What a হাসবেন্ড পর্ব -২৪

#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-২৪
হৃদয় রান্নাঘর থেকে এসে কিছুক্ষণ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলো। এরপর আবার ফিরে গেলো। মুন পা টিপে টিপে চো’রের মতো হৃদয়ের পেছনে গেলো। ফুলের ঝাড়ু হাতে নিয়ে হৃদয় এদিকেই আসছিলো মুনকে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ‘ আল্লাহ গো ‘ বলে চিৎকার দিয়ে দূরে সরে দাঁড়ালো।
হৃদয়কে এভাবে চিৎকার করতে দেখে মুনও ভয় পেলো। ও-ও চিৎকার দিলো। জিজ্ঞেস করলো,
-‘ কী হয়েছে? চিল্লাচ্ছেন কেন? ‘
-‘ তুমি ভূতের মতো দাঁড়িয়ে ছিলে কেন? ‘
-‘ ওভাবে এসে পড়লেন তাই দেখতে এলাম ‘
-‘ ঝাড়ি নিতে এসেছিলাম ‘
-‘ কেন? আমাকে মার’বেন? ‘
-‘ এইসব আজগুবি চিন্তা তোমার মাথায় আসে কী করে? আমি কেন মার’বো তোমাকে? ‘
-‘ বিশ্বাস নাই, মার’তেও পারেন৷ ‘
-‘ এইরকম কিছুই না বালু বালু লাগছিলো তাই এসেছি ঝাড়ু নিতে ‘
-‘ আপনি ঝাড়ু দিবেন? ‘
-‘ না তো। ঝাড়ু নিতে এসেছিলাম। তোমাকে পাঠাইনি ভয় পাবে তাই। এখন তুমি দিবে ‘
-‘ কারেন্ট নাই, অন্ধকার! এইসময়ে কীসব করতে বলছেন। ‘
হৃদয় মুনকে পাত্তা না দিয়ে রুমে এসে ঝাড়ু দিতে শুরু করলো। মুন অবাক হয়ে হৃদয়কে দেখছে। হৃদয়ের কাছে যেতেই হৃদয় মুনকে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘ দূরে যাও। ও-ইখানে গিয়ে এক লাফ দিয়ে খাটের উপর চলে যাও। পা উঠিয়ে বসবে। ‘
মুন হৃদয়ের কথা মতো লাফ দিয়ে খাটের উপর চলে গেলো। গোল হয়ে বসে সে হৃদয়কে দেখছে। হৃদয় ঝাড়ু রেখে সোফায় বসে জানালার দিকে তাকালো। হৃদয় কে জানালার দিকে তাকাতে দেখে মুনও তাকালো। হৃদয়ের উপর সে খুব বিরক্ত হচ্ছে। ছেলেটাকি ওকে দেখে না? নাকি দেখেও না দেখার ভান করছে।

-‘ আমার দিকে তাকাচ্ছেন না কেন?’
-‘ তোমাকে অনেক দেখেছি ‘
-‘ জানালা দেখেন নি? ‘
-‘ না, এভাবে দেখে নি ‘
-‘ ওও অন্য দৃষ্টি ‘
-‘ হুম ‘
-‘ আমার দিকেও অন্য দৃষ্টিতে তাকানো উচিৎ ( হৃদয় আগের ন্যায় জানালার দিকে চেয়ে আছে।) না মানে একটু ওই জানালার মতো অন্য আরকি।’

হৃদয় হঠাৎ হাসলো৷ হৃদয় কে হাসতে দেখে মুনও হাসলো।
-‘ চলুন আমরা গল্প করি।’
-‘ কী গল্প? ‘ (জানালার দিকে তাকিয়ে)
-‘ এই আমাদের গল্প! মাত্র তো শুরু হলো। ভবিষ্যৎ কিছু প্ল্যানিং!! ‘
-‘ উহুম, গল্পটা অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। এখন শুধু একটু…. ‘
-‘ একটু? ‘
-‘ কিছু না ‘
-‘ বলেন ‘
-‘ না। ‘
-‘ আপনি খুব আনরোমান্টিক। কারেন্ট নাই, মোমবাতি জ্বলছে কই একটু রোমান্স টোমান্স করবেন তা না জানালার দিকে তাকিয়ে আছেন। ‘

হৃদয় মুনের কাছে এসে বসলো। মুন অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে আছে। হৃদয় আলতো করে ঠোঁটজোড়া মুনের কপালে ছুঁয়ে দিয়ে বলল,’ আমার রোমান্টিকতা কে চ্যালেঞ্জ করো না, বুঝলে! ‘
-‘ করবো এবং করছি ‘
-‘ তাই?’
-‘ হুম ‘
হৃদয় মুনের আরও কাছে আসতে যাবে তখনই কোথা থেকে যেন হৃদি দৌড়ে আসলো। দুজনই দূরে সরে গেলো।
-‘ আম্মুকে ফোন করেছিলাম একটু আগে ‘
-‘ কী বলল? ‘
-‘ ছোট খালামনির বাড়িতে গিয়েছে ওনারা। শপিংমলে দেখা হয়েছিলো এরপর দুইবোন কতক্ষণ কান্নাকাটি করেছে, এরপর খালামনি জোর করে বাসায় নিয়ে গেছে। ‘
-‘ কখন আসবে ওখান থেকে?’
-‘ জানি না। এতদিন পর দেখা হয়েছে সহজে আসতে দিবে না। ‘
মুন আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে হৃদির দিকে। বলল,’ তারমানে? আজ আসবে না ওনারা? আমরা একা কী করে থাকবো? ‘
হৃদি যেতে যেত বলল, ‘ না আসার সম্ভাবনা বেশি ‘
হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ এই কারেন্ট কখন আসবে? ‘
-‘ জানি না। ‘

________________

মোমবাতিটা নিভিয়ে মুন শুয়ে পড়লো। হৃদয় থম মে’রে কিছুক্ষণ বসে থেকে জানালা বন্ধ করে শুয়ে পড়লো।
-‘ আজ এতো তারাতাড়ি ঘুমাবে?’
-‘ হুম ‘
-‘ খাবে না কিছু? ‘
-‘ না, ভালো লাগছে না ‘
হৃদয় ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে বলল, ‘ শোনো মেয়ে আমাকে এতো আনরোমান্টিক বলে খো’টা দিও না। সময় মতো সব হবে ‘
মুন লাফ দিয়ে উঠে বসলো। বলল, ‘ তাহলে আমরা আবারও বিয়ে করছি? ‘
-‘ মাথায় কী সারাদিন বিয়ের চিন্তাই ঘুরে? ‘
-‘ না, ওই রোমান্টিক হওয়ার কথা বললেন তাই বললাম। ‘
-‘ আমার সাথে আসো৷ আমরা না খেলেও হৃদিকে খাওয়াতে হবে। নাহলে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। ‘

মুন মন খারাপ করে হৃদয়ের পিছু পিছু রান্নাঘরে চলল। চুপচাপ তারকারি গরম করছে, থালাবাসন ধুচ্ছে আর ভাবছে। বাসররাত টা আরেকবার হলে ভালো হতো। বিয়ে দু’বার হলো অথচ বাসররাত একবার! হৃদয় কে বললে ও কী রাজি হবে?
ভাবতে ভাবতে হৃদয়ের দিকে তাকালো। হৃদয় লাইট ধরে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।
-‘ এই যে শুনুন ‘
-‘ হুম’
-‘ এখানে দাঁড়ান একটু, তরকারি পুড়ে যায় কিনা খেয়াল রাখুন। ‘
হৃদয় চুলার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মুন থালাবাসন ধোওয়ার ফাঁকে ফাঁকে হৃদয়ের দিকে তাকাচ্ছে। সবকাজ শেষ করে ভাত-তরকারি ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে হৃদিকে ডাকলো। হৃদির রুমের দরজা বন্ধ রেখেই আসছি বলল। মুন এখনো হৃদয়ের দিকে তাকাচ্ছে একটু পর পর। হৃদয় প্লেটে ভাত-তরকারি নিয়ে খেতে খেতে বলল, ‘ এভাবে তাকিও না, আমার পেট খারাপ হবে। একসাথে যখন ঘুমাবো তখন সারারাত জেগে থেকে আমায় দেখো। আমি কিছু মনে করবো না। ‘
মুন হৃদয়ের কথা শুনে লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে তাকালো। হৃদি আসতেই ও খেতে শুরু করলো।

__________________

হৃদয় আলো নিভাতেই পুরো রুম ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে গেলো। মুম চেঁচিয়ে বলল, ‘ বন্ধ করলেন কেন?’
-‘ ঘুমাবে না? ‘
-‘ অন্ধকারে কী করে ঘুমাই? ‘
-‘ চোখ বন্ধ করে ‘

মুন চুপ করে রইলো। বুঝতে পারলো হৃদয় ইচ্ছে করে এমনটা করেছে। ও আসতে আসতে হৃদয়ের কাছে গেলো। হৃদয় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওর একহাত জড়িয়ে ধরলো। কেউই কোনো কথা বলছে না। হৃদয় বলল, ‘ আরেকটু কাছে এসে ঘুমাও নাহলে শয়’তান আমাদের মাঝে এসে পড়বে ‘
মুন হেসে বলল, ‘ আপনি আপনার বউকে জড়িয়ে ধরে ঘুমান নাহলে জ্বী’নের মেয়ে সিঙ্গেল ছেলে ভেবে নিয়ে যাবে ‘

অনেকক্ষণ পর হৃদয় মুনকে জড়িয়ে ধরলো। মুনের কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,, ‘ তোমাকে একটু নিজের করে পেতে পারি কী? ‘
.
.
চলবে????

( ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ১২০০+ শব্দ লিখেছিলাম কপি করতে যাবো তখনই ডিলিট হয়ে গেলো। এরপর এখন আবার লিখতে বসলাম ৯০০+ লিখেছি। অনেক দেরি হয়ে গেলো৷ আই এম সরি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here