?””
“” এখানে মানে? ধোয়ার ঠেলায় কি সব গিলে খেয়ে ফেলেছিস? আমি এখানে আসছি ২ ঘন্টা পার হতে চললো।””
অন্ত্রীশা নিজের কাশি নিয়ন্ত্রে রাখার জন্য বিছানায় ধপ করে বসে পড়লো। মাথা কেমন ভনভন করছে। তার মাথায় কি মাছিরা বাসা বেধে নিয়েছে? এতো কেন ভনভন করছে,পেটের ভেতরটাও কেমন গুড়মুড় করছে। মাছিরা কি মাথা থেকে পেটের ভেতরেও চলে গেলো? উফ! কি অসহ্য অনুভূতি হচ্ছে!
অনিকশাও অন্ত্রীশার পাশে গিয়ে বসলো। অন্ত্রীশার মাথায় হাত রেখে স্বাভাবিকভাবেই বললো,
“” তুই ঠিক আছিস তো অনতি?””
পেটের ভেতর গুড়মুড়ের শব্দে গলার ভেতরটাও জ্বালা করছে। শব্দটাকে আটকাতে পেটে বাম হাত দিয়ে চেপে ধরেছে অন্ত্রীশা। বোনের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,তবে কি আপু আজকেও উনাকে চুমু খেতে দেখে ফেলেছে? উনার সাথে আমার সব লজ্জার ঘটনাগুলো আপুর সামনেই কেন ঘটে?
“” হুম,ঠিক আছি। তুমি হঠাৎ আমার রুমে এলে যে কিছু লাগবে?””
অনতি মাথা নাড়িয়ে না বুঝিয়ে আবার বললো,
“” এই বিয়েটা তোর জন্য ঠিক হয়নি রে অনতি,আসলে বিয়ের কোনো সমস্যা না। সমস্যাটা তো পালকের। এখনো সময় আছে বোন,তুই চাইলে আমি সব কিছু ঠিক করে দিতে পারি। তোদের তো সেরকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও হয়নি!””
অনিকশার কথায় অন্ত্রীশা বেশ বিরক্ত হলো। মুখে কিছুটা বিরক্তভাব ফুটিয়ে একটা কঠিন কথা বলতে ইচ্ছে করছে তার। কিন্তু তার আগেই মুখ ভর্তি করে বমি করে বসলো অনিকশার শরীরে!
“” আপনি সত্যি যাবেননা?””
অন্ত্রীশার কথায় পালক একবার ওর দিকে ঘুরে আবার খোলা আকাশে মনোনিবেশ করলো। আজকের সূর্যটা খুব বেশি প্রকট তাপ দিচ্ছে। গরমটাও ভালোই পড়েছে। ভাপসা গরমে পালকের শার্ট ভিজে চুপসে আছে নিজের শরীরের সাথে। কিন্তু সেদিকে কোনো খেয়াল নেই তার। মনে হচ্ছে তার ভেতরের প্রকট যন্ত্রনারশ্মির তাপের কাছে সূর্যের এই তাপ কিছুই না। তাই তো এই রোদেও সে ছাদের কিনার ঘেষে দাড়িয়ে আছে। বিষে যদি বিষের ক্ষয় হয় তাহলে আজ সে তার ভেতরের যন্ত্রনার তাপটাও রোদের তাপ দিয়ে ক্ষয়ে শেষ করে নিবে।
“” এমন কাঠফাটা রোদে দাড়িয়ে আছেন যে? মাথা ব্যথা করবে।””
আকাশের দিকে তাকিয়েই পালক বলে উঠলো,
“” আমাকে নিয়ে কেউ চিন্তা করুক এটা আমি পছন্দ করিনা। তেমার আব্বু তোমার জন্য ওয়েট করছে!””
“” আপনিও চলুননা আমার সাথে। বিয়ের পর একা বাপের বাড়ি গেলে মানুষ নানান কথা শুনাবে।””
পালক দুহাত পকেটে পুড়েই অন্ত্রীশার দিকে এগিয়ে এসে বললো,
“” প্রতিবেশিরা কথা শুনানোর জন্যই সম্পর্ক গড়ে তুলে! তুমি কি এখান থেকে যাবে নাকি আমিই চলে যাবো?””
পালকের এমন শক্ত কথায় অন্ত্রীশার মন খারাপ হয়ে এলো। গলাটাও ধরে এসেছে বোধহয়। তার মন খারাপের সাথে সঙ্গী হতেই হয়তো হালকা সবুজ শাড়ীটা গাড় সবুজ রঙে বদলে গিয়েছে। অন্ত্রীশা ধীর পায়ে নিচে নেমে যাচ্ছে। আপনি খুব পঁচা,আমি এতো সহজে আপনাকে কিছুতেই ক্ষমা করবোনা। আপনাকে আমি কঠিন শাস্তি দেবো। আমার মনের ভেতরে জমে থাকা ভালোবাসার আগুনে পুড়িয়ে আপনাকে শেষ করে দিবো!
**ওহে উত্তম পুরুষ,
শুনলাম আপনি নাকি তালাশ টিম নিয়ে আমাকে তালাশ করে বেড়াচ্ছেন? আমাকে খুজে পাওয়া আপনার কাম্য নয়। এসব গোয়েন্দাগিরি বন্ধ করুন। সবে তো আপনাকে কলংকিত করার জন্য নীল নকশায় কালো রং ঢেলেছি,ওগুলোকে শুকোতে দিন তারপর তো আপনাকে কলংকিত করবো৷ আপনি যে কলংকিত হওয়ার জন্য এতো উতলা হয়ে যাবেন তাতো আমি বুঝতে পারিনি!
জানেন,আপনাকে যখন চিঠি লিখতে বসি তখনি আকাশ ভেংগে বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। তখন ইচ্ছে হয় বৃষ্টি মেখে দুজন কলংকের দাগে দাগিয়ে নিতে। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। আসবেন আমার কাছে? আমি নাহয় বৃষ্টি হয়ে আপনাকে ছুয়ে দিবো?
আপনি তালাশ টিম থেকে বেড়িয়ে এসে যদি আমাকে কিছু লিখতে চান তাহলে সে ব্যবস্থা আমি করে দিবো। তবে হ্যা,নজরদারী করা যাবেনা। তাহলে কিন্তু আমি বৃষ্টি না হয়ে বজ্রপাত হয়ে যাবো,তারপর আপনাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে নিজেও বিলিন হয়ে যাবো।
ইতি
পত্রী কন্যা
চোখে বৃষ্টির ফোটা পড়তেই পালক আকাশের দিকে তাকালো। আকাশের দিকে মুখ করে দুহাত দুদিকে মেলে দিয়েছে। চোখটা আবার বন্ধ করে বৃষ্টির ফোটাকে বরন করে চিৎকার করে বললো,
“” তুমি কি আজও আমাকে চিঠি লিখছো পত্রী কন্যা? দেখো আকাশ ভেঙে বৃষ্টি পড়ছে। তোমার উত্তম পুরুষের গায়ে মেখে দেওয়া কলংকের দাগগুলো ধুয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি তো চাইনা তোমার প্রেমের কলংক এভাবে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যাক। আমি তো চাই তুমি তোমার ভালোবাসার বৃষ্টিতে আমাকে ভিজিয়ে নাও৷ কেন চলে গেলে? যদি যাবারই ছিলো তাহলে কেন এসেছিলে? আমার যে তোমাকে বড্ড প্রয়োজন পত্রীকন্যা। আমার যে খুব ইচ্ছে তোমার সাথে তোমার ইচ্ছেতে প্রতিটা বৃষ্টির ফোটার সাথে অনুভূতির অতলে ডুবে যেতে। তুমি কি তোমার ইচ্ছেগুলো আমাকে আর জানাবেনা? বৃষ্টিতে হারিয়ে যেতে যেতে আমাকে চিঠি লিখবেনা? আজকের এই বৃষ্টিতে ভিজে আরেকটা চিঠি লিখবে পত্রীকন্যা? যে চিঠিতে থাকবে তোমাকে ভুলে যাওয়ার ঔষধ!
“” এমন ভুতের মতো সাজছিস কেন? আজকে কি তোর বিয়ে?””
হঠাৎ আতিশের কন্ঠ পেয়ে পাপড়ি লাফিয়ে উঠলো। আতিশ আসবে দেখেই সে আজ হালকা কাজের একটা সাদা আর লাল কম্বিনেশনের লেহেংগা পড়েছে। সেদিন বিয়েতে তো উনাকে সাজ দেখানোই হয়নি তাই চোখে কাজল আর ঠোটে লাল লিপস্টিক পড়ছিলো। চোখে কাজল দেওয়া হলেও ঠোটে লিপস্টিক দেওয়া শেষ হয়নি,উপরের ঠোটে শেষ করে সবেই নিচের ঠোটে লিপস্টিক ছুয়া দিতেই আতিশের কন্ঠ পেয়ে হাত থেকে লিপস্টিকটা পড়ে গিয়েছে।
আতিশ মাথার চুলের পানি ঝাড়তে ঝাড়তে পাপড়ির কাছে এগিয়ে এসে বললো,
“” কাক ভিজা ভিজে গেছি, তোর জন্যা আমাকে কত কষ্ট করে আসতে হলো। যদি ঠিকঠাক মতো না পড়িসনা তাহলে আজ একটা মারও মাটিতে পড়বেনা। যা বই নিয়ে আয়!””
পাপড়ির কানে আতিশের কথা পৌছালেও তা মাথায় প্রবেশ করেনি,সেতো এখন আতিশের চুল ঝাড়া দেখায় ব্যস্ত। ইশ! উনার মাথা ভর্তি এই চুলগুলোকে আমি কবে ছুয়ে দেখবো?
“” কি হলো এভাবে থ হয়ে দাড়িয়ে রইলি কেন? যা বই নিয়ে আয়।””
পাপড়ি বই আনার বদলে আতিশের দিকে নিজের তোয়ালেটা এগিয়ে দিয়ে বললো,
“” ভালো করে মুছে নিন,নাহলে সর্দি লেগে যাবে।””
আতিশ চুল ঝাড়া বন্ধ করে পাপড়ির দিকে তাকালো। পাপড়ির একদম কাছে এসে ওর ঠোটে নিজের বৃদ্ধ আংগুল ছুয়িয়ে দিচ্ছে। আতিশের স্পর্শ পেয়েই পাপড়ি চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। ঠোটের সাইডে ছড়িয়ে থাকা লিপস্টিকটা মুছতে মুছতে বললো,
“”তুই তো দেখতে এমনি পেত্নীদের মতো, সাজলে তোকে পেত্নীদের থেকেও বেশি বিশ্রী লাগে। যা এখনি ধুয়ে আয়। এক্ষুনি!””
পাপড়ি লজ্জা পেলো ভীষন লজ্জা! যে লজ্জায় সে আনন্দ খুজে পেয়েছে। যে লজ্জা সে আতিশের ছোয়াতে পেয়েছে। আপনি এভাবে ছুয়ে দিয়ে আমাকে আরো খারাপ কিছু বললেও আমি মন খারাপ করবোনা,আতিশ ভাইয়া!
পাপড়ি ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়িয়েও আবার পেছনে ঘুরে দাড়ালো। আতিশকে উদ্দশ্য করে বললো,
“” আপনি আমাকে তুই করে বলছেন কেন?””
“” পালকও তো তোকে তুই করে বলে তাই।””
“” ভাইয়াতো বোনকে তুই করে বলতেই পারে। তাই বলে আপনিও বলবেন?””
“” হুম,ওর বোন মানে তো আমারও…. “””
আতিশের কথার মাঝখানেই পাপড়ি চিৎকার করে উঠলো,
“”ননননননননননননা””
“” কি না?””
“” আমি আজকে পড়বোনা। আপনি এখনি চলে যাবেন। এখন মানে এখনি।””
আতিশ বেশ আরাম করে পাপড়ির বিছানায় বসে পড়লো।
“” আমি কি তোর কেনা ক্রীতদাস? তুই বললেই আমি তোকে পড়াতে ছুটে আসবো,আবার তুই বললেই আমি বেড়িয়ে যাবো? আমাকে তোর এতো সস্তা মনে হয়? এখনি যদি বই নিয়ে না বসিস তাহলে আমি আর কোনোদিনও এ বাড়িতে পা রাখবোনা!””
পাপড়ির ইচ্ছে হলো নিজের চুল ছিড়ে ফেলতে। যাকে মন,প্রান উজার করে ভালোবাসার স্বপ্ন দেখছে সেকিনা এতোদিনে তাকে তুমি থেকে তুইতে চলে গিয়ে বোন বানাতে চাচ্ছে? এইটা দেখা বাকি ছিলো? তার অগোচরে ভালেবাসার এই প্রতিদান পাচ্ছে?
“” জানালা বন্ধ করে দিচ্ছো যে বৃষ্টির শব্দ ভালো লাগছেনা?””
জানালা লাগাতে লাগাতেই অন্ত্রীশা উত্তর দিলো,
“”শীত শীত লাগছেতো তাই। আর এখন তো ঘুমিয়েও পড়বো। জানালা খুলে ঘুমালে আমার সব বই ভিজে যাবে। অরিদ্রা কি ঘুমিয়ে পড়েছে,দুলাভাই?””
“” না,ওর আম্মুর কাছে বকুনি খেয়ে এখন ভাত খাচ্ছে। শুনলাম তুমি খাওনি? কি কারো সাথে অভিমান হয়েছে বুঝি?””
“” আমার আবার অভিমান? সেতো আমার কাছে ধরাই দেয়না! আপনি বসুননা। বাইরে দাড়িয়ে আছেন কেন?””
অরিদ ঠোটে দুষ্টুমীর হাসি নিয়ে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,
“” এখন তো তুমি অন্য কারো দখলে হয়ে গেছো। তার অবর্তমানে তোমার রুমে ঢুকতে সাহস পাচ্ছিনা। যদি সে রাগ করে।””
অন্ত্রীশা বিছানা পরিষ্কার করে অরিদকে বসতে দিয়ে বললো,
“” রাগের আগে আরেকটা শব্দ সুপ্ত থাকে,জানেন তো?””
অরিদ অন্ত্রীশার দিকে একটা মিস্টি হাসি দিয়ে বললো,
“” তোমার ঐ সুপ্ত শব্দটার আগেও আরেকটা জিনিস সুপ্ত থাকে ঐটা জানো তো?””
অন্ত্রীশা নিজের প্রশ্নের পিঠে পাল্টা প্রশ্ন পেয়ে থতমত খেয়ে গেলো।
অরিদ অন্ত্রীশার আরেকটু পাশে এসে ওর নাক টিপে বললো,
“” ভালো লাগা আর ভালোবাসা দুটো ভিন্ন হলেও এটা মনে রেখ,ভালো লাগা থেকেই কিন্তু ভালোবাসার সৃষ্টি। যদি ভালোই না লাগে সেখানে ভালেবাসা কখনোই জন্ম হতে পারেনা। ভালোবাসাটা নাহয় পরেই চেয়ো আগে ভালে লাগাটা তৈরী করো। তার জন্য কিন্তু নিজের যত্নটা নেওয়াও জরুরী। তুমি চাইলে,আমি আমার ছোট বোনকে নিজের হাতে খায়িয়ে দেবো।””
অন্ত্রীশা অরিদের দিকে চেয়ে রইলো। কত ভালো মানুষটা অথচ আপু কেন উনাকে সহ্য করতে পারেনা? আমি এত দুর থেকেও উনার ভালোবাসার সুঘ্রান পাই আর ও উনার পাশে থেকেও পাইনা?
“” কি! তুমি কি চাও ভাই তার বোনকে খায়িয়ে দিক?””
অন্ত্রীশা হেসে উঠে মাথা নাড়াতেই অরিদ রান্নাঘরের দিকে ছুটলো।
“”অরিদ্রা কোথায় অরিদ? আমিতো ওকে এখানেই ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলাম!””
অরিদ বিছানা ঝাড়তে ঝাড়তে বললো,
“” অন্ত্রীশা একা একা ঘুমাবে দেখে অরিদ্রাকে ওর রুমে দিয়ে এসেছি। তাহলে ভয়টা কেটে যাবে।””
“” ভয় কেটে যাবে মানে? ও কি আজকেই প্রথম একা ঘুমাচ্ছে?””
অরিদ বিছানা ঝাড়ুটা রেখে অনিকশার কোমড়টা জড়িয়ে নিজের কাছে নিয়ে বললো,
“” বিয়ের পর তো একা ঘুমাচ্ছে! আমি যেমন তোমাকে ছাড়া একা থাকলে ভয় পাই অনতিও তেমন ভয় পাচ্ছে। এটাকে ভুতের ভয় বলেনা গো সখি! বিয়ের ভয় বলে””
অরিদ একটা চোখ টিপ দিতেই অনিকশা ওর হাতটা সরিয়ে বললো,
“” এসব ফালতু কথা বলতে নিষেধ করেছিনা?””
“” এটা মোটেও ফালতু কথা না অনি,ভালেবাসার কথা। আজকে মনটা ভালেবাসা দিয়ে ডুবে আছে। তুমি কি একটু ভালোবাসা ধার নিবে? নাহলেতো আমার তরী ডুবে আমি অক্কা পেয়ে যাবো!””
অরিদের দিকে রাগী লুক দিয়ে অন্ত্রীশা বেড়িয়ে যেতে নিলেই অরিদ পেছন থেকে ডেকে উঠলো,
“” কোথায় যাচ্ছো?””
“” অরিদ্রার সাথে আমিও আজকে অনতির কাছে শুবো। ওর বিয়ের ভয় আমি পাটা আর পুতা দিয়ে পিষে ছাড়বো।””
অনিকশা বিড়বিড় করতে করতে অন্ত্রীশার রুমের দিকে এগুচ্ছে। রুমের দরজা খুলতেই অনিকশা ভরকে গেলো। পালক অরিদ্রার কপালে চুমু খাচ্ছে। পালক কখন এলো? আমাকে তো কেউ কিছু বলেনি আর ও তো বলেছিলো আসবেনা। তাহলে এত রাতে এখানে কি করছে???
অনিকশা বাইরে দাড়িয়েই অন্ত্রীশাকে খুজছে। রুমে তো দেখতে পাচ্ছিনা,এতোরাতে গেলো কোথায়? আমি কি ভেতরে যাবো? নাকি চলে যাবো? কিন্তু অরিদ্রা??
অনিকশা অরিদ্রার দিকে তাকাতেই পালকের চোখে চোখ পড়ে গেছে। এখন এভাবে চলে যাওয়াটা খারাপ দেখাবে ভেবেই অনিকশা ভেতরে ঢুকে পড়লো। অরিদ্রাকে কোলে নেওয়ার উদ্দশ্যে হাত বাড়াতেই পালক ওর হাতের কব্জীর অংশটা চেপে ধরে বললো,
“” কেমন আছো,পত্রী কন্যা?””
চলবে