Unexpected_lover part_15

0
2178

Unexpected_lover
part_15
#Rimy_Islam

অনিবের গাম্ভীর্যের পেছনের কারণ আমার জানা হলো না। এদিকে শিলা আপুর সাথে পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক হতেও পারছি না। তবে শিলা আপু সম্পূর্ণ এর ব্যতিক্রম। সে খুব হেসে হেসে কথা বলছে, ঠাট্টা করছে। বুঝতেই দিচ্ছে না ঠাট্টার সম্পর্কে সে ঘুণ ধরিয়েছে। আমি রান্না করছি।পাশে শিলা আপু গভীর মনোযোগে তার বান্ধবীর সাথে কথা বলছে।
থেকে থেকে অট্টহাসিতে ফেটে পড়তে।দীর্ঘ ফোনালাপ শেষে আমার দিকে ঘুরে বললো,
” জানিস বর্ষা, আমার বান্ধবী অনেকদিন পর দেশে আসছে। ”

” ভালো তো। তুমি কবে যাচ্ছো তাহলে?”

শিলা আপু রাগান্বিত হয়ে বললো,
” কিরে! আমি আসার পর থেকেই দেখছি তুই আমাকে বিদায় করতে উঠে পড়ে লেগেছিস! এখন বিয়ে হয়েছে, বোনকে আর ভালো লাগে না – না?”

আমি মেকি হেসে বলি,
” আরে কি রে বলো! বোন কখনো পর হয় নাকি যে খারাপ লাগবে? তুমি রুমে যাও। রান্না শেষে আজ খুব আড্ডা দিবো।”

শিলা আপু হেসে আদুরে ভঙ্গিতে আমার গাল টেনে চলে গেল। এদিকে আমি ফোনের অপেক্ষায় আছি। অনিব সকালে বেরিয়েছে। একবার ফোন করে খোঁজ নেয়নি। ফোনটা হাতে নিয়ে অনিবের নাম্বার ডায়াল করি।
” হ্যাঁ বর্ষা বলো।”

আমি পানসেভাবে বলি,
” আপনি দুপুরে আসবেন না?”

” না। আর কিছু?”

” আজ্ঞে না। ফোন রেখে উদ্ধার করেন।” – প্রচন্ড রেগে বলি।

” আচ্ছা শোনো। তোমার বোন গেছে না আছে?”

” আছে।”

অনিব ওপাশ থেকে বললো,
” তাহলে বাড়ি ফিরছি না আজ। রাতে মায়ের ওখানে যাবো।”

” বেশ।আসতে হবে না।”

খট করে ফোন কেটে দিই। অনিব বাসায় আসবে না শুধুমাত্র শিলা আপুর জন্য? এত কিসের রাগ উনার? বিয়ে ভেঙেছে এতে তো আপু একার দোষ নেই। একটা মাতাল ছেলের হাতে কে বা মেয়ে তুলে দিবে,আর কোনো মেয়েই বা বিয়ে করবে? এসব ভাবতে ভাবতেই ফোনটা আবার বেজে উঠলো।
লিজা আপুটা ফোনটা করেছে।
আমি দ্রুত ফোন ধরি,
” আপু কি খবর?”

ওপাশে মিষ্টি হাসির শব্দ কানে এলো। তারপর বললো,
” একটা সুখবর। তন্বী নাকি সামনে শুক্রবার দেশে ফিরছে। ”

আমি খুশির বাতাসে ভাসতে ভাসতে বলি,
” সত্যি আপু! এটাতো খুব বড় সুখবর। আর এই সুখবরটা পেলাম একমাত্র তোমার জন্য। সত্যিই তুমি এতো ভালো!”

” বুঝেছি, বাকিটা বলতে হবে না।ভালো থেকো। রাখছি।”

রাতে অনিব বাসায় ফিরলো। যদিও উনার আসার কথা ছিলো না। তাই গেট লাগিয়ে প্রায় ঘুমিয়েই পড়েছিলাম। কলিংবেলের তোলপাড় শব্দে ত্রস্তপায়ে নিচে নেমে দরজা খুলে দেখি অনিব।
” শিলা ঘুমিয়েছে? “- চোরামুখে প্রথম প্রশ্ন অনিবের।

” বলতে পারেন।”

” এটা কেমন কথা? ঘুমালে বলবে’ হ্যাঁ ঘুমিয়েছে’। না ঘুমালে বলবে ‘ না ‘। ‘বলতে পারেন’ এটা কেমন কথা?”

” কারণ আপনার বেলের শব্দে পাড়া-পড়শিরাও জেগে গেছে বোধ হয়। সেখানে একই বাড়িতে থেকে শিলা আপু না জাগার কারণ দেখছি না।”

অনিব ব্যস্ত ভঙ্গিতে ভেতরে ঢুকে পড়ে। চারপাশে ভালোমতো চোখ বুলিয়ে দোতলায় উঠতে যেতেই শিলার আপুর আগমন ঘটে। আপুর রুম নিচে হওয়ায় রুম থেকে বেরিয়ে পেছন থেকে বাঁধা দেয় অনিবকে।
” অনিব তুমি আমাকে দেখে ভয় পাও? সারাদিন বাড়ি আসোনি,এখনো চোরের মতো পালাচ্ছ! ব্যাপার কি?”

অনিক হালকা হেসে পরমুহূর্তেই সেই হাসি মিইয়ে বললো,
” অনিব কাউকে ভয় করে না। একটা মেয়েকে ভয় পাবো আমি? ”

শিলা আপু হেসে বললো,
” আগের সব রাগঝাল ভুলে নতুন জীবন শুরু করা যায় না? মানে এখন তো তুমি আমার ছোট বোনের হাজবেন্ড। সম্পর্কে আমি আপু হলেও তুমি নাম ধরেই আমাকে ডেকো।”

” হুম।”

“আজ ঘুম নেই কারো। আমরা আড্ডা দিবো। মুভি দেখলে কেমন হয়? অনিব তুমি ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নাও।”

আমি দু’জনের কথোপকথনে একবার অনিবের দিকে,একবার আপুর দিকে তাকাই। এরা বোধ হয় আমার উপস্থিতি ভুলেই গেছে। দাঁতে দাঁত পিষে সবটা গিললাম। শিলা আপু হুট করে কেন এলো সেটা এখনো ধোঁয়াশা।

চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here