অতিরিক্ত চাওয়া পর্ব ৪০

অতিরিক্ত চাওয়া { ২ }
৪০|

–” ডিজগাস্টিং। এমন জঘন্য সিচুয়েশন, ”
জয়া অসহায় গলায় থামালেন ছেলেকে,
–” তৃষ? ”
তৃষ্ণা রেগে তাকাল,
–” আশ্চর্য। তুমি আমায় বলো, তোমার বোন, বোনের মেয়ে এতো স্পর্ধা পায় কোথার থেকে? সিরিয়াসলি আই মিন, হাও? ”
জয়া কেঁদে ফেলল,
–” এই ছোট বিষয় নিয়ে, ”
–” ছোট বিষয়? তোমার বোনের মেয়ে আমার ক্লিপ্স ভাইরাল করেছে। বেলীর কাছে আমার ইমেজ নষ্ট করতে চাচ্ছিল। বেলীকে নিচু দেখিয়েছে অ্যান্ড ফোর দ্যাট রিজন ও পরিবর্তন হয়ে, আমার স্ট্যান্ডার্ডে যেতে চাচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড মিলানোর জন্য পরিবর্তন হতে চাচ্ছে। মা, এটাকে তুমি ছোট বিষয় বলছ? ”
জয়া আবারও বললেন,
–” শান্ত হ আব্বা। আচ্ছা, আমি কথা বলব। ”
–” কি বলবে? হ্যাঁ, ওকে। আমি দাঁড়াচ্ছি। আমি দেখতে চাই তুমি এটা কিভাবে হ্যান্ডেল করবে। ”
সোলাইমান তৃষ্ণাকে টেনে সরাতে চাচ্ছে,
–” শোন। ঠান্ডা হ। পরে কথা হবে। ”
–” উঁহু। পরে না। আমি দেখব। ”
ড্রয়িং রুমের কেউই তৃষ্ণাকে সরাতে পারছে না। জয়া কাঁচুমাচু করছে। সে কি বলবে বড় বোনকে? সারাজীবন চোখ উঠিয়ে যেই বোনের সাথে কথা বলেনি। তাকে কি বা বলবে? তৃষ্ণার মাসী অনেকক্ষণ যাবত চুপ ছিলেন। এবার মুখ খুললেন,
–” এই তোর কথা বলার ধরন। ”
তৃষ্ণা এগিয়ে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। তার মায়ের চোখে পানি এখনও চিকচিক করছে। তৃষ্ণা রাগে দাঁত কামড়ে তার মাসীর সামনে দাঁড়ালো,
–” শেষ বারের মতো বলছি। আমার বিষয়ে কখনও বাম হাত বাড়াবেন না। আই মিন ইট। আদারওয়াইজ , আমি ছেড়ে দিব না। ”
তৃষ্ণা যেতেই জয়া সোফায় বসে পড়লেন। তৃষ্ণার মাসীও বড়বড় পা ফেলে চলে যাচ্ছেন৷ আবিদ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো। পরক্ষণেই তৃষ্ণার পিছু দৌঁড় লাগালো।

হাওলাদার বাড়ি পৌঁছাল শুধু বিমান-অভি আর আয়ুশ। বেলী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। কিন্তু, তৃষ্ণাকে দেখতে না পেয়ে তার মন নেতিয়ে গেলো। সে আসেনি? তাহলে বাবাকে কেন বললেন আসবে? দেখা গেলো আনন্দ নিজেই জিজ্ঞেস করছে,
–” তৃষ্ণা আসবে না? ”
আয়ুশ জবাব দিলো,
–” বাড়িতে একটু সমস্যা হয়েছে। মিটে গেলেই চলে আসবে। ”
বিমানকে পেয়ে জয়ার চোখ ভিজে। সে মেয়েকে ধরে বসে আছেন। বিমানেরও কান্নার শেষ নেই। সে এই বাবাকে ধরছে তো মা’কে। দুজনকে ধরেই কাঁদছে। সমানে কাঁদার ফলে বিমানের হেঁচকির সীমানা নেই। অভি অসহায় চোখে বিমানের কাঁদা দেখছে। বেলী শরবত নিয়ে অভি আর আয়ুশের সামনে হাজির। তাদের শরবত দিয়েও বেলী ট্রে নিয়ে দাঁড়িয়ে। আয়ুশ দুষ্টু হেসে প্রশ্ন করলো,
–” কিছু কি বলবে বেলী? ”
বেলী ইনিয়েবিনিয়ে বলল,
–” কি হয়েছে? ”
–” কি হবে? ”
–” মানে, বললেন বাড়িতে সমস্যা। ”
–” বুঝবে না। ”
অভি গম্ভীর কণ্ঠে জবাব দিলো,
–” ওইযে ভাইর সাথে তার মাসীর লেগেছে। ওটা প্রায়ই হয়। এবার গুরুতর। চিন্তা করিয় না সাথে আবিদ আছে। ঠান্ডা হলেই চলে আসবে। ”
বেলী আর প্রশ্ন করলো না। সোজা নিজের রুমে চলে এলো। তৃষ্ণাকে কয়েকবার কল করলো। ধরছে না। রিং হয়ে চলেছে। বেলী কিছুক্ষণ থেমে আবারও ট্রায় করলো। এবার ধরেছে,
–” হ্যাঁ? ”
–” কোথায় আপনি? ”
–” আমাকে দিয়ে কি? সাথে ঘুমোবি? ”
বেলী থম মেরে গেলো। পরক্ষণেই বলল,
–” ত্যাড়া লোক। ”
–” ——। ”
–” বলুন না। ”
— ” রাস্তায়। ”
–” রাস্তায়? রাস্তায় কি করছেন? ”
–” শুয়ে আছি। আসবি? ”
–” ছিঃ। আপনার কি হয়েছে? ”
তৃষ্ণার জবাব নেই। তাই বেলী আবার কুয়েশ্চন করলো,
–” দুপুর হয়ে আসছে। আসবেন না? ”
–” এসে? ”
–” মা রান্না করেছে আপনাদের জন্য। ”
–” আসবো না। ”
–” আসুন না। আপনি বাড়ি যাবেন না আমি জানি। ”
–” আসবো না। ”
–” এভাবে কথা বলছেন কেন? ”
–” কিভাবে বলব? বেবি? মাই ডারলিং? ”
–” কথা-ই বলতে হবেনা। ”
বেলী কল কাটতে নিয়েও কাটলো না। ওপাশ থেকে তৃষ্ণা বলছে,
–” কাটছিস না কেন? আমার শ্বাস নেওয়া শুনবি? নাকি কিভাবে সিগারেট ফুঁকছি সেটার কন্ঠ শুনবি?”
বেলী থমথমে গলায় বলল,
–” আর আসবেন না। পাষাণ, অসভ্য লোক। ”
বেলী কল কেটে দিল। তারপর ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে রইলো। সে তৃষ্ণা হতে কল পাবার আশায় বসে৷ অথচ, তৃষ্ণা কল ব্যাক করলো না। উল্টো একটা ম্যাসেজ দিয়েছে,
–” Ok then, I’ll not come.”
বেলীর মন চাইলো তৃষ্ণার মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলতে। রাগে-দুঃখে বেলী ফোন বিছানায় রেখে চলে যাচ্ছিলো। তারপর কিছুক্ষণ ভেবে আবারও ফোন হাতে কল লাগালো। তৃষ্ণা সময় নিয়ে রিসিভ করলো। বেলী কিছু বলার আগেই তৃষ্ণার আওয়াজ,
–” আসছি। ”
বেলীর ঠোঁটের হাসি বড় হতেই যাচ্ছিলো কিন্তু পরক্ষণেই তৃষ্ণার পরের লাইন শুনে হাসি স্তব্ধ হয়ে রইলো।
–” জামাইকে রাতে কিভাবে এন্টারটেইন করতে হয় জেনে নে। আজ তোর দরকার পড়বে। ”
বেলী ফোন হাতে বিছানায় বসে রইলো থম হয়ে। তার পুরো শরীর শিরশির করে কাঁপছে। হঠাৎ বালিশ জড়িয়ে বেলী বিড়বিড় করে বলল,
–” অসভ্য লোক। ”

দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। বেলী কয়েকবার মেয়েকে বললেন,
–” খাচ্ছিস না কেন এখনও? তিনটা বেজে যাচ্ছে। ”
বেলী কোনমতে জবাব দিলো,
–” পরে খাব মা। ”
খুশি রাগারাগি শুরু করলো।
–” খাবি কি? আমার কলিজা ভুনা করে দিব? ”
–” উফফ মা। ”
খুশি যেতে নিয়েও আবার এসে প্রশ্ন করলো,
–” হ্যাঁ রে, তৃষ্ণা আসবে? ”
বেলীর লজ্জা লাগতে লাগলো। সে ছোট গলায় বলল,
— ” জানি না। ”
খুশি যেতেই বেলী মুখ ঢেকে ফেলল। সবাই এখন তাকে কেন জিজ্ঞেস করে তৃষ্ণার কথা? কই আগেতো কেউ জিজ্ঞেস করতো না। কিছু একটা ভেবে বেলী আবারও লজ্জা পেতে লাগলো। তার বুক কাঁপছে। কেমন অদ্ভুত ভয়ও হচ্ছে।

আনন্দ মেয়ে জামাইকে নিয়ে মাঠে বেরিয়েছে। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিজেদের যায়গা দেখাচ্ছে। আশেপাশের মুরব্বিদের সাথে পরিচয় করাচ্ছে। দেখা গেলো অভি একদম শান্ত হয়ে আছে। আজ তাকে চেনাই যাচ্ছে না। অবশ্য আনন্দ নিজেও জানতেন না, যে এই ছেলে এতো ভদ্র৷ অভি যাকে দেখছে সালাম জানাচ্ছেন। হালকা হেসে কথাও বলছেন। আবার চা ও খাচ্ছে তাদের সাথে তাল মিলিয়ে। বেলী দূর থেকে ডাকল। অভি চোখ পিটপিট করে আবার সালাম জানিয়ে, মুখ ঘুরিয়েই বড় করে শ্বাস ফেলল। এতো কষ্ট মনে হয় সে বিমানকে পটানোর সময়ও করে নি। বেলীকে বড় করে ধন্যবাদ জানালো। বেলী দুষ্টুমি স্বরে বলল,
–” এখনই হাঁপিয়ে? আপনাদের জন্য চাচারা আসছে। এইতো চলে আসবে কিছুক্ষনের মাঝেই। ”
–” শিট। আমি আর ভদ্র হওয়ার অভিনয়ে সক্ষম হব না। ”
–” তাদের সামনেই বেশি ভদ্র সাজতে হবে। ”
–” ধুর। বিয়ে হয়েছে। রানী আমার এখন। কে কি ভাবলো তা দিয়ে কি? ”
বেলী কিটকিটিয়ে হাসছে। এর মধ্যে অভি আনন্দ, খুশিকে জানাল,
— ” ভাই আসছে। আবিদের রাত হবে। ”
খুশি জবাব দিলো,
–” আচ্ছা। আমি দ্রুত খাবার গরম করি তাহলে। ”
বলতে বলতে খুশি খাবার গরম করার উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছে। আনন্দ মাথা নাড়িয়ে ঘরে ঢুকছে। শুধু বেলীই দাঁড়িয়ে রইলো। আজকে তাকে বহুত জ্বালাবে এই লোক। বেলী তা এখনই টের পাচ্ছে।

তৃষ্ণা আসলো বিকেল পাঁচটার দিক। আনন্দ গাড়ির আওয়াজ পেয়েই চলল। সাথে অভিও গিয়েছে। তৃষ্ণা কিছু পার্সেল এনেছে সাথে। আনন্দ নিতে নিতে বলল,
— ” এতো কিছু আনার কি প্রয়োজন ছিলো? ”
বাবলু পাশের বাড়ি থেকে দৌঁড়ে হাজির। সে এসেই,
–” দুলাভাই গাড়িতে ঘুরাবে? ”
–” হ্যাঁ। একটু পরেই যাব সবাই। ”
–” আচ্ছা। ”
তৃষ্ণা আনন্দের হাতের একটা পার্সেলকে ইঙ্গিত করে বলল,
–” ওটা তোমার। ”
বাবলু তো সেই খুশি। সত্যি বলতে বলতে প্যাকেট কেঁড়ে নিলো। তারপর খুলে দেখলো রিমোট কন্ট্রোল কার। বাবলু খুশিতে চিৎকার করছে। বারবার বলছে,
— ” বাবা কি সুন্দর দেখছ? কি সুন্দর। ”
সে সেখানেই কিছুক্ষণ গাড়ি হাতে তৃষ্ণাকে জড়িয়ে ধরে।
বেলী নিজের ঘরে বসে। বাহির থেকে আওয়াজ শুনেও বেরোচ্ছে না। ভয়ে তার বুক রীতিমত কাঁপছে। ভাবছে আজ তৃষ্ণার সামনেই যাওয়া যাবেনা।

তৃষ্ণা ঘরে ঢুকতেই খুশি শরবত দিল ঠান্ডা। ফ্যান চলছে তাও তৃষ্ণা ঘেমে শেষ। তার টি-শার্ট ভিজে চিপচিপে। খুশি বলল,
–” বাবা, টেবিল ফ্যান’টা সেট করে দিব?। ”
–” না না। আমি ঠিকাছি। ”
–” তাহলে গোসল করে নাও? ভালো লাগবে। ”
তৃষ্ণা মাথা দুলালো। তার সত্যিই একটা গোসল নেওয়া প্রয়োজন। আজ সকালে জ্যিম করেও সে গোসল নিতে পারেনি। তার আগেই বাড়ি থেকে বেরোলো। আপাতত একটা গোসল সত্যিই প্রয়োজন। বেলীর অপেক্ষায় সে চেয়ারে বসে রইলো। আনন্দ কষ্ট করে কিছু কথা বলছে তৃষ্ণার সাথে। এই ছেলের সাথে সে কি কথা বলবে? একসময় তার স্টুডেন্ট ছিলো। তার শিক্ষক জীবনে, সবচেয়ে জ্বালাতন করা স্টুডেন্ট। এবং আজ সে তার মেয়ে জামাই। আনন্দ কষ্ট করেও বেশি কথা আগাতে পারলো না। অথচ তৃষ্ণা নিজেই টুকটাক কথা বলছে আবার জবাবও দিচ্ছে শান্ত ভাবে। অভি নিজের থেকে একটি হাফ প্যান্ট এবং হাতা কাটা গেঞ্জি এনে, বেলীর হাতে দিল। এবং বলল,
–” ভাইর প্রচন্ড গরম। তাই আমি তার জন্য কাপড় নিয়ে এসেছি। সে গোসল করবে। যাও। ”
বেলী শক্ত গলায় বলল,
–” নিয়ে যান। বাড়ির পেছনেই তো গোসল ঘর। ”
অভি দুষ্টু হাসলো,
–” এই তুমি ভাইকে চেনো? দৌঁড় দাও। ”
হাসতে হাসতে অভি চলে যাচ্ছে। বেলী অসহায় ভাবে কাপড় হাতে দাঁড়িয়ে। এরমধ্যে খুশি হাজির,
–” বেলী, গোসল করবে তৃষ্ণা। যা নিয়ে যা। ”
তারপর হাতের নতুন তাওয়াল এগিয়ে দিল,
–” এইনে তাওয়াল। এইটা নতুন তোর আব্বু আজ আনছে।
শোন কল চাইপ্পা দিছ। ও তো পারব না। আর হো, গোসলের পর, কর্নারের রুমে নিয়া যাইস। ওখানে তোর আব্বু টেবিল ফ্যান সেট করে দিসে দুইটা। ”
–” আমাকে যেতে হবে কেন? ”
খুশি চোখ রাঙালো,
–” বড় হচ্ছিস আর মাথার মধ্যে গোবর ঢুকাচ্ছিস। যা। ”
যেতে যেতে খুশি মেয়ের মাথায় ওড়না টেনে দিলেন।
অগ্যত বেলী মাথায় ওড়না নিয়ে গেলো। দেখা যাচ্ছে তৃষ্ণা চেয়ারে বসে। তার নজর আপাতত বেলীর দিক। বেলী কিছুটা দুরত্ব রাখল,
–” চলুন। ”
তৃষ্ণা উঠে দাঁড়ালো। এবং ভদ্রলোকের মতো বেলীর পেছন চলল। বেলী হঠাৎ ‘ আহ ‘ করে চেঁচালো। তৃষ্ণা তার কোমরে চিমটি কেটেছে। বেলী রেগে পেছনে তাকাল। অবশ্য চিমটি টা তীব্র ছিলো না। অনুভভের মতো ছিলো। তাও সে রাগ দেখিয়ে দ্রুত হেঁটে যাচ্ছে।

বেলীদের গোসল ঘর খুবই ছোট। একটি কল এবং একজন মানুষ দাঁড়ানোর মতো যায়গা। তৃষ্ণা দাঁড়িয়ে রইলো। বেলী কাপড় গুলো রশিতে রেখে দিলো। ওড়না মাথা থেকে সরিয়ে বুক এবং কোমর মিলিয়ে বাঁধলো। তারপর যেই কলে চাপ দিবে, তৃষ্ণা বলল,
— ” থাক। তোর চাপতে হবেনা। আমি চাপছি। দাঁড়া। ”
মনে হলো তৃষ্ণার কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে৷ শ্বাস আঁটকে আসছে।
সে আবারও বলল,
–” ওড়না অন্যভাবে নে। ”
বেলী লজ্জায় শেষ। সেও দ্রুত ওড়না ভালো ভাবে মেলে নিল। তারপর বলল,
–” আমি যাই তাহলে? ”
–” না দাঁড়িয়ে থাক। ”
বালতি ভোরে তৃষ্ণা কাপড় খুলছে। বেলী মনে হলো আরও শক্ত হয়ে যাচ্ছে। টি-শার্ট খুলে প্যান্ট খুলতে গেলে, বেলী দৌঁড়ে বেরোতে নিচ্ছিলো। তৃষ্ণা দ্রুত হাত টেনে ধরে,
–” ভদ্র আছি স্টিল। থাকতে দে। ”
বেলীর আর সাহস হলো না যাওয়ার। তৃষ্ণা নিচে বসে বেলীকে ইঙ্গিত করে পানি ঢালতে। বেলী কিছুক্ষণ ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর ধীরে এগিয়ে গেলো। মগের সাহায্যে ধীরে ধীরে মাথার পানি ঢালতে লাগলো। তৃষ্ণার চোখ জোড়া বুঝে। বেলী সেই সুযোগে পানি ঢালছে আর তৃষ্ণার মুখের দিক দেখছে। তার চুলগুলো পানিতে চোখ ঢেকে দিচ্ছে। বেলী ভুলেও তৃষ্ণার শরীরের দিক তাকাচ্ছে না। এক পর্যায়ে ধ্যান তৃষ্ণার দিকেই রয়ে গেলো। হঠাৎ আচমকা টানে সে তৃষ্ণার কোলে পড়লো। বেলী কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলো। পরক্ষণেই চেঁচিয়ে দ্রুত উঠে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে রইলো। তার পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে। তৃষ্ণা শব্দ করে হাসছে। হাসার কারণে তার বুক কাঁপছে। বেলীর মনে হলো তৃষ্ণার এমন হাসি সে প্রথম দেখতে পেলো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here