#i_m_mafia_lover
#part_19
#sabiha_kh
ইমা জনির সামনে হাত জোর করে মিনতির সুরে বললো – প্লিজ জনি আমাদের দেশে ফিরার ব্যাবস্থা করো।।।
জনি- ওকে,,,, ওকে,,, ম্যাডাম শান্তহন।। ঠিকাছে আমি ইসান স্যারের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাচ্ছি।।
”
”
”
”
জনি আকাশকে কল করলো।।
জনি- আকাশ স্যার ঘুম থেকে উঠছে??( উত্তেজিত সুরে)
আকাশ- হ্যা উঠছে। কিন্তু তোর কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন??
জনি- সব পরে বলছি স্যারকে একটু ফোন টা দে।।
আকাশ – হমম দিচ্ছি দাড়া।।। (আকাশ ক্যাবিনের ভিতরে গিয়ে ইসানের হাতে ফোন দিলো বললো- জনি কথা বলবে)
ইসান ফোন কানে ধরলো – হ্যালো!!!
জনি- স্যার।। একটা সমস্যা হয়েছে।।।
ইসান- কি হয়েছে ইমা ঠিক আছে তো।।??( উত্তেজিত সুরে)
জনি- জি স্যার ঠিকাছে কিন্তু ম্যাডাম খুব কান্না কাটি করছে দেশে ফিরার জন্য।
ইসান- হঠাৎ কি হলো???
জনি- জানিনা স্যার ম্যাডাম আজি যেতে চাচ্ছে।।।
ইসান- আমাকে ইমার সাথে কথা বলাও।।
জনি রুম থেকে বের হয়ে হল রুমে গিয়ে দেখে ইমা মাথায় হাত দিয়ে বসে কাদছে। রোকসানা ইমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।। জনি ইমার দিকে ফোন এগিয়ে দিয়ে বললো- স্যার কথা বলবে ম্যাডাম।।
ইমা জনির হাত থেকে ফোন নিয়ে কানে ধরলো।।
ইমা কান্না,সুরে বললো- হ্যালো।।
ইসান ইমার কান্নার কন্ঠ শুনেই উত্তেজিত হয়ে বললো- কি হয়েছে ইমা?? কাদছো কেন তুমি???
ইমা- আমি দেশে যাবো ইসান প্লিজ ব্যাবস্থা করে দাও।। ( কান্না সুরে)
ইসান- ঠিকাছে কিন্তু কি হয়েছে বলবে তো??
ইমা- (,,,,,,,,) শহরে একটা বেওয়ারিস লাশ পাওয়া গেছে।। (জনি শহরের নাম শুনে বিষফরিত চোখ করে ইমার দিকে তাকালো) ওই শহরে আমার হাসবেন্ড ব্যাংকের কাজে গিয়েছিলো।। পুলিশ লাশ আইডেন্টিটি করানোর জন্য আমাকে যেতে বলেছে।।(বলে হুহু করে জোরে কেঁদে উঠলো ইমা।।। ইমার কথা শুনে ইসানের বুকটা কেপে উঠলো।। ) গতকাল রুহি ইমেইল পাঠিয়েছে।। আমাকে দ্রুত দেশে ফিরতে বলেছে।। আমি দেশে ফিরতে চায় ইসান।। (কান্না করে)
ইসান কাঁপা সুরে বললো- হমম হমম জ,,জনিকে ফোনটা দাও।।
ইমা জনির হাতে ফোন দিলো।।
জনি- জি স্যার।।
ইসান- ১ ঘন্টা পর যেই ফ্লাইট আছে সেটার টিকিট বুকিং দাও। ওদের সাথে তুমিও যাও।। কি হয় না হয় পায় টু পায় সব খবর আমাকে জানাবে ওকে!!
জনি- ওকে স্যার।।।
ইসান ফোন কেটে দিয়ে ফোন আকাশের দিকে ধরলো। আকাশ দেখে ইসান প্রচন্ড ঘামছে।। হাতটাও কাপছে।।। আকাশ ইসানের হাত থেকে ফোন নিয়ে বললো-
আকাশ- স্যার আপনি ঠিকাছেন?? এতো ঘামছেন কেন??
ইসান- আমার কেমন যেন অস্থির লাগছে।।। মাথাটাও কেমন ঘুরছে আকাশ।।
আকাশ – আপনি শুয়ে থাকুন আমি এখনি ডাক্তার৷ নিয়ে আসছি।।। (উত্তেজিত সুরে)
আকাশ দ্রুত ক্যাবিন থেকে বের হয়ে ডাক্তার ডাকতে গেলো।।
এদিকে ইসান দুই হাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরলো।। ইসানের কানে শুধু ইমার বলা কথায় বাজছে।। (ইমা- (,,,,,,,,) শহরে একটা বেওয়ারিস লাশ পাওয়া গেছে।। ওই শহরে আমার হাসবেন্ড ব্যাংকের কাজে গিয়েছিলো।। পুলিশ লাশ আইডেন্টিটি করানোর জন্য আমাকে যেতে বলেছে।।),,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
Time skip
১ ঘন্টা পর,,,
ইসমা- আম্মু তুমি কাদছো কেন??( মুখ ভার করে)
ইমা ইসমা কে কি বলবে বুঝতে পারছে না। শুধু কান্নায় আসছে ইমার।।
ইসমা- আম্মু বন্ধু কথায় বন্ধু যাবে না আমাদের সাথে???
ইমা ইসমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো – তোমার বন্ধুর কিছু কাজ পরেছে তাই যাবে না।।
এদিকে ডাক্তার ইসানকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুমপারিয়ে রেখেছে।।
ডাক্তার- উনাকে কি বলেছেন??
আকাশ- আমি কিছু বলিনি। স্যার ফোনে কথা বলছিলো।।
ডাক্তার- উনাকে এই সময় একদম স্ট্রেস দেওয়া যাবেনা।। নাহয় উনার রক্তখরন হতে পারে। আর রক্তখরন হলে আমরা উনাকে বাচাতে পারবো না।।
আকাশ- ওকে ডাক্তার আমি খেয়াল রাখবো। (ডাক্তার চলে গেলো)
আকাশ ইসানের দিকে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলো- জনি এমন কি বললো আর ইমা ম্যাডাম ও বা কি বললো যে স্যার এতো চাপে পরে গেলো???
Time skip
ইমা চলে আসলো দেশে।।।
ইমা- জনি আমি সরাসরি পুলিশ স্টেশন যাবো।।
জনি- ম্যাডাম আমি আপনার সাথে যাবো।।
ইমা- ওকে।।।
রোকসানা – তাহলে আমি ইসমাকে নিয়ে বাসায় যাচ্ছি।। জনি ম্যাডামের খেয়াল রেখো।।( জনি মাথা ঝুকিয়ে হমম বললো)
ইমা ব্যাগ থেকে বাসার চাবি বের করে রোকসানাকে দিলো রোকসানা ইসমাকে নিয়ে চলে গেলো।। ইমা রুহিকে কল দিলো।।
রুহি- ইমা!! কখন আসছো??
ইমা- মাত্র আসছি।।। তুমি কথায়??
রুহি- হসপিটালে।।।
ইমা- আমি এখন পুলিশ স্টেশন যাচ্ছি।।।
রুহি- ওকে তুমি যাও আমি আসছি।। ( বলে ফোন কেটে দিলো)
ইমা জনির সাথে পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে বসে ।।। অভির কথা ভেবে ইমা মুখে হাত দিয়ে কেঁদেই চলেছে।।। জনি ইমাকে কাঁদতে দেখে কি বলে শান্তনা দিবে ভাষা পাচ্ছিলো না।।। তারা চলে আসলো পুলিশ স্টেশন।। ইমা গাড়ি থেকে বের হয়ে দ্রুত হেটে পুলিশ স্টেশনের ভিতরে ঢুকলো।।
ইমা- অফিসার আমি অভির স্ত্রী।।।( উত্তেজিত সুরে)
অফিসার- বসুন ম্যাডাম।।। (ইমা জনি বসলো)
অফিসার ডয়ের থেকে দুইটা ছবি বের করে টেবিলের উপর রাখলো।।
অফিসার – দেখুন তো ম্যাডাম এই ছবিতে যেই পোশাক আর এই ছবিতে যেই আংটির ছবি দেওয়া আছে সেটা চিনেন কিনা??
ইমার বুকের ভিতর ধুক ধুক করতে লাগে। ইমা কাপা হাতে ছবি দুটো কাছে নিয়ে দেখে আতকে উঠলো। এবং কান্না সুরে বললো- জি এটা আমার স্বামীর হাতের আংটি। আর এই পোশাক পরেই উনি গিয়েছিলো।।। ৷ অফিসার তার মানে আমার স্বামী,,,,,,, ( কান্না ভড়া চোখে অফিসারের দিকে তাকিয়ে)
বলতেই অফিসার মাথা নিচু করে ধীর সুরে বললো-
অফিসার- I am sorry ম্যাডাম।।
ইমা- কো,,, কো,,,, কোথায় পেয়েছেন। আর কি,, কি,, হয়েছিলো!!! (কাপা সুরে কাদতে কাদতে বললো)
অফিসার- ফরেনসিক তদন্ত করে জানা যায় মিঃ অভিকে খুন করা হয়েছে ৪ মাস আগেই।। লাশ এক পরিত্যাক্ত ডোবার ধারে পুতে রাখা হয়েছিলো। একজন লোক মাটি কাটতেই মানুষের হাড় দেখতে পাই।। এবং পুলিশে খবর দেয়।। তারপর উনারা আমাদের খবর দেয় এবং এই দুই ছবি পাঠিয়ে দেয়।।।
ইমা টেবিলের উপর হাত রেখে মাথা নিচু করে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে লাগে।।। জনি উঠে বাইরে এসে গভীর একটা শ্বাস ছাড়ে।। এমন সময় রুহি আসে।। রুহি ইমাকে কাদতে দেখে দ্রুত হেটে ইমার কাছে আসে।।
রুহি ইমার কাধে হাত রাখতেই ইমা কান্না ভড়া চোখে রুহির দিকে তাকায় এবং উঠে রুহিকে ঝাপটে জোরিয়ে ধরে কাদতে লাগে।।
রুহি ইমার এমন কান্না দেখে নিজের আবেগ কে আর ধরে রাখতে পারলো না।।।
রুহি – ইমা শান্ত হও।। আল্লাহ তোমাকে ধর্য্য দিক।।।
ইমা একটু শান্ত হলে অফিসার ইমাকে বসতে বললো।।। ইমা বসলো।।
অফিসার- ম্যাডাম যেহেতু আপনি লাশ আইডেন্টিটি করতে পেছেন। তাহলে এবার আমরা (,,,,,,) শহর থেকে লাশ নিয়ে আসার ব্যাবস্থা করতে পারি। তারপর আপনি ধর্মীয় নিয়ম মেনে লাশ দাফন কাফন করতে পারেন।।
ইমা- ঠিকাছে অফিসার আপনারা ব্যাবস্থা করুন।। (কান্না সুরে)
রুহি – অফিসার আমরা এখন যেতে পারি???
অফিসার- জি।।।
রুহি- চলো ইমা।।।( ইমার কাধে হাত রেখে)
রুহি ইমাকে ধরে বাইরে নিয়ে আসতেই ইমা দেখে জনি ফোনে কথা বলছে।।।
ইমা- জনি!!!! (বলতেই জনি চমকে পিছনে তাকায়)
জনি- আকাশের সাথে কথা বলছিলাম। স্যারের শরীরটা নাকি খুব খারাপ হয়ে গেছে।৷
রুহি- কি হয়েছে ইসান স্যারের??? (বিস্মিত চোখে)
ইমার জনির কথা শুনে চোখে পানি চলে আসে।।
ইমা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে লাগে।। এবং বলে – আমাকে বাচাতে গিয়ে ইসানের গুলি লেগেছে।।। (রুহি বিষফরিত চোখে ইমার দিকে তাকায়)
ইমা রুহির হাত তার কাঁধ থেকে সরিয়ে দিয়ে পাশে রাখা ব্রেঞ্চে বসে মাথায় হাত দিয়ে কাদতে কাদতে বললো-
ইমা- আল্লাহ এ কোন যন্ত্রনার মধ্যে ফেললে আমাকে।। সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে গেলো আবার।। আমি এখন কোন দিকে যাবো??? মেয়েটা বাসায়,,, ওকে কি জবাব দিবো।। আল্লাহ আমার সাথেই কেন এমন করলে।। কেন??? (কান্না সুরে) সবাই কে কি শুধু আমার জীবন থেকে কেড়েই নিবে তুমি!!! এ কেমন বিচার তোমার!!!! ( বলে জোরে জোরে কাদতে লাগে)
Time skip
১৫ দিন পর,,,,,,,
আকাশ ইসান এয়ারপোর্ট থেকে বের হচ্ছে এমন সময় জহির কল করলো।।
আকাশ- স্যার বড় স্যার কল করেছে।। (ইসান আকাশের হাত থেকে ফোন নিয়ে কানে ধরলো।।)
ইসান- হমম বাবা বলো।।
জহির- ঠিকাছো??
ইসান- হমম।। এই মাত্র ফ্রাইট থেকে নামলাম।।।
জহির- বাড়িতে কবে আসবে??
ইসান- আসবো।।। এখন রাখি বাবা।।। ( বলে ফোন কেটে দিলো।।)
জনি ইসানকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসলো।।
জনি- স্যার ভালো আছেন???( মুচকি হেসে)
ইসান- হমম তুমি ভালো আছো??
জনি- জি স্যার।।। আসুন স্যার।।। (জনি গাড়ির দরজা খুলে দিলো ইসান গাড়িতে উঠে বসলো)
ইসান- ইমা ঠিক আছে???
জনি- জি।।।
ইসান- ইমার বাসায় চলো।।।
জনি- ওকে স্যার।।।।( ইসা দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে সিটের সাথে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে রয়লো।।) জনি আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিস ফিস করে বললো- কি হয়েছে?? স্যার এতো গম্ভীর কেন??
আকাশ- তুই তো জানিস কেন।।। চুপ কর গাড়ি চালা মনোযোগ দিয়ে।।। (ফিস ফিস করে)
– আমাকে ছেড়ে দিন।। আমার স্ত্রী সন্তান আছে।। দয়া করুন।। আমাকে ছেড়ে দিন।।। আমার সন্তান নিশ্চয় অপেক্ষাই আছে।।। আমাকে মারবেন না।।।
– আমি দয়া করতে জানিনা।। (বলে পায়ে শুট করলো চিল্লায় উঠলো লোকটি)
– আমার কথাটা শুনুন।। দেখুন আমি একজন সাধারণ কর্মচারী।। আমি যা কিছু করেছি ভেবেই করেছি।। যেই জন্য তারা লোন চেয়েছিলো সেটা ইললিগাল ছিলো।। আমি কিভাবে এটা করতাম বলুন??
– উফফ এতো চিল্লালি ভালো লাগে না।। (রেগে)(বলে উঠে গিয়ে দরজা খুলে শুট করলো সরাসরি মাথায়)
”
”
”
আকাশ- স্যার,,,,, স্যার,,,,,,,
ইসান চোখ খুলে আকাশের দিকে তাকালো।।।
আকাশ- স্যার চলে এসেছি।।।
ইসান গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় দেখে ইমার বিল্ডিং এর সামনে চলে এসেছে।।।
জনি খেয়াল করলো ইসান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বিল্ডিং এর দিকে।।
জনি- স্যার ম্যাডাম ঠিকাছে।। তবে মানসিক ভাবে একটু ভেঙে পরেছে।। (ইসান জনির দিকে তাকালো)রোকসানার থেকে আমি যতো দুর শুনলাম মিঃ অভি খুব ভালো মানুষ ছিলেন।। ইমা ম্যাডাম, এবং ইসমার খুব কেয়ার করতেন উনি।। তবে একটা বিষয় শুনে একটু অবাক হয়েছি সেটা হলো ইমা ম্যাডাম এবং মিঃ অভির সম্পর্ক স্বামী স্ত্রীর থেকে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্কটা বেশি ছিলো।।।
আকাশ- তোর আবার কথা!!! এটা একটা কমনসেন্সের বিষয় স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক কি আর কারো সামনে দেখাবে।।
জনি- কিন্তু,,,,
বলতেই ইসান রেগে বললো- চুপ করো দুইজন।। চলো যাওয়া যাক।।।
,,,,,,,,,,,,,,continue,,,,,,,,,,,,,
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।।