#ভালোবাসা রং বদলায়
লেখক — #মাহমুদ
পর্ব — ১১
.,
– বউমা, ধ্রুব কোথায়? ওকে তো দেখতেছি না।
– মা, উনি তো গোসল করতে গেছেন। আপনার কী কিছু লাগবে?
– আরে না, না। আমার কিছুই লাগবে না। ধ্রুবের গোসল শেষ হলে, সোজা আমার ঘরে পাঠিয়ে দিবি। ওর সাথে আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। বেশি দেরী করতে বারণ দিবি কিন্তু।
– জ্বি।
ফারজানা চলে গেলেন। তার কয়েক মিনিট পর ধ্রুব বেরিয়ে এল। রূপা ইতস্ততভাবে বলল,
– মা, আপনাকে এই মুহুর্তে উনার রুমে যেতে বলেছেন।
ধ্রুব শ্যার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে বলল,
– কেন? কোন জরুরী কিছু?
– মা তো বললেন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবেন আপনার সাথে।
– ও।
ধ্রুব ফারজানার রুমে চলে গেল। দেখল, মা চেয়ারে বসে আছেন। ধ্রুব বলল,
– মা, কী বলবে বলো?
– এত তাড়া কিসের? কোথাও যাবি নাকি?
– হ্যা আজ অফিসে যেতে হবে। অনেক দিন ধরেই তো বাসায় আছি। আজ তো যেতেই হবে। অফিস থেকে ফোন আসছিল।
– আজ যাওয়ার কোনো দরকার নাই।
– কেন?
– এতদিন যাস নাই, আজও না গেলে আমি কোনো সমস্যা দেখতে পাচ্ছি না।
– কিন্তু মা….
– আজ যাবি না ব্যস যাবি না। এটাই আমার শেষ কথা।
– বাড়িতে শুধুশুধু বসে কী করবো বলো? এর থেকে অফিসে থাকাও ভালো।
– আমি কী বলেছি শুনতে পাস নাই তুই?
– হ্যা পেয়েছি তো… কিন্তু কেন যেতে নিষেধ করছো, বলো তো?
– আজ কী বল তো?
– কী? আজ তো বিশেষ কিছু না।
– ভালো করে ভেবে বল।
– আজ কী মা? আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না।
– দিন-দিন জ্ঞান বুদ্ধি বিসর্জন দিচ্ছিস নাকি? একটা জিনিস কিভাবে ভুলে গেলি তুই?
– কী ভুলে গেলাম? কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
– আরেএএএএ হাদারাম আজ রূপার জন্মদিন, এটা কী তুই জানিস না?
ধ্রুব বিষম খেলো। আমতাআমতা করে বলল,
– হ-হ্যা জানি তো।
– কচু জানিস। জানলে তো এতক্ষণে রূপার জন্য সারপ্রাইজ প্লান করতিস। এমন হাত গুটিয়ে বসে থাকতিস না।
– আরে মা, আমি তো সে জন্যেই বাইরে যাচ্ছিলাম। তুমিই তো যেতে দিলে না।
– মানে? তুই না বললি অফিসে যাবি।
– ও হো মা। ওইটা তো এমনিই বলেছিলাম। তোমাদের সবাইকে সারপ্রাইজ দেব বলে। কিন্তু তুমি তো সব প্লান ভেস্তে দিলে।
– হায় হায় রে, আমি সত্যিই বুঝতে পারি নাই। আচ্ছা যা, রূপার জন্য বার্থডে পার্টি এরেঞ্জমেন্ট কর। আমার মেয়ের বার্থডে তে যেন কোনো কিছুর কমতি না হয়। অনেক বড় বার্থডে পার্টি এরেঞ্জমেন্ট করবি। অনেক বড়। এটা যেন ওর জীবনের শ্রেষ্ঠ বার্থডে পার্টি হয়।
– হুম। এখন আসি।
– আর শোন, ওর জন্য মার্কেটে গিয়ে ভালো দেখে একটা গাউন কিনে আনবি। শুধু তাই নয় ড্রেসের সাথে ম্যাসিং করে হাই-হিল, কানের দুল, ব্রেসলেট, যাবতীয় যা কসমেটিক্স লাগে সব কিনে আনবি। ঠিকাছে?
– ওকে।
আনমনা হয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে রূপা। আজ যে তার জন্মদিন, এটা হয়তো এই বাড়ির কারোর’ই জানা নেই। অবশ্য না জানারই কথা। তার স্বয়ং বাবা’ই জন্মদিনের কথা মনে রাখেন না। আর মায়ের কথা তো বাদই দিলো। সেক্ষেত্রে তাদের না জানারই কথা। তবে, সে এবাড়িতে এসে যতটা ভালবাসা পেয়েছে, ততটা ভালবাসা মনে হয় কেউ তার শ্বাশুড়ির থেকে পায়নি। একদম নরম মনের মানুষ তিনি। রূপা যখন প্রথম এই বাড়িতে এসেছিল, তখন সে বেশ চেষ্টা চালিয়ে যেত এই বাড়ি থেকে পালাবার জন্য। কিন্তু প্রত্যেকবারই তার এই চেষ্টাটা বৃথা হয়ে যেত। বরাবরই সে ধ্রুবের সামনে ধরা পড়ে যেত। তখন কী ঝড় না বইতো তার উপর দিয়ে। এখনও তার মনে আছে। রূপা একবার বাড়ি থেকে পালাবার জন্য ছাদে উঠেছিল। ছাদের রেলিং এর সাথে শাড়ি পেঁচিয়েছিল। ধ্রুবদের বাড়ি তিনতলা বিশিষ্ট। এখান থেকে নিচে যেতে হলে আরো দুইটা শাড়ি লাগবে। রূপা কোনকিছু না ভেবে নিচে নেমেছিল। আলমারি থেকে দুইটা শাড়ি নিয়ে আবারও উপরে গেল। তবে নিচে যাওয়াটাই ছিল ওর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। রূপা যখন শাড়িগুলো জুড়া লাগিয়ে ঝুলতে যাবে, ঠিক সেসময় ধ্রুব এসে তাকে হাতে-নাতে ধরে ফেলল। সেদিন যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। ধ্রুব তাকে এলোপাথাড়ি মারতে লাগল। সেদিন ধ্রুবের পা আঁকড়ে ধরে রূপা আকুতি-বিনুতি করেছিল,
– আমাকে প্লিজ যেতে দিন। আমি আর এই যন্ত্রণা নিতে পারছি না। এর থেকে আমি মরে গেলেও এতটা কষ্ট হত না। আমি আর এক মুহূর্ত আপনার সাথে এই বাড়িতে একা থাকতে পারবো না।
ধ্রুব ধমক দিয়ে বলেছিল,
– জাস্ট শ্যাট আর্প নোনসেন্স। তুই না চাইলেও তোকে এই বাড়িতেই থাকতে হবে। এই বাড়িতেই একা থেকে থেকে পচে মরবি তুই। আজ অনেক বড় ভুল করতে যাচ্ছিলে তুই। আর এই ভুলটা যাতে দ্বিতীয়বার করতে না পারিস, সেই ব্যবস্থাটাই আমি করছি।
সেদিন কথাগুলো বলেই ধ্রুব ওর হাত ধরে টেনে-হিচরে নিয়ে গিয়েছিল স্টোররুমে। ওকে এক ধাক্কা দিয়ে স্টোররুমে দিকে ফেলে দিল। ধমকের স্বরে বলল,
– আমার মা না আসা পর্যন্ত আজ থেকে তুই এখানেই থাকবি। আজ থেকে তোর ভাত-পানি খাওয়া বন্ধ। দেখি তোর কোন বাপ খাওয়াতে আসে।
বলেই থপ করে সেদিন দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল ধ্রুব। এরপর থেকেই রূপাকে বাসি পান্তা ভাত খেতে দিত ধ্রুব। কখনও কখনও পচে যাওয়া ভাতও খেতে হতো তাকে। কখন এই নরগ থেকে মুক্তি পাবে, এটা নিয়েই একমাস পার করে দিল রূপা। একসময় রূপা এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেল। তার কয়েক মাস পরই নিলু আর ফারজানা আসলেন। তারপর থেকেই ধ্রুবকে পরিবর্তীত দেখা গেল। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হল, ফারজানা সামনে থাকলে ধ্রুব ওর সাথে ভালোভাবে কথা বলে। অথচ, ফারজানা ওদের আশেপাশে না থাকলে অত্যাচার শুরু হয়ে দেয়। রূপা আস্তে আস্তে বুঝল, ধ্রুবের মাঝে কোনো একটা রহস্য আছে। কিন্তু কী আছে এটাই তার ধরাচরার বাইরে। তবে রূপার এখন আর এসবে কষ্ট হয় না। তার পাশে যে, তার মা রূপী শ্বাশুড়ি আছেন। আর কী কিছু লাগে?
– ভাবি, এক্ষুণি এই ড্রেসটা পড়ে নাও।
নিলুর কথায় ভাবনার জগত ছেড়ে বেরিয়ে এল রূপা। বলল,
– কি-কিছু বললে?
– হ্যা, বলছিলাম এই ড্রেসটা তাড়াতাড়ি পড়ে নাও।
রূপা তাকিয়ে দেখল, নিলুর হাতে নীল রঙের গাউন। ড্রেসের গলায়, সাদা রঙের স্টোন লাগানো। রূপা বিস্মিত হয়ে গেল। বলল,
– কেন? এই ড্রেসটা পড়ে কী হবে?
– আজ আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাব। তাই মা তোমাকে এটা পড়তে বলেছেন।
– কিন্তু আমি তো গাউন আগে কখনও পড়ি নাই। তাহলে আজ….
– ও হো ভাবি। কখনও পড় নাই আজ পড়বা।
– আমি এটা পড়তে পারবো না। এসব পড়লে আমার মানাবেও না।
– মানাবে না, কে বলছে তোমাকে? এটা পড়লে তোমাকে একদম পরীর মত দেখাবে। একবার পড়েই দেখো না। ভাবি প্লিজ, না করোনা। মা কিন্তু রাগ করবেন। আমার জন্য না হলেও অনন্ত মায়ের জন্য তো পড়তেই পারো, তাই না?
– আচ্ছা পড়ব। তবে তোমারও কিন্তু সেইম ড্রেস পড়তে হবে।
– ওকে ওকে। এখন দেরী না করে চটজলদি পড়ে নাও তো। আচ্ছা, তুমি পড়তে লাগো এই ফাকে আমিও গুছিয়ে আসি। বেশি লেট করবো না। ১০ মিনিট পরেই আসছি। আর ভাবি, তোমাকে সাজগুজ কিন্তু আমিই করাবো। ঠিকাছে?
– হুম।
রূপা ড্রেসটা নিয়ে চেঞ্জ করতে গেল। ড্রেসের সবকিছুই ঠিকঠাক কিন্তু হুকটাই ঠিক করতে পারছে না রূপা। এখন কী হবে? কিভাবে বাইরে যাবে সে? বেশকিছুক্ষণ ধরে জামার হুক লাগানোর চেষ্টা করলেও হাতের নাগাল পাচ্ছে না। এখন? রূপা আর কিছু না ভেবে বাইরে বেরিয়ে এল। আয়নার সামনে গিয়ে হুক ঠিক করতে লাগল। হঠাৎ তখনি ধ্রুব ঘরে প্রবেশ করল। কিন্তু রূপার সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। রূপা তার কাজে ব্যস্ত। ধ্রুব আলমারি থেকে একটা নীল পাঞ্জাবী বের করল। অবশ্য পাঞ্জাবী পড়ার কোনো ইচ্ছাই ছিল না তার। কিন্তু মায়ের জোড়াজুড়িতে পড়তে বাধ্য হতে হল ধ্রুবের। মনে মনে বিড়বিড় করে বলতে লাগল,
– মা তুমি সেই আদিম যুগেই পড়ে আছো। আজকালকের যুগে বার্থডে পার্টিতে কেউ পাঞ্জাবী-টাঞ্জাবী পড়ে না। কিন্তু এটা কে বোঝাবে তোমাকে? আজ আমি নিশ্চিত, সবাই আমাকে দেখে হাসি-তামাশা করবে। বিশেষ করে আমার ফ্রেন্ড সার্কেল রা তো আমাকে নিয়ে ফান করবেই। বিশেষ করে পাঞ্জাবী পড়া দেখে।
ধ্রুব কথাগুলো ভাবতে ভাবতে তার চোখ আটকে গেল রূপার সাদা পিঠের মাঝখানে একটি তীলের উপর। এই প্রথমবার সে কোনো মেয়ের তীলের উপর আকর্ষিত হয়েছে। ধ্রুবের ধ্যান ভাঙতে বেশকিছু সময় লাগল। পরমুহূর্তে বুঝল, রূপা চেইন লাগাতে পারছে না। ধ্রুব ধীর গলায় বলল,
– আমি লাগিয়ে দেব?
ধ্রুবের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে ভয় পেয়ে গেল রূপা। চুলগুলো ক্লিপ দিয়ে বাধা ছিল সেগুলো খুলে পিঠ ঢাকল সে। ঢোক গিলে বলল,
– ন-না। আসলে…
ধ্রুব রূপার দিকে এগিয়ে গেল। একদম কাছাকাছি গিয়ে বলল,
– ভয় নাই। আমি জাস্ট হুকটা লাগিয়ে দেব বলেছি। খেয়ে ফেলব এমন কিছু বলি নাই। এছাড়া আমাকে বিশ্বাস করতে পারো।
– (নিশ্চুপ)
– দেখো, হাতে বেশি সময় নাই। ওইদিকে দেরী হয়ে যাচ্ছে। যা করবা তাড়াতাড়ি করো।
– একটু নিলুকে ডেকে দিতে পারবেন?
– নিলুকে? আচ্ছা ঠিক আছে। পাঠিয়ে দিচ্ছি।
– জি থ্যাংকস।
– হু।
ধ্রুব ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর নিলু চলে এল তার রূপার ঘরে। বলল,
– ভাবি সরি। আসলে এই ড্রেসটা খুঁজতে গিয়ে লেউট হয়ে গেছে। তুমি না বলছিলে, তোমার মত ড্রেস পড়তে, তাই খুঁজতে গিয়ে লেইট হয়ে গেছে। ড্রেস টা অবশ্য তোমার মত না। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় তোমার সাথে মিল আছে। তাই ভাবলাম, এটাই পরে ফেলি।
– ও ভাল করেছো। ড্রেসটা পড়ে খুব ভাল লাগছে তোমাকে। একদম প্রিন্সেসদের মত দেখাচ্ছে।
– থাক থাক, তোমাকে আর পাম দিতে হবে না।
– এই না। আমি সত্যিই বলছি, তোমাকে একদম রাজকন্যাদের মত লাগছে।
– আর তোমাকে পরীর মত লাগছে। বাপের জন্মে কখনও পরী দেখি নাই। কিন্তু আজ স্বয়ং প্রথবার দেখছি। তোমার কাছে অপ্সরী ও হার মানবে।
– একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছে না?
– বেশি কোথায়? কমই তো বললাম।
– হুম। নিলু, তোমার একটা হেল্প লাগবে।
– কী হেল্প ভাবি?
রূপা ইতস্ততভাবে বলল,
– আসলে, আমার জামার হুক লাগাতে পারছি না। একটু লাগিয়ে দিবা?
– অবশ্যই। দেখি ঘুরো….
প্রায় ঘন্টাখানিক পর রূপারা একটা রিসোর্টের সামনে পৌঁছাল। রিসোর্টের গেইটের সামনে একদম বড় করে লেখা রয়েছে, ‘হ্যাপি বার্থডে রূপা।’ এটা দেখেই হতবম্বিত হয়ে গেল রূপা। এটা কিভাবে সম্ভব? আজ তার বার্থডে, এটা উনারা জানল কিভাবে? তাহলে কী এসব মায়ের প্লান ছিল। রূপা অবাক হয়ে ফারজানার দিকে তাকাল। ইশারা করে বলল,
– এসবের মানে কী?
ফারজানা ইশারায় জানালেন,
– এখনও তো কিছুই দেখিস নাই। ভিতরে যে তোর জন্য অনেক বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।
রূপা বলল,
– কী?
– এখন বললে তো সারপ্রাইজ আর সারপ্রাইজ হল না, তাই না?
– হু।
রূপা যখন রিসোর্টে প্রবেশ করল তখন তার গায়ে হাজারও গোলাপ ফুলের পাপড়ি পড়তে লাগল। এই মুহূর্তে রূপার নিজেকে যেন স্বপ্নের কোনো রাজকন্যা মনে হচ্ছে। নিলু বলল,
– ভাবি কেমন লাগল, সারপ্রাইজটা? এটা কিন্তু আমার প্লান ছিল।
– খুবউউউউ ভালো লেগেছে।
রূপা ধ্রুবের ডান হাতের মাঝখানে নিজের হাত ঢুকিয়ে সমানতালে হাটছে। অবশ্য, এটা নিলুরই কারসাজি। ধ্রুব প্রথমে মানা করে দিলেও মায়ের ধমকে পরে রাজি হতে হল তাকে। নিলু ওদের দিকে তাকিয়ে বলল,
– দুজনকেই বেশ মানিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন দুজন-দুজনার জন্য আল্লাহর হাতে সৃষ্টি হয়েছে। সো সুইট কাপেল বোথ অফ ইউ। হায় মে মার জাওবা, কিসি ক্যা নাজার না লাগ জ্যায়ে।
কেক কাটার সময় একই তাল সামলাতে হল ধ্রুবকে। ফারজানার কথা, রূপার সাথে তাকেও কেক কাটতে হবে। কিন্তু ধ্রুব বুঝতে পারছে না, অন্যের বার্থডেতে ও কেন কেক কাটবে? কিন্তু কে শোনে কার কথা। মায়ের উপরে তো তার কথা বলারও কোন সাহস নেই। আর সেই সুযোগটাই ফারজানা কাজে লাগান সবসময়। ধ্রুব বেশ ক্ষেপে আছে তার মায়ের উপরে। আজ একটু বেশি বেশিই করছেন তিনি। আর কতক্ষণ এই নাটকটা চলবে কে জানে?
– ভাইয়া-ভাবি, এবার একটু একে অপরকে কেক খাইয়ে দাও।
রূপা প্রথমে ইতস্ততবোধ করলেও পরে ফারজানার জন্য ধ্রুবকে কেক খাইয়ে দিতে হল তাকে। ফারজানা বললেন,
– বাবা, তুইও গালে তুলে খাইয়ে দে বউমাকে।
ধ্রুব প্রচণ্ড বিরক্ত হল। তবে বাইরের দিকে তা প্রকাশ করল না। ফারজানার উদ্দেশ্য সে ধীর গলায় বলল,
– মা, এটা না করলে হয় না?
ফারজানা ধমকের স্বরে বললেন,
– না। যা বলেছি তাই কর।
– ওকে।
ধ্রুব একটুকরো কেক রূপার গালে তুলে দিল। বলল,
– খুব তো মজা পাচ্ছো দেখছি। এ মজাটা আর কতক্ষণের জন্য থাকে, আমিও দেখে ছাড়বো।
ধ্রুবের শেষ কথাটা শুনে মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেল রূপার।
চলবে,,,,,,,,,
অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ