উপন্যাসের শেষ পাতায় তুমি পর্ব -৩৩+৩৪

#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_33

কপি নিষিদ্ধ ❌

তিশা বসে ছিল তখন কেউ দরজায় নক করে,
তিশা দরজা খুলে দেখে জেসমিন দাঁড়িয়ে আছে,
আরে আপু,আসুন ভেতরে আসুন।

জেসমিন রুমের ভেতরে এসে বেডে বসে,
জেসমিন তিশার দিকে তাকিয়ে বলে,
তিশা আমি তোমাকে কিছু বলতে এসেছি।

জ্বি বলেন।

তুমি ৬ বছর আগের ঘটনা জানো?

হুম জানি।

তোমার হয়তো মনে হচ্ছে আমি অনেক খা’রা’প এবারও খা’রা’প কিছু করতে এসেছি,আচ্ছা তিশা তোমাকে একটা প্রশ্ন করবো?

হুম।

তুমি ওসমান ভাইয়াকে ভালোবাসাে?

হ্যাঁ।

কতোটা?

ভালোবাসা তো পরিমাপ করা যায়না।

নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসো?

হ্যাঁ।

তুমি যেমন ওসমান ভাইয়াকে ভালোবাসাে আমিও তেমন সিহাবকে অনেক ভালোবাসতাম অবশ্য এখনো বাসি,নিজের থেকেও অনেক বেশি ভালোবাসি,ও যা যা বলতো আমি তাই তাই করতাম,ওকে অ’ন্ধে’র মতো বিশ্বাস করেছি ওর প্রতি’শো’ধে’র জন্য আমি অবান্তিকা আন্টির বিশ্বাস ভে!ঙেছি এই পরিবারের সবাইকে কষ্ট দিয়েছি,
কথাগুলো বলতে বলতে জেসমিনের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে,
হ্যাঁ জেসমিন কাঁদছে,জেসমিনের চোখে স্পষ্ট কষ্ট বোঝা যাচ্ছে,জেসমিনকে কাঁদতে দেখে তিশার চোখও টলমল করছে,
জেসমিন তিশার হাত জড়িয়ে ধরে,
তিশা আমি মানছি আমি ভুল করেছি,সবার সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলতেও লজ্জা করে,আগের
কথাগুলো ভাবলে খুব কষ্ট হয়,কেনো আমি ভুল করলাম কেনো আমি সবার মনে কষ্ট দিলাম,কেন কেন,

আপু প্লিজ কাঁদবেন না,মানুষ মাএই ভুল হয়,
হ্যাঁ আপনি তখন ভুল করছিলেন আর সেই ভুলের শা’স্তিও পেয়েছেন,এখনতো সবাই আপনাকে মাফ করেছে আপনি কেনো কষ্ট পাচ্ছেন দেখবেন সবাই আপনাকে আগের মতো ভালোবাসবে।

জেসমিন তিশাকে জড়িয়ে ধরে,
থ্যাঙ্ক ইউ আমার ফিলিংস বোঝার জন্য,তুমি আমার ছোট বোনের মতো তাই তোমার সাথে মনের কথা গুলো শেয়ার করলাম।

তিশা উত্তরে কিছু বলেনা।

আচ্ছা তুমি ঘুমাও তোমাকে আর বি’র’ক্ত করবোনা।

না আপু আমি মোটেও বি’র’ক্তবোধ করিনি আপনার যখন ইচ্ছে তখন আমার কাছে আসতে পারেন।

জেসমিন মুচকি হেসে রুম থেকে চলে যায়।
জেসমিন যাওয়ার পর তিশা দরজা লাগিয়ে দেয়।
তিশা বালিশ বুকে জড়িয়ে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে জেসমিনের কথা ভাবছিল দরজায় নক করার আওয়াজে ওর ধ্যান ভাঙে।ও দরজা খুলে দেখে ওসমান দাঁড়িয়ে আছে,
জানপাখি ঘুমাওনি কেন?

এমনই ঘুম আসছিলো না তাই তোমার অপেক্ষা করছিলাম।

ওহ,আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

আচ্ছা।

ওসমান ফ্রেশ হয়ে আসে।রাতে ঐখানে খেয়েছে তাই লাইট নিভিয়ে শুয়ে পরে,তিশার চোখে ঘুম নেই,
কিছুক্ষণ পর ওসমান বুঝতে পারে তিশা ঘুমায়নি।
কি হয়েছে জানপাখি ঘুমাচ্ছো না কেন?

একটা কথা বলবো?

হুম বলো।

তুমি আসার ১৫/২০ মিনিট আগে জেসমিন আপু এসেছিলেন।

ও কেন এসেছিলো?

তিশা ওসমানকে সব কথা বলে।
জানো আপু যখন কথাগুলো বলছিলো তখন আপুর চোখে স্পষ্ট কষ্ট দেখা যাচ্ছিল,আপু তার কাজে ভিষণ লজ্জিত ছিলেন,আমার মনে হয় আপু ভালো হয়ে গেছে।

হয়তো ও ওর ভুল বুঝতে পেরেছে।তুমি আর এসব নিয়ে ভেবোনা,ঘুমিয়ে পরো।

তিশা চুপটি করে ওসমানের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে রয়,ওসমান তিশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর ভাবছে,
সত্যি কি জেসমিন ওর ভুল বুঝতে পেরেছে?ওকি সত্যি বদলে গেছে নাকি এই সব কিছুই ওর নাটক।

সকালে উঠে ওরা সবাই একসাথে নাস্তা করতে বসে
ওসমান জেসমিনের চালচলন পর্যবেক্ষণ করছে,
কিন্তু কিছুই খা’রা’প দেখছেনা জেসমিন সবার সাথে ভালো ব্যবহার করছে বিশেষ করে তিশার সাথে বড়
বোনের মতো আচারণ করছে।জেসমিনের এই রুপ ওসমানকে ভাবনায় ফে’লে দিচ্ছে,
ও তো সবার সাথে ভালো ব্যবহার করছে,এখনো পর্যন্ত কিছু করলোনা যদি অন্য কোনো মতলবে আসতো তবে ও কিছু না কিছু তো করতোই,তবে কি জেসমিন ভালো হয়ে গেছে?

ওসমান কি ভাবছো?

না বাবা কিছু ভাবছিনা।

কাল কখন বের হবে তোমরা?

সকাল সকাল বেরিয়ে পরবো দেরি করে বের হলে জ্যামে আটকা পরবো।

হ্যাঁ সকাল সকাল বেরিয়ে পরাই ভালো।

হুম।

আরো নানারকম কথার মাঝে নাস্তার পর্ব শেষ হয়।

ওসমান তিশা ওমরদের রুমে বসে আছে,
তিশা ইতোমধ্যে ওদের জেসমিনের কথাগুলো বলেছে।
ওমর : আমার মনে হচ্ছে এসব কিছু জেসমিনের নাটক।

আয়েশা : যে এতদিন খা’রা’প ছিল সে কি না হুট করে ভালো হয়ে গেলো।

তিশা : মানুষ হঠাৎ করেই বদলায়,আর এটাতো ভালো কথা উনি বদলে গেছেন,মানুষ মাএই ভুল হয়,হ্যাঁ উনি ভুল করে ছিলেন আর সেই ভুলের শা’স্তিও পেয়েছেন,
আমাদের ওনাকে সেকেন্ড চান্স দেওয়া উচিত।

ওসমান : আমার মনে হয়না ও কিছু করতে এসেছে,
কারণ কিছু করতে আসলে ইতোমধ্যে করে ফেলতো
কিন্তু ও আমাদের সাথে খুব সুন্দরভাবে মিশছে ভালো ব্যবহার করছে,আমারও মনে হয় জেসমিন ভালো হয়ে গেছে।
ওসমান মুখে এসব বললেও ওর মনের মধ্যে কোথাও না কোথাও একটা কিন্তু রয়েই গেছে।

ওমর : আচ্ছা তোমরা যখন বলছো তখন আমরাও মেনে নিলাম জেসমিন ভালো হয়ে গেছে।

কথার মাঝে দরজায় নক করার আওয়াজ কানে আসে সবার,ওমর দরজা খুলে দেখে জেসমিন দাঁড়িয়ে আছে,জেসমিন ভেতরে আসে,
জেসমিন : আমি কি তোমাদের সাথে জয়েন হতে পারি?

তিশা : হ্যাঁ অবশ্যই।

জেসমিনও ওদের সাথে কথা বলতে শুরু করে,
আড্ডাটা ভালোই জমেছে,জেসমিনকে দেখে সবাই বুঝে গেছে সবাই যা ভেবেছিলো তাই জেসমিন ভালো হয়ে গেছে। আড্ডা শেষ করে ওমর ওসমান বাহিরে যা।
তিশা,জেসমিন,আয়েশা ওরা রান্নাঘরে যায় অবান্তিকার কাছে।
জেসমিন : আন্টি কি করছো?

অবান্তিকা : এইতো লাঞ্চ রেডি করছি।

জেসমিন : আমি আজ তোমাদের একটা স্পেশাল ডিস খাওয়াবো।

অবান্তিকা : তাই নাকি?

জেসমিন : হুম,আমি উপকরণ গুলোর নাম বলি তুমি আমাকে এক এক করে বলো সেগুলো কোথায় রাখা আছে।

জেসমিন এক এক করে সব উপকরণ গুলোর নাম বলছে আর অবান্তিকা ওকে দেখিয়ে দিচ্ছে কোন কোন উপকরণ কোন কোন জায়গায় রাখা আছে।জেসমিন রান্না করতে শুরু করে,আয়েশা তিশা অন্য আইটেম রান্না করছে,অনেকক্ষণ পর রান্না শেষ হয়,সব খাবার টেবিলে সাজিয়ে রাখা হয়।সবাই রুমে যেয়ে গোসল সেরে নামাজ পড়ে আসে,ওসমান ওমর ওয়াহিদও চলে এসেছে,সবাই একসাথেই খেতে বসেছে,

আমি আমার বানানো ডিসটা নিয়ে আসি।
জেসমিন সবার জন্য খাবার বাটিতে করে নিয়ে আসে।জেসমিন সবাইকে খাবার সার্ভ করে দেয়।
সবাই জেসমিনের খাবারটা খায়।
সবার কাছে ভালো লাগলেও তিশার খুব ঝাল লাগে
তবুও ভদ্রতার খাতিরে জেসমিনের মন রাখতে আরেকটু খায়,কিন্তু তিশার প্রচুর ঝাল লাগছে,ওর কাশি উঠে যায়,ওর কাশি শুনে ওসমান ওর দিকে তাকিয়ে দেখে ঝালে ওর চোখ থেকে পানি পরছে,
তিশাকে এই অবস্থায় দেখে আয়েশা বলে উঠে,
“ওহ নো আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম তিশাতো একদম ঝাল খেতে পারেনা,আর এই খাবারটাতো অনেক ঝাল”।
ওসমান দ্রুত তিশাকে পানি খাইয়ে দেয়,কিন্তু ঝাল কিছুতেই কমছেনা ঝালে তিশার অবস্থা খা’রা’প হয়ে গেছে পুরো মুখ লাল হয়ে গেছে চোখ থেকে পানি পরছে।অবান্তিকা রান্নাঘর থেকে মধু নিয়ে আসেন,
তিশাকে আসতে আসতে মধু খাইয়ে দেন,আর এতে কাজ দেয় ঝাল কমতে থাকে।তিশার শরীর দূর্বল হয়ে গেছে,ওসমান ওকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে যেয়ে বেডে শুইয়ে দেয়,যেখানে তিশা সামান্য ঝাল খেতে পারেনা সেখানে এতো পরিমাণে ঝাল খেলে অবস্থা তো খারাপ হবেই।তিশা শুয়ে আছে আর ওসমান ওর হাত ধরে বসে আছে,
তুমি তো ঝাল খেতে পারোনা তবে কেন খাবারটা খেলে।

আমি তো জানতাম না খাবারটা এতো পরিমাণ ঝাল হবে।

আচ্ছা তুমি শুয়ে থাকো।

অবান্তিকা রুমের সামনে এসে দরজায় নক করে ওসমান ওনাকে ভেতরে আসতে বলেন অবান্তিকা তিশা ওসমানের জন্য খাবার নিয়ে এসেছেন।

মামনি এখন কেমন লাগছে?

এখন কিছুটা ভালো লাগছে।

তোমাদের জন্য খাবার এনেছি,খাবারটা খেয়ে নিও।

আচ্ছা।

অবান্তিকা রুম থেকে চলে যায়।
তিশা উঠে বসে,ওসমান ওকে খাইয়ে দিচ্ছে,কিন্তু
ওসমানের চেহারায় স্পষ্ট চিন্তার ছাপ।ওসমানকে এমন চিন্তিত দেখে তিশা বলে,
কি হয়েছে কি ভাবছো?

ভাবছি জেসমিন কি ইচ্ছে করে এমনটা করেছে।

আরে না,ইচ্ছে করে কেন করবে এমনতো না সে শুধু একা আমার খাবারেই ঝাল মিশিয়েছে,তোমাদেরটা
তেও তো ঝাল ছিল,তফাৎ শুধু একটাই তোমরা ঝাল খেতে পারো আর আমি পারিনি।আমি যে ঝাল খেতে পারিনা তা তো জেসমিন আপু জানেনা।তাই শুধু শুধু তাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই,আর এতো টেনশন করতে হবেনা।

আচ্ছা ঠিক আছে তুমি খাও।

ওসমান তিশাকে খাইয়ে দিচ্ছিল তখন জেসমিন দরজায় নক করে,
আপু ভেতরে আসুন।

জেসমিন ভেতরে আসে,
এখন কেমন আছো?

এখন অনেকটা ভালো।

সরি তিশা,আমি জানতাম না তুমি ঝাল খেতে পারোনা,
আমি ইচ্ছে করে এমনটা করিনি বিশ্বাস করো।

আপু সরি বলতে হবেনা আমি জানি আপনি ইচ্ছে করে এমনটা করেননি।

তবুও সরি।

ইট’স ওকে।

আচ্ছা আমি যাই।

ঠিক আছে।

জেসমিন চলে যায়।

কি হলো আর কতোক্ষণ মুখ ফুলিয়ে রাখবে।

আমি মুখ ফুলিয়ে রাখিনি জানপাখি।

তো খাচ্ছো না কেন?

তুমি খাও তারপর আমি খাচ্ছি।

উহুম আমার সাথে খাও,এক লোকমা তুমি খাও আরেক লোকমা আমাকে খাইয়ে দাও।

আচ্ছা।

ওদের খাওয়া শেষে ওসমান প্লেটগুলো রান্না ঘরে রেখে আসে।তিশার খুব ঘুম পাচ্ছিল তাই ও ঘুমিয়ে পরে,
ওসমান ওকে ঘুমাতে দেখে ওমরকে নিয়ে বাহিরে যায়।
আসরের আযানের আওয়াজে তিশার ঘুম ভা!ঙে ও
বিছানা ছেড়ে উঠে অযু করে নামাজ পড়ে নেয়।
অায়েশার রুমে যেয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়,তারপর ওরা ডিনার রেডি করতে রান্নাঘরে যায়,রান্না শেষে
টেবিলে খাবার সাজায়।ওয়াহিদ হসপিটাল থেকে ফিরে আসে,ওসমান ওমরও চলে আসে।ওরা একসাথে ডিনার করে যার যার রুমে চলে যায়। আয়েশা তিশা প্যাকিং করছে,কাল সকাল সকাল ওরা সিলেটের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরবে তাই রাতেই সব প্যাকিং করে ফেলেছে।

জানো সিহাব আজ তিশাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছি।

তাই নাকি কিভাবে?

আমি সবার জন্য ঝাল করে খাবার রান্না করেছিলাম আমি জানতাম তিশা ঝাল খেতে পারেনা,তাই সবার খাবার বাটিতে বেরে ওর টায় এক্সট্রা ঝাল দেই,আর আমি যা চেয়েছিলাম তাই হয়েছে ঝালে ওর অবস্থা খা’রা’প হয়ে গিয়েছিল।

কি বলো ওরা কেউ কিছু বলেনি?

কিভাবে বলবে সবার চোখে এখন আমি অনেক ভালো,তিশার মনও জয় করে ফেলেছি।

কিভাবে?

গতকাল রাতে ওর রুমে যেয়ে ন্যাকা কান্না করছি এতেই ওর মন গলে গেছে,হাহা ও কতো বোকা কতোটা সহজে মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলে।

যাক ভালোই হয়েছে,তুমি প্ল্যান মতো কাজ করে যাও,
আর সিলেট থেকে ফেরার আগে কি করতে হবে মনে আছে তো?

হুম মনে আছে এটা ভুলার মতো কোনো কথা নাকি আমি ভালেভাবেই নিজের কাজ করবো।এবার ওসমান বুঝবে কাছের মানুষ হা’রি’য়ে গেলে কতোটা কষ্ট হয়।

চলবে কি?

[কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাবেন,ভিষণ অসুস্থ কোনো রকম করে লিখে দিয়েছি তাই ছোট হয়েছে,কোনো প্রকার ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_34

কপি নিষিদ্ধ ❌

সকাল সকাল ওয়াহিদ অবান্তিকার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়,
ওরা ওসমানের গাড়িতে করে যাচ্ছে।ওসমান ড্রাইভিং সিটে বসেছে,পাশে তিশা,ওমর আয়েশা জেসমিন পেছনের সীটে বসেছে,ওরা তিশার গান শুনতে শুনতে যাচ্ছে,কথা বার্তা বলছে,গান প্লে করে গান শুনছে,দুপুরে রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করে,লাঞ্চ শেষে ওমর ড্রাইভ করে বাকিটা পথ অতিক্রম করে,ওরা ওদের গন্তব্যে পৌঁছে যায়।ওরা গাড়ি থেকে নামবে তখন ওসমান তিশা আর আয়েশাকে মাথায় কাপড় দিতে বলে কারণ সদর দরজায় ওসমান ওমরের দাদী,চাচারা,চাচীরা,তাদের ছেলে,ছেলের বউরা দাঁড়িয়ে আছে।ওসমানের কথা মতো আয়েশা তিশা মাথায় কাপড় দিয়ে গাড়ি থেকে নামে,বাহির থেকে রায়হানদের বাসা খুব সুন্দর,বাড়ি দুপাশে বাগান করা বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে পুকুর,
রায়হান ওয়াহিদের চাচাতো ভাই,রায়হানরা তিন ভাই,রায়হান,রাসেদ,রাকিব।তারা তিন ভাই একএে একবাড়িতে বউ বাচ্চা নিয়ে থাকে।রাসেদ বড় ভাই,
নাসিমা রাসেদের স্ত্রী,রাসেদের দুই ছেলে নাহিদ,
আহাদ,ওরা দুজনেই বিবাহিত,নিশি নাহিদের স্ত্রী,
সামিহা আহাদের স্ত্রী।রাকিব মেঝোভাই,রোমানা রাকিবের স্ত্রী,রাকিবের এক ছেলে এক মেয়ে মায়রা,
ইয়াশ,ওরাও বিবাহিত,মাহমুদ মায়রার স্বামী, ইশরাত ইয়াশের স্ত্রী।রায়হান ছোট,রাবেয়া রায়হানের স্ত্রী,রায়হানের এক মেয়ে এক ছেলে আলিফা এবং সায়েফ,সবাই আলিফার বিয়ে উপলক্ষে একএিত হয়েছে।সবাই উপস্থিত থাকলেও সায়েফ এখানে নেই ও সুস্থ হওয়ার পর রায়হান ওকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়,ছুটি না পাওয়ায় বড় বোনের বিয়েতে অাসতে পারেনি।
ওমর,ওসমান,আয়েশা,তিশা,জেসমিন হেঁটে সামনে
যাচ্ছে,ওরা সবাইকে সালাম দেয় সবাই সালামের উত্তর দেয়,ওদের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোফায় শাহিদা বেগম (রায়হানের মা) বসে আছেন
তাকে ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে।
শাহিদা খুশি মনে ওসমানকে বলে,
ওসমান দাদুভাই একি আমার নাতবউ না কিরে,

হ্যাঁ দাদি ও আমার স্ত্রী।

মাশাল্লাহ,একদম চাঁদের মতো সুন্দর।ওমরের বউও অনেক সুন্দর,আমার সু্ন্দরী নাতবউরা আমার পাশে এসে বসোতো।

আয়েশা তিশা ওনার দুপাশে বসে,শাহেদা বেগম ওদের হাতে স্বণের চুড়ি পরিয়ে দেয়।
শাহিদা ওদের বলে,
আমাদের বাড়ির নিয়ম নতুন বউ দেখে কিছু না কিছু দিতে হয়,এই চুড়িগুলো যত্ন করে রেখে দিও,
ভবিষ্যতে তোমাদের ছেলের বউকে দিবে,কেমন।

আয়েশা তিশা ছোট করে “আচ্ছা” বলে।

শাহিদা নিশিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন,
বড় নাতবউ যাও ওদের সবাইকে ওদের রুম দেখিয়ে দিয়ে আসো।

নিশি আস্তে করে বলে,
আচ্ছা দাদি,চলুন।

নিশি ওদের রুম দেখিয়ে দেয়,কাজের লোক আগে থেকেই ওদের লাগেজ রুমে দিয়ে গেছে।
ওদের আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল,ওরা ফ্রেস হয়ে সবার সাথে ডিনার করে,রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পরে,

সকালবেলা,
আয়েশা তিশা ৬ টা বাজে উঠে পরে,ওরা বাড়ির বউ
তাই দেরি করে ঘুম থেকে উঠা ভালো দেখায় না তাই ওরা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে চলে যায়,রান্না ঘরে যেয়ে দেখে সব বউরা সকালের নাস্তা বানাচ্ছে,ওরা ওদের সাহায্য করতে চায় কিন্তু ওরা ওদের কিছু করতে দেয়না,তাই আয়শা তিশা দাঁড়িয়ে রান্না করা দেখছে আর ওদের সাথে কথা বলছে,এই অল্প সময়ে ওদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে,রান্না শেষে তিশা আয়েশা খাবার গুলো টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখে।
৮ টায় সবাই নাস্তা করতে বসে,
আলিফার মেহেদী চারদিন পর,এই চারদিন সবাই সিলেট ঘুরে দেখবে,আলিফার বউভাতের পরদিনও
ওর ঘুরতে বের হবে,ছোটরা সবাই নাস্তা করে রেডি হয়ে বেরিয়ে পরে,
নিশি,নাহিদ,আহাদ,সামিহা,মায়রা,মাহমুদ,ইয়াশ,
ইশরাত,তিশা,ওসমান,আয়েশা,ওমর,জেসমিন,
আলিফা আর আলিফার কাজিনরা,ওরা সবাই মিলে প্রথমে হযরত শাহজালাল (রঃ) এবং হযরত শাহপরাণ (রঃ) এর মাজার যাবে,ওরা কেউ নিজেদের গাড়ি নেয় নি,লোকাল গাড়িতে করে যাবে,ওরা লোকাল গাড়ি করে মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়,সেখানে পৌঁছে সবাই জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখছে,

হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজারের উত্তরদিকে একটি পুকুর রয়েছে।এই পুকুরের শোভা বর্ধন করে আছে অসংখ্য গজার মাছ।এসব মাছকে পুকুরে ভেসে বেড়াতে দেখে দর্শনার্থীরা আনন্দ লাভ করেন ও মাছেদের খাবার খেতে দেন।শাহজালাল (রঃ) এর মাজারের পাশে একটি কূপ রয়েছে। এই কূপে সোনালী ও রুপালী রঙের মাছে দেখা যায়।
এই মাজারে রয়েছে অসংখ্য জালালী কবুতর,
মাজারের ঝাঁকেঝাঁকে কবুতর আগতদের বিনোদিত করে।

ওরা মাছ ও কবুতরদের খাবার দিচ্ছে,ছবি তুলছে,
ঐখানে ওরা অনেকক্ষণ ছিল,জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখছে,এরপর ওরা চলে যায় হযরত শাহপরান (রঃ) মাজারে,হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার থেকে ১৫/২০ মিনিটের রাস্তা,

হযরত শাহ পরাণ (রাঃ) ছিলেন হযরত শাহ জালাল (রাঃ) এর ভাগ্নে।সিলেট শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে দক্ষিণগাঝ পরগনায় খাদিম নগরে খানকাহ স্থাপন করে তিনি আধ্যাত্মিক সাধনা শুরু করেন।বড় একটি টিলার উপর একটি প্রকাণ্ড বৃক্ষের নিচে রয়েছে শাহ পরাণ (রাঃ) এর ক’বর। মাজার টিলায় উঠা নামার জন্য উক্ত মাজার প্রাঙ্গনে উত্তর ও দক্ষিণ হয়ে সিঁড়ি আছে।যা প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট উঁচু দেখায়।মাজারের পশ্চিম দিকে মোগল বাদশাদের স্থাপত্বকীর্তিতে নির্মিত তিনটি গুম্বজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদে প্রায় ৫ শত মুসল্লী এক সাথে নামাজ আদায় করে থাকেন।মাজার টিলা থেকে প্রায় ১৫/২০ ফুট দহ্মিণ পশ্চিমে মহিলা পর্যটকদের জন্য এক ছালা বিশিষ্ট দালান ঘর রয়েছে।উক্ত দালানের অল্প পরিসর দহ্মিণ পুর্বে আরেকটি ঘর দেখতে পাওয়া যায়। এ ঘরখানা মুলত বিদেশাগত পর্যটকদের বিশ্রামাগার হিসেবে ব্যবহার হয়।এই ঘরের পাশেই একটি পুকুর রয়েছে,যা অজু গোসলের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে।

ওরা মাজার ঘুরে ঘুরে দেখছে,অনেকক্ষণ সেখানে থেকে বেরিয়ে পরে,রেস্তোরাঁ থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে মালনীছড়া চা বাগানের উদ্দেশ্যে বের হয় কিছুক্ষণ পর পৌঁছে যায়,

চারপাশে সবুজের সমারোহ।নীল আকাশের নিচে যেন সবুজ গালিচা পেতে আছে সজীব প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা এবং টিলাঘেরা সমতলে সবুজের চাষাবাদ।শুধু সবুজ আর সবুজ।মাঝে মাঝে টিলা বেষ্টিত ছোট ছোট জনপদ।পাহাড়ের কিনার ঘেষে ছুটে গেছে আকাবাঁকা মেঠোপথ।কোন যান্ত্রিক দূষণ নেই।কোথাও আবার ধাবমান পথে ছুটে চলছে রূপালী ঝর্ণাধারা।প্রকৃতির সকল সৌন্দর্যের সম্মিলন যেন এখানে।এমন অন্তহীন সৌন্দর্যে একাকার হয়ে আছে সিলেটের চা বাগান।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ হলেও প্রকৃতি
প্রেমীদের কাছে অন্য এক ভালোলাগার ধারক হয়ে আছে সিলেটের চা বাগান।তাই ছুটির অবসরে কিংবা বৈকালিক বিনোদনের তৃষ্ণা মেটাতে তারা ছুটে যান চা বাগানের সবুজ অরণ্যে।সারাটা বিকাল চলে সবুজের ভেতর লুকোচুরি,হৈ হুল্লোড় আর আনন্দে অবগাহন।

চা বাগানের অপরুপ দৃশ্য ওদের চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে,মনোমুগ্ধকর পরিবেশ চারিদিকে সবুজের সমাহার,সব কিছু সবুজময়,ওরা এখানে অনেকক্ষণ থেকে সন্ধ্যার দিকে বেরিয়ে পরে বাসায় আসতে আসতে রাত হয় রাতের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পরে,
পরদিন সকালে,
সবাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে রেডি হয়,আজ ওরা জাফলং আর লালাখাল পরিদর্শন করতে যাবে,ওরা বেরিয়ে পরে,
ওদের জাফলং পৌঁছাতে দেড় ঘন্টা সময় লাগে।

প্রকৃতি কন্যা হিসেবে সারাদেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং।খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রকৃতির সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি,বিইয়ান নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তুপ জাফলংকে করেছে আকর্ষনীয়,এখানে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মীলনে এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম স্থান হিসেবে পরিচিত,জাফলংয়ের সৌন্দর্য শব্দে বণনা করা সম্ভব নয়,এ জন্য সৌন্দর্য অপরুপ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

ওরা জাফলং সৌন্দর্য উপভোগ করছে,ছবি তুলছে,
জাফলং ঘুরে ঘুরে দেখছে,এখানে অনেকক্ষণ থাকার পর ওরা বেরিয়ে পরে লালাখাল উদ্দেশ্যে,

লালাখাল সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে অনুভব করার জন্য স্থানটি বেশ উপযোগী।পাহাড়ে ঘন সবুজ বন,নদী,চা-বাগান ও নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার লালাখালজুড়ে।যদি ভরা পূর্ণিমায় যেতে পারেন তাহলে জ্যোৎস্না ধোয়া নদীর রূপ সারাজীবন মনে রাখার মত একটা ঘটনা হবে।লালাখাল নদীতে অসংখ্য বাঁকের দেখা মেলে। প্রতিটি বাঁকই দেখার মতো সুন্দর।পাহাড়গুলোকে দেখলে মনে হয়,কেউ যেন নিজ হাতে থরেথরে একের পর একটি করে সাজিয়ে রেখেছে।এখানে পাহাড়ের গায়ে মেঘ জমা হয়।একটু কাছ থেকে দেখা যায়,মেঘেরা দল বেঁধে পাহাড়ের গায়ে ঠেস লাগিয়ে থেমে থাকে।আবার কখনো দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে সবার অলক্ষ্যে হারিয়ে যায়।
লালাখাল এর তামাবিল রোডের কাছের অংশের নাম সারি নদী।এই খালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বিষয় তা হচ্ছে বিভিন্ন কালারের পানি।খালের একেক অংশে একেক ধরনের কালার।যেমন নীল, সবুজ ও স্বচ্ছ পানি।সারি নদীর স্বচ্ছ জলরাশির উপর দিয়ে নৌকা অথবা স্পীডবোটে করে আপনি যেতে পারেন লালাখালে।৪৫ মিনিট যাত্রা শেষে আপনি পৌঁছে যাবেন লালাখাল চা বাগানের ফ্যাক্টরি ঘাটে।এসময় মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবেন নদীর পানির দিকে।কি সুন্দর নীল,একদম নিচে দেখা যায়।রাতের সৌন্দর্যে ভরপুর এই লালাখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার সন্নিকটে অবস্থিত।লালাখাল এলাকায় পর্যটকদের থাকার কোন জায়গা নেই,আর সিলেট শহর থেকে বেশ দূরে।সন্ধ্যার দিকে নদীতে কোন নৌকা থাকে না, তাই ভ্রমণ বা ঘোরাঘুরি সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ করতে হয়।সবচেয়ে ভালো হয় নৌকা ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করলে।লালাখালের চারপাশে সন্ধ্যার আগ মুহূর্তটা আরো অবিস্মরণীয়।

ওরা লালাখালের অপরুপ দৃশ্য উপভোগ করে,
সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরে যায়।রাতের খাবার খেয়ে রুমে চলে যায়,সারাদিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে সবাই ঘুমিয়ে পরে।

সকালে উঠে নাস্তা করে রাতারগুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে,রাতারগুল পৌঁছাতে সময় লাগে দু’ঘন্টা।

রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট।এটি সিলেট জেলা শহর থেকে প্রায়২৬ কিলোমিটার
দূরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত।এই বিস্তৃর্ণ এলাকার ৫০৪ একর জায়গায় রয়েছে বন আর বাকি জায়গা ছোট বড় জলাশয়ে পূর্ণ।তবে বর্ষায় পুরো এলাকাটিকেই দেখতে একই রকম মনে হয়। রাতারগুল ‘সিলেটের সুন্দরবন’ নামে খ্যাত। রাতারগুল জলাবন বছরে চার থেকে পাঁচ মাস পানির নিচে তলিয়ে থাকে।তখন জলে ডুবে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় জমায়। অনেক পর্যটক রাতারগুলকে ‘বাংলাদেশের আমাজন’ হিসাবে অভিহিত করেন।বর্ষায় গাছের ডালে দেখা মিলে নানান প্রজাতির পাখি,আবার তখন কিছু বন্যপ্রাণীও আশ্রয় নেয় গাছের ডালে।এছাড়া শীতকালে রাতারগুলের জলাশয়ে বসে হাজারো অতিথি পাখির মেলা।সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর (বর্ষার শেষের দিকে)পর্যন্ত রাতারগুল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।রাতারগুল একটি প্রাকৃতিক বন,স্থানীয় বন বিভাগ এখানে হিজল,বরুণ,করচ সহ বেশ কিছু গাছ রোপণ করেন।এছাড়াও এখানে চোখে পড়ে কদম, জালিবেত, অর্জুনসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির জলসহিষ্ণু গাছপালা।

ওরা রাতারগুলে নৌকায় ঘুরে,অনেকক্ষণ সেখানে থেকে সময়টা উপভোগ করে,ছবি তুলে।
তারপর বের হয় বিছনাকান্দির উদ্দেশ্যে,

বিছনাকান্দি সিলেট শহর থেকে বেশখানিক পথ দূরে।প্রকৃতির আপন লীলাখেলায় মেতে আছে অপার সৌন্দর্যের জলপাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি যা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। বিছনাকান্দির এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পাথর আর পাথর।মনে হবে যেন একটি পাথরের বিছানা।এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য,সারারাত না ঘুমিয়ে এই সৌন্দর্য দেখে নিমিষেই ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানিতে পা ফেলে মনে হবে পৃথিবীর সব শান্তি এখানে।শুকনো মৌসুমে বিছনাকান্দির আসল সৌন্দর্য চোখে পড়ে না।বর্ষাকালে পানির ঢল জায়গাটিকে মায়াময় বানিয়ে তোলে।স্বচ্ছ শীতল পানির তলদেশে পাথরের পাশাপাশি নিজের শরীরের লোমও দেখা যাবে স্পষ্ট।দীর্ঘ সময় জলপাথরের বিছানায় শুয়ে বসে ছবি তুলতে তুলতে আর গোসল করতে হয়তো সময়ের হিসেব হারিয়ে ফেলবেন।বিছনাকান্দি এর সৌন্দর্য অসাধারণ। দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত শুধু পাথর আর পাহাড়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় আকাশ আর মেঘের সাথে পাহাড়ের দলগুলো মিশে আছে।যতোই কাছে যাই পাহাড়গুলোর ততোই আকাশ থেকে যেন দূরে যেতে থাকে,আর পাহাড়ের গায়ে বেপরোয়া সাদা মেঘের দলগুলো যেন আঠার মতো লেগে থাকে।
পাথর,পানি,পাহাড় আর মেঘ নিয়েই যেন বিছনাকান্দি।এখানে যাওয়ার পর যে কথাটি সর্বপ্রথম মনে হবে তা হল প্রশান্তি।এই প্রশান্তিটুকু নিমিষেই ভুলিয়ে দেয় প্রতিদিনকার শত গ্লানি। প্রকৃতির সৌন্দর্যের কাছে যেন হার মানতেই হয় নাগরীক সভ্যতাকে,আর এই চরম সত্যটুকু উপলব্ধি করতে হলে আপনাকে চলে যেতে হবে বিছনাকান্দিতে।

ওরা বিছনাকান্দির অপরুপ দৃশ্য উপভোগ করে,
সন্ধ্যায় বাসায় চলে আসে।

চলবে কি?

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here