পর্ব-৮(দ্বিতীয়াংশ)
#সাদা_ফুল
#ফারিয়া_আক্তার_নূপুর
১১.
ভার্সিটির কাজে দু’দিনের জন্য ঢাকা ফিরতে হয় তীব্রকে। যার কারনে স্কুল ছুটির পর আর পড়ার কোনো চাপ নেই দু’দিন। স্কুল ছুটির পর শুভ লায়লার সাথেই বাড়ি ফিরে শুভ্রতা। যাওয়ার পথে লায়লা বলে,
“শুভ্র বিকেলে মেলায় যাবি?”
শুভ তাৎক্ষনাত বলে উঠে
“পূর্ব পাড়ার ওই মেলায়? না, একদম না।”
শুভ্রতা ভ্রূ কুচকে শুভর দিকে তাকায় সাথে লায়লাও। নিজের উপর এরূপ চাহনিতে একটু ভীত হওয়ার ভান করে শুভ বলে,
” তোরা আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছিস ক্যান চোখ সরা নজর লাগবে তো”!
শুভ্রতা শুভর মাথায় একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল,
“এই আমি আর লায়লা তোর থেকে মিনিমাম চার বছরের বড় তুই কোথায় আমাদের আপনি করে বলবি তা না তুই করে বলছিস”
“চার বছরের বড় চৌদ্দ বছরের তো আর না”
“এই তোরা চুপ করবি! রাস্তায় ঝগড়া শুরু করে দিছিস।”
রাগান্বিত স্বরে বলে উঠে লায়লা। তারপর শুভ্রতার দিকে তাকিয়ে বলে,
“শুভ্র তুই যাবি মেলায়? যদি যাস বিকেলে এসে আমি মামি’মাকে বলে নিয়ে যাবো তোকে।”
“আম্মা যদি রাজি হয় তবে যাবো”
শুভ্রতার কথা শুনে শুভ তার দিকে তাকায় তারপর বলে,
“তাহলে আমিও যাবো তোদের সাথে।”
লায়লা বলল,
“তোর না ক্রিকেট ম্যাচ আছে আজকে তুই কেনো যাবি”?
“আমার বোনকে আমি ওই পূর্ব পাড়ায় একা যেতে দিবো না তাই”, এই বলেই দ্রুত হেটে সামনে এগিয়ে চলে শুভ। সামনে থাকলে নিশ্চয় আরও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। শুভ্রতা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে শুভর যাওয়ার দিকে। ভেতর থেকে এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করল তার। পৃথিবীতে ভাই বোনের সম্পর্কটা বেশ জটিল। সারাদিন ঝগড়া মারামারি করলেও একে অপরের প্রতি থাকে অফুরন্ত ভালোবাসা, সম্মান আর শ্রদ্ধা।
–
বিকেলে শুভ্রতা, লায়লা আর শুভ পূর্ব পাড়ার মেলায় যায়। গ্রামের এই একটি মেলাই বসে তবে প্রতিবছর না। বিভিন্ন রকমের দোকান বসেছে। শুভ ওদের পিছু পিছু হাটছে । শুভ্রতা একটি চুরির দোকানে থামে। লাল খয়েরী একমুঠ চুরির ওপর নজর যেতেই তা খুলে হাতে পরে নেই।
“খুব সুন্দর মানিয়েছে”।
পাশ থেকে এক অচেনা পুরুষনালীর কন্ঠে ভেসে আসতেই কেঁপে উঠে সে সাথে ভর করে একরাশ বিরক্তি আর অস্বস্তি।পাশে তাকিয়ে দেখে অচেনা পুরুষের মুখশ্রী। অস্বস্তিতে চুরিগুলো রেখে লায়লার হাত ধরে সামনে পা চালায়। সৌরভও তাদের পিছু নেই। সূর্য নামার আগেই মেলা থেকে বের হয়ে বাড়ির পথে রওনা দেয় তিনজন। পেছনে কারো উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। শুভ বেশ কিছুক্ষন ধরেই সৌরভকে লক্ষ্য করে। বাড়ির পথে এসে লায়লা নিজ বাড়িতে চলে যায় আর শুভ্রতা তাদের বাড়ি। শুভ বাড়িতে ঢুকে না। দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলের কাছে যায়। শুভকে দেখে চুর ধরার ন্যায় অবস্থায় পরে যায় সৌরভ। শুভ একটি হাসি দিয়ে বলে,
“ঠিক কোন মেয়েটিকে ভালো লেগেছে ভাই?”
সৌরভ খানিক অবাক হয়ে চুপ থাকে। একটু লজ্জাও পেয়েছে। তারপর লাজ শরম ফেলে অকপটে বলে,
“বাদামী রঙের হিজাব পড়া মেয়েটা। তোমাদের এলাকার বুঝি!”
“তীব্র ভাইকে চিনেন তো? তার হবু বউ। একটু দেখেশুনে মেয়ের পিছু নিবেন ভাই”, বলেই শুভ শিষ বাজাতে বাজাতে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
চলবে….
[গল্পটি তেমন বড় হবে না। শীঘ্রই শেষ হতে যাচ্ছে। যাইহোক হ্যাপি রিডিং ]