এই অবেলায় তুমি পর্ব -১৩+১৪

#এই_অবেলায়_তুমি

#পর্ব_১৩

লেখিকা #Sabihatul_Sabha

নূরঃ আপু বয়ফ্রেন্ড নিয়ে বাসায় চলে আসছোস!!!?

নূরের কথা শুনে মাহির ভয়ে হাত পা জমে গেছে। এখন ও কি বলবে?
পিছন থেকে রুদ্র বলে উঠলো, ” বয়ফ্রেন্ড মানে!?
মাহি এবার বুঝলো বেচারি ভালো ভাবেই ফেঁসেছে।ও পারে না এবার কেঁদেই দেয়।
ফায়াজ রুদ্রের কন্ঠ শুনে তারাতাড়ি ওঠে পিছন ফিরে তাকায়।
ফায়াজ কে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠে নূর।
নূরঃ স্যার আপনিইইই!!!
ফায়াজঃ তুমি!!
সব কিছু কেমন যেনো গুলিয়ে যাচ্ছে।
রুদ্র চোখ ছোটো ছোটো করে তাকিয়ে আছে। মাহি বলে উঠলো, ” এই নূর তুই উনাকে চিনিস নাকি?”
নূরঃ তার আগে তুই বল! স্যার তোর রুমে কি করছে?আর তোর উপর পরলো কেমনে!?
মাহিঃ আজব উনাকে তুই স্যার বলছিস কেনো?আর পরলো কেমনে মানে।তুই তো এসে ধাক্কা দিয়ে আমার উপর ফেললি।

নূরঃ স্যার ডাকবো না তো কি তাহলে জিজু বলবো?
মাহি এবার রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বললো, ” বেশি পাকনা হয়ে গেছিস না।যেটা জিজ্ঞেস করেছি সেটার উত্তর দে?
নূরঃ হ্যাঁ উনি তো আমার স্যার হন। আমাদের ইংরেজি টিচার। কিন্তু উনি তোর রুমে কেনো? আল্লাহ আমি যা ভেবে ছিলাম তাহলে সব সত্যি!!

রুদ্র এতোক্ষন চুপচাপ সবার কথা শুনতে ছিলো,আর বোঝার চেষ্টা করছিলো আসলে কে কি বলছে, এবার রুদ্র বলে উঠলো, আজব নূর তুমি এটাকে এতো বড় করে দেখছো কেনো? ফায়াজ বাসার কিছুই চিনে না। তাই হয়তো ঘুরতে ঘুরতে এই রুমে চলে এসেছে।”
ফায়াজের কলিজায় এতক্ষনে মনে হয় পানি এসেছে। বেচারা দুই বোনের কথার মাঝ খানে ফেঁসে গিয়ে ছিলো।
ফায়াজঃ হুম রুদ্র একদম ঠিক ধরে ছিস আমি তো হাঁটতে ছিলাম আর বাসাটা দেখতে ছিলাম। হঠাৎ একটা কাকের কন্ঠ শুনতে পেলাম। আমার মনে হলো কাক ময়ূর সাজতে চাচ্ছে তাই একটু দেখতে আসলাম। এসেই ফেঁসে গেলাম।”
মাহি রেগে কটমট করে বলে উঠলো, ” এই বেয়াদব ছেলে একদম কাক বলবেন না। জানেন আমার ফ্রেন্ডরা কি বলে? আমার কন্ঠ অনেক সুন্দর।চাইলেই আমি অনেক বড় লেডি সিঙ্গার হতে পারনো।”
ফায়াজ হাসতে হাসতে বললো,” আপনার কথা শুনেই বুঝা যাচ্ছে। আপনার ফ্রেন্ডদের রুচি কেমন!! ”
মাহিঃ আপনি কিন্তু আমাকে অপমান করছেন!
ফায়াজঃ যার মান নেই তাকে আবার অপমান করে কিভাবে?
মাহিঃ ভালো হচ্ছে না কিন্তু!!
ফায়াজঃ কেনো ওই দিন যে আমাকে রাস্তায় সবার সামনে সার্কাসের জোঁকার বানিয়ে ছেন মনে নাই।
মাহিঃ তাহলে আজ ওই দিনের সুদ টা নিলেন বুঝি।

নূরঃ চুপ করবি তোরা!! আসলে আমার মাথায় ঢুকছে না কি হচ্ছে!! রুদ্র ভাইয়া আপনি স্যারকে চিনেন কিভাবে?
রুদ্রঃ ফায়াজ আমার বন্ধু। আর আজকে আমি ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে এসেছি।
নূর আবার বলে উঠলো, ” মাহি আপু চিনো কিভাবে?
এবার মাহি প্রথম থেকে লাস্ট পর্যন্ত সব বললো।
সব শুনে নূর হাসতে হাসতে গিয়ে রুদ্রের কাদ জড়িয়ে ধরলো। যখন বুঝতে পারলে সে ভুল জায়গায় ভুল মানুষকে জড়িয়ে ধরেছে সাথে সাথে দূরে চলে গেলো।

মাহি ফোনে রিং হলো। মাহি ধরে “হ্যালো” বললো। সাথে সাথে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো, ” তুই এখন কোথায়?”
……..
মাহিঃ তুই ওখানেই থাক। আমি এখনি আসছি!প্লিজ তুই কোথাও যাবি না।
……….
মাহিঃ তুই তাহলে আমার কথা শুনবি না?দেখ তুই যদি আমার কথা না শুনিস আমি একদম তোর সাথে আর কথা বলবো না।
……….
মাহিঃ আচ্ছা আমি আসছি!
মাহির চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। মাহি রুদ্রের দিকে তাকালো। না এইলোক কে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এই লোককে দেখলেই ওর শ্বাস আটকে আসে। উনার সামনে কাউকে কিছু বলতে পারবে না। আর রাতের মধ্যে ওকে একা বাসা থেকে বের হতে দেবে না। কিন্তু সে তো এখন কারো কথা শুনবে না। এখন ওকে বের হতেই হবে।একা বের হওয়ার চেয়ে ভালো এই ফায়াজ ছেলেটাকে নিয়ে বের হবে। যা ভাবা তাই কাজ।
মাহি ফায়াজের হাত ধরে বললো, ” চলুন আমার সাথে ”
ফায়াজ অবাক হয়ে মাহির ধরা হাতটার দিকে তাকালো। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না। এই মেয়েটার প্রতি সে প্রচুর দুর্বল। এই যে হাত ধরেছে তার বুকের ভেতর মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি পিঠানো শুরু হয়ে গেছে।ফায়াজ কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না। চুপচাপ মাহির সাথে হাঁটা শুরু করলো।

পিছন থেকে নূর বলে উঠলো, ” এই আপু কোথায় যাচ্ছিস? প্রেম করার হলে সামনে বসে কর না। চিপা চাপায় যাচ্ছিস কেনো? স্যারের প্রেম দেখার ভাগ্য আমারও হোক!!..
রুদ্র নূরের কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বললো,” তুমি চাইলে আমি তোমাকে আমার সামনে বসিয়ে প্রেমের ক্লাস করাতে পারি.. ”
নূর অবাক হয়ে রুদ্রের দিকে তাকালো। এই বেটার কি মাথা ঠিক আছে, কি বলছে কি!!?

মাহি পিছন ফিরে কটমট দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে গেলো ফায়াজ কে নিয়ে।

পুরো ঘটনা রুদ্রের সামনে ঘটলেও রুদ্র টু শব্দও করলো না।নূরের দিকে তাকিয়ে বললো,” তারাতাড়ি পাঁচ মিনিটের মধ্যে বই নিয়ে আমার রুমে আসো.. ”
নূর ঝটপট বলে উঠলো, ” কেনো আপনি কি এখন প্রেমের ক্লাস করাবেন আমাকে!!?
রুদ্রঃ কেনো তুমি কি করতে চাও নাকি?তুমি করতে চাইলে আমার কোনো সমস্যা নেই..
নূর কিছু বলছে না। কি বলবে আসলে সেটাই খুঁজে পাচ্ছে না।
রুদ্র আবার বলে উঠলো, ” তারাতাড়ি আমার রুমে বই নিয়ে আসো।বলেই নিজের রুমে চলে গেলো।

নূর নিজের রুমে যাওয়ার সময় খেয়াল করে রুহির রুমের দরজা খুলা।উঁকি মেরে বুঝলো রুহি ওয়াশরুমে।নূর এক দৌড়ে নিজের রুমে গেলো। আবার এক দৌড়ে রুহির রুমের সামনে আসলো।তারপর আসতে করে ওয়াশরুমের দরজার সামনে কলার ঠুসা রেখে নিজের রুমে চলে গেলো।

কিছুক্ষন পর ও বাবাগোওওওওও আমার কোমর গেলো গোওওওওওও। রুহির চিৎকার শুনে নূর নিজের রুমে বসে বসে হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ। আহা রুহি বেচারি যাক পা টা একটু ভালো হয়ে ছিলো। এখন আবার কোমর।এখন তো আবার এক সপ্তাহ খাট থেকে নামতে পারবে না।

রুদ্রের রুমে টেবিলে বই সাজিয়ে চুপচাপ চেয়ারা গালে হাত দিয়ে বসে আছে নূর।
রুদ্র আবার বলে উঠলো, ” কি হলো বলছো না কেনো? রেজাল্ট কবে দিবে?.
নূর পারে না হাত পা ছড়িয়ে কান্না করে। ও কিভাবে বলবে যে রেজাল্ট দিয়ে ফেলেছে। এখন যদি বলে। তাহলে রুদ্র বলবে রেজাল্ট কার্ড দেখাও!! তখন ও কি করবে!! এক বিষয় না, দুই বিষয় না, তিন বিষয় ফেল আসছে।আব্বু শুনলে কথা বলা বন্ধ করে দিবে।আম্মু শুনলে বকা দিবে। না! না! না রুদ্র কে বলা যাবে না। কিছু একটা ভেবে মিথ্যা বলে রুদ্র কে বুঝিয়ে নিতে হবে।
নূরঃ ভাইয়া রেজাল্ট তো এখনো দেয়নি।আর কবে দিবে তাতো জানি না। যেদিন দিবে আপনাকে সবার আগে বলবো।প্লাস্টিকের হাসি মুখে ঝুলিয়ে বললো।
রুদ্র নূরের মুখের রিয়াকশন আর কথার ধরন দেখেই বুঝে গেলো নূর মিথ্যা বলছে।
ফায়াজঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আমি ফায়াজের কাছ থেকে নিয়ে নেবো।
নূরের মন চাচ্ছে ওই ফায়াজ বেটাকে উগান্ডায় পাঠায় দিতে।এখন যদি ফায়াজ সত্যি টা রুদ্র কে বলে দেয় ওর কি হবে!!..

———

দরজার কাছে এসেই হুঁচট খেয়ে পড়লো ফায়াজ।
মাহি বিরক্তকর দৃষ্টিতে ফায়াজের দিকে তাকিয়ে বললো,”সামনে তাকিয়ে হাঁটুন না। আমাকে কি আর কখনো দেখেন নি?
মাহির কথা শুনে ফায়াজ একটু লজ্জা পেলো।
আদিবা মুচকি মুচকি হাসছে।সেই গাড়ি থেকেই খেয়াল করেছে ফায়াজ একটু পর পর আরচোখে মাহির দিকে তাকাচ্ছে। আর এখন তো হুঁচট খেয়ে পড়লো।

মাহি ড্রয়িং রুমে আসতেই ওর আম্মু এসে বললো,” কি রে কোথায় গিয়ে ছিলি?”
মাহিঃ আম্মু আমি আদিবার বাসায় গিয়ে ছিলাম। তারপর আদিবা কে দেখিয়ে বললো, আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আম্মু।
আদিবা ভয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। যেখানে নিজের মামা-মামি ওকে বের করে দিয়েছে। সেখানে ওনারা তো ওর কেউ না। এর আগে কখনো আসা হয়নি মাহিদের বাসায় আজ প্রথম তাই ঠিক কাউকে চিনে না। তবে ওর মনে চিনতা ঢুকে গেছে আজ রাতের জন্য যদি তারা ওকে জায়গা না দেয় ও কোথায় যাবে?

বাহ্ ভারি মিষ্টি মেয়ে তো।বলে আদিবার কাছে গিয়ে মাহির মেঝো আম্মু বলে উঠলো, ” নাম কি তোমার?

আদিবা ভয়ে ভয়ে বললো, ” আদিবা তাবাসসুম”
~বাহ্ খুব সুন্দর নাম তো। কিন্তু তুমি ভয় পাচ্ছো কেনো? তুমি মাহির বান্ধবী মানে, মাহি যেমন আমাদের মেয়ে তুমি ও মেয়ের মতোই।
আদিবা উনার কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো।
মাহিঃ মেঝো আম্মু শুনো না!..
~হুম বল?
মাহিঃ আম্মু আদিবা কিছু দিন এখানে থাকবে।
~তো কি হয়েছে যত দিন ইচ্ছা থাকুক।শুনো মা তোমার যত দিন ইচ্ছা নিজের বাসা মনে করে থাকবে।
মাহি ওর মেঝো আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বললো, ” এই জন্যই তোমাকে আমি এত এত এত ভালোবাসি।

মাহির আম্মু বললো, ” কিন্তু তোমার আম্মু আব্বুকে বলে এসেছো তো? নাহলে তো উনারা টেনশন করবে।

সাথে সাথে আদিবার চোখ জলে টইটম্বুর হয়ে গেলো।
আদিবার চোখে জল দেখে বলে উঠলো, ” কি হয়েছে তোমার চোখে জল কেনো?”
আদিবাঃ আমার আম্মু আব্বু নেই… আমার যখন দশ বছর তখন একটা বালু ভর্তি ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আব্বু আম্মু মারা যায়।আমার বাবা একজন উকিল ছিলেন। শত্রুরা আব্বুকে মারতে চেয়ে ছিলো কিন্তু সেই গাড়িতে আম্মুও ছিলো। আমি একদম এতিম হয়ে যাই। আমার আব্বুর ভাই বোন কেউ ছিলো না। আব্বু একজন ছিলেন। মাথার উপর থেকে সব ছায়া সরে যায়। আমি এত টুকু একটা মেয়ে কি করবো বুঝে পাই না। ছোট থেকেই আম্মু আব্বুর কলিজার টুকরো একটা মাত্র মেয়ে ছিলাম আমি। কষ্ট কি তা কখনো বুঝতে পারিনি। তখনি আমার ছায়া হয়ে পাশে এসে দাঁড়ালো আমার মামা-মামী। আমি তাদের সাথে থাকতে শুরু করি। প্রথম প্রথম কয়দিন খুব আদর করেন আমার মামী কিন্তু বেশি দিন আর মুখোশ পরে থাকতে পারেন নি। নিজের আসল রূপে ফিরে আসেন। আমাকে দিয়ে কাজ করাতো করতে না পারলে মারতো। আমি কোনো দিন কাজ করিনি কিছুই পারতাম না। তবুও ছোটো ছোটো হাত দিয়ে করর চেষ্টা করতাম। মামী আমার পড়াশোনা বন্ধ করে দিলো।অনেক কান্না করেছি।মামীর পায়েও ধরেছি কিন্তু আমার কথা শুনেন নি। আমি পড়াশোনায় খুবই ভালো ছাত্রী ছিলাম। কয়েক দিন স্কুলে না যাওয়াতে বাসায় পিন্সিপাল স্যার আসলেন আমার খুঁজ করতে। মামী সবার সামনে এমন ভাব করতেন যেনো উনি আমাকে চোখে হারান।পিন্সিপাল স্যারকে বলেন আমার শরীর ভালো না। তাই যেতে পারিনি কাল থেকে আবার যাবো।বিশ্বাস করেন ওই দিন আমি এতটাই খুশি হয়েছিলাম র‍্যে খুশিতে কান্না করে দেই। কিন্তু বেশিক্ষন আর আমার সেই খুশি রইলো না। মামী এসে আমার চুলের মুঠি টেনে বলে ছিলো,” দেহ রূপ দেখাইয়া সবাইরে হাত করে নিছস। পুরাই মার মতো বে*** হইছোস।তোর এই রূপ যদি আমি শেষ না করছি।কয়জন রে পাগল করছোস এই রূপ দেহাইয়া।যে খুঁজ নিতে বাড়িতে চইলা আইয়ে।পুরাই মারে উল্টাইয়া আইছোস।কয়না ময়লা ধুইলেও কয়লা যায় না।মা যেমন ছিলো জ্বি তো তেমনি হইবো।
মার নামে এমন কতা শুনে চুপ থাকতে পারিনি সেই দিন। প্রতিবাদ করেছিলাম তার বিনিময় মামী গরম তেল ঢেলে দিয়ে ছিলো আমার গায়ে। ব্যাথায় ছটফট করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ছিলাম ওই দিন।আমার যখন ১৬বছর তখন বাসার পুরো কাজ আমি একা হাতে সামলে স্কুলে যেতাম। একদিন মামীর ছোট বোনের ছেলে আসে মামীর কোনো ছেলে মেয়ে ছিলো না। এই ছেলেটাকে খুব আদর করতো। ছেলেটার চাহনি আমার ভালো লাগতো না।সব সময় কেমন করে যেনো তাকিয়ে থাকতো।একদিন বাসায় আমি একা ছিলাম। মামা মামী বাহিরে গিয়ে ছিলো।আমি রান্না ঘরে রান্না করছি আচমকা কেউ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে….

চলবে….

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।#এই_অবেলায়_তুমি

#পর্ব_১৪

লেখিকা #Sabihatul_Sabha

পিছন থেকে আচমকা কেউ জড়িয়ে ধরায় আমি ঘাবড়ে যাই।বাসায় তো কেউ নেই তাহলে কে জড়িয়ে ধরলো? তখনি মামীর বোনের ছেলের কথা মনে পরে। রাগে আমার সারা শরীর কাপতে থাকে।হাতে গরম খুন্তি ছিলো।ওই ছেলে যেই হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো ওই হাতে গরম খুন্তি চেপে ধরি।সাথে সাথেই ছেলেটা চিৎকার দিয়ে উঠে। খুন্তিটা এতই গরম ছিলো যে খুন্তির সাথে হাতের চামড়া ও উঠে আসে।তখনি মামা-মামী বাসায় আসে। নিজের বোনের ছেলের এই অবস্থা দেখে মামী আমাকে মারতে আসে। তখন আমি মামীকে বলি আমাকে জড়িয়ে ধরায় এমন করেছি। কিন্তু মামী আমার কথা বিশ্বাস যায়নি।খুব মেরে ছিলো।সেই একি খুন্তি আমার হাতে চেপে ধরে ছিলো।রাতে মামীর রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শুনতে পাই। মামী বলছে,” খবরদার আশিক আদিবার দিকে নজর দিবি না। একবার যদি হাতের বাহিরে চলে যায়।তাহলে আমার সব প্লেন শেষ হয়ে যাবে।ওর বাবার সব সম্পত্তির মালিক ও। নিশ্চয়ই ওই বেটা জানতো মারা যাবে তাই সব সম্পত্তির আদিবার নামে লেখে দিয়ে গেছে।২২বছর আগে ওকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। ২২বছর পর ওকে যে বিয়ে করবে। অর্ধেক সম্পত্তির মালিক সে নিজে হবে।এই সব কিছু আদিবা জানে না। তুই ওর সামনে ভালো সেজে থাক।আমি তোর সাথে ওর বিয়ে দিবো।বিয়ের কয়েক দিন পর সম্পত্তি সব নিজের নামে করে নিবি। তারপর মন চাইলে নিয়ে সংসার করবি না হলে ছুঁড়ে ফেলে দিবি।”এই সব কথা শুনে সেই রাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।এই সম্পত্তির লোভে তাহলে মামী মামা আমাকে পালছে!!আর আজকে বাসায় দেরি করে ফিরবার কারনে মামী মামার কাছে বিচার দেয়। মামা আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। বলে থামলো আদিবা।

আদিবার জীবন কাহিনি শুনে সবার চোখে জল চলে আসলো।
মাহির মেঝো আম্মু আদিবা কে জড়িয়ে ধরলেন নিজের বুকের সাথে।

আদিবাঃ সে কি আন্টি আপনি কান্না করছেন কেনো?
~আজ থেকে তুমি এই বাসায় থাকবে।আমাদের আরেক মেয়ে হয়ে।কি রে বল হবি না আমাদের আরেক মেয়ে?
আদিবার চোখে দিয়ে পানি পরছে।
মাহির আম্মু এসে ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো। আমাদের আরেক মেয়ে। আজ থেকে আমার তিন মেয়ে।
আদিবা মাথা নিচু করে বললো। আন্টি আমি তিনটা টিউশন করাই। আমি যত দিন এই বাসায় থাকবো টাকা দিয়ে থাকবো।

~বুঝতে পেরেছি আমাদের আপন ভাবতে পারোনি এখনো।
আদিবাঃ প্লিজ আন্টি এভাবে বলবেন না। আপনারা থাকতে দিয়েছেন এই ঋণ আমি কোনো দিন বুলবো না।নিজের মেয়ে বলে বুকে টেনে নিয়েছেন।আর ঋণী করবেন না প্লিজ।

ঠিক আছে তোমার যেভাবে ভালো লাগে থাকো।নিজের বাসা মনে করে থাকবে।
মাহি আদিবাকে আবিরের পাশের রুমটা গুছিয়ে দে।
আবিরের নাম শুনেই কেঁপে উঠল আদিবা।মাহি মুচকি হেসে বললো, ” ঠিক আছে মেঝো আম্মু। বলে উপরে চলে গেলো”…

ফায়াজের নিজের ও খুব কষ্ট হলো আদিবার কথাগুলো শুনে। মা-বাবা ছাড়া বেঁচে থাকা কতটা কষ্টের এক মাত্র তারাই বুঝে যাদের মা-বাবা নেই।

——

নূরের রুমের সামনে গিয়ে শুভ্রতা বললো,” নূর আসবো?”
নূরঃ আরে ভাবি তুমি। আমাকে বললেই হতো আমি চলে যেতাম।কষ্ট করে আসতে গেলে কেনো।আসো ভেতরে আসো।
শুভ্রতাঃ কি করছো?
নূরঃ কিছু না ভাবি,তুমি বসো।তোমাকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে।শাড়ি পরেছো।ভাই তো আজকে চোখ ফেরাতে পারবে না।
শুভ্রতাঃতোমার ভাইয়ের আমার দিকে তাকানোর সময় কই।উনার তো সারাদিন রাত কাজ শেষ হয় না।
নূরঃ আজও বুঝি ভাই তোমাকে ঘুরতে নিয়ে যায়নি। আহা ভাবিটা আমার রাগ করো না। ভাইয়ার আশা করলে এই জীবনে আর তোমার ঘুরা হবে না।আমি কালকে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। এবার একটু হাসো।
শুভ্রতা নূরের গাল টেনে বললো,” জানো তুমি খুব মিষ্টি একটা মেয়ে। আমার আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া তোমার মতো মিষ্টি একটা মেয়ে যেনো আমার হয়।
নূরঃ এতো মিষ্টি মিষ্টি বলো না। দেখা যাবে আমার দিকে মিষ্টির নজরে তাকাবে পরে ডায়বেটিস হয়ে যাবে।
শুভ্রতাঃ হি হি হি তাই নাকি?পরে বসে আড্ডা দিবো এখন নিচে চল খাবার খাবে!!
নূরঃ আসলে ভাবি আমি খাবো না।
শুভ্রতাঃ কেনো খাবে না? মন খারাপ কেনো?কিছু কি হয়েছে?
নূরঃ কিছু হয়নি এমনি খাবো না।
শুভ্রতাঃ এত কথা শুনতে চাই না আমি চল আমার সাথে।

নূরঃ ভাবি প্লিজ জোর করো না।

শুভ্রতা বুঝলো এই মেয়ে এক কথার মেয়ে। যা বলেছে তাই। বাধ্য হয়ে শুভ্রতা নিচে চলে গেলো।

——

মাহি উপরে যাওয়ার সময় ফায়াজের সাথে খেলো এক ধাক্কা।
মাহিঃ এই যে চোখে দেখেন না!! কাঠের চশমা পড়েছেন নাকি?
ফায়াজ নিজের চোখের চশমাটা হাতে নিয়ে ভালো করে দেখে৷আবার চোখে দিলো।
ফায়াজঃ আপনি দেখে চলতে পারেন না,কি ব্যথা ঈ না পেলাম আমি ওওফফ্।
মাহিঃ আপনি নিজে দোষ করে আমাকে যা তা বলা হচ্ছে। আপনাকে তো আমি পরে দেখে নিবো!!
ফায়াজঃ যা দেখার এখনি দেখে নেন৷ আমি তো আপনার সামনেই দাড়িয়ে আছি। মুচকি হেসে…
মাহিঃ আপনাকে তো আমি!!..
ফায়াজঃ কি,কি বলেন। থামলেন কেনো?
মাহিঃ আস্ত একটা বেয়াদব!! বলে উপরে চলে গেলো।
ফায়াজঃ কি ডেঞ্জারাস মেয়েরে বাব্বাহ্ দুই বোন পুরাই এক।

সে কি ফায়াজ বাবা তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? আসো এখানে এসে বসো।

রুদ্র ও নিচে নিমে আসলো।আম্মু খাবার দাও।ফায়াজ চল।বলে ফায়াজ কে নিয়ে খাবার টেবিলে বসলো।

নূর রেগে বোম হয়ে আছে। রুদ্র যখন শুনেছে ও তিন বিষয় ফেল।কিছু সময় চুপ করে থেকে তারপর ৫০বার কান ধরে উঠ বস করিয়েছে।শুধু করালে এতোটা রাগ তো না। ওই সাদা হনুমান ভিডিও করেছে।নূরের মন চাচ্ছে নিজের চুল নিজেই ছিরতে।পা গুলো ও খুব ব্যথা করছে।রাগ করে খাবার খেতে যায়নি।সবাই এসে ডেকে গেছে রুম থেকেও বের হয়নি।

——

ফায়াজ চলে গেছে। অনেকক্ষন হবে। অনেক বার বলেছে থাকার জন্য কিন্তু ফায়াজের কালকে কলেজ আছে তাই চলে গেছে।

রুদ্র হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে নূরের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। দরজা টোকা দিতেই দরজা খুলে দিলো নূর। রুদ্র কে দেখেই রেগে গেলো। এই বেটা এখানে কেনো এসেছে।
রুদ্র রুমে না ঢুকেই নূরের হাতে খাবারের প্লেট দরিয়ে দিলো।
রুদ্রঃ পুরো খাবারটা দশ মিনিটে খেয়ে শেষ করবে। দশ মিনিট পর আমি আবার আসবো। আর যদি না খাও বলে সামনে নূরের কান ধরে উঠ বস করার ভিডিওটা ধরলো। এটা সবাই কে দেখিয়ে দেবো।
নূরঃ আরেহ ভাইয়া আমি পাঁচ মিনিটে খেয়ে শেষ করছি। আপনি তাও এই ভিডিও ডিলিট করে দেন প্লিজ। কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো।
রুদ্রঃ বেশি কথা আমার পছন্দ না । বলে চলে গেলো।

——

তুমি আসবে বলে বসন্ত এসে ফিরিয়েছে চৌকাট,,
তুমি আসবে বলে শিশিরে শিশিরে ভরে গেছে মাঠঘাট,, [২]
মনের জানালা খোলেছে পাল্লা আলো মন একাখার
যেনো হাজারো স্বপ্ন ভুলে অযত্ন রামধনু পারাপার[২]
তুমি আসবে বলেই,,
তুমি আসবে বলেই করিঘাট শুনে বাদল বেলার ঘুম।
তুমি আসবে বলেই হঠাৎ আনন্দে দুপুরটা নির্ঝুম[২]
তুমি আসবে বলেই পাকনা সংশয় এ হাওয়ায়,,
বৃষ্টি ধারায় ঝাপসা তারায় সুখের শান্তনায়,,[২]
তুমি আসবে বলেই,,……🎶

বিদ্যুৎ চলে গেছে। অন্ধকারে জোনাকি পোকাগুলো আলো জ্বালিয়ে নূর আর আদিবা কে পাহাড়া দিচ্ছে। আজ রাতটা যেনো অন্য রাতগুলোর থেকে শতগুণ বেশি সুন্দর লাগছে।

নূরঃ ঘুমাবে না আপু।
আদিবাঃ হুম চলো, সকালে আবার উঠতে হবে।
নূরঃ আরে আপু আমাদের বাসায় কিন্তু সকাল সকাল কেউ ওঠে না।আর কাল তো তোমার ভার্সিটি বন্ধ।
আদিবাঃ সকাল সকাল উঠে অবাস হয়ে গেছে।

——

রুহি একটা নাইটি পরে রেডি হয়ে এসে দেখে। আদি মোবাইলে গেমস খেলছে।

রুহি পিছন দিয়ে গিয়ে আদিকে জড়িয়ে ধরে বললো,” গেমস রাখো, ঘরে যে বউ আছে সে দিকে খেয়াল আছে তোমার!!

রুহির কথায় আদি বিরক্ত হয়ে বললো,” আহা ছাড়ো ত,গেমস খেলছি দেখছো না।”

আদির কথা শুনে রুহি রেগে বললো, ” সারা দিন তো বাসায় থাকো না। কোথায় থাকো তুমি সারা দিন। আব্বু বললো কাজেও যাও না। তাহলে সারাদিন করটা কি?আর এখন রাতে একটু কাছে পাই। তাও পরে আছো গেমস নিয়ে। আসলে তুমি চাচ্ছ টা কি?

রুহির কথায় আদি আরো বিরক্ত হয়ে, হাতটা যারা দিয়ে ফেলে দিয়ে বললো,” যাও একটু বাসায় এসেছি। তোমার এই ঘ্যান ঘ্যান ভালো লাগে না।তোমার না কোমরে ব্যথা পেয়েছো যাও ঘুমাও।”

রুহি চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পরলো। সে দিন দিন বুঝতে পারছে।আসলে আদির সাথে ভালোবাসার অভিনয় করতে গিয়ে। সে কত বড় ভুল করেছে।আজ তার নূরের একটা কথাই বার বার মনে পরছে”যে পুরুষ এত বছরের ভালোবাসাকে দুই দিনের সুখের জন্য ভুলে যেতে পারে। সে পুরুষ কখনো এক নারীতে আসক্ত হতেই পারে না। সে দুই দিন পর সুখ কুড়ানোর জন্য আবার অন্য নারীর কাছে যেতে পারে।যে পুরুষের জন্য আজ তুই আমার সাথে এত বড় বড় কথা বলছিস। একদিন এই পুরুষের জন্যই তুই কাঁদতে হবে” নূরের কথা তো মিলে যাচ্ছে। আজ সে কাঁদছে। আজ তার চোখের পানি বাঁধ মানছে না।ভুল করেছে সে অনেক বড় ভুল করেছে।যাকে কষ্ট দিতে চেয়েছে সে সুখে আছে।

———

আদিবা সকালে উঠে আগে গোসল করে নিলো।তারপর নামাজ পড়ে কোরআন তিলাওয়াত করছে।

আবির সব সময় সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে কফি খেয়ে হাঁটতে বের হয়।আজ সকালে উঠে নূরের রুম থেকে কোরআনের তিলাওয়াত এর কন্ঠ শুনে অবাক হয়ে যায়। নূর এতো সকালে উঠে না। আবার কোরআন তিলাওয়াত করছে। দরজার সামনে গিয়ে দেখলে দরজা খোলা।ভেতরে কি উঁকি দিবে কি না ভাবছে।হালকা করে দরজা ধাক্কা দিলো।ভিতরে না ঢুকে দরজার কাছ থেকে দেখলো একটা মেয়ে বসে আছে নিচে। সামনে কোরআন শরিফ চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে। হয়তো একটু আগে গোসল করেছে। ভালো করে মুছেনি।আবির মুগ্ধ হয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে তিলাওয়াত শুনতে লাগলো।বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো নূর ঘুমাচ্ছে। তাহলে এই মেয়ে কে। মেয়েটা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। যার জন্যই মুখ দেখতে পারছে না।মেয়েটা দাঁড়িয়ে গেলো সাথে সাথে আবির দরজা থেকে সরে গেলো।নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো। কিন্তু মনটা রয়ে গেছে মেয়েটার কোরআন তিলাওয়াত এর প্রতি শব্দের মধ্যে। কত সুন্দর করে তিলাওয়াত করলো।

আদিবা নিচে নেমে দেখলো রান্না ঘরে নূরের মেঝো আম্মু কফি বানাচ্ছে।
আদিনাঃ আন্টি আমি কি হেল্প করতে পারি।আমি অনেক ভালো কফি বানাতে পারি।দেন আমি বানিয়ে দেই।
~তুমি রান্না ঘরে কেনো এসেছো? আমাদের বাসার মেয়েরা রান্না ঘরে আসা নিষেধ। যাও রুমে যাও।কিছু লাগলে বলো আমি বানিয়ে দিচ্ছি।
আদিবাঃ আমার কিছু লাগবে না। ওকে আমি আর আসবো না। তবে আজকের কফি আমি বানাই দেন।
~আচ্ছা ঠিক আছে। সাবধানে হাত যেনো না পোড়ে।

আদিবা কফি বানিয়ে নিজের রুমে যাওয়ার সময়। পিছন থেকে মেঝো আম্মু ডাক দিয়ে বললো,”তুমি তো উপরে যাচ্ছ এই কফিটা একটু আবিরের রুমে দিয়ে আসতে পারবে মা।

আবিরের নাম শুনেই বুকের ভেতর ধুকপুক করে উঠলো। ভদ্রতার সাথে মাথা নাড়িয়ে বললো। আচ্ছা দেন..

উনি বলে দিলেন আবিরের রুম কোনটা।

আদিবা কফি নিয়ে দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে আছে। কিভাবে ডাক দিবে বুঝতে পারছে না। ভীষণ লজ্জা লাগছে। বার বার ওই দিনের কিস দেওয়ার মুহূর্তটা মনে পরছে।

হটাৎ ভেতর থেকে একটা পুরুষালি কন্ঠ বেসে আসলো, ” বাহিরে দাড়িয়ে না থেকে ভেতরে আসো।এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে কফি শরবত হয়ে যাবে।”

আদিবা থমকে গেলো।তার মানে উনি দেখেছে আমি বাহিরে দাড়িয়ে আছি।তাহলে এতক্ষন বললো না কেনো? আর আমাকে কি উনি দেখেছে? নাকি অন্য কেউ ভেবে কথা বলছে!!…
আবিরঃ কি হলো ভেতরে আসো।
আবিরের ধমকের গলায় কথা শুনে ভয়ে রুমে ঢুকলো। আবির রেডি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য।
আদিবাঃ নিয়ে আবিরের সামনে কফির মগ ধরলো।হাত কাঁপছে ভীষণ। যতই শক্ত করে ধরার চেষ্টা করছে। মনে হচ্ছে এখনি পড়ে যাবে।
আবির কিছু সময় আদিবার কাঁপা কাঁপা হাতের দিকে তাকিয়ে। মুখের দিকে তাকালো।আবির চমকে উঠার অভিনয় করে বললো, ” তুমি!!! এখানে কি করছো?রাস্তায় কিস আর আজকে বউ হয়ে বাসায় চলে এসেছো।”
আদিবা বেআক্কেল হয়ে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে। বউ হয়ে এসেছে মানে।এই বেটা কি ভাবছে উনার ভাইয়ের বউ হয়ে এসেছি আমি?

আবিরঃ আরে তোমার হাত কাঁপছে কেনো? বলে হাত থেকে কফির মগ টা নিলো।

আদিবা চলে আসতে নিলে আবির আবার বলে উঠলো, ” তুমি এই বাসায় কি করছো? আগে তো কখনো দেখিনি। আর আমার জন্য সকাল সকাল কফি নিয়ে আসলে। ”

আদিবা কি বলবে বুঝে পাচ্ছে না।
আদিবাকে চুপ থাকতে দেখে আবির বললো,” কফি কে বানিয়েছে?”
আদিবাঃ জ্বি ভাইয়া আমি।
আবির কপাল কুঁচকে বললো,” এই লাস্ট ভাইয়া বলেছো।আমাকে একদম ভাইয়া বলবে না। আমার এমনি তেই অনেক গুলো বোন আছে। কফিতে বেশি করে চিনি দিয়েছো তো?
আদিবাঃ ভাইয়া না বললে কি বলবো?
আবিরঃ সেটা তুমি ভালো জানো। এদিকে আসো।
আদিবা আবিরের সামনে দাড়াতেই আবির কফির মগ টা আদিবার হাতে দিয়ে বললো,”দেখো তো মিষ্টি কেমন হয়েছে..বেশি খাবে না। একটু খাবে।
আদিবা আবিরের কথা মত কফি খেয়ে বললো,” মিষ্টি ঠিক আছে “..
আবিরঃ তাহলে এখন যাও।বলে কফি মগে চুমুক দিলো আবির।

——

নূর কলেজের জন্য বাসা থেকে বের হবে। রুদ্র বলে উঠলো, ” নূর আমার গাড়িতে উঠে বসো। আমি তোমাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে হসপিটাল যাবো।

নূর বিরক্ত হয়ে তাকালো রুদ্রের দিকে। এই বেটা কি ওকে শান্তিতে চলাফেরা ও করতে দিবে না।

চলবে….

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here