#ঘর_বাঁধিব_তোমার_শনে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব_৩০
মিহিকে মাঝ পথে রেখে ঈশান বললো,আপনি বাকি পথটুকু লিরার সাথে যাবেন। আমার একটা জরুরি কাজ আছে। সেটা আমাকে করতে হবে। টেক কেয়ার।
লিরা বাইক নিয়ে এসেছিলো। ঈশান লিরার থেকে বাইকের চাবি নিয়ে চলে আসলো। লিরা ড্রাইভিং করছে।
মিহি লিরাকে উদ্দেশ্য করে বললো, তুমি কোথায় ছিলে?আর ঈশান কোথায় গেলো?
– আমি তো ইনভেস্টিগেশনের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর স্যার তো কোয়ার্টারে গেলেন। আপনাদের রুমে কোন ভাবে আ*গু*ন লেগেছে।
মিহি হতাশ হলো, একটা চিরকুট রেখে এসেছিলো কিন্তু সেটাও শাফিনের হাতে পরলো না। মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
লিরা বললো, মন খারাপ কেন করছিস?
মিহি অবাক হয়ে হয়ে বলে তুমি কে?লিরা বেখেয়ালী ভাবে মিহিকে তুই করে বলে ফেলেছে। শতহোক ক্লাস ফ্রেন্ড বলে কথা। মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।
বলে ফেলেছে।
লিড়া তুতলে বললো, আ,আ আমি আবার কে? লিরা শ্যান্যাল। জানোই তো তুমি। আর ঈশান স্যারের এসিস্ট্যান্ট।
– মিথ্যে বলছো আমাকে। তুমি লিপিকা সরদার।
– কি বলছেন এসব।
এইতো তোমার গলার আইডি কার্ড বলছে।
লিরা বললো,না আইডি কার্ডে এই নাম কি করে থাকবে। এই নামে তো আমি আইডি কার্ড করিনি।
মিহি হেসে বলে তারমানে লিরা নামে আইডি কার্ড করে লিপিকাকে আড়াল করে রেখেছো?
লিরা ড্রাইভিং অফ করে চিৎকার করে বলে হ্যাঁ করেছি। আর বেশ করেছি আড়াল করেছি লিপিকা সরদারকে? একটা ভীতু দূর্বল আসহায় কে খু*ন করে নতুন কাউকে জন্ম দিয়েছেি।যে শুধু কোনঠাসা হয়ে ছিলো। আজ যাকে দেখতে পারছো তাকে কষ্ট দেয়া এতো সহজ নয়। সে এখন ভাঙা তো দূর মচকাবে ও না।
লিপিকা তুমি ভুল ভাবছো। ভার্সিটি লাইফ ছিলো ভিন্ন তখনকার পরিবেশ সিচুয়েশন সব ছিলো ভিন্ন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো তোমাকে কেউ কোনঠাসা করেনি। তুমি ফাহিনকে দেখো। ফাহিনও তো সুমু কে ভালোবাসতো। সুমু ওকে প্রত্যাখান করেছিলো। তাতে কি ফাহিন সু*ই*সা*ই*ড করেছিলো।আর উদয় ছিলো আমাদের সিনিয়র সেখানে তার স্বাধীনতা রয়েছে সে কি করবে।তারজন্য সু*ই*সা*ই*ড করতে হবে?
লিরা দু’হাত দিয়ে মিহির গ*লা চে*পে ধরে বলে, সব দোষ ছিলো তোর। তোর মিষ্টি কথা আর ইনোসেন্ট ফেস করে ঘুরে-বেড়ানো। সবাইকে তোর প্রতি আকৃষ্ট করে রেখেছে। তাই তোর কারণে উদয় আমাকে প্রত্যাখান করেছে। তোর এক পুরুষে মন ভরেনি। তুই শাফিনের মতো একজনকে পেয়েও আরো কত জনকে লাইনে রেখেছিস।
মিহির গলা দিয়ে কথা বেড় হচ্ছে না। চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে গেছে। শেহরোজ কি বুঝলো কে জানে। জোড়ে কেঁদে উঠলো।
লিরা নিজের হুশ আসল সাথে সাথে মিহিকে ছেড়ে দিলো। মিহি কাশতে কাশকে বা’হাত দিয়ে পানি নিযে মুখে দিলো।
______________________________________________
শাফিন সামনে থাকা ব্যাক্তিকে দেখে বলে,ঈশান তুই!
হ্যাঁ আমি! অন্য কাউকে আশা করছিলি বুঝি। তোকে ট্রাপে ফেলার জন্য এটা আমার ছোট্ট আয়োজন ছিলো।
মিহিকে মিথ্যে বলে এখান থেকে সরিয়ে নেয়া। মিহির চুড়ি রাস্তায় ফেলে রাখা সব আমি করেছি। তোর সাথে মিহির যোগাযোগ আছে এটা আমি সেদিন রাতে মিহির ঠোঁট দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু সরাসরি তো আর জিজ্ঞেস করা যায় না। ঠোঁটের উপর কে হামলা করেছিলো। তাই মথা খাটিয়ে বুঝে নিয়েছি।বউ একটা পেয়েছিস ভাই বুক ফাঁটবে তবুও মুখ ফুঁটবে না। কত করে জিজ্ঞেস করলাম স্বীকার করলোই না। উল্টো কত লজিক দেখালো।
– তুই আমার পথে কেন আসছিস?
– হিসেবটা সোজা এই কেস আমি জিতবো। তুই হারবি।
– এখানে হার জিতের চেয়ে বেশি জরুরি দেশ থেকে দেশের শত্রুরদের উপড়ে ফেলা।
– সেটা তোকে আমাকে শেখাতে হবে না
– তাহলে এটা নিয়ে কেন জেদ করছিস।
– আমি মানুষ হিসেবে কেমন তুই জানিস ট্রেনিংয়ে তোর জন্য আমি ফাস্ট হতে পারিনি।
– তুই তো তোর দেশের মধ্যে ফাস্ট ছিলি।
– সে যাই হোক এই কেস সলভ আমি করবো।
– আচ্ছা দু’জনে মিলেই করবো। তবে নাম থাকবে তোর।
– না আমি তোর সাথে কাজ করবো না। তোর আর আমার মত মিলবে না।
– ভুল করছিস তুই। কেন মিলবে না। মেলালেই মিলবে।
– ওকে ডান। এক সাথে কাজ করবি তো?তাহলে একটা কন্ডিশন আছে। সেটা মানলে আমি রাজি।
– কি?
– যদি এই কেস সলভ করার ক্রেডিট তুই নিস। তবে মিহি আর শেহরোজ আমার। আমার ক্রেডিট আমার হলে ওরা তোর।
– ওরা মানে!
– ওরা মানে ওরা। কচি খোকা যেন কিছুই বোঝে না।
– বুঝিয়ে বলবি তো?
– তোর ওয়াইফ আর তোর ছেলে। ওহহ তুই হয়তো জানিস না ছেলে হয়েছে নাকি মেয়ে। ছেলে হয়েছে তোর। নাম শেহরোজ।
শাফিন ঈশানকে জড়িয়ে ধরে বলে, তুই সত্যি বলছিস। আমাদের সেহরোজ পৃথিবীতে চলে এসেছে।
ঈশান বললো,তাহলে এবার বল তুই কি চাস?
– আমার শেহরোজ আর মিহির বিনিময়ে আমি তো জীবনও হাসতে হাসতে দিয়ে দিতে রাজী আর তো। সাধারণ নাম,খ্যাতি। এসব তো কিছুই না।
শাফিন আর ঈশান নিজেদের মধ্যে বোঝাপরা করে চলে গেলো।
শাফিন বসে আছে একটা খেলার মাঠের সাইডে। রাতে জনশূন্য মাঠ আকাশে পূর্ণ চাঁদের আলো।শাফিনের মনে পরলো মিহির আদুরে কিছু কথা।
এই দেখো এই ড্রেসগুলো কত কিউট। আমি এগুলো নেবো।মিহির কথা শুনে শাফিন হেসে বলে,কি বলো এসব বাচ্চাদের ড্রেস তোমার শরীরে ফিট হবে না।জান তুমি অন্য কিছু দেখো।
– আমি কি এতোটাই অবুঝ যে এতোটুকুও বুঝবো না। কোন ড্রেস আমার ফিট হবে আর কোন ড্রেস ফিট হবে না।
– ও হ্যাঁ তাইতে! আমার বোকাফুল তো বড্ড চালাক তাই হয়তো বিয়ের আগেই বেবিদের ড্রেস কিনে রাখতে চায়।
– শাফিন, এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আমি এই ড্রেস নেবো মানে নেবোই।
– আরেহহ পাগলী বিয়ের পর যদি ছেলে না হয়ে মেয়ে হয়। তখন?
– ঊঁহু আমার ছেলেই হবে। আর আমার ছেলের নাম হবে শেহরোজ মাহমুদ।
– এখনও বিয়ে করতে পারলাম না।এদিকে বেবিদের ড্রেস আর নামও ঠিক করা হয়ে গেছে!
– এই চলো বিয়ে করে ফেলি।
– বিয়ে করে ফেলি মানে! তোমার বাবা, মা।
– আরেহহ বাবা তো এই বিয়ে মানবেও না। তারচেয়ে আমরা নিজেরাই বিয়ে করে ফেলি।
– এভাবে বিয়ে করবে? বউ সাজবে না।মেহদী পরবে না?হুলদ দেবে না। কত কি স্বপ্ন থাকে মেয়েদের বিয়ে নিয়ে।
– কিছু দরকার নেই আমি বিয়ে করবো,মানে আজই বিয়ে করবো।এখন তুমি উদয় আর নুহাস ভাইয়াকে আসতে বলো। মতিঝিল কাজী অফিসে। আর আমি বর্ষাকে আর সুমুকে আসতে বলছি।
– মানে কি? কি পাগলামি শুরু করলে। এভাবে কেউ বিয়ে করে?
– কেউ করলে করুক। না করলে না করুক আমরা করবো।আচ্ছা এটা বলো তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও তো?
– এটা কোন প্রশ্ন হলো!করতে চাও তো মানে কি? তুমিই আমার ভবিষ্যত বউ।
– তাহলে কোন প্রশ্ন ছাড়া আজকেই আমাকে বিয়ে করবে। না করলে আর কখন হবে না।
– ওকে চলো বিয়ে করবো এক্ষুনি।
কথাটা শুনেই মিহি শাফিন গলা জড়িয়ে ধরে কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বলে,ভালোবাসি।
শাফিন মিহির কোমড়ে হাত রেখে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে,তুমি না বাসলেও আমি বাসি।
মিহি বলে তাহলে আর দেরি কিসের। ভালোবসা যখন আছেই তবে…#ঘর_বাঁধিব_তোমার_শনে
– তো মিস মিহি রেডি তো মিসেস মাহমুদ হওয়ার জন্য?
– রেডি মানে! আমার তো আর তর সইছে না। মিস থেকে মিসেস মাহমুদ হতে। শাফিন মিহিকে নিজের বাহুতে আবদ্ধ করে বলে,আমার বোকা ফুল।মিহিও শাফিনকে আর একটু গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরলো।
তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে রইলো রাতের নীরবতা। আকাশের নীলচে তারা আর ওই জোসনা ঝরানো চাঁদ।
শাফিন এসব ভাবছে আর মিটিমিটি হাসছে। এমন সময় একজন শাফিনের দিকে পি*স্ত*ল তাক করে বলে গুড বায় মিস্টার শাফিন মাহমুদ।
#চলবে#ঘর_বাঁধিব_তোমার_শনে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব -৩১
গম্ভীর কন্ঠে পি*স্ত*ল তাক করে রাখা লোকটি বললো,বেঁচে থাকতে চাইলে আমার রাস্তা থেকে সরে যাও।
– আপনি আমাকে মারতে পারবেন না। আর ম*রা*র ভয় আমার নেই ও। সো ফাঁকা আওয়াজ দেয়া বন্ধ করে ভালোয় ভালোয় নিজেকে আইনের কাছে সমর্পণ করুন। আমি আপনার শাস্তি কিছুটা কম করার ব্যবস্থা করবো।
– তার মানে তুমি তোমার রাস্তা থেকে সরে আসবে না।
– না কোন দেশদ্রোহীর সাথে আপোস আমি করবো না।
– কোন কৃতজ্ঞতা নেই তোমার। তোমাকে তো আমি কম বিলাসিতা দেইনি।
– যদি জানতাম সেসব পাপের টাকায় তাহলে কোনদিন আপনার থেকে কানা কড়িও নিতাম না।
– এখন বড় বড় কথা বলছো ভুলে যাচ্ছ তোমার এই কথাও আমি শিখিয়েছি।
– যদি পারতাম তাহলে শুধু ভুলে যাওয়া নয় আপনার অস্তিত্ব আমার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতাম।
– এটাই তোমার শেষ কথা?
– হুম এটাই শেষ কথা আপনার বিরুদ্ধে সব প্রমাণ সংগ্রহ করে আপনাকে আইনের আওতায় এনে আপনার কৃতকর্মের শাস্তি দেয়া।
– তবে আজ ইতিহাস রচনা হবে। এক বাবার হাতে তার ছেলে খু*ন হওয়ার ইতিহাস। সরি মাইসন ইট’স ওভার। রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে গু*লি আওয়াজ ছড়িয়ে পরলো।
______________________________________________
ঈশান বাইক নিয়ে ফিরছে রাত শেষ হয়ে তখন নতুন ভোরের আলো ছড়িয়ে পরছে। গ্রামের সবুজ প্রকৃতিতে শিশির বিন্দু গুলো রোদের প্রথম আলোতে মুক্তর মতো চিকচিক করছে। কিছু নাম না জানা বুনো ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। ঈশান বাইক থামিয়ে সেসব উপভোগ করছে। রাস্তার এক পাশে নালার পানির দিকে তাকিয়ে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে হাত দিয়ে পানি থেকে নিজের ছায়া মুছে ফেললো। পানির দিকে তাকিয়ে বলে,আমি এক হেরে যাওয়া যোদ্ধা। যার হৃদয় অন্যের প্রেয়সী। যার মস্তিষ্কে দায়িত্ব। মুচকি হেসে বলে,শাফিন তুই সব সময় জিতেযাস! নাকি প্রকৃতি তোকে জিতিয়ে দেয়? আমি তো শুধু মিহির প্রতি যাতে তোর কোন ভুল ধারণা না জন্মায় তাই শেহরোজ আর মিহিকে এভাবে উপস্থাপন করলাম। নয়ত ঈশান মুখার্জি ডায়রিতে কখন নিচু হওয়া নেই। আর রইলো যষ,খ্যাতি ঈশান মুখার্জি দেশের জন্য কাজ করে নামের জন্য নয়। নিজের প্রথম ভালোবাসার মানুষটাকে ভালো রাখতে নিজেকে না হয় একটু ছোট করলাম। তাতে কি বা এমন এসে যায়।
আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,আমি তোমাকে ভালোবাসি মিহি বড্ড ভালোবাসি। তার কথা প্রতিধ্বনি তুলছে যেনো প্রকৃতির মাঝে। ঈশান চোখ বন্ধ করে পাড় থেকে এক মুঠো,মাটি উঠিয়ে পানিতে ভাসিয়া দিয়ে বলে,তোমার প্রতি আমার সব বন্ধন মুক্ত করলাম।এই গঙ্গার চলে ভাসিয়ে দিলাম আমার ভালোবাসা। আজ থেকে আমার জীবন আমি উৎসর্গ করলাম মানুষের কল্যানে। সেখান থেকে উঠে এসে বাইক নিয়ে রওনা হলো।
______________________________________________
দীর্ঘ এক বছর তিন মাস পরে নিজের মেয়েকে কাছে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা মিহির বাবা মা। মিহির বাবা রুবেল সাহেব মিহিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলেন। স্থী বেগমও কাঁদছেন। লিরা পেছন থেকে বলে আন্টি আগে ওদের কিছু খেতে দিন। অনেকটা ক্লান্ত ওরা।
সাথাী বেগম খাবারের জন্য যাবে তার আগেই তার হুশে আসলো মিহির কোলের বাচ্চাটাকে?
সাথী বেগম বললেন হ্যাঁরে তোর কোলের বাচ্চাটা কার?
মিহি শেহরোজের কপালে চুমু দিয়ে বলে,তোমার নাতী। আমার আর শাফিনের একমাত্র সন্তান শেহরোজ।
সাথী বেগমের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। ছুটে এসে মিহিকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলে, তোর বড্ড কষ্ট হয়েছে তাইনারে মা।?তোর যখন আমাকে সবচেয়ে প্রয়োজন ছিলো তখন আমি তোর সাথে থাকতে পারিনি।
মিহি নিজের মায়ের চোখের জল মুছে দিয়ে,বলে কেঁদো না মান।সব ঠিক হয়ে যাবে। যাদের জন্য আমি আর আমার ছেলে আমার সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্তে আমার কাছের মানুষদের থেকে দূরে ছিলাম। তাদেরকে তোমার জামাই শাস্তি দেবেই।
লিরা কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নত করে। মিহি শেজরোজকে খাইয়ে শেহরজোকে রুবেল সাহেবের কোলে দিলো। হুট করেই মিহির চোখ পরলো লিরার দিকে। মিহি লিরাকে উদ্দেশ্য করে বলে,লিরা তুমিও ফ্রেশ হও আসো এক সাথে খেতে বসি।
লিরা মিহির কথা শুনে অবাক দৃষ্টিতে তাকায়। যেই দৃষ্টিতে রয়েছে অপরাধ বোধ। রুবেল সাহেব শেহরোজকে কোলে নিয়ে বাহিরে চলে আসতেই লিরা মিহির সামনে এসে বলে,আমাে ভুল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দে।
– তুই ক্ষমা চাওয়ার আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিস এতেই আমি খুশী।
– এবার বুঝতে পারছি। সবাই তোর প্রতি মুগ্ধ হয কেন? আমি ভাবতাম তোর চেয়ে আমার গায়ের রং ফর্সা। তাও সবাই আমাকে রেখে তোকে কেন পছন্দ করে? আজ বুঝতে পারলাম তোর ভেতরের সৌন্দর্য তোর রুপের সৌন্দর্য কে সবার থেকে বাড়িয়ে দিয়েছে। এতো বড় অন্যায় করার পরেও তুই কত সহজে আমাকে ক্ষমা করে দিলি।
এর মধ্যেই সাথী বেগম এসে বলে,অরেক তো কথা হয়েছে এবার তাড়াতাড়ি আয় দেখি। কিছু মুখে দিয়ে নে।
মিহি আর লিরা দু’জনেই খেতে চলে গেলো।
______________________________________________
নুহাসের লা*শে*র পাশে বসে আছে রমিজ রাজ। কি বিভৎস মৃত্যু। চোখ দু’টো কেউ তুলে ফেলেছে। হাত দু’টো কে*টে দিয়েছে।বুকের বা পাশ থেকে হৃদ পিন্ড বের করে নিয়েছে। প্রেস মিডিয়া দিয়ে ভরে গেছে রমিজ রাজের ফার্ম হাউস। পাশেই ধা*রা*লো ছু*ড়ি আর রক্তে মাখামাখি অবস্থা বসে আছে আয়রা। এক ধ্যানে নুহাসের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কি যেনো বলছে।
রমিজ রাজ ভাবছে কাল রাতেই এম,কের সাথে কথা কা*টা*কা*টি করে এসেছিলো নুহাস। রিমজ রাজ এতো করে বলেছিলো, নুহাস এম,কের সাথে বাড়াবাড়ি করিস না। তবে কে শোনে কার কথা। নুহাস এম,কের এক টা ভিডিও ধারণ করেছিলো তার ফোনে আর আসার সময় বলে এসেছিলো,এবার দেখ আমি কি করি। তোকে পুলিশের কাছো ধরিয়ে দিয়ে আমি নিজেকে সাধু প্রমাণ করবো।সাহস কত একজন পুলিশকে মারার হু*ম*কি দেয়!
এম,কে তখন ঠান্ডা মাথায় বলেছিলো, আগামী দিনের সূর্যোদয় দেখলে তবেই না কিছু করবি।বলেই বিশ্রী ভাবে হেসে উঠলো।
নুহাস এম,কের রুমের চেয়ার উঠিয়ে কাঁচের দেয়ালে বাড়ি দিয়ে বলে,ভীতু কাপুরুষ সাহস থাকলে সামনে আয়? আড়ালে থেকে নিজেকে সিংহ ভাবছিস? ভুলো যাসনা যে বনে সিং*হ আছে সে বনে হিং*স্র বা*ঘও আছে।
রমিজ রাজ কোনমতে নুহাস টেনে নিয়ে আসে। নুহাস তখন রমিজ রাজকে বলে, এবার এই এম,কের খেল খতম করবো আমি। আর রইলো শাফিনের কথা ওকে যেমন আমি নিজের স্বার্থে বাঁচিয়ে রেখেছি। ঠিক নিজের স্বার্থে আবার মে*রেও দিতে পারব।
একজন সাংবাদিক রমিজ রাজের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলো, একজন আসামি যার মানুষিক ভার সম্য ঠিক নেই। সে জেল থেকে কি ভাবে পালায়?
তাহলে কি আমরা ধরে নেবো আপনাদের গাফেলতির কারনে একজন অফিসার নির্মম ভাবে হ*ত্যা করা হলো।
রমিজ রাজ নিজেকে সংযত করে বলে,তাহলে আমাদের দ্বায়িত্ব আপনি পালন করুন দেখি কতটা নিখুঁত ভাবে করতে পারেন?
সাংবাদিক ক্যামের দিকে তাকিয়ে বলে,এতো বড় একটা দূর্ঘটনার পরেও তাদের গা’ছাড়া কথা বার্তা প্রমান করে তারা নিজেদের কাজে কতটুকু তাৎপর্যশীল।আপডেট নিউজ পেতে স্বদেশের সংবাদের সাথেই থাকুন।
রমিজ রাজের এই মূহুর্তে ইচ্ছে করছে নহাসকে জীবতে করে থাপ্পড় মা*র*তে। একটার পর একটা ঝামেলা লেগেই আছে। রমিজ রাজ নুহাসের লা*শ মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বললো।একটা চেয়ার টেনে আয়রার সামনে বসলো, আয়রার হাত ততক্ষণে বেঁধে দেয়া হয়েছে। তবে জামা কাপড়ে র*ক্তে*র দাগ লেগেই আছে। রমিজ রাজ শান্ত কন্ঠে আয়রাকে বললো,তুমি এখানে কি করে আসলে?
আয়রা কোন উত্তর দিচ্ছে না মনে হচ্ছে সে নিজের মধ্যে নেই। রমিজ রাজ যা বোঝার বুঝে ফেলেছে।
দু’জন মহিলা কনস্টবলকে বললো,আয়রাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে। রমিজ রাজের কপারে চিন্তার ভাজ স্পষ্ট।
#চলবে
আসসালামু আলাইকুম।গল্পের একদম শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। আর অল্প কিছু পর্ব বাকি আছে।তাই গল্প নিয়ে কোন কনফিউশান থাকলে জানিয়ে দেবেন। আমি শুধরে নেয়ার চেষ্টা করবো।
ভুলত্রুটি মার্জনীয় দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং 🥰