I’m Mafia lover পর্ব -০৯

#i_m_mafia_lover
#part_9
#sabiha_kh

বর্তমান,,,,,,,

ইসান- তারপর আমি পরের দিনে ইমার বাবার সামনে যাবো জন্য নিজেকে তৈরি করছিলাম।। তবে সেই দিন এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে আমি বুঝিনি।




আকাশ- কি হয়েছিলো স্যার??? (কপাল কুচকে)

ইসান- আমি ইমার কথা মতো খুব ভালোভাবে তৈরি হয়ে ইমার বলা জায়গায় গিয়ে গাড়ি তে বসেই তাদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগি।।। আমার কেমন যানো অস্থির লাগছিলো।। আর ভিতরে হালকা ভয়ও কাজ করছিলো।। আমার মাথার মধ্যে একটা কথায় ঘুরছিলো তখন।।। আমাকে হিসাব করে কথা বলতে হবে।। কথা এমন তেমন হলে আমি ইমাকে হারিয়ে ফেলতে পারি।।। খুব অস্বস্তি হতে লাগে আমার। আমি গাড়ি থেকে বের হয়ে সামনে একটা রেস্টুরেন্ট ছিলো সেখানে গিয়ে বসি।।। হঠাৎ কয়েক জন ছেলে এসে আমাকে ঘিরে দাড়ায়। ওদের মধ্যে একজন ছেলেকে আমি চিন্তাম। আসলে ওই ছেলেটাকে ধরে কলেজে একবার মেরেছিলাম আমি।। ওরা আমাকে বললো- তাদের সাথে বাইরে আসতে।। আমি কিছু বললাম না ওদের কথা মতো বাইরে আসলাম।।। ওরা বললো-

অতীত,,,,,,

– এটা আমাদের এলাকা। তুই কলেজে আমার ছোট ভাইকে ধরে খুব মেরেছিলি৷ এবং নিজের দাপট দেখিয়ে ছিলি৷ এখন কি করবি??

ইসান ছেলেটির কাঁধে হাত রেখে শান্ত সুরে বললো- দেখ ভাই আজ আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন।।। আজ আমি কনো ঝামেলা চায়না।। তোদের যা সমস্যা কাল বলিস তোরা চায়লে আমার বাড়িতেও এসে বলতে পারিস।।

ছেলেটি রেগে ইসানের হাত কাঁধ থেকে নামিয়ে দিয়ে জোরে বললো- তুই নিজেকে কি মনে করিস হ্যা,,,, (বলতেই পিছন থেকে একটা ছেলে ইসান কে লাথি মারে।। ইসান হুমরি খেয়ে মাটিতে পরে যাই।।। )

ইসান ওদের দিকে তাকিয়ে একটা গভীর শ্বাস ছেড়ে শান্ত সুরে বললো- আমার র্গালফ্রেন্ড আসবে এবং সাথে তার বাবা আসবে।। আমি খুব টেনশনে আছি।। দোহাই লাগে আমাকে রাগাস না।।

– রাগালে কি করবি তুই। আমরা ৫ জন তুই একা।। আজ তোকে শিক্ষা দিবো। (রাগান্বিত সুরে)

বলে ওরা ইসানের উপর ঝাপিয়ে পরে মারতে লাগে।।।

বর্তমান,,,,,

ইসান- ওরা আমাকে মারছিলো আমি তখনো শান্ত ছিলাম শুধু বাধা দিচ্ছিলাম এবং ওদেরকে মারতে মানা করছিলাম কিন্তু ওরা শুনেনি।।।। ওদের মধ্যে একজন আমার হাত ধরে টান দিলে আমার হাত থেকে আংটিটা খুলে যাই। তখন আমার মাথায় রক্ত উঠে যাই৷। আমি ওদের ধাক্কা মেরে আংটিটা তুলে হাত পরি পাশে দেখি একটা গাছের শক্ত ভাঙা ডাল পরে আছে। গাছের ভাঙা ডালটা তুলে ইচ্ছা মতো পিটাতে লাগি।।। ওরাও আমাকে মারে আমিও মারি।। এর মধ্যে ইমা এবং ইমার বাবা চলে আসে।। তারা যে কখন এসেছে তা আমি বুঝতেও পারিনি। আমার রাগ তখন চরমের উপর উঠে গিয়ে ছিলো।। আমার এবং ওদের সবার নাক, মুখ, কপাল, হাত দিয়ে বের হচ্ছিলো।। কিন্তু তবুও মেরেই যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনি ইমা এসে পিছন থেকে আমার শার্ট টেনে ধরতেই আমি না দেখেই ইমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়। ইমা পরে গিয়ে হাত ছিলে যাই। ইমার বাবা ইমা বলে চিল্লালে আমি পিছনে ঘুরে তাকায় দেখি ইমা মাটিতে পড়ে গেছে। আমি দৌড়ে গিয়ে ইমা কে ধরতে গেলে ইমার বাবা আমার সামনে এসে দাড়ায়।।। এবং আমাকে বাধা দেয়।। ইমার বাবা ইমার হাত ধরে মাটি থেকে তুলে৷

অতীত,,,,,,,,,,,

ইসান উত্তেজিত সুরে বললো- I am sorry ইমা আমি বুঝতে পারিনি তুমি ছিলে।।। I am so sorry আসলে,,,,,,

বলতেই ইমার বাবা বললো-

বাবা- চুপ করো। (একটু জোরে)
বাবা ইমার দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত সুরে বললো- আমি বলেছিলাম না এই ছেলে তোর যোগ্য না।। এরা হচ্ছে বড় লোকের বকে যাওয়া ছেলে এদের বাবা মা এদের শাসন করে না।।। দেখ কি অবস্থা তার।।। আর তুৃই একে ভালোবাসিস!!( কপাল কুচকে) ইমা জীবনের সিদ্ধান্ত গুলো সব সময় বুঝে শুনে নিতে হয় যেন পরে গিয়ে পস্তাতে না হয়।।। আজ আমি আবারো বলছি এই ছেলে তোর যোগ্য না।।।। (ইসানের দিকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়ে বললো)

ইসান উত্তেজিত সুরে বললো- আংকেল আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন!! আমি,,,,,

বলতেই বাবা বললো-

বাবা- চুপ করো আমি তোমার কথা শুনতেও চায়না।। শুনো আমরা তোমাদের লেভেলের না হলেও আমাদের মানসম্মানের অনেক দাম।।। তোমার মতো ছেলের হাতে আমার মেয়ের হাত কখনোই দিবো না।। আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে যাও।। (রাগান্বিত সুরে) চল ইমা।।।
বলে ইমার হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলে ইমা যাই না।। বাবা ইমার দিকে তাকায়। ইমা কান্না ভরা চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে বললো-

ইমা- বাবা তুমি যাও আমি পরে আসছি।।

বাবা- ইমা আমার সাথে চলো।। (রেগে)

ইমা- বাবা প্লিজ আমার ইসানের সাথে কথা আছে প্লিজ তুমি যাও।।। (ইসানের দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত সুরে বললো)

বাবা- ইমা যাই বলো বুঝে বলো। জীবনটা কিন্তু খেলনা না।। তাই বলছি,,,,

বলতেই ইমা জোরে বললো- বাবা আমি বুঝি।। তুৃৃমি যাও আমি ওর সাথে কথা বলে বাসায় চলে যাবো।।।

বাবা আর কনো কথা বললো না চলে গেলো।। ইমা কান্না ভরা চোখে ইসানের দিকে তাকিয়ে রয়লো ইসানের চোখে পানি টলমল করতে লাগলো। ইসান ইমার কাছে এগিয়ে আসে এবং কান্না সুরে বলে-

ইসান- ইমা আমি কিছুই করিনি। ওরা,,,,,

বলতেই ইমা ইসানের গালে টেনে জোরে একটা থাপ্পড় মারলো।।। ইসান অবাক হয়ে ইমার দিকে তাকালো।।।

ইমা- মারবে আমাকে!!! মারো!!! মারো ইসান।।। মারো!! (রাগান্বিত সুরে জোরে বললো)

ইসান- ইমা তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।। ওরা আমাকে,,,,,

বলতেই ইমা ইসানের সামনে হাত উঠিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললো- ব্যাস অনেকে বলেছো।। ইসান তুমি কখনো ভালো হবে না এটা আমার আগেই বুঝা উচিত ছিলো।। আজ তোমার জন্য আমি বাবার কাছে ছোট হয়ে গেলাম।। ব্যাস অনেক হয়েছে।। আজ থেকে তুমি আমার কেও না আমি তোমার কেও না।। এই সম্পর্ক আমি ইমা এখানেই ইতি টানলাম।।। (রাগান্বিত সুরে)

ইসান- ইমা এগুলো তুমি কি বলছো???( হতবাক হয়ে)

ইমা ইসানের কনো কথা শুনলো না চলে যেতে লাগলো।।

ইসান- ইমা,,,,, ইমা দাড়াও আমার কথা শুনো।। (উত্তেজিত সুরে বললো)

ইমা কাদতে কাদতে গিয়ে ট্যাক্সিতে উঠে গাড়ির দরজা লাগিয়ে দিলো। ইসান এসে গাড়ির কাচে হাত দিয়ে বললো-

ইসান- ইমা আমার কথা শুনো। প্লিজ গাড়ির দরজাটা খুলো।। বলে ইসান গাড়ির দরজা খুলার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না।। ইমা চোখ মুছে ড্রাইভারকে গাড়ি স্টার্ট দিতে বলে। গাড়ি চলতে লাগলে ইসান গাড়ির কাচে হাত দিয়ে গাড়ির সাথে দৌড়াতে লাগে এবং উত্তেজিত সুরে বলে-

ইসান- প্লিজ গাড়ি থামান।। ইমা তুমি যেও না।। ইমা আমার কথাটা শুনো।।

ইমা- গাড়ি জোরে চালান।। (একটু জোরে)

ড্রাইভার গাড়ি জোরে চালতে লাগলে ইসান গাড়ির পিছনে দৌড় দেয় এবং বলতে থাকে-

ইসান- ইমা প্লিজ আমার কথাটা শুনো ইমা প্লিজ যেও না।। আমি তোমাকে ভালোবাসি ইমা।। ইমা প্লিজ যেওনা।। ইমা,,,,,,,,,, ইমা,,,,,,,,, যেওনা প্লিজ।। ইমা,,,,,,,,

ইসান দাড়িয়ে যাই এবং গাড়ি চলে যাওয়া দেখে। ইসানের চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পরতে লাগে।। ইসান হাঁটু ভেঙে বসে পরে মাটিতে এবং দুই হাত দিয়ে মুখমন্ডল চেপে ধরে বাচ্চাদের মতো জোরে কান্না করতে লাগে এবং বলে – ইমা যেওনা। আমাকে ছেড়ে যেওনা।।। আমাকে ভুল বুঝো না।।।

বর্তমান,,,,,,

ইসানের চোখে পানি টলমল করছে। আকাশ জনির ও চোখে পানি চলে আসে।।।

ইসান-সেদিন অপরাধ না করেও অপরাধী হয়ে যাই ইমার চোখে।।।। ইমা আমাকে ছেড়ে চলে যাই৷।। সেই সময় মনে হচ্ছিলো আমার পুরা পৃথিবী অন্ধকারে ঢেকে গেছে।। আমি অসহায় হয়ে পরেছিলাম।।।।

জনি- সেই দিনের পর থেকে কি আর ম্যাডামের সাথে আপনার দেখা হয়নি???

ইসান- হমম লাস্ট দেখা হয়েছিলো।। ওর বাড়িতে।।

আকাশ- আপনি উনার ভুল ভাঙিয়ে ছিলেন???

ইসান- না সেই সুযোগ পাইনি।।৷ সেই দিন আমি বাড়িতে এসে সন্ধ্যা থেকে রাত ৩ টা পর্যন্ত ইমাকে ফোনের উপর ফোন করেছি প্রথমে চারবার কল ঢুকেছে তারপর থেকে বন্ধ।। তবুও আমি কল করেছি।।। এই ভেবে যে হয়তো রাগ কমে গেলে ফোন খুলবে ইমা কিন্তু খুলেনি।। আমি যেন পাগল হয়ে গিয়েছিলাম।। কিছুই ভালো লাগছিলো না।। শুধু নিজের উপর রাগ হচ্ছিলো।। ঘরে আমার যা ছিলো সব ভেঙে ফেলেছিলাম।। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।। পরের দিন সামির আমাকে ফোন করে বারে আসতে বললো।। আমি ভাবলাম নেশা করলে হয়তো নিজের মনকে একটু শান্তি দিতে পারবো।। তাই চলে গেলাম বারে।।
ওহ্ মাঝখানে একটা কথা ছাড়া পরেছে।।।
আমার বাবা আমার জন্মদিনে আমাকে লাইসেন্স আলা রিভলবার গিফ্ট করেছিলো।। কিন্তু আমি সেটা কখনোই চালিয়ে ছিলাম না। তবে সাথে রাখতাম মাঝে সাঝে।। সেদিন কি মনে হয়েছিলো রিভলবার টা সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম বারে।। সামির আমি বসে ড্রিংক করছিলাম।। কিন্তু ড্রিংক করেও আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। আরো বেশি ইমার চেহারাটা চোখের সামনে ভাসছিলো এবং কষ্ট হচ্ছিলো।। আমি রেগে মাতাল অবস্থায় চিল্লায় উঠি।। এবং গ্লাস বোতল ভাঙতে লাগি।।।

অতীত,,,,,,,

ইসান মাতাল অবস্থা চিল্লায় জোরে জোরে বললো- আমি ইমাকে চায়।। ও আমার!!! ও আমার। ইমা,,, তুমি আমার।।।

পাশ থেকে তিনজন লোকের মধ্যে একজন জোরে বলে উঠলো-

– এই ভাই!! এভাবে চিল্লাচ্ছেন কেন?? এটা ভিআইপি বার।। কনো নরমাল বার না।। চিল্লাতে ইচ্ছা করলে বাইরে যান।

ইসান লোকটার দিকে তাকিয়ে রেগে জোরে বললো- এই🤬 তুই কেরে?? আমি কে জানিস?? ইসান চৌধুরী।। জহির চৌধুরীর ছেলে।। এই বার আমি কিনার মতো ক্ষমতা রাখি।। 🤬

লোকটি রাগান্বিত সুরে বললো- গালি দিবেন না বলছি।। আমরাও কনো নরমাল মানুষ না।

সামির- ভাই,,ভাই,, আমার বন্ধু একটু কষ্টে আছে তাই এমন করছে।। সরি হ্যা।।

ইসান সামিরের কলার ধরে রেগে বললো- তুই সরি বলছিস কেন?? সরি তো ওরা বলবে।। ইসান চৌধুরী কারো কাছে ক্ষমা চায়না শুধু ইমা বাদে।। ইসান ইমার কাছে ১৪ বার ক্ষমা চায়তে রাজি আছে। কারণ ইমা হলো ইসানের প্রাণ।। এখন তোরা আমার কাছে ক্ষমা,চায়বি আমার পা ধরে।। আয় এবং ক্ষমা চা।।।

লোক গুলো রেগে জোরে বললো- কি?? এতো বড় কথা??

বলে তিনজন লোক রিভলবার বের করলে।। ইসান রেগে দাঁত খিঁচিয়ে বললো –

ইসান – 🤬🤬 আজ তোদের কিছু না বলছি আমি!!

বলে রিভলবার বের করে শুট করলো ওদের দিকে।।। বুলেট গিয়ে তিনজনের মধ্যে একজনের পায়ে গিয়ে লাগলো।।

তারপর শুরু হলো গুলির বর্ষন।।। যারা ছিলো বারে সবাই দৌড়াদৌড়ি করতে লাগে।।।

বর্তমান,,,,,,,

ইসান- আমিও গুলি করছি ওরাও গুলি করছে।। এর মধ্যেই পুলিশ চলে আসে।। পাশে সামির কে ডাকতে যাবো দেখি সামির আমার উপর শরীর এলিয়ে দিচ্ছে।। আমি সামিরের বুকে হাত দিতেই আমার হাতে রক্ত ভরে।। আমার মাথা শরীর ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগে।। সামিরের নাকে হাত দিতেই দেখি ওর শ্বাস পরছেনা।। আমি আতকে উঠলাম।। সেটাই আমার জীবনের প্রথম কাওকে চোখের সামনে এমন মরতে দেখা।। সেটাও আবার আমার বন্ধু।।। তারপর পুলিশ আমার হাত থেকে রিভলবার নিয়ে নেই।। এবং আমাকে ধরে নিয়ে চলে যাই।। আমি সামিরের লাশের দিকে তাকাতে তাকাতে চলে যাই।।।।। তারপর আমার তেমন কিছু মনে নেই। বাবা পুলিশ স্টেশনে এসে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাসায় নিয়ে আসে।। আমার কনো হুশ ছিলো না।। আমি প্রায় চার দিন শোকে ছিলাম।। চারদিন পর ঠিক করি ইমার বাড়িতে যাবো।। এবং চলেও গেলাম ইমার বাসায় ।। ওখানে গিয়ে জানতে পারি ওর মা মারা গেছে।।। তবুও আমি গিয়ে ইমার বাবাকে বুঝিয়ে বলি।। সেখানে ইমাও দাড়িয়ে ছিলো।।

অতীত,,,,,

ইসান- আংকেল আমি খারাপ ছেলে না। হমম সেদিন আমি মারামারি করেছি কিন্তু সেটার যথেষ্ট কারণ ছিলো।। আংকেল আমি ইমাকে অনেক ভালোবাসি ওকে ছাড়া আমার থাকতে কষ্ট হবে।। আংকেল আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি আমি ইমাকে আমার কাছে যত্নে রাখবো।। কনো কিছুর কষ্ট দিবো না।।।

ইমার বাবা রাগান্বিত সুরে বললো- দেখো ছেলে আমার স্ত্রী কয়েক দিন হয়েছে মারা গেছে৷ সেটাও,,,,,, যাই হোক।।৷ তুমি চলে যাও আমার মেয়ে তোমার সাথে কনো রকম সম্পর্ক রাখবে না।। (ইসান ইমার দিকে তাকালো ইমা মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলছে।) আমার মেয়ের আমি বিয়ে ঠিক করেছি।

বলতেই ইসান রেগে জোরে বলে উঠলো- কখনোই না।৷
ইমার বাবা চমকে উঠলো সাথে ইমাও।।। ইসান রেগে রিভলবার বের করে ইমার দিকে ধরলো।। ইমা বিষফরিত চোখে ইসানের দিকে তাকালো।

ইমার বাবা উত্তেজিত সুরে বললো- এই ছেলে কি করছো???

ইসানের চোখে পানি টলমল করতে লাগে ইসান রিভলবার নিজের মাথায় ঠেকালো এবং কান্নার সুরে বললো-

ইসান- ইমা তুমি আমার।। আমি তোমাকে ভালোবাসি।।। তোমাকে অন্য কারো সাথে দেখতে পারবো না।। তোমাকে মারতেও পারবো না কিন্তু নিজেকে মারতে পারবো।। এটা পারবো।।।

ইমা দৌড়ে গিয়ে ইসানের হাত চেপে ধরে কান্না করে উত্তেজিত সুরে বললো- পাগল হয়ে গেছো কি করছো?? দহায় লাগে এমন কিছু করো না ইসান।।

ইসান রিভলবার সরিয়ে কান্না করতে করতে ইমার গালে হাত দিয়ে বললো- আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি ইমা তোমার বাবাকে বুঝাও না৷ প্লিজ।।।

ইমা চোখ মুছে মুচকি হেসে বললো – আমি বুঝাবো বাবাকে তুমি শান্ত হও এবং বাসায় যাও।।।

ইসান- ওকে তোমার ফোন খুলা রেখো। কেমন।। (মুচকি হেসে)

ইমা- হমম যাও।।।

ইসান চলে গেলো।।। এবং বাসায় এসে ইমাকে ফোন করলো ইমা ফোন ধরলো না।। ইসান কয়েক বার ফোন করলো কিন্তু কনো লাব হলো না।। ইসান ইমাকে এস এমএস,করে বললো- তোমার বাবা তোমার কথা,শুনেনি তাই তো???। এই কারণেই ফোন ধরছো না!!!

কোন রিপলে আসলো না।। ইসান আবার এস এম এস,করলো- ইমা তুমি আমার কাছে চোলে আসো।। তোমাকে আমি অনেক ভালোবসবো।।

এবারো কনো রিপলে আসলো না।। ইসান মনে মনে বললো- আমি ইমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো।। ইমাকে আসতে বলি। ও নিশ্চয় আসবে। আগের বার এসেছিলো।।

ইসান এস এম এস করলো- ইমা কাল সকাল ৯ টাই আমি (,,,,,,) ব্রিজের উপর তোমার অপেক্ষা করবো। তুমি চলে এসো।।

বর্তমান,,,,,,

ইসান- আমি পরের দিন সকাল ৯ টাই গিয়ে সেই ব্রিজের উপর অপেক্ষা করতে লাগি।।। ১০, ১,৩,৪,৬,৮,৯,১০,১২ টা ইমা আসেনি।। পরের দিন সকাল ৫ পর্যন্ত আমি সেই ব্রিজে উপর গাড়ির ভিতর বসে ছিলাম ইমার অপেক্ষাই কিন্তু ইমা আসে নি।। আমার সেখান থেকেই মনের ভিতর ইমাকে নিয়ে একটা বিশাল খোব তৈরি হয়।। তারপর আমি ওখান থেকে চলে আসলাম।। তারপর বাবা আমাকে বিজনেস এর জন্য বাইরের দেশে পাঠালো।।২ বছর পর ওই শহরে যাই ইমাকে খুজি কিন্তু পাইনা।।৷ তারপর আমি আসতে আসতে এই পথে চলে আসি।। দিনের আলোতে আমি একজন বিজনেস ম্যান। রাতের অন্ধকারে আমি একজন হিংস্র মাফিয়া।। এই তো।। তোমরা জানো কেন আমি আমার বাড়িতে কনো মেয়েকে ঢুকতে দিতে মানা করেছি।।

আকাশ- না স্যার এটা অবশ্য আমার মনে অনেক দিনকার প্রশ্ন।।।

ইসান- বাড়িটা আমি আমার ইমার জন্য তৈরি করেছি।। ওই বাড়িতে কনো মেয়ের যদি পা পরে সেটা একমাত্র ইমার হবে।। ওই বাড়িতে আমি আমার ইমাকে নিয়ে থাকবো।। ৬ বছর পর ওকে যেদিন প্রথম হসপিটালে দেখলাম আমার রাগ খোব গুলো বরফের মতো গলে পানি হয়ে গেলো।। মনে মনে একটা আশার আলো খুজে পেয়েছিলাম।। কিন্তু ও যে সত্যি বিয়ে করে নিয়েছে ওর বাবার পছন্দের ছেলেকে।। সত্যি আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এখনো।।।( মন খারাপ করে)

আকাশ- স্যার প্লিজ কষ্ট পাবেন না।।

জনি- স্যার আপনার লাভ স্টোরি টা সত্যি অনেক কষ্টের।। তবে ম্যাডাম আপনার সাথে অন্যায় করেছে।। মেয়ে জাত টাই এমন।।

ইসান জোরে বললো- জনি!! এগুলো বলো না।। আমার ইমা অন্য রকম। আমি আজো ওকে তেমনি ভালোবাসি যেমন আগে বাসতাম।। হম তবে কষ্ট হচ্ছে ওকে অন্য কারো সাথে দেখতে হবে ভেবে।।।

ইসান মোবাইলের স্ক্রিন লাইট অন করতেই দেখে ৩:৪৯ বাজে।।।

ইসান- অনেক রাত হয়ে গেছে।। চলো এবার যাওয়া যাক। কাল আবার হসপিটালে যেতে হবে।। এবং মিঃ মিনহাজের ব্যাপার টা একটু দেখতে হবে।।।

জনি , আকাশ- ওকে স্যার চলুন।।।

তারপর তিনজন উঠে গাড়িতে বসলো এবং চলে গেলো হটেলে।। হটেলে এসে ইসান নিজের রুমে ঢুকে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পরে এবং গলা থেকে আংটি শুদ্ধ চেনটা বের করে দেখতে লাগে এবং ভাবতে লাগে ইমার সেই ঝর্ণার পানিতে আনন্দ করার কথা।।

অতীত,,,,,,,,

ইমা আংটি বক্স থেকে আংটি বের করে ইসানের হাতে দিয়ে মুচকি হেসে বললো- তুমি পরিয়ে দাও।।

ইসান ইমার হাতে আংটি পরিয়ে দেয়। এবং ইমা ইসানের হাতে আংটি পরিয়ে দেয়।। ইসান ইমাকে শক্ত করে বুকের সাথে জোরিয়ে ধরে বললো-

ইসান- I love you.. ইমা।।

ইমা – I love you too ইসান।।।

এমন সময় আকাশ মেঘে ঢেকে যাই।। ইসান আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো-

ইসান- বৃষ্টি আসবে মনে হচ্ছে। চলো ইমা।।

ইসান ইমা পানি থেকে উঠে গাড়ির কাছে যাওয়ার আগেই বৃষ্টি আসে।।

ইসান- বৃষ্টি জোরে আসলো তো এই বৃষ্টিতে এই রাস্তায় গাড়ি চালানো একটু রিস্কি।। আমরা বৃষ্টি কমে গেলে রওনা দিয় কি বলো।।

ইমা- ঠিকাছে।।।

ইসান ইমা গাড়ির পিছন সিটে ভেজা শরীরে উঠে বসে।।। ইসান দেখলো ইমা একটু কাপছে।।।

ইসান- তোমার ঠান্ডা লাগছে??

ইমা- হমম।।

ইসান তারাতারি ব্যাগ থেকে তোয়ালা বের করে ইমার মাথা মুছে দিতে লাগে।। ইমা অপলক দৃষ্টি তে ইসানের দিকে তাকিয়ে থাকে।।। এমন সময় আকাশ জোরে গর্জন দিয়ে উঠে ইমা ভয়ে ইসানকে ঝাপটে ধরে।।। ইসানের কাঁধে ইমার গরম নিশ্বাস পরছিলো।। ইসানের হার্ডবিট দ্রুত হয়ে যাই।। এবং শরীরের ভিতর কেপে কেপে উঠতে লাগে।।। ইসান দুইহাত দিয়ে ইমাকে নিজের শরীরের সাথে মিশিয়ে জরিয়ে ধরে।।। ইমাও ইসানকে শক্ত করে জোরিয়ে ধরে।।। ইমা ইসানকে ছাড়লো এবং দুইজন দুইজনার চোখের দিকে তাকালো।। দুইজনার চোখে কামনার ভাব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো।। ইসান তার নরম দুইহাত দিয়ে ইমার কানের পিছে আলতো ভাবে স্পর্শ করতেই ইমা নিজের ঠোঁট কামরিয়ে ধরে।।। ইসান ইমার ঠোঁটের দিকে তাকায়।। এবং আসতে আসতে ইমার কাছে আসে।।।

ইমা ইসানের চোখের দিকে তাকায়।।
ইসান চোখ বন্ধ করে আলতো ভাবে ইমার ঠোঁটে কিস করতে লাগে।। দুইজন নিজেদের কন্ট্রোল যে কখন হারিয়ে ফেলে বুঝতেই পারেনা।।। দুইজন দুইজনাকে পাগলের মতো ভালোবাসে আদর করতে লাগে।।।।

বর্তমান,,,,,,,,

ইসান উঠে বসে এবং জোরে একটা শ্বাস ছাড়ে।। ইসান বারান্দার দিকে তাকায় দেখে হালকা হালকা আলো ফুটেছে।।।

ইসান বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে চোখ বন্ধ করে একটা জোরে শ্বাস নিয়ে ছারলো।। এবং মনে মনে বললো-

ইসান- সেদিন যাই হয়েছিলো ভুল বসতো হয়েছিলো।। কিন্তু ভালবাসা তো খাঁটি ছিলো ইমা। তোমার পর আমি আর কখনো কনো মেয়েকে টাচ করেও দেখিনি।। You are you life. You are my world everything.. I love you.. আমি তোমাকে ভালোবাসি আর সারা জীবনী বাসবে।।

,,,,,,,,,,,continue,,,,,,,,,,,,

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here