#প্রেমাধিকার💝[ The_Egoistic_Love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 02……..
আরিয়ার শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরছে তাতে কোনো কেয়ার দেখাচ্ছে না আরিয়া। ওর মতিষ্কে শুধু নিজের অপমানটাই ভেসে আসছে। প্রচন্ড রেগে ও পাগলের মত করার কারনে এক পর্যায়ে মেঝের বুকেতে বসে পরে হাটুতে মুখ গুজে কাদতে থাকে। তখনি বাইরে কারো গলার আওয়াজ শুনতে পায়….
ইশাদ: দরজা খোলো আরিয়া……
ইশাদের গলার আওয়াজে পেয়ে আরিয়া দরজার দিকে তাকায়।
ইশাদ: কি হয়েছে সেটা না বললে বুঝব কি করে??? প্লিজ আরি… দরজাটা খোলো। তারপর যা ইচ্ছে হয় করো। তোমার যা ইচ্ছে, কিচ্ছু বলব না, তোমাকে কিছু করতে বাধাও দেব না। তবুও…… [ করুন কন্ঠে দরজার সাথে মাথা ঠেকিয়ে আর এক হাত দরজার উপর দিয়ে চোখ বন্ধ করে ]
কিন্তু আরিয়া কোনো রেসপন্স করল না। ইশাদের বঝতে বাকি নেই যা হয়েছে খুব খারাপ হয়েছে। নাহলে আরিয়া আর যাই হোক ওর কথায় উওর না দিয়ে থাকবে না।
ইশাদ: আরিয়া….. [ নরম সুরে ]
ওর কোনো রেসপন্স না পেয়ে ইশাদ বাধ্য হয়ে বেলকনি দিয়ে রুমে ঢোকে। রুমে ঢুকতেই ওর চোখ কপালে। পুরো রুমের অবস্থা নাজেহাল। যদিও এটা নতুন না কিন্তু আজ যেন একটু বেশি….. ইশাদ বেশ ভয় পেয়েই আছে। কারন আরিয়া এখনো হাটুতে মুখ লুকিয়ে কাদছে।
ইশাদ: আ… আ.. আরি।
আরিয়া চোখ তুলে দেখতেই দেখে ইশাদ ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ও নিজের উপর পুরোপুরি কন্ট্রোল হারিয়েছে মেঝে থেকে উঠে গিয়েই খুব জোরে একটা থাপ্পড় মারে ইশাদের গালে। রাজকে না দেওয়া থাপ্পড়টা ইশাদকে দেয়। থাপ্পড় খেয়ে ইশাদ কিছুটা পিছনে চলে যায় চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলায়। তারপর আরিয়ার দিকে তাকাতেই দেখে আরিয়া প্রচন্ড রেগে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ইশাদ বুঝতে পেরেছে এখন এরকম একশো চড় দিলেও আরিয়ার রাগ কমবে না। আর ওকে সামলানোর ক্ষমতা ইশাদ ছাড়াও কারো নেই। ইশাদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই…….
আরিয়া: কেন এসেছিস তুই এখানে।
ইশাদ: আরিয়া…..
আরিয়া: বেড়িয়ে যা আমার রুম থেকে। [ বলেই ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দিতেই জোর করে ইশাদ জড়িয়ে ধরে আরিয়াকে। আরিয়া নিজেকে ছাড়াতে চাইলেও পারে না এতটাই শক্ত করে ধরে দেখেছে ও আরিয়াকে। নিজেকে ছাড়াতে না পেরে ইশাদের বুকেই ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে শুরু করে।
বেশ কিছুক্ষন এভাবে থাকার পর নিরবতা ভেঙে ইশাদ খুব শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করে….
ইশাদ: কি হয়েছে…. ??? এতটা রেগে গেছ কেন??
আরিয়া:…….
ইশাদ: আমাকেও বলবে না…… [ জড়ানো কন্ঠে ]
কথাটা শুনে আরো জোরে কেদে দেয়।
আরিয়া: আ-মি… আ–আ-আমি…. [ কাদতে কাদতে হিচকি উঠে গেছে ]
ইশাদ: হুমম বলো…. [ আরিয়ার গাল ধরে ]
পরে আরিয়া সবটা কথা ইশাদকে জানায়। সব শুনে ইশাদ থ হয়ে যায়। তারমানে আরিয়ার রাগটা অমুলক না আর না ইশাদকে চড় মারার…… কারন আরিয়া রাজের সাথে কন্ট্রাক করতে চায়নি। ইশাদ জোর করে ওকে পাঠিয়েছে। আর ওর কথা রাখতেই আরিয়া গিয়েছিল। কারন ও একমাত্র ইশাদের প্রতি দুর্বল…..
ইশাদ: সরি আরি আমার জন্য তোমাকে এত অপমান সহ্য করতে হলো।
আরিয়া: জানো ওনারা আমাকে এসব বলেছে। আমি নাকি লোভি,, খারাপ মেয়ে [ বলেই আবার কেদে দেয় ]
ইশাদ: সরি তোমাকে আর ওদের সাথে কাজ করতে হবেনা। আমি তোমাকে জোর করেছিলাম আর আমি বলছি। [ প্রচন্ড রাগ লাগছে নিজের উপর। ]
আরিয়া:…..
তারপর আরিয়াকে বিছানায় বসিয়ে ওষুধ লাগিয়ে দেয়। আর আরিয়া একদৃষ্টিতে ইশাদকে দেখতে থাকে… আর ইশাদ আড়চোখে দেখে আরিয়াকে।
ইশাদ: এভাবে দেখলে নজর লাগবে। আচ্ছা ছাড়…. কিছু খেয়েছ বলে ত মনে হচ্ছে না। মাথায় শুধু রাগ আছে যেগুলো সামলাতে থাপ্পড় আমাকে খেতে হয়।
[ কথাটা শনে আরিয়া রাগী চোখে তাকায় ]
ইশাদ: না মানে আমার প্রচন্ড ক্ষিদে পেয়েছে। তোমার তো আমার খাওয়া নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই। [ আরিয়া ভ্রু কুচকে তাকায় ] 😷😷😷 আমি খেয়েছি চড় থাপ্পড়, খাট-পালং, চেয়ার-টেবিল, যা আছে সব খেয়েছি [ ইশাদ আরেকটা থাপ্পড়ের জন্য তৈরি হয়ে যা 😥😥 ] না মানে…. 😰
ইশাদের এমন অবস্থা দেখে আরিয়া এবার হেশে দেয়। [ যাক বাবা রাগ কমেছে তাহলে ] তখন মা এসে খাবার দিয়ে যায়। আর ইশাদ তা আরিয়াকে খাবার খাইয়ে দেয়……
এবার ইশাদের পরিচয় দেই। আরিয়ার জিবনের সবচেয়ে মুল্যবান একটা মানুষ। একমাত্র ইশাদ যে কিনা আরিয়াকে সামলানোর ক্ষমতা রাখে। ছোটবেলা থেকে ইশাদের একমাত্র সাথি আরিয়া। কারন আরিয়ার স্বভাবের কারনে ও কারো সাথে মিশে না ওর দুনিয়া ইশাদকে ঘিরে। তবে ইশাদের বাবা মা নেই। ও যখন ১০ম শ্রেনিতে পরে তখন একটা এক্সিডেন্টে মারা যায়। তারপর থেকে আরিয়াই ওর জীবন।
খাওয়া শেষে ইশাদ ওকে শুইয়ে দিয়ে দেয়। তারপর ওর মাথায় বিলি কাটতে থাকে। দেখতে দেখতে কখন ও ঘুমিয়ে যায় নিজেও বুঝতে পারে না। ইশাদ ওর কপালে পরশ বুলিয়ে চলে যায়।
ইশাদ: You need to rest. আমি আসছি… [ তারপর চলে আছে ইশাদ….. ]
মা: ধন্যবাদ ….. এতকিছু হওয়ার পর ও তুমি আরিয়ার খেয়াল রাখছো তাই।
ইশাদ: আমার কাছে সবার আগে আরি। তাই ধন্যবাদের কোনো দরকার নেই। আজ আমি আসি….
মা: হুমম…..
ইশাদ বেড়িয়ে এসে ভাবতে থাকে……
ইশাদ: এবার AAR Company ব্যাপারটা দেখতে হবে।,
,
,
,
,
,
,
,,
,
,
ওদিকে রাজ হাতে ড্রিংসের গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে তখনকার কথা ভাবছে। আসলেই না বুঝে বড্ড বেশি অপমান করেছে মেয়েটাকে। কিন্তু বুঝতে পারছে না সেটা এতটা কেন ভাবাচ্ছে রাজকে। কারন ও এসব ব্যাপার নিয়ে কোনোদিন কেয়ার করেনি কিন্তু কেন জানি আজ খুব অস্বস্তি লাগছে।
রাজ: আজব মাঝে মাঝে রাতটাও ঘুমের অধিকার দেয় না। সেটাও রাতের কাছ থেকে আদায় করতে হয়…… [ বলে বিছানায় এলিয়ে দেয় নিজেকে ],
,
,
,
,,
,
,
,
,,
,
সকালে রাজ অফিসে যেতেই…….
রাজ: সাদ ম্যানেজারকে ডাক……
সাদ: ওকে স্যার…..
কিছুক্ষন পর…..
ম্যানেজার: May i sir……
রাজ: yes….. মিস আরিয়ার সাথে আপনাকে যে মিটিং ফিক্স করতে বলেছিলাম তার কি হল…. [ চেয়ারে বসতে বসতে ]
ম্যানেজার: সরি স্যার…. [ কিছুটা ভয় নিয়ে ] আমি কাল ওনাদের ফোন দিয়ে বলেছিলাম কিন্তু ওনার পিএ জানিয়েছে ওরা কোনো রকম কাজ করবে না আমাদের সাথে।
রাজ: Really…. [ ঠোঁটের কোনে হাসি রেখে ]
সাদ: yes sir… ওদের ফ্যাশন বড় নয় কিন্তু ডিজাইন গুলো ইউনিক। তবে কখনো কারো আন্ডারে কাজ করে না। আর এজন্য মুলত আমাদের ডিজাইনার হিসেবে ওনাকে হায়ার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওনি প্রথমে না করে। পরে বলে যদি কন্ট্রাকে কাজ করে তবেই করবে….
ম্যানেজার: স্যার যেকোনো কোম্পানি আমাদের সাথে কাজ করার জন্য মরিয়া। আপনি যদি চান তবে আমি অন্য….. [ রাজ রাগী চোখে ওনার দিকে তাকায় ] সরি স্যার… বাট মিস আরিয়া তো মানছে না। এটা সত্যি অবাক হওয়ার মত কথা।
রাজ: [ মানছে না বলেই তো চাই। যদি মানত তাহলে হয়ত অবাক হতাম ] আমি কিছু শুনতে চাইনা। I need this girl at any cost.
সাদ: কিন্তু স্যার…..
রাজ: আমি নিজে যাব মিস আরিয়ার কাছে। সাদ…..
সাদ: ওকে স্যার….. [ স্যারের হলো টা কি সামান্য একজন ফ্যাশন হাউজের ডিজাইনানের জন্য এতটা ডেসপারেন্স যে নিজে যাবে ],
,
,
,
,
,
,
,,
,
তারপর রাজ নিজে আরিয়ার সাথে দেখা করতে “স্বপ্নময়ী ” ফ্যাশন হাউজে যায়…. ভিতরে ডুকে রাজ বেশ অবাক হয়। আসলেই এখানে সব ইউনিক কালেকশন।
সাদ: excuse me….. আচ্ছা আরিয়া মেম কোথায়….
স্টাফ: ওনি নিজের কেবিনে….
সাদ: স্যার চলুন….
রাজ গিয়ে নক না করেই আরিয়ার কেবিনে ডুকে যায়। রাজকে দেখেই আরিয়ার মেজাজ গরম হয়ে যায়। তার উপর নক না করেই. …..
আরিয়া: আপনি এখানে….. 😠😡 আপনি এখানে কি করছেন???
রাজ: সেদিনের পুরন না করা কাজটা পুরন করতে এসেছি। [ চেয়ারে বসতে বসতে ]
আরিয়া এবার প্রচন্ড রেগে যায়।
আরিয়া: আপনার সাহস কি করে হয় এখানে আসার। তারপর উপর আমার কেবিনে ডুকেছেন without my permission……. 😡
রাজ: এখানে আমি…..
আরিয়া: দেখুন Mr. Raj. ভদ্রভাবে এখান থেকে চলে যেতে বলেছি। সেদিন আপনার অফিসে ছিলাম তাই কিছু বলিনি। কিন্তু এটা আমার অফিস। তাই বলছি কোনো রকম মিস বিহেভ করার আগে চলে যান। 😡😡
আরিয়া কথা বলছিল। কিন্তু রাজ যেন কিছু শুনতেই পেল না। রাজ ঘোর চোখে আরিয়ার চোখের দিকে তাকাতেই রেগে যাওয়া কাপা কাপা গোলাপি ঠোঁট জোরার দিকে বার বার নজর যাচ্ছে। কালকে খেয়াল না করলেও আজকে আরিয়ার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার স্ক্যান করে নিল। মনে হচ্ছে কোনো পরী দাঁড়িয়ে আছে ওর সামনে। যার শরীরে রাগ নামের একটা অলংকার জড়ানো। যা মুহূর্তে রাজকে নেশাক্ত করে দিচ্ছে…. রাজ নিজেকে সামলে নেয়…..
রাজ: ওকে রিলাক্স… আমি কালকের জন্যই এখানে এসেছি……
আরিয়া: সিরিয়াসলি মি. রাজ আপনার মনে হয় আমি আপনার সাথে কাজ করব কালকের ঘটনার পরও……
রাজ: না। আর আপনার করাও উচিত না।
[ রাজের মুখে এমন কথা আরিয়া কিছুটা শান্ত হয়। আর সাদের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। ]
আরিয়া: তাহলে কেন এসেছেন???
রাজ: সরি বলতে…. আসলে কালকে একটা ভুলের কারনে আমি আপনাকে ওসব বলেছি। আসলে যে মেয়েটাকে ভেবেছিলাম আপনি সে নন। আমি কোনোদিন কাউকে সরি বলিনি কিন্তু ভুলটা আমার আর তাই আমি নিজে আপনার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি…. I am extremely sorry…….
আরিয়া:……..
রাজ: আমি আপনাকে বলব না আমাদের সাথে কাজ করতে তবে এটাই বলব যেখানে আমার ভুলের জন্য আমি সরি বলেছি সেখানে আপনি যদি ব্যাপারটা ধরে ডিলটা না করেন তবে সেটা নেহাত বোকামির কাজ হবে। আর আপনার মত মেয়ে এমন বোকামি করবে না আশা করি। যদি ডিলটা করেন তবে আপনার সমস্ত কানডিশন আমরা মেনে নেব নিরদ্বিধায়। বাকিটা আপনার উপর……. [ বলেই বেড়িয়ে আসে ]
আর আরিয়া কিছুটা অবাক হয়ে যায়……..
,
,
সাদ: স্যার এইটা কি হল…. আপনি ওনাকে সরি বললেন। মানে রাজ আহমেদ সরি বলল….
রাজ: জানোতো কোনো জিনিস তখনি হাসিল করা যায় যখন তার উপর অধিকার থাকে। আর অধিকার হয় তৈরি করতে হয় নয়ত কেড়ে নিতে হয়। আগে তো তৈরি করি কাড়ার ব্যাপারটা নাহয় পরে দেখব…..
সাদ: স্যার আপনি সামান্য ডিলের জন্য আরিয়াকে সরি বললেন….. [ কিছুটা সংশয় নিয়ে ]
রাজ: তোমার কি মনে হয়…. [ মুচকি হেশে ]
সাদ: বুঝতে পেরেছি…. 😁😁😁 কিন্তু ওনি কি কাজ করতে রাজি হবে।
রাজ: হবে। নিজেকে বোকা বানাতে সে চাইবে না। আর সরি…. লাইফে অনেক সময় ছোট হার অনেক বড় পাপ্তির কারন। এটা বিজনেস। আর ্আমার কাছে রিলেশন আর বিজনেস দুটোই এক….
সাদ: Yes sir……..
,
রাজ: দেখি মিস আরিয়া আপনি কোন সিদ্ধান্ত নেন। ডিলটা না করে আমার দেওয়া বোকা উপাধি নেন নাকি ডিলটা করে আমার……….. [ বাকা হেশে ]
,
,
,
,
,
,
,
,
,[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]
কেউ যদি ভেবে থাকেন গল্পটা অন্যান্য ইগোষ্টিক গল্পের মত হবে তাহলে একদম ভুল ভাবছেন। ]