আমার_শহরে_তুমি পর্ব ২+৩

গল্পের নামঃ#আমার শহরে তুমি
লেখনীতেঃ# Alisha Rahman Fiza
পর্বঃ২ + ৩
,,,,
,,,,
কিছুক্ষন পর কাজী সাহবে চলে আসলেন।তিনি বিয়ের কার্যক্রম শুরু করলেন প্রথমে রক্তিমকে কবুল বলতে বললেন সে কোনো সময় ব্যয় না করে কবুল বলে দেয়।তারপর আমাকে বলে কবুল বলতে রক্তিম আমার হাত শক্ত করে ধরে কানে ফিসফিস করে বলে,
~তাড়াতাড়ি কবুলটা বলে দেও আমার আর অপেক্ষা হচ্ছে না।তার কথা শুনে আমার রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে কঠিন চোখে তার দিকে তাকালেন
সে বাঁকা হেসে সামনের দিকে তাকালো আমি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তিনবার কবুল বলে দিলাম।রক্তিম আর আমার বিয়ে সম্পন্ন হলো বাবা-মা আমার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
~আমাদের মাফ করে দিস মা।আমি তাদের কিছু না বলে মলিন হেসে বললাম,
~তোমরা নিজেদের খেয়াল রেখো।ভাইদের সামনে গিয়ে তাদের জড়িয়ে ধরে বললাম,
~তোরা তোদের খেয়াল রাখিস আর জারিফ তুই আরিফের সাথে বেশি মজা করবিনা।জারিফ কেঁদে কেঁদে বললো,
~আপু তোমাকে মিস করবো।আরিফ বললো,
~আপু তুমি আমাদের সাথে দেখা করতে আসবে।আমি তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম তখনই রক্তিম বলে উঠলো,
~আমাদের লেট হচ্ছে আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে।আমি তার কথায় বললাম,
~বাসায় যাওয়ার এতো তাড়া কেন?রক্তিম বাঁকা হেসে বললো,
~বুঝোই তো নতুন বিয়ে বউকে পাশে পাওয়ার তড় সহ্য হচ্ছে না।এই মানুষটির সাথে পারা যায় এতো অসভ্য কথা সে এভাবে চিল্লিয়ে বলতে পারলো।আমি তার সাথে আর কোনো কথা না বলে পরিবারের সকলের থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির বাহিরে চলে আসলাম রক্তিম গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে।আমাকে দেখেই সে গাড়ির সামনের দরজা খুলে দিলো আমি চুপচাপ বসে পরলাম সে ড্রাইভিং সীটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো বাসাটাকে আরেকবার দেখে নিলাম। চোখের পানিগুলোকে সযত্নে চোখের ভিতরই রেখে দিলাম আজ আমি একফোঁটা চোখের পানি ফেলবো না।

,,,,,
,,,,
গাড়িতে আমাদের মাঝে কোনো কথা হয়নি আমি বাহিরের দৃশ্য দেখছি হঠাৎ রক্তিম আমার হাত ধরে বললো,
~জামাই রেখে বাহিরে কী দেখো?আমি নাক ফুলিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~আপনাকে দেখে কী করবো?আপনি যতোটা সুন্দর ততটাই আপনার মনটা অসুন্দর আর কিছু শুনতে চান আপনি?আমার কথায় সে হো হো করে হেসে বললো,
~একদম ঠিক বলেছো।এখন বলো কী খাবে?আমি জানি তুমি দুপুরে কিছু খাওনি।আমি বললাম,
~আপনি কীভাবে জানলেন?সে বললো,
~আমার lovely mother in law আমাকে বলেছে যে তার সুপুত্রী দুপুরে খায়নি হয়তো সে তার বরের হাতেই খাবার খাবে। বলেই চোখ টিপ মারলেন তার মুখের থেকে এসব বাণী শুনে মন চাচ্ছে তাকে গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেই।কিন্তু আমি এটি করতে পারবো না।একটুপর সে গাড়ি থামালো একটি রেস্টুরেন্টের সামনে আমারও অনেক ক্ষুধা লেগেছে। রক্তিম গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির গেইট খুলে বললো,
~বের হও খেয়ে দেয়ে তারপর তোমার শশুর বাসায় যাবো।my sweet wife আমি গাড়ি থেকে নেমে আমার কনুই দিয়ে তার পেটে গুতা মেরে বললাম,
~দেখেছেন আমি কতোটা sweet.সে মুচকি হেসে আমার কানে আছে এসে বললো,
~তোমার মতো শুটকি আমার কিছু করতে পারবেনা।বলেই আমার হাত ধরে রেস্টুরেন্টের ভিতরে নিয়ে গেলো।

,,,,,
,,,,,
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজের রক্তিমকে দেখেই বললেন,
~স্যার,আপনার টেবিল রেডি করা আছে। রক্তিম বললেন,
~Good.আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~চলো আমাদের টেবিলে।বলেই হাত ধরে টেবিলের সামনে নিয়ে গেলো তারপর আমার হাত ছেড়ে চেয়ার টেনে বললো,
~বসো।আমি শাড়ি ঠিক করে চেয়ারে বসে পরলাম সে মেনু কার্ড দেখে ওয়েটারকে ডাক দিলেন তারপর বললেন,
~তোমাদের madam বিরিয়ানি খেতে পছন্দ করে তাই দুই প্লেট বিরিয়ানি আর ফানটা নিয়ে এসো।ওয়েটার বললো,
~১০ মিনিটে খাবার এসে পরবে স্যার।বলেই চলে গেলো সে রক্তিম আমার দিকে তাকাতেই আমি তাকে বললাম,
~আপনি কীভাবে জানেন যে আমার বিরিয়ানি পছন্দ?সে মুচকি হেসে বললো,
~আমি যাকে মনে জায়গা দেই তার সব খবরও রাখি।তার কথায় অবাক হলাম কিন্তু তাকে বুঝতে না দিয়ে বললাম,
~আমায় কেন বিয়ে করলেন?যেখানে আপনার পরিবারের সকল লোক আমাকে ঘৃনা করে।রক্তিম মুচকি হেসে বললো,
~আগে পেট পূজা করো তারপর প্রশ্ন পূজা করো।তখনই ওয়েটার খাবার নিয়ে আসলো রক্তিম বিরিয়ানিতে লেবু চিপরিয়ে এক লোকমা আমার মুখের সামনে ধরে বললো,
~খেয়ে নাও।আমি বললাম,
~আমি নিজে হাতে খেতে পারি।রক্তিম বললো,
~আজকে আমার হাতে খাও আর যদি আমার হাতে না খাও তাহলে তোমাকে আমি এখানেই চুমো খাবো।কী বলো কী করবো আমার হাতে খাবে নাকি তার কথা শেষ করতে না দিয়েই তার হাতের খাবার মুখে নিয়ে নেই।

,,,,,
,,,,,
আমাদের খাওয়া শেষ হলে রক্তিম বিল পে করে।গাড়িরতে গিয়ে বসে পরলাম রক্তিম গাড়ি ড্রাইভ করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে তার হাসি দেখে আমি ভ্রুকুচকে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~কী সমস্যা এভাবে হাসছেন কেন?রক্তিম না জানার ভান করে উত্তর দেয়,
~কোথায় আমি হাসছি?তুমি চোখে বেশি দেখো। তার সাথে কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই তাই চুপ করে বসে রইলাম কিছুক্ষন রক্তিম একটা হোটেলের সামনে এসে গাড়ি থামায়।আমি তাকে বললাম,
~এখানে কেন?আমরা তো আপনার বাসায় যাবো তাই না?সে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,
~এতো তাড়া কীসের? আমাদের মাত্র নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে আমাদের একান্ত সময় প্রয়োজন তাই আজ রাতটা এখানে কাটাবো।আমি রাগের মাথায় চেচিয়ে বলে উঠি,
~মায়ের ভয়ে এখানে এসে লুকাচ্ছেন তাই তো?তাহলে বিয়ে কেন করছেন?নাটক করতে যত্তসব ন্যাকার দল।আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই সে আমার দুহাতের বাহু চেপে ধরে বললো,
~রক্তিন রায়জাদা কাউকে ভয় পায়না বুঝতে পেরেছো।তুমি এখন আমার বউ তাই আমি যদি তোমায় গাছের নিচেও রাখি তুমি থাকতে বাধ্য মিসেস রায়জাদা।তার চোখের দিকে তাকাতে আমার ভয় করছে তার চোখ লাল হয়ে আছে।আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,
~আমি ব্যাথা পাচ্ছি।আমার কথায় সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বড় করে নিশ্বাস ছেড়ে বললেন,
~অযথা কথা আমার পছন্দ না।তা তুমি জানো তাই চুপ করে থাকো ভালো হবে তোমার জন্য। বলেই গাড়ির দরজা খুলে বের হলো আমিও তার সাথে বের হলাম সে আগে আগে হাটঁছে আর আমি পিছে পিছে। হোটেলের ভিতরে প্রবেশ করতেই একজন সুন্দরী নারী আমাদের স্বাগত জানিয়ে বললেন,
~আমি আপনাদের কীভাবে সাহায্য করতে পারি?রক্তিম বললো,
~আমি রুম আগে থেকেই বুক করে রেখেছি মিস্টার এন্ড মিসেস রায়জাদার নামে।সেই নারী কম্পিউটারে চেক করে বললেন,
~স্যার আপনাদের বুকিং আছে এই যে রুমের চাবি।রক্তিম বললো,
~ধন্যবাদ। Madam এর জন্য কিছু শাড়ি অর্ডার করা হয়েছে সেগুলো আসলে আমাদের রুমে পাঠিয়ে দিবেন।সেই সুন্দরী নারী বললো,
~জ্বী স্যার। রক্তিম চাবি নিয়ে আমার হাত ধরে লিফটের ভিতর ঢুকে গেলো

,,,,
,,,,
লিফট এসে থামলো ৮তলায় আমি রুমের সামনে দাড়িয়ে আছি আর রক্তিম চাবি দিয়ে দরজা খুলে বললো,
~তুমি রুমে ওয়েট করো আমি আসছি আর শোন শাড়ি এসে দিয়ে যাবে। আমি কিছু না বলে রুমের ভিতর চলে আসলাম রুমের ভিতরে ডুকতেই চারপাশে চোখ বুলাতেই আমার মুখ অটোমেটিক হা হয়ে গেলো রুমটা ফুল দিয়ে সাজানো যেমন বাসর ঘরে সাজানো হয়।এসব দেখে আমার রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে কী হিসেবে সে এটা ভাবছে যে আমি তার সাথে বাসর করবো। নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে আমি ওয়াশরুমে চলে আসলাম মুখে পানি ছিটা দিয়ে বের হয়ে রুমে আসলাম তখনই কেউ নক করলো রুমের দরজায় আমি দরজা খুলে দেখলাম সেই সুন্দরী নারী হাতে শপিং ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে আছে আমাকে দেখে মুচকি হেসে বললো,
~ম্যাম আপনার পার্সেল চলে এসেছে। বলেই হাতে থাকা ব্যাগ গুলো আমার হাতে দিয়ে দিলো।তারপর সে চলে গেলো আমি দরজা বন্ধ করে হাতে থাকা ব্যাগ গুলো খুলে দেখি শাড়ি আর আমার যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস।আমি একটা গোলাপী রঙ্গের শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।শাড়িটা ঠিকঠাক মতো পরে নিলাম বাহিরে বের হয়ে চুল গুলো ছেড়ে দিলাম তারপর বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে রইলাম। নিস্তব্ধ রাত দেখতে অনেক সুন্দর কিছুক্ষন পর

হঠাৎ কেউ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আমি তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই সেই হাতের মালিক বলে উঠলো,

চলবে।।

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন?ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading 🤗🤗)

গল্পের নামঃ#আমার শহরে তুমি
লেখনীতেঃ# Alisha Rahman Fiza
পর্বঃ৩
,,,,,
,,,,,,
সেই হাত জোড়ার মালিক বলে উঠলো,
~এতো ছটফট কেন করছো?আমি কী তোমায় খেয়ে খেয়ে ফেলবো।তার কন্ঠ শুনেই আমার বুঝতে বাকি রইলনা এই ব্যক্তিটি কে?রক্তিম আমাকে পিছন থেকে এভাবে জড়িয়ে রেখেছেন আমি কনুই দিয়ে তার পেটে গুতা দিয়ে বললাম,
~ছাড়ুন অসভ্য এভাবে সাপের মতো পেচিয়ে আছেন কেন?তিনি আমাকে না ছেড়ে উল্টো আরো নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে বললেন,
~তোমাকে শাড়িতে অনেক সুন্দর লাগছে একদম আমার বউ লাগছে।বলেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সামনে ঘুড়িয়ে তার কপালে আঙ্গুল ঘষে বললেন,
~কী যেন একটা মিসিং আছে?তার এরকম কথায় আমি নিজের চারপাশ দেখে বললাম,
~কী মিসিং আছে আমার আল্লাহ তা আলা আমাকে আপনার মতোই ২টি হাত, ২টি পা একটি নাক এসব দিয়েই তৈরি করেছে।আমার কথায় সে হো হো করে হেসে বললেন,
~তোমার নাক তো আছে কিন্তু নাকফুল নেই wait আমি তোমার জন্য নিয়ে এসেছি।বলেই দৌড়ে রুমে চলে গেলেন কিছুক্ষন পর তার হাতে একটি বাক্স নিয়ে চলে আসলেন।বাক্সটা আমার হাতে দিয়ে বললেন,
~নেও এটা খুলে দেখো।আমি বাক্সটা খুলে দেখলাম ডায়মন্ডের নাকফুল তা দেখে আমি তার দিকে তাকালাম সে মুচকি হেসে বললো,
~তোমার নাকে এটা খুব সুন্দর লাগবে।একটু পরে দেখো তো।আমি বাক্সটা বন্ধ করে বললাম,
~আপনার বাবার টাকার কোনো জিনিস আমি নিবো না বেনারসিটা পরেছি শুধুমাত্র আমার পরিবারের জন্য। কিন্তু আপনার বাবার টাকার কোনো জিনিস আমি নিবো না।আর এ শাড়িটাও বাধ্য হয়ে পরেছি কালকেই আমার জিনিসপত্র আমি নিয়ে আসবো। সে অনেকটাই শান্ত কন্ঠে বললেন,
~তুমি হয়তো ভুলে গেছো যে আমি নতুন চাকরিতে জয়েন করেছি আর আমার প্রথম বেতনের টাকাটা দিয়েই আমি এই বেনারসি আর এই নাকফুলটা কিনেছি।তার কথায় আমি বললাম,
~সত্যি আপনার প্রথম বেতন দিয়ে এগুলো কিনেছেন?
সে বললো,
~জ্বী ম্যাডাম। আমি বাক্সটা হাতে নিয়ে রুমের ভিতরে চলে আসলাম তারপর আয়নার সামনে দাড়িয়ে সেই নাকফুলটা আমার নাকে অনেক ঘষামানজার পর পরতে পারলাম।নাকফুলটা পরে আয়নার দিকে তাকালাম পিছনে রক্তিম দাড়িয়ে আছে।

,,,,
,,,,
নাকের দিকে খেয়াল করতেই দেখলাম নাকফুলটা একদম জ্বলজ্বল করছে।আমাকে দেখতে একদম অন্যরকম লাগছে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে দেখি সে একধ্যানে মুগ্ধ নজরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে তাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার লজ্জা লাগলো কিন্তু তা প্রকাশ না করে অকপট রাগ দেখিয়ে বললাম,
~কী দেখেন এভাবে?রক্তিম এক পা দু পা করে একদম আমার কাছে এসে পরলো তার নিশ্বাসের গরম হাওয়া আমার মুখে আছড়ে পরছে।নিজেকে এক অন্য জগতের প্রাণী মনে হচ্ছে আমার বুকটা ধুকপুক ধুকপুক করছে।রক্তিম আমার দিকে ঝুঁকে নাকফুলে ঠোঁট ছুয়িয়ে বললেন,
~তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে তোমাকে একদম আমার স্বপ্নের রানীর মতো লাগছে।আমি তার এসব কথা সহ্য করতে না পেরে তাকে হালকা ধাক্কা মেরে তাকে সরিয়ে দিয়ে বললাম,
~আজকের জন্য যদি নাটক শেষ হয়ে থাকে তাহলে আমি ঘুমাতে গেলাম।বলেই আমি বিছানার দিকে যাবো রক্তিম বললো,
~বাসর রাতে কে ঘুমায়?আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~আমি ঘুমাই।বলেই বিছানায় শুয়ে পরলাম তার এসব নাটক দেখার সময় আমার নেই এভাবেই আগামীকাল শশুর বাড়ি যেতে হবে অনেক এনার্জির প্রয়োজন।কালকে রক্তিমের মা কীভাবে রিয়েক্ট করবে কে জানে কিন্তু আমি তার সামনে দূর্বল হবো না তাকে তার সব পাপের হিসাব দিতে হবে।এসব ভাবতে ভাবতে আমার চোখের কোণ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরলো কারণ দুবছর আগের সব কথা আবার মনে পরছে অতীত বড্ড খারাপ জিনিস যত ভুলতে চান ততই আপনার তাড়া করতে থাকে।

,,,,,
,,,,,
অন্যদিকে রক্তিম রাতের শহর দেখতে ব্যস্ত এই মেয়েটাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না।অধরাকে সে অনেক ভালোবাসে হয়তো নিজের সব বিলীন করে হলেও সে অধরাকে খুশি রাখতে চায়।আজ সে তাই বাসায় যায়নি কারণ মা অধরাকে অপমান করবে আর বিয়ের রাতটাকে সে কোনো ক্রমেই খারাপ করতে চায়নি।হঠাৎ রক্তিমের ফোন বেজে উঠলো সে পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলো একটা নাম জ্বলজ্বল করছে।এই ব্যক্তিটি তাকে ফোন করেছে এরমানে মা তাকে সব জানিয়ে দিয়েছে নাহলে বড় ভাইয়ের কথা তার কখনো মনে পরেনি।হ্যাঁ রক্তিমের ছোট ভাই রাত রায়জাদা তাকে ফোন করেছে।রক্তিম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফোন রিসিভ করতেই অপর পাশের যুবকটি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বললো,
~ভাইয়া তোমার লজ্জা করলো না একটা চরিত্রহীন মেয়েকে বিয়ে করতে।আর কীভাবে তুমি তোমার ছোট ভাইয়ের থাক আমি এসব কথা বলতে চাই না। শুধু এতটুকু বলতে চাই shame on u ভাইয়া।রক্তিমের রাগে মাথায় রক্ত চড়ে গেলো অধরাকে সে চরিত্রহীন বলছে।রক্তিম রাগী গলায় বললো,
~মুখের জবান সামলিয়ে কথা বলবে তুমি?সে তোমার ভাবি হয় আপন মায়ের পেটের ভাইয়ের বউ তোমার সম্মান করতে শিখো।আমি তো আমেরিকা থেকে এসেছি তাই আমি বেয়াদব কিন্তু তুমি কেন বেয়াদবি করছো?after all you are a very well-manner person।কী ঠিক বলেছিনা?বড় ভাইয়ের বিদ্রুপ করা কথায় রাতের মাথায় আগুন উঠে গেলো সে ফোন কেটে দিলো।রক্তিম তার ভাইয়ের কথা না শুনতে পেয়ে ফোন কান থেকে নামিয়ে রেখে মুচকি হেসে বললো,
~হিরে চিনতে ভুল করেছো তাই এখন হিরেকেই নকল বলছো।ফোন হাতে নিয়েই সে রুমের ভিতরে গিয়ে দেখলো

,,,,,
,,,,,
অধরা গালে হাত দিয়ে ঘুমিয়ে আছে রক্তিম কপাল চাপড়ে মনে মনে বললো,
~কোথায় বউ নিয়ে একটু রাতের আকাশ দেখবো সেখানে আমার বউ ঘুমের দেশ দেখছে।রক্তিম ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় অধরার পাশে শুয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।সে একটু একটু করে অধরার কাছে চলে গেলো তারপর তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বললো,
~তোমার জন্য মনের গহীনে সযত্নে আগলে রেখেছি কিছু নীলপদ্ম।বলেই অধোরার কপালে ঠোঁট ছুয়িয়ে সে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি রক্তিম আমাকে জড়িয়ে ধরে আরামের ঘুম দিচ্ছেন আমি তাকে সরানোর অনেক চেষ্টা করলাম সে সরাতো দূর আরো বেশি করে জড়িয়ে ধরছেন। তারপর আমি অনেক কষ্টে হাত ছাড়িয়ে তার পেটে অনেক জোড়ে চিমটি কাটি সে ব্যাথা পেয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়ে চিল্লিয়ে বললেন,
~কী হয়েছে এমন করছো কেন?আমি তার কথার উত্তর না দিয়ে বিছানা থেকে উঠে চুলগুলো হাত খোপা করে ওয়াশরুমে চলে গেলাম ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখি রক্তিম উপুর হয়ে শুয়ে আছেন।আমাকে দেখে সে বললো,
~নাস্তা করে তোমার বাসায় ফোন করে কথা বলে নিও তারপর রেডি হবে আমরা বাসায় যাবো।তার কথায় আমার বুক ধুকপুক করা শুরু করলো সত্যিই আমি সে বাসায় যাবো যে বাসায় একদিন আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়েছিল।রক্তিমের কথায় আমার ধ্যান ভাঙ্গলো সে বললো,
~আমি নাস্তার ওর্ডার দিয়েছি।একটু ওয়েট করো চলে আসবে আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।বলেই সে চলে গেলো আমি বসে বসে ভাবছি ভাগ্য কী আবার আমায় নিয়ে খেলছে।

,,,,,,
,,,,,
নাস্তা করে আমি মা-বাবার সাথে কথা বলে নিলাম।রক্তিম আমাকে বললো,
~তুমি রেডি থাকলে বের হওয়া যাক।আমার কেমন জানি লাগছে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে একদম ফিটফাট যেমন কিছুই হয়নি।রক্তিম আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো,
~কী দেখো আমি অনেক handsome তা আমি জানি।তার কথায় মুখ ভেংচি কেটে বললাম,
~চলেন দেরি হচ্ছে।হোটেল থেকে বের হয়ে আমরা গাড়িতে বসে পরলাম গাড়ি যতো আগে বাড়ছে আমার বুকের ধুকপুক করছে কী হবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।৩০ মিনিট পর আমরা রায়জাদা ভিলায় পৌছে গেলাম রক্তিম গাড়ি থামিয়ে বললো,
~গাড়ি থেকে নেমে আসো।আমি কাঁপাকাঁপা হাতে গাড়ির গেইট খুলে গাড়ি থেকে নেমে রায়জাদা ভিলায় চোখ বুলিয়ে নিলাম অনেক খারাপ লাগছে।চোখ পানিতে টলমল করছে হঠাৎ রক্তিম বলে উঠলো,
~অধরা তোমার যদি এ বাসায় থাকতে মন না চায় তাহলে চলো আমরা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবো।আমি এক আঙ্গুল দিয়ে চোখের পানি মুছে মুচকি হেসে তার দিকে ফিরে বললাম,
~এতো ভয় পান মাকে তাহলে বিয়ে করলেন কেন?আর আমি আমার শশুর বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাবো না after all my sweet mother in law is waiting for me.বলেই হাঁটা ধরলাম বাড়ির ভিতরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আর রক্তিম অধরার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।

চলবে।।।।

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন?ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here