————
—————–দেখো তুমি শান্ত হও প্লিজ,এবার একটু পানি খাও,একটু বিশ্রাম নাও তারপরে আমরা আবার ঝগড়া করি কেমন।
-তো তুমি বলতে চাচ্ছো যে আমি তোমার সাথে ঝগড়া করতেছি!তাই না!
-তুমি না তো আমি,!আমিই ঝগড়া করতেছি, তুমি কেনো ঝগড়া করবা যাহ।আচ্ছা তাইলে আমি একটু পানি খেয়ে নি,একটু জোড়ে জোড়ে কিছুক্ষন দম নিয়ে নি তারপর আবার ঝগড়া করি,হা,হাপিয়ে গেছি তো।
বলেই সৌরভ মুখ টিপে হাসছে,অন্তী আজ প্রচন্ডরকম ভাবে রেগে আছে কিন্তু সৌরভ কখনোই অন্তির রাগকে সিরিয়াসলি নিতে পারে নি আজও পারছে না, পাঁচ বছরের সম্পর্কেও সৌরভের এই একটা খারাপ গুন অন্তি হাজার চেস্টা করেও বদলাতে পারে নি।ঝগড়ায় দুপক্ষেরই ইনভলভমেন্ট না থাকলে যে ঝগড়াটা ঠিক জমে ওঠে না,বরং রাগের পারদ একপাক্ষিক ভাবে আরো বেড়েই যায় তা সৌরভের বোঝার বাইরে।প্রচন্ড রাগে অন্তির হাত পা কাপছে কাপছে,থেমে থেমে চাপাকন্ঠে অন্তি বলে উঠলো–
-ফাজলামি হচ্ছে না?তুমি বুঝতেছো না আমি রেগে আছি,একদম মজা করবা না বলতেছি।
-এই যে এখন রাগে তোমার চোখ মুখ লাল হয়ে উঠতেছে,দাঁতে দাঁত চেপে চোখদুটোকে উপরে নিচে ঘুরাচ্ছো তুমি ঠিক যেন সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহগুলোর ঘূর্নন,বেশ লাগছে কিন্তু তোমাকে ।এ জন্যই তো, ঠিক এ জন্যই তোমাকে আমার এতো ভালো লাগে।অহহহহ,রাগো আরো রাগো এরপরে তো নাক ও লাল হয়ে উঠবে, ইস আজ তোমাকে এতো সুন্দর লাগবে আর আমি কিনা শালা এতোদূরে, এটা মানা যায়না অন্তি।কই আমি যখন তোমার সামনে থাকি তখন তো তুমি এমন রেগে লাল টুকটুক হও না,এটা কিন্তু ভারী অন্যায়, যাহ দুষ্ট তুমি।
-সৌরভ তুমি কিন্তু খুব সূক্ষভাবে আমার সহ্যশক্তির পরীক্ষা নিচ্ছো,এবার কিন্তু সত্যি আমি বাড়াবাড়ি রকমের কিছু একটা করে ফেলবো বলতেছি।
-অন্তি! শোনো না……উউ।
-কি বিড়ালের মতো এমন উউউউ ক্যানো করতেছো,মেজাজ কিন্তু খুব খারাপ আমার বলে দিচ্ছি।
-না বলছিলাম যে শরীরটা না একদম ভালো নেই,তার উপর তুমি এমন করতেছো।কতো সাধ ছিলো বিয়ে হব্বে,১০-১২টা বাচ্চা হবে।কিন্তু না আর হলো না…. মানুষের জীবন খুব ছোট বুঝলা,কখন কি কয় কিচ্ছু বোঝা যায় না,আজ আছি কাল নেই।মনে হচ্ছে মারা যাব একটু পরে!
অন্তির মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,ভয়ে ওর গা হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে,কোনক্রমে মুখ থেকে যেন বের হলো,
-ক্যানো কি হয়েছে তোমার সৌরভ? বলো কি হয়েছে?
-না থাক বাদ দাও কি যেনো বলতেছিলা,বলো।ও হ্যা তুমি বাড়াবাড়ি রকমের কি যেনো করবা… হ্যা তারপর বলো…….
-উফ থামো তো,প্লিজ। কি হয়েছে তোমার।শরীর খারাপ? কি হয়েছে?বলো প্লিজ, আমার খুব ভয় লাগছে কিন্তু!!
<
-না থাক,আমার কথা বাদ দাও।আমি আর কে! আমি তো সারাক্ষন ই ঝগড়া করি,আমার সাথে এমনই হওয়া উচিত, খারাপ আমি।
-না কি বলো,তুমি কই ঝগড়া করো!ঝগড়া তো আমি করি!
-বাদ দাও না, আমার কথা।
-বলো প্লিজ, বলো।আমার কিন্তু খুবই ভয় হচ্ছে, কি লুকাচ্ছো তুমি আমার থেকে! বলো..
-না আসলে..
-হ্যা কি?,
-ওই আমার খুব হিসু চাপছে আরকি কিন্তু ঝগড়ার এই মূহুর্তে ফোন কেটে দিলে তো ভাববা আমি সিরিয়াস না,ব্রেক আপ করে দিবা!তখন আমাদের বিয়েও হবে না বাচ্চাও হবে না,তাই খুব খারাপ লাগছে গো এসব ভেবে।
-....*****
-অন্তি!!! রেখে দিলা ফোনটা!!! অন্তি শোনো না!!
ফোন রেখে সৌরভ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে,এমন সময় আবার অন্তির ফোন,
-হ্যা জান বলো,অন্তি ময়না আমার।রাগ কমছে তাই না? হাসতেছো তুমি বুঝি তো।শোনো হিসু অবশ্যই একটা সিরিয়াস ইস্যু যদি যথা সময়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া না দেওয়া যায় বুঝলা,তুমি কখনো ক্যানো সিরিয়াস হও না অন্তি....
-,কুত্তা একটা তুমি!ইবলিশ বাস করে তোমার মধ্যে,মিচকা শয়তান.....তুমি!!।।।।।ব্রেকাপ যাও....
হঠাৎ গাছ থেকে একটা শুকনো পাতা উড়ে অন্তির পায়ের কাছে এসে পড়েছে, দূর থেকে শো শো শব্দে আশা বাতাসটা কাছে এসে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে,ফোনের দুপাশে অন্তি আর সৌরভ দুজনের চোখের নিচে হালকা ভাজ পড়ছে ক্ষনেক্ষনে....ওরা হাসছে!!! নিশব্দের বাতাসে শুকনো পাতাটা উঠে আবার জানালার বাইরে চলে গেলো......
অনুপ্রেম--------#প্রেমালাপ
শারমিন আক্তার সেজ্যোতি