একটুখানি ভালোবাসা পর্ব -০২+৩

#একটুখানি_ভালোবাসা
#পর্ব_২_৩
#লেখনীতে_মুগ্ধ_ইসলাম_স্পর্শ

পর্ব:২

ভাইয়া তুমি আমার সাথে খাবে না?
পিছনে তাকিয়ে দেখি মিহি। আজ কতগুলো বছর পর এভাবে কেউ মায়াময় কণ্ঠে আমাকে খেতে বলল। মনের মাঝে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেলো। মিহির চাওয়াকে আর উপেক্ষা করতে পারলাম না। মিহির মুখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলাম। ভালো করে লক্ষ করে দেখলাম আবীর আর মাধবীলতা দু’জনেই মুখেই হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। মাধবীলতা মিহিকে খাইয়ে দিচ্ছে। আর এদিকে মিহি খাচ্ছে আর এটা-ওটা নিয়ে বকবক করেই যাচ্ছে।
ভালোই লাগছে তার পাগলামি গুলো। তবে একটা বিষয় আমাকে এখনো ভাবাচ্ছে। একটা মানুষ এতটা সময় কথা না বলে থাকে কিভাবে? খাবার শেষ করে মিহির মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিলাম। মাধবীলতার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
‘- শুভ রাত্রি।
তারপর যে যার ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ি। বালিশের নিচ থেকে একটা ছবি বের করে একমনে তাকিয়ে রইলাম। চোখের কোণে পানি এসে ঘর বেঁধেছে। কতগুলো বছর হয়ে গেল মা বাবাকে ছাড়া কাটিয়ে দিলাম। ছবিটিতে হাত বুলিয়ে বুকে রেখে চোখ দুটো বন্ধ করে হারিয়ে গেলাম ঘুমের অতল গহ্বরে।
কলেজের ক্লাস শেষ বন্ধুদের সাথে সাথে আড্ডা দিলাম সন্ধ্যা পর্যন্ত। গোধূলি বেলায় খোলা মাঠে বন্ধুদের সাথে আড্ডা টা বেশ মাখোমাখো হয়ে ওঠে। সূর্যের মিষ্টি তাপে মনটা বড়ো নেচে ওঠে। আড্ডা শেষে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। বাড়ি থেকে কলেজের দূরত্ব পাঁচ মিনিটের। তাই সবসময় হেঁটেই চলাচল করি। বাড়ির কাছে আসতেই ছোটবোনের আর্তনাদ ভেসে আসে কানে। গগন ফাটানো চিৎকার। সে তো কখনো এভাবে চিৎকার করে না। আজ হঠাৎ কী হলো ওর? দৌড়ে বাড়ির মূল ফটকের কাছে গেলাম। ভিতর থেকে বন্ধ। লোহার গেইট ডিঙিয়ে লাফ দিলাম। পায়ে কিছুটা আঘাত পেয়েছি। সেদিন ভ্রুক্ষেপ না করে কিছুটা খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে লাগলাম। আস্তে আস্তে যতোই কাছে আসছি আর্তনাদ যেন ততই বাড়ছে। দরজা খোলাই রয়েছে। বাড়ির ভিতরে কতগুলো লোক হাতে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর তাদের মাঝে মেঝেতে মা বাবা ছটফট করছে। মা বাবার পেটে ছুরি ঢোকানো। আর আমার বোনের চুলের মুঠি ধরে রেখেছে একটা লোক। আমি যেন স্বপ্ন দেখতে লাগলাম। ছুটে মায়ের কাছে গেলাম। গলগল করে রক্ত পরছে পেট দিয়ে। আমি সবার এরকম অবস্থা দেখে পাগলের মতো কাঁদতে শুরু করলাম।
‘- মা তোমাদের এই অবস্থা কে করল?
মা কিছু বলার মতো শক্তি পাচ্ছে না। তবুও অনেক কষ্টে এতটুকু বলল,
‘- তোর বোনকে বাঁচা।
হঠাৎ পিছন থেকে বোন চিৎকার করে বলল,
‘- ভাইয়া আমার খুব ব্যথা লাগছে। আমাকে বাঁচাও ভাইয়া।
ছোট বোনটার আর্তনাদ শুনে পিছু ফিরে তাকাই। ইতিমধ্যেই লোকগুলো বোনের পেটেও ছুরি ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমার চোখে আগুন জ্বলতে লাগলো। দৌড়ে গিয়ে লোকটাকে লাথি মারলাম। বোনকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। ব্যথায় কাতরাচ্ছে। আর বলছে,
‘- ভাইয়া আমাকে বাঁচাও। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।
বোন আমার পাগলের মতো কাতরাচ্ছে আর চিৎকার করে কাঁদছে। কী করব বুঝতে পারছি না। মা বাবাকে বাঁচাবো নাকি বোনকে? কিছু বুঝতে না পেরে বোনকে কোলে তুলে নিলাম হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। বোনকে কোলে তুলে নিতেই কেউ পিছন থেকে ভারি কোনো বস্তু দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। কোল থেকে ছিটকে কিছুটা দূরে আছড়ে পড়লো ছোট বোনটা। মাথাটা ঝিমঝিম করতে শুরু করল।
চোখের সামনে আমার নিষ্পাপ বোনটা এভাবে কাতরাচ্ছে আর আমি কিছুই করতে পারছি না। আমি আবার বোনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। আবারও মাথায় আঘাত পড়লো। লুটিয়ে পড়লাম বোনের নিস্তেজ দেহের উপর।
লোকগুলো আমাকে ঘুরিয়ে দিয়ে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিল। হঠাৎ আযানের ধ্বনি ভেসে আসতে লাগলো।
সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘুম ভেঙে গেলো। পেট হাতিয়ে দেখলাম রক্ত আছে কিনা। রক্ত তো নেই। কিন্তু পুরো শরীর ভিজে গেছে ঘামে। তারমানে এটা স্বপ্ন ছিল! টেবিল থেকে গ্লাসভর্তি পানি নিয়ে এক ঢোকে পুরোটা শেষ করলাম। এই একটা স্বপ্ন আমাকে প্রতিনিয়ত শেষ করে দেয়৷
কিছুটা সময় চোখদুটো বন্ধ করে বসে রইলাম। মনটাকে শক্ত করে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ওজু করে মসজিদের পথে অগ্রসর হলাম। বাড়ির বাইরে আবীর দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিন দুই ভাই একসঙ্গে নামাজে যাই।
নামাজ শেষ করে একটু সকালের আবহাওয়াকে উপভোগ করে বাড়ি ফিরলাম। ভিতরে প্রবেশ করেই দেখতে পাই মিহি এদিক-ওদিক উঁকি দিচ্ছে।
‘- কাকে খুঁজছো বুড়ী?
এইরে ভুলে আবার মুখ ফসকে বুড়ী বলে ফেললাম। কিন্তু এবার আর রাগ করল না। মিহি দৌড়ে আমার কাছে এসে কোলে উঠে বলল,
‘- তোমাকে খুঁজছিলাম ভাইয়া। কোথায় গেছিলে তুমি?
বাহ আজ বেশ শান্ত কণ্ঠে মিষ্টি করে কথা বলছে।
‘- এইতো আপু নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। তুমি এতো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেছো কেনো?
‘- আমি তো প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠি ভাইয়া।
‘- আচ্ছা। অনেক ভালো কাজ করেছো।
‘- ভাইয়া আমার খুব খিদে পেয়েছে।
‘- আচ্ছা তাহলে চলো আজ বাইরে খাবো আমরা। তোমার আপু কোথায়?
‘- আপু তো ঘুমিয়ে আছে।
‘- আবীর তুমি এদিকে খেয়াল রেখো আমি নাশতা নিয়ে আসছি।
‘- ভাইয়া আমি থাকতে আপনি কেন যাবেন?
‘- আরে চিন্তা কোরো না। মিহিকে নিয়ে একটু হেঁটে আসি।
মিহিকে নিয়ে বাইরে চলে আসি। রেস্তোরাঁয় ওকে পেট ভরে খাইয়ে বাড়ির সকলের জন্য নাশতা পার্সেল করে নিলাম।
বাড়িতে এসে নাশতার টেবিলে বসে আছি। এরমধ্যেই মাধবীলতা মাথা নিচু করে হেঁটে হেঁটে আসছে।
‘- আসুন নাশতা করে নিন।
সবাই মিলে নাশতা করে ড্রয়িং রুমে বসলাম।
মাধবীলতাকে উদ্দেশ্য করে বলি,
‘- বলছি কী! মিহিকে স্কুলে ভর্তি করাবেন না? আপনাকেও তো দেখে মনে হচ্ছে পড়ালেখা শেষ হয়নি।
আমার উত্তরে সে শুধু মাথা ঝাকিয়ে বুঝিয়ে দিল হ্যাঁ।
আশ্চর্য মেয়ে তো বড়ো। এতো বড়ো একটা উপকার করলাম তারপরও আমার সাথে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করছে।
সেদিকে খেয়াল না করে আবার বললাম,
‘- আজ মিহিকে স্কুলে ভর্তি করাবো। আর তারপর ওর জন্য কিছু কেনাকাটা করতে হবে।
মাধবীলতা কেমন বিষ্ময়কর ভাবে আমার দিকে দৃষ্টিপাত করল। আমি বুঝতে পারছি সে আসলে কী ভাবছে।
‘- আপনি হয়তো ভাবছেন যে আমি একটা অপরিচিত মানুষ হয়ে কেন এরকমটা করছি। ভাববার মতোও তেমন কিছু নেই। আমরা সবাই একই ঘাটের মাঝি। কিছুটা
সময় অতিবাহিত হওয়ার পর সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লাম। উদ্দেশ্য মিহি’কে স্কুলে ভর্তি করানোর। গাড়ির জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে খেলা করছে মিহি।
‘- ভাইয়া আমরা কোথায় যাচ্ছি?
‘- প্রথমে তোমাকে স্কুলে ভর্তি করাবো তারপর আমরা সবাই ঘুরতে যাব।
মিহি খুশিতে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
পিচ্চিটার পাগলামি গুলো বেশ ভালই লাগে। ঝিমিয়ে যাওয়া মনকে জীবন্ত করতে ওর পাকা পাকা কথা, মিষ্টি মিষ্টি পাগলামিই যথেষ্ট। বুড়ীটা এতক্ষণে আমাকে নিজের ভাইয়ের মতোই ভাবতে শুরু করেছে। তাই হয়তো মন খুলে কথা বলছে। তার ইচ্ছেগুলো প্রকাশ করছে। কিন্তু তার বোন আস্ত একটা খাটাশ।
বুড়ীটার সাথে গল্প করতে করতে পৌঁছে গেলাম স্কুলে। ওকে ভর্তি করানোর সকল কাজ শেষ করে শপিংমলের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। গাড়ি পার্ক করে সবাই ভিতরে প্রবেশ করি। মিহি তার পছন্দমতো সব জামাকাপড় নিয়ে নিল। গোমড়ামুখো মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম,
‘- আপনার কী কী পছন্দ? দেখুন কোনটা নেবেন!
সে আবারও মাথা নাড়িয়ে না সূচক উত্তর দিল। তারমানে তার কিছুই লাগবে না। এ’তো দেখি ঘাড়ত্যাড়াও বটে।
‘- এই একটা পোশাকই সবসময় পড়ে থাকবেন নাকি? আজব তো। আপনার মতো অদ্ভুত মানুষ এর আগে কখনো দেখিনি।
তাকে আর কিছু না বলে আমিই বেছে নিলাম। কয়েকটা শাড়ি, কয়েকটা থ্রি পিস, জুতো। বেশকিছু জিনিস নিয়ে নিলাম। ( আমি মেয়েদের পোশাকের নাম জানি না তাই উল্লেখ করতে পারলাম না 😑😛)
বিল পরিশোধ করে বাইরে এসে সবাই গাড়িতে বসলো। আমি যখনই দরজা খুলে ভিতরে ঢুকবো তখনই হঠাৎ গাড়ির লুকিং গ্লাস টা ভেঙে গেলো। অনেকটাই জোরে একটা শব্দ পেলাম। শব্দটাও চিরচেনা। গুলির শব্দ। পিছনে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে বন্দুক তাক করে রয়েছে আমার দিকে। সে আবার ট্রিগারে চাপ দেবে তার আগেই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। আবীর গুলি করে দিয়েছে। গুলির বিকট শব্দে মলের বাইরে বেশ ভালই একটা হট্টগোল লেগে গেছে। সবাই এদিক-ওদিক দৌড়োদৌড়ি করছে। আবীর দৌড়ে গেলো ছেলেটার কাছে।
মিহি আর মাধবীলতা অনেকটাই ভয় পেয়েছে।
‘- তোমরা ভয় পেও না। আমি আসছি।
এই বলে আমিও ছেলেটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। ছেলেটা মরেনি। কারণ তার পায়ে গুলি লেগেছে। আবীর ধরে মুখে আরও কয়েকটা ঘুষি মেরে দেয়।
‘- কে পাঠিয়েছে তোকে?
‘- বলব না।
আবীর আবারও ওকে মারার জন্য হাত তুললে ওকে থামিয়ে দিয়ে বলি,
‘- দাঁড়াও আবীর। ও এভাবে কথা শুনবে না।
আবীরের হাত থেকে গানটা নিয়ে সোজা ছেলেটার মুখে ঢুকিয়ে দিলাম।
‘- দেখ তুই এখনো অনেক ছোট। মনে তো হয় না এই লাইনের কেউ? নতুন এসেছিস নাকি?
ছেলেটা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দেয়।
‘- শোন তোর জীবনটা কেবলমাত্র শুরু হয়েছে। যদি বাঁচতে চাস বলে দে কে পাঠিয়েছে তোকে? আর আমাকেই বা কেনো মারতে চাস। আর যদি না বলিস তাহলে এখানেই তোর জীবনের শেষ,,,
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই বলল,
‘- ভাই দয়া করে আমাকে মারবেন না। আমার মা অনেক অসুস্থ। মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগান দিতে পারছিলাম না। সেই সময় একজন আমাকে বলল আপনাকে যদি মেরে ফেলি তাহলে সে মায়ের চিকিৎসার সব টাকা দিয়ে দেবে। আমার মা’কে বাঁচানোর এই একটাই উপায় ছিল। ভাই আমাকে মেরে ফেলুন কিন্তু আমার মা’কে বাঁচান।
বলেই ছেলেটি হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে।
ছেলেটার উপর এতক্ষণ রেগে থাকলেও এখন আর সেই রাগটা নেই।
‘- আবীর ওকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাও। আমি মিহিদের বাড়িতে রেখে আসছি৷ ওর খেয়াল রেখো৷
মিহি আর মাধবীলতাকে বাড়িতে নিয়ে এসে ওদের রেখে আবার হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছিলাম। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ হাত টেনে ধরে। মিহি ভেবে পিছনে তাকালাম। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো হাত ধরেছে মাধবীলতা।
যে মেয়েটা আমার সাথে কথাই বলে না সেই আমার হাত ধরে রেখেছে?
‘- কিছু বলবেন?
আশ্চর্য মেয়েটা এখনো কথা বলছে না। শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিল।
‘- আচ্ছা আপনার কী আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না নাকি আপনি কারো সাথে কথাই বলেন না?
মেয়েটি মাথা নিচু করে রইলো।
কিছুটা রাগ উঠে যায় আমার।
‘- কী হলো কথা বলছেন না কেনো?
মেয়েটি ছোট একটা কাগজে কিছু লিখে আমার হাতে দিল৷
কাগজের বাক্যটি পড়ে আমি অবাকের চুড়ায় পৌঁছে গেলাম।

#পর্ব_৩

ছোট্ট কাগজে লেখা ” আমি কথা বলতে পারি না “।
লেখাটি পড়ে আমি কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। এতো সুন্দর ফুটফুটে একটা মেয়ে কি-না কথা বলতে পারে না। কথাটি কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না আমার। সবকিছু কেমন যেন ধোঁয়াশার মতো লাগছে।
আমি আবারও খেয়াল করলাম মেয়েটি কী যেন লেখা শুরু করেছে।
কিছুক্ষণ পর সে আবারও আমাকে একটা কাগজ ধরিয়ে দিল। সেখানে সুন্দর করে লেখা রয়েছে,
‘- কাল আপনি আমাদের অনেক বড় উপকার করেছেন। রাস্তা থেকে তুলে এনে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দিয়েছেন। হয়তো ভেবেছেন, যে আমি অকৃতজ্ঞ। এত বড় উপকার করার পরেও আমি মুখ ফুটে আপনাকে ধন্যবাদ দিইনি। কিন্তু আমি যে অসহায়।
হঠাৎ খেয়াল করলাম মেয়েটি কাঁদছে। লেখাগুলো পড়ে আমার শরীর শিউরে ওঠে। একে তো সে নিজের বাবা মা’কে হারিয়েছে তার উপর আবার কথা বলতে পারে না। মানুষের জীবন আসলে কতটা বিচিত্র হতে পারে। তা আমরা আমাদের আশেপাশের লোকজনকে দেখলেই বুঝতে পারি। আমি মাধবীলতা’কে শান্তনা দিয়ে বললাম,
‘- দেখুন আপনি যেমনটা বলছেন আমি সেরকম কিছুই ভাবি নি। তবে এতটুকু ভেবে আশ্চর্য হয়েছিলাম যে এতো কিছু হয়ে গেল কিন্তু আপনি একটা কথাও বললেন না। ছাড়ুন এসব। প্রতিটি মানুষের জীবনেই কোনো না কোনো সমস্যা রয়ে যায়। সেই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে মোকাবিলা করার নামই জীবন। এটা ভেবে কখনোই কষ্ট পাবেন না যে আপনি কথা বলতে পারেন না। আশেপাশে ভালো করে তাকিয়ে দেখুন কেউ হাঁটতে পারেনা, কেউ চোখে দেখতে পারেনা, কেউ কানে শুনতে পারে না। আবার অনেকেই প্রতিটি মুহূর্ত কাটিয়ে দেয় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে। এখন ভাবুন তাদের তুলনায় আমরা কতটা ভালো রয়েছি। চোখের পানি টা মুছে নিন। এই তুচ্ছ একটা বিষয় নিয়ে আপনি কান্না করছেন? এরপর যেন আর কখনো এসব বিষয় নিয়ে চোখের পানি ফেলতে না দেখি। একটা কথা সবসময় মাথায় রাখবেন। নিজের জীবনকে নিজেকেই গড়ে তুলতে হয়। আমি আমার জীবনে অনেক মানুষের লাথি গুঁতো খেয়েছি, অনেক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি। কিন্তু কখনো থেমে থাকিনি। ” শক্তি রেখে যারা চলে তারা কখনো হারে না। ব্যর্থতা একটা পরীক্ষা মাত্র। স্বীকার করো! কী ঘাটতি রয়েছে দেখো। পূরণ করো। যতক্ষণ পর্যন্ত সফল না হও, শান্তির ঘুম ত্যাগ করো। লড়াই করো। মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেও না। কিছু না করলে জয়ধ্বনি শোনা যায় না। যে শক্তি রেখে চলে, সে কখনো হারে না ”
নিজের প্রচেষ্টা যতক্ষণ চালিয়ে যাবেন ততক্ষণই আপনি বাঁচতে পারবেন।
” যখন কোনো মানুষের উপর কোন বিপর্যয় আসে। হয় এটা পরীক্ষা অথবা এটা শাস্তি। যে লোকগুলো আল্লাহর পথ ও সততার পথ থেকে দূরে সরে গেছে! তাদের জন্য এটা শাস্তি। আর যারা আল্লাহর পথে আছে তাদের জন্য পরীক্ষা। হতে পারে যে বাবা মা খুব ভালো মুসলিম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, হয়তো যাকাত দিয়েছেন, হজ্ব পালন করেন, রমজাম মাসে রোজা রাখেন। আল্লাহ তাদের একটা সন্তান দিলেন। জন্ম থেকেই যার হার্টে সমস্যা। এখন সত্যিকারে মুসলিম, সত্যিকারের মুমিন বলবে আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করছেন। আরেকটা লোক যে কৃতজ্ঞ নয়। আর এই পরীক্ষায় হয়তো পাস ও করবে না। সে বলবে কেনো? সে লাফালাফি শুরু করবে, আল্লাহর কাছে অভিযোগ করবে। যে কেনো আল্লাহ তায়ালা এমন বিকলাঙ্গ সন্তান দিলেন? জন্ম থেকেই যার হার্টে সমস্যা। আর পরীক্ষা যত কঠিন পুরষ্কার ততো বেশি।
সুতরাং আমাদের জীবনে প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ।
আমার কথার জবাব স্বরুপ সে একটা মিষ্টি হাসি উপহার দিলো।
‘- এরপর যেন আর মন খারাপ করতে না দেখি কেমন? আপনারা ফ্রেশ হয়ে নিন আমি একটু ছেলেটাকে দেখে আসছি।
কথাগুলো বলে আমি চলে আসলাম। আবীরকে কল দিয়ে জেনে নিলাম তারা কোথায়। ঠিকানা নিয়ে সোজা চলে গেলাম। গুলি টা বের করে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। ডক্টরকে জিজ্ঞেস করলাম,
‘- ডক্টর ও এখন কেমন আছে?
‘- এখন অনেকটাই ভালো। গুলিটা পা ছুঁয়ে বেরিয়ে গেছে। তাই তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
‘- ওহ আমি ভাবলাম ভিতরেই ছিল। ওকে কী এখন নিয়ে যাওয়া যাবে?
‘- হ্যাঁ অবশ্যই।
হাসপাতালের সমস্ত বিল পরিশোধ করে ছেলেটিকে নিয়ে বাইরে বের হলাম।
‘- চলো তোমার বাড়িতে নিয়ে যাবে আমাকে।
ছেলেটি কিছুটা আঁতকে উঠল। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলল,
‘- কেনো ভাইয়া আপনি কী আমার মা’কে সব বলে দেবেন?
‘- আরে ভয় পেও না। আমাকে নিয়ে চলো। তারপর ছেলেটির দেখানো পথ ধরে তার বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। একটাই ঘর। তাও আবার ভাঙা। ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম ষাট সত্তর বছরের এক মহিলা বিছানায় শুয়ে রয়েছে। চোখের নিচে কালো দাগ। শরীর শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। আল্লাহ কেনো মায়েদের এতো কষ্ট দেয়? আমাদের শব্দ পেয়ে তিনি উঠে বসার চেষ্টা করে। আবীরকে ইশারা দিয়ে তাকে উঠতে সাহায্য করতে বললাম। আবীর তাই করল। তিনি বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো।
‘- কে বাবা তোমরা?
আজ কতদিন বাবা ডাকটি শুনলাম। “বাবা” শব্দটি কেমন যেন হৃদয়ে খনন করে দিলো। ঠিক এভাবেই মিষ্টি আমার মা আমাকে বাবা বলে ডাকতো 🥺।
‘- আসলে আন্টি,,,
আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে তিনি আবার বললেন,
‘- ওহ বুঝেছি। আপনারা আমার নয়নের জন্য বিচার নিয়ে এসেছেন। ওকে কতবার বলব চুরি না করতে। আমার কথা শুনেই না বাবা।
ছেলেটার দিকে তাকাতেই সে মাথা নিচু করে নিলো।
‘- আসলে সেরকম কিছু না। কারো কথায় নয়ন আমাকে মারতে চেয়েছিল। কিন্তু,,,
‘- কী বললে? ওর এতো বড় সাহস। এই দিন দেখার জন্য তোকে জন্ম দিয়েছি আমি। তোর এতটা অধঃপতন হবে আমি ভাবতে পারিনি। নাহলে কবেই গলাটিপে মেরে ফেলতাম।
বলেই সে নয়নকে মারতে শুরু করে আর কাঁদতে লাগলো।
আমি কোনরকমে তাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম,
‘- আন্টি আপনি উত্তেজিত হবেন না। দয়া করে শান্ত হোন। এতে ওর কোনো দোষ নেই। ও শুধু আপনার চিকিৎসার টাকা যোগাড় করার জন্য এই পথটি বেছে নিয়েছে। ও যখন আমাকে গুলি করে তখন ভাগ্যক্রমে সেটা আমার শরীরে না গেলে গাড়িতে লেগেছে। তারপর আমার সহায়ক ওর পায়ে একটা গুলি করে। কথাটি শুনেই উনি বিচলিত হয়ে ওঠে।
‘- আহা বিচলিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। গুলিটা শুধু ওর পা ছুঁয়ে বেরিয়ে গেছে। তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। পৃথিবীটা আসলে মা ছাড়া কতটা অন্ধকার সেটা আমি জানি। আপনাকে নয়ন এতটাই ভালোবাসে যে, সে আপনার চিকিৎসার টাকার জন্য অন্য কাউকে মারতে প্রস্তুত হয়ে যায়। অনেক ছোট তো। তাই মায়ের ভালোবাসার আবেগে আপ্লূত হয়ে যায়। আপনি চিন্তা করবেন না। আপনিও বাঁচবেন ইনশাআল্লাহ। আপনার চিকিৎসা করতে যতটুকু প্রয়োজন আমি করব। আমি থাকতে কোনো মায়ের কষ্ট হবে তা আমি হতে দিতে পারি না। আবীর ওনাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যাও। যত দ্রুত সম্ভব অপারেশনের ব্যবস্থা করো৷
‘- আচ্ছা ভাইয়া।
ছেলেটা আমার পায়ে পড়ে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে।
‘- ভাইয়া আমি আপনাকে মারতে চেয়েছিলাম আর আপনি আমার এতবড় উপকার করলেন। আমি সারাজীবন আপনার চাকর হয়ে থাকবো। আপনি দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন।
নয়নকে পা থেকে তুলে বলি,
‘- আরে পাগল পৃথিবীতে বাঁচতে হলে কারো দাসত্ব নয় রাজত্ব করে বাঁচবে। তবেই না জীবনকে উপভোগ করতে পারবে। আর উনি শুধু তোমার মা বলেই এটা করছি না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে উনি একজন মা। তুমি তোমার মা’কে বাঁচানোর জন্য যেমন মানুষের দুয়ারে গিয়ে কেঁদেছ? তার থেকেও বেশি কেঁদেছি আমি আমাকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু পারিনি। জানি না তারা আমাকে ক্ষমা করবে কি-না! আর তোমাকে ক্ষমা করতে পারি একটা শর্তে। বলো রাজি আছো?
‘- হ্যাঁ ভাইয়া আপনি যে শর্তই দেবেন। জীবনের বিনিময়ে হলেও সেটা রাখবো।
‘- জীবন দিতে হবে না। তবে আর কখনো কোনো খারাপ কাজে জড়াবে না। এসব চুরিটুরি করবে না।
‘- ঠিক আছে ভাইয়া।
‘- তাহলে যাওয়া যাক হাসপাতালে?
সবাই মিলে হাসপাতালে গেলাম। নয়নের কাছে জানতে পারলাম। ওর মায়ের টিউমার হয়েছে। নয়নের চোখেমুখে এখন হাসির রেখা ফুটে উঠেছে।
ডক্টরকে বলে দ্রুত অপারেশনের ব্যবস্থা করলাম। ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা বের করে বিল মিটিয়ে দেওয়ার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলো। যাওয়ার আগে উনি আমার আর নয়নের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। সত্যিই মায়েদের হাতে অদ্ভুত এক যাদু থাকে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মনটা ঠাণ্ডা হয়ে গেলো। কয়েক ঘণ্টা পর ডক্টর যখন বের হলেন নয়ন দৌড়ে গিয়ে ডক্টরের সামনে দাঁড়ালেন। এর আগে নয়ন বারবার নামাজ ঘরে নামাজ পড়ে দোয়া করছিল। এটাই তো মা আর সন্তানের মধ্যকার ভালোবাসা।
‘- ডক্টর আমার মা কেমন আছে?
ডক্টর নয়নের কাঁধে হাত রেখে বলে,
‘- চিন্তা কোরো না। তোমার মা এখন পুরোপুরি সুস্থ। একটু পর তাকে কেবিনে শিফট করা হবে। তখন দেখা করবেন সবাই।
আমি ডক্টরকে ধন্যবাদ দিলাম। তিনি একটা শুকনো হাসি দিয়ে বলে,
‘- ভাই ধন্যবাদ যদি পেতেই হয় তাহলে সেটা আপনার প্রাপ্য। আমি তো মানুষের চিকিৎসা করে টাকা পাই। আর এটা আমার কর্তব্য। কিন্তু আপনি বিনা স্বার্থে একটা মায়ের জীবন বাঁচালেন। এটা এই সমাজে ক’জন লোক করে বলুন? আল্লাহ আপনাকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখুক।
ডক্টর চলে গেলেন। নয়ন আবেগে আমাকে জড়িয়ে ধরে নীরবে চোখের পানি ফেলছে। বেচারা কতো কষ্ট করল মায়ের জন্য।
কিছুক্ষণ পর নয়নের মা’কে কেবিনে দেওয়া হলো। সবাই দেখা করলাম। তিনি আমাকে প্রাণভরে দোয়া করে দিলেন।
তার মুখেও মিষ্টি হাসির প্রলেপ ছড়িয়ে পড়েছে। নয়নকে বাইরে জিজ্ঞেস করলাম,
‘- নয়ন এখন বলো তোমাকে কে পাঠিয়েছে আমার মারার জন্য?
নয়ন অনেকটাই ভয় পেলো।
‘- দেখো তোমার ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি যতদিন তোমার সঙ্গে আছি ততদিন কেউ তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তুমি নির্ভয়ে আমাকে বলো।
‘- ভাইয়া ও চেয়ারম্যানের ছেলে শাদাব।
‘- তুমি সত্যি বলছো?
‘- হ্যাঁ ভাইয়া।
‘- আচ্ছা তুমি তোমার মায়ের কাছে যাও। আমি তোমার সাথে পরে দেখা করছি। এই বলে বেরিয়ে এলাম৷ ভাবতে লাগলাম
শাদাবের সঙ্গে তো আমার কোনো শত্রুতা নেই। তাহলে ও কেনো আমাকে মারতে চাইবে?
‘- আবীর? আমি এক ঘণ্টার মধ্যে শাদাবকে আমার গোডাউনে দেখতে চাই।
‘- ঠিক আছে ভাইয়া
‘- আমি বাড়ি গেলাম। একঘণ্টা পর ওখানে আসছি।
বাড়িতে গিয়ে গোসল করে সবাইকে নিয়ে খাবার খেলাম। মাধবীলতা একটা কালো শাড়ি পড়েছে। বেশ মায়াবী লাগছে তাকে দেখতে। শ্যামলা চেহারায় কালো শাড়ি ফুটে উঠেছে। দেখে মনে হয় এক এলোকেশী কন্যা। লম্বা চুল। সবমিলিয়ে মাশা-আল্লাহ। ওদের সাথে গল্প করছিলাম হঠাৎ আবীরের কল।
‘- ভাইয়া ওকে বেঁধে রেখেছি। আমাকে কিছুই বলছে না।
‘- আচ্ছা তুমি থাকো আমি আসছি।
কল টা কেটে দিয়ে গাড়ি নিয়ে সোজা চলে গেলাম গোডাউনে।
আমাকে দেখে অনেকটাই আঁতকে উঠল শাদাব। ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। শান্ত কণ্ঠেই প্রশ্ন করি,
‘- কিরে তোর আবার কিসের ভীমরতিতে পেয়েছে যে আদাজল খেয়ে আমাকে মারতে নেমেছিস মাঠে? আমার যতদূর মনে পড়ে তোর সাথে কখনো শত্রুতা ছিল মা।
ও আমার দিকে রেগে ফোসফাস করে তাকালো।
সজোরে ওর বুকে একটা লাথি মারলাম। চেয়ার সহ মাটিতে পড়ে গেল। আবীর তুলে আবার বসিয়ে দিল।
‘- উত্তর দিবি নাকি শরীরের চামড়া তুলে নুন মরীচ ঘষে দেবো?
এবার মুখ খুললো!
‘- আমি তোকে ছাড়বো না। তুই আমার মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছিস।
‘- মানে?
‘- মানে বুঝিস না? যেই মেয়েটাকো তুই তোর বাড়িতে নিয়ে গেছিস তাকে আমি ভালোবাসতাম। ও বারবার আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেয়। আমার অনেক রাগ হয়। জনসম্মুখে সে আমাকে অপমান করে। সেদিন রাতে আমার লোকজন ওকে তুলে নিয়ে আসতেই যাচ্ছিল। কিন্তু সেখানে তুই এসে সবকিছু ঘেটে দিলে।
‘- হাহাহাহা। তোর এরকম বাঁদরের মতো চেহারা কে পছন্দ করবে বল? তার থেকেও বড় কথা জোর করে মেয়েদের ভালোবাসা পাওয়া অসম্ভব। এসব বাচ্চামি বাদ দিয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যা বাবু।
‘- হুহ। এখন থেকে তো তুই প্রতি রাতে ওকে নিয়ে ভালোই মজায় রাত কাটাবে। একটা রাতের জন্য আমাকে দিস।
এবার রাগ আর ধরে রাখতে পারলাম না। শরীরের সমস্ত শক্তি ওর চোয়ালে ঘুষি বসিয়ে দিলাম।
আবারও মাটিতে পড়ে গেল।
‘- পরবর্তী সময়ে যদি আর কখনো দেখেছি তোকে এই এলাকায়। তাহলে সেদিন আর জীবন নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করিস না।
এই বলে চলে আসছিলাম। শাদাব চিৎকার করে বলল,
‘- শুয়ো***র বাচ্চা তোকে আমি খুন করে ফেলবো।
সঙ্গে সঙ্গে গুলির বিকট শব্দ হলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here