#পূর্ণা
পর্বঃ১
প্রায় পঁচাত্তর বছর বয়সের কোঠায় পা দেওয়া মবিন সাহেব মৃত্যুশয্যায়। তার শিয়রে বসে অনবরত দোয়া ইউনুস পড়ছে পূর্ণা। বছর ত্রিশের অপরূপ সুন্দরী পূর্ণা। তার ফর্সা মুখ দুশ্চিন্তায় লাল হয়ে আছে। সেই মুখের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে আছেন মবিন সাহেব মুগ্ধতার সাথে। প্রায় চল্লিশ বছর দাপটের সাথে চাকরী করেছেন তিনি। তার সাথে ছিলো অগাধ টাকা পয়সা, জমি জমা ব্যবসা, বাড়ি গাড়ি। ছিলো অনেক ভালোবাসার স্ত্রী সাজেদা বেগম আর চার ছেলে তিন মেয়ের ভরা সংসার। আজ কেউ নেই তার পাশে। স্ত্রী গত হয়েছেন আরো বছর দশেক আগে। কি এক কঠিন অসুখ হলো তার। দেশ-বিদেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন তাকে মবিন সাহেব। বড্ড ভালোবাসতেন যে। নাহ! আটকে রাখতে পারেন নি তিনি তার ভালোবাসাকে। তাকে একা করে দিয়ে চলে গেছে সে। আর ছেলে মেয়ে? যে যার কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত। মাসে পালা করে একবার ফোন আর বছরের কোনো এক ঈদে সব ভাই-বোন মিলে কয়েকদিনের জন্য ঘুরে যাওয়া। এতেই তাদের কর্তব্য পালন হয়ে যায়। এই বিশাল তিন তলা বাড়ির মধ্যে বুড়ো বাপ কে একা ফেলে রাখতে তারা অস্বাভাবিক কিছু মনে করে না। সেবার তাদের মা মারা যাবার পরদিন ছেলে মেয়েরা বাবাকে মিটিং এর এক পাশে ফেলে তর্ক বির্তক শুরু করে দেয়।
ছোট মেয়ে প্রিয়তা বলে,”আমি কিভাবে এখন বাবাকে আমার বাসায় রাখবো বলো?রুহির বাবার ছোট চাকরি, তার উপর বাসা টাও বড্ড ছোট রে। বড়পা তুই নে না বাবাকে তোর বাড়ি। তোর তো কতো বড় ফ্লাট।” একপাশে জবুথবু হয়ে বসে থাকা মবিন সাহেব একটু মুচকি হাসলেন। প্রিয়তার স্বামীর মোটেই ছোট চাকরি না। আর তার বাসা টাও বেশি-ই ছোট কিনা মাত্র ২২০০ বর্গফুটের! বাবাকে না নেওয়ার কতো অজুহাত! বড় মেয়ে চিত্রা চোখ কপালে তুলে বললো,” এটা কোনো কথা বললি প্রিয়তা? এক বাচ্চার মা হলি এখনো বুদ্ধি হলো না তোর। তোর দুলাভাই এর মা বাবা যে প্রায়ই আমার বাড়ি এসে থাকে সে কি ভুলে গেলি তুই?এর মধ্যে বাবা কিভাবে অ্যাডজাস্ট করবে তুই বল?” মবিন সাহেব আবার একটু হাসেন। তার বড় মেয়ের রুক্ষ ব্যবহার এর জন্য তার শ্বশুর শ্বাশুড়ি প্রায় বছর চারেক হলো ছেলের বউ এর সাথে যোগাযোগ ই করেন না! বড় ছেলে সাব্বির গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,” দ্যাখ আমি তো আমার বাড়ি নিতেই পারি বাবাকে তোদের ভাবীও বাবাকে অনেক শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু আমরা দুইজনই যে চাকরীজীবী। বাচ্চাগুলো ও স্কুল,প্রাইভেট নিয়েই ব্যস্ত থাকে। বাবা আমার বাড়ি গেলে বোর ফিল করবে রে ভীষণ ” মবিন সাহেব একে একে তার সব ছেলেমেয়েদের কথাই শুনলেন। সবারই কিছু না কিছু সমস্যা আছেই বাবাকে নেওয়ার জন্য। হবে নাই বা কেনো? বুড়ো মানুষের এর ভার কে ই বা নিতে চায়? নিচের দিকে তাকিয়ে একটা ভারী দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি। কেনো যে তার সঙ্গী তাকে একা করে চলে গেলো। তারপর মাথা উঠিয়ে ছেলেমেয়েদের দিকে তাকিয়ে বললেন,”তোমরাই তো সব বললে, এবার আমি কিছু বলি?” ছেলেমেয়েরা একটু ভয়ই পেলো এবার। বাবা নিজে থেকে কারো বাসায় উঠতে চায়না তো আবার? কে হতে পারে সে? মবিন সাহেব একটু হেসে বললেন,” এতো ভয় পাওয়ার কিছু হয়নি তোমাদের। আমি তোমাদের বাবা, আমি সবই বুঝি। আমি আর তোমাদের মা অনেক আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে কেউ একজন না থাকলে অন্য জন কোথায় থাকবে।”
ছেলেমেয়েরা অবাক হয়ে বাবার দিকে তার সিদ্ধান্ত শোনার জন্য তাকিয়ে থাকলো।
মবিন সাহেব ভারী কণ্ঠে বলা শুরু করলেন,”আমি আর তোমাদের মা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম। যে কেউ একজন আরেকজনকে ছেড়ে চলে গেলে অন্যজন এই বাড়িতেই থাকবো। সেই কথা টা তোমাদের আমিই জানিয়ে দিতাম আগে। কিন্তু তোমরা যে তোমাদের মা মারা যাওয়ার পর দিনই আমার থাকার জায়গা নিয়ে এতো চিন্তা শুরু করে দিবে এটা বুঝতে পারিনি। আমি তোমাদের কারো বাড়িতেই যাবো না। তোমাদের মায়ের শেষ স্মৃতি নিয়ে এই বাড়িতেই থাকবো। তাও ভালো এই সুযোগে তোমাদের চেহারা টা চেনা হয়ে গেলো। তোমরা যে আমাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করো এটা ভেবেও ভালো লাগলো।” শেষ এর কথা টা মবিন সাহেব একটু ব্যঙ্গ করেই বললেন। তার কথা শেষ হওয়া মাত্রই তার ছেলেমেয়েরা হাহাকার করে উঠলো। তারা কিছু বলবে তার আগেই মবিন সাহেব তাদের থামিয়ে দিয়ে বললেন,”তবে এটা ঠিক, আমরা এটাও পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম যে বেঁচে থাকবে সে কিভাবে সব সম্পত্তি সব ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।”এই কথা বলে মবিন সাহেব আবার একটু হাসলেন।এবার সব ছেলেমেয়েরা একটু নড়েচড়ে বসলো। সবার আগে মেজ মেয়ে জয়ীতা বললো, “বাবা এটা তুমি কেমন কথা বলো?আমি থাকতে তুমি কেনো একা এই বড় বাড়িতে থাকবে? আমার বাড়িতে থাকবে তুমি। তোমার বাকি ছেলেমেয়েরা তোমাকে না নিলেও আমি তোমাকে অবশ্যই নিবো আমার বাড়ি।” জয়ীতার কথা শেষ না হতেই বাকি ছেলেমেয়েরা হৈহৈ করে উঠলো। ছোট ছেলে স্মরণ বললো,”আরে আমি তো বাবাকে নিতেই পারি। বাসা ছোট হলেও একটা রুম তো এক্সট্রা পড়েই থাকে। আমি অফিসে চলে যাওয়ার পর তোমার বউমা তো বাচ্চাটাকে নিয়ে সারাদিন একাই থাকে। তুমি গেলে তার ভালোই লাগবে।”এভাবে সব ছেলেমেয়েরাই এখন বাবাকে নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেয়।মবিন সাহেব জানতেন এমনটাই হবে। সে মনে মনে বলে,”তুমি কেনো আমার আগে চলে গেলে বলো তো?যাদের জন্য জীবন ব্যয় করলাম, তুমি আর আমি যেই স্বপ্ন দেখলাম সোনার সংসার এর, আজ সম্পত্তির কাছে সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেলো।মবিন সাহেব এর সামনেই ছেলেমেয়েরা ঝগড়া শুরু করে দিলো,”কে বাবাকে বাড়ি নিবে”
মবিন সাহেব সবাইকে থামিয়ে বললেন,”তোমরা চুপ করো। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করো না। আমার যা সিদ্ধান্ত শোনানোর শোনানো হয়ে গেছে। আমার অবস্থা আল্লাহর রহমতে এতো টাও খারাপ না যে তোমাদের সিদ্ধান্ত মতো চলতে হবে।”এই বলে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। ছেলেমেয়েরা মাথা নিচু করে বসে থাকলো।
তারপর চলে গেছে আট বছর মতো এরপর একদিন…
তারপর একদিন মবিন সাহেবের দূর সম্পর্কের এক চাচী এলেন মবিন সাহেবকে দেখতে। তার ডিভোর্সি মেয়েকে নিয়ে। কম বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন ধনী ঘর দেখে। কিন্তু মেয়ের কপাল ছিলো পোড়া। জামাই ছিলো নেশাগ্রস্ত রোগী। প্রায় রাতে নেশা করে এসে বউকে প্রচুর মারতো আর অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতো। অথচ সে বাড়ির লোক কোনোভাবেই ছেলের দোষ দিতো না। সব দোষ নাকি বউয়ের। সে নাকি তার বরকে ভালো করতে পারেনি। মেয়ে বাড়ি এসে মা কে বলতো মা আমি আর ও বাড়ি ফিরে যাবো না। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। এদিকে তার বাপের বাড়ির অবস্থাও শোচনীয়। দিন আনে দিন খায়। আরো অনেক গুলো ভাইবোন। বুঝিয়ে শুনিয়ে মেয়েকে আবার সেই বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে আসা হতো। এভাবেই চলছিলো। এরমধ্যে এক ঝড়বৃষ্টির রাতে তার বর নেশা করে এসে নির্মম ভাবে মার*ধর করে তাকে। এতোটাই অত্যা*চার করে যে সবাই ভেবেছিলো এবার বোধহয় বউটা মরেই যাবে। তারা কোনো পুলিশ কেসের ঝামেলা তে যেতে চায়না, তাই সে রাতেই তারা তাদের নিজেদের গাড়িতে করে মৃ*তপ্রায় মেয়েকে তার বাপের বাড়ি ফেলে যায়। এরপর ডিভোর্স হয়ে যায় কয়েক মাসের মধ্যে। অপরূপ সুন্দরী হওয়াতে বাড়িতে মেয়েকে রাখা আরো সমস্যা হয়ে যাচ্ছিলো তাদের। একে তো গরীব ঘরের মেয়ে তার উপর ডিভোর্সি। সবাই বাজে নজরে দেখা শুরু করে মেয়েকে। না পেরে মবিন সাহেবের বাড়ি নিয়ে আসে তাকে।
“বাবা মবিন, জানি আমরা তোমার অনেক দূরের আত্মীয়। আমাদের হয়তো ভালো করে চিনতেও পারবে না তুমি। কিন্তু বাবা, এই মুহূর্তে তুমি ছাড়া আর কোথায় মেয়েটাকে নিয়ে যাবো আমি কিছু বুঝতে পারছি না।” এই বলে কাঁদতে লাগলেন মবিন সাহেবের চাচী। সব শুনে মবিন সাহেব বললেন,” দেখুন আমার অনেক বয়স হয়েছে। স্ত্রী মারা গেছে বেশ কিছু বছর আগে। ছেলেমেয়েরা সবাই দূরে। কাজের লোক অনেক আছে কিন্তু রাতে কেউ থাকে না। চব্বিশ ঘণ্টা একজন দেখাশোনা করার মতো মানুষ আমার দরকার। কিন্তু সব থেকে বড় কথা আমি একজন বিপত্নীক মানুষ, একা থাকি, আপনার যুবতী মেয়ে। আমার সাথে থাকলে সমাজের মানুষ কি বলবে?আমার ছেলেমেয়েরাই বা কিভাবে নিবে বিষয় টা? আপনি বরং আপনার মেয়েকে নিয়ে যান। আমি মাসে মাসে কিছু টাকা পাঠাবো। তাতে ভালোমতো চলে যাবে আপনাদের আশা করি।”
মবিন সাহেবের চাচী আলেয়া বানু আস্তে আস্তে বললেন,” বাবা সে আমরা দিন আনি দিন খাই,মেয়েটার ও দু মুঠো ভাত হয়ে যাবে। টাকার দরকার নেই আমাদের। সেদিন চেয়ারম্যান এর ছেলে হুমকি দিয়ে গেছে মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে,কিন্তু বিয়ে করবে না। জানিনা পোড়াকপালি মেয়েটার কি হবে।” এই বলে মুখে আঁচল চাপা দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে উঠে গেলেন তিনি। তার শেষ কথাটায় চমকে উঠলেন মবিন সাহেব। একটা মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে এটা শুনেও মা কতো অসহায়, কিছুই করতে পারছে না। কোনো উপায় না পেয়ে তার দুয়ারে এসেছিলো। আর সে ফিরিয়ে দিয়ে দিলো। নিজের মধ্যে খুব অপরাধবোধ কাজ করছিলো তার। কি মনে করে তিনি ডাক দিলেন আলেয়া বানুকে।
“চাচী দাড়ান। আপনার মেয়ে কোথায়?”
আলেয়া বানু তার মেয়েকে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে রেখে এসেছিলেন। মবিন সাহেবের কথামতো দারোয়ান যেয়ে তাকে ডেকে আনলো।
মবিন সাহেব একটু ধাক্কা মতো খেলেন তাকে দেখে। এতো সুন্দরী একটা মেয়ে, কিভাবে তার স্বামী তাকে এভাবে মারতে পারে? আসলেই এই মেয়ের তার গ্রামে থাকা মুশকিল হওয়ারই কথা। কাঁচা হলুদ রঙের সস্তা শাড়িটাতেও যেনো তাকে পরীর মতো লাগছে। মবিন সাহেব ভেবে পেলেন না কি বলবেন। অনেক্ক্ষণ চুপ করে থেকে তার দিকে তাকিয়ে বললেন,”কি নাম তোমার?”
মেয়েটি মাথা উঁচু না করেই আস্তে করে বললো,”পূর্ণা”
সেইদিন ওই ফুলের মতো মেয়েটা মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি মবিন সাহেব। অদ্ভুত এক মায়া এসে ভর করেছিলো তার মেয়েটার জন্য। না, সেই মায়াতে কোনো কামুকতা ছিলো না, না তো ছিলো করুণা। সত্যিই এক মায়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি পূর্না নামক মেয়েটার প্রতি। পূর্ণার মায়েরও যেনো শান্তি হলো। এই বৃদ্ধ কি বা এমন ক্ষতি করবে তার মেয়েকে? নিজেরই কোনো ক্ষমতা নেই। বরং মেয়েটা এখানে এসে দুইবেলা পেটভরে খেতে তো পারবে। আর সবচেয়ে বড় যেটা হবে, অন্তত সম্মানের সাথে বাঁচতে পারবে। যদি চেয়ারম্যানের ছেলে সত্যিই মেয়েটাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়, তাহলে সমাজ তাদের একঘরে করে দিবে। ছোট ছোট আরো মেয়েরা আছে। তাদের বিয়ে হবে না। সব দিক বিবেচনা করে আলেয়া বানু আর দুইবার ভাবলো না মেয়েকে এখানে রেখে যেতে।
শুধু যাওয়ার আগে মেয়েটার মাথায় হাত দিয়ে বললো,”আমাকে ক্ষমা করে দে মা। তোর নিরাপত্তার জন্য এরচেয়ে ভালো পথ আমার কাছে আর খোলা ছিলো না।”
সত্যি বলতে সেদিন পূর্ণাও চাচ্ছিলো না এই বিপত্নীক, প্রৌঢ় মানুষটার কাছে একদম ফাঁকা একটা বাড়িতে পড়ে থাকতে। বাড়ি তো নয় যেনো প্রাসাদ। এতো বড় বাড়িতে কেউ নেই এই বুড়োটা ছাড়া। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসের কথা ভেবে সেদিন একটা কথাও বলেনি পূর্ণা মা কে। ঘাড় শক্ত করে মাটির দিকে তাকিয়ে কোনোরকমে চোখের পানি সংবরণ করে সে। আলেয়া বানু আঁচলে মুখে চেপে কাঁদতে থাকে। মবিন সাহেব বলার মতো কোনো ভাষা খুঁজে পায়না। বুকে দুই হাত বেঁধে মা মেয়ের কান্না দেখে সে। পূর্ণার মুখের দিকে তাকিয়ে সেদিন মবিন সাহেব বুঝতে পারেন কি চলছে মেয়েটার মনের মধ্যে। সে বা কি করবে? সে তো তাদের আসতেও বলে নি, আর থাকতেও বলছে না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। আলেয়া বানু চলে যাওয়ার পরে শুধু তিনি শান্তস্বরে বললেন,”দোতলার দক্ষিণের ঘরটা তুমি নিতে পারো। মনে হয় ভালো লাগবে তোমার। আর কিছু প্রয়োজন হলে একটু পর জালাল আসবে, ও বাজারসদাই করে, ওকে বলতে পারো।”
এই বলে সাথে সাথে ওই জায়গা প্রস্থান করেন মবিন সাহেব। পূর্ণা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে শূণ্যের দিকে চোখ মেলে।
দুইটা বছর পেরিয়ে গেছে তারপরে। পূর্ণা ভেবেছিলো এই বুড়োর সাথে বেশিদিন থাকতে পারবে না সে। কিন্তু কীভাবে আস্তে আস্তে এই বাড়িটাকে এতো আপন করে নেওয়া শুরু করলো সে নিজেই জানে না।
সেদিনের কথা ভেবে মুচকি হাসে মবিন সাহেব পূর্ণার দিকে তাকিয়ে। সেই হাসি দেখে পূর্ণা ফুঁপিয়ে ওঠে,”আপনি হাসছেন? আপনার এই কষ্ট দেখে আমার কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে আর আপনি হাসছেন? উফফ জালালটা এখনো আসছে না কেনো ডাক্তার নিয়ে? কতো দেরি করছে?”
পূর্ণার উৎকণ্ঠা দেখে আবারও হাসে মবিন সাহেব। মেয়েটা এতো মায়ায় জড়িয়ে রেখেছে কেনো তাকে? মবিন সাহেবের খুব বলতে ইচ্ছা করছে,”পূর্ণা তোমাকে সুন্দর লাগছে।” কিন্তু তিনি বলতে পারছেন না, ক্রমেই বার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ দরজার দিকে তাকিয়ে চোখমুখ শক্ত হয়ে ওঠে তার।
(চলবে….)
[লেখাটা আগের। দুইদিন ধরে অসুস্থতা আর সাথে কিছু ব্যক্তিগত ঝামেলায় একটু অনিয়মিত হয়ে পড়েছি আমি লেখায়। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করছি শিডিউল সব আগের মতো ঠিক করে ফেলার। ভেসে যায় জলপদ্মের বাইশ তম পর্ব লিখতে শুরু করেছি আর অনেকটা লেখা শেষ। আগামীকাল সকালেই চেষ্টা করবো দেওয়ার। তাই আপাতত এই গল্পটা পড়ে দেখতে পারেন আপনারা। ধন্যবাদ।[