আমারে দিলোনা ভুলিতে পর্ব ১০

#আমারে_দিলোনা_ভুলিতে।

#পর্ব_১০।

#লেখা_আরজুমান_তাশা।

“দরজা খুলতে দরজার সামনে নিবেদিতাকে দেখে চন্দ্রা বেশ খুশি হলো। নিবেদিতা শীতল হাসলো৷ ঘরে প্রবেশ করে নিবেদিতা বলে,
” তোর ট্রিপ কেমন ছিলো?

দুজনে সোফার দুইপাশে বসে। চন্দ্রা ফুরফুরে মেজাজে বলে,
“গ্রেট। তোর খবর বল৷ আসার পর থেকে তো তোর কোন খবর নাই৷

নিবেদিতা স্মিথ হাসলো। হেসে বলে,

“আমার প্রফেশন সম্পর্কে জানিস।তারপরও এমন বোকা প্রশ্ন করিস।

চন্দ্রা হাসলো। হাসতে হাসতে বলে,
” জানি। তারপরেও জিজ্ঞাসা করি।কারণ তুই আমার আত্মার আত্মা।

চন্দ্রার কথায় নিবেদিতা জোরে শ্বাস টেনে ক্লান্ত গলায় বলে,
“খাওয়ার জন্য কিছু আছে?
‘হুম আছে। অপেক্ষা কর একটু৷ ”
চন্দ্রা ধীর গলায় জবাব দিয়ে চলে গেলে নিবেদিতা তার দেহ সোফায় এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে রাখে৷ তার শরীরের আরাম দরকার। অনেক ধকল বয়ে গিয়েছে তার শরীরের উপর দিয়ে। এখন তার বিশ্রামের দরকার। খুব প্রয়োজন একটু বিশ্রামের।

“হিমশীতল বাতাস বইছে। শীত পেরিয়ে বসন্তের আগমন ঘটেছে৷তারপরও রাতে শীতের উষ্ণতা অনুভব হয়৷ উল্লাস ব্রিজের উপর পা ঝুলিয়ে বসে জ্যাকেটে হাত ঢুকিয়ে রেখে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে৷ আকাশে আজ গুটিকয়েক তারার দেখা মিলেছে৷ তাদের মাঝেও নিস্তব্ধতা ভর করেছে। কারোর সাথে কারোর কোন সন্ধ্যি নেই৷ সবাই যেন নিজ নিজ জায়গা থেকে ঠিক আছে৷ উল্লাস একমনে দিনদুনিয়া ভুলে তারার মাঝে নিজেকে নিবদ্ধ করে রাখে। তারার মত সেও নিজের মাঝে নিঃসঙ্গতা উপলব্ধি করতে পারছে। বুকের মাঝে কালো মেঘে ঘুরঘুর করছে। সে কালো মেঘ দূর’ই হচ্ছেনা৷ নিঃশব্দে এসে উশান, উল্লাসের পাশে বসে একটা ড্রিংকসয়ের বোতল এগিয়ে দিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,
” এটা ধর।
উশানের কথায় উল্লাসের চিন্তার অবসান ঘটে৷ঈষৎ হেসে ড্রিংকস নিয়ে তাতে নিঃশব্দে চুমুক বসায় উল্লাস। উশান উল্লাসকে আপাদমস্তক দেখে নিয়ে উল্লাসের অবস্থান বুঝার চেষ্টা করছে আর ড্রিংকস’য়ে চুমুক বসাচ্ছে। কিছুটা সময় নিরবতায় পাড় করে উশান বলে,
“এবার নিবেদিতা আসলে বলে দেওয়া উচিত তোর মনের কথা। এভাবে আর কতদিন আড়াল করে রাখবি?
উল্লাস চুপচাপ ড্রিংকস করতে থাকে উশানের কথার জবাব না দিয়ে। উশান, উল্লাসের মুখের দিকে তাকাতে উল্লাসের হাতের উপর নজর পরে৷ উশান চমকে গিয়ে প্রশ্ন করে,
” হাতে কি হয়েছে?
“কেটে গিয়েছে।
উল্লাসের নির্লিপ্ত কথা শুনে উশান পুরোপুরি হতাশ। দীর্ঘশ্বাস ফেলে শক্তপোক্ত গলায় বলে,
” তুই আসলে কি চাস বলতো? তুই কি করতে চাস! তোর হাবভাব কিছুই আমি বুঝতেছিনা৷ তুই এসেছিস এখানে নিবেদিতার জন্য কিন্তু তোর আচরণে দেখে লাগছেনা তুই নিবেদিতার জন্য এখানে আসিসনি!”

উশানের কথায় উল্লাস নির্বাক চোখে উশানের দিকে চায়৷ ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলে,
” তোকে বলেছি আমি নিবেদিতা’র জন্য এখানে এসেছি৷ কিন্তু এটা বলেনি আমি নিবেদিতাকে নিজের জীবনে ফিরে পাওয়ার জন্য এসেছি।

উল্লাসের কথায় উশান চরম অবাক হয়। উল্লাসের কথায় উশান অনেক বেশি আশ্চর্য হয়েছে তা উশানের মুখ জুড়ে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। অবাক গলায় বলে,
“মানেহ!
” কিছুনা। ”
উল্লাস নির্লিপ্ত গলায় আস্তে করে কথাটা বলে ড্রিংকস’য়ে চুমুক বসায় শেষ বারের মতো৷উশান অবাক চাহনিতে উল্লাসের দিকে তাকিয়ে থাকে। উল্লাসের কিছু তার মাথায় ঢুকছেনা৷ উল্লাসের ভিতরে কি চলছে তা উশানের বোধগম্যের বাইরে৷ ”

“রাত প্রায় বারোটা বাজতে চলেছে। নিবেদিতা সোফায় হাত-পা গুজে এখনো ঘুমিয়ে আছে। চন্দ্রা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে নিবেদিতা খুব আলতো গলায় ডাকতে থাকে। মাথায় হাত বুলিয়ে নরম গলায় বলে,
” নিবি!

নিবেদিতা তখন স্বপ্নে বিঘোর৷ নিবেদিতা বুঝতে পারছেনা তার সঠিক স্থান কোথায়। সে কি বাস্তবে আছে নাকি কোন কল্পনার জগতে ঢুকে পরেছে৷ তার কানে গোঙ্গানির অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে। শব্দ গুলো শরীরে কাঁটা দেওয়ার মত৷ কিন্তু নিবেদিতা বুঝতে পারছেনা শব্দ গুলো কোন দিক থেকে আসছে। হঠাৎ লাইট জ্বলে উঠে। লাইটটা ঠিক নিবেদিতার মাথার উপর৷ আলো পেয়ে নিবেদিতা চারপাশ থাকালো৷হঠাৎ করে তার চারপাশ দৃশ্যমান হলো কয়েকটা লোহার তৈরি খাঁচা। খাঁচাতে মানুষ বন্ধি৷তাদের দেহ রক্তাক্ত। হাত মুখ বাঁধা। গলায় দড়ি লাগানো। সবাই চোখেমুখে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু এদের কাউকে নিবেদিতা চিনতে পারছেনা৷ সবাই নিবেদিতার দিকে আকুতি ভরা চোখে চেয়ে আছে৷ এসব দেখে নিবেদিতার আত্মা কেঁপে উঠে। নিবেদিতা কি করবে বুঝতে পারছেনা। হাত পা অবশ হয়ে আসছে৷ তার আশপাশটা ঘুরছে চরকির মত। নিবেদিতা সহ্য করতে না পেরে দুইহাত দিয়ে কান চেপে ধরে বসে পরে। মুহূর্তে সব কিছু স্তব্ধ হয়ে যায়৷ কোন শোরগোল, কাঁন্নার আওয়াজ আর নিবেদিতার কানে আসছে না৷নিবেদিতার কানে স্পষ্ট একটা কণ্ঠ ভেসে আসে। কেউ খুব ব্যথাতুর গলায় নিবেদিতাকে ডাকছে। নিবেদিতা ধীরে ধীরে কান থেকে হাত সরিয়ে চোখ খুলে মাথা তুলে সামনে তাকায়৷ নিবেদিতা সামনে তাকাতে ভয়ে পিছনের দিকে চলে যায়৷ ভয়ের ছুটে মুখ দিয়ে শব্দ বের হলে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে ছলছল চোখে সামনে তাকায়। রক্তাক্ত, নিথর হয়ে তার সামনে উল্লাসের দেহ পড়ে আছে৷ উল্লাস হামাগুড়ি দিয়ে নিবেদিতার কাছে আসার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। উল্লাস নিবেদিতার দিকে হাত বারিয়ে রাখে৷ নিবেদিতা ভয়ার্ত কাঁপা কাঁপা হাত উল্লাসের দিকে এগিয়ে দেয়৷ উল্লাসের হাত ধরতে যাবে তার আগে গুলির বিকট শব্দ নিবেদিতার কানে আসতে নিবেদিতা ভয়ে মুখে হাত রাখে। সামনে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে দেখে উল্লাস নিথর হয়ে পরে আছে৷ নৃশংস ভাবে কেউ উল্লাসকে আঘাতে আঘাতে নিস্তেজ করে ফেলেছে। নিবেদিতা নিঃশ্বাস আটকে উল্লাসের কাছে যায়৷ কাঁপা হাত দিয়ে উল্লাসকে ছুঁয়ে দেখে। নিবেদিতার গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছেনা কোন। নিবেদিতা কাঁপা হাতে উল্লাসকে হাল্কা ঝাকি দেয়। কিন্তু উল্লাস নড়ে না। নিবেদিতা ফুপাচ্ছে৷ কষ্টটা বের হতে চাচ্ছে। খুব কষ্টে ক্ষীণ স্বরে উল্লাসকে ঝাকি মেরে বলে,
“উ-ল-ল-আ-স!

উল্লাস নড়েনা৷ এবার দুইহাত দিয়ে ঝাকি দিয়ে বিকট চিৎকার দিয়ে বলে,
” উল্লাস!

“চন্দ্রা নিবেদিতার ঘাবড়ানো মুখ দেখে অনেক চিন্তিত হয়ে যায়। বারবার ডাকার পরেও নিবেদিতার রেস্পন্স করছে না দেখে চন্দ্রা তারাতাড়ি পানি এনে নিবেদিতার মুখে পানি ছিটাতে থাকে৷ পানির ছিঁটে দুইবার দেওয়ার পর নিবেদিতা উল্লাস বলে চিৎকার করে শক্ত করে চন্দ্রার হাত চেপে ধরে ধাম করে বসে পরে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে থাকে৷ চন্দ্রা চিন্তিত মুখ নিয়ে নিবেদিতার মুখের দিকে চেয়ে আছে৷আর নিবেদিতা চন্দ্রার হাত শক্ত করে চেপে ধরে চন্দ্রার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে৷কিছু সময় পাড় হওয়ার পর নিবেদিতার হুশ হতে তাড়াতাড়ি চন্দ্রার হাত ছেড়ে দিয়ে দুই হাত দিয়ে শক্ত করে মুখ চেপে ধরে রাখে৷চন্দ্রা নিবেদিতার স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে৷ মুখে আসা চুল নিবেদিতা দুইহাত দিয়ে পিছনে নিয়ে অস্থির গলায় বলে,
” স্যরি৷
চন্দ্রা নিঃশব্দে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয় নিবেদিতার দিকে। নিবেদিতা তাও চুপচাপ পানির গ্লাস নিয়ে একনিঃশ্বাসে সব শেষ করে ফেলে৷ এরপর জোরে নিঃশ্বাস ফেলে অস্থির গলায় বলে,
“কয়টা বাজে?
চন্দ্রা স্বাভাবিক গলায় জবাব দেয়,
“১২:০০টা।

চন্দ্রার কথায় নিবেদিতা দুর্বল গলায় বলে,
” ওহ। তাহলে তো অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।আমার যাওয়া উচিত৷

নিবেদিতা চলে যেতে পা বাড়াতে চন্দ্রা হাত ধরে নিবেদিতাকে আটকে শান্ত গলায় বলে,
“তুই আজ এখানে থেকে যা। বাসায় যাওয়া লাগবেনা৷

নিবেদিতার কাছে সব এলোমেলো লাগছে৷ভিতরের অস্থিরতা কমছেনা৷ চন্দ্রা নিবেদিতার অবস্থা লক্ষ্য করে৷ নিবেদিতার হাত-পা কাঁপছে। আচরণও স্বাভাবিক করছেনা৷ চন্দ্রার কথা নিবেদিতার কর্ণ অবধি পৌছাচ্ছেনা। নিবেদিতার মনে হচ্ছে ভূমিকম্প হচ্ছে৷ভূমিকম্পের ধাক্কায় নিবেদিতা নিজেকে সামলাতে পারছেনা। সবকিছু ঘোলাটে দেখছে সে৷ সামনে এককদম এগিয়ে আর এগোতে পারলোনা নিবেদিতা৷ ধপাস করে ফ্লোরে পরে যায়।নিবেদিতাকে পরে যেতে দেখে চন্দ্রা নিবেদিতা বলে আর্তনাদ করে উঠে৷”

“হস্পিটালের বেডে নিথর হিসেবে শুয়ে আছে নিবেদিতা৷ হাতে ক্যানোল লাগানো৷ স্যালাইন চলছে।কিছু মুহূর্তের মধ্যে নিবেদিতা চেহারাটা নেঁতিয়ে গিয়েছে৷ চন্দ্রা অসহায় চোখে নিবেদিতাকে একবার দেখে নিয়ে বের হয়ে আসে৷ বের হয়ে দেখে কেবিনের বাইরে চেয়ারে উল্লাস শক্ত পাথরের মূর্তির মতন মাথা নত করে ফ্লোরে দৃষ্টিপাত করে বসে আছে।উশান একটু দূরে চিন্তিত মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ চন্দ্রাকে বের হতে দেখে উশান এগিয়ে গিয়ে চিন্তিত গলায় প্রশ্ন করে,
” এখন কেমন আছে?
চন্দ্রা ভারাক্রান্ত গলায় বলে,
“এখন ঠিক আছে।

উশানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে চন্দ্রা উল্লাসের দিকে তাকায়। একনজর তাকিয়ে উল্লাসের কাছাকাছি এসে দাঁড়ায়। স্বাভাবিক গলায় বলে,
” চিন্তা করবেন না ও ঠিক আছে৷ এখন ঘুমাচ্ছে ঘুম থেকে উঠলে ঠিক হয়ে যাবে৷ ”

প্রান হীন চোখে উল্লাস মাথা তুলে চন্দ্রার দিকে তাকায়। চন্দ্রা স্মিথ হাসলো৷ কিন্তু উল্লাস কোন রিয়েক্ট করলোনা।

নিবেদিতাকে অজ্ঞান হয়ে পরে যেতে দেখে একমুহূর্তের জন্য চন্দ্রার বুদ্ধি লোপ পেয়ে গিয়েছিলো। ওর কি করা উচিত ও ভুলেই গিয়েছে৷ হাতের কাছে মোবাইল পেয়ে কোন কিছু না ভেবে উশানকে কল লাগায়৷ ঘাবড়ানো গলায় বলে,
” উশান, নিবেদিতা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে৷
ওর শরীরের টেম্পারেচার অনেক বেড়ে গিয়েছে। প্লিজ জলদি আসো।

উল্লাস সেও উশানের সাথে ছিলো৷নিবেদিতা অসুস্থতার কথা শুনে পাগলের মতো ছুটে চলে আসে।

উশান হস্পিটালের নিচে আসে। কোন দোকান খোলা মিলে কিনা তা দেখার জন্য। রাত অলরেডি একটা বাজতে চলেছে৷ এই সময় দোকান খোলা পাওয়া মানে অনেক ভাগ্যের ব্যাপার৷ উল্লাস চন্দ্রার কেবিনে বসে আছে৷ উল্লাসকে চিন্তিত, অন্যমনস্ক দেখে চন্দ্রা গলা খাকড়ি দিয়ে উল্লাসকে বলে,
“একটা প্রশ্ন করতে পারি?

চন্দ্রার কথায় উল্লাসের হুশ হয়৷ দুশ্চিন্তায় মুখের বেহাল অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ চন্দ্রার মুহূর্তে মায়া হল উল্লাসের জন্য৷ উল্লাস ক্লান্ত গলায় বলে,
“বল?
“নিবেদিতার সাথে কি অস্বাভাবিক কিছু হয়েছে আজ?

উল্লাস চিন্তা করে ভেবে দেখে বলে,
” নাহ।
উল্লাসের জবাবে চন্দ্রা চুপ করে থাকে৷হঠাৎ উল্লাসের হাতে ব্যান্ডেজ দেখে বলে,
” আপনার হাতে আঘাত কি করে লেগেছে?

উল্লাস তার হাতের দিকে তাকায়৷ হাত নেড়ে ছেড়ে দেখে৷বেশ ভালোই আঘাত পেয়েছে৷হাতের তালুতে সম্ভব আঘাত লেগেছে৷ উল্লাস শান্ত স্বাভাবিক গলায় বলে,
“নিজের আত্মরক্ষা করতে গিয়ে।

উল্লাস কথাটা বলে একদৃষ্টিতে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে৷ আর চন্দ্রা উল্লাসের মুখের দিকে৷উল্লাসের মাথায় কিছু একটা বারি খায়৷ উল্লাস ঘাবড়ানো প্রশ্নাত্তর চোখে চন্দ্রার দিকে তাকায়৷ চন্দ্রা শান্ত গম্ভীর গলায় বলে,
” হ্যাঁ, আপনি যেটা ভাবছেন। সেটা ঠিক। আপনাকে আঘাত পেতে দেখে ও অস্বাভাবিক ভয় পেয়ে গিয়েছিলো৷ আর সে ভয়টা সে কাটিয়ে উঠতে পারেনি৷ ভয়টা ও’কে তাড় করছিলো। ভয়টা কাটাতে না পারার জন্য এখন তার এই অবস্থা৷”

উল্লাস চন্দ্রার কথা শুনে বোবা হয়ে যায়৷ মাথা কাজ করা ছেড়ে দিয়েছি। উল্লাস অনুভব করে তার বুকে প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছে। হাত দিয়ে বুক চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে৷ হঠাৎ করে এভাবে ব্যথার কারণ উল্লাস জানেনা। উল্লাসের অবস্থা দেখে চন্দ্রা বলে,
” নিবেদিতাকে উপর থেকে যেমন দেখছেন নিবেদিতা ভিতরে ভিতরে আর উল্টোপিঠ। বাইরে নিজেকে কঠিন দেখালেও ভিতরে সে অনেক সেনসেটিভ একজন পারসন। আপনি হয়তো আমার কথা বুঝতে পারছেন। আমি কি বলছি সেটা।

উল্লাস চুপ করে থাকে। চন্দ্রার কথায় কোন জবাব দিলোনা৷উল্লাসের চোখের সামনে নিবেদিতার ভয়ার্ত মুখ ভেসে উঠছে৷ উল্লাস ভাবছে নিবেদিতার জন্য এখনো উল্লাস অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। নিবেদিতা তাকে এখনো মনে রেখে দিয়েছে। উল্লাসের নিজের প্রতি নিজের খুব রাগ হচ্ছে৷ নিজে নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছে, নিবেদিতাকে বুঝতে না পারার জন্য৷ উল্লাস বুক চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখে৷ যন্ত্রণায় অন্তর আত্মা ফেটে যাচ্ছে উল্লাসের। নিবেদিতাকে কেন বুঝতে পারলোনা সে অপরাধবোধ উল্লাসকে শেষ করে দিচ্ছে। উল্লাস অস্ফুট স্বরে বলে উঠে,
” আ’ম স্যরি নিবেদিতা। অ্যাই রিয়েলি স্যরি। ”

(#চলবে…..)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here