#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_৩৪
#নিশাত_জাহান_নিশি
“কিন্তু হাতে করে তো একটা ফুল আনতে পারতেন! তা ও তো করেননি। কেমন ঠ্যাং ঠ্যাংয়াতে ঠ্যাং ঠ্যাংয়াতে চলে এসেছেন। রোমান্টিকতার বালাই মাত্র নেই!”
জিভ কাটল রাফায়াত। অয়ন্তীর রাগের পরিমাণ কেন এতটা গাঢ় হলো তার কারণ এই মাত্র-ই সে অনুসন্ধান করতে পারল! সত্যিই তো হাতে করে তার একটি ফুল আনা উচিৎ ছিল। অন্তত একটি গোলাপ ফুল। প্রেয়সীর রাগ ভাঙানোর জন্য তো একটি ফুলই যথেষ্ট। যদিও এসব বিষয়ে রাফায়াত খুবই অপারদর্শী। পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে হয়ত ফুল ছাড়া একদমই অয়ন্তীর ধারে কাছে ঘেঁষত না সে। অভিযোগ করার একরত্তি সুযোগও দিতো না অয়ন্তীকে। এখন যে করেই হোক অয়ন্তীর রাগ ভাঙানো চাই তার। নয়ত এই বেপরোয়া রাগের সীমা, পরিসীমা,পরিধি ক্রমশ প্রশ্বস্ত হতে থাকবে। এভাবে অবশ্যই চলতে দেওয়া যায় না। নাজুক দৃষ্টিতে রাফায়াত অয়ন্তীর অভিমানিনী মুখশ্রীতে তাকালো। খুব চতুরতার সাথে গলায় মোলায়েম ভাব এনে বলল,,
“আচ্ছা আমাকে দশটা মিনিট সময় দিবা? সামনেই একটা ফুলের দোকান আছে। এক্ষণি আমি ফুলটা নিয়ে আসছি।”
“উঁহু। এখন আর লাগবে না। নিজে থেকে তো আনেন নি। এখন বলে দেওয়াতে!”
“তুমি তো জানোই অয়ন্তী। কীভাবে মেয়েদের মন জয় করতে হয় এসব বিষয়ে আমি খুবই অনভিজ্ঞ। তবে যদি অতীতেও তুমি এভাবেই ভালোবেসে আমার পাশে থাকতে তবে হয়ত এতদিনে এসব বিষয় শেখা হয়ে যেত আমার। এখন যেহেতু অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে তো আমারও কিছুটা সময় লাগবে তোমার মন মত হয়ে উঠতে! ভালোবাসা দিয়ে তোমার মন জয় করতে। আই হোপ সো তুমি সেই সময়টা আমাকে দিবে।”
নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে অয়ন্তী ফিরে তাকালো উদাসী রাফায়াতের দিকে। কিয়ৎক্ষণ নির্ভেজাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সে রাফায়াতের বিমূর্ষ মুখমণ্ডলের পানে। আচমকাই এক’পা দু’পা করে হেঁটে সে এগিয়ে গেল রাফায়াতের দিকে। এক ঝটকায় রাফায়াতের কান থেকে হাত দু’খানা সরিয়ে নিলো সে। রাফায়াতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অভাবনীয় ভাবেই ভ্রু যুগল উঁচালো। সূচালো গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,
“রাত কয়টা বাজছে এখন জানেন?”
“কেন? সময় জেনে কী করব?”
“কী করবেন মানে? এতরাত অবধি কোথায় ছিলেন আপনি?”
“কাজে ছিলাম।”
“এতরাত অবধি আপনার কীসের কাজ হ্যাঁ?”
“দলীয় একটা মিটিং ছিল। তো ওখানে এটেন্ড ছিলাম।”
“ব/ডিগা/র্ড হিসেবে ছিলেন হ্যাঁ? নেতার প্র/টেক্ট/র হিসেবে?”
“আজব! এভাবে বলছ কেন?”
“তো কীভাবে বলব? আপনার কাজ তো এটাই। নেতাদের পেছনে পেছনে চা/মচে/গিরি করা। আর ভাগে না বনলে তাদের হয়ে মা/রা/মা/রি, কা/টা/কা/টি করা।”
“ছেড়ে দিব এসব বললাম তো!”
“কবে ছাড়বেন আর? ভুলে যাবেন না আপনি এখন আর আগের মত নেই! একটা গভীর সম্পর্কে আছেন আপনি। আপনার সাথে একটা মেয়ের বাঁ/চা ম/রা জড়িত। কিছুদিন পরে হয়ত বিয়ে শাদিও হবে। একটা সংসার হবে আপনার। তখন নিশ্চয়ই এসব রা/জ/নীতি ফা/জনী/তি করে সংসার চলবে না আপনার? এসব সস্তা চাম/চে/গিরি করে এখন সংসার চালানো যায়না। তাছাড়া আপনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন ছেড়ে দিবেন এসব রা/জ/নীতির পথ। আমি কোনো দিনও চাইনা এসবের জন্য আপনার লাইফ আবারও রি/স্কে পড়ুক।”
ক্ষুব্ধ অয়ন্তীকে এখন কীভাবে শান্তনা দিবে বুঝতে পারছেনা রাফায়াত। এমন পরিস্থিতিতে সে জীবনে প্রথমবার পড়েছে। কীভাবে কী করলে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হবে, দ্রুত রাগ ভাঙানো যাবে এসব বিষয় সে খুবই কাঁচা। তবে রা/গ, ধম/ক, মা/রা/মারি, কা/টা/কা/টি এসব আবার বেশ ভালোই বুঝে! আলাদা ভাবে শিখিয়ে পড়িয়ে দিতে হয়না এসব। কিন্তু সব জায়গায় তো আর সবকিছু খাঁটে না৷ কিছু কিছু জায়গায় হয়ত এভাবেই নরম হয়ে থাকতে হয়। মনে হচ্ছে আস্তেধীরে এখন তার স্বভাবটাই পাল্টাতে হবে! উগ্র মেজাজ বদলে সিধাসাধা মাটির মানুষ হতে হবে। অস্বস্তিতে মাথা চুলকালো রাফায়াত। অয়ন্তীর দিকে নির্বোধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। চোখ থেকে যেন অয়ন্তীর আ/গু/নের ফু/লকি বের হতে লাগল! বি/ধ্বংসী দেখাচ্ছে তাকে। পূর্বের তুলনায় আরও ঘাবড়ে গেল রাফায়াত! শুকনো ঢোঁক গিলতে বাধ্য হলো সে। নাকের ডগাও কেমন ঘামতে লাগল। গলা বসে গেল তার! মুখ ফুটে যে কিছু বলবে তারও জায়গা রইল না। হুট করেই ঘটে গেল এক মহাকাণ্ড। রাফায়াতকে সম্পূর্ণ অবাক করে দিয়ে অয়ন্তী আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল রাফায়াতকে। পরম আবেশে রাফায়াতের বুকের বাঁ পাশে মাথা রাখল সে। ধীর গলায় বলল,,
“রাগ করলে এভাবে জড়িয়ে ধরতে হয়৷ পরের বার যখন আমি খুব রাগ করব তখন এভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরবে। তখন সব রাগ ভুলে যাব আমি। আজ শিখিয়ে দিলাম। প্রতিবার কিন্তু শিখিয়ে দিব না এসব!”
প্রশান্তির শ্বাস ফেলল রাফায়াত। দেহে যেন তার প্রাণ ফিরে এলো। ভেতরটায় অদ্ভুত এক সুখ সুখ অনুভূতি হতে লাগল। যে সুখের কোনো দাম হয়না। বুকের কম্পন বাড়তে লাগল। উচ্চগতিতে কম্পিত হতে লাগল। অত্যধিক ভালোবাসায় আবিষ্ট হয়ে রাফায়াত সমস্ত জড়তা কাটিয়ে অয়ন্তীকে তার বুকের মাঝে একাত্নভাবে মিশিয়ে নিলো। চোখ জোড়া বুঝে নিরিবিলি কেবল অয়ন্তীকে-ই অনুভব করতে লাগল। অদ্ভুত এক নেশায় ডুবে সে প্রেমাচ্ছন্ন গলায় বলল,,
“আর ভুলব না কিছু। মৃ/ত্যু/র আগ অবধি মনে থাকবে এই টেকনিক। এত প্রশান্তির অনুভূতি আমার জীবদ্দশায় মিস করতে চাইনা আমি।”
মিটিমিটি হাসল অয়ন্তী। আহ্লাদি গলায় বলল,,
“দুইটা জিনিস শিখিয়ে দিলাম আজ। প্রথমত, রাগ করলে হাতে করে একটি ফুল নিয়ে আসবে। যদি এরচেয়েও বেশী রাগ হয় তবে এভাবে টাইট করে জড়িয়ে ধরবে। দেখবে সব রাগ ভুলে গেছি তখন।”
“একটা সত্যি কথা বলি?”
“কী?”
“আমি না ভেবেছিলাম তোমাকে একবার জড়িয়ে ধরব! কিন্তু পরেই আবার মনে হলো রাগের মাথায় তোমাকে জড়িয়ে ধরার অ/পরা/ধে যদি তুমি এরচেয়ে আরও বেশী রেগে যাও? তাই জড়িয়ে ধরিনি!”
“ধ্যাত বোকা! তখন একটুও রাগ হতো না আমার। বরং রাগ ঠাণ্ডা হয়ে যেত। পৃথিবীর যতই ভয়ঙ্কর রাগ আমার উপর ভর করুক না কেন তোমার একটুখানি আলিঙ্গনেই সব রাগ হাপিশ হয়ে যাবে। রাগ তখন কোথা থেকে যে কোথায় চলে যাবে বুঝতেও পারব না আমরা। ইট’স অ্যা ম্যাজিক ওকে? মিরাকল!”
“আসলেই ম্যাজিক। সব ব্যথা ভুলিয়ে দিচ্ছে আমার। মনে হচ্ছে যেন জন্মের পর থেকেই আমি সুখী! কোনো দুঃখ ছিলনা আমার জীবনে। আরও কিছুক্ষণ কী আমি এভাবে তোমাকে জড়িয়ে ধরে রাখতে পারি?”
“না পারেন না! বিয়ে হয়নি এখনও আমাদের। কবে বিয়ে করবেন শুনি?”
“বেকার ছেলেকে বিয়ে করবে তুমি? তোমার পরিবার মানবে আমাকে?”
“কেন? আমার পরিবারকে দেখিয়ে দিতে পারবেন না একটা ভালো চাকরী বাকরী করে? অসম্ভব কিছু?”
“চাকরী পাওয়া কী এতই সহজ?”
“কঠিন কিছুও তো নয়। চেষ্টা করলেই পারেন। আপনার তো মাস্টার্সও কমপ্লিট করা আছে। প্রিপারেশন নিলে ভালো একটা চাকরীতেও ঢুকে যেতে পারবেন।”
“উঁহু। তুমি যত সহজ ভাবছ চাকরী পাওয়া এতো সহজ নয়।”
“সহজ কঠিন নিয়ে সমস্যা না। সমস্যা হলো আপনার রা/জ/নী/তি নিয়ে! ভাবছেন চাকরী করলে তো এখন রা/জ/নী/তি ছাড়তে হবে। তাই আগে থেকেই চাকরী পাবেন না বলে বাহানা দিচ্ছেন।”
এরমধ্যেই হঠাৎ নিচ তলা থেকে চঞ্চলের উৎপাত শুরু হয়ে গেল! নিশানা লাগিয়ে সে রাফায়াতের গাঁয়ে ঢি/ল ছু/ড়তে লাগল। বুঝাতে লাগল তার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছেনা এভাবে দারোয়ানের চাকরী করা। গরম কাল। এমনিতেও মশার উপদ্রব বেশী। তার উপর দিয়ে এখন মশাদের জমজমাট পার্টি চলছে! তড়িঘড়ি করে রাফায়াতকে ছেড়ে দাঁড়ালো অয়ন্তী। মাথা নুইয়ে কেমন যেন নিচু স্বরে বলল,,
“চঞ্চল ভাই ডাকছে যান।”
মনমরা ভাব নিলো রাফায়াত। উসকো খুসকো চুল গুলো টেনে ঠিক করল। বিশৃঙ্খল শ্বাস ফেলে গম্ভীর গলায় বলল,,
“উঁহু! যেতে ইচ্ছে করছেনা!”
“দারোয়ান নিয়ে এসেছেন। যেতে তো হবেই!”
“তাহলে আর কাল সকালে দেখা হচ্ছে?”
“নট শিওর!”
“কেন?”
“ঢাকা যেতে হবে হয়ত। অনিক ভাই আমাদের সাথে কী কী করেছে তা তো এখনও জানানো হলো না জেঠু জেঠিকে। তাই বাবা ভাবছে ঢাকা পৌঁছে-ই ছেলের কুকীর্তি সব খুলে বলবে জেঠুকে। এখানে কোনো সিনক্রিয়েট করতে চাইছেনা আপাতত।”
“কিন্তু থানার কাজকর্ম তো এখনো কিছু রয়ে গেছে। তোমরা চলে গেলে এসব করবে কে?”
“আপাতত কোনো কাজ নেই। কাজ লাগলে আবারও আসা যাবে।”
“তাহলে কাল সত্যিই চলে যাচ্ছ?”
“শেষ বারের মত দেখা করতে আসবেন তো?”
“এভাবে বলছ কেন?”
“আসবেন কী না বলুন?”
“আসব। যদি কোনো কাজ না থাকো তো!”
“আমার চেয়ে কাজ বেশী ইম্পর্টেন্ট?”
বিপরীতে রাফায়াতকে কিছু বলার সুযোগ দিলোনা অয়ন্তী। চ্যালচ্যালিয়ে হেঁটে ছাদের দরজায় চলে গেল সে। উল্টোদিকে ফিরে চাপা স্বরে রাফায়াতকে ডেকে বলল,,
“নিচে চলুন। বাবা-মা জেগে যেতে পারে।”
দীর্ঘশ্বাস ফেলল রাফায়াত। অয়ন্তীর এহেন হুটহাট রাগের কারণ সে বুঝতে পারেনা! অদ্ভুত লাগে তার কাছে এসব! এখানে খারাপ কী বলেছে সে? হঠাৎ কাজ পড়ে গেলে কীভাবে আসবে সে? কিছু কিছু ব্যাপার তো অয়ন্তীরও বুঝতে হবে তাইনা? তাছাড়া সে তো অস্বীকার করেনি আসবেনা। দাঁতে দাঁত চেপে অয়ন্তীর কথা মেনে নিলো রাফায়াত। লুকিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে এলো। ম্লান হেসে শেষ বারের মত অয়ন্তীর সাথে কথা বলতে নিলেই অয়ন্তী মুখ ফিরিয়ে বাড়ির মেইন ডোর বন্ধ করে দিলো! বিমূর্ষতায় মাথা নুইয়ে নিলো রাফায়াত। রাস্তায় বের হয়ে এলো সে। চঞ্চলকে আজ বাইক চালানোর দায়িত্ব দিলো। দুজনই বাইকে ওঠে বসল। দ্রুত গতিতে বাইক ছেড়ে দিলো চঞ্চল। নিশ্চুপ রাফায়াত। হয়ত গভীর চিন্তায় মগ্ন। রাফায়াতের এহেন মৌণতা দেখে গলা ঝাকালো চঞ্চল। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,
“কী রে কী হয়েছে? হঠাৎ মন খারাপ কেন?”
“কোথায় মন খারাপ?”
“কথা বলছিস না তাই বললাম।”
“মেয়েদের মন বুঝা খুব টাফ ভাই!”
“কেন? কী হইছে? ঝগড়া করেছিস দুইটায়?”
“বুঝতেই চায়না কিছু ভাই। আমি কী বুঝাই আর সে কী বুঝে!”
“কী হইছে খুলে বল?”
“সে বলল দেখা করতে। আমি বললাম করব। তবে কোনো কাজ না থাকলে। অমনি মুখটা ফুলিয়ে নিলো! বলল আমার চেয়ে কাজ বেশী ইম্পর্টেন্ট?”
হেসে কুটিকুটি হয়ে গেল চঞ্চল। উচ্ছ্বসিত গলায় বলল,,
“ভুল কী বলেছে সে? সত্যিই তো এখানে তুই কাজকে বেশী গুরুত্ব দিলি!”
“তো আর কী করতে পারি আমি? হুট করেই তো আর এই লাইন ছেড়ে দিতে পারি না তাইনা? আর তাছাড়া তুই তো চিনিস-ই ফখরুল ভাইকে। কাজের সময় না পেলে কতটা হাইপার হয়ে যান তিনি। ছোটো বড়ো কথা শুনিয়ে দেন। পাল্টা কিছু বললেই দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়।”
“আমাকে বুঝিয়ে কী হবে ভাই? অয়ন্তী তো আর বুঝবেনা। চাইলে তার জন্য একটা দিন সেক্রিফাইজ করতে-ই পারিস।”
“শুধু একটা দিন নয়। আমার প্ল্যানিংই আছে আমার পুরো জীবনটা তার নামে সেক্রিফাইজ করার! তবে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। ভাবছি এখন থেকেই টুকটাক জব প্রিপারেশন নিব!”
“সত্যি কথা বলতে আমারও এই লাইনটা আর ভালো লাগছেনা। মা-বাবা রোজ চাপ দেয় বিয়ে করার জন্য। ভাবছি বিয়ে শাদি করে সেটেল্ড হয়ে যাব।”
“গুড আইডিয়া। তাহলে এবার থেকে আমরা দুজনই নতুন ভাবে বাঁচার পথ খুঁজব। জানিনা বস আমাদের আদোতে ছাড়বে কীনা!”
“মনে হয়না এত সহজে ছাড়বে! না জানি কী কী সাফার করতে হয়!”
_______________________________
প্রিয়ার মুখোমুখি বসে আছে রাফায়াত। সুশ্রী মুখটি যেন কঙ্কালের রূপ ধারণ করেছে প্রিয়ার! একদিন জেলের মধ্যে থেকেই কীভাবে সম্ভব এতটা ভয়’ঙ্কর দেখতে হওয়ার? প্রিয়ার মুখোমুখি বসতেও কেমন যেন ভয় কাজ করছে রাফায়াতের। হাত-পা যেন বিশৃঙ্খলভাবে কাঁপছে তার। কলিজা শুকিয়ে আসছে। হার্ট ফেল করার সম্ভাবনা যে ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে। এত ভয়ভীতির মধ্যেই হঠাৎ প্রিয়া সামনের দাঁত কপাটি বের করে চিৎকার করে বলল,,
“আমি এই খু/নটি করিনি রাফায়াত। তারা আমাকে ফাঁসিয়েছে। তোমাকেও ফাঁসাবে দেখো! তোমারও নিস্তার নেই তাদের হাত থেকে! তুমিও ম/র/বে রাফায়াত। তুমিও ম/র/বে!”
ঘুমের মধ্যেই যেন রাফায়াত তার মৃ/ত্যু/র আগাম সংকেত পেল। ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠল সে। আশেপাশে ভয়াল দৃষ্টি বুলাতেই দেখতে পেল সূর্য্যের আলোক রশ্মি জানালার পর্দা ভেদ করে হুড়মুড়িয়ে তার ঘরে প্রবেশ করছে।
#চলবে….?