#Dangerous_Crazy_Lover_💓.
#Sumaiya_Moni”.
#Part-1.
–“এই মেয়ে দাঁড়াও”….[ রাগি কন্ঠে ]
ছেলেটির কথা শুনে মেয়েটি চোখ বড় বড় করে ভয় পেয়ে দাঁড়িয়ে যায়। যাবার জন্য সামনের দিকে পা বাড়ায় না। ওইখানেই থেমে গেল কিন্তু পিছনে ঘুরে তাকাল না। মেয়েটির মনের মধ্যে ভয় এসে ভর করলো । চুপ চাপ স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে আছে।
ছেলেটি রাগি ভাব নিয়ে হনহন করে হেঁটে মেয়েটির কাঁধে হাত রেখে পিছনের দিকে ঘুরিয়ে ডান হাত দিয়ে সজোরে “ঠাসস” করে চড় বসিয়ে দিল মেয়েটির গালে।
মেয়েটির চঞ্চলনয়ন জোড়া নিমিষেই ছলছল করে জলে ভরে উঠলো। গালে ডান হাত দিয়ে ছলছল চোখে এক দৃষ্টিতে ছেলেটির তীক্ষ্ণ চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে । ওর ভুলটা কোথায় ছিল সেই প্রশ্ন ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
ছেলেটি বিদ্যুৎ এর মত গর্জন করে বলে উঠলো।
–“লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যের সিক্রেট কথা শুনা যে বড্ড অন্যায় সেটা কী তুমি জানো”??…… [ কর্কশ কন্ঠে ]
তখনও মেয়েটির ছলছল নয়ন জোড়া ছেলেটির উপর স্থির। ভয়তে মেয়েটির মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না। চুপ থাকতে দেখে ছেলেটি আবার গর্জে বলে উঠলো।
–“কথা বলতে পারো না? নাকি আরেটি চড় দিতে হবে”?……..[ কর্কশ কন্ঠে ]
মেয়েটি থাপ্পরের কথা শুনেই ভয় পেয়ে যায়। মেয়েটি বেশ রুগা-সোগা পাতলা স্লিম বডির অধিকারি।একটা থাপ্পর মেয়েটি নিতে পারে নি ,কেননা থাপ্পরটা বেশ জোরে দিয়ে ছিল। আরেক থাপ্পরের কথা শুনেই মেয়েটি ভয় পেয়ে একবার মাথা দুলিয়ে “হ্যাঁ সূচক” জবাব দেয় আরেকবার ” না সূচক” ।
ছেলেটির ভিশন রাগ হয় মেয়েটির এমন উওর দেখে ।
–“ননসেন্স মেয়ে কোথাকার। যাও এখান থেকে ।তোমাকে যেনো আমার চোখের সামনে না দেখি”।…….[ ধমকের স্বুরে ঝাড়ি দিয়ে বললো ]
মেয়েটি আর এক মিনিট ও দাঁড়ালো না দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগলো । নয়ন জোড়া দিয়ে অশ্রু ঝড়ে পড়তে লাগলো। একবার ডান হাত তো আরেক বার বাম হাত দিয়ে চোখ মুছেই যাচ্ছে। কাজল কালো নয়ন দুটু লেপ্টে গেছে কাজলে । কান্না করতে করতে নিচে নামতে লাগলো।
মেয়েটির সাথে কী হয়েছে? কেন থাপ্পর দিয়েছে চলেন সেটা যেনে আসি। তাঁর আগে ওদের পরিচয়টা দিয়ে নেই আপনাদের ।
বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী। দেখতে যেমন Smart,Handsome, Dashing।তেমনি রগচটা,বদমেজাজি,পাগল টাইপের । বাংলাদেশের ক্রিমিনাল লইয়ারের মধ্যে একজন । আজ অবধি কোন ক্যাসে হেরে যায় নি। টাকা ও ক্ষমতা দিয়ে সব ক্যাস জিতিয়ে ন্যায়। রাগ সব সময় নাকের ডগায় থাকে । বিদ্যুতের যখন ১১বছর তখনি কার এক্সিডেন্ট ওর বাবা,মা ও ছোট ভাই মারা যায় । গাড়ির মধ্যে বিদ্যুত ও ছিল। কোন ভাবে বিদ্যুত বেঁচে যায়। আবির চৌধুরী ছিলেন একজন ক্রিমিনাল লইয়ার। বিদ্যুত ওর বাবার মত ক্রিমিনাল লইয়ার হয়েছে। টাকা যেখানে বিদ্যুত ঠিক সেখানেই ছুটে । বিদ্যুতের কাছে টাকার মূল্যটা অনেক বেশি । ভালোবাসা,সম্পর্ক, দুঃখ এসব ওর কাছে তুচ্ছ মনে হয়।
আরিয়া নূর । দেখতে যেমনি সুন্দর তেমনি চঞ্চল। এবার ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাএী। মা,বাবার আদুরে মেয়ে আরিয়া। আরিয়ার ছোট একটা বোন আছে নাম মারিয়া। আরিয়ার বাবা একজন সরকারী চাকরিজীবি।আরিয়া এমন একটা মেয়ে ৫মিনিট যদি ওর সাথে কেউ কথা বলে সে এমনেতেই পাগল হয়ে যাবে। আরিয়া কিছুটা বাচাল স্বভাবের । সুস্থ মানুষ কে অসুস্থ করতে ৫ মিনিট ও সময় লাগে না ওর। ছোট্ট কাল থেকে আরিয়ার বেশি কথা বলে। সেটা এখনো পরির্বতন হয় নি। আদৌ হবে কিনা সন্দেহ আছে। আর যখন রাগ হয় তখন কী করে যানেন। থাক সেটা না হয় গল্পের মধ্যেই জানতে পারবেন।
এখন গল্পে যাওয়া যাক।
আজকে আরিয়ার কলেজে নবীন বরন অনুষ্ঠান।সেখানে প্রধার অতিথী হিসাবে ইনভাট করা হয়েছে বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী কে।
আরিয়া আজ খুব সেজেছে। নীল রঙের জামদানী শাড়ি। চোখে গাড়ো কাজল,ঠোঁটে গাড়ো লাল লিপস্টিক, কানে নীল পাথরের গোন্ডেন ঝুমকা,গলায় ম্যাচিং নেকলেস,দু হাত ভর্তি করে নীল সাদা কাঁচের চুড়ি । খোপা করে বেলি ফুলের গাজরা মাথায় দিয়েছে। দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। সচরাচর আরিয়া কখনই এতো সাজে না। কিন্তু আজকে একটু বেশিই সেজেছে।
একটা রিক্সা নিয়ে পৌঁছে যায় কলেজে। অনেক্ষন যাবত বসে আছে লিলি ও রাইমা। ওরা দুই জন আরিয়ার ছোট কালের বন্ধু। এক সাথে পড়া লেখা করে বড় হয়েছে । ওদের বাসা এক এলাকাতেই। ওরা দুই জন অপেক্ষা করছে কখন আরিয়া আসবে।
আরিয়া: হাই…..চুন্নি+টুন্নি….[ হাত জাগিয়ে লিলি ও রাইমার উদ্দেশ্যে বললো ]
লিলি: এসে পড়েছে আমাদের বাচালি?
রাইমা: হ সেটা আবার বলতে।
আরিয়া: আমি ওইখান থেকে এইখানে আসতে আসতে আমার নামে কইটা বদনাম বলেছিস বল।……..[ ওদের সামনে দাঁড়িয়ে আঙুল জাগিয়ে ]
লিলি: [ ধরে ফেলেছে রে -মনে মনে ] একটাও না ।
রাইমা: সিরিয়াসলি একটাও বলি নাই।
আরিয়া: মনে তো হয় না। আচ্ছা চল ট্রেজের সামনে গিয়ে বসি।
লিলি: দাঁড়া আজকে তোকে অনেক সুন্দর লাগছে আরিয়া।
রাইমা: হ্যাঁ! অনেক সুন্দর লাগছে।
আরিয়া: জানি জানি,তোদেরকেও…….[ মুড নিয়ে ]
লিলি: মুড নিচ্ছিস?
আরিয়া: না আয় চল বসি।
আরিয়া,লিলি, রাইমা ট্রেজের সামনে পা বাড়াতেই একটা ছেলে ওদের সামনে এসে বললো।
ছেলেটি: হাই আমি মামুন হাসান। তোমাকে দেখে আমার ভালো লেগেছে। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। I Love You……[ আরিয়ার উদ্দেশ্যে বলে গোলাপ ফুলটা ওর সামনে ধরলো ]
লিলি: ………[ শালা পটকা খাবার জন্য রেডি হ-মনে মনে ]
আরিয়া: ওয়াহ! আমি তো তোমাকেই খুঁজিলাম। আমিও যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।…… [ মুচকি হেসে ফুল নিয়ে ]
এই কথা শুনে মামুন নামের ছেলেটি অবাক। ভাবতেও পারে নি আরিয়া ওর ফুল নিয়ে ভালোবাসা গ্রহন করবে।
মামুন: তাই ! আচ্ছা তোমার নাম কী?
আরিয়া: আমার নাম আরিয়া নূর। আরো অনেক গুলো নাম আছে ওয়েট আমি একট একটা করে বলছি। সুমাইয়া,এই নামটা আমার দাদা রেখেছে। মিতা,এই নামটা আমার নানা রেখেছে। রিয়া এই নামটা আমার আম্মু রেখেছে। নূর এই নামটা আমার আব্বু রেখেছে। মিশু এই নামটা আমার বন্ধুরা রেখেছে। আর কাকা কাকি রা আমাকে আরিয়া বলেই ডাকে । আমার এই নাম গুলোর অনেক অর্থ আছে আমি সব একটা একটা করে বলছি। সু……….[ বাকিটা বলার আগেই মামুন নামের ছেলেটি থামিয়ে দেয় ]
শিমুল: আচ্ছা থামো থামো, তোমার নামের অর্থ না হয় অন্য একদিন শুনবো। আমি তোমাকে আরিয়া বলেই ডাকবো ।
আরিয়া: ওকে।
মামুন: আচ্ছা আরিয়া তুমি কী খেতে পছন্দ কর?….[ মুচকি হেসে ]
রাইমা: সারছে কাম….[ মনে মনে ]
আরিয়া: আমি চকলেট, আইসক্রিম,ললিপপ,চিপস,ফুচকা,বার্গার, কফি,কোল্ড কফি,সমুচা, ঢোসা,অমলেট, গ্রীল,অরেঞ্জ জুস,বিরিয়ানি, গরুর মাংস,চিকন ফ্রাই,কাবাব, নুডলস, কালো মিষ্টি,কালোজাম,ফালুদা, চকলেট কেক, রসগোল্লা…..এই সব কিছু খেতে আমি খুব পছন্দ করি।…..[ এক নিঃশ্বাসে বলে থেমে গেল ]
মামুন এতক্ষন হা করে আরিয়ার বলা খাবারের আইটেম গুলোর কথা শুনছিল।
লিলি,রাইমা মিট মিটিয়ে হাসছে।
মামুন: আর কিছু বাদ আছে…… [ অসহায় কন্ঠে ]
রাইমা: ………[ সবে তো শুরু বাছা- মনে মনে ]
আরিয়া: আমার মনে হয় আরো কিছু চিপা-চাপা থেকে বাদ পড়ে গেছে। সেগুলো এখন মনে পড়ছে না কেন?……[ গালে হাত দিয়ে ]
মামুন:[ সেগুলো না মনে পড়লেই ভালো-মনে মনে ] আচ্ছা তোমার প্রিয় জীনিস কী আরিয়া?
আরিয়া: আমার বাসায় একটা ছোট পালিত কুকুর ছানা আছে । ওর নাম হচ্ছে পাপ্পি । পাপ্পি আমার সব চেয়ে প্রিয় জীনিসও বলতে পার। রোজ তুমি ওর জন্যই বিস্কুট কিনে নিয়ে আসবে । আর হ্যাঁ! হলুদ বিস্কুট কিন্তু আমার পাপ্পি খায় না । ওর জন্য সাদা বিস্কুট নিয়ে আসবা। দামি বিস্কুট আনবা কম দামি বিস্কুট কিন্তু ভুলেও আনবা না। কম দামি বিস্কুট আনলে পাপ্পি রেগে তোমাকে এমন জাগায় কামড় দিবে সেখানে তুমি ইনজেকশন ও দিতে পারবা না। আর তুমি কিন্তু……….[ বাকি টা বলার আগেই মামুম আবার ও থামিয়ে দেয় ]
মামুন: ব্যাস ব্যাস আর বলতে হবে না! ওহ আল্লাহ্!…………. আরে মেরি মা এতো কথা কেমনে বলে একটা মানুষ। আমি তো ৫মিনিটে পাগল হয়ে গেছি। একটা কথা জিজ্ঞেস করলে সেই কথাটার চৌদ্দগুষ্টি বলা শুরু করে। তোমরা দু জন কিভাবে থাকো এই বাচালের সাথে,,[ লিলি ও রাইনার উদ্দেশ্যে বললো ] আমি লাগলে একটা বোবা মেয়ের সাথে প্রেম করবো তারপরও তোর মত বাচালের সাথে প্রেম করবো না।……[ বলেই দৌড় ]
আরিয়া রাগি মুড নিয়ে মামুনের যাবার দিকে তাকিয়ে আছে । লিলি,রাইমা হাসতে হাসতে লুটুপুটি খাচ্ছে।
আরিয়া: ওই তোরা থাম…..[ কিছুটা রাগি কন্ঠে ]
রাইমা: প্রেম করার শখ মিটে গেছে।…… [ হেসে ]
আরিয়া: শালার কত বড় সাহস আমাকে বাচালি বলে।……[ রেগে ]
লিলি: আচ্ছা আচ্ছা চল গিয়ে বসি।…..[ হাসি থামিয়ে ]
রাইমা: হুম চল।
ওরা তিন জন ট্রেজের সামনে গিয়ে বসলো। আরিয়া চিপস খাচ্ছে। লিলি ও রাইমা আরিয়া কে চিপস দিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছে। আর নয়তো ওদের কান জ্বালা পালা করে দেবে কথা বলে । লিলি,রাইমা ফোন টিপসে। হঠাৎ করেই আরিয়া কিছু মেয়েদের কথা ওর কানে ভেসে আসে। মেয়েরা একটা ছেলের কথা বলছে । ছেলেটা নাকি দেখতে অনেক Handsome, Dashing,Smart । একটু পরেই নাকি চলে আসবে । এই বলা বলি করছে।
আরিয়া: ওই লিলি,রাইমা ওই মেয়েরা কার কথা বলছে রে? আর একটু পরে কে আসবে রে?
লিলি: কেন তুই জানিস না?
আরিয়া: জানলে কী তোকে জিজ্ঞাই নাকি।
রাইমা: বাংলাদেশের ক্রিমিনাল লইয়ার দের মধ্যে একজন। নাম হচ্ছে বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী । দেখতে অনেক সুন্দর । সব মেয়েদের ক্রাস। মেগাজিনে তার অনেক ছবি আছে। আমার তো খুব ভালো লাগে বিদ্যুত কে।
লিলি: আমার ও…….।
আরিয়া: ওও…….[ ঠান্ডা রিয়েকশনে ]
কিছুক্ষন চুপ করে রইলো ওরা। আরিয়া ওদের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো ।
আরিয়া: কী যেনো নাম ছিল তাঁর?
লিলি: বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী ।
আরিয়া: বিস্কুট আমসত্ত্বা চানাচুর।…..[ বলেই চিপস খেতে লাগলো ]
লিলি,রাইমা টেরা চোখে আরিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে । আরিয়ার সেদিকে কোন খেয়াল নেই।
লিলি: আরিয়া তুই এই আজগবি নাম কই পাস? আর কেমনে বানাছ?
আরিয়া: এমনে বানাই যেমনে তোর নাম বানাইছি লিলটুস!…….[ হেসে ]
রাইমা হাসতে লাগলো। লিলি রাগে মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো।
আরিয়া চিপস খাবার পর চেয়ারে হেলান নিয়ে ঘুমিয়ে গেল। আরিয়াকে ঘুমাতে দেখে লিলি ও রাইমা কিছুটা হাপ ছেড়ে বাঁচলো। কিছুক্ষন পর বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরীর এনট্রি হল। দুইটা গাড়ি কলেজের ভিতরে প্রবেশ করে। সাদা গাড়ির থেকে বেরিয়ে আসে বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী । ব্লাক স্যুট,ব্লাক প্যান্ট, চুপ গুলো স্পাইক করা,চোখে সানগ্লাস। পুরাই হিরো হিরো লুক। মেয়েরা সব ফিদা হয়ে গেছে বিদ্যুত কে দেখে।
লিলি: আরিয়া… এই আরিয়া! আরে ওঠ না ছেমড়ি…[ ধাক্কা দিয়ে ]
আরিয়া: কী হয়েছে তোর? ডাকিস কেন? আমার ভালো খারাপ ঘুমটারে নষ্ট করে দিসছ? আমার ঘুম ফেরত দে । নাইলে তোকে কী করবো সেটা তুই নিজেও টের পাবি না। তাড়াতারি……. [ লিলি মুখ চেপে ধরলো ]
লিলি: বইন বড় ভুল করে ফেলছি। মাফ চাই তারপরও চুপ থাক।
আরিয়া: ডাকলি কেন সেটা বল?…….[ লিলির হাত মুখের কাছ থেকে সরিয়ে ]
রাইমা: বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী এসে পড়েছে। তাকে দেখার জন্য ডাকছি?
আরিয়া: বলিস কী? বিস্কুট আমসত্ত্বা চানাচুর এসে পড়েছে? আগে ডাক দিবি না? কই রে আমসত্ত্বাটা?….[ ডানে বামে তাকিয়ে ]
লিলি: তোরে ডাক না দেওয়াই ভালো আসিল । ভালো নামটারে পুরা তামা তামা করে দিছস?
রাইমা: ওই দেখ বিদ্যুত আসছে?…..[ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে ]
আরিয়া: বাহ্! বিদ্যুত যে তোর কিছু হয় সেটা আগে বলিস নি কেন?
রাইমা: মানে?
আরিয়া: মানে এই যে শুধু বিদ্যুত বলে ডাকলি?
লিলি: ডাকছে তো কী হইছে?
আরিয়া: আমার মত করে ডাকবি…..ওই বিস্কুট! এভাবে?
লিলি: আল্লাহ্!
আরিয়া: তাঁর কথা এখন মনে পড়লো কেন? অন্য সময় তো নাম ভুলেও নিস না?
রাইমা: আল্লাহ্ গো?…..[ উপরের দিকে তাকিয়ে ]
আরিয়া: বাহ্ বাহ্! আজকে একে বারে আল্লাহ্ আল্লাহ্ জিকির শুরু হয়ে গেছে?
লিলি: বইন না আমার ভালো চুপ থাক তুই?
আরিয়া: চুপ থাকলে কী দিবি?
রাইম: তুই কী নিবি?
আরিয়া: লিস্ট বলবো?
লিলি: তোর বলার দরকার নাই। নে ললিপপ খা?
আরিয়া: ৬মিনিট চুপ থাকবো কিন্তু ! তারপর আবার কথা শুরু ।
লিলি: হ এই ৬মিনিট তো শান্তিতে থাকবো।
কিছুক্ষন পর…..
রাইমা:ওই আরিয়া,লিলি আমার সাথে উপরে চল না। একটু ওয়াশরুমে যাবো।
আরিয়া: একটু কেমনে ওয়াশরুমে যায়?
রাইমা: আচ্ছা বেশি যাবো।
আরিয়া: গেলে কী দিবি?
রাইমা: সাথে গেলেও কিছু দিতে হয় নাকি?
আরিয়া: বা রে দিবি না….এখান থেকে উঠে হেঁটে হেঁটে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠবো তাতে আমার এনার্জি কমে যাবে না।
লিলি: ওরে মোরে কেউ মাইরা লা…….।
রাইমা মাথায় হাত দিয়ে বসে আসে।
আরিয়া: …………[ ললিপপ খেয়েই যাচ্ছে ]
রাইমা: যাবি কিনা বল?
আরিয়া: দিবি কিনা বল?
রাইমা: দিমু নে আয় চল।
আরিয়া: আচ্ছা যাই চল!
.
.
.
.
ওরা তিন জন কলেজে নতুন তাই তেমন কিছু জানে না। সিঁড়ি দিয়ে উঠছে আর কথা বলছে।
আরিয়া: আচ্ছা বিস্কুট কে দেখছি না কোথায় রে?
লিলি: মনে হয় প্রিন্সিপাল স্যারের খাস রুমে।
আরিয়া: সেটা আবার কোথায়?
রাইমা: জানি না।
ওরা তিন উপরের চলে আসে। ওপরে এসে ওরা অবাক হয়ে যায়। কলেজের বাম পাশের দ্বিতীয় তলায় নতুন গেস্ট ও চেয়ার ম্যান,ম্মেবার রা এসে মিটিং করার জন্য বানানো হয়েছে । এইখানে ছাএ-ছাএী দের আসা একদমি নিষেদ আছে। ওরা তিন জন এটা জানে না। ভুল করে এখানে চলে এসেছে।
লিলি: ওয়াও দেখ কত সুন্দর ফুলের বাগান! আর এইখানটা কত সুন্দর দেখ।
রাইমা: হ্যাঁ! দাঁড়া আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি,তারপর ঘুরে ঘুরে দেখবো।…..[ বলেই চলে যায় ওয়াশরুমে ]
আরিয়া: শালা আমাদের প্রিন্সিপালটা কত বড় কুনঞ্জুস এইখানে এসি লাগানো আর আমাদের ক্লাসে খাটারে পাখা।
লিলি: হ রে…..।
লিলি ফুল দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । আরিয়া লিলি কে রেখে আর একটু সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো। প্রতেকটা কক্ষ ভালো করে পরিদর্শন করতে লাগলো। সবার প্রথম রুমটায় গিয়ে বুঝতে পারে এটাই প্রিন্সিপালের রুম।
আরিয়া: এই রুমটা তো অনেক সুন্দর করে গোছানো আছে দেখছি। যাক আয়না দিয়ে চেহারাটা একটু ভালো করে দেখে নেই।………
আরিয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওর চুল সাজ গোজ ঠিক করছিল। ঠিক তখনি কারো পায়ের আওয়াজ শুনে আরিয়া শুনতে পায়।
আরিয়া: এই রে মনে হয় কেউ এইরুমে আসছে। যদি আমাকে দেখে ফেলে তাহলে সমস্যা হয়ে যাবে। এখন কী করি। পেয়েছি টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়ি।……[ যেই ভাবা সেই কাজ আরিয়া ঠিক টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়লো ]
প্রিন্সিপাল: দেখো বিদ্যুত তুমি আমার ক্যাসটা শুধু জিতিয়ে দেও। তাতে যত টাকা লাগে আমি দেবো।
বিদ্যুত: টাকা এমন একটা জীনিস। এটার জন্য আমি মানুষ খুন করাতেও পারি।…….[ গম্ভীর কন্ঠে ]
প্রিন্সিপাল: ওকে আমি তোমাকে পাঁচ লাখ টাকা দেবো। ডিল ওকে?
বিদ্যুত: ওকে……[ গম্ভীর কন্ঠে ]
প্রিন্সিপাল: আচ্ছা তাহলে তুমি এখানে বসে রেস্ট নেও…. অনুষ্ঠান শুরু হলে আমি তোমাকে ডেকে নিব।
বিদ্যুত: হুমমম…….।
প্রিন্সিপাল স্যার চলে যায়। বিদ্যুত ফোন ঘাটাঘাটি করছে।
আরিয়া: আল্লাহ্! এই বিদ্যুত তো এক নাম্বার গুন্ডা।মানুষ মেরে ফেলে নাকি। আমাকে এখান থেকে তাড়াতারি পালাতে হবে। যদি আমাকে দেখে ফেলে তাহলে একদম মেরে দিবে। এখান থেকে না সরলে আমি কিভাবে বের হবো। প্লিজ আল্লাহ্ বিস্কুট টাকে এখান থেকে সরিয়ে দেও। ধেৎ এখানে আসার কী দরকার ছিল?……..[ বিড়বিড় করে বলছে ]
কিছুক্ষন পর বিদ্যুত ফোন কানে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আরিয়া টেবিল থেকে বের হয়ে হামাগড়ি দিয়ে হেঁটে উঁকি দিয়ে দেখে বিদ্যুত ফোনে কথা বলছে।
আরিয়া: যাক এই শুজুগে এখান থেকে চলে যায়। আল্লাহ্ বাঁচিয়ে দিও ।
আরিয়া পা টিপে টিপে রুম থেকে বেরিয়ে আস্তে আস্তে বিদ্যুতের কাছ থেকে কিছুটা দূরে চলে আসে। বিদ্যুত ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিল তাই আরিয়া কে দেখতে পায় নি। হুট করেই বিদ্যুতের মনে হতে লাগলো পিছন থেকে কেউ যাচ্ছে । মাথা ঘুরিয়ে পিছনে তাকাতেই একটি মেয়েকে দেখতে পায় । বিদ্যুতের প্রচন্ড রাগ হয় মেয়েটিকে দেখে। তারপর রাগি কন্ঠে মেয়েটিকে পিছন থেকে ডাক দেয়।
তারপরের ঘটনা ত আপনারা জানেই।
বর্তমান…..
এদিকে লিলি,রাইমা আরিয়া কে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে গেছে। কিন্তু আরিয়া কে খুঁজে পায় নাই।লিলি আরিয়ার ফোনে কল দিয়েছে কিন্তু আরিয়ার ফোন সাইল্টে করা ছিল তাই আরিয়া টের পায় নি।
আরিয়া কান্না করতে করতে নিচে নেমে আসে। আজ অবধি আরিয়ার গায়ে ওর বাবা,মা হাত তুলে নি। তাঁর মধ্যে অচেনা ছেলে আরিয়া কে থাপ্পর মেরেছে ব্যাপারটা বেমানান লাগছে।অনেক্ষন পর আরিয়ার দেখা মিলে ওদের। লিলি,রাইমা আরিয়ার চেহারা দেখে ভ্রু কুঁচকে আরিয়ার দিকে তাকায়। আরিয়া ওদের সামনে থেকে হনহন করে কলেজের বাহিরে চলে যায়। লিলি,রাইমা পিছন থেকে অনেক বার ডাক দিয়ে ছিল। কিন্তু আরিয়া পাত্তা দেয় নি। ওরা কিছুটা অবাক হয়ে যায়।আরিয়া একটা রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসে।বাসায় এসে হাতের চুড়ি,কানের দুল,গলার লেকলেস সব খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আরিয়ার ।
দুই দিন পর…….
.
.
.
.
.
.
.
.
Continue To…….😉.