#অন্তর্লীন_প্রণয়
সাদিয়া মেহরুজ দোলা
পর্ব-২৪
‘ ৪১,৪২, ৪৩…, এই মেয়ে এই! থামলে কেনো?কানে ধরো কুইক। ‘
অহর্নিশের হটাৎ ধমকে উঠাতে আয়ন্তিকা চমকে যায়। অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে সে। নিজেকে ধাতস্থ করে নম্র কন্ঠে বলল,
‘ আমি আর এমন করবো না। প্রমির করছি! প্লিজ আজকের মতো মাফ করে দিন। আমার পা ব্যাথা করছে খুব। ‘
আয়ন্তিকার নম্র কন্ঠ, অসহায় চাহনি, ক্রন্দনরত চোখ যেনে এবার অহর্নিশকে গলাতে পারলো না। সে নিজের কথায় অটল! চোখের ইশারায় সে আয়ন্তিকা কে আবার কান ধরে উঠবস করতে বলল। হাতের স্কেলটাকে ইশারায় ছুঁড়ে মারার ইঙ্গিত দিলো। আয়ন্তিকা তৎক্ষনাৎ কানে ধরে উঠবস করা শুরু করে। মনে মনে নিজেকেই সে শ’খানেক গালি দেয়। ইশশ! কেনো যে মরতে সে মায়ের রুমে ঘুমোতে গেলো? কেনো যে আজ সারাটা দিন অহর্নিশ কে ইগনোর করলো। এসব না করলে হয়ত এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না কখনোই।
আয়ন্তিকার অবস্থা দেখে অহর্নিশ ওষ্ঠাধর প্রসারিত করে! মনে মনে আয়ন্তির অবস্থা দেখে সে বিরাট খুশি বলা চলে। আর দশটা প্রেমিকের মতো প্রেমিকাকে শাস্তি দেয়ার প্রতি মায়া জন্মায় নি তার। বরং শান্তি লাগছে! এই ত্যাড়া মেয়ের শাস্তি পাওয়া উচিত। করুন শাস্তি! অহর্নিশ কে ইগনোর করা।
৫০ বার কান ধরে উঠবস করা হলে আয়ন্তিকা ফ্লোরে বসে পড়ে। হাঁটুতে মুখ গুঁজে লম্বা লম্বা শ্বাস টেনে নিয়ে কোনোরকম উঠে দাঁড়িয়ে সে দৃষ্টিপাত স্থাপন করে অহর্নিশের দিকে। ক্লান্ত কন্ঠে বলল,
‘ হয়েছে! আমি এখন ঘুমাই?মাথা, পা ব্যাথা করছে খুব। ‘
অহর্নিশের ইচ্ছে হলো আরো কিছু শান্তি দিবে সে আয়ন্তিকা কে। কিন্তু আয়ন্তিকার বর্তমান নাজুক অবস্থা দেখে তার কঠিন মন গলে পানি হয়ে যায়। বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সে এগিয়ে আসে আয়ন্তিকার দিকে। কোলে তুলে নিয়ে বিছানাতে শুইয়ে দিয়ে কোমল কন্ঠে বলল,
‘ ঘুনাও এখন! নেক্সট আমাকে ইগনোর করার সাহস দেখালে পা ভেঙে দিবো একদম। বুঝেছো?’
আয়ন্তিকা ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে ‘ হ্যা ‘ বলল!
তার কথা বলার মতো শক্তি নেই। পা দুটোর অবস্থা বেহাল। রাত জাগলে তার মাথা ব্যাথা হয় তীব্র। সব মিলিয়ে অতি কষ্টে একাকার অবস্থা তার। অহর্নিশ এর মতো স্বামী পাওয়ার দুঃখে তার এখন হাত- পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। ঘুমে মগ্ন হতে নিলেই আয়ন্তিকা অনুভব করে তার পায়ে কারো হাত। মাথাতেও এক হাত! আলত করে চেপে দিচ্ছে পা, মাথা। ব্যাথা নির্মূলের জন্য মূলত এমন করা হয়, আয়ন্তিকা চট করে চোখ খুলে! অহর্নিশ তার সামনে বসে পা চেপে দিচ্ছিলো আদুরে স্পর্শ নিয়ে। আকাশ -সম চমকানো অনুভূতি নিয়ে ঘুম উজার করে দিয়ে আয়ন্তিকা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল! পরিশেষে চুপ থাকাটা আর হলোনা। লাফিয়ে উঠে বসে সে পা গুটিয়ে নিয়ে বলল,
‘ এই কি করছেন? পায়ে হাত দিচ্ছেন কেনো? ‘
অহর্নিশ এবার বেশ খানিক বিরক্তি নিয়ে বলল,
‘ স্পষ্টত দেখতে পারছো পায়ে হাত দিচ্ছি কেনো, তবুও এমন বোকার মতো ইউজলেস কথা বলার মানে হয়?’
আয়ন্তিকা গুটিয়ে নেয়া পা যুগল টেনে এনে আলত স্পর্শে ব্যাথা নির্মূল করার প্রয়াস চালায় অহর্নিশ। আয়ন্তিকা অস্বস্তি নিয়ে বলল,
‘ পায়ে হাত দিবেন না প্লিজ। আম্মা বলেছে স্বামীরা পায়ে হাত দিলে অমঙ্গল হয়! ‘
‘ আমার সাথে থেকে এমন অযৌক্তিক চিন্তাধারা নিয়ে ঘুরো তুমি? লাইক সিরিয়াসলি? নেক্সট যদি এসব শুনি তোমার মুখ থেকে। পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙ্গে ফেলবো। ‘
আয়ন্তিকা কেঁপে উঠে পা গুটিয়ে নিতে নিলেই অহর্নিশ ফের কর্কশ কন্ঠে বলল,
‘ আমার কাজে যদি আরেকবার বাঁধা প্রদান করো আয়ন্তিকা, ট্রাস্ট মি! তুলে এক আছাড় মারবো তোমাকে। ঘুমাও! ‘
আয়ন্তিকা শুয়ে পড়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে। অহর্নিশের ভরসা নেই। যেই লোক তার বউকে সামান্য এক ভুলের জন্য কানে ধরে উঠবস করাতে পারে, সে যে তুলে আছাড় মারবে না এটা বিশ্বাস করা কষ্টসাধ্য!
_______________________________
ভোরের দিকে ঘুম ভেঙে যায় আয়ন্তির! বরাবরের মতোই সে নিজেকে আবিষ্কার করলো অহর্নিশের উষ্ণ আলিঙ্গনের মধ্যে। অহর্নিশ ঘুমে কাবু! ঠোঁট উল্টে ঠিক বাচ্চাদের মতো করে ঘুমোচ্ছে। আয়ন্তি স্নান হাসে! আস্তেধীরে নিজেকে অহর্নিশের আলিঙ্গন হতে মুক্ত করে নিয়ে উঠে পড়ে। আজ রোজকার রুটিন এড়িয়ে সে নিজের ওষ্ঠাধর স্পর্শ করায় অহর্নিশের ললাটে! পরবর্তীতে নিজের কৃতকর্মে লজ্জায় লাল নীল হয়ে দৌড়ে রুম হতে বেড়িয়ে পড়ে।
ফ্রেশ হয়ে পরিপাটি হয়ে আয়ন্তিকা বেড়িয়ে পড়ে আম্মাকে রান্নার কাজে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে। জমিদার বাড়িতে যদিও বাড়ির বউরা কখনো রান্না করেনা। তবুও আয়ন্তিকার মা সকালের নাস্তা নিজ হাতেই করেন। কিচেনে আসতেই আয়ন্তি খেয়াল করে তার মা এবং ছোট বোন রান্নার কাজে তুমুল ব্যাস্ত। সে এগিয়ে যায় সেদিকে। আয়না মেয়েকে দেখামাত্রই হেঁসে জিজ্ঞেস করলো,
‘ ঘুম ভেঙেছে?’
‘ জি আম্মা! ‘
‘ তোর মুখ ওমন ফ্যাকাশে দেখাইতেছে ক্যানো?’
আয়ন্তিকা ইতস্তত বোধ করে বলল,
‘ পা ব্যাথা করতেসে আম্মা।’
আয়না ললাটে চামড়ায় ভাজ ফেলে চিন্তিত আভাস প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ব্যাস্ত হয়ে বললেন,
‘ সেকি! পায়ে ব্যাথা ক্যান?তোরা কি হেঁটে আসছস? গাড়িও তো দেখলাম না। গাড়ি কই?’
‘ হেঁটে আসতে যাবো ক্যান আম্মা? বাসে আসছিলাম। গাড়ি নষ্ট! উনি গাড়ি আর ঠিক করতে চান না। নতুন গাড়ি কিনবেন। কিন্তু অতো টাকা সঙ্গে ছিলো না। নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ করে ফেলসে! ব্যাংক একাউন্টে তার কিছু ঝামেলা ছিলো তাই টাকাও তুলতে পারেনি সেই সময়। পরে এখানে এসে বিকাশ দিয়ে টাকা তুলছে। ব্যাংকের সমস্যা মিটমাট হয়েছিলো। উনি চেক লিখে দিয়ে আসছিলেন তার এক বন্ধুর কাছে। তারপর তার বন্ধু টাকা তুলে বিকাশে পাঠাইছে। ‘
আয়না এবার ধাতস্থ হয়ে স্বাভাবিক সুরে বলল,
‘ অহ! তা অহর্নিশ উঠছে ঘুম থেকে?ওর জন্য কফি বানাইছি নিয়া যা। ‘
‘ উঠেনি আম্মা। পরে নিবোনে রাখো। তোমাদের সাথে একটু কথা বলে যাই। ‘
আয়ন্তিকা আয়না এবং তার ছোটবোন তারার সাথে কথা বলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। তবে ক্ষন বাদে রুম থেকে অহর্নিশের ডাক পড়ে কফি নিয়ে যাওয়ার জন্য। অত্যান্ত বিরক্তি নিয়ে আয়ন্তিকা হাতে কফির মগ তুলে নেয়। ইচ্ছে করছিলো না তার যাওয়ার। একবার ভাবলো তারাকে দিয়ে পাঠিয়ে দিবে কিন্তু পরে যদি আবার এর কারণে নতুন কোনো শাস্তি দিয়ে বসে অহর্নিশ? তখন?
শুষ্ক ঢোক গিলে গলা সিক্ত করার প্রয়াস চালিয়ে আয়ন্তিকা সিঁড়ি ধরে ওপরে উঠে আসে। রুমে ঢোকার পরপরই তার সামনে ভেসে ওঠে অহর্নিশের ঢুলুঢুলু অবস্থা। দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে বারংবার ঘুমে নুইয়ে পড়ছে সে।
আয়ন্তিকার রাগ হয় প্রবল! ঘুমোচ্ছে যখন ঘুমাক না, তাকে ডাকার দরকার কি?হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে রাগের বসে আয়ন্তি বেড সাইড টেবিল রাখা জগ হতে পানি ঢেলে নেয় গ্লাসে। পুরোপুরি এক গ্লাস পানি ঢেলে নিয়ে সে ছুঁড়ে মারে অহর্নিশের মুখ বরাবর! হকচকিয়ে সটান হয়ে বসে অহর্নিশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় আয়ন্তিকা দিকে। আয়ন্তিকা স্বাভাবিক প্রায়। অহর্নিশ তেতে উঠে বলল,
‘ হোয়াট’স রং উইথ ইউ? কি করলে এটা ডাফার?’
আয়ন্তিকা নাক ফুলিয়ে উচ্চস্বরে বলল,
‘ আপনি যেহেতু ঘুমাচ্ছেনই তাহলে আমায় কফি নিয়ে আসতে বললেন কেনো? একটু শান্তিতে থাকতে দেয়া যায়না?’
অহর্নিশ আয়ন্তিকার হাত ধরে হেঁচকা টান মেরে তার সন্নিকটে নিয়ে আসে। একহাত আবদ্ধ করে আয়ন্তিকার পিঠে। অন্যহাত দিয়ে আয়ন্তির তুলতুলে গাল চেপে ধরে চিবিয়ে বলল,
‘ আমার যা ইচ্ছা তাই করবো। দরকার পড়লে তোমায় সবার সামনে ঠোঁটে চুমু খাবো। কোলে নিয়ে দশ গ্রাম ঘুরবো। যা মন চায় তাই-ই করবো! কার বাপের কি?তোমার সমস্যা এতে?তাহলে তো কাল রাতের করা কাজটা রিপিট করা উচিত রাইট?’
আয়ন্তিকা চুপসে যায়। অহর্নিশ খানিকটা জোরেই তার গাল চেপে ধরেছে। গাল দাঁতের সাথে লেগে গিয়ে ব্যাথাটা যেনো দ্বিগুণে রূপান্তর করছে। আয়ন্তিকা চেষ্টা করে অহর্নিশের দানবীয় হাত নিজ গাল হতে সরাতে। তীব্র ব্যাথায় আঁখিপল্লবে পানি এসে জমা হয়েছে তার। অহর্নিশ হটাৎ থেমে গিয়ে আয়ন্তিকার চোখের দিকে দৃষ্টি দেয়। চোখের কার্নিশে পানি দেখে সে চটজলদি আয়ন্তিকার গাল ছেড়ে দূরে সরে বসে।
আয়ন্তিকা ছাড়া পেয়ে লম্বা শ্বাস টানে। ব্যাথাতুর গালে হাত বুলিয়ে সে কাতর কন্ঠে বলল,
‘ এতো জোরে কেও ধরে? ব্যাথা পেয়েছি আমি! আপনি যদি আমায় কানধরে উঠবস করাতে পারেন তাহলে আমিও আপনাকে মুখে পানি ছুঁড়ে মারার অধিকার রাখি, হুহ্! ‘
অহর্নিশ মনে মনে ফিচেল হাসে! এইতো আয়ন্তিকা একটু একটু করে নিজের অধিকার বুঝে নিচ্ছে। এতদিন সে ভয়ে চুপসে থাকতো। অহর্নিশ কে দেখলেই কেমন গুটিয়ে নিতো নিজেকে যা অহর্নিশের নিকট একটুও ভালো লাগত না। নিজেকে কেমন অপরাধী মনে হতো। পরিশেষে অহর্নিশ ফের কাছে টেনে নেয় আয়ন্তিকা কে। ললাটে নিজের ওষ্ঠাধরের স্পর্শ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
‘ যার যার অধিকার তার তার আদায় করে নিতে হয়! এটাই মিন করলে তুমি। তাই নিজের অধিকার নিজে বুঝে নিলাম জান!এখন থেকে প্রতেক সকালে তোমাকে আমায় চুমু খেতে হবে। আজ আমি খেয়েছি কাল হতে তুমি। মনে থাকবে তো?হু?আর না থাকলেও সমস্যা নেই। আমি আছিনা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য? ‘
কথা শেষে রুম হতে বেড়িয়ে যায় অহর্নিশ। আয়ন্তিকা সেদিকে বোকা বোকা চোখে তাকিয়ে আছে। বাই এনি চান্স, এবারও সে নিজের পায়ে কুড়াল মারলো না তো?
প্রশ্নটা মনে আওড়ালে কেমন কান্নায় দম আঁটকে আসে তার। আচ্ছা! সে এতো বোকা কেনো?অহর্নিশের ফাঁদে পা দিলো কিভাবে?কি চালাক এই মানুষ!
________________________
পড়ন্ত বিকেলে আয়ন্তিকা তাদের দীঘির পাড়ে পা ডুবিয়ে বসেছিলো। মন তার অজানা কারণে ভীষণ তিক্ত রূপ ধারণ করে আছে। একটু আগেই সে তারাকে ঠাটিয়ে এক চড় মেরে এসেছে অযথাই! তারা কাঁদেনি। অন্য সময় হলে কেঁদে ভাসাতো। কিন্তু বোনকে এতদিন পর কাছে পেয়ে তার হাতের দাবাং চড়ও যেনো মিষ্টি লাগছে। তারা চড় খেয়ে হেঁসেছিলো শুধু। তা দেখে আয়ন্তিকা রেগে চলে এসেছে দীঘিপাড়ে!
সময় অতিবাহিত হতেই তার পাশে ধপাশ করে এসে বসে অহর্নিশ। আয়ন্তিকা ডানে তাকায়! কালো শার্ট একদম এঁটে সেঁটে আছে অহর্নিশের শরীরের সাথে। ললাট হতে এখনো বিন্দু বিন্দু ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। অহর্নিশ পকেট হতে টিস্যু বের করে ঘাম মুছে নেয়। অতঃপর আয়ন্তিকার মুখশ্রীর প্রতি পূর্ণদৃষ্টি দিয়ে সে বলল,
‘ কি ব্যাপার? এখানে বসে আছো যে, ‘
আয়ন্তিকা দীঘিতে দৃষ্টি দেয়। পরিস্কার পানিতে তার আর অহর্নিশের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছে। নজরকাড়ার মতো! আয়ন্তিকা এবার ঠোঁট যুগল প্রসারিত করে বলল,
‘ আমার কিছু ভালো লাগছে না। ‘
‘ কেনো?’
‘ জানিনা। ‘
আয়ন্তিকার বিষন্ন কন্ঠ। অহর্নিশের বুকে কেমন ছ্যাত করে উঠলো! এই মেয়ের অকারণে মন খারাপ কেনো? সে নিজেকে ধাতস্থ করে গমগম সুরে বলল,
‘ অহ বুঝেছি কেনো তোমার মন খারাপ!’
আয়ন্তিকা কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করলো,
‘ কেনো?’
‘ কারণ আমি আজ তোমায় জাষ্ট একটা চুমু খেয়েছি। এরজন্য তোমার মন খারাপ! নটি গার্ল!বললেই তো পারো। আমি এখনি তোমাকে চুমু খাচ্ছি। বলো কোন গালে আগে দিবো?’
আয়ন্তিকা রাগে, দুঃখে অহর্নিশের হাত ধরে টেনে সজোরে এক কামড় বসিয়ে দেয়। অহর্নিশ তার পরিপ্রেক্ষিত শুধু হাসে, শব্দ করে! তা দেখে আয়ন্তি রেগে যায় দ্বিগুণ। রাগে গজগজ করে বলে,
‘ ফাজিল লোক! সারাক্ষণ উল্টাপাল্টা চিন্তা নিয়ে ঘোরে। সারাক্ষণ কি এসব চুমু, টুমু এসব নিয়েই ভাবেন। ছিঃ! ছিঃ! ভাবা যায়, এই লোক কিনা আবার এমপি হয়েছে। ‘
আয়ন্তিকার কথার পরিপ্রেক্ষিতে অহর্নিশ ফের শব্দ করে হাসে। আজব তো! আজ এতো অযথা কারণে তার হাসি পাচ্ছে কেনো?
সে আয়ন্তিকার কোমর ধরে টেনে নিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। আয়ন্তিকা ছটফট করলে অহর্নিশ নম্র কন্ঠে বলল,
‘ হুঁশশ! নড়াচড়া করোনা। সূর্য অস্ত যাওয়ার মূর্হতটা ফিল করো। ‘
চুপ হয়ে যায় আয়ন্তিকা। দৃষ্টি সামনে! পশ্চিম দিকে, কমলাটে সূর্য ধীরে ধীরে পৃথিবী হতে বিদায় নিচ্ছে। ইশশশ! কি মোহনীয় দৃশ্য!
চলবে…
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
[