বসন্ত এসে গেছে পর্ব ২৬

#গল্পঃবসন্ত এসে গেছে
#লেখাঃনুশরাত জেরিন
#পর্বঃ২৬

,
,

অপু দাড়িয়ে পরে।
রায়হান পিছু এসে দাড়ায়।
বলে,

—আমায় ইগনোর কেনো করছো রুপা?

অপু কিছু বলতে চায়।আবার পিহুর দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে যায়।
যতো যাই হোক এসব বিষয়ে অন্য কাউকে কিছু জানাতে চাইছেনা অপু।
রায়হানও ব্যাপারটা বুঝতে পারে।
পিহুর দিকে তাকিয়ে মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে বলে,

—আমি কি অপরুপার সাথে আলাদা একটু কথা বলতে পারি পিহু।

পিহু দুজনের দিকে চোখ বুলিয়ে জোরে জোরে মাথা নাড়ায় আর বলে,

–হ্যা হ্যা অবশ্যই।
আচ্ছা তাহলে আমি ঐ দিকটায় দাড়াই।
অপু তুই কথা বলা শেষ করে আয়।

—তোকে আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবেনা পিহু।
তুই বাসায় চলে যা।আমি একাই যেতে পারবো।

—সিউর?

—হুমমম।

–ওকে,তাহলে কাল দেখা হবে।
ভার্সিটি আসিস।

—আচ্ছা।

পিহু চলে যেতেই রায়হান গম্ভীর কণ্ঠে বলে ওঠে,

—আমাকে এড়িয়ে কেনো চলছো রুপা?

কথাটা শুনে অপু চমকে রায়হানের মুখপানে তাকায়।এর আগে কোনদিনও রায়হানের মুখে এতো গাম্ভীর্য দেখেনি সে।

রায়হানের জিজ্ঞাসু দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামায়।

অপুর কোন উত্তর না পেয়ে রায়হান দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
এতো জোরে নিশ্বাসের শব্দে মনে হয় তার হ্রদয়টা চুর্নবিচূর্ন হওয়ার শব্দ শোনা যায়।

–আজ হেটে হেটে বাসায় যাবে রুপা?

অপু ভড়কে যায়।হুট করে প্রসঙ্গ বদলানোয় কিছুটা অবাক হয়।
রায়হানের সাথে একসাথে বাসায় যেতে আপত্তি থাকলেও তা মুখ ফুটে বলতে পারেনা।নিজের মনকে প্রবোধ দেয়,
মনে হয় কি এমন হবে একটা দিন একসাথে বাসায় গেলে?কি এমন ক্ষতি হবে তাতে?

মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে।

রায়হান তা দেখে নিজের মনেই হাসে।
কিছুক্ষণ একসাথে হাটে।দুজনেই নিরব থাকে।
কথার ভান্ডার আজ অপুর শুন্য প্রায়।রায়হানের সাথে কিছুতেই ফ্রি হতে পারেনা সে।
হুট করে রায়হান বলে,

—আমরা কি বন্ধু হয়ে থাকতে পারিনা রুপা?

আচমকা কথা বলায় অপু চমকে সেদিকে তাকায়।
নিজেকেই নিজে ধমকায়।হুটহাট এভাবে চমকানো স্বভাবটা বড্ড বাজে লাগে তার কাছে।

অপু কিছুক্ষণ ভাবে।কি বলবে খোজার চেষ্টা করে।
তবে চেষ্টা সফল হওয়ার আগেই রায়হান আবার বলে,

—প্লিজ রুপা,এইটুকু তো চাইতেই পারি আমি বলো?
শুধু বন্ধু হয়ে আমার জিবনে থেকো তুমি।আমি আর কিচ্ছু চাইনা।
কিচ্ছুনা।
তোমার স্বামী সংসার নিয়ে তুমি খুব সুখে থাকো।আমি আর কখনোই এসব ভালবাসা-টাসার কথা বলবো না।
তবু রুপা প্লিজ!

অপু মনের দীধাদ্বন্দ ফেলে বলে,

—এভাবে বলবেন না প্লিজ। আমার খারাপ লাগে।
তাছাড়া এভাবে বলার কি আছে,আমরা তো বন্ধুই।

রায়হানের মুখ উজ্জ্বল হয়।খুশি ঠিকরে পরে চোখ মুখ বেয়ে।
আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়।

—তবে আমাকে আর ইগনোর করবেনা তো রুপা?

অপু হেসে মাথা নাড়ায়।
কাউকে খুশি করতে পারার মধ্যেও যে হাজার গুন আনন্দ আছে তা সে উপলব্ধি করে।
তবে মনে মনে কোন ভয় বাসা বাধে।
নোমানের কথা মনে হয়।
নোমান কি এসব শুনলে মেনে নেবে?
তার রিয়াক্ট কেমন হবে?সে তো বলেছিলো রায়হানের থেকে দুরে থাকতে,তার কথা অমান্য করার অপরাধে কি তাঁদের সম্পর্কে আবার ফাটল ধরবে?
কিন্তু রায়হান?
সে তো অন্যায় কোন দাবী করেনি?
কি করবে অপু ভেবে পায়না।
মাথায় কাজ করেনা।

—-

রাতে নোমান খাবার না খেয়েই শুয়ে পরে।
অপু প্লেটে খাবার নিয়ে নোমানের কাছে আসে।
ভাবে আজও বুঝি নোমানকে তার খাইয়ে দিতে হবে।
হয়তো সেজন্যই নোমান না খেয়ে এসেছে।

,
,
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here