#আমার_ভাঙা_ক্যানভাসে (১৫)
#তানজিলা_খাতুন_তানু
রুহি আর জয় এক বাড়িতে এক ছাদের তলায়, এক রুমের মধ্যে থেকেও কোনোরকমের বনিবনা করে উঠতে পারছে না। রুহি এখনো সেই পুরানো রাগ ধরে বসে আছে আর জয় রুহির ইগনোর গুলো মেনে নিতে না পেরে অভিমান পাহাড় গড়তে শুরু করেছে।ওদের কি হবে কে জানে!!
– ‘রুহি মা একবার এইদিকে আয় তো।’ (জয়ের মা)
– ‘আসছি মামনি।’
রুহি বসার ঘরে এসে দেখল জয়ের মা ডাইরি খুলে কিছু একটা করছেন।
– ‘মামনি ডাকছিলে!’
– ‘আয় এইখানে বস।’
রুহিকে নিজের পাশে বসিয়ে নিজের হাতে থাকা ডাইরিটা রুহির হাতে তুলে দিয়ে বললেন,
– ‘এই পরিবারের প্রতিটি খুঁটিনাটি সবকিছু এতে লেখা আছে। আজ থেকে এইটা তোর, আমার এইবার ছুটি।’
– ‘মামনি এইরকম করে বলছো কেন? তুমি কোথায় যাবে! এই সংসারটা তো তোমারই।’
– ‘এখন থেকে এইটা তোর সংসার সবাইকে আগলে রাখবি কথা দে।’
– ‘কথা দিলাম।’
জয়ের মা রুহিকে জড়িয়ে ধরলেন। রুহি হাসল, তবে ওনার এইরকম কথার অর্থ বুঝতে পারল না।
**
ছাদে রোহান, সোহান আর এইদিকের ছাদে দিয়া দাঁড়িয়ে আছে। তিনজনের মাঝে গভীর মিটিং চলছে কীভাবে জয় রুহির সম্পর্কটাকে স্বাভাবিক করা যায়।
– ‘এই দিয়া কিছু পেলি।’
– ‘নাহ।’
রোহান দিয়ার মাথায় চাঁটি দিয়ে বলল,
– ‘তোর দাঁড়া কিছু হবে না ভাগ।’
– ‘আহ্। রোহানের বাচ্চা তোকে সামনে পেলে তো আমি খেয়েই ফেলব।’
– ‘আমি তোর সামনেই আছি, সেটা বোধহয় ভুলে যাচ্ছিস। বাই দ্যা ওয়ে তুই রাক্ষসী নাকি!!’
– ‘দ্যাখ রোহান ভালো হচ্ছে না কিন্তু।’
– ‘এই রোহান থাম না, কেন বেকার বেকার ঝামেলা করছিস?’ (সোহান)
– ‘আমি কিছু করিনি আমি ভালো ছেলে।’
– ‘থাম এইবার। আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে।’
– ‘কি প্ল্যান।’
সোহান কিছু বলতে যাবে তার আগে কেউ বলে উঠল,
– ‘কি আড্ডা হচ্ছে, আমি কি আসতে পারি।’
তিনজনে তাকিয়ে দেখল প্রিয়া দাঁড়িয়ে আছে। দুজন বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে নিলেও সোহানের একটু অস্বস্থি বোধ হলো, কারন ওহ আন্দাজ করেছে প্রিয়া জয়কে পছন্দ করে। আর তার সামনে ওদের এক করে দেবার বিষয়টি বলাটা একটু কেমন যেন। কিন্তু আবার মুখের উপর কিছু বলতেও পারবে না।
দিয়া বললো,
– ‘আরে প্রিয়া আছে। আসো না।’
– ‘কি আড্ডা দিচ্ছো?’
সোহান ইতস্তত বোধ করছে, কিন্তু গাধা দুটো কিছু না বুঝেই বলে দিলো,
– ‘দিদিয়া আর জয়দাকে এক করার প্ল্যান চলছে। তোর কাছে প্ল্যান থাকলে আমাদের বলতে পারিস।’
প্রিয়া একটু চুপ থেকে সোহানকে অবাক করে দিয়ে বলল,
– ‘রুহিপু আর জয়দাকে যদি কোথাও ঘুরতে পাঠানো যায়, আমার মনে হয় ওরা কিছুটা কাছাকাছি আসতে পারবে।’
সোহানের মুখটা হাঁ হয়ে গেছে, প্রিয়ার মুখ থেকে এইরকম কথা শুনে আশা করেনি।
– ‘একদম ঠিক বলেছিস প্রিয়া। কি সোহানদা কিছু বলো।’
– ‘হ্যাঁ। হ্যাঁ।’
**
সোহানের উপর দায়িত্ব পড়েছে, বড়ো আব্বুকে রাজি করানোর জন্য। যাতে করে জয় আর রুহি কোথাও ঘুরতে যেতে পারে।
– ‘বড়ো মামু তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।’
– ‘কি বল।’
– ‘জয় আর রুহির সম্পর্কটা তো স্বাভাবিক নেয়, এখন ওরা যদি কোথাও ঘুরতে যায় তাহলে…
– ‘থাক সব বুঝতে পেরেছি, চিন্তা করিস না আমি দেখছি ব্যাপারটা।’
সোহান ফোনটা কেটে দিয়ে লাফিয়ে উঠল। কিন্তু বিষয়টা এখনই কাউকে যাবে না, একটু মজা না নিলে কি হয়।
সোহান মনখারাপ করে রোহানের রুমে গেল।
– ‘এই রোহান।’
– ‘কি হয়েছে? তোমার মুখটা এইরকম লাগছে কেন?’
– ‘সব বলছি আগে সবাইকে নিয়ে ছাঁদে আয় কথা আছে।’
– ‘ওকে।’
তিনজনে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে, আর ওইদিকে দিয়া একা দাঁড়িয়ে আছে।
– ‘কি হয়েছে? সোহানদা এইভাবে মুখ করে রেখেছো কেন?’
– ‘সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি। কিন্তু কিছুই বলছে না।’ (রোহান)
– ‘আসলে… বড়ো মামু রাজি…
সবাই সোহানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, ভয় করছে যদি রাজি না হয় তো।
– ‘কি হলো বলো।’ (প্রিয়া)
– ‘বড়ো মামু রাজি হয়ে গেছে।’
সবাই আনন্দে লাফিয়ে উঠল।
– ‘এই লাফালাফি বন্ধ কর। কোথায় পাঠানো যায় বল তো।’ (সোহান)
– ‘দাড়াও ভাবি একটু।’ (প্রিয়া)
– ‘গ্যাংটক পাঠালে কেমন হয়!!’ (দিয়া)
– ‘হ্যাঁ দুজনের মাথাটাও ঠান্ডা থাকবে।’
কথাটা বলে সবাই হেসে উঠল। আপাতত প্ল্যান গ্যাংটক। রুহি আর জয়কে এইবার রাজি করাতে পারলেই হবে।
– ‘কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধতে কে?’ (দিয়া)
– ‘বড়ো মামু।’ (সোহান
**
রুহি রাগে নিজের ঘরে পায়চারি করে চলেছে। জয় নিজের ফোন টিপতে ব্যস্ত। হামিদ চৌধুরী নিজে ফোন করে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। রুহি কিছুতেই যাবে না কিন্তু সবার জোড়াজুড়িতে রাজি হয়েছে।
– ‘এই সবটা আপনার প্ল্যান তাই না!’
– ‘কি প্ল্যান?’
– ‘এই ঘুরতে যাবার বিষয়টা।’
– ‘পাগল নাকি। তোমার সাথে ঘুরতে গিয়ে প্রা’ন হা’রাব নাকি!’
– ‘এই কি বললি তুই? আমার সাথে গেলে প্রা’ন হা’রাবি মানে!’
– ‘এই তো মেয়ে ধীরে ধীরে লাইনে আসছে, জয় লেগে থাকো।’ (মনে মনে)
– ‘এই জয়ের বাচ্চা চুপ করে আছিস কেন? বল।’
– ‘তুই যা মেয়ে দেখা যাবে কোথায় আমাকেই পাহাড় থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবি।’
– ‘হ্যাঁ দেবেই তো, তুই আমাকে বড্ড জ্বালাতন করছিস তোকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে আমার রাগ মিটবে।’
জয় হুট করে রুহির অনেকটা কাছে চলে এসে বলল,
– ‘পারবি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে!!’
রুহি হকচকিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর সেই আগের রুহিতে ফিরে গিয়েছিল, জয়ের সাথে দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছিল।
– ‘কিরে চুপ করে গেলি কেন? বল।’
– ‘হ্যাঁ পারব, সরুন।’
রুহি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে যাবে জয় রুহির হাতটা আঁকড়ে ধরে বলল,
– ‘আর কতদিন এইভাবে আমাকে পো’ড়াবি আর নিজে পু’ড়বি!’
রুহি জয়ের হাতটা ছাড়িয়ে নিতে নিতে বলল,
– ‘যতদিন না আপনি আমাকে মু’ক্তি দেবেন ততদিন।’
জয় নিজে থেকেই হাতটা ছেড়ে দিলো। কখনো কি সম্পর্কটা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে না!
#চলবে….#আমার_ভাঙা_ক্যানভাসে (১৬)
#তানজিলা_খাতুন_তানু
আপাতত ঘুরতে যাবার প্ল্যানটা ক্যান্সিল হয়ে গেল। রুহির দাদু পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ঘুরতে যাওয়াটা একটু বেমানান। রুহি ওর বাবার বাড়িতে আছে, দাদুর অবস্থা খুবই খারাপ বাড়িতে থেকেই সমস্ত ধরনের ট্রিটমেন্ট করছে। সবাই কান্নাকাটি করছে সারাদিন।
– ‘রুহি দিদিভাই এইদিকে একটাবার আসবে।’
রুহি ধীর পায়ে ওর দাদুর পাশে গিয়ে বসল।
– ‘দিদিভাই তুমি তো সকলের থেকে বুঝদার তাই না। তুমিই পারবে আমার এই সংসারটাকে আগলে রাখতে, সবাইকে একসাথে বেঁধে রাখতে। কথা দাও সবাইকে ভালো রাখবে তুমি।’
– ‘হুম কথা দিলাম।’ (কেঁদে দিয়ে)
– ‘আরে পাগলি কাঁদছো কেন? কেঁদো না, জয়কে নিয়ে সুখে থাকবে, খবরদার দুজনে একদম ঝগড়া করবে না একসাথে মিলে মিশে থাকবে। সবাইকে ভালো রাখো রুহি।’
হঠাৎ করেই রুহির দাদুর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। রুহি সকলকে ডাকাডাকি করতে থাকে, ওনাকে অস্থির হতে দেখে রুহি ঘাবড়ে গিয়ে, কান্না করে দেয়।
কিছুক্ষনের মধ্যেই গোটা বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়। রুহির দাদু ফাঁকি দিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। রুহি চিৎকার করে কাঁদছে, দাদুর সাথে সম্পর্কটা খুব মিষ্টি ছিল একটা সময় দাদু ছাড়া কিছুই বুঝত না আজকে সেই মানুষটাই রুহিকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল সেইটা রুহি মেনে নিতে পারছে না। রুহি কান্না দেখে অন্য সকলে আরো ভেঙে পড়ছে। প্রিয়া রুহিকে জড়িয়ে ধরে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে,
– ‘রুহিপু শান্ত হও, এইভাবে কেঁদো না।’
– ‘ওই প্রিয়ু দাদুভাইকে উঠতে বল না, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রে। কেন দাদুভাই আমাকে একাকে রেখে চলে গেল, কেন তার দিদিভাইকে একাকে রেখে চলে গেল? একটাবার দাদুভাইকে উঠতে বল না।’
রুহির চিৎকারে গোটা বাড়ি কেঁপে উঠছে, রুহিকে কে কি বলে শান্তনা দেবে বুঝে উঠতে পারছে না।
দাফনের সময় এগিয়ে আসছে লাগল, গোসল দেওয়ার পর যখন সাদা কা’ফনে জড়িয়ে খাঁটিয়াতে শুইয়ে দিয়েছে। সকলকে শেষ বারের মতো দেখাচ্ছে তখন হামিদ চৌধুরী রুহিকে ধরে নিয়ে দেখাতে নিয়ে যায়।
– ‘এই তোমরা আমার দাদুভাইকে এইভাবে এতে শুইয়ে রেখেছ কেন? আর কিসব পড়িয়েছ এইসব!’
– ‘রুহি মা শান্ত হও। দাদুভাইকে শেষবারের মতো চোখের দেখা দেখে নাও।’
– ‘বড়ো আব্বু তুমি এইসব কি বলছো? চোখের দেখা দেখব কেন? আমার দাদুভাই আমার কাছেই থাকবে আমি কোথাও যেতে দেব না। দাদুভাই ওহ দাদুভাই ওঠ না।’
রুহি খাটিয়ে ধরতে গেলে হামিদ চৌধুরী ওকে আটকে দিয়ে বলল,
– ‘নিজেকে সামলাও রুহি। তুমি না বুঝদার মেয়ে এইভাবে পাগলামী কেউ করে।’ (কিছুটা ধমক দিয়ে)
রুহি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে হামিদ চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। হামিদ চৌধুরীর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে, তার বুকটাও যে ফেঁটে যাচ্ছে আজকের পর থেকে আর কাউকে বাবা বলে ডাকতে পারবে না, কেউ আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে সাহস দেবে না। কিন্তু ওনাকে যে শক্ত থাকতে হবে, না হলে বাড়ির ছোটদের সামলাবে কিভাবে!
দাফন কাজের জন্য ওনাকে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। রুহি কান্না থামিয়ে দিয়ে হঠাৎ করেই একদম গম্ভীর হয়ে উঠে। কাউকে কিছু না বলে চুপচাপ একধারে বসে থাকে।
দুদিন কেটে গেছে, রুহি কারোর সাথে কথা বলে না, ঠিক মতো খায় না। একা একা বসে থাকে আর কি যেন ভেবে চলে মাঝেমধ্যে দাদুর ঘরে গিয়ে সময় কাটায়, একা একা কথা বলে। অন্যরা মোটামুটি নিজেদের সামলে নিলেও রুহির অবস্থা দেখে সবই খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
হামিদ চৌধুরী জয়কে ডেকে পাঠালেন,
– ‘আঙ্কেল আমাকে ডেকেছিলেন?’
– ‘হুম তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।’
– ‘জ্বি বলুন।’
– ‘বাবার মৃত্যুতে রুহি কতটা শক পেয়েছে এসটার তো তুমি জানোই। ওকে কিছুতেই স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরিয়ে আনতে পারছি না। তুমি যেহেতু ওর স্বামী কাজটা তুমিই ভালো পারবে।’
– ‘আঙ্কেল আমি তো আগেই ওকে ওই বাড়িতে নিয়ে চলে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু বাড়ির পরিস্থিতি দেখে কিছু বলতে পারিনি।’
– ‘রুহি এখন কিছুদিন এই বাড়িতেই থাকুক। তুমি এই বাড়িতে ওকে সময় দাও আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে।’
– ‘আচ্ছা তাহলে তাই হবে। আঙ্কেল আমি রুহিকে নিয়ে বিকালে একটু বের হতে চাই।’
– ‘আচ্ছা।’
বিকালে..
রুহি মনখারাপ করে একা ঘরে বসে আছে। জয় ধীর পায়ে ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ায়, রুহির সেইদিকে খেয়ালই নেয় ওহ নিজের মতো ভাবনায় ব্যস্ত। জয় রুহির কাঁধে হাত রাখতেই রুহি ধরফরিয়ে উঠে বলল,
– ‘দাদুভাই, দাদুভাই।’
জয় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুহির হাতটা শক্ত করে ধরে বলল,
– ‘রুহি নিজেকে সামলাও। দাদুভাই আর ফিরে আসবে না।’
– ‘তুমি এইসব কি বলছো? কে বলেছে আমার দাদুভাই আর ফিরে আসবে না! ঠিকই আসবে। তুমি যাও তো আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।’
– ‘না সেটা তো হচ্ছে না। আজকে এখুনি তুমি আমার সাথে বাইরে যাবে।’
– ‘কেন?’
– ‘দরকার আছে তোমার সাথে চলো।’
রুহি প্রথমে যেতে চাইনি শেষে জয়ের জোড়াজুড়িতে রাজি হয়েছে। বর্তমানে রুহি নিজের মধ্যে নেয়, কাকে কি বলছো নিজেই জানে না। বলে চলে রুহি বাস্তব জীবন থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
নদীর ধারে বসে রুহি নদীতে একটার পর একটা ঢিল ছুড়ে চলেছে। এই অভ্যাসটা ওর দীর্ঘদিনে, মনখারাপ থাকলেই ঢিল ছুড়তে থাকে।
– ‘খাবি!!’ (জয় রুহির সামনে বাদাম ভাজা ধরে বলল)
– ‘না।’
– ‘আচ্ছা রুহি এইভাবে মনখারাপ করে থাকলে কি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে? দাদুভাই কি ফিরে আসবে!’
রুহি কিছু না বলে চুপ করে নদীর পানির দিকে তাকিয়ে আছে।
– ‘জানিস রুহি আমাদের জীবনটা এই নদীর মতোই। কখনো জোয়ার আবার কখনো ভাটা। তাই বলে আমরা থমকে যাবো! প্রতিটা মানুষকেই একদিন না একদিন এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হয় আজ দাদুভাই করেছেন কাল হয়তো আমি করব।’
জয়ের এইরকম কথা শুনে রুহি ওর দিকে তাকায়। জয়ের মুখে এইরকম একটা শুনে চমকে উঠেছে। জয় ওর মনোভাব বুঝতে পেরে বলল,
– ‘আমি জাস্ট কথার কথা বলেছি। প্লিজ রুহি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আয়, তোকে এইভাবে মনমরা দেখতে আমাদের কারোর ভালো লাগছে না। তোকে নিয়ে বাড়ির প্রতিটি মানুষই চিন্তিত।’
– ‘বাড়ি ফিরব আমি।’
জয় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুহিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসল। কথাগুলো কাজ দিয়েছিল, রুহি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
হামিদ চৌধুরী সকলকে ডেকে পাঠালেন। কিছু কথা বলার জন্য। মাঝে বেশ কয়েকটা দিন কেটে গেছে, রুহিও আগের থেকে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।
– ‘তোমাদের সকলকে আমার একটা সিদ্ধান্ত জানানোর ছিল।’
– ‘কি সিদ্ধান্ত দাদা?’
– ‘বাবা তো চলেই গেছেন তাই….
#চলবে…