আজও ভালোবাসি তোমায়❤ পর্ব -০৪

#আজও_ভালোবাসি_তোমায়❤
#Writer_মাহিয়া_মিতু
#Part_4
🍁
🍁
এভাবে আরো বেশ কিছু দিন কেটে যায়। এ কয়দিনে ফারহানের সাথে মিতুর কোনো যোগাযোগ হয় নি।সেদিনের পর থেকে ফারহান ও মিতুকে দেখলে এড়িয়ে চলে। মিতু এতে খুব কষ্ট পাই, কিন্তু কিছুই করার নয়, কারণ মিতু নিজই দায়ী এসবকিছুর জন্য, এটাই ওর মনে হয়।
তাই ওরা দুজন দুজনকে পাগলের মতো ভালোবেসে ও একে অন্যের কাছ থেকে অনেক দূরে শুধুমাত্র নিজেদের ইগোর কারণে।
সেদিনের পর থেকে মিতু যেন হাসতেই ভুলে গেছে। মিতুর অবস্থা দেখে দিনা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে যে মিতু ও ফারহান কে ভালোবেসে ফেলেছে, কিন্তু টিনার ওই কথা গুলোর জন্য মিতু ওর থেকে দূরে সরে এসেছে।
দিনা আর মিতুর এই কষ্ট সহ্য করতে পারছে না, তাই ও মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় যে ওকেই কিছু করতে হবে ওদের দুজন কে এক করার জন্য। তার জন্য ও একটা পরিকল্পনা করে।
আর পরদিন সকালে ও মিতুর আগেই ভার্সিটি চলে আসে, ওর কোনো বিশেষ কাজ আছে এটা মিতুকে বলে ও তাড়াতাড়ি চলে আসে, কারণ মিতুর সাথে থাকলে ও ওর কাজটা করতে পারবে না।
ও ভার্সিটি পৌঁছেই ফারহানকে খুজতে শুরু করে, আরো পেয়েও যায়, কারণ আজকে ফারহান ও তাড়াতাড়ি ভার্সিটি এসছিলো একটা জরুরি প্রয়োজনে।
দিনা ফারহানের সামনে যেয়ে দাঁড়ালে ফারহান ওকে দেখে খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে
—— আরে দিনা তুমি এখানে, কিছু বলবে
—– হ্যা, ভাইয়া, আপনার সাথে আমার খুব জরুরি কথা আছে।
—— আমার সাথে!! তা তোমার বান্ধবি যদি জানতে পারে যে তুমি আমার সাথে কথা বলেছো, তাহলে সেজন্য আবার তোমার সাথে জামেলা করবে না তো😏
—– করতে পারে, এজন্যই তো আমি ওর আগে চলে এসেছি।
—— ওকে, বলো। কি বলবে।
—— এখানে নয় ভাইয়া। মিতু এসে দেখে ফেললে ও আমাকে মেরেই ফেলবে, প্লিজ আপনি আমার সাথে চলুন, অন্য কোথাও।
——🙄🙄🙄🙄🙄
—— ভাইয়া, প্লিজ।
—— ওকে, চলো।
তারপর ওরা একটা কপিশপে গিয়ে বসে।
—— এবার বলো, কি বলবে।
—— ভাইয়া আসলে সেদিন মিতু আপনাকে যে কথাগুলো বলছে এগুলো ওর মনের কথা নয়, ও বাধ্য হয়ে আপনাকে একথা গুলো বলেছে।
—— মানে!!! কি বলতে চায়ছো তুমি।
—— ঠিকই বলছি, ভাইয়া। ও আপনাকে কথাগুলো বলাতে যতোটা না আপনি কষ্ট পেয়েছেন তার থেকেও বেশি কষ্ট ও পেয়েছে। কারণ ওহো আপনাকে ভালোবাসে।
—— হুহহহহ, আই আম সরি টু সে, বাট আমি তোমার কথা বিশ্বাস করতে পারছি না। ও যদি আমাকে ভালোই বাসতো তাহলে সবার সামনে আমাকে ওইভাবে বলতে পারতো না।
—– অনেক সময় চোখের সামনে যেটা ঘটে সেটা সত্যি হয় না, ভাইয়া। ঠিক তেমনি মিতুও সেদিন আপনাকে যেগুলো বলেছে সেগুলো সত্যি নয়।
—— মানে!!!
—— আপনি টিনাকে নিশ্চয়ই চেনেন, আমাদের ইয়ারে পড়ে।
—— হ্যা চিনি, ও আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। আমাকে ও প্রোপজ ও করেছিলো একবার।
—— হুম, মিতু সেদিন যা কিছু বলছে সব ওই টিনার কথা শুনে বলতে বাধ্য হয়েছে।
——- মানে, কি বলছো তুমি, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, প্লিজ ক্লিয়ার করে বলো।
—— হুম, বলছি। শুনুন তাহলে….
তারপর দিনা ফারহানকে সেদিন টিনা মিতুকে যা যা বলছিলো সবটা বলে দেয়।
সবশুনে ফারহান তো রেগে ভোম হয়ে গেছে, ওর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে, চোখ দুটো দেখে মনে হচ্ছে এখুনি আগুন ঝরতে শুরু করবে।
—— কি!!!!!!! এতো বড় সাহস ওই টিনার। ওর জন্য ই এতকিছু হয়ে গেছে। ওকে তো আমি ছাড়বো না।
—— হ্যা, ভাইয়া। আর এজন্যই মিতু সেদিন আপনাকে এইকথা গুলো বলতে বাধ্য হয়েছিলো। এবার আপনিই বলুন মিতু ভুল ছিলো না ঠিক ছিল। একটা মেয়েকে যদি এভাবে কেউ তার চরিত্র নিয়ে এসব বাজে কথা বলে তাহলে তার আর এটা ছাড়া আর কিইবা করার থাকে বলুন।
—— হুম, আর কিছু বলতে হবে না আমাকে। এবার আমার কি করতে হবে আমি খুব ভালো করেই জানি। ডোন্ট ওয়ারি, এবার আমি সবকিছু ঠিক করে দেব।
তুমি শুধু দেখতে থাকো যে এবার কি কি হয়😡
বলে ফারহান ওখান থেকে চলে আসলো আর দিনা ও ভার্সিটি ফিরে যায়।
ফারহান রাগে আগুন হয়ে কলেজের ভিতরে ঢুকে, ঢুকেই ওর মিতুর সাথে দেখা হয়।
ও মিতুকে কিছু না বলে আর ওকে ও কোনোকিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সোজা ওর হাত ধরে টেনে সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করে।
মিতু ফারহানের এমন কাজে চরম অবাক হয়, ফারহান যে হঠাৎ করে এমন একটা কান্ড করে বসবে ও ভাবতে পারে নি।
ওর যখন হুস হলো যে ফারহান ওর হাত ধরে টেনে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, তখন ও নিজেকে ফারহানের থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো, কিন্তু ফারহানের ওর দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকানো দেখে ও একদম ভয়ে চুপসে গেল, আর তাই কোনো কথা না বলে চুপচাপ ফারহানের সাথে যেতে লাগলো।
ফারহান মিতুকে নিয়ে সোজা টিনার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। টিনা ওদের দুজনকে একসাথে দেখে ভিষণ অবাক হয়, সাথে রাগ ও হয়, কিন্তু মুহূর্তেই ওর রাগ ভয়ে পরিণত হয় ফারহানের চোখের দিকে তাকিয়ে।
কারণ ফারহান অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। তারপর ও কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফারহান ওর গালে ঠাসসসস করে একটা চড় মেরে দেয়। চড় টা এত জোরে মেরেছিলো যে টিনা ছিটকে নিচে পড়ে যায়।
এরই মধ্যে দিনা ও চলে এসেছে, আর টিনাকে চড় মারতে দেখে ওর তো খুশিতে নাগিন ডান্স দিতে ইচ্ছা করছে☺।
মিতু সহ ওখানে উপস্থিত সকলে খুব অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ফারহানের দিকে।
ওর বন্ধু রা ও টিনা কে মারতে দেখে তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে ওকে জিজ্ঞেস করে
—— ফারহান কি করছিস তুই, পাগল হয়ে গেলি নাকি! ওকে মারছিস কেন😮
——- আরে ও তো এটারই যোগ্য 😡, জানিস কি করেছে ও।
——- ক ক কি করেছি আমি, যে আপনি আমাকে মারলেন।
——- কি করেছো বুঝতে পারছো না, তাই না।
—— না তো, কি বুঝবো আ আমি।
——- মিতুকে কি বলেছো তুমি 😠
একথা শুনে টিনা খুব ঘাবড়ে যায়, তারমানে কি মিতু সব বলে দিয়েছে ওকে, সর্বনাশ, এবার কি হবে।
—— আ আমি ওকে কেন কিছু বলতে যাবো, আমি কিছু বলিনি, ওই আপনাকে আমার নামে বানিয়ে বানিয়ে কি বলেছে দেখুন আমাকে ফাসানোর জন্য।
——- মিতু আমাকে কিছু ই বলে নি। আমি নিজে সবটা জেনেছি, এখন ভালোই ভালোই সব সিকার কর নাহলে তোমাকে কিন্তু আমি
——- না না! আমাকে আর মারবেন না, আমি বলছি।
——- হুম বলো।
——- আমিই সেদিন মিতু কে অনেক বাজে কথা বলেছিলাম এজন্য ও সেদিন আপনার সাথে ওরকম ব্যবহার করেছিলো।
—— আজকে সবার সামনে তুমি ওর কাছে ক্ষমা চাইবে, নাহলে
——- ন না, আ আমি ওর কাছে ক্ষমা চাইবো।
বলে মিতুর সামনে যায়।
——- মিতু আমার ভুল হয়ে গেছে, প্লিজ তুমি আমাকে মাপ করে দাও 😥
বলে ওর পা ধরতে যায়।
—— আরে আরে কও করছো ওঠো বলছি।
——- আগে বলো তুমি আমাকে মাফ করেছো।
—— হুম, করেছি, তুমি যাও।
——- ঠিক আছে, তাহলে আমি আসি🙂
——- হুম।
তারপর টিনা আর ওর বন্ধু রা ওখান থেকে চলে আসে আর এদিকে ফারহান মিতুর সামনে যেয়ে ওকে ঠাসসসসসস😇
.
.
.
চলবে……….
….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here