কাঞ্জি পর্ব -১৩

#কাঞ্জি
#পর্ব-১৩
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
শাহরিয়ার বেশ বড়সড় একটা চিমটি কেটেছে আবৃতির অধরে।ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে জেগেছে মেয়েটা।যতদূর মনে পড়ে সে রত্না বেগমের ঘরে ঘুমিয়েছিল।তার মাথাটা কাজ করতে সময় লাগলো কিছুটা।মুহুর্তের ভগ্নাংশে সে অনুভব করলো একটা পুরুষালী হাতের স্পর্শ। যে স্পর্শ চলাফেরা করছে তার ঠোঁটের চারিপাশে।আবৃতি বিরক্তিকর মুখভঙ্গি করে বলল,

“কি সমস্যা?আমাকে কি আপনার হোয়াইট বোর্ড মনে হচ্ছে?মুখে আঁকিবুঁকি করছেন?”

“তুমি তো ধানী লংকা পাখি।আজ সকালের নাস্তাটা মিষ্টি ছিল তাই ঝাল মুখ করতে এলাম।”

“আপনি কি সব বাজে কথা বলছেন?”

“বাজে কথা তখন হতো যখন আমি তোমাকে চু….

আবৃতি কথা শেষ করতে দেয় না।প্রেমিক পুরুষের মুখে হাত দিয়ে বাধা দেয়। শাহরিয়ার হাসে। যে হাসিতে কাপন ধরায় আবৃতির বুকে।হাতের মাঝেই সে অনুভব করে শাহরিয়ারের চলন্ত অধর। লজ্জায় নুইয়ে পড়তে দেখে শাহরিয়ার হেসে বলে,

” কাকী নেই ফ্ল্যাটে। আজ তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো।”

“কোথায়?”

“তোমার নিজের বাসায়।আমি তোমার জন্য একটা ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছিলাম।আজ সেটার লাস্ট পেমেন্ট করতে যাচ্ছি।”

“আমার নামে কেন?কাকীর নামে দিতে পারতেন।আমি এখনো আপনার কিছুই হই না।”

“এখানেই ভয় আবৃতি। আমার তোমার প্রতি কোনো অধিকার নেই।আমাদের এক সাথে চলার পথ সহজ হবে না।তোমাকে শক্ত হতে হবে। ঝড় সইতে হবে।”

“এতো ঝড়ের থেকে আলাদা থাকাই ভালো।”

“তোমার মুক্তি নেই পাখি। তুমি শাহরিয়ার নামক পিঞ্জিরায় আটকা পড়েছো।মরলেও তুমি আমার বাঁচলেও তুমি আমার।”

শাহরিয়ার দাঁড়ায়নি।চুলে হাত ঘুরাতে ঘুরাতে সে চলে যাচ্ছিল।পিছন ফিরে বলল

“তোমার হাতে আজ যেন এই ঘড়িটাই থাকে। আর হ্যাঁ কি পারফিউম দাও তুমি?মাথা নষ্ট করে ফেলেছো।”

———–

আবৃতির ফ্ল্যাট থেকে শাহ কে বের হতে দেখে ভ্রু-কুঁচকে ফেলল ওয়াজিফা। লিফটে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বলল,

“ওদের ওখানে কেন গিয়েছিলে?”

“ব্যক্তিগত স্পেসটা খুব দরকার।”

“আমাকে কেমন লাগছে?”

“সময় হবে তোমার?দশ মিনিট? বাগানে বসি?”

“আমি কফি করে আনবো?”

“প্রয়োজন নেই।এসো।”

বাগানে বসে ওয়াজিফাই প্রথম প্রশ্ন করলো।তার মনে ভীষণ কু গাইছিল।যেন শাহরিয়ার এমন কিছু বলবে যেটা সে মেনে নিতে পারবে না।
“বলো কি বলবে।”

“কিছু বিষয় ক্লিয়ার হওয়া প্রয়োজন আমাদের মাঝে।”

“বলো।”

“আমি তোমাকে পছন্দ করি। কিন্তু প্রেয়সী হিসেবে এমনটা কখনো কোনো ব্যবহারে মনে হয়েছে?”

” তুমি আমার অনেক কেয়ার করো।আমার ছোটো ছোটো বিষয়ে তুমি খেয়াল রাখো।”

“যেমন?”

” এই যে তুমি আমার প্রতিটি পরীক্ষার সময় আমার খোঁজ নাও। ঈদে সেলামী পাঠাও কিংবা অসুস্থতায় খেয়াল নাও।”

“আমাদের বাসার দাড়োয়ান চাচার মেয়ে এবার অনার্স ভর্তি হবে।আমি দশ বছর যাবত ওর লেখাপড়ার খরচ দিয়ে আসছি।এটা জানো তো?”

“জানি।”

” আমাদের সকল কাজিনদের জন্য আমি উপহার পাঠাই তবে কি আমি সবাইকে পছন্দ করি?”

“না মানে….

” শোনো তুমি আমাকে পছন্দ করো এটা তোমার ব্যক্তিগত ব্যপার। আমি কিছুই বলতে পারি না কিন্তু তোমাকেও বুঝতে হবে আমি কি চাই।”

“আমাদের চাওয়া থেকে বাবা মায়ের ইচ্ছের প্রাধান্য দিতে হবে।”

“আমি আপাতত এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।আমার বিষয়ে আমি বুঝবো।তুমি বিয়ে করে নাও ওয়াজিফা।আমার সাথে তোমার যায় না।আমি আগেও ঠিক পনেরো বার তোমাকে একই কথা বলেছি।”

ওয়াজিফা থরথর করে কাঁপছিল।সে মৃদু আন্দোলিত হওয়া কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

“আপনি কি কাউকে ভালোবাসেন?”

ওয়াজিফার কথাও থমকালো শাহ।তার দিকে তাকিয়ে বলল,

“তুমি নিঃসন্দেহে অনেক ভালো মেয়ে।তোমাকে পাওয়া পুরুষ হবে ভাগ্যবান তবে সেই ভাগ্যবান পুরুষটা আমি হতে পারবো না।আমার ভরসায় থেকো না।”

ওয়াজিফা ধীর পায়ে ফিরে এলো।শাহরিয়ারের মা এবং বোনের সামনে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলো।তাকে জিজ্ঞেস করতেই সে সব বলল।ভাইয়ের এমন করার কারণ শাহানারা জানে কিন্তু তার মায়ের রাগের কারণে কিছু বলতে পারলো না।দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মনে মনে বলল,

“এ কেমন ত্রিকোণ নিয়তি জড়িয়ে পড়লে ভাই তুমি?”

চলবে( আজ আমি আর লিখতে পারছি না।আপাতত এটুক পড়ুন।আমি আগামী পরশু পরবর্তী অংশ দিবো।আর হ্যাঁ রেসপন্স করবেন।তাই অন্যদের টাইমলাইনে পৌঁছে যাবে।কমেন্ট করবেন এতে যদি লেখার মনোবল ফিরে আসে।”

#ছবিয়ালঃ sadia mrinalini

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here