উপন্যাসের শেষ পাতায় তুমি পর্ব -৩৫+৩৬

#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_35

কপি নিষিদ্ধ ❌

ওরা সকালে উঠে নাস্তা করে বেরিয়ে পরে সাতছড়া জাতীয় উদ্যান দেখতে তার পর ওরা যায় খাসিয়া পল্লী দেখতে,

বাংলাদেশের সিলেট জেলা ও ভারতের আসামে এই
জনগোষ্ঠী বাস করে।খাসিয়ারা কৃষিজীবী।ভাত ও মাছ তাদের প্রধান খাদ্য।তারা মাতৃপ্রধান পরিবারে বসবাস করে।তাদের মধ্যে কাঁচা সুপারি ও পান খাওয়ার প্রচলন খুব বেশি।খাসিয়াদের উৎপাদিত পান সারা বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয়।

খাসিয়া পল্লী খুব সুন্দর,ওরা সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখছে,
খাসিয়ারা মিশুক প্রকৃতির হওয়ায় ওদের সাথে কথা বলছে,ওদের একেকটা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে,দুপুরে ওদের ক্ষুধা লেগেছিল খাসিয়ারা ওদের সাথে মিশে যাওয়ায় ওদের দুপুরের খাবারের দাওয়াত দেয়,কিন্তু ওরা প্রথমে মানা করে দেয় পরে খাসিয়াদের জোড়াজুড়িতে রাজি হয়ে যায়।খাসিয়ারা অনেক রকমের খাবার দিয়ে ওদের আপ্যায়ন করে,খাবারের শেষে খাসিয়া পান দিয়ে ওদের সমাদার করে।খাওয়া দাওয়া শেষ করে খাসিয়ারা ওদের নিয়ে যায় খাসিয়া পল্লীর পাশে অর্থাৎ পিছনের দিকটায় বাংলাদেশের রাংপানি নদী দেখাতে,রাংপানি নদীর সামনেই দেখা যাচ্ছে উঁচু উঁচু পাহাড়,পাহাড় গুলো মেঘালয় রাজ্যের সাইটে পরেছে এগুলো হচ্ছে মেঘালয়ের উঁচু উঁচু পাহাড়।নদীর পানি খুব সচ্ছ দেখতে কিছুটা জাফলংয়ের মতো,আজকের আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় হালকা হালকা বাতাস বইছে,ওরা সবাই নদীর পানিতে পা ডুবিয়ে সময়টা উপভোগ করেছে,সত্যি মনে হচ্ছে যেন অন্য দুনিয়ায় চলে এসেছে।
ঐখানে কিছুক্ষণ থেকে খাসিয়াদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওর বাসায় চলে আসে।
এর চারটি দিন ওদের সবার মনে গেঁ’থে থাকবে,ওরা এই চারদিনে অনেক কিছু দেখছে অজানাকে জেনেছে,
সবারই মনে হয়েছে আল্লাহর সৃষ্টি এতো সুন্দর কেন,এই দৃশ্য গুলো দেখলে নিমিষেই মন ভালো হয়ে যাবে,এই চারটি দিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই দিনগুলো যে ভুলবার নয়।

সকালে,
আজ আলিফার মেহেদী অনুষ্ঠান,সকাল থেকেই মেহেদী অনুষ্ঠানের আয়োজনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে,আলিফার মেহেদী ও হলুদের অনুষ্ঠান বাড়ির ছাদে হবে আর বিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে হবে বউভাতও কমিউনিটি সেন্টারে হবে,তো ছাদে সাজানোর কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে যায়,বাবুর্চিরা রান্না করা শুরু করে দিয়েছে,বউয়েরা গেস্টদের অ্যাপয়ন করছে,ছেলেরা বাকি কাজ গুলো করছে,
ওয়াহিদ অবান্তিকাও গতকাল চলে এসেছিল ওরাও অন্য কাজে লেগে পড়ে।
সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয় ৫ টায়,আয়েশাও বাকি বউরা,
আলিফা,আলিফার কাজিনরা সব পার্লারে চলে যায়,তিশা যায়নি কারণ তিশা তো নিজেই মেকআপ আর্টিস্ট।তিশা কাজ টাজ শেষ করে রুমে চলে আসে,
আলিফার হেয়ার স্টাইল করার জন্য ফুল লাগবে,
আলিফা ভুলে কম ফুল নিয়ে গেছে তাই ওসমান ওকে ফুল দিতে গিয়েছে।
তিশার মাথা ব্যাথা করায় তিশা শুয়ে আছে,ওসমান ওর মাথা মাসাজ করে দিচ্ছে,
জানপাখি মাথা ব্যাথা কমেছে?

না,ব্যাথায় মাথা ফে’টে যাচ্ছে।

আজ অনেক খাটাখাটুনি করছো তো তাই হয়তো মাথা ব্যাথা করছে।

হুম,আর এমনিতেও কিছু দিন ধরে মাথা ব্যাথা করে।

মেডিসিন নেও না।

হুম।

সমস্যা নেই মাথা ব্যাথা দ্রুত সেরে যাবে।

হুম।

মাথা ব্যাথার য’ন্ত্র’ণায় আর ওসমানের হাতের পরোশ পেয়ে তিশা আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়ে,তিশার ঘুম
ভা!ঙে ৭টায়,ও ওঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হতে বসে যায়।
আলিফার মেহেদী অনুষ্ঠানের ড্রেস কোড সবুজ,
ছেলেরা সবুজ পাঞ্জাবি ও মেয়েরা সবুজ শাড়ী পড়বে।
তিশা নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,শাড়ী পরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে মেকআপ করছে,
মেকআপ শেষে চুলটা পাকিস্তানী স্টাইলে বেনী করে সুন্দর একটা লুক ক্রিয়েট করেছে,বেনীর ভাজে ভাজে কাঠ গোলাপ গুঁজতে নিলে ওসমান ওর হাত ধরে,
হৃদয়হরনী এতো সুন্দর করে সেজে আমার হৃদয় হরণ করতে চাও বুঝি?

কই বেশি সাজিনি তো।

তোমার চোখের কাজলই আমার বুকে ঝ’ড় তোলার জন্য যথেষ্ট।

আজ কেনো যেনো ওসমানের কথায় তিশা লজ্জা পেল।

আমি ফুল গুঁজে দিব?

তিশা মাথা নাড়ায়।

ওসমান তিশার বেনীর ভাজে ভাজে কাঠ গোলাপ গুলো গুঁজে দিচ্ছে,ফুল গুঁজা শেষে তিশার কানে দুল পরিয়ে দেয়।
হাতে মেহেদী পরবে তাই হাতে আর চুড়ি পরেনি।
ওসমান তিশার কপালে চুমু দেয়,তিশাও আবেশে চোখ বন্ধ করে তা অনুভব করে।
চলো ছাদে যাওয়া যাক।

হুম চলো।

আয়েশা মেহেদীর ডালা নিয়ে স্টেজের দিকে যাচ্ছিল তখন কেউ ওর বাহু ধরে টান দিয়ে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে যায়,আয়েশা এতে খুব ভয় পেয়ে যায় ভয়ে আয়েশা চোখ বন্ধ করে রেখেছে।লোকটা ওর হাত থেকে ডালাটা নিয়ে পাশের টেবিলের উপর রাখে।
কি হলো মায়াবতী চোখ খুলবে না?

ওমরের গলার স্বর শুনে আয়েশা দ্রুত চোখ খুলে,
তুমি!

হ্যাঁ আমি,অন্য কাউকে আসা করছিলে বুঝি?

তোমার এই যখন তখন হাত ধরে টানাটানির অভ্যাস যাবে না?

এই জীবনে তো না।

উফফ।

মাশাল্লাহ খুব সুন্দর লাগছে,এত সুন্দর করে সেজে আমাকে তো পা’গ’ল করে দিয়েছো,এখন যে আমার তোমাকে ভালোবাসতে মন চাইছে।

এই একদম ন..
আয়েশার কথা শেষ হওয়ার আগেই ওমর আয়েশার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়,আয়েশাও খিঁচে চোখ বন্ধ করে ফেলে,
কিছুক্ষণ পর ওমর ওকে ছেড়ে দেয়।
এবার তুমি যেতে পারো।

আয়েশাও আর কোনো কথা না বলে হাতে ডালা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

আলিফাকে স্টেজে বসানো হয়েছে সবাই স্টেজে চলে এসেছে,মেহেদী আর্টিস্টরা আলিফা ও বাকি মেয়ে,
বউদের হাতে মেহেদী পরিয়ে দিচ্ছে,তিশা আয়েশাকে ওসমান ওমর মেহেদী পরিয়ে দিচ্ছে,সাউন্ড বক্সে গান বাজছে,হৈ-হুল্লোড় হচ্ছে,সবার মেহেদী দেওয়া প্রায় শেষ,ওসমান মেহেদী দেওয়া শেষে তিশার হাত উঁচু করে ধরে রেখেছে,
ওদের কাছে নিশি এসে বলে,
বাহ্ ওসমান ভাইয়া মেহেদীর ডিজাইনটা তো খুব সুন্দর হয়েছে।

থ্যাঙ্ক ইউ ভাবি।

আলিফা ওসমানকে বলে,
ভাইয়া অনেকদিন ধরে তোমার গান শুনি না,
ভাবিকে ডেডিকেট করে একটা গান গাও না।

সবাই ওসমানকে গান গাইতে বলে।

ওসমান হাতে মাইক নিতে তিশা দিকে তাকিয়ে গেয়ে উঠে,
Teri dooriyan mujh pe gunaah hain
Dil e chahat is ki gawah hai
Meri duniya teri fana hai
Yehi ishq ne mujh se kaha hai
Kuch mujh me tu aise basa hai
Koi mujh me na meri jagah hai
Kuch dekhoon toh tu dikh ta hai
Meri aankhoon mai teri nigha hai
Tujhse bicharke bakhuda main yahan
Ji na sakunga ik lamha

সবাই একসাথে ওসমানের সাথে বলে,
Araam ata hai deedar se
Tere mit jatay hain saaray ghamm
Hai yeh duya ke tujhe dekhte
Dekhte hi nikal jaye damm
Shukrana chahe mai jitna bhi karlun
Ke phir bhi rahay ga woh kamm
Tera tasawaar mujhe de ke maula na
Mujh pe kiya hai karam.

ওসমানের গান গাওয়া শেষে সবাই জোড়ে হাত তালি দেয় আর ওসমানের গানের প্রশংসা করে।

খাওয়া দাওয়া নাচ গানের মাধ্যমে আলিফার মেহেদীর অনুষ্ঠান শেষ হয়।

তিশাদের রুমের বেলকনিতে,
চেয়ারে ওসমান বসে আছে তিশা ওর কোলে বসে আছে,ওসমান ওকে জড়িয়ে ধরে আছে তিশাও ওসমানের বুকে হেলান দিয়ে আছে,ওরা দূর আকাশের চাঁদটা দেখছে,আজ জোছনা রাত এই জোছনা রাতের সুন্দর চাঁদটি দেখতে ওরা মগ্ন,
তিশা চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলে,
এই চারটি দিন কতো সুন্দর ছিল তাই না?

হুম।

তোমাকে নিয়ে তো অনেক জায়গায় ঘুরেছি,একাও অনেক জায়গায় ঘুরেছি,তবুও কেন যেন এই চারটি দিন অন্যরকম লাগছিল মনে হচ্ছিল চারিদিকে যেন প্রেমের আমেজ ছড়িয়ে ছিল,তোমার সাথে এই দিনগুলো খুব আনন্দে কাটিয়েছি।

আমিও,আসলে সিলেট শহরটাই এমন এখানের প্রকৃতির লীলাভূমির সৌন্দর্য সবার মনে প্রশান্তির দোলা দিয়ে যায়।

সত্যি সিলেট অনেক সুন্দর,আমার কাছে সিলেট হচ্ছে প্রেমরাজ্য।

তাহলে এই প্রেমরাজ্যে এই প্রেমময় রাতে নিজেদের ভালোবাসার কিছু মুহূর্ত এই প্রকৃতিকে উপহার হিসেবে দিয়ে যাই।
ওসমানের কথার অর্থ বুঝতে পেরে তিশা ওর বুকে
মুখ লুকায়।

আজ আলিফার হলুদ সন্ধ্যা,
ছাদে স্টেজ সাজানো হচ্ছে,বাবুর্চি রান্না করছে,
বাড়ির বউয়েরা ফল কা’টছে,এগুলো হলুদের সময় টেবিলে সাজানো হবে,তিশা নিশি মায়রা ডালা গুলো ইউনিক স্টাইলে ডেকরেইট করছে,আয়েশা সামিহা ইশরাত ফল কা’টছে।ডালা গুলোতে ফল, মিষ্টি, পুডিং, নুডলস সাজিয়ে রাখছে,সাজনো শেষে সব কিছু সুন্দর করে ঢেকে রাখে।কাজ শেষ করে আয়েশাসহ বাকিরা পার্লারে চলে যায় তিশা নিজের রুমে চলে আসে,
ওসমান রেডি হয়ে ওর ভাইদের সাথে বাহিরে গিয়েছে।
তিশা গোসল করে নিজেকে হলুদের সাজে সাজাতে শুরু করে।
আজকের হলুদের ড্রেসকোড খয়রী ও কালো।
ছেলেরা কালো পাঞ্জাবি আর মেয়েরা খয়েরী ও কালোর কম্বিনেশনে লেহেঙ্গা পরবে,বড়রা খয়েরী ও কালোর কম্বিনেশনে শাড়ী পরবে।
তিশা সাজ কমপ্লিট করে চুল সেট করছে।
আজ তিশা চুল গুলো স্ট্রেট করে নিচের দিকটা হালকা কার্ল করে ছেড়ে দিয়েছে,কপালে টিকলি পরেছে কানে বড় দুল হাতে খয়েরী ও কালো চুড়ি পরেছে।তিশার সাজ শেষ হয় ওসমানও রুমে আসে,ওসমান তিশার দিকে কিছুক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তিশার কাছে যায়,
ড্রেসিং টেবিল থেকে কাজল উঠিয়ে হাতে একটু কালি নিয়ে তিশার কানের পিছে লাগিয়ে দেয়,
মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে আরও একবার তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম।

তিশা ওসমানের গলা জড়িয়ে ধরে,
হাসবেন্ডজ্বী এভাবে ঘুরছেন কেন?

কিভাবে ঘুরছি জানপাখি?

এতো সেজেগুজে ঘুরছেন কেন মেয়ে পটাতে চান বুঝি?

তিশার কোমড় জড়িয়ে ধরে,
উহুম বউ পটাতে চাই।

সে তো আগে থেকেই পটে আছে এখন তো সে আপনার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।

একজন যেহেতু হাবুডুবু খাচ্ছে তখন আরেকজনকে প্রেমে ফেলা যাক।

হুম,পরে বিয়ে করে ফেলবে আর আমরা দুই সতীন মিলে একসাথে সুখে শান্তিতে ঘর করবো।

হাহা,এই কথা যদি ওমর বলতো তবে আয়েশা ওর বারোটা বাজিয়ে দিত।

হাহা বেশ বলেছো,আয়েশা দেবরজ্বীকে নিয়ে ওভার পসেসিভ,কিন্তু আমি না,কারণ আমি জানি আমার ওসমান কেমন,আমার ওসমানের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে।

যদি কখনো এই বিশ্বাস ভে!ঙে যায় তখন?

জানি এমনটা হবে না তবুও যদি হয় তবে আমি বুঝে নিব আমার ওসমান কোনো বি’পদে পড়ে বা কোনো কারণবসত আমার বিশ্বাস ভে!ঙেছে কেনো না ওসমান কখনো তার তিশাকে ইচ্ছে করে কষ্ট দিবে না।

এতো বিশ্বাস করো?

নিজের থেকেও বেশি,চলো এবার ছাদে যাই।

ওরা ছাদে যায়।
ইতোমধ্যে সব গেস্টরা চলে এসেছে।
আয়েশারাও পার্লার থেকে চলে এসেছে।

ওসসান,ওমর,নাহিদ,আহাদ,মাহমুদ,ইয়াশ,আলিফা
“Gulaabo” গানে নেচে নেচে স্টেজে এন্ট্রি নেয়।

তিশা,নিশি,আয়েশা,মায়রা,জেসমিন,সামিহা,
ইশরাত আর আলিফার কাজিনরা “Sasural Genda Fool”,”Teri ore” গানে নাচে।

তিশা,নিশি,আয়েশা,মায়রা,ইশরাত,সামিহা,তাদের পার্টনারদের উদ্দেশ্যে করে ” Saiyaan Superstar”
গানে নাচে।

ছেলেরা কয়েকটা গানে ডান্স পারফরম্যান্স করে।

মেয়েরাও কয়েকটি গানে ডান্স পারফরম্যান্স করে।

তিশা,নিশি,আয়েশা,মায়রা,ইশরাত,সামিহা,ওসসান,
ওমর,নাহিদ,আহাদ,মাহমুদ,ইয়াশ একসাথে
“Dil dooba” গানে নাচে।

সবার একসাথে নাচ গান খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়।

রাত চারটা,অবশ্য রাত বলা যায় না এ সময়টাকে ভোরই বলা যায়,
ওমরের রুমের বেলকনিতে,
#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_36

কপি নিষিদ্ধ ❌

ওমরদের রুমের বেলকনিতে এক চাদরে জড়িয়ে আছে আয়েশা ওমর,ওমর কিছুক্ষণ পর পর আয়েশার উন্মুক্ত পিঠে,ঘাড়ে,গোলায় ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে,আয়েশাও তা আবেশে গ্রহণ করছে,
হঠাৎ আয়েশা বলে উঠে,
আচ্ছা ওমর আমাদের মধ্যে কে বেশি ভালোবাসে?

তুমি মায়াবতী।

তুমি বেশি ভালোবাসো না?

বাসি কিন্তু তোমার তুলনায় একটু কম।
ওমরের এই কথা শুনে আয়েশা মন খারাপ হয়ে যায়,
ওমর আবারও বলে,
তুমি কেন বেশি ভালোবাসাে জানো?

আয়েশা মাথা নাড়ায় যার অর্থ সে জানে না।

আমাদের বিয়ে হয়েছে আজ ১১ মাস,তোমাকে ভালোবেসেছি আরো আগে,মোট ২৩ মাস ধরে তোমাকে আমি ভালোবাসি,আর তুমি আমাকে ৬০ মাস ধরে ভালোবাসো,তুমি আমার জন্য অনেক অপেক্ষা করছো আমাকে খুব করে চেয়েছো,অনেক অপেক্ষার পর তুমি আমায় পেয়েছো,কিন্তু আমার বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি বলতে গেলে খুব সহজেই তোমায় পেয়েছি,এবার তুমি বলো কে বেশি ভালোবাসে?

আয়েশা চুপ করে আছে কিছু বলছে না।

তুমি বেশি ভালোবাসো ঠিক আছে কিন্তু আমি তোমাকে আমার সবটা দিয়ে ভালোবাসি,আমি তোমার জন্য সব কিছু করতে পারি,আমি জানি তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো,আমি এটাও জানি তুমি আমাকে অনেক বিশ্বাসও করো।আসলে কে বেশি ভালোবাসে সেটা বড় কথা না সত্যিকারে ভালোবাসে এটা বড় কথা।তোমাকে আমি কখনো নিজের থেকে দুরে যেতে দিবো সবসময় আমি তোমার কাছাকাছি থাকবো,আমরা শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত একসাথে থাকবো।

শুধু মৃ’ত্যু’ই হবে আমাদের বি’চ্ছে’দের একমাত্র কারণ,
ভালোবাসি ওমর।

আমিও তোমায় ভিষণ ভালোবাসি মায়াবতী।

সকালে,
আজ আলিফার বিয়ে,
বাড়িতে আজ কোনো কাজ নেই,সবাই জুম্মার নামাজ শেষে কমিউনিটি সেন্টারে যাবে,
সকালে নাস্তা করে আলিফা ও বাকিরা পার্লারে চলে যায়,ছেলেরা গোসল করে মসজিদে চলে যায়।
তিশা নিজের রুমে রেডি হচ্ছে,
আজ হালকা বেগুনি রঙের পাথরের কাজ করা শাড়ী পড়েছে,শাড়ীর সাথে মিলিয়ে সাদা ব্লাউজ,কানে সাদা পাথরের ইয়া রিং পরেছে,হাতে সাদা চুড়ি পরেছে।কিন্তু চুল কিভাবে সেট করবে বুঝতে পারছেনা,বাঁধবে নাকি ছেড়ে দিবে।ওর ভাবনার মাঝে ওসমান নামাজ শেষ করে রুমে আসে,
কি হয়েছে জানপাখি কি ভাবছো?

দেখোনা কিভাবে চুল সেট করবো বুঝতে পারছি না বাঁধবো না ছেড়ে দিব,তুমি বলে দাও না কি করবো।

আচ্ছা,আমি চুল সেট করে দিচ্ছি।

ওসমান তিশার চুল কার্ল করে সামনে ডানপাশে রাখে আর বামপাশে কানের দিকটায় তিনটা সাদা গোলাপ ক্লিপ দিয়ে লাগিয়ে দেয়,গোলাপ গুলো বড় বড় ছিল তাই দেখতেও সুন্দর লাগছে।

জানপাখি তোমাকে খোলা চুলেই সুন্দর লাগে বিশেষ করে যখন কানের পাশে গোলাপ ফুল গুঁজো তখন আরো বেশি সুন্দর লাগে।

থ্যাঙ্ক ইউ,অনেক সুন্দর করে চুল সেট করেছো।

ওসমান মুচকি হেসে।
চলো জানপাখি সবাই আমাদের জন্য ওয়েট করছে।

হুম হুম চলো।

ওরা নিচে নেমে সবার সাথে কমিউনিটি সেন্টারে যায়।
আলিফাকে মাএই স্টেজে বসানো হয়েছে।
আলিফার বরের নাম আয়ান হোসাইন।আয়ানরা এখনো আসেনি।আলিফার রিলেটিভরা খাবার টেবিলে বসে,খাওয়া দাওয়া শেষ হয়।বরযাএী চলে এসেছে মেয়েরা গেইট ধরেছে টাকা ছাড়া আয়ানকে ভেতরে আসতে দিবে না,তো শেষমেশ টাকা দিয়ে আয়ানরা ভেতরে আসে,তাদের খেতে দেওয়া হয়,খাওয়া দাওয়া শেষে একটু রেস্ট নিয়ে বিয়ে পরানো হয়,সুন্দরভাবে সব নিয়ম অনুযায়ী আলিফা আয়ানের বিয়ে হয়।আলিফাকে আয়ানদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পরদিনও সুন্দর করে বউভাতের অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়,
আজ রাত আয়ান আলিফা রায়হানদের বাসায় থাকবে
কাল ওরা সবাই মিলে পাহাড়ে দেখতে যাবে তারপর
দিন সবাই যার যার বাসায় চলে যাবে।
বড়রা যার যার রুমে বিশ্রাম করছে ছোটরা সবাই ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
তো আড্ডার মাঝে তিশা বলে,
আচ্ছা আমরা তো প্রায়ই ট্রুট এন্ড ডেয়ার,গানের কলি আরো কতো কিছুই না খেলি বাট আজ অন্যরকম একটা খেলা খেলবো।

সবাই বলে,
কি খেলা?

আমরাতো সবাই বিবাহিত সব হাসবেন্ডরা তাদের
স্ত্রীদের চিনেছে জেনেছে,তাই এই খেলাটা বেস্ট এন্ড ইউনিক হবে।

আবারো সবাই প্রশ্ন করে,
বাট খেলাটা কি?

আপনাদের চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেওয়া হবে,
মূলত আপনাদেরকে আপনার স্ত্রীকে খুঁজতে হবে,
আমরা সব বউরা হাতে চুড়ি,কানে দুল,পায়ে নুপুর পরবো এবং তা দিয়ে আপনাদের ইশারা করবো,
আপনাদের হয়তো চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজে বা নুপুরের আওয়াজে আপনাদের স্ত্রীকে খুঁজে বের করতে হবে।বুঝছেন?

সবাই,
হুম।

জেসমিন আপু আর আলিফা আপনারা দেখবেন কেউ যেন চিটিং না করতে পারে।

জেসমিন,আলিফা,
ঠিক আছে।

তিশা সব বউদের উদ্দেশ্যে করে বলে,
ভাবি চলুন আমরা রেডি হয়ে আসি।

চলো।

সবাই তিশার রুমে যেয়ে রেডি হচ্ছে।
সবাই চুড়ি,নুপুর,কানের দুল পরছে।
তিশা বলে,
শুনো সবাই,যখন ওসমানের টাইম আসবে তখন সবাই একসাথে হাত নাড়াবে সবার চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজে ওসমান কনফিউজ হয়ে যাবে,ও সব সময় বলে ও নাকি আমার চুড়ির শব্দে আমাকে চিনে ফেলতে পারে,আজকে দেখবো আসলেই কি চিনতে পারে না কি না।

সামিহা বলে,
আহাদও বলে ও নাকি আমার নুপুরের শব্দ চিনে,আজ আমি নুপুরের আওয়াজ করবো না দেখবো ও আমাকে কিভাবে চিনে।

মায়রা বলে,
খেলাটা মজার হবে।

ইশরাত বলে,
হুম।

নিশি বলে,
হাসবেন্ডরা আমাদের কতোটুকু চিনে তার পরীক্ষাও হয়ে যাবে।

তিশা বলে,
হুম,তার জন্যই তো এই খেলা খেলতে চাচ্ছি।

ওরা আবার ছাদে চলে যায়।
জেসমিন আলিফা হাতে কাপড় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
এই কাপড় দিয়ে ওসমানদের চোখ বাঁধবে।
তিশা বলে,
নাহিদা ভাইয়া আপনার চোখ বেঁধে দেওয়া হবে আর চুড়ি বা নুপুরের আওয়াজে আপনার ভাবিকে খুঁজতে হবে।

প্রথমেই আমি!

হুম ভাইয়া।
জেসমিন নাহিদের চোখে কাপড় বেঁধে দেয়,সব বউরা পুরো ছাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়ায়,আলিফা নাহিদের বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেয়,সব বউরা হাত ঝাকায় এতো চুড়ির শব্দে নাহিদ কনফিউজ হয়ে যায়,ও সামনের দিকে পা বাড়ায় যেতে যেতে প্রায় নিশির কাছে চলে যায় তখন সবাই একসাথে পা নাড়ায় কিন্তু এবার নাহিদ বুঝে যায় কোনটা নিশি নাহিদ হাত বারিয়ে নিশিকে ধরে ফেলে।নাহিদ চোখের বাঁধন খুলে ফেলে।
দেখলে নিশি চোখ বন্ধ করেও তোমাকে চিনতে পারি।

নিশি নাহিদের কথায় মুচকি হাসে।

জেসমিন বলে,
এবার ওমরের পালা।

আমি কেন,আগে আহাদ ভাইয়াকে দাও।

না তোমার কথা বলেছি তুমিই দিবে।

হাহ্ কি আর করার নেও বাঁধো।
জেসমিন ওমরের চোখ বেঁধে দেয় আলিফা ওমরের বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেয়।আবারও সবাই হাত ঝাঁকাতে
শুরু করে আর ওমর ডান দিকে হাত বারিয়ে আয়েশার হাত ধরে ফেলে।ওমর চোখের বাঁধন খুলে ফেলে।
আলিফা বলে,
বাহ ওমর ভাইয়া একবারেই ধরে ফেললে।
ওমর কিছু না বলে উত্তরে মুচকি হাসি দেয়।
জেসমিন বলে,
এবার ইয়াশের পালা।

ওকে আপু।
জেসমিন ইয়াশের চোখ বেঁধে দেয় আলিফা ইয়াশের বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেয়।আবারও সবাই হাত ঝাঁকাতে
শুরু করে কিন্তু ইয়াশ বুঝতেই পারছে না কোনটা ইশরাত।ও একবার তিশার দিকে যাচ্ছে তো আরেকবার সামিহার দিকে কিন্তু ইশরাতকে খুজেই পাচ্ছে না,শেষে সামনে যেতে যেতে নিশির হাত ধরে,
ইয়াশ চোখের বাঁধন খুলে ফেলে।
নিশি বলে,
ওহহো ইয়াশ ইশরাত তো তোমার একদম কাছাকাছি ছিল তাও বুঝলে না।

কি করবো ভাবি এতো চুড়ির শব্দে কনফিউজ হয়ে
গিয়েছিলাম।
জেসমিন বলে,
এবার আহাদ ভাইয়ার পালা।

ওকে।
জেসমিন আহাদের চোখ বেঁধে দেয় আলিফা আহাদের বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেয়।আবারও সবাই হাত ঝাঁকাতে শুরু করে কিন্তু আহাদ পা বারায় না এবার সবাই পা নাড়ায় নুপুরের আওয়াজ শুনে আহাদ সামনের দিকে পা বাড়ায় কিন্তু আর্চযের বিষয় হচ্ছে সামিহা যে দিকে যাচ্ছে আহাদও সেইদিকে যাচ্ছে সবাই হাত নাড়াচ্ছে পা নাড়াচ্ছে কিন্তু আহাদ সামিহার দিকেই যাচ্ছে শেষমেশ ধরেও ফেলে।আহাদ চোখের বাঁধন খুলে ফেলে।
তোমাকে বলেছিলাম না আমি চোখ বন্ধ করেও তোমার নুপুরের আওয়াজ শুনে তোমায় চিনে ফেলবো।

সামিহা আহাদের কথায় খুশি হয়।
আলিফা বলে,
এবার দুলাভাইয়ের পালা।

ওকে শালি সাহেবা।
জেসমিন মাহমুদের চোখ বেঁধে দেয় আলিফা মাহমুদের বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেয়।আবারও সবাই হাত ঝাঁকাতে শুরু করে কিন্তু মাহমুদ প্রথমেই আলিফার হাত ধরে।মাহমুদ চোখের বাঁধন খুলে ফেলে।
ওহহো দুলাভাই তুমি তো প্রথমেই ফেল হয়ে গেল।

কি করবো শালি সাহেবা তুমিও হাত নাড়িয়েছিলে আর তুমিই আমার সামনে ছিলে তাই হেরে গেলাম।

তিশা হেঁটে হেঁটে ওসমানের সামনে যেয়ে দাঁড়ায়,
হাসবেন্ডজ্বী আজ দেখবো তুমি আমাকে খুঁজে বের করতে পারো কি না।

আমি তো তোমাকে সহজেই খুঁজে বের করে ফেলবো।

দেখা যাবে।
জেসমিন ওসমানের চোখ বেঁধে দেয় আলিফা ওসমানের বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেয়।তিশা বাদে সবাই হাত ঝাঁকায় কিন্তু ওসমান পা বারায় না,এবার তিশাসহ সবাই হাত ঝাঁকায়,ওসমানও চুড়ির আওয়াজ শুনে পা বাড়ায়,তিশা একদম ওসমানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ওসমান ওর দিকে আসছে দেখে তিশা ওসমানের পেছনে ছাদের একদম কোনায় চলে যায় ওসমানও পিছে ঘুরে তিশার দিকে যাচ্ছে,তিশা আবার অন্য কোনায় চলে যায় ওসমানও ওর পিছে পিছে যায়,এবার নিশি বুদ্ধি করে তিশার সামনে যেয়ে দাঁড়ায়,আসে পাশে কোনো শব্দ না শুনে ওসমান এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যায় ওসমান মূলত নিশির সামনেই দাঁড়িয়ে আছে আর তিশা নিশির পেছনে,চারিদিকে দিকে পিন পিন নিরবতা ওসমান হাত বারিয়ে নিশির পাশ কাটিয়ে তিশার হাত ধরে ফেলে,ওসমান চোখের বাঁধন খুলে ফেলে।
আলিফা বলে উঠে,
বাহ ভাইয়া ভাবিকে ধরেই ফেললে।

নিশি বলে,
আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আমার হাত ধরবে।

ওসমান মুচকি হেসে বলে,
দেখলে তোমাকে ধরেই ফেললাম তোমাকে চেনার জন্য আমার চুড়ির আওয়াজ শুনতে হবে না তুমি আশেপাশে থাকলেই আমি বুঝতে পারি তুমি ঠিক কোন দিকে আছো।

ওসমানের কথা শুনে তিশা মুচকি হাসে।

আলিফা বলে,
সত্যি খেলাটা অনেক মজার ছিল।

নাহিদ বলে,
হ্যাঁ তা তো ছিলই,এবার সবাই রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পরো,
কাল আবার পাহাড় দেখতে যাবো।সবাই নাহিদের কথা অনুযায়ী যার যার রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পরে,কিন্তু জেসমিন ওর রুমে যেয়ে সিহাবকে কল দেয়,
হ্যালো সিহাব।

হুম বেবি বলো।

কাল আমরা পাহাড়ে যাচ্ছি।

হ্যাঁ জানি তো।

আচ্ছা সিহাব কাজটা না করলে হয়না।

না বেবি তোমাকে কাজটা করতেই হবে।

কিন্তু..

কোনো কিন্তু না যদি আমাকে সত্যি ভালোবেসে থাকো তবে তুমি কাজটা করবে।

কিন্তু সিহাব..

জেসমিনের কথা না শুনেই সিহাব ফোন রেখে দেয়,
ধ্যাত সিহাব তো আমার কথাটাই শুনলো না এখন আমি কি করবো,আমি চাচ্ছি না কাজটা করতে কিন্তু ও তো আমার কথাই শুনলো না,কাজটা করা কি ঠিক হবে?

সকালে,
সবাই ঘুম থেকে উঠে হলরুমে চলে আসে,
ওয়াহিদের ইচ্ছে ছিল সবাই ফ্লোরে মাদুর বিছিয়ে একসাথে নাস্তা করবে,তো তার কথা অনুযায়ী বউরা কাজ করতে শুরু করে,সামিহা ইশরাত মাদুর বিছিয়ে দিচ্ছে,তিশা নিশি খাবার নিয়ে আসছে,আয়েশা মায়রা জেসমিন খাবারগুলো মাদুরের উপর সাজিয়ে রাখছে।সবাই একসাথে বসে মজা করে নাস্তাটা শেষ করে।সবাই একটু রেস্ট নিয়ে রেডি হয়ে পাহাড় দেখতে বের হয়।আজ ছোটদের সাথে বড়রাও যাবে।বড়দের মধ্যে রায়হান,রাবেয়া,ওয়াহিদ,অবান্তিকা যাবে।ওরা গাড়িতে উঠে বসে।
গাড়িতে,
তিশা লক্ষ্য করলো জেসমিনকে কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত দেখাচ্ছে।

কি হয়েছে আপু আপনাকে এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?

কই না তো তিশা।

জেসমিন মুখে না করলে তিশা বুঝতে পারছে জেসমিন কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করছে।

সামিহা বলে,
আপু আপনি অনেক মিশুক,আপনারা তিন জন এই আটদিনে আমাদের কতোটা আপন হয়ে গেছেন।

জেসমিন সামিহার কথায় মুচকি হাসে।

ওরা পৌঁছায় সেই পাহাড়ের সামনে,ওরা সবাই পাহাড়ের চূড়ায় উঠে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখবে।
তো যেইভাবা সেই কাজ,ওরা পাহাড়ে উঠছে,সুপারি গাছ কেটে কেটে পাহাড়ের গায়ে সিড়ি তৈরি করা হয়েছে,ওরা ঐ সিড়ি দিয়ে উঠছে।অবশেষে ওরা পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে সক্ষম হয়েছে।পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতিটা দেখতে অন্যরকম লাগছে।
জেসমিন খেয়াল করলো বাম পাশের দিকটায় একটা সাইন বোর্ড লাগানো সাইনবোর্ডে লেখা,
“D’a’n’g’e’r,
এ পাশের মাটি অনেক নরম পা পিছলে নিচে পরে যেতে পারেন তাই এদিকে কেউ আসবেন না”।
জেসমিন লেখাটা পড়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে নিচের দিকটা অনেক গভীর এখান থেকে পড়লে আর বেঁ’চে ফেরা সম্ভব নয়।
জেসমিন সাইনবোর্ডটা ঘুরিয়ে দিয়ে তিশার দিকে তাকায় কাকতালীয়ভাবে তিশাও ওর দিকে তাকায়,
ও তিশাকে হাত দিয়ে ইশারা করে এদিকে আসতে বলে,তিশাও আসে।
দেখো তিশা এখান দিয়ে নিচে তাকালে কতো সুন্দর একটা দৃশ্য দেখা যায়।
তিশা জেসমিনের কথা অনুযায়ী নিচে কি আছে তা দেখার জন্য একটু সামনের দিকে পা বাড়িয়ে নিচু হয়ে দেখতে যাবে তখনই জেসমিন ওকে জোরে ধা’ক্কা দেয়,
ধা’ক্কা দিয়ে জেসমিন সেখান থেকে সরে যায়।এদিকের মাটি নরম থাকায় তিশা জেসমিনের ধা’ক্কা স’হ্য করতে না পেরে পা পিছলে নিচে পরে যায় পরার সময় জোরে “ওসমান” বলে চিৎকার দেয়।

চলবে কি?

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here