পাথরের_বুকে_ফুল🍁 part_28

0
3048

পাথরের_বুকে_ফুল🍁
part_28
#writer_hafsa_alam🍂🍂

:
:
:
ওয়াসেনাত তার মার কোলে মাথা দিয়ে বিগত দুইঘন্টা পর্যন্ত কেঁদে কেঁদে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলেছে।ওয়াসেনাতের মা প্রচণ্ড চিন্তিত মুখে মেয়েকে সামলিয়েই চলেছে।ওয়াসেনাতের বাবা এবার প্রচণ্ড রেগে গেছে।এভাবে নিজের মেয়ের চোখের পানি তিনি সজ্জ করতে পারে না।তার উপড় মেয়েটা রিতিমত ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদেই চলেছে।এটা জাস্ট ওনি মেনে নিতে পারছে না। অন্যদিকে ওয়াসেনাতের ফুফিও বকবক করেই চলেছে তার কথা…. অরিএান ওয়াসেনাতকে ছেড়ে দিয়েছে তাই তার এত কান্না।🤧
ওয়াসেনাতের মা তাকে বহু কষ্টে রাতের খাবার খাইয়ে। শুতে নিয়ে যায়।এত কান্নাকাটির মাঝে ওয়াসেনাত নিজের মোবাইলের কথাই ভুলে গেছে।একজন যে তাকে কল করতে করতেই শহিদ হয়ে যাচ্ছে সেদিকে তার তেমন মনোযোগ নাই বললেই চলে।ওয়াসেনাত আজ তার মাকে নিয়েই ঘুমাবে বলে ঠিক করে।
:
:
:
রাত ১টা ছুঁই ছুঁই। অরিএান ওয়াসেনাতদের দেয়াল টপলানোর জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ সারা দিনে কত বার যে ওয়াসেনাতকে কল করেছে তা তার নিজেরও অজানা।কিন্তু ওয়াসেনাত যে কান্নায় এত বিজি ছিল এটা তার যানা ছিল না।অরিএান দেয়াল টপকাতে গিয়ে হাতের কিছু জায়গায় কেটেঁ ফেলেছে।তবে সে দিকে তার বিন্দু মাএ ভ্রুক্ষেপ নেই বললেই চলে তার তো সব চিন্তা চেতনার মানুষ এখন দোতালার কর্ণারের রুমে মায়ের কোলে আরামছে ঘুমাচ্ছে। অরিএান হাত পা ছিলি হলেও ওয়াসেনাতের বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে পরে।চোখে মুখে তার চিন্তারাজ্য। অরিএান ওয়াসেনাতের রুমে গুটিগুটি পায়ে গিয়ে বিছানার এক পাশে বসে পরে। তারপর মনে মনে বলে উঠে………
__কি আরামের ঘুম দিচ্ছে মহারাণী। আর আমি যে সারা দিন টেনশনে কিছু খাইনি সে দিকে রানী এলিজাবেথের টেনশন নেই বললেই চলে। ফাজিল মেয়ে। এত ঘুম কোই থেকে আসে আমিও দেখবো??
:
:
:
অরিএান ফিসফিসেয়ে ওয়াসেনাতকে কিছুক্ষণ ডাকলো।কিন্তু তাও তার খবর নাই এবার অরিএান ওয়াসেনাতকে কোলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হবে এমন সময় ফিসফিসে কেউ একজন বলে উঠে………
__বাবা জীবন তোমার বউ ওই পাশে।আর আমি কিন্তু তোমার শাশুড়ি মা সো ভুলেও যা করতে যাচ্ছিলে তা করতে যাবে না।তোমার শ্বশুর দেখলে কি হবে আল্লাহ মাবুদ যানে।
:
:
:
অরিএান স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার চোখ এখন একপ্রকার বেড়িয়ে আসার উপক্রম। ওয়াসেনাতের মা মিটিমিটি হাসছে নিঃশব্দে। তিনি আবার বলে উঠে……
__দাড়িয়েই থাকবে বলে তো আসো নি?যানি ওয়াসেনাত কল ধরে নি বলেই তোমার টেনশন হয়েছে তাই এত দূর আসা।আর এত কষ্ট করে এসে তুমি দাড়িয়েই থাকবে নাকি??
:
:
:
অরিএান এবার মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ ওয়াসেনাতের মায়ের কথা ভাবে।কত ভালো মাই না ওয়াসেনাত পেয়েছে।কিন্তু তার…আর না ভেবে অপর পাশে চলে যায় আর ওয়াসেনাতকে কোলে তুলে নেয়।তারপর রুমের দরজার দিকে হাটা ধরে….গন্তব্য ছাদ।রুমের আলো নিভানো ছিল তা না হলে ওয়াসেনাতের মা অরিএানের মুখ দেখেই হু হা করে হেসে দিত।কারন তার চেহারাটা দেখার মত ছিল।🤣
:
:
:
অরিএান হাটছে।তার থেকেও বেশি দেখছে। ওয়াসেনাতকে।ওয়াসেনাত পরম যত্নে অরিএানের লাল টিশার্ট খামছে ঘুমিয়ে আছে।আর অরিএান তার দিকে তাকিয়ে আছে।অরিএানের মনে হচ্ছে সে পরী মহল থেকে এক ঘুমন্ত পরীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে আর এই কিডন্যাপিং টাইপের ভায়াবহ কাজটা করতে তার দাড়ুন লাগছে।যেন এটা বেশ মজার কাজ।অরিএান প্রচণ্ড রেগে থাকলেও ওয়াসেনাতের ঘুমন্ত মুখ দেখে মিনিটে কয়েক বার প্রেমে পড়ে যাচ্ছে। এই প্রেম জিনিসটা যে কি তা এই ঘুমন্ত কুমারি পরীকে না দেখলে সে বুঝতেই পারতো না।ওয়াসেনাতের চোখে, মুখে, ঠোঁটের উপরি ভাগে তার অবাধ্য এলোকেশী চুল গুলোর আনা গোনা জারি রয়েছে। যা অরিএানকে প্রচণ্ড ভাবে বিরক্ত করছে।অরিএান কিন্চিত ভ্রু কুঁচকে মাঝে মাঝে তাকায় ওয়াসেনাতের দিকে যার কারন একমাএ এই এলোকেশী চুল।সিঁড়ি খুঁজতে অরিএানের হালকা পাতলা কষ্ট হয়েছে কারনে ওয়াসেনাতের রুমের বিপরিত পাশে সিঁড়ি তার উপড় অরিএান ওয়াসেনাতদের ছাদে এই প্রথম যাওয়ার জন্যে পা বাড়িয়েছে।অরিএান সিঁড়ি বেয়ে উঠার সময় হালকা হোচট খায় তাই কিন্চিত নড়তেই ওয়াসেনাত জেগে যায়।ওয়াসেনাত তার নীলাভ চোখজোড়া খোলার আগেই তার মনে হচ্ছে সে শূন্যে ভাসছে। ব্যাপারটা প্রচণ্ড ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে তার কাছে।কি আশ্চর্য্যকর ব্যাপার!!কি হচ্ছে তার সাথে এটা সে নিজেও বুঝতে পারছে না।ওয়াসেনাত যখনই মিটিমিটি করে চোখ খুলতে যাবে ঠিক তখনই অরিএান ফিসফিসে বলে উঠে………
__চোখ খুলে চিৎকার করবে না। আমার হাত দুটিই তোমার কোমড় আর তোমাকে জড়িয়ে আছে সো আমার কাছে তোমাকে চুপ করানর জাস্ট এটা অপশেন আছে। তুমি যদি চাও আমি কিন্তু তা এপ্লাই করতে পারি।সো কোনটা বেটার অপশেন সেটা তুমি নিজেই ডিসাইট কর।
:
:
ওয়াসেনাত ঠাসসস করে নিজের চোখের পাপড়ি জোড়া খুলে ফেলে।সে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অরিএানের দিকে।তার মনে হচ্ছে হয় ত সে স্বপ্নে এমন আজগুবি ঘটনা উপলব্ধি করছে।তাই বলে উঠে……
__দেখেন আমার না প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে সো ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।কি শুরু করেছেন স্বপ্নেও এসে এমন ভয়ঙ্কর ভাবে কথা বলার মনে কি?হুম?বলেন?আজিব তো।(কথাটা বলেই চোখ বুজে নেয়)
:
:
অরিএান অবাকের চরম পর্যায়ে আছে।এটা কি হল?মেয়েটা জেগে জেগেও স্বপ্ন দেখে নাকি!!তবে ওয়াসেনাতের মুখ বাঁকিয়ে তার টিশার্ট খামছে আবার ঘুম যাওয়ার স্টাইলটা অরিএানকে প্রচণ্ড ভাবে ঘায়েল করেছে।তাই সে মুচকি হেসে বলে উঠে…….
__তাই নাকি। সবই আজিব??যাই হোক তুমি যে আমাকে নিজে কয়েক ডজন স্বপ্ন দেখে ফেলেছ তা আমার জানা হয়ে গেছে।তবে তুমি কি দেখ স্বপ্নে যদি একটু বলতে জানেমান!!উপকৃত হতাম আরকি।
__কি আর দেখবো বলেন?অনেক কিছুই দেখি। যাই হো কিন্তু স্বপ্নে তো আমি কখনো উড়তে পাড়ি নি বা বাতাসে ভাসি নি তবে আজ কেন?(চোখবুজেই ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে উঠে)
__কারন স্বপ্নে তো আর আমি তোমাকে কোলে নিয়ে সিঁড়িতে পা বাড়াই নি বেবি।তাই তুমিও ভাসনি বা উড়নি।
:
:
:
ওয়াসেনাত এবার বিস্মিত হয়ে চোখ খুলে ফেলে।এবার তার মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে না। এটা যে কতক্ষণি বাস্তব তা অরিএানের কাটা কাট জবাবে পরিষ্কার ভাবে বুঝা যাচ্ছে। ওয়াসেনাত এবার অরিএানের টিশার্ট থেকে হাত সরিয়ে তার বাহুতে খুব জোড়েই চিমটি দেয়।যার ফলে অরিএান রাগি চোখে তাকিয়ে শব্দ করে উঠে……
__আউচচ এই মাথা ঠিক আছে তোমার এভাবে চিমটি দেওয়ার মানে কি। যত সব।
:
:
:
অরিএান ছাদে এসে ওয়াসেনাতকে পরম যত্নে দোলনায় বসিয়ে দেয়।ওয়াসেনাত এখনো তার বিস্মিত চোখজোড়া বড় বড় করে অরিএানের দিকে তাকয়ে আছে।অরিএান বেশ মজা পাচ্ছে ওয়াসেনাতকে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পেরে।কিন্তু নিজের মজা টাকে সে প্রকাশ না করেই রাগি গলায় বলে উঠে…….
__হোয়াট.. এভাবে তাকিয়ে থাকার মানে কি??আমি অনেক সুন্দর এন্ড হেন্ডস্যাম সো এবাকে তাকিয়ে নজর দেওয়ার কি আছে?
__আশ্চর্য্য তো আমি কখন নজর দিলাম!!আর আমি এখানে কিভাবে এলাম? আপনিই বা কোথা থেকে এলেন??আমি আপনার কোলে কি করছিলাম??আম্মু কোই??আম্মুতো আমার রুমেই ছিল?? হচ্ছে টাকি বলবেন?আর এই ভাবে ভ্রু কুচকাবেন না।(ঝাঁজালো গলায় বলে উঠে ওয়াসেনাত)
__আমি তোমাকে কোইশানের আন্সার দিতে আসি নি।নিজের টার আন্সার নিতে এসেছি।গট ইট।(দাতঁ কটমটিয়ে বলে উঠে)
__কি…..
__এই একদম উঁচু গলায় কথা বলবে না।তুমি আমার কল রিসিভ করনি কেনো?হোয়াই?? তুমি যানো আমার কি অবস্থা হয়েছে??তুমি কি আমাকে মেরে ফেলতে চাও??তুমি চাও আমি তোমার টেনশনে টেনশনে মারা যাই তাই না??সাহস কি করে হল আজ সারা দিন আমার কল রিসিভ না করার?? কিভাবে???
:
ওয়াসেনাতের বাহু ঝাঁকিয়ে বলে উঠে…ওয়াসেনাতের এত সময় পরে পুরোনো কথা মানে অরিএানের লাইফের ফাস্ট হিস্ট্রি মনে পরে গেলো।অরিএানের উপড় তার রাগ ছিল তাও নিমিষে গায়েব হয়ে গেল।কেনো যেন অরিএানকে তার ভালো ভাবে পর্যবেক্ষক করতে ইচ্ছে হল।তাই অরিএানের পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে শুরু করলো..রাস্তার লাইটগুলোর আলো ছাদ বরাবর পরছে….তাতে অরিএানের রাগি চেহারা অনায়াসেই দেখা যাচ্ছে….. অরিএানের পরনে লাল টিশার্ট আর কালো থ্রিকোয়াটার পেন্ট..চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে..লাইটের আলো এতটাই প্রখর যে অরিএানের মাথার বিন্দু বিন্দু ঘামও দেখা যাচ্ছে….ওয়াসেনাতের ধারনা ছিল ঘামের কারনেই মানুষকে গরমের দিনে বাজে লাগে কিন্তু ব্যাপারটা যে সম্পূর্ন সত্য তা কিন্তু নয়…ওয়াসেনাতের চোখে এখন অরিএানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির মুল কারন হিসেবে অরিএানের মাথার ঘামই মনে হচ্ছে। রাগে ফসফস করার কারনে ঠোঁট জোড়া কিন্চিত হা করা…নাকের ডগা লাল হয়ে আছে…মনে হয় কেউ ঘুষি দিয়েছে…সামনের চুলগুলো ঘামে একাকার হয়ে গেছে…কিন্তু অবাক করা বিষয়.. লেপ্টে যায় নাই..কিন্তু কেন??এর উত্তর নেই ওয়াসেনাতের কাছে..অরিএানের সবুজ চোখজোড়া দেখে ওয়াসেনাতের অমিতা চোধুরির কথা মনে পরে গেল।তার চোখজোড়াও কিন্তু সবুজ তবে অরিএানের চাইতে হালকা সবুজ..এত কিছুর মিল থেকেও একটা মা নিজের ছেলেকে চিন্তে পাড়লো না??হাস্যকর ব্যাপার।তবে হাসিটা তাছিল্যের হাসির ব্যাপার…
:
:
অরিএান ওয়াসেনাতের মুখের সামনে দু তিন বার তুরি বাজাতেই ওয়াসেনাত তার দিকে তাকায় আর আনমনেই বলে উঠে……..
__দেখতেও দিবেন না নাকি??
:
:
ওয়াসেনাত কথাটা বলেই মুখে হাত দেয়।আর অরিএান তো অবাক হয়ে বলে উঠে……
__কি হয়েছে বল তো ওয়াসু… কি সব বলছ আজ তুমি কখনো স্বপ্নের কথা আবার দেখার কথা মানে কি??
__না মানে ইয়ে মানে
__এগুলোর পরেও কিছু বল??নাকি না মানে ইয়েই বলতে থাকবে?বুঝলে ওয়াসু বেবি আমার না মনে হচ্ছে তুমি কিন্তু আমার প্রেমে পরে গেছ??কি বল??
__এমন কিছু না
__তবে কেমন কিছু??
:
:
:
অরিএান কথাগুলো বলতে বলতে ওয়াসেনাতের পাশে বসে পরে।তারপর তার কাধে মাথা রেখে কিছুক্ষণ বসে থেকে বলে উঠে…….
__প্লিজ ওয়াসু তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি কিন্তু মরেই যাবো।তুমি কল রিসিভ করো নি যানো আমার কি অবস্থা হয়েছিল… দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।মনে হচ্ছে কেউ আবার আমার প্রান পাখি নিয়ে টানাটানি করছে।কি করবো বল ভয় হয়.. বড্ড বেশি ভয়… অরিএান খানের ভয় না থাকলেও….ওয়াসুর ভালোবাসায় মাতাল প্রেমিকের প্রচণ্ড ভয়..কেন যানো?(আদরি সুরু বলে উঠে)
:
:
ওয়াসেনাত কোমল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে….অরিএান আগের মতই আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে……
__আমার থালাটা শূন্যে ওয়াসু। ভালোবাসার বড্ড অভাব।তুমিই তো শেষ ভরসা যে আমার থালা পরিপূন করে দিতে পারবে নিজের ভালোবাসায়।তাই তো তোমাকে হারাতে পাড়ব না।কিছু তেই না।আমি বড্ড ক্লান্ত ভালোবাসার খোঁজে ঘুড়তে ঘুড়তে।এবার কি আমি একটু ভালোবাসা পেতে পারি না ওয়াসু???বল না?? আমি কি একটুও ভালোবাসা ড্রিজাভ করি না??
:
:
ওয়াসেনাত অরিএানের দিকে তাকিয়ে আছে।তার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে অরিএানের জন্যে।ছেলেটা সামান্য ভালোবাসার জন্যে এত কষ্টে আছে??ওয়াসেনাত দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সামনে তাকাতে যাবে তখনই অরিএানের কাটাঁ –ছিঁড়া জায়গা গুলো দেখে আৎকে উঠে।সাথে সাথে তার চোখ ভিজে উঠে…সে আতঙ্কিত সুরু বলে উঠে……
__এই আপনার হাত পা ছিঁড়লো কিভাবে??ইশশশ কত ব্যথা পেয়েছেন??আল্লাহ পায়েও কেটেঁছে??খুব ব্যথা করছে তাই না?? আপনি বসেন আমি মেডিসিন নিয়ে আসি?? আর আপনি নিশ্চুই কিছু খান নি?? কেন এমন করছেন বলেন… তো ছোটো বাচ্চা নাকি আপনি?ফুফুফু(ছিঁড়া জায়গায় ফু দিতে দিতে আর চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বলে উঠে)
:
:
অরিএান শুধু হা করে তাকিয়েই আছে।দাদা আর রিমনের পরে এই প্রথম কেউ অতি যত্নে তার ব্যথা অনুভব করছে।কিন্তু এই প্রথম কেউ তার ব্যথা দেখে কান্না করছে।ব্যাপারটা তার জন্যে কত বড় পাওয়া তা সে বুঝাতে পারবে না।সে শুনেছে কান্না ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম।তাহলে কি ওয়াসেনাত তাকে ভালোবাসে??কথাটা ভাবতেই তার চোখে মুখে এক জলক তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে।ওয়াসেনাত ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠতে নেয় মেডিসিন আর খাবার আনতে নিচে যেতে কিন্তু অরিএান হাত ধরে ফেলে।ওয়াসেনাত বলে উঠে………
__কি হল? হাত ছাড়েন?আমি এক্ষনি আসছি খাবার আর মেডিসিন নিয়ে।
__তুমিই আমার ওয়ান এন্ড অনলি মেডিসিন। একটু হাত বুলিয়ে দিলেই ভালো হয়ে যাবে।কিন্তু তুমি এখন চোখের আড়াল হলে আমি নিজেই শেষ হয়ে যাব।সো বসে পরো।আমি তোমাকে দেখলেই সব খিদে ব্যথা বহু দুরে পালিয়ে যায়।তাই বসো প্লিজ…..
__কিন্তু…
__কোনো কিন্তু না।আমি প্রচণ্ড টায়ার্ড ওয়াসু… অফিসে নতুন ডিলের কাজ চলছে..তাই টাইমই পাই না..তাই তো আরো আগে আসতে পাড়ি নি।তার উপড় তুমি আমার কল রিসিভ করছিলে না।আমার তো পাগল পাগল লাগছিল।তাই দেখতে চলে এলাম।তুমি হিনা আমি পাগল হয়ে যাবো বললে ভুল হবে মরে….(ওয়াসেনাত মুখ চেপে বলে উঠে)
__এই সমস্যা কি আপনার??কথায় কথায় মরে যাবো মরে যাবো বলেন কেন??ফাইজলামি করা বন্ধ করেন।যত সব(বলেই অরিএানের ব্যথা জায়গায় হাত বুলাতে শুরু করে।অরিএান একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।)
:
:
অরিএান আর কথা না বাড়িয়ে ওয়াসেনাতকে নিজের কোলে বসিয়ে তার চুলের মাঝে নিজের নাক মুখ ডুবিয়ে দেয়।আর মায়াবী কন্ঠে বলে উঠে………
__খুব ভালোবাসি তোমায়….খুব খুব বেশি….
:
:
অরিএান ঘুমিয়ে আছে ওয়াসেনাতের কোমড় জড়িয়ে পেটে মুখ গুঁজে.. দোলনায় গুটিসুটি মেরে।আর ওয়াসেনাতও পিছনে গা এলিয়ে ঘুমিয়ে আছে।চাঁদের আলো তাদের ঘিড়ে বিচরন করে চলেছে।চারিপাশে আলো আর ফুলগাছের ফুলের সমারহে ভরপুর ছাদে অতি ভালোবাসার সাগরে ভেসে ঘুমের দেশে তিলিয়ে আছে ওয়াসেনাত আর অরিএান….. ভালোবাসা বড়ই বিচিএ ব্যাপার…
:
:
#চলবে……………..🍁

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন…..দেড়িতে দেওয়ার জন্যে সরি😑🥺

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here